Author : Chen Xi

Published on May 04, 2023 Updated 0 Hours ago

ডিজিটালকরণ এবং ডিজিটাল সাক্ষরতা ভবিষ্যতের শহরগুলির মেরুদণ্ড হতে চলেছে

শহরাঞ্চলে স্থিতিস্থাপকতা এবং সামাজিক সুস্থতার জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলির শহরভিত্তিক বিনিয়োগ আকর্ষণের ভবিষ্যত পথনির্দেশিকা

প্রতিবন্ধকতা: একটি সোজাসাপটা, বাস্তববাদী এবং পদ্ধতিগত পন্থার প্রয়োজনীয়তা

শহরাঞ্চলে স্থিতিস্থাপকতা সাধারণত বৃষ্টি, বন্যা, অতিমারি, উৎপাদন সংক্রান্ত দুর্ঘটনা, সন্ত্রাস, বিদ্যুতের অভাব বা ঘন ঘন ট্রাফিক জ্যাম-সহ দুর্যোগ বা আকস্মিক ঘটনা থেকে পুনরুদ্ধারের সক্ষমতাকেই দর্শায়। শহুরে স্থিতিস্থাপকতাকে উন্নত করার প্রক্রিয়াগুলি নাগরিকদের সামাজিক সুস্থতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, স্পঞ্জ সিটির সুবিধার্থে শহুরে এবং দেশীয় পার্ক; আপৎকালীন ক্ষেত্রে এবং আদেশমূলক ব্যবস্থার দ্রুত প্রতিক্রিয়ার সুবিধার্থে শহরের মস্তিষ্ক ও সর্বব্যাপী সেন্সিং ব্যবস্থা; এর পাশাপাশি সুবিধাজনক গতিশীলতা প্রদানকারী ব্যবস্থা স্যাটেলাইট শহরগুলিকে মেট্রোপলিটনগুলির সঙ্গে সংযুক্ত করে৷

বর্তমানে সমস্যাগুলি আমাদের শহুরে স্থিতিস্থাপকতার নিরিখে আদৌ প্রয়োজন কি না, শুধু তাতেও সীমাবদ্ধ নেই। বিশুদ্ধভাবে তাত্ত্বিক বা শিক্ষাগত আলোচনা এবং বিপুল সংখ্যক সদৃশ বা বিচ্ছিন্ন প্রকল্পগুলিকে এড়িয়ে চলার মাধ্যমে বরং কীভাবে এটিকে সোজাসাপটা, বাস্তবসম্মত এবং পদ্ধতিগত পন্থায় সহজতর করে তোলা যায়, সে বিষয়ে নজর দিতে হবে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার কানেক্টিভিটি অ্যালায়েন্স (জিকা) দ্বারা বিশ্বব্যাঙ্কের নেতৃত্বাধীন পরিবহণ করিডোর পরিকল্পনায় একটি বাস্তব কর্মসূচির অভাব রয়েছে।

পদ্ধতি: একাধিক পরিকাঠামোর সমন্বিতকরণ

প্রথাগত পরিকাঠামো মূলত শহুরে ব্যবসাকে বোঝায়, যেমন রেল ট্রানজিট, জ্বালানি, জনস্বাস্থ্য এবং জরুরি ব্যবস্থাপনা। এই ব্যবসাগুলি আমাদের দৈনন্দিন জীবন এবং শহুরে কার্যক্রমের গ্যারান্টি প্রদান করে। ডিজিটাল পরিকাঠামোর মধ্যে রয়েছে বেতার ও তারযুক্ত যোগাযোগ শৃঙ্খল বা সর্বব্যাপী সেন্সিং নেটওয়ার্কের পাশাপাশি মানুষ ও জিনিসগুলিকে সংযুক্ত করার জন্য বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন। এই প্রযুক্তিগুলি উচ্চ মানের জীবনযাত্রা এবং দক্ষ নগর ব্যবস্থাপনা প্রদান করে। প্রাতিষ্ঠানিক পরিকাঠামো প্রধানত সেই সকল প্রশাসনিক ব্যবস্থাকেই দর্শায়, যেগুলি ডিজিটাল বৃহৎ শক্তি এবং এমএসএমই-র বুদ্ধিবৃত্তি সম্পত্তি ও তাদের সুরক্ষার পাশাপাশি সালিশি ও যুক্তিসঙ্গত তথ্য প্রবাহের উপর নজরদারি চালায়। প্রাতিষ্ঠানিক পরিকাঠামো চিরাচরিত এবং ডিজিটাল পরিকাঠামোর সংযোগকে সক্রিয় করে। পরবর্তী ক্ষেত্রে উপকূলীয় বা অফশোর আর্থিক পরিকাঠামো বাজারের চাহিদা মেটাতে বা প্রাসঙ্গিক পরিকাঠামোয় অর্থায়নের জন্য মূলধন প্রবাহের নিশ্চয়তা প্রদান করে।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে একক শহরের বাইরে আন্তঃসীমান্ত সমাধানগুলিও খতিয়ে দেখা হয়েছে। বিচ্ছিন্ন দ্বীপ বা দূরবর্তী পশ্চিমাঞ্চলকে সমন্বিত করার মাধ্যমে একটি বৃহৎ বাজার সূচক বিশ্বব্যাপী সরবরাহকারীদের জন্য আকর্ষক এবং সেটি পুঁজি বাজারকে অনুঘটক হিসেবে কাজে লাগায়। এর পাশাপাশি ‘প্রথমে নোড শহরগুলি এবং তার পর করিডোর’ নীতি গ্রহণের মাধ্যমে ম্যাক্রো স্তরে করিডোর উন্নয়নের উপর অতিরিক্ত জোর দেওয়ার বিষয়টি রদ করা হয়েছে।

শহর স্তরে বা অঞ্চল পর্যায়ে বিক্ষিপ্ত এবং সম্পৃক্ত কর্মসূচির সেন্সর বা ব্যবস্থা এড়াতে যে কৌশলগুলিই গ্রহণ করা হোক না কেন, ‘কেন্দ্রীকৃত নির্মাণ এবং পরিকাঠামো ভাগ করে নেওয়া’, ‘শহুরে সমন্বয়’-সহ পরিকল্পনা নীতিগুলির একটি ধারা অনুসরণ করতে হবে। ‘ব্যবসা, আইসিটি (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি) এবং কার্যকরণ প্রক্রিয়া”, এবং ‘পরিকল্পনা, বিনিয়োগ, নির্মাণ এবং কার্যপ্রণালির সমস্ত জীবনচক্র’গুলির উপর নজর দিতে হবে।

উপরোক্ত যে কোনও পদ্ধতির ক্ষেত্রেই উচ্চ মানের শীর্ষ স্তরের স্মার্ট সিটি পরিকল্পনা অপরিহার্য। এই নিবন্ধে উল্লিখিত এবং প্রস্তাবিত উপায় ও পদ্ধতিগুলি এশিয়াজ স্মার্ট সিটি কোয়ার্টারলি রিভিউ-ওয়েস্ট এশিয়ায় প্রকাশিত কেস স্টাডি দ্বারা প্রামাণ্য হতে হবে।

কেস স্টাডি

আগামী কয়েক দশকে এশিয়া বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে তুলবে এবং এই নিবন্ধে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে দু’টি সম্ভাব্য পরিস্থিতি আলোচনা করা হয়েছে।

পশ্চিম এশিয়ার শহরগুলির ক্ষেত্রে কৌশলটিতে করিডোরকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, রিয়াধ-মানামা/দোহা/আবুধাবি-মাস্কাট-দু’রকমের পথ বা বেইরুট/ত্রিপোলি/হাইফা-দামাস্কাস-আম্মান-আকাবা-জেদ্দা-জাজানের পথ। আরব উপদ্বীপের বিচ্ছিন্ন শহরগুলিকে সংযুক্ত করার চাবিকাঠি হল রেল সংযোগ ব্যবস্থা। বৈশ্বিক পুঁজি বিক্ষিপ্ত প্রকল্পের পরিবর্তে পদ্ধতিগতভাবে পরিকল্পিত অঞ্চলে প্রবাহিত হবে। কারণ এমনটা হলে অপেক্ষাকৃত কম সম্পদ খরচ করে দীর্ঘমেয়াদে তাদের স্বার্থ সুনিশ্চিত করা যাবে।

বাস্তবসম্মত পথনির্দেশিকা অনুযায়ী হিন্দুকুশ পর্বত থেকে আরব সাগর পর্যন্ত বহু পরিকাঠামো নির্মাণ করা হবে। বিশাল রেল সংযোগ ব্যবস্থা এবং ফাইবার অপটিক্যাল কমিউনিকেশন নেটওয়ার্কের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্মপদ্ধতি অবিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার ঝুঁকিগুলিকে ঢেকে দেওয়ার জন্য একটি বৃহৎ বাজার নির্মাণ করবে। নোড শহরগুলিতে প্রকল্পগুলি আগে শুরু হতে পারে, এবং তার পর তা বৃহৎ এলাকায় প্রসারিত করা যেতে পারে। মূলত কোনও ধরনের প্রযুক্তিগত পরিকল্পনা বা নির্মাণ আমাদের সম্মুখে প্রতিবন্ধকতা নয়।

নিরাপত্তার কারণে যদি উপসাগরীয় অর্থনীতি ইরান বা মধ্য এশিয়াকে সমন্বিত করা না যায়, তা ফলস্বরূপ সমগ্র এশিয়াকে প্রভাবিত করে। এক দিকে, এ ক্ষেত্রে এই অঞ্চলের প্রধান অর্থনীতিগুলির সদিচ্ছা প্রয়োজন এবং সেটিই মূল চাবিকাঠি। অন্য দিকে ভাগ্যক্রমে, এশিয়ায় শক্তিশালী এবং অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন সদস্য এবং নেতা রয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ার শহরগুলির জন্য, যেখানে প্রধান উদ্বেগ হল ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং বড় শহরগুলিতে কর্মসংস্থান, সেখানে ‘নোড-শহরগুলির প্রথমে করিডোর দ্বারা অনুসরণ করা’র কৌশল প্রস্তাব করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, চট্টগ্রামের আঞ্চলিক টেক্সটাইল কেন্দ্র (২০২১ সালে জনসংখ্যা: ৬.৬ মিলিয়নের বেশি) এবং কলকাতা (জনসংখ্যা: প্রত্যাশিত ১৮ মিলিয়নেরও বেশি, চলমান ২০২১ সালের আদমসুমারির অনুমান অনুযায়ী) আকাশছোঁয়া জনসংখ্যা শহুরে রোগ এবং কর্মসংস্থানের উদ্বেগকে বাড়িয়ে তোলে।

প্রথমত, চিরাচরিতভাবে শক্তিশালী শিল্পগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। চট্টগ্রাম এবং কলকাতায় বয়ন পণ্যের বিপণন ও উত্পাদন প্রক্রিয়াগুলিতে ই-কমার্স এবং ডিজিটাল লজিস্টিক প্রয়োগ করা জরুরি। শহরতলি এলাকায় লজিস্টিক কেন্দ্রগুলির পরিকল্পনা ও নির্মাণ করা যেতে পারে, যাতে সেগুলিকে সুন্দরবন রেলওয়ে বা আন্তঃনগর রেল নেটওয়ার্কগুলির মাধ্যমে বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলির সঙ্গে সংযুক্ত করে মানুষদের কাজ এবং সেখানে বসবাসের যোগ্য করে তোলা যায়।

দ্বিতীয়ত, ডিজিটাল সাক্ষরতা বৃদ্ধি। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সঙ্গে দর কষাকষির ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য গ্রামে গ্রামে কৃষি উৎপাদন বা বিক্রয় সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা যেতে পারে। ইলেকট্রনিক মেডিকেল রেকর্ডের কাজ হল শহরতলি বা গ্রামীণ সম্প্রদায়ের হাসপাতাল এবং তৃণমূল স্তরে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা। কৃষি বা স্বাস্থ্যে অপটিক-ফাইবার বা ফোরজি যোগাযোগ-সহ মৌলিক সুবিধাগুলি জুনোটিক রোগ এবং প্রকৃতি সংরক্ষণ পরিদর্শনের তথ্য ভাগ করার কাজে ব্যবহৃত হয়। এই ডিজিটালকৃত স্বাস্থ্য, খাদ্য এবং বাস্তুতন্ত্র শুধুমাত্র ঘন জনসংখ্যাকে স্থানান্তরিত করে শহরের কেন্দ্রস্থলের বাইরে একটি শালীন জীবনযাপনই প্রদান করে না, তার পাশাপাশি ডিজিটাল বিভাজনের মাঝে সেতু নির্মাণও করে।

তৃতীয়ত, এমএসএমইগুলির (ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি উদ্যোগ) লালন-পালনের জন্য ডিজিটাল পরিকাঠামো তৈরি করা। একটি জাদুঘর শহর হিসাবে কলকাতা পর্যটনকে উদ্দীপিত করার উদ্দেশ্যে দূরবর্তী হিউম্যান-মেশিন-ইন্টার‍্যাকশন ব্যবস্থাকে লালন করার উদ্দেশ্যে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড স্থাপন করতে পারে। সর্বোপরি বাংলাদেশ-চিন-ভারত-মায়ানমার (বিসিআইএম) করিডোর, ডিইপিএ (ডিজিটাল ইকনমি পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট), সিপিটিপিপি-এর (কম্প্রিহেনসিভ অ্যান্ড প্রোগ্রেসিভ এগ্রিমেন্ট ফর ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ) উল্লেখ-সহ বাংলাদেশের শহরগুলিতে যৌথভাবে ডিজিটালি সর্বাধিক পছন্দের নীতিগুলিকে বা তার চেয়ে ভাল গুণমানে গড়ে তোলার ব্যাপারে উত্সাহ প্রদান করা হয়।

সর্বোপরি এটি আর্থিক বিভাগের জন্য সুযোগ তৈরি করে দেয়। ডিজিটালকৃত স্বাস্থ্য, কৃষি এবং বাণিজ্যিক বাস্তুতন্ত্র দ্বারা উত্পাদিত তথ্য একটি প্রাথমিক তথ্যভিত্তিক নীতি নির্ধারণ ব্যবস্থা তৈরি করতে পারে এবং তথ্য সংস্থানগুলির মূলধনের ভিত্তি নির্মাণ করতে পারে। এর ফলস্বরূপ একটি ঋণ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে, যা ছোট ঋণের বন্ধকী হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়াও উচ্চ মানের চাকরির পূর্বশর্ত হল ডিজিটাল সাক্ষরতা বৃদ্ধি। এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক (এআইআইবি), ব্রিকসের জন্য নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক বা বিশ্বব্যাপী মাঝারি বা ছোট ব্যাঙ্কগুলি-সহ আন্তর্জাতিক বহুপাক্ষিক এবং বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি এই অঞ্চলস্থিত মুক্ত বাজারে বিনিয়োগের নিরিখে আকৃষ্ট হতে পারে।

উপসংহার

এখানে শহুরে স্থিতিস্থাপকতা, সামাজিক সুস্থতা এবং বৈশ্বিক পুঁজিকে পথ দেখানোর জন্য একটি সমন্বিত কর্মসূচিমূলক পথনির্দেশিকা উপস্থাপন করা হয়েছে। এই উদ্দেশ্য সাধন করার জন্য জি২০-র অধীনে একটি নির্দেশিকা প্যানেলের প্রয়োজন হতে পারে। এশিয়ার সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের অবশ্যই স্পষ্টত উপলব্ধি করতে হবে যে, দীর্ঘ পথ এখনও পাড়ি দেওয়া বাকি। সকলে একসঙ্গে কাজ না করতে পারলে এশিয়ার শতক কবে আসবে, তা কল্পনা করা দুরূহ হয়ে দাঁড়াবে।


এই প্রতিবেদনটি জি২০-থিঙ্ক২০ টাস্ক ফোর্স ৩ : লাইফ, রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড ভ্যালুজ ফর ওয়েলবিয়িং সিরিজের অন্তর্গত।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.