Published on Feb 08, 2023 Updated 2 Hours ago
মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের অভিমুখে ভারতের অগ্রগতি: মধ্যপ্রদেশের নিরিখে একটি মূল্যায়ন

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ভারতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লক্ষ করা গিয়েছে। যদিও মধ্যপ্রদেশ (এমপি) ভারতের বেশিরভাগ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির (ইউটি) তুলনায় সে কাজ সম্পন্ন করতে অনেকটাই ব্যর্থ হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, মধ্যপ্রদেশে মাতৃমৃত্যু হ্রাসের (এমএমআর) বার্ষিক হার ৫.৮ শতাংশ, যেখানে জাতীয় গড় ৭.৫ শতাংশ; নবজাতকের মৃত্যুর (এনএমআর) বার্ষিক হ্রাসের হার ০.৬ শতাংশে, যা জাতীয় গড় ৩.৮ শতাংশের তুলনায় অনেকটাই কম। এই প্রতিবেদনে মধ্যপ্রদেশের মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হারের দ্রুত হ্রাস সহজতর করে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলির কথা তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি, এটিতে স্বাস্থ্য এবং পুষ্টি পরিষেবা সংক্রান্ত সরবরাহ, মানব সম্পদ, প্রশাসন, অর্থায়ন, তথ্য সংগ্রহ এবং নজরদারির ক্ষেত্রে ঘাটতিগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

আরোপণ: রমেশ আগরওয়ালপ্রমুখ, ‘ট্র্যাকিং ইন্ডিয়া’জ পাথ টু মেটারনাল অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ: আ কেস স্টাডি অব মধ্যপ্রদেশ’, ওআরএফ স্পেশ্যাল রিপোর্ট, নম্বর ২০০, নভেম্বর ২০২২, অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন।

ভূমিকা

বিগত দু’দশকে ভারত মাতৃত্বকালীন, নবজাতক এবং শিশুমৃত্যুর হার কমানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখিয়েছে। যদিও সেই অগ্রগতি অসম এবং বেশ কয়েকটি রাজ্য অন্য রাজ্যের তুলনায় উল্লেখযোগ্য রকম ভাল ফল করছে। এই বিশেষ প্রতিবেদনে এই সকল ক্ষেত্রে ফলাফলে উন্নতি ঘটানো এবং স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) লক্ষ্য-৩ অর্জনের জন্য মধ্যপ্রদেশের অগ্রগতিকে খুঁটিয়ে নিরীক্ষণ করা হয়েছে। অর্থাৎ ‘সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতা: সব বয়সেই স্বাস্থ্যকর জীবন সুনিশ্চিত করা এবং সুস্থতার প্রচার চালানো’। মধ্যপ্রদেশ ভারতের বৃহত্তম রাজ্যগুলির অন্যতম এবং দেশের জনসংখ্যার মোট ছয় শতাংশ মানুষ এ রাজ্যে বাস করেন। রাজ্যটি ঐতিহাসিক ভাবে জটিল ভূসংস্থান দ্বারা জর্জরিত এবং নানা অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করে চলেছে।

যদিও মধ্যপ্রদেশ গত ২০ বছরে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করলেও(১) ভারতের বৃহত্তম রাজ্যগুলির মধ্যে এখানেই সর্বোচ্চ নবজাতক মৃত্যুহার (এনএমআর), শিশুমৃত্যুর হার (আইএমআর), অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর বয়সিদের মৃত্যুহার (ইউফাইভএমআর) এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ মাতৃমৃত্যুর হার (এমএমআর) লক্ষ করা যায়।(২)(৩) 

সারণি ১: প্রধান স্বাস্থ্য ফলাফল সূচকে কর্মক্ষমতা (২০১৪-২০১৮)

সর্বোচ্চ ফলদায়ী সর্বনিম্ন ফলদায়ী
সূচক ২০১৪ ২০১৮ ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে পরিবর্তন (শতাংশে) ২০১৪ ২০১৮ ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে পরিবর্তন (শতাংশে)
এনএমআর কেরল (৬) কেরল (৫) হিমাচল প্রদেশ (-৪৮.০) ওড়িশা (৩৬) মধ্যপ্রদেশ (৩৫) ছত্তিশগড় (৩.৬)
ইউ৫এমআর কেরল (১৩) কেরল (১০) হিমাচল প্রদেশ (-৩৬.১) অসম (৬৬) মধ্যপ্রদেশ (৫৬) মহারাষ্ট্র (-৪.৩)

সূত্র: নীতি আয়োগ স্টেট হেলথ ইনডেক্স রাউন্ড ৪, ২০১৯-২০২২(৪)

২০২০-২১ সালের নীতি আয়োগের এসডিজি সূচক(ক)(৫) অনুযায়ী মধ্যপ্রদেশকে এসডিজি-৩-এর নিরিখে নিম্ন অর্ধের সকল রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের (ইউটি) মধ্যে একটি ‘পারফর্মার’ বা ‘কর্মসূচি সম্পাদনকারী’ রাজ্য বলে চিহ্নিত করা হয়েছে (দ্রষ্টব্য চিত্র ১)।

এসডিজি-৩ সূচক শুধুমাত্র মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্যেরই সূচক নয়, এটি নিম্নলিখিত পরিবর্তনশীল অনুপাত ও পরিমাণগুলিরও সূচক: মাতৃ মৃত্যুহার (প্রতি এক লক্ষ শিশু প্রসবে); অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর বয়সিদের মৃত্যুর হার (প্রতি ১০০০ প্রসবে); ৯-১১ মাস বয়সি শিশুদের সম্পূর্ণ টিকাকরণের শতাংশ; প্রতি ১ লক্ষ মানুষের মধ্যে যক্ষার কেস নোটিফিকেশন হার; প্রতি ১০০০ জন অসংক্রমিত মানুষের মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণের হার; আত্মহত্যার হার (প্রতি ১ লক্ষ মানুষের মধ্যে); সড়ক দুর্ঘটনায় হওয়া মৃত্যুর হার (প্রতি ১ লক্ষ মানুষের মধ্যে); মোট নথিবদ্ধ প্রসবের মধ্যে হাসপাতাল বা প্রসব কেন্দ্রে হওয়া প্রসবের শতাংশ; মাথাপিছু মাসিক ভোগখরচের (এমপিসিই) অংশ হিসেবে স্বাস্থ্যখাতে মাথাপিছু মাসিক অতিরিক্ত খরচের পরিমাণ; এবং প্রতি ১০০০০ জন মানুষ পিছু বরাদ্দ চিকিৎসক, নার্স এবং ধাত্রীর সংখ্যা। এই বিশ্লেষণের প্রধান লক্ষ্য হল এসডিজি-৩-এর মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্যের দিকটির উপরে বিশেষ নজর দেওয়া।

১. মধ্যপ্রদেশের সাফল্য এবং ব্যর্থতাগুলি

মধ্যপ্রদেশ সংক্রান্ত পূর্ববর্তী গবেষণাগুলিতে গুণগত এবং পরিমাণগত উভয় প্রেক্ষিত ব্যবহার করে সে রাজ্যের আইএমআর, এমএমআর এবং এনএমআর হ্রাসের সফলতার চালিকাশক্তিগুলির বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ২০২১ সালে ইন্ডিয়া হেলথ অ্যাকশন ট্রাস্টের (আইএইচএটি)(৬) করা একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, বিগত দশ বছরে মধ্যপ্রদেশে এনএমআর এবং এমএনআর উভয়ই হ্রাস পেয়েছে। যদিও ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে মধ্যপ্রদেশে এমএমআর হ্রাসের বার্ষিক হার ছিল ৫.৮ শতাংশ, যা জাতীয় হার অর্থাৎ ৭.৫ শতাংশের চেয়ে কম। রাজ্যটিতে এনএমআর হ্রাসের হার ছিল ০.৬ শতাংশ, যা সর্বভারতীয় এনএমআর হ্রাসের হার অর্থাৎ ৩.৮ শতাংশের চেয়ে উল্লেখযোগ্য রকমের কম।(৭) প্রতি এক লক্ষ শিশু প্রসবে ৭০-এর কম মাতৃমৃত্যু এবং প্রতি ১০০০ প্রসূত নবজাতকের মধ্যে ১২-এর কম মৃত্যুর এসডিজি ২০৩০ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মধ্যপ্রদেশকে তার এমএমআর ও এনএমআর-এ বার্ষিক চরম হ্রাস হারকে (এএআরআর) ত্বরান্বিত করে যথাক্রমে ৬.৮ শতাংশ ও ৮.৬ শতাংশে নিয়ে যেতে হবে।(৮) এই সকল গবেষণায় রাজ্যের জেলাগুলির মধ্যে ভিন্নতা লক্ষ করা গিয়েছে এবং এতে প্রসব-পূর্ববর্তী যত্ন (এএনসি) ও প্রসব-পরবর্তী যত্ন (পিএনসি) পরিষেবার উন্নতি, বাসস্থানে সন্তান প্রসবের সংখ্যা হ্রাসের পাশাপাশি বিশেষত জনজাতি অধ্যুষিত জেলাগুলিতে স্বাস্থ্য পরিষেবার লভ্যতা বৃদ্ধির মতো পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। 

চিত্র ১: এসডিজি-৩ অর্জনে রাজ্য এবং ইউটিগুলির ফলাফল

সূত্র: এসডিজি ইন্ডিয়া ইনডেক্স অ্যান্ড ড্যাশবোর্ড, ২০২০-২১: পার্টনারশিপস ইন দ্য ডেকেড অফ অ্যাকশন, নীতি আয়োগ, ২০২০-২১

মাতৃ ও নবজাতক মৃত্যুহারে হ্রাস ঘটানো প্রধান চালিকা শক্তিগুলির নিরূপণে ২০২২ সালে করা মাতৃ ও নবজাতক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি দৃষ্টান্তমূলক গবেষণায়(খ)(৯) ভারতের রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে দু’টি বৃহৎ ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে: একটিতে রয়েছে উচ্চ মাতৃ ও নবজাতক মৃত্যুহার ও বেসলাইন (২০০০) অনুযায়ী মাথাপিছু নিম্ন উপার্জনকারী রাজ্যগুলি এবং অপরটিতে রয়েছে নিম্ন মাতৃ ও নবজাতক মৃতুহার এবং বেসলাইন অনুযায়ী মাথাপিছু উচ্চ উপার্জনকারী রাজ্যগুলি। মধ্যপ্রদেশকে রাজস্থান, ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, ছত্তিশগড় এবং অসমের সঙ্গে একত্রে প্রথম বিভাগটিতে রাখা হয়েছে। অন্য উচ্চ মৃত্যুর হারবিশিষ্ট রাজ্যগুলির (এইচএমএস) তুলনায় মধ্যপ্রদেশে এমএমআর ২০১৬ পর্যন্ত কম থেকেছে। কিন্তু রাজ্যটির এনএমআর ১৯৮৫ সাল থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সকল রাজ্যের তুলনায় অধিক বলে প্রমাণিত হয়েছে (দ্রষ্টব্য চিত্র ২খ)।

গবেষণার পর থেকেই যদিও মধ্যপ্রদেশের এনএমআর ক্রমশ হ্রাস পেয়েছে এবং এই একই চিত্র আন্তঃজেলা ভিন্নতার ক্ষেত্রেও পরিলক্ষিত হয়েছে।(১০)(১১) গবেষণাটি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছয় যে, এমএমআর, এনএমআর এবং আইএমআর হ্রাসের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখালেও রাজ্যটি এখনও অন্য এইচএমএস-গুলির তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে। রাজ্যটির এমএমআর, আইএমআর এবং এনএমআর ফলাফল উন্নত করার জন্য এটিতে নির্দিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকারগুলির সুপারিশ করা হয়েছে, যেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: প্রসবের সময় ও অব্যবহিত প্রসবোত্তর যত্নের গুণমান বৃদ্ধির লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ; পরিষেবাকেন্দ্রে পৌঁছনো সংক্রান্ত সমস্যাগুলির সমাধান এবং পরিষেবাকেন্দ্রে অন্তত ৪৮ ঘণ্টা থাকার বাধ্যতামূলক নিয়ম জারি করা।

চিত্র ২ক: এমএমআর এবং এনএমআর প্রবণতার প্রেক্ষিতে মধ্যপ্রদেশ বনাম রাজ্য গোষ্ঠী ও সারা ভারত (এসআরএস ২০১৯)(১২)

সূত্র: ভারত: মাতৃ এবং নবজাতক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত দৃষ্টান্তমূলক গবেষণা(১৩)

চিত্র ২ক দর্শাচ্ছে যে, ২০০০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে মধ্যপ্রদেশে মাতৃ মৃত্যুহার প্রতি ১০০০০০ প্রসবের ক্ষেত্রে ৪০৭ থেকে হ্রাস পেয়ে ১৬৩ হয়েছে; প্রতি ১০০০ প্রসবের ক্ষেত্রে নবজাতকের মৃত্যুহার ৫৯ থেকে কমে হয়েছে ৩৩; প্রতি ১০০০ প্রসবের ক্ষেত্রে শিশুমৃত্যুর হার ৮৮ থেকে কমে হয়েছে ৪৬ এবং অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর বয়সিদের মৃত্যুহার প্রতি ১০০০ প্রসবের ক্ষেত্রে ১১০  থেকে হ্রাস পেয়ে হয়েছে ৫৩। যদিও সারা ভারতের গড় এবং অন্য একাধিক বৃহৎ রাজ্যের তুলনায় মধ্যপ্রদেশের ফলাফল বিশেষ ভাল নয়। তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র এবং পশ্চিমবঙ্গের মতো ভাল ফলপ্রদানকারী রাজ্যগুলি কার্যকর পদক্ষেপের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং উচ্চ গুণমানসম্পন্ন যত্ন পরিষেবা প্রদানের উপর জোর দিয়ে উন্নততর ফল লাভ করেছে।

রাজ্য সরকার প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, মধ্যপ্রদেশ বিগত দুই দশক যাবৎ মৃত্যুহার হ্রাসকেও ত্বরান্বিত করতে সমর্থ হয়েছে (দ্রষ্টব্য চিত্র ৩)। মধ্যপ্রদেশের বার্ষিক চরম হ্রাস হার (এএআরআর) ২০০০-২০১০ সালের সময়কালের ২.৭ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১১-২০১৯ সালের সময়কালে ৩.৬ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে।

চিত্র ৩: মধ্যপ্রদেশের এনএমআর প্রবণতা এবং অভিক্ষেপ (২০০০-২০৬০)

সূত্র: মধ্যপ্রদেশ এমএমআর, আইএমআর এবং এনএমআর হ্রাসের রিপোর্ট, মধ্যপ্রদেশ এনএমআর, আইএমআর এবং এমএমআর হ্রাসের জন্য গঠিত টাস্ক ফোর্স, সাধারণ প্রশাসন বিভাগ, মধ্যপ্রদেশ সরকার (১৪) 

কিন্তু এই ত্বরান্বিত এএআরআর সত্ত্বেও রাজ্যটি ২০৩০-এর মধ্যে নয়, ২০৫৫  সালে এক অঙ্কের এনএমআর অর্জনের এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারবে। ২০৩০ সালের মধ্যে এক অঙ্কের এনএমআর অর্জনের এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে এ বছরের শুরু থেকেই প্রয়োজনীয় এএআরআর হতে হবে ১৬.২ শতাংশ।

বিভিন্ন গবেষণা এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথ দেখাতে সহায়ক হতে পারে। যেমন টোপ্পো এবং অন্যরা (১৫) জোর দিয়েছেন প্রসবোত্তর বিচক্ষণতার গুরুত্বের উপর। তাঁদের গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, অধিকাংশ মৃত্যুই ঘটেছে প্রসবোত্তর পর্যায়ে (প্রসব-পরবর্তী মৃত্যু: ৩০ শতাংশ এবং অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মৃত্যু: ২০ শতাংশ)। এই গবেষণার লেখকরা মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ রূপে নিম্নমানের প্রসব-পূর্ববর্তী পরিষেবা এবং মানবসম্পদের অভাবকেই দায়ী করেছেন।

তাঁদের বিশ্লেষণে আন্তঃজেলা ভিন্নতা ধরা পড়ার দরুন সিংহ এবং অন্যরা(১৬) উচ্চ মৃত্যুহারসম্পন্ন জেলাগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পক্ষে সওয়াল তুলেছেন। আইএমআর হ্রাস করার জন্য গবেষণাটিতে সম্পূর্ণ এএনসি, হাসপাতালে অধিকতর প্রসব, নিয়মিত প্রসবোত্তর দেখাশোনা, সম্পূর্ণ টিকাকরণ এবং পুষ্টি সংক্রান্ত পদক্ষেপ করার কথা বলা হয়েছে। অন্য দিকে জোশি এবং অন্যরা(১৭) গর্ভবতী মহিলাদের উচ্চ গুণমানসম্পন্ন প্রসব-পূর্ববর্তী ও প্রসবোত্তর পরিষেবা প্রদান এবং প্রসব-সংক্রান্ত স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলির প্রচারের উপরে জোর দিয়েছেন। গবেষকরা সদ্যোজাত (এনএম), প্রসবোত্তর (পিএনএম) এবং শিশুমৃত্যুর (সিএম) হারের উপর মায়ের বয়স, দু’বার প্রসবের মধ্যবর্তী সময়কাল এবং সমতার(গ) প্রভাব খতিয়ে দেখেছেন। ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সি মায়েদের ক্ষেত্রে ভূমিষ্ঠ সন্তানদের মধ্যে সর্বনিম্ন এনএম, পিএনএম এবং সিএম লক্ষ করা গিয়েছে। গবেষকরা আরও লক্ষ করেছেন যে, দু’বার প্রসবের মধ্যবর্তী সময়ের স্বল্পতা এবং তিনের অধিক সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে এমএমআর ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এই বিশ্লেষণে এমএমআর এবং নিম্ন স্বাক্ষরতা ও আর্থ-সামাজিক স্তরের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।

২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে মধ্যপ্রদেশ সরকার একটি উচ্চ পর্যায়ের টাস্ক ফোর্স গঠন করে, যেটির দায়িত্ব ছিল আগামী দশকের জন্য নির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের প্রধান ক্ষেত্রগুলিকে চিহ্নিত করা। পরিষেবা প্রদান, স্বাস্থ্য সম্পদ, প্রশাসন, পুষ্টিগত পদক্ষেপ, অর্থায়ন এবং তথ্য নজরদারি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘাটতি এবং সমস্যাগুলি চিহ্নিতকরণের লক্ষ্যে টাস্ক ফোর্সটি রাজ্যের স্বাস্থ্য বাস্তুতন্ত্রের বিভিন্ন অংশীদারদের একটি মূল্যায়ন করে।(১৮)

টাস্ক ফোর্স দ্বারা প্রকাশিত একটি রিপোর্ট(১৯) মধ্যপ্রদেশের মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান ব্যবস্থাকে বাধাদানকারী বিষয়গুলি তুলে ধরেছে এবং ভৌত পরিকাঠামো নির্মাণ, মানবসম্পদ প্রতিপালন, গর্ভবতী মহিলা এবং নবজাতকদের বিশেষ স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রয়োজনীয়তা পূরণ, উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন ঘটনাগুলি পর্যবেক্ষণ ও নজরদারি, উন্নততর স্বাস্থ্য অর্থায়ন এবং উন্নত প্রশাসন সংক্রান্ত এক কাঠামো নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে।

২. পদক্ষেপ করার প্রধান ক্ষেত্রগুলি

রিপোর্টে(২০) বলা হয়েছে, যদি ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করা সম্ভব হয় এবং পরিষেবার গুণমান বৃদ্ধি করা হয়, তা হলে নিম্ন ও মধ্য-উপার্জনকারী দেশগুলিতে (এলএমআইসি) মাতৃ ও নবজাতকের মৃত্যুহার ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করা যেতে পারে। ২০১৪ সালের ইন্ডিয়া নিউবর্ন অ্যাকশন প্ল্যান (আইএনএপি)(২১) বা ভারতের নবজাতক কর্মসূচিতে এক অঙ্কের এনএমআর অর্জনের জন্য এক সুস্পষ্ট পথ দর্শানো হয়েছে। এমএমআর হ্রাসের জন্য এন্ডিং প্রিভেন্টেবল মেটারনাল মর্টালিটিও (ইপিএমএম) অনুরূপ একটি নথি। গর্ভাবস্থা ও প্রসব এবং সদ্যোজাতের বিভিন্ন পর্যায়ের উপর মনোনিবেশ করে এমএনএইচ পরিষেবা উন্নততর করার জন্য আইএনএপি ছ’টি প্যাকেজের প্রস্তাবনা দিয়েছে।

চিত্র ৪: এনএমআর হ্রাসের জন্য আইএনএপি কাঠামোর উপাদান

প্যাকেজ ১

প্রসব ও জন্মপূর্বকালীন যত্ন

প্যাকেজ ২

প্রসব যন্ত্রণা ও শিশু প্রসবকালীন যত্ন

প্যাকেজ ৩

নবজাতকের অব্যবহিত যত্ন

প্যাকেজ ৪

স্বাস্থ্যবান সদ্যোজাতের যত্ন

প্যাকেজ ৫

ছোট ও দুর্বল নবজাতকের যত্ন

প্যাকেজ ৬

নবজাতকের প্রাণরক্ষার পরবর্তী যত্ন প্রদান

সূত্র: মধ্যপ্রদেশে এমএমআর, আইএমআর এবং এনএমআর হ্রাসের রিপোর্ট, মধ্যপ্রদেশ এনএমআর, আইএমআর এবং এমএমআর হ্রাসের জন্য গঠিত টাস্ক ফোর্স, সাধারণ প্রশাসন বিভাগ, মধ্যপ্রদেশ সরকার(১৪)

অন্তর্ভুক্তির পরিধি এবং পরিষেবার গুণমান বৃদ্ধি করা

মৃত্যুহার হ্রাস করার জন্য মধ্যপ্রদেশ সরকারের সামনে বিশেষ কয়েকটি অগ্রাধিকার বিদ্যমান। রাজ্যটি এখনও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করার মাত্রা ৯০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি করতে সমর্থ হয়নি। প্রদত্ত পরিষেবার গুণমান এবং পদক্ষেপের বাস্তবায়নও কাঙ্ক্ষিত স্তরে পৌঁছতে ব্যর্থ হয়েছে।

ক. প্রধান পদক্ষেপগুলির অন্তর্ভুক্তির পরিধি এবং পরিষেবার গুণমান

এ ক্ষেত্রে একটি প্রধান সমস্যা হল অনথিভুক্ত গর্ভধারণ, জন্ম ও মৃত্যুর এক বিরাট সংখ্যা।(২২) ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের মার্চ মাসের মধ্যে আনুমানিক মোট ২০ লক্ষ ৫০ হাজার জন্মের ঘটনার মধ্যে ১২ লক্ষ গর্ভধারণ ও ১৩ লক্ষ প্রসবের ঘটনাই নথিবদ্ধ হয়েছে। পাশাপাশি অনূর্ধ্ব পাঁচ বছরের শিশু মৃত্যুর মোট আনুমানিক পরিমাণের মাত্র ২৬ শতাংশই নথিবদ্ধ হয়েছে।

কার্যকর এসএনসিইউ-র অভাব এবং রাজ্যের এসএনসিইউ-গুলিতে শিশু প্রতি নার্সের নিম্ন অনুপাতের বিষয়গুলিতেও নজর দিতে হবে। স্টাফ ইনস্পেকশন ইউনিট (এসআইইউ) নির্দেশিকার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে নার্স ও শিশুর বিদ্যমান অনুপাত অর্থাৎ ১.৫ : ৭-কে বৃদ্ধি করে ১ : ২ করতে হবে। এই সব ক’টি বিষয়ই নিম্ন এসএনসিইউ ডিসচার্জ হারের (২০২১ সালে যা ছিল ৭৯.৫ শতাংশ) জন্য দায়ী, যেখানে তামিলনাড়ুর মতো একটি ভাল ফলাফলকারী রাজ্যে এই পরিমাণ ৯০ শতাংশেরও বেশি। মানবসম্পদের ঘাটতিগুলির সমাধান করে মধ্যপ্রদেশের এসএনসিইউ-গুলি এনএমআর ৫ শতাংশ বিন্দু পর্যন্ত হ্রাস করতে পারে।

রিপোর্টটিতে জরুরি পরিষেবা প্রদান ব্যবস্থার বাস্তবায়নের ঘাটতির উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে। জরুরি পরিষেবার আবেদনকারী সকল অনুরোধের মাত্র ৩১ শতাংশ জরুরি প্রয়োজন বলে গৃহীত হয়েছে এবং সেগুলির মধ্যে ৩০ শতাংশেরও বেশি ক্ষেত্রে পরিষেবা প্রদান করা হয়নি। প্রত্যুত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে বিলম্ব ঘটানোও নিম্নমানের পরিষেবার নেপথ্যে এক প্রধান কারণ। শহরাঞ্চলে ও গ্রামাঞ্চলে এই বিলম্বের পরিমাণ থেকেছে যথাক্রমে ২৫ মিনিট ও ২৮ মিনিট। অ্যাডভান্সড লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম অ্যাম্বুলেন্সের ঘাটতিও সমস্যাকে গুরুতর করে তুলেছে, যার ফলে মাত্র ১৭ শতাংশ মানুষই হাসপাতাল-পূর্ববর্তী চিকিৎসা পরিষেবা পেতে সমর্থ হয়েছেন। অন স্কিল বার্থ অ্যাটেনড্যান্ট (এসবিএ) বা সুদক্ষ প্রসব সহায়তাকারীদের প্রশিক্ষণের সমস্যাটিও স্পষ্ট হয়েছে(২৩); টাস্ক ফোর্স দর্শিয়েছে যে, প্রশিক্ষণ কর্মসূচির অন্তর্গত আধিকারিকদের অধিকাংশই স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ, যাঁরা ইতিপূর্বেই চিকিৎসা ও প্রশাসনিক দায়িত্বের চাপে জর্জরিত। 

খ. উন্নয়নের পরিকাঠামো

টাস্ক ফোর্স জানিয়েছে যে, রাজ্যটিতে হওয়া মাতৃমৃত্যু, মৃত সন্তান প্রসব এবং সদ্যোজাতের মৃত্যুর ৭৫ শতাংশ শিশু প্রসব এবং নবজাতক পর্যায়ের প্রথম দিকে ঘটে থাকে। টাস্ক ফোর্স এ বিষয়ে বিশেষ জোর দিয়েছে যে, আগামী বছরগুলিতে এনএমআর সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ সূচক হয়ে উঠবে। 

সারণি ২: মাতৃ ও নবজাতকের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পদক্ষেপ বাস্তবায়নের পর্যায় 

পর্যায় দশা মায়ের স্বাস্থ্য সদ্যোজাতের স্বাস্থ্য
০ থেকে ২ বছর পর্যন্ত অনথিবদ্ধ গর্ভধারণের সন্ধান ও পর্যবেক্ষণ অনথিবদ্ধ জন্মের সন্ধান
আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে গর্ভাবস্থার সঠিক নির্ধারণ এসএনসিইউ এবং এনবিএসইউ পরিষেবাগুলিকে সশক্ত করা
এইচআরপি-র শনাক্তকরণ এবং তাদের পরিষেবার সশক্তিকরণ অপ্রয়োজনীয় পরিষেবার নির্মূলীকরণ
আয়রন ফোলিক অ্যাসিড (আইএফএ) থেরাপি কর্মসূচির পরিমাণ বাড়ানোর মাধ্যমে রক্তাল্পতার চিকিৎসা করা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ, ভাল পুষ্টি, অবিরাম ইতিবাচক বায়বীয় চাপ (সিপিএপি) এবং সারফ্যাকট্যান্টের ব্যবহারের উপর নজর দেওয়া; অপ্রয়োজনীয় পরিষেবার নির্মূলীকরণ
সন্তান প্রসবের সময়ে সর্বোচ্চ যত্ন প্রদান মা ও তাঁর পরিবারগুলিকে যত্ন প্রদানে সক্রিয় হওয়া
গর্ভধারণ ও সদ্যোজাত শিশুদের যত্নের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষদের শিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে মোবাইল ফোনের ব্যবহার এসএনসিইউ এবং এনবিএসইউ-গুলিতে মানব সম্পদ বৃদ্ধি করা এবং পরিকাঠামোর সশক্তিকরণ
জন্ম প্রদানকারী অঞ্চলগুলিতে মানব সম্পদ বৃদ্ধি করা এবং পরিকাঠামোর সশক্তিকরণ কমিউনিটি স্তরে নজরদারি
৩ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ের সব কার্যকলাপ প্রথম পর্যায়ের সব কার্যকলাপ
অপুষ্টির উপর জোর দেওয়া
চাহিদার দিকটিকে সশক্ত করা বিকৃত আকারের দরুন শিশুমৃত্যুর মতো স্বল্প পরিচিত কারণগুলির উপর নজর দেওয়া
আঞ্চলিক পরিষেবা প্রদান

নিম্নলিখিত ক্ষেত্রগুলিতে অবিলম্বে গভীর মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন: 

১. শিশুর জন্মের সময় এবং নবজাতকের জীবনের প্রথম সপ্তাহে যত্নের গুণমান বৃদ্ধি

তথ্যপ্রমাণ দর্শাচ্ছে যে, প্রসব পর্যায় এবং জন্মের সময় অসুস্থ এবং ছোট আকারের সদ্যোজাতের সর্বোচ্চ যত্ন ও নবজীবন সঞ্চার-সহ উচ্চ গুণমানের যত্নপ্রদান মৃত্যুর হার ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করতে পারে।

২. উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন গর্ভধারণের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায় থেকে পর্যবেক্ষণের আওতায় রাখা, জন্ম-পূর্ববর্তী যত্নপ্রদান এবং সাব ডিস্ট্রিক্ট / সাব ডিভিশনাল হাসপাতাল (এসডিএইচ) ও জেলা হাসপাতালগুলিতে (ডিএইচ) প্রসবের সময় সহায়তা প্রদানও লাভজনক হতে পারে। উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন গর্ভধারণের ক্ষেত্রে গর্ভবতী মহিলা সময়ে্র পূর্বে প্রসব করলে প্রথম ত্রৈমাসিকের আল্ট্রা সাউন্ডের মাধ্যমে গর্ভপাতের সঠিক সময় নির্ধারণ করার জন্য প্রসব-পূর্ববর্তী কর্টিকস্টেরয়েডের সময়োচিত ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

স্বাস্থ্য সম্পদে বিদ্যমান ঘাটতি পূরণ

এসডিজি ৩ এবং মধ্যপ্রদেশের লক্ষ্যপূরণের জন্য স্বাস্থ্যক্ষেত্রের সম্পদগুলির পুনর্বিন্যাস গুরুত্বপূর্ণ। গোষ্ঠীর অংশগ্রহণ, টেলিমেডিসিন, ভৌত পরিকাঠামো, ঔষধ, চিকিৎসার সরঞ্জাম, সুপারিশ বা রেফারাল পরিবহণ ব্যবস্থা এবং জনস্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী ব্যবস্থাগুলি এই পদক্ষেপের আওতাভুক্ত।

ক. আন্তঃজেলা অসমসত্ত্বতা

টাস্ক ফোর্সের রিপোর্টে(২৪) ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে(২৫) বা জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষার পঞ্চম পর্যায়ের ভিত্তিতে এসবিএ-গুলির অধীনস্থ জেলাগুলিতে প্রসবের ক্ষেত্রে তারতম্য লক্ষ করা গিয়েছে। এটিতে সিংরোলি, সিধি এবং রেওয়ার মতো জেলাগুলিতে প্রসব-পরবর্তী ক্ষেত্রে বিশেষ মনোযোগের দাবি জানানো হয়েছে।

চিত্র ৫: এসবিএগুলির উপস্থিতিতে প্রসব এবং সেই সকল শিশু যারা স্বাস্থ্যকর্মীদের থেকে প্রসব-পরবর্তী যত্ন লাভ করেছে (২০২০-২০২১)

সূত্র: এনএফএইচএস-৫ (২০১৯-২০২১)(২৬)
দ্রষ্টব্য: এই শিশুরা প্রসবের ২ দিনের মধ্যে পেশাদার চিকিৎসকদের কাছ থেকে প্রসব-পরবর্তী যত্ন লাভ করেছে।

এনএইচএফএস-৫ থেকে প্রাপ্ত তথ্য জন্মের দুই দিনের মধ্যে প্রসব-পরবর্তী যত্নপ্রাপ্ত শিশু এবং প্রশিক্ষিত চিকিৎসাকর্মীর উপস্থিতিতে ঘটা প্রসবের ঘটনার মধ্যে একটি প্রত্যক্ষ সংযোগসূত্র দর্শিয়েছে। চিত্র ৫-এ উল্লিখিত তথ্য মধ্যপ্রদেশের জেলাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য তারতম্য তুলে ধরেছে। ইন্দোর, নিমাচ এবং ধার-এর মতো জেলাগুলিতে শিশুজন্মের এক বিরাট অংশ (৯৫ শতাংশ) প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্য পরিষেবা কর্মীদের উপস্থিতিতে ঘটেছে এবং নবজাতকদের এক বৃহৎ অংশ (৯০ শতাংশ) জন্মের দুই দিনের মধ্যে প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছ থেকে প্রসব-পরবর্তী চিকিৎসা লাভ করেছে। অন্য দিকে সিংরোলি, নর্মদাপুরম এবং শেওপুরের মতো অঞ্চলগুলিতে প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীরা ৮৫ শতাংশেরও কম প্রসবের ঘটনায় উপস্থিত ছিলেন এবং জন্মের দুই দিনের মধ্যে প্রসব-পরবর্তী পরিষেবাপ্রাপ্ত সদ্যোজাতের সংখ্যা ছিল ৭৫ শতাংশেরও কম।

খ. পরিকাঠামো

২০২০-২১ সালের রুরাল হেলথ স্ট্যাটিস্টিকস রিপোর্ট অনুযায়ী(২৭), রাজ্যটিতে ১০,১৮৯টি সাব হেলথ সেন্টার বা উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র, ১৫১৮টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র (১২৩৪টি গ্রামীণ এবং ২৮৪টি শহরভিত্তিক), ৩২০টি কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র (গ্রামীণ ২৯৫টি ও শহরভিত্তিক ২৫টি), ৯২টি উপজেলা হাসপাতাল, ৫১টি জেলা হাসপাতাল এবং ১০টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। সারণি ৩-এ রাজ্যটির গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর আওতাভুক্ত জনসংখ্যা এবং সর্বভারতীয় গড়ের সংক্ষিপ্তসার প্রদান করা হল। 

সারণি ৩: মধ্যপ্রদেশে গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর ব্যাপ্তি (২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত) 

  মধ্যপ্রদেশ ভারত
স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্রগুলির আওতাভুক্ত গড় গ্রামীণ জনসংখ্যা (২০২১ সালের ১ জুলাই পর্যন্ত মধ্য-বার্ষিক জনসংখ্যার ভিত্তিতে)    
উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র (৩০০-৫০০) ৫,৯২৯ ৫,৭৩৪
প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র (২০০০০-৩০০০০) ৪৮,৯৫৬ ৩৫,৬০২
কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র (৮০০০০-১২০০০০) ২০৪,৭৮৬ ১৬৩,২৯৮
আওতাভুক্ত গড় গ্রামীণ এলাকা (বর্গ কিমি)
উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ২৯.৪৯ ১৯.৭৮
প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ২৪৩.৫২ ১২২.৮৪
কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১০১৮.৬৬ ৫৬৩.৪২
আওতাভুক্ত গড় প্রধান দূরত্ব (কিমি)
উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৩.০৬ ২.৫১
প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৮.৮ ৬.২৫
কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১৮ ১৩.৩৯
আওতাভুক্ত গড় গ্রামের সংখ্যা
উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র
প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৪৫ ২৬
কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১৮৯ ১২১
পিএইচসি প্রতি এসএইচসি-এর গড় সংখ্যা
সিএইচসি প্রতি পিএইচসি-এর গড় সংখ্যা

সূত্র: গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিসংখ্যান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক (২০২০-২০২১) 

গ. মানব সম্পদ

বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসা এবং প্যারামেডিকেল কর্মীদের ঘাটতি প্রান্তিক অঞ্চলগুলিতে তীব্রতর। সারণি ৪ ও ৫-এ মধ্যপ্রদেশে মানব সম্পদের ক্ষমতার একটি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

সারণি ৪: মধ্যপ্রদেশের এসএইচসিগুলিতে মানব সম্পদ (২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত) 

  প্রয়োজনীয় (আর)

বরাদ্দ

(এস)

পদে আসীন

(পি)

শূন্য পদ

(এস-পি)

ঘাটতি

(আর-পি)

গ্রামাঞ্চলে  
মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী (এএনএম) ১০,১৮৯ ১০,১৮৯ ৯,৫৮৭ ৬০২ ৬০২
পুরুষ স্বাস্থ্যকর্মী ১০,১৮৯ ৪,২৬০ ২,৫২১ ১,৭৩৯ ৭,৬৬৮
জনজাতি অঞ্চলে  
মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী (এএনএম) ৩,২৪৭ ৩,৫১২ ২,৮৯০ ৬২২ ৩৫৭
পুরুষ স্বাস্থ্যকর্মী ৩,২৪৭ ৬০৬ ৫৭৬ ৩০ ২,৬৭১

সূত্র: গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিসংখ্যান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক (২০২০-২০২১) 

সারণি ৫: মধ্যপ্রদেশের পিএইচসিগুলিতে মানব সম্পদ (২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত) 

 

প্রয়োজনীয়

(আর)

বরাদ্দ

(এস)

পদে আসীন

(পি)

শূন্য পদ

(এস-পি)

ঘাটতি

(আর-পি)

গ্রামাঞ্চলে  
চিকিৎসক ১২৩৪ ১৮৮৭ ১৩০৭ ৫৮০ উদ্বৃত্ত
আয়ুশ চিকিৎসক নেই ৩২৩ নেই
ফার্মাসিস্ট ১২৩৪ ১২৩৪ ৯৬৩ ২৭১ ২৭১
ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান ১২৩৪ ১২৩৪ ৫৮৪ ৬৫০ ৬৫০
নার্সিং স্টাফ ১২৩৪ ১২৩৪ ১৩৩১ উদ্বৃত্ত উদ্বৃত্ত
মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী (এএনএম) ১২৩৪ ২৬৭৮ ২৩৯৪ ২৮৪ উদ্বৃত্ত
স্বাস্থ্য সহায়ক ১২৩৪ ২১২৪ ৬৩১ ১৪৯৩ ১৮৩৭
জনজাতি অঞ্চলে
চিকিৎসক ৩৭৫ ৩৭৫ ৩০৮ ৬৭ ৬৭
আয়ুশ চিকিৎসক ৫৫ ৫৭ উদ্বৃত্ত
ফার্মাসিস্ট ৩৭৫ ৩৭৫ ২২৮ ১৪৭ ১৪৭
ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান ৩৭৫ ৩৭৫ ১৭২ ২০৩ ২০৩
নার্সিং স্টাফ ৩৭৫ ৩৭৫ ২৫৬ ১১৯ ১১৯
মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী (এএনএম) ৩৭৫ ৬৪০ ৬৭৬ উদ্বৃত্ত উদ্বৃত্ত
স্বাস্থ্য সহায়ক ৭৫০ ১৬৩ ১৬১  ২ ৫৮৯

সূত্র: গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিসংখ্যান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক (২০২০-২০২১) 

পুষ্টিতে মনোযোগ

উচ্চ এমএনআর, এনএনআর এবং আইএমআর-এর নেপথ্যে অপুষ্টি এক গুরুত্বপূর্ণ কারণ(২৮) এবং ভারতে হওয়া শিশুমৃত্যুর ৬৮ শতাংশ ঘটে থাকে অপুষ্টির কারণে(২৯)। সাম্প্রতিকতম কম্প্রিহেনসিভ ন্যাশনাল নিউট্রিশন সার্ভে (সিএনএনএস) ২০১৯ অনুযায়ী মধ্যপ্রদেশের শিশু এবং ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সিদের মধ্যে ৩২ শতাংশই মাঝারি থেকে অত্যন্ত রোগা। মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের ঘাটতি অথবা ‘লুক্কায়িত ক্ষুধা’ ২৮.৭ শতাংশ মেয়েদের (১০-১৯ বছর বয়সি) রক্তাল্পতার আকারে প্রভাবিত করে, ৭৪.৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ফোলেটের অভাব এবং ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে (১০-১৯ বছর বয়সি) ২৩ শতাংশ ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি-র অভাব রূপে প্রতিফলিত হয়।(৩০)

একই সঙ্গে, খর্বতা – যা দীর্ঘস্থায়ী অপুষ্টিকে দর্শায় – এনএফএইচএস-৪ এবং পঞ্চম পর্যায়ের মধ্যবর্তী পাঁচ বছরে ৬.৩ শতাংশ বিন্দু হ্রাস পেয়েছে। ক্লান্তি – যা তীব্র অপুষ্টিকেই দর্শায় – একই সময়সীমার মধ্যে ৬.৮ শতাংশ বিন্দু হ্রাস পেয়েছে। তবে সর্বোচ্চ হ্রাস পরিলক্ষিত হয়েছে নিম্ন ওজন সম্পন্ন নবজাতকদের অনুপাতে, যা তীব্র ও দীর্ঘমেয়াদি উভয় ধরনেরই অপুষ্টির পরিচায়ক এবং এই পরিমাণ ছিল ৯.৮ শতাংশ। মহিলাদের মধ্যেও নিম্ন ওজনের সমস্যা এনএফএইচএস-৪-এর ২৮.৪ শতাংশ থেকে এনএফএইচএস-৫-এ ২৩ শতাংশে নেমে এসেছে।

যদিও ভারতের অন্যান্য অংশে্র মতোই এখানেও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ঘাটতির দরুন রক্তাল্পতার ব্যাপকতা স্পষ্ট। রাজ্যব্যাপী ৬ থেকে ৫৯ মাস বয়সি শিশুদের মধ্যে রক্তাল্পতার পরিমাণ ৬৮.৯ শতাংশ (এনএফএইচএস-৪) থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৭২.৭ শতাংশ (এনএফএইচএস৫) হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সময়কালে কমবয়সি শিশুদের পরিপূরক খাদ্যাভ্যাসের অবনতি ঘটেছে। তবে প্রসব-পূর্ববর্তী যত্ন, দ্রুত স্তন্যপানের প্রক্রিয়া শুরু করা, শুধুমাত্র স্তন্যপান, আয়রন ও ফোলিক অ্যাসিড পরিপূরক, ভিটামিন এ পরিপূরক এবং টিকাকরণের মতো দেশের অতি প্রয়োজনীয় পুষ্টি সম্পর্কিত ও সংবেদনশীল পরিষেবাসূচকগুলি এনএফএইচএস-এর সর্বশেষ দু’টি পর্যায়ের মধ্যে উন্নততর হয়েছে।

রাজ্যের পুষ্টিজনিত পরিস্থিতি এবং পুষ্টি যে যে ভাবে এমএমআর, আইএমআর এবং আরএমএন-কে প্রভাবিত করে, তার বিশ্লেষণের জন্য টাস্ক ফোর্সের রিপোর্টে ইউনিসেফের কনসেপচুয়াল ফ্রেমওয়ার্ক ফর ডিটারমিন্যান্টস অফ আন্ডারনিউট্রিশনকে ব্যবহার করা হয়েছে। ফ্রেমওয়ার্কটি মহিলা ও শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির মাত্রাকে দর্শায় এবং অপুষ্টিকে অব্যবহিত, মৌলিক অথবা অনুমতিসূচক ভাগে বিভক্ত করে। এই গবেষণায় বিদ্যমান ডেলিভারি মডেলে উপস্থিত ঘাটতিগুলি পূরণের জন্য নতুন উদ্যোগ এবং পদক্ষেপগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

চিত্র ৬: মধ্যপ্রদেশে এনএমআর, আইএমআর এবং এমএমআর হ্রাসের পুষ্টিগত পথ

সূত্র: মধ্যপ্রদেশে এনএমআর, আইএমআর এবং এনএমআর হ্রাস সংক্রান্ত রিপোর্ট, মধ্যপ্রদেশে এনএমআর, আইএমআর এবং এনএমআর হ্রাসের জন্য গঠিত টাস্ক ফোর্স, দ্য জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট, মধ্যপ্রদেশ সরকার

৩. স্বাস্থ্য পরিসংখ্যানের উপর নজরদারি

স্বাস্থ্য পরিসংখ্যান নজরদারি মধ্যপ্রদেশের জন্য এখনও একটি গুরুত্বপূর্ণ সঙ্কট।(৩১) উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, এই প্রতিবেদনের লেখকরা এনএফএইচএস ২০১৬(৩২)-এর অধীনে ভারতের ৬৪০টি জেলায় নবজাতক, নবজাতকোত্তর এবং শিশু মৃত্যুর প্রিসিশন ওয়েটেড আনুমানিক হার এবং ২০১৯-এর সিভিল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম-এ (সিআরএস) নিবন্ধিত মৃত্যুর ভিত্তিতে শিশুমৃত্যুর হারের তুলনা করেছেন এবং রাজ্যের সব ক’টি জেলায় আনুমানিক শিশুমৃত্যুর সংখ্যা ও নিবন্ধিত সংখ্যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফারাক লক্ষ করেছেন। সকল জেলাব্যাপী শিশুমৃত্যুর গড় শতাংশে ফারাক ছিল ১৬০.২ এবং স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশন বা চ্যুতির পরিমাণ ছিল ৩৫.৪।(ঘ) এই উল্লেখযোগ্য অসঙ্গতি এ কথাই দর্শায় যে, সিআরএস নিখুঁত ভাবে মৃত্যুর ঘটনা নথিবদ্ধ করছে না।

২০১৯-২০ সালে দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ শিশুমৃত্যুর হার এ রাজ্যেই লক্ষ করা গিয়েছে এবং মধ্যপ্রদেশকে এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতেই হবে।(৩৩) উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, সিআরএস ২০১৯-এ বুরহানপুর জেলায় কোনও শিশুমৃত্যুর ঘটনা নিবন্ধিত না হলেও(৩৪) জেলাটির প্রিসিশন ওয়েটেড শিশুমৃত্যুর সূচক ছিল ৪৮.৪।(৩৫) বুরহানপুর, আলিরাজপুর, সিধি, রাইসেন, বারওয়ানি, মন্দসৌর, উমারিয়া, ছত্তরপুর, ভিন্দ এবং মোরেনার মতো জেলাগুলোতে নিবন্ধিত এবং আনুমানিক মৃত্যুর মধ্যে ব্যাপক ফারাক দেখা গিয়েছে। অবিলম্বে এই জেলাগুলিকে সক্রিয় পর্যবেক্ষণের আওতায় আনা প্রয়োজন।

স্টেট ডেটা ট্র্যাকিং সিস্টেম বা রাজ্য তথ্য নজরদারি ব্যবস্থায় ঘাটতি

গোষ্ঠীস্তরে তথ্য সংগ্রহের জন্য মধ্যপ্রদেশে লক্ষ্যভিত্তিক সহায়তা প্রয়োজন। রাজ্যটির ৫১টি জেলার মধ্যে মাত্র ৬টিতে প্রসবের সংখ্যার তুলনায় নিবন্ধিত গর্ভধারণের সংখ্যা বেশি। এর অর্থ হল, হয় ব্যবস্থাটি তথ্য সংযুক্তিকরণের কাজ ধীর গতিতে করছে অথবা সর্বশেষ ব্যবহারকারিরা (সহায়ক নার্স / আয়া /  ধাত্রী বা এএনএম এবং ডেটা এন্ট্রি অপারেটর বা ডিইও) সময়মাফিক তথ্য সংযোজনের কাজ করছেন না। অনমোল মঞ্চের সূচনা সত্ত্বেও নবজাতকের ক্ষেত্রে আনুমানিক শিশুমৃত্যু ও নিবন্ধিত শিশুমৃত্যুর সংখ্যার মধ্যে ফারাক বিদ্যমান। ১৮.৯-এর স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশন বা চ্যুতি-সহ সকল জেলাব্যাপী গড় শতাংশের ফারাক ১৭৪.৪। জেলাগুলিতে প্রতি ১০০০ জন নথিভুক্ত গর্ভবতী মহিলার মধ্যে গড়ে ৩৯৭ এইচআরপিডব্লিউ লক্ষ করা গিয়েছে। একই রকম ভাবে প্রতি ১০০০ প্রসবের মধ্যে ৩৭৩টি ক্ষেত্রে প্রসবের সময় কোনও না কোনও সমস্যা পরিলক্ষিত হয়েছে। টাস্ক ফোর্স এ কথাও উল্লেখ করেছে যে, এএনসি সুবিধার তুলনায় বেশি সংখ্যক ক্ষেত্রে প্রসবজনিত সুবিধার দাবি পূরণ করা হয়েছে। পরিস্থিতি এ কথাই দর্শায় যে, এইচএমআইএস মঞ্চে সময়মাফিক এএনসি পরিসংখ্যান সংযোজনের কাজটি ব্যাহত হয়েছে। (দ্রষ্টব্য চিত্র ৭)

চিত্র ৭: পরিষেবা সুবিধার দাবি বনাম এএনসি সুবিধার দাবি: প্রাপ্ত আন্তঃসম্পর্ক নেতিবাচক

তথ্যসূত্র: আনমোল আরসিএইচ পোর্টাল, ডিবিটি সম্পর্কিত এনএইচএম দ্বারা নথিবদ্ধ রিপোর্ট

চিত্র ৮ক এবং চিত্র ৮খ: মধ্যপ্রদেশের জেলাগুলিতে প্রিসিশন ওয়েটেড আনুমানিক আইএনএমআর বনাম নিবন্ধিত শিশু ও নবজাতক মৃত্যু

তথ্যসূত্র: আনুমানিক আইএমআর: এনএফএইচএস ২০১৬ অনুযায়ী ভারতের ৬৪০টি জেলাতে সদ্যোজাত, সদ্যোজাত-পরবর্তী এবং শিশুমৃত্যুর প্রিসিশন ওয়েটেড আনুমানিক সংখ্যা

নিবন্ধিত মৃত্যু: সিভিল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম ২০১৯-এর ভিত্তিতে ভারতের ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস 

টাস্ক ফোর্স গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলিকে চিহ্নিত করেছে এবং আনমোল মঞ্চের আগামী সংস্করণগুলিতে তথ্যের গুণমান উন্নত করার জন্য সমস্যাগুলির সমাধান করা প্রয়োজন:

·       স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলির ব্লক প্রোগ্রাম ম্যানেজার (বিপিএম) এবং ডিইও-রা হস্তচালিত বা হ্যান্ডহেল্ড অ্যাপ্লিকেশন এবং অনলাইন পোর্টালগুলির মধ্যে তথ্যসমতা বা ডেটা সিঙ্ক্রোনাইজেশনের বিলম্ব সংক্রান্ত এএনএম-এর রিপোর্টের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেছেন। অপেক্ষার এই সময়টি সাধারণত তিন থেকে চার দিন দীর্ঘ হয়।

·       গর্ভবতী মহিলারা একটি সমগ্র(৩৬) আইডি বা পরিচয়পত্র এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যতীত অ্যাপ ব্যবহার করে আনমোল ডেটাবেসে নাম নথিভুক্ত করতে পারেন না। পরিযায়ী শ্রমিকদের মতো একটি বৃহৎ অংশের জনসংখ্যার জন্য এটি একটি উল্লেখযোগ্য সমস্যা।

·       এএনএম আনমোল অ্যাপে গর্ভবতী মহিলার গর্ভধারণের ফলাফল দেখানো হয় না।

·       সুবিধাপ্রাপকদের প্রাপ্য অর্থ পাওয়ার বিলম্ব দূর করতে আনমোল-এ যে পিএফএমএস মঞ্চকে সমন্বিত করা হয়েছিল, সেটিতে অর্থপ্রদানকারী ক্ষুদ্র ব্যাঙ্কগুলির – যাদের আইএফএসসি কোড সিস্টেমে নথিবদ্ধ নেই – লেনদেন স্বীকৃত হয় না। এমনকি ফিনো ব্যাঙ্কের মতো হালনাগাদ করা আইএফএসসি কোড-সহ একাধিক ব্যাঙ্ককেও এই সিস্টেমে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।

·       আনমোল অ্যাপে এএনএম-গুলির ভুল ব্লক ম্যাপিং।

·       যথাযথভাবে অ্যাপ ব্যবহার করার জন্য এএনএম-দের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাব, বিশেষত অ্যাপ আপডেট হওয়ার পর নতুন বৈশিষ্ট্যের ব্যবহারের ক্ষেত্রে।

·       ডিবাগিং বা প্রযুক্তিগত ব্যর্থতা দূরীকরণ সংক্রান্ত যথাযথ সূচনা এবং অ্যাপের মধ্যে একটি ম্যানুয়াল এরর কোডের অভাব।

·       নিবন্ধীকরণের সময় ভুলবশত নিবন্ধিত তথ্য শুধরে নেওয়ার সীমিত সংখ্যক বিকল্প ব্যবস্থা।

·       এমন একটি অ্যাপ সহায়তা ব্যবস্থার অভাব, যেটি ব্যবহারকারীকে সরাসরি অ্যাপের মাধ্যমে তার অভিযোগের কথা জানাতে সাহায্য করবে।

·       প্রশাসনিক সমস্যা: সমগ্র(৩৭) বৈধতার ক্ষেত্রে বিলম্ব, আর্থিক ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থাগুলিতে জন অর্থ ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা বা পাবলিক ফিন্যান্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমকে (পিএফএমএস)(৩৮) বৈধতা প্রদানে বিলম্ব এবং অন্তিম ব্যবহারকারীদের দ্বারা প্রদত্ত ত্রুটিপূর্ণ ও অসম্পূর্ণ ইনপুট।

আন্তঃমঞ্চ সমতা বা ক্রস প্ল্যাটফর্ম সিঙ্ক্রোনাইজেশন সমস্যাগুলিকে হ্রাস করার দু’টি পথ হল – ডেটা পাইপলাইন সিঙ্ক্রোনাইজেশনের কাজগুলির নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং সম্ভাব্য দেরি সংক্রান্ত নোটিফিকেশন পাঠানোর পাশাপাশি সিঙ্ক্রোনাইজেশনের কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সর্বশেষ ব্যবহারকারী বা এন্ড ইউজারদের কনফার্মেশন নোটিফিকেশন পাঠানো। ব্যাক এন্ড থেকে এএনএম ব্লক ম্যাপিংগুলির দ্রুত পরিবর্তন ঘটানোর জন্য এএনএম ব্লক ডিকশনারিকে আপডেট করা যেতে পারে।

চিত্র ৯: টেকও+ ডেটা কোয়ালিটি অ্যাশিয়োরেন্স মডিউল

সূত্র: মধ্যপ্রদেশ এমএমআর, আইএমআর এবং এনএমআর হ্রাসের সংশ্লিষ্ট রিপোর্ট, মধ্যপ্রদেশ এনএমআর, আইএমআর এবং এমএমআর হ্রাসের জন্য গঠিত টাস্ক ফোর্স, সাধারণ প্রশাসন বিভাগ, মধ্যপ্রদেশ সরকার 

রিপোর্টে এই বিষয়েও বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে যে, এন্ড ইউজারদের জন্য যথেষ্ট সংখ্যক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির ব্যবস্থা করা হয়নি। এটিতে সুপারিশ করা হয়েছে যে, মধ্যপ্রদেশ গুজরাতের টেকও প্লাস মঞ্চ থেকে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে।(ঙ) উল্লিখিত মঞ্চটিতে শংসাপত্রের বিকল্প-সহ একটি প্রশিক্ষণ মডিউলের বাস্তবায়ন করা হয়েছে। একটি ফলো-আপ ব্যবস্থা হিসেবে আনমোল একটি বিশেষ কর্মীদলের মাধ্যমে অ্যাপ সহায়তা বজায় রাখার পাশাপাশি একটি টিকেটিং ব্যবস্থা চালু করতে পারে, যেখানে ব্যবহারকারীরা প্রোগ্রামটির যে কোনও সমস্যা বা অস্বাভাবিক আচরণ রিপোর্ট করতে পারবেন। তথ্যের নির্ভুলতা এবং সময়ানুবর্তিতা উন্নত করার জন্য আর একটি বিকল্প হল নিরপেক্ষ তথ্য বৈধকরণ ও যাচাইকরণ ব্যবস্থা (চিত্র ৯-এ গুজরাতের ক্ষেত্রে দেখানো হয়েছে)।

নজরদারি ও বৈধকরণের জন্য তথ্যের লভ্যতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এএনসি এবং এইচআরপিডব্লিউ তথ্য বর্তমানে শুধুমাত্র লাইন লিস্ট ফরম্যাটেই পাওয়া সম্ভব।(চ) বিদ্যমান সূচকগুলির পাশাপাশি ব্লক স্তরে প্রতি ১০০০ জন গর্ভবতী মহিলার ক্ষেত্রে চার বার এএনসি চেক আপ প্রাপ্ত মহিলাদের এবং ডিরেক্ট বেনেফিট ট্রান্সফার (ডিবিটি) দাবি নিষ্পত্তি হারের সমষ্টিগত তথ্যও কাম্য।

৪. অর্থায়নের বাধা

জনস্বাস্থ্য বিমা এখনও ভারতে স্বাস্থ্য পরিষেবার অর্থায়নের প্রধান উৎস।(৩৯) আয়ুষ্মান ভারত প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা (এবি পিএম – জেএওয়াই) সাফল্য পেলেও সমগ্র ব্যবস্থাটিতে বেশ কিছু ঘাটতি লক্ষ করা গিয়েছে, যার ফলে ব্যবহারকারীদের চিকিৎসা পরিষেবার জন্য সামর্থ্যের বাইরে গিয়েও খরচ করতে হয়। সাম্প্রতিক সময়ে স্বাস্থ্য খরচের শতাংশ হিসেবে আউট-অফ-পকেট এক্সপেন্স (ওওপিই) বা সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে খরচের পরিমাণ হ্রাস পেলেও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মাত্রা-সহ ভারত এখনও উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যেই পড়ে।

উদ্ভাবনী স্বাস্থ্য অর্থায়ন সাধন 

ক. পারিবারিক স্বাস্থ্য খাত: মধ্যপ্রদেশ দীন দয়াল স্বাস্থ্য সুরক্ষা পরিষদের আয়ুষ্মান ভারত মধ্যপ্রদেশ নিরাময়ম যোজনার মাধ্যমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের পরিষেবার লভ্যতা বৃদ্ধি করেছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবাকে সকলের জন্য সুলভ করতে হবে। কারণ এটি উচ্চ ওওপিই-এর নেপথ্যে এক প্রধান কারণ। প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবাকে আর্থিক সহায়তা জোগানোর তিনটি ইতিবাচক দিক রয়েছে: প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়ার প্রেক্ষিতে সুবিধাপ্রাপকদের ওওপিই-র আর্থিক ভার লাঘব করা, জেলা হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজগুলির উপর থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের ভার হ্রাস করা এবং অতিরিক্ত ভিড়ের পরিমাণ কমিয়ে জেলা হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজগুলিকে পরিষেবার গুণমান উন্নততর করার সুযোগ প্রদান।

টাস্ক ফোর্স আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল মিশন-এর (এবিডিএম) অংশ হিসেবে একটি ফ্যামিলি হেলথ অ্যাকাউন্ট বা পারিবারিক স্বাস্থ্য খাত সূচনা করার প্রস্তাব দিয়েছে। এই প্রস্তাবনায় সুবিধাপ্রাপকদের ফ্যামিলি হেলথ কার্ডে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা প্রদানের কথা সুনিশ্চিত করার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে, যাতে তাঁরা স্বীকৃত চিকিৎসা কেন্দ্রগুলিতে নগদহীন বা ক্যাশলেস চিকিৎসার সুযোগ পান। এই পদক্ষেপ সুবিধাপ্রাপকদের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা পাওয়ার একাধিক পথ খুলে দেবে এবং এমনটা হলে সরকারি হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসা প্রদানের চাপ হ্রাস পাবে ও সব চিকিৎসা কেন্দ্রে রোগীর সংখ্যার বণ্টনের মধ্যে এক সামঞ্জস্য পরিলক্ষিত হবে।

বিদ্যমান সাক্ষ্যপ্রমাণ দর্শাচ্ছে যে, আউট পেশেন্ট ডিপার্টমেন্ট (ওপিডি) বা বহির্বিভাগের জন্য আর্থিক সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধি ইন পেশেন্ট ডিপার্টমেন্ট (আইপিডি) বা আবাসিক বিভাগের খরচ-সহ হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময়সীমাও উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস করে। এর ফলে হাসপাতালগুলি এবং রাজ্যের সীমিত তৃতীয় স্তরের পরিষেবা প্রদানের ক্ষমতার উপরে চাপের পরিমাণ হ্রাস পায়।

খ. হেলথ আউটকাম ফান্ড: সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের আর একটি পথ হল মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে একটি হেলথ আউটকাম ফান্ডের সূচনা করা। সংশ্লিষ্ট তহবিলের বণ্টন নির্ভর করবে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের উপর। ফলাফলভিত্তিক চুক্তি এবং ইমপ্যাক্ট বন্ডগুলির পরিমাণ আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি করার জন্য আউটকাম ফান্ডগুলির গুরুত্ব ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে এবং এগুলির মাধ্যমে তহবিলের মূল্য, চুক্তি ও অংশীদারদের সংখ্যা এবং পরিষেবা প্রাপকদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা সম্ভবপর। রাজস্থানে এ হেন ইমপ্যাক্ট বন্ডগুলি কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।(৪০)(৪১)

অর্থনৈতিক দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে অকার্যকর প্রকল্পগুলি থেকে তহবিল সরিয়ে এনে প্রমাণ ও যাচাইযোগ্য প্রকল্পগুলিতে বিনিয়োগ করা আউটকাম ফান্ড ব্যবহারের মূল নীতি। এগুলি উদ্ভাবন পদক্ষেপ সংক্রান্ত শিক্ষা এবং / অথবা ফলাফলভিত্তিক অর্থায়নকে ত্বরান্বিত করতে পারে।

৫. প্রশাসনিক দুর্বলতা

মধ্যপ্রদেশকে অবশ্যই তার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলিকে ৯০ শতাংশ বা তারও বেশি ক্ষেত্রে প্রসারিত করতে হবে এবং পরিষেবার গুণমান বৃদ্ধি করতে হবে। অব্যবহিত বাহ্যিক সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি একটি পরিমিত সময়সীমার মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলির মধ্যে বিদ্যমান ফাটলগুলির শনাক্তকরণ ও সমাধানের জন্য সর্ব স্তরে নিয়মিত পর্যালোচনার একটি ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। রাজ্যের বর্তমান পুনর্মূল্যায়ন ব্যবস্থাটি অনিয়মিত এবং অদক্ষ। টাস্ক ফোর্স রিপোর্টে(৪২) প্রশাসনের সশক্তিকরণ এবং রাজ্যের তরফে স্বাস্থ্য পরিষেবাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য পর্যায়ক্রমিক ও সময়োচিত পুনর্মূল্যায়নের সুপারিশ করা হয়েছে।

এই লক্ষ্যে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে:

১. অডিট প্রক্রিয়া এবং সর্বস্তরে ফাটল শনাক্তকরণ; সুদক্ষ এবং কার্যকর ভাবে এই ফাঁকগুলিকে ভরাট করা একটি প্রধান কৌশল।

·       মুখ্যমন্ত্রী দ্বারা প্রধান স্বাস্থ্য সূচক এবং তাদের ফলাফলের মাসিক পর্যালোচনা।

·       কেবল মাত্র স্বাস্থ্যকর্মীদেরই নয়, প্রশাসনিক কর্মীদেরও দায়বদ্ধতা এবং প্রশাসনিক সমস্যাগুলিকে চিহ্নিতকরণ।

·       ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক অর্থাৎ চিফ মেডিকেল অফিসার (সিএমও), ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর এবং মিশন ডিরেক্টর, ন্যাশনাল হেলথ মিশন (এমডি, এনএইচএম) দ্বারা সর্ব স্তরে একটি অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা। সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে যৌথ বৈঠকগুলি সমস্যা সমাধানের মঞ্চ হিসেবে কাজ করতে পারে।

·       পরিকাঠামো, পদ্ধতি এবং রোগীভিত্তিক ফলাফল শনাক্তকারী পরামিতিগুলিকে পর্যবেক্ষণের আওতায় আনতে হবে।

·       চিকিৎসাকেন্দ্র এবং পরিষেবাগুলির কার্যকারিতার মূল্যায়নে বিদ্যমান নীতি এবং পথের (আইএনএপি, আইপিএইচএস মান, লক্ষ্য, সুমান, মুসকান, সম্পর্ক, সমগ্র) ব্যবহার।

·        নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ঘাটতি দূরীকরণ। এই ঘাটতিগুলি পরিকাঠামো, পদ্ধতি এবং ফলাফলের ক্ষেত্রে বিবিধ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

·       রাজ্যের কাছ থেকে অথবা অন্য উপায়ে দক্ষ ও কার্যকরভাবে পর্যাপ্ত পুঁজির জোগান দেওয়া।

·       ব্যবস্থাটির অদক্ষতা দূরীকরণ এবং যত্ন সংক্রান্ত অপব্যয় রোধ করা প্রয়োজন।

·       প্রদানকারীদের দক্ষতা (দক্ষতা পরীক্ষাগার, স্বশিক্ষার মডিউল) এবং কিউআই অনুশীলনগুলি সূচিত করার ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ব্যবস্থা চালু করা। উপযুক্ত পুরস্কার ব্যবস্থা স্থাপন করা।

·       স্বাস্থ্য এবং ডব্লিউসিডি-র অধীনে সমস্ত পরিষেবা সরবরাহের জন্য একটি শক্তিশালী লজিস্টিক ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম প্রতিষ্ঠা করা জরুরি।

·       সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততা প্রচার করা এবং কিশোর ও যুবকদের মধ্যে মানবসম্পদ চিহ্নিত করা ও তাঁদের পরিবর্তনের দূত হিসেবে প্রতিপালন করা।

২. বাহ্যিক পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়ন

·       পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়নের জন্য একটি বহিরাগত বিশেষজ্ঞ দল (স্বাস্থ্য পরিচালনা কমিটি) গঠন করা। এই গোষ্ঠীটি বাহ্যিক র‍্যান্ডম অডিট করে এবং প্রোগ্রাম ও পর্যালোচনা সভায় চিহ্নিত ফাঁকগুলি বন্ধ করার বিষয়টি নিরীক্ষণ করে। এটি রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের কাছে প্রতিক্রিয়া পৌঁছে দেয়।

·       পর্যালোচনা বৈঠকগুলির একটি নির্দিষ্ট সাবসেটে কমিটি অংশগ্রহণ করে এবং পর্যালোচনার মান পর্যবেক্ষণ করে; এটি নিয়মিত মুখ্যমন্ত্রীর পর্যালোচনায় অংশগ্রহণ করে এবং এটি অন্যান্য রাজ্য এবং দেশে সাফল্যের অভিজ্ঞতা এবং তা থেকে উঠে আসা তথ্য প্রমাণের বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করে।

পর্যালোচনা প্রক্রিয়া

রাজ্যটির বিদ্যমান পর্যালোচনা প্রক্রিয়াটি অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং অকার্যকর। ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর, এমডি এনএইচএম এবং মুখ্যমন্ত্রী স্তরে একটি পর্যালোচনা প্রক্রিয়া থাকলেও ব্লক এবং চিকিৎসাকেন্দ্রের স্তরে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রার সূচনা করা আবশ্যিক, যাতে উন্নয়নকামী ক্ষেত্রগুলির উপর মনোনিবেশ করা যায়।

পরিপূরক পন্থা: স্বাস্থ্য পরিষেবাকে মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনা

মধ্যপ্রদেশ মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য পরিস্থিতির সামগ্রিক পরিবর্তন ঘটাতে একটি বহুমুখী কৌশল গ্রহণ করা প্রয়োজন। এ হেন একটি কৌশল শুধুমাত্র স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পদক্ষেপ গ্রহণের উপরেই মনোনিবেশ করবে না, বরং পুষ্টি, জল ও পয়ঃপ্রণালী, লিঙ্গ অসাম্য এবং কন্যাভ্রুণ হত্যা ও গর্ভনিরোধক সংক্রান্ত সচেতনতা ও তার ব্যবহারের মতো অন্য সামাজিক সমস্যাগুলির উপরেও আলোকপাত করবে। সামগ্রিক আরএমএনসিওএইচ প্লাস এ পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। বেসরকারি ক্ষেত্রটি এক ক্রমবর্ধমান ও তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও তা কখনওই সরকার দ্বারা অর্থায়িত, উচ্চ গুণমানসম্পন্ন, সহজলভ্য এবং সুলভ স্বাস্থ্য পরিষেবার জায়গা নিতে পারে না। সুতরাং সরকারি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রটিকে যথোপযুক্ত পরিকাঠামো এবং যোগ্য ও নিবেদিত মানবসম্পদের লভ্যতার নিরিখে সশক্ত করতে হবে। পাশাপাশি, পরিষেবা প্রদানকারীদের দক্ষতা ও সংবেদনশীলতা এবং অর্থায়নের নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহের উপরেও জোর দিতে হবে। স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষমতা বৃদ্ধি, দক্ষ কর্মীদের সশক্তিকরণ ও পুরস্কার প্রদান এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার মতো অন্য পরিপূরক কৌশলগুলিকে পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে ও প্রয়োজনে ব্যাপক ভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে।

ন্যাশনাল হেলথ কেয়ার রিসোর্স রেপোজিটরি কৃত ২০১৯ সালের হেলথ কেয়ার সেনসাস অফ ইন্ডিয়ায় দেখা গিয়েছে যে, মধ্যপ্রদেশে ৬৬,২০৮টি স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র রয়েছে, যেগুলির মধ্যে ১৩,৫৯৫টি (২০ শতাংশ) সরকারি এবং অবশিষ্ট ৫২,৬১৩টি (৮০ শতাংশ) বেসরকারি। চিত্র ১০ দর্শায় যে, দরিদ্র মানুষদের (সর্বনিম্ন স্তরের ৪০ শতাংশ) অর্ধেকেরও বেশি (৫৫ শতাংশ) তাঁদের প্রয়োজন পূরণের জন্য প্রধানত বেসরকারি ক্ষেত্রের উপর নির্ভরশীল (এনএফএইচএস৪)।(৪৩) তাই স্বাস্থ্য ফলাফল উন্নত করতে বেসরকারি ক্ষেত্রকে অবশ্যই সরকারি উদ্যোগের সঙ্গে সংযুক্ত হতে হবে এবং এর জন্য একটি নিয়ন্ত্রক কাঠামো নির্মাণ করতে হবে।

চিত্র ১০: দরিদ্ররা স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়ার জন্য কোথায় যান?

সূত্র: মধ্যপ্রদেশ এমএমআর, আইএমআর এবং এনএমআর হ্রাসের সংশ্লিষ্ট রিপোর্ট, মধ্যপ্রদেশ এনএমআর, আইএমআর এবং এমএমআর হ্রাসের জন্য গঠিত টাস্ক ফোর্স, সাধারণ প্রশাসন বিভাগ, মধ্যপ্রদেশ সরকার

এমপি–জেএওয়াই-সহ একাধিক সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) মডেলগুলি ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত। আনমোল এবং অন্য সরকারি তথ্য মঞ্চগুলি – যেখানে এক বিশাল সংখ্যক প্রসবের ঘটনা নথিভুক্ত হয় – সেগুলির আওতায় অন্তর্ভুক্ত করে এই পদ্ধতিকে আরও শক্তিশালী করা যেতে পারে। প্রশিক্ষণ, মডিউলগুলির পর্যবেক্ষণ এবং অন্য দিকগুলির উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর কাজকে উৎসাহিত করা উচিত।

বর্তমান রিপোর্টটিতে মধ্যপ্রদেশকে এমএনআর, এনএমআর এবং আইএমআর সংক্রান্ত ব্যাপক প্রচেষ্টার লক্ষ্যে সকল উন্নয়ন অংশীদার এবং নাগরিক সমাজের(ছ) সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। লোকহিতৈষণা সম্পদের সৃষ্টি করতে পারে এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও মানবসম্পদের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।

উপসংহার

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে মাতৃ, সদ্যোজাত এবং শিশুমৃত্যুর হার হ্রাসে মধ্যপ্রদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দর্শিয়েছে। তবুও সকলের জন্য সুস্বাস্থ্য এবং সকলের ভাল থাকার এসডিজি৩ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে রাজ্যটিকে এখনও অনেক পথ পেরোতে হবে। সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বাধাগুলিকে তুলে ধরার জন্য এই রিপোর্টে মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যের বাস্তব অবস্থা সংক্রান্ত একাধিক গবেষণার বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

রিপোর্টটিতে স্বাস্থ্য পরিষেবা, স্বাস্থ্য সম্পদ, প্রশাসন, পুষ্টি, অর্থায়ন এবং তথ্য পরিকাঠামোর লভ্যতার মতো একাধিক ক্ষেত্রে গৃহীত নির্দিষ্ট পদক্ষেপকে তুলে ধরা হয়েছে। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিবিধ বিভাগ এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক সরকারি দফতরের মধ্যে সমন্বয় সাধনের চেষ্টা একটি অপরিহার্য বিষয়। প্রজনন, মাতৃ, নবজাতক, শিশু এবং কিশোর স্বাস্থ্য (আরএমএনসিএইচ প্লাস এ) সম্পর্কে শিক্ষা প্রদানের সূচনা মধ্যপ্রদেশের জন্য সহায়ক হতে পারে।

রাজ্যটি কোভিড-১৯ অতিমারি চলাকালীন গঠিত ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটি বা সঙ্কট ব্যবস্থাপনা কমিটি এবং লাডলি লক্ষ্মী প্রকল্পকে কাজে লাগিয়ে আরএমএনসিএইচ প্লাস এ পদক্ষেপের জন্য ভবিষ্যতের একটি গোষ্ঠী নির্মাণে এক বিকেন্দ্রীকৃত ও গণতান্ত্রিক পন্থার সুবিধা নিতে পারে।

রমেশ আগরওয়াল ডব্লিউএইচও (হু) সমন্বিত অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস-এর অধীনে সেন্টার ফর ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ ইন নিউবর্ন কেয়ার-এর অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর।

সিকিম চক্রবর্তী ওআরএফ-এর ডেটা সায়েন্সেস-এর একজন অ্যাসোসিয়েট ফেলো।

সুপর্ণা ঘোষ-জেরাথ দ্য জর্জ ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেলথ ইন্ডিয়ার নিউট্রিশনের প্রোগ্রাম হেড।

শমিকা রবি ওআরএফ-এর ইকোনমিক পলিসি-র ভাইস প্রেসিডেন্ট।


পাদটীকা:

(ক) ২০১৮ সাল থেকে নীতি আয়োগের এসডিজি সূচক উপ-জাতীয় স্তরে এসডিজি ২০৩০-এর লক্ষ্যে ভারতের অগ্রগতির সমষ্টিগত মূল্যায়ন প্রদান করছে। ১৬টি এসডিজি জুড়ে তাদের কর্মক্ষমতার উপর ভিত্তি করে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে চারটি বিভাগে বিভক্ত করা হয়েছে: অ্যাসপির‍্যান্ট (০-৪৯), পারফর্মার (৫০-৬৪), ফ্রন্ট রানার (৬৫-৯৯) এবং অ্যাচিভার (১০০)৷

(খ) মাতৃ ও নবজাতকের মৃত্যুহার হ্রাসের দূরবর্তী, মধ্যবর্তী এবং নিকটবর্তী চালিকা শক্তিগুলির আন্তঃসম্পর্কিত কারণগুলিকে শ্রেণিবদ্ধভাবে ভাগ করার উদ্দেশ্যে আদর্শ পদ্ধতি পরিবর্তনের চালিকা শক্তিগুলিকে চিহ্নিত করার জন্য একটি মিশ্র পদ্ধতির পদক্ষেপের ভিত্তিতে উদাহরণস্বরূপ প্রক্রিয়াটি নির্মিত। ভারত, বাংলাদেশ, ইথিওপিয়া, মরক্কো, নেপাল, নাইজার এবং সেনেগাল এই বৈশ্বিক মাতৃ ও নবজাতকের স্বাস্থ্যের নমুনা গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত সাতটি দেশ। এটি ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর পপুলেশন সায়েন্সেস (আইআইপিএস), ন্যাশনাল হেলথ সিস্টেমস রিসোর্স সেন্টার (এনএইচএসআরসি), ইন্ডিয়া হেলথ অ্যাকশন ট্রাস্ট (আইএইচএটি) এবং ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানিটোবার একটি সহযোগী প্রচেষ্টা।

(গ) ‘প্যারিটি’ হল একজন মহিলার কত বার জীবন্ত নবজাতকের জন্ম (যে কোনও গর্ভাবস্থা) >=৬ মাস /২৪ সপ্তাহে, তা জীবিত বা মৃত প্রসব… যা-ই হোক না কেন।

(ঘ) প্রমিত বিচ্যুতি নির্দেশ করে যে, পার্থক্যগুলি ১২৫% থেকে ১৯৫% পর্যন্ত (সব জেলা জুড়ে খুব বেশি) এবং গড় পার্থক্যটি খুব বেশি তির্যক নয়।

(ঙ) গুজরাতের টেকও+ স্টেট অব হেলথ হল একটি রিয়েল টাইম সমন্বিত স্বাস্থ্য নজরদারি মঞ্চ, যা ২০১৯ সালের এপ্রিল মাস থেকে চালু হয়েছে।

(চ) এর মধ্যে টাটা ট্রাস্টস পিরামল ফাউন্ডেশন এবং মায়েদের জন্য এমএসডি-র মতো প্রতিষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে যাদের এই ক্ষেত্রে ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে।

১) স্যাম্পল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম বুলেটিন, ২০১৯

২) আইএইচএটি, মেটারনাল অ্যান্ড নিওনেটাল হেলথ ইন মধ্যপ্রদেশ: ট্রেন্ডস, ইনসাইটস, স্কোপ

৩) নীতি আয়োগ: স্টেট হেলথ ইনডেক্স রাউন্ড ৪, ২০১৯-২০২০

৪) নীতি: স্টেট হেলথ ইনডেক্স

৫) এসডিজি ইন্ডিয়া ইনডেক্স অ্যান্ড ড্যাশবোর্ড, ২০২০-২১: পার্টনারশিপস ইন দ্য ডেকেড অফ অ্যাকশন, নীতি আয়োগ, ২০২০-২১

৬) আইএইচএটি, মেটারনাল অ্যান্ড নিওনেটাল হেলথ ইন মধ্যপ্রদেশ

৭) আইএইচএটি, মেটারনাল অ্যান্ড নিওনেটাল হেলথ

৮) আইএইচএটি, এমপি

৯) ইন্ডিয়া: মেটারনাল অ্যান্ড নিউ বর্ন হেলথ এক্সেমপ্লার স্টাডি, ন্যাশনাল হেলথ সিস্টেমস রিসোর্স সেন্টার, ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর পপুলেশন সায়েন্সেস, ইন্ডিয়া হেলথ অ্যাকশন ট্রাস্ট, ইউনিভার্সিটি অব মানিতোবা এবং কাউন্টডাউন টু ২০৩০ ফর উইমেনস, চিলড্রেনস অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্টস হেলথ

১০) ইন্ডিয়া: মেটারনাল অ্যান্ড নিউ বর্ন হেলথ এক্সেমপ্লার স্টাডি

১১) ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন (আইএইচএমই), ফাইন্ডিংস ফ্রম দ্য গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ স্টাডি, ২০১৭, সিয়াটল, ডব্লিউএ: আইএইচএমই, ২০১৮

১২) এসআরএস, ২০১৯

১৩) ইন্ডিয়া: মেটারনাল অ্যান্ড নিউবর্ন হেলথ এক্সেম্পলার স্টাডি

১৪) টাস্ক ফোর্স রিপোর্ট অন রিডিউসিং এমএমআর, আইএমআর এবং এনএমআর ইন মধ্যপ্রদেশ

১৫) মঞ্জু টোপ্পো, দীনেশ কুমার পাল, দেবেন্দ্র গৌড়, বীণা মেলওয়ানি, আমরিন খান এবং সৌমিত্র সেথিয়া অ্যাড্রেসিং মেটারনাল মর্টালিটি ইন সিলেক্টেড ডিস্ট্রিক্টস অব মধ্যপ্রদেশ, ইন্ডিয়া – আ হিউম্যান রাইটস বেসড অ্যাপ্রোচ, ইন্ডিয়ান জে কমিউনিটি মেড ২০১৯; ৪৪: ১৩৮৪১

১৬) সিং পি, জন এস: ডিটারমিন্যান্টস অ্যাফেক্টিং ইনফ্যান্ট অ্যান্ড মেটারনাল মর্টালিটি ইন মধ্যপ্রদেশ, আইএনটি জে হেলথ সায়েন্স রিসার্চ, ২০১৭; ৭ (১১): ১৭৬-১৮৪

১৭) কৃষ্ণ প্রকাশ জোশি এবং এস এস কুশওয়া, ‘অ্যান এপিডেমিওলজিক্যাল স্টাডি অব সোশ্যাল ফ্যাক্টরস অ্যাসোসিয়েটেড উইথ মেটারনাল মর্টালিটি ইন আ কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট ব্লক অব মধ্যপ্রদেশ’, ইন্ডিয়ান জার্নাল অব কমিউনিটি হেলথ ২৩ (২০১১): ৭৮-৮০

১৮) রিপোর্ট অন রিডিউসিং এমএমআর, আইএমআর এবং এনএমআর ইন মধ্যপ্রদেশ, টাস্ক ফোর্স অন এনএমআর, আইএমআর এবং এমএমআর রিডাকশন ইন মধ্যপ্রদেশ, দ্য জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট, গভর্নমেন্ট অব মধ্যপ্রদেশ

১৯) টাস্ক ফোর্স রিপোর্ট অন রিডিউসিং এমএমআর, আইএমআর এবং এনএমআর

২০) টাস্ক ফোর্স রিপোর্ট, ২-১০

২১) আইএনএপি: ইন্ডিয়া নিউ বর্ন অ্যাকশন প্ল্যান, মিনিস্ট্রি অব হেলথ অ্যান্ড ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার, ২০১৪

২২) টাস্ক ফোর্স রিপোর্ট, ১০-১৮

২৩) বালি, সূর্য অ্যান্ড রেড্ডি, ভেঙ্কটশিবা (২০১৮), ইভ্যালুয়েশন অব কম্পিটেন্সি অ্যান্ড স্কিলস অব স্কিলড বার্থ অ্যাটেনড্যান্টস ইন মধ্যপ্রদেশ, সেন্ট্রাল ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান জার্নাল অব পাবলিক হেলথ, ৬২, ৬১-৬৪, ১০.৪১০৩ / আইজেপিএইচ ডট আইজেপিএইচ ৩৩২ ১৬

২৪) টাস্ক ফোর্স রিপোর্ট, ১৮-৩৬

২৫) এনএফএইচএস ৫, ২০১৯-২১

২৬) এনএফএইচএস ৫

২৭) রুরাল হেলথ স্ট্যাটিস্টিকস, মিনিস্ট্রি অব হেলথ অ্যান্ড ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার, ২০২০-২১

২৮) টাস্ক ফোর্স রিপোর্ট, ২৬-৫৭

২৯) রাখি দান্দোনা প্রমুখ (২০২০), সাবন্যাশনাল ম্যাপিং অফ আন্ডার-৫ অ্যান্ড নিয়োনেটাল মর্টালিটি ট্রেন্ডস ইন ইন্ডিয়া: দ্য গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ স্টাডি ২০০০-১৭, দ্য ল্যান্সেট, ৩৯৫ (১০২৩৭), ১৬৪০-১৬৫৮

৩০) মিনিস্ট্রি অব হেলথ অ্যান্ড ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার (এমওএইচএফডব্লিউ), গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া, ইউনিসেফ অ্যান্ড পপুলেশন কাউন্সিল কম্প্রিহেনসিভ ন্যাশনাল নিউট্রিশন সার্ভে (সিএনএনএস) ন্যাশনাল রিপোর্ট, ২০১৯

৩১) টাস্ক ফোর্স রিপোর্ট, ৫৭-৭০

৩২) রকলি কিম, লাথান লিউ, ইয়ুন ঝু, রাকেশ কুমার, জর্জ লেকি, মুদিত কপূর, আর ভেঙ্কটরামনন, অলোক কুমার, উইলিয়াম জো এবং এস ভি সুব্রহ্মণ্যম, প্রিসিশন-ওয়েটেড এস্টিমেটস অব নিয়োনেটাল, পোস্ট-নিয়োনেটাল অ্যান্ড চাইল্ড মর্টালিটি ফর ৬৪০ ডিস্ট্রিক্টস ইন ইন্ডিয়া, ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে ২০১৬, জার্নাল অব গ্লোবাল হেলথ, ১০ (২), ০২০৪০৫

৩৩) এসআরএস

৩৪) ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস অফ ইন্ডিয়া বেসড অন দ্য সিভিল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম, ২০১৯

৩৫) কিম, প্রিসিশন-ওয়েটেড এস্টিমেটস অব নিয়োনেটাল, পোস্ট-নিয়োনেটাল অ্যান্ড চাইল্ড মর্টালিটি ফর ৬৪০ ডিস্ট্রিক্টস ইন ইন্ডিয়া, ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে ২০১৬

৩৬) সমগ্র সামাজিক সুরক্ষা মিশন, গভর্নমেন্ট অব মধ্যপ্রদেশ

৩৭) সমগ্র, মধ্যপ্রদেশ

৩৮) পাবলিক ফিন্যান্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম – পিএফএমএস, মিনিস্ট্রি অব ফিন্যান্স

৩৯) টাস্ক ফোর্স রিপোর্ট, ৭০-৭৯

৪০) দ্য উৎকৃষ্ট ইমপ্যাক্ট বন্ড

৪১) ইজি বগিল্ড-জোনস অ্যান্ড এমিলি গুস্তাফসন-রাইট, ‘ওয়ার্ল্ডস ফার্স্ট ডেভেলপমেন্ট ইমপ্যাক্ট বন্ড ফর এডুকেশন শোজ সাকসেসফুল অ্যাচিভমেন্ট অফ আউটকামস ইন ইটস ফাইনাল ইয়ার’, জুলাই ১৩, ২০১৮

৪২) টাস্ক ফোর্স রিপোর্ট, ৭৯-৮৭

৪৩) ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে, ইন্ডিয়া, ২০১৫-১৬

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Authors

Ramesh Agarwal

Ramesh Agarwal

Ramesh Agarwal is Associate Professor WHO Collaborating Centre for Training and Research in Newborn Care All India Institute of Medical Sciences.

Read More +
Sikim Chakraborty

Sikim Chakraborty

Sikim Chakraborty is an Associate FellowData Sciences at ORF. His research interests are machine learning and information retrieval.

Read More +
Suparna Ghosh-Jerath

Suparna Ghosh-Jerath

Suparna Ghosh-Jerath is Program Head for Nutrition at The George Institute for Global Health India.

Read More +