Author : Jhanvi Tripathi

Published on Nov 29, 2024 Updated 0 Hours ago

ট্রাম্পের প্রস্তাবিত নতুন শুল্ক মার্কিন অর্থনীতির পাশাপাশি মার্কিন ডলার দিয়ে বাণিজ্যের উপর নির্ভরশীল অন্য দেশগুলিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

ট্রাম্প ২.০ জমানায় বাণিজ্য

এই প্রতিবেদনটি ‘রিইগনাইটেড অ্যাজেন্ডাস: ট্রাম্প’স রিটার্ন অ্যান্ড ইটস গ্লোবাল রিপারকেশন’ সিরিজের অংশ।



ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর সেফোলজিস্টরা ঘরে ফিরে গিয়েছেন নতুন করে ভাবনাচিন্তা করতে। তাঁর এত বড় রায় নিয়ে ফিরে আসা ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের একটি  শক্তিশালী প্রতীক, এবং দেশীয় উদ্বেগ বিসর্জন দেওয়ার মূল্যে তৈরি মার্কিন বিদেশনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। এই নির্বাচনী চক্রে এগুলিই ছিল রিপাবলিকান প্ল্যাটফর্মের প্রচারের মূলবিন্দু।

ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনে
শেয়ার বাজারের উত্থান দেখায় যে এটি নীতির এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে তাঁর প্রশাসনের সম্ভবত সর্বাধিক স্বচ্ছতা ছিল। কী হতে চলেছে তার ইঙ্গিত পেতে 'আমেরিকা ফার্স্ট' ততটাই সহজ-‌সরল, যতটা হওয়া সম্ভব। এটি একটি প্রাচীন নিয়ম যে বিনিয়োগকারীদের আস্থা নীতিগত নিশ্চয়তার দ্বারা প্রভাবিত হয়, বাজারের পক্ষে হোক বা অন্যথায়। গত কয়েক মাস ধরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প খুব স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তিনি সমস্ত ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ শুল্ক বাড়াতে চান, এবং চিনের জন্য অতিরিক্ত ৬০ শতাংশ। বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে সমঝোতার আলোচনার কিছু নম্র প্রয়াস সত্ত্বেও বাইডেনের বছরগুলিও নাটকীয়ভাবে ট্রাম্পের বাণিজ্য সিদ্ধান্তগুলির কোনওটিই বদলে দেয়নি। ট্রাম্প ১.০ থেকে শুল্কের ভবিষ্যদ্বাণীকৃত মূল্যস্ফীতিমূলক প্রভাবগুলিও কখনই চমকপ্রদ পরিমাণে বাস্তবায়িত হয়নি। শুল্ক অব্যাহত ছিল এবং কখনও কখনও বাইডেন প্রেসিডেন্সির সময় আরও বাড়ানো হয়েছিল।


প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প খুব স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তিনি সমস্ত ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ শুল্ক বাড়াতে চান, এবং চিনের জন্য অতিরিক্ত ৬০ শতাংশ।



সম্ভবত আগামী রিপাবলিকান প্রশাসন এই বিষয়ে সচেতন যে সব ক্ষেত্রে উচ্চ শুল্ক ‘‌আপনার প্রতিবেশী ভিক্ষুক’‌ নয়, বরং ‘‌আপনি নিজে ভিক্ষুক’‌ কৌশল। ইতিমধ্যেই বিপর্যস্ত আমেরিকান মধ্যবিত্তেরা জীবনযাত্রার ব্যতিক্রমী উচ্চ ব্যয়ের সঙ্গে লড়াই করছেন, এবং তাঁরা দেশে উচ্চ খরচে উৎপাদনরত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু শিল্পপতির সুবিধার জন্য উচ্চ শুল্কের মূল্য দিতে পারবেন না। নির্ভরতা হ্রাসের দৃষ্টিকোণ থেকে চিনের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়া স্বল্প মেয়াদে একটি ভাল ঘটনা হতে পারে। কিন্তু যদি এর উপর অতিরিক্তভাবে নির্ভর করা হয়, তাহলে এই শুল্কগুলি চিনা আমদানির সঠিক বিকল্প না-‌থাকলে সাধারণভাবে বাণিজ্যকে অস্থিতিশীল করে তুলবে। কার্বন বর্ডার অ্যাডজাস্টমেন্ট মেকানিজম (সিবিএএম) এবং এই উচ্চ মার্কিন শুল্কের হুমকির সঙ্গে পশ্চিম ‘‌ব্যবসায়ের জন্য খারাপ’‌ হয়ে পড়ছে, এবং সব মিলিয়ে আমাদের জন্য একটি পরিপূর্ণ বাণিজ্য সংকট অপেক্ষা করছে বলে মনে হচ্ছে।

চিনের বিরুদ্ধে ৩০১ ধারার শুল্কের কথা এখানে উল্লেখ করা আকর্ষণীয়, কারণ তা বাইডেন জমানায় অব্যাহত ছিল। চিত্র ১-এ দেখা যাচ্ছে, চিন থেকে যে আমদানিগুলি ৩০১ ধারার শুল্কের অধীন ছিল না সেগুলি স্থির ছিল, এবং যেগুলি শুল্কের অধীন সেগুলি সামান্য হ্রাস পেয়েছে৷ এদিকে, চিত্র ২ দেখায় যে, ট্রাম্পের থেকে বাইডেন প্রশাসনের মধ্যে হাতবদলের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্য নেতিবাচক ছিল, এমনকি ২০২১ থেকে ২০২২-এর কোভিড-১৯ অতিমারি-‌পরবর্তী সময়ে তা বেড়েছিল। এইভাবে, চিনের উপর নির্ভরতার সীমিত হ্রাসের বাইরে শুল্কের প্রভাব নিয়ে সংশয় রয়েছে।

চিত্র ১: ৩০১ ধারা সাপেক্ষে আমদানি শুল্ক প্রাক-বাণিজ্য যুদ্ধের স্তরের নিচে থাকে
 Trade In The Time Of Trump 2 0
সূত্র:
ট্যাক্সফাউন্ডেশন

চিত্র ২: ২০১৯ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত আমেরিকা-চিন ব্যালান্স অফ ট্রেড
 Trade In The Time Of Trump 2 0
সূত্র:
আইটিসি ট্রেড ম্যাপ ডেটার উপর ভিত্তি করে লেখকের গণনা

এই সত্যে কিছুটা স্বস্তি রয়েছে যে প্রত্যাবর্তনকারী প্রেসিডেন্টের 'ডিল মেকিং' প্রবণতা আশাপ্রদভাবে মার্কিন বাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করা শুল্কগুলিকে সীমিত করবে, অথবা দ্বিপাক্ষিক চুক্তির ভিত্তিতে শুল্কগুলি হ্রাস করা হবে। বাণিজ্যের বিপরীতে উদ্দেশ্যের স্পষ্টতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যনীতির দৃষ্টিকোণ সম্পর্কে স্বচ্ছতা তৈরি করে। ভুলে গেলে চলবে না যে ট্রাম্পের বছরগুলিতেই মার্কিন-ভারত বাণিজ্য চুক্তির প্রথম প্রচেষ্টা হয়েছিল। ওভাল অফিসে যারাই বসে থাকুক না কেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভারত একটি স্থিতিশীল বাণিজ্য অংশীদার। চিনের উপর অত্যধিক নির্ভরশীলতা থেকে সরবরাহ শৃঙ্খলকে ঝুঁকিমুক্ত করার বাস্তব প্রয়োজনীয়তা মার্কিন-ভারত ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য সম্পর্কের পক্ষেও কাজ করবে।

মূল্যস্ফীতির প্রশ্ন
 
প্রতিশ্রুত শুল্কগুলি মার্কিন মূল্যস্ফীতির উপর যে প্রভাব ফেলবে তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা অবশ্যই মনে রাখা উচিত।
ফেডারেল রিজার্ভ-‌এর করা একটি সমীক্ষা অনুসারে, ২০১৯ সালে প্রথম কয়েকটি ক্ষেত্রে শুল্কবৃদ্ধির কারণে কারখানা থেকে বেরনোর সময় পণ্যগুলির দাম ৪.১ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল।

ইউএস কাউন্সিল অফ ইকনমিক অ্যাডভাইজারস (সিইএ)-‌এর গবেষণাগুলিও এমন কথা উল্লেখ করেছে যা প্রমাণ করে যে সার্বিকভাবে শুল্কবৃদ্ধির ফলে কমপক্ষে ০.৭৫ শতাংশ পয়েন্টের মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি হয়। বর্ধিত উৎপাদন খরচ দেশীয় নির্মাতাদের দক্ষতাও হ্রাস করে, যা আমেরিকা ফার্স্ট নীতি যা অর্জনের চেষ্টা করছে তার বিপরীত।


ডলারের মূল্যহ্রাসের কারণে ঋণের আসন্ন সংকট উদীয়মান অর্থনীতিগুলির জন্য বিধ্বংসী পরিণতি ডেকে আনতে পারে, বিশেষ করে যারা মার্কিন ডলারের স্থিতিশীলতার উপর নির্ভরশীল



এটি বাকি বিশ্বের জন্য উদ্বেগজনক, কারণ এটি ডলারের রিজার্ভ দিয়ে বাণিজ্য করে এমন দেশগুলির ক্রয়ক্ষমতাকে প্রভাবিত করবে। ডলারের মূল্যহ্রাসের কারণে ঋণের আসন্ন সংকট উদীয়মান অর্থনীতিগুলির জন্য বিধ্বংসী পরিণতি ডেকে আনতে পারে, বিশেষ করে যারা মার্কিন ডলারের স্থিতিশীলতার উপর নির্ভরশীল।

যদিও শুল্ক বৃদ্ধি অনিবার্য হতে পারে, তবে আমরা আশা করতে পারি যে ঠান্ডা মাথায় সব কিছু ভাবা হবে এবং আলোচনার জন্য জায়গা খুলে রেখে শুল্ক বৃদ্ধি ধীরে ধীরে হবে। ট্রাম্পের প্রথম বছরগুলিতে এমনটাই করা হয়েছিল, এবং তার ফলে (অন্যদের মধ্যে) অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও কানাডার মতো দেশগুলি
ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামে চড়া শুল্কের
থেকে কিছুটা ছাড় পেয়েছিল।

এরপর কী?

সামগ্রিকভাবে, শুল্ক আরোপ এবং অভ্যন্তরীণ করবিরতি সম্পর্কে অন্যদের কিছুই করার নেই। কারণ মার্কিন প্রশাসন গত ১৫ বছরে প্রকাশ্যভাবে সুরক্ষাবাদী বাণিজ্যের একমাত্র প্রতিরোধক সংস্থা ওয়র্ল্ড ট্রেড অরগানাইজেশন (ডব্লিউটিও)-‌এর বিরোধ নিষ্পত্তি ক্ষমতাকে পঙ্গু করে দিয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য এখন পারস্পরিক স্বার্থ কতটা ভালভাবে পূরিত হবে, এবং অবশ্যই, 'দ্য আর্ট অফ দ্য ডিল'-‌এর উপর নির্ভর করছে ।



জাহ্নবী ত্রিপাঠী অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (ওআরএফ) জিওইকোনমিক্স প্রোগ্রামের একজন অ্যাসোসিয়েট ফেলো।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.