Author : Premesha Saha

Published on Jul 18, 2022 Updated 0 Hours ago

কম্বোডিয়ায় চিনের অর্থায়নে সামরিক ঘাঁটি নির্মাণ হলে তা দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করবে।

কম্বোডিয়ায় চিনা ঘাঁটির সম্ভাবনা: বাস্তবতা, যুক্তি এবং প্রভাব

চিনা অর্থ এবং উদ্যোগে বিতর্কিত দক্ষিণ চিন সমুদ্রের কাছে কম্বোডিয়ায় একটি সামরিক ঘাঁটি নির্মাণের খবর কয়েক বছর ধরেই শোনা যাচ্ছে। সম্প্রতি দি ওয়াশিংটন পোস্টের একটি রিপোর্টের পরে তা আরও বেশি জোরালো হয়েছে। সেখানে নাম উল্লেখ না করে বলা হয়েছে, ‘পশ্চিমি কর্মকর্তারা বলেছেন যে, তাইল্যান্ড উপসাগরের কাছে কৌশলগত অবস্থানে কম্বোডিয়ার রিয়াম ঘাঁটিতে চিনা নৌবাহিনীর একচেটিয়া ব্যবহারের জন্য নতুন কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে।’ ২০১৯ সালেও দি ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে জানা যায় যে, ‘চিন তার সামরিক ও সশস্ত্র বাহিনীকে তাইল্যান্ড উপসাগরের মুখোমুখি কম্বোডিয়ার দক্ষিণ উপকূলে অবস্থিত রিয়াম নৌঘাঁটির একটি অংশ একচেটিয়া ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়ার জন্য একটি গোপন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।’ সেই সময়ে মার্কিন কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছিলেন যে, ‘পূর্ণ মাত্রার চিনা ঘাঁটি না হলেও এই স্থানটি বেজিংকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তার প্রথম নৌ-মঞ্চায়নের সুবিধা দেবে।’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভয় এবং সন্দেহ দানা বাঁধে যখন ২০২০ সালের অক্টোবরে উপগ্রহচিত্রে দেখা যায় যে, ওয়াশিংটন থেকে সংস্কারের প্রস্তাব আসা সত্ত্বেও তাতে সায় না দিয়ে কম্বোডিয়ার সরকার ২০১২ সালে রিয়াম নৌঘাঁটিতে আমেরিকার নির্মিত দুটি ফেসিলিটি ভেঙে দিয়েছে।

জুন মাসের গোড়ার দিকে দক্ষিণ চিন সমুদ্রে কম্বোডিয়ার রিয়াম নৌঘাঁটিতে চিনের সম্পূর্ণ অর্থায়নে পুনর্নির্মাণ বা আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হয়েছে। কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মেটেরিয়াল অ্যান্ড টেকনিক্যাল সার্ভিস বিভাগের ডিরেক্টর-জেনারেল জেনারেল চাউ ফিরুন বলেন যে, ‘দু’বছরের মধ্যে চিনা সংস্থা এবং চিনের সামরিক বাহিনীর প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা একটি রক্ষণাবেক্ষণমূলক কর্মশালা-সহ বেশ কয়েকটি পরিকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কার করবে, জাহাজ মেরামতের জন্য স্লিপওয়ে এবং ড্রাই ডক, গুদাম, দু’টি নতুন জেটি এবং বৈদ্যুতিক, জল ও পয়ঃনিষ্কাশন সংক্রান্ত পরিকাঠামো নির্মাণ করবে।’ ২০২২ সালের ৮ জুন অনুষ্ঠিত এক অভূতপূর্ব অনুষ্ঠানে কম্বোডিয়ায় বেজিংয়ের রাষ্ট্রদূত ওয়াং ওয়েনটিয়ান বলেন যে, ‘চিনা-কম্বোডিয়ান সামরিক আন্তঃসহযোগিতা একটি বজ্রকঠিন অংশীদারিত্বের শক্তিশালী স্তম্ভ।’

বেশ কিছু দিন ধরে রিয়াম নৌঘাঁটিতে চিনা সামরিক বাহিনীর সম্ভাব্য উপস্থিতি সম্পর্কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। পি এল এ নৌবাহিনী বিতর্কিত দক্ষিণ চিন সমুদ্রে বর্ধিত সংযোগের সুবিধে পাওয়ার জন্য এই ঘাঁটিকে ব্যবহার করতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভয় এবং সন্দেহ দানা বাঁধে যখন ২০২০ সালের অক্টোবরে উপগ্রহচিত্রে দেখা যায় যে, ওয়াশিংটন থেকে সংস্কারের প্রস্তাব আসা সত্ত্বেও তাতে সায় না দিয়ে কম্বোডিয়ার সরকার ২০১২ সালে রিয়াম নৌঘাঁটিতে আমেরিকার নির্মিত দুটি ফেসিলিটি ভেঙে দিয়েছে। ২০১০ এবং ২০১৬ সালের মধ্যে মার্কিন নৌবাহিনী এবং রয়্যাল কম্বোডিয়ান নৌবাহিনীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক অনুশীলনের জন্য রিয়াম নৌঘাঁটি প্রায়শই ব্যবহৃত হত

অন্য দিকে কম্বোডিয়া বরাবরই এই ধরনের খবর অস্বীকার করে বলেছে যে, এ রকমটা করলে তাদের সংবিধান লঙ্ঘন করা হবে, যেখানে স্পষ্টতই কম্বোডিয়ার ভূখণ্ডে বিদেশি সামরিক ঘাঁটির নির্মাণ ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে একটি ধারা রয়েছে। কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী টি বান অনুষ্ঠানের সময়ে এ কথা বারবার জোর দিয়ে বলেন যে, ‘প্রকল্পটি কম্বোডিয়ার সংবিধানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ, যাতে কম্বোডিয়ার ভূখণ্ডে বিদেশি সামরিক ঘাঁটি নির্মাণের বিরুদ্ধে স্পষ্ট আদেশ রয়েছে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশটি অন্যান্য দেশ থেকে উন্নয়নমূলক সহায়তা গ্রহণে আগ্রহী। আমাদের দেশ, ভূখণ্ড এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমাদের ঘাঁটিগুলি সংস্কার করা প্রয়োজন।’ টি বান প্রকল্পটিকে একটি আধুনিকীকরণ হিসেবে বর্ণনা করেন যার লক্ষ্য হল ‘একটি ড্রাই ডক, জেটি এবং স্লিপওয়ে নির্মাণ এবং সংস্কার।’ চিনা কর্মকর্তারাও এ কথা বলেছেন যে, ‘ঘাঁটি সংস্কারের লক্ষ্য কোনও তৃতীয় পক্ষের বিরোধিতা করা নয়, বরং কেবলমাত্র সামুদ্রিক আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব বজায় রাখতে এবং সমুদ্রে অপরাধ দমনের জন্য কম্বোডিয়ার নৌবাহিনীর সক্ষমতা জোরদার করার উদ্দেশ্যে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ঘনিষ্ঠ বাস্তব আন্তঃসহযোগিতার সহায়ক।’ তবুও এখন দি ওয়াশিংটন পোস্ট একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ‘বেজিংয়ের এক কর্মকর্তা এ কথা নিশ্চিত করেছেন যে, চিনা সামরিক বাহিনী এবং চিনা বিজ্ঞানীরা ঘাঁটির একটি অংশ ব্যবহার করবেন।’

ইন্দো-প্যাসিফিক ইকনমিক ফ্রেমওয়ার্ক (আই পি ই এফ) চালু করার মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তার প্রভাব এবং স্থান ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছে, যেখানে বেশিরভাগ আসিয়ান দেশগুলি অংশগ্রহণ করছে।

প্রসঙ্গটি আবার এই সত্যও তুলে ধরেছে যে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া মহাশক্তিধর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-চিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতার অন্যতম প্রধান ক্ষেত্র। চিন-কম্বোডিয়া সম্পর্ক অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে উঠছে, কারণ কম্বোডিয়া চিনের কাছ থেকে পরিকাঠামো ও উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য কোটি কোটি ডলার পাচ্ছে। কম্বোডিয়া বরাবরই বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভকে দৃঢ় ভাবে সমর্থন করেছে এবং অনেক বারই আসিয়ান বৈঠকে চিনের পক্ষাবলম্বন করেছে। কম্বোডিয়া দীর্ঘ সময় যাবৎ উন্নয়নের জন্য তহবিলের প্রত্যাশা করেছে, যা চিনের তরফে সরবরাহ করা হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ যাবৎ খুব স্বল্প বিনিয়োগেরই প্রস্তাব দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেউ কেউ এ কথাও বলেছেন যে, ‘কম্বোডিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্কে আগ্রহী নয়।’ কম্বোডিয়ার কর্মকর্তারা মানবাধিকার এবং শাসন সংক্রান্ত বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকায় বেশ অসন্তুষ্ট হয়েছেন। গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আধিকারিক জেনারেল চাউ-এর উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বলেছিল যে, তিনি ২০২০ এবং ২০২১ সালে রিয়াম নেভাল বেস ফেসিলিটিগুলির নির্মাণ এবং সংস্কার সংক্রান্ত কার্যকলাপ থেকে মুনাফা অর্জনের ষড়যন্ত্র করেছিলেন। গত বছর তাঁর কম্বোডিয়া সফরে মার্কিন ডেপুটি সেক্রেটারি অফ স্টেট ওয়েন্ডি শেরম্যানও রিয়াম নৌঘাঁটি এবং সেই ঘাঁটিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্মিত দুটি ফেসিলিটি  ধ্বংসের বিষয় নিয়ে প্রতিবেদনের ব্যাখ্যা দাবি করেন। তিনি আরও বলেন যে, ‘কম্বোডিয়ায় চিনা সামরিক ঘাঁটি দেশটির সার্বভৌমত্বকে ক্ষুণ্ণ করবে, আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-কম্বোডিয়া সম্পর্ককে নেতিবাচক ভাবে প্রভাবিত করবে।’ ইন্দো-প্যাসিফিক ইকনমিক ফ্রেমওয়ার্ক (আই পি ই এফ) চালু করার মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তার প্রভাব এবং স্থান ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছে, যেখানে বেশিরভাগ আসিয়ান দেশগুলি অংশগ্রহণ করছে। যদিও কম্বোডিয়া পুনরায় আই পি ই এফ-এর অংশ না হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশনীতির প্রেক্ষিতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া নিঃসন্দেহে আপেক্ষিক অবহেলার শিকার হয়েছে। এটি চিনকে অঞ্চলটিতে প্রবেশের এবং সেই অঞ্চলে তাদের কার্যকলাপ বৃদ্ধির সুযোগ দিয়েছে। চিন বর্তমানে বেশির ভাগ আসিয়ান দেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনও এই অঞ্চলে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের (এফ ডি আই) নিরিখে বৃহত্তম সরবরাহকারী। তবে এই মুহূর্তে, এমনকি ভবিষ্যতেও কম্বোডিয়ার উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব খুব সীমিত থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন যে, যদি চিনা সামরিক বাহিনী কম্বোডিয়ার নৌঘাঁটি ব্যবহার করতে সক্ষম হয়, তা হলে ‘তারা দক্ষিণ চিন সমুদ্রে বেজিংয়ের ভূখণ্ডগত এবং সামুদ্রিক দাবি আরও জোরদার করার উদ্দেশ্যে কম্বোডিয়ার ঘাঁটির সুবিধাকে কাজে লাগাতে সক্ষম হবে। চিনা প্রিমিয়ার শি জিনপিংয়ের উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে বেজিং বিশ্বব্যাপী আরও বেশি সামরিক ও দ্বৈত ব্যবহারের সুবিধাসম্পন্ন ফেসিলিটি স্থাপন করতে চাইছে, যাতে চিনকে একটি প্রথম সারির সামরিক শক্তি হিসেবে তুলে ধরা যায় এবং পশ্চিমি প্রতিপক্ষগুলির সঙ্গে তারা তাল মিলিয়ে টক্কর দিতে পারে।’ চিন দীর্ঘ দিন যাবৎ বিতর্কিত দক্ষিণ চিন সমুদ্রে কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জ, এমনকি অনেকের মতে নৌঘাঁটি নির্মাণে রত। এটি ভিয়েতনাম, ফিলিপিন্সের মতো অন্য দাবিদার দেশগুলির মধ্যে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের সঞ্চার করেছে। এর পাশাপাশি অন্যান্য অংশীদার যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ভারত এবং বর্তমানে ফ্রান্স, ব্রিটেন এবং জার্মানির মতো কিছু ইউরোপীয় দেশও এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিতর্কিত জলসীমায় নৌ-চলাচলের স্বাধীনতা বজায় রাখার আড়ালে ফ্রিডম অফ নেভিগেশন অপারেশনস-এর (এফ ও এন ও পি এস) সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এবং ক্রমবর্ধমান চিনা আগ্রাসনকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চালিয়েছে। এই বিতর্কিত জলসীমায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের সঙ্গে যৌথ মহড়ায় অংশগ্রহণ করছে। কয়েক জন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিশ্লেষক ‘দক্ষিণ চিন সাগরের ক্রমবর্ধমান সামরিকীকরণ’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। দক্ষিণ চিন সমুদ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-চিন প্রতিযোগিতার আঁতুড়ঘর এবং আসিয়ান দেশগুলি এই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জড়িয়ে পড়েছে।

চিনা প্রিমিয়ার শি জিনপিংয়ের উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে বেজিং বিশ্বব্যাপী আরও বেশি সামরিক ও দ্বৈত ব্যবহারের সুবিধাসম্পন্ন ফেসিলিটি স্থাপন করতে চাইছে, যাতে চিনকে একটি প্রথম সারির সামরিক শক্তি হিসেবে তুলে ধরা যায় এবং পশ্চিমি প্রতিপক্ষগুলির সঙ্গে তারা তাল মিলিয়ে টক্কর দিতে পারে।

শুধু মাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, এই প্রতিবেদনগুলি অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশেও জল্পনা ও উদ্বেগ উস্কে দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজকে তাঁর সাম্প্রতিক ইন্দোনেশিয়া সফরকালে কম্বোডিয়ায় চিনা ঘাঁটির সম্ভাবনা সংক্রান্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি উত্তর দেন যে, ‘আমরা বেজিংকে তার উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্বচ্ছ অবস্থান গ্রহণ করতে অনুরোধ জানাই যাতে তার কর্মসূচি আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার নিরিখে ইতিবাচক হয়ে ওঠে।’

যদিও এই প্রতিবেদনটির সত্যি হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। তা সত্ত্বেও এমনটা হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভিয়েতনামের মতো প্রতিবেশী দেশ, যারা দক্ষিণ চিন সমুদ্রে বিতর্কের নিরিখে বেজিংয়ের প্রতি কড়া অবস্থান নিয়েছে। যেমনটা হাওয়াইয়ের হনলুলুতে ড্যানিয়েল কে ইনোয়ে এশিয়া-প্যাসিফিক সেন্টার ফর সিকিওরিটি স্টাডিজের অধ্যাপক আলেকজান্ডার ভুভিং উল্লেখ করেছেন, ‘এর ফলে ভিয়েতনাম দ্বিমুখী বা ত্রিমুখী পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারে যেখানে দেশটিকে শুধু মাত্র দক্ষিণ চিন সাগর এবং তার উত্তর সীমান্ত বরাবরই নয়, ভূখণ্ডের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে চিনা সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি বরদাস্ত করতে হবে।’

কম্বোডিয়া-চিন সম্পর্ক আপাতদৃষ্টিতে সুদৃঢ় বলে মনে হলেও এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই যে, বিশেষ করে সংবিধানের প্রবিধান বিবেচনা করে কম্বোডিয়া অঞ্চলটিতে শক্তি প্রদর্শন বা যুদ্ধ অভিযানের জন্য চিনা সামরিক বাহিনীকে রিয়াম নৌঘাঁটি ব্যবহারের অনুমতি দেবে। একই সঙ্গে প্রতিবেদনে চিহ্নিত ঘাঁটিতে চিনের ব্যবহার্য অঞ্চলের পরিমাণ ০.৩ বর্গ কিলোমিটার (বা ০.১২ বর্গ মাইল) যা প্রায় আনুবীক্ষণিক এবং কম্বোডিয়ার কর্মকর্তারা এ কথা বারবার বলেছেন যে, ফেসিলিটিগুলি পি এল এ-র জন্য নয়, কম্বোডিয়ানদের ব্যবহারের উদ্দেশ্যেই নির্মিত। যদি এখানে একটি চিনা ঘাঁটি গড়ে ওঠে, তা হলে তা সমগ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শান্তি ও নিরাপত্তার উপর প্রভাব ফেলবে এবং সেই কারণেই এ কথা অবিশ্বাস্য যে, কম্বোডিয়া তার আসিয়ান অংশীদার দেশগুলির সঙ্গে নিজের সম্পর্ককে ঝুঁকির মুখে ফেলবে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.