Published on Mar 31, 2023 Updated 0 Hours ago

‘‌অতিমারি চুক্তি’‌ নিয়ে আলোচনায় জি৭–এর বাইরের দেশগুলির চাহিদা কতটা ভালভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে?

অতিমারি চুক্তি – সকলকে শাসন করার জন্য একটি ব্যবস্থা

এই নিবন্ধটি ‘‌রাইসিনা এডিট ২০২৩’‌ সিরিজের অংশ।


আমাদের সামষ্টিক অতিমারি ক্লান্তি এবং বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কোভিড–১৯ অতিমারি সম্পর্কিত জাতীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উদ্যোগের নিছক সংখ্যার কারণে হয়তো আমরা তথাকথিত ‘‌অতিমারি চুক্তি’‌ নিয়ে চলতি আন্তর্জাতিক আলোচনা সম্পর্কে আরও সচেতন হতে পারিনি। ধনী দেশগুলি অতিমারি শেষ হয়েছে বলে ঘোষণার দিকে দ্রুত এগোতে থাকলেও অন্যত্র তা এখনও অব্যাহত আছে, এবং বিশেষত নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলিতে বিধ্বংসী স্বাস্থ্য, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিণতি তৈরি করে চলেছে। তা সত্ত্বেও বিশ্ব ব্যাঙ্ক পরিচালিত অতিমারি তহবিল, আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিধিমালার সংশোধনী সংক্রান্ত ওয়ার্কিং গ্রুপ (২০০৫), ১০০ দিনের মিশন , অতিমারি  চুক্তি এবং আরও অনেক কিছু–সহ ভবিষ্যতের অতিমারি মোকাবিলার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাপী ও বহুপাক্ষিক স্তরে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে এই তথ্য কাউকে অবাক করবে না যে এই প্রচেষ্টাগুলির বেশিরভাগই ধনী দেশগুলিতে চলছে,  এবং ধনী দেশের অসামরিক কর্মচারী, বিশেষজ্ঞ ও আইনজীবীদের দ্বারা চালিত হচ্ছে।  তদুপরি, অতিমারিটি যেভাবে বিশ্বব্যাপী উত্তর–দক্ষিণ বৈষম্য ফিরিয়ে এনেছে, তা বিবেচনা করে এই ঘটনাটি উদ্বেগজনক হওয়া উচিত যে শাসন সংস্কার, স্বাস্থ্য ইক্যুইটি, নৈতিকতা ও মানবাধিকারের ইস্যুগুলি উঠছে মূলত ৭ দেশের গোষ্ঠী (জি৭), এবং বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে।

ভবিষ্যৎ অতিমারি–রোধ প্রয়াসগুলি যখন বৈচিত্র্যময় ও অসম,‌ সেই সময়ে সমস্ত দেশকে শাসন করার জন্য একটি আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক উপকরণের জন্য আলোচনা বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক পরিস্থিতি, এবং তার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় ক্রিয়াকলাপগুলিকে অনুপ্রাণিত, নির্দেশিত ও প্রয়োগ করার জন্য বৈশ্বিক শাসন ব্যবস্থার সীমিত প্রক্রিয়াকেই প্রতিফলিত করে।

এই ভবিষ্যৎ অতিমারি উদ্যোগগুলির মধ্যে অনেকগুলি আন্তঃসম্পর্কিত, এবং  সেগুলি এই ধারণাটিকে নিশ্চিত করে যে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসংক্রান্ত জরুরি পরিস্থিতিতে বৈজ্ঞানিক গবেষণা, অর্থায়ন, উৎপাদন ও বাণিজ্য, আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার/নৈতিকতা ইত্যাদির মতো অসংখ্য ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী সমন্বিত প্রয়াস প্রয়োজন। ভবিষ্যৎ অতিমারি–রোধ প্রয়াসগুলি যখন বৈচিত্র্যময় ও অসম,‌ সেই সময়ে সমস্ত দেশকে শাসন করার জন্য একটি আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক উপকরণের জন্য আলোচনা বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক পরিস্থিতি, এবং তার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় ক্রিয়াকলাপগুলিকে অনুপ্রাণিত, নির্দেশিত ও প্রয়োগ করার জন্য বৈশ্বিক শাসন ব্যবস্থার সীমিত প্রক্রিয়াকেই প্রতিফলিত করে। আরও মৌলিকভাবে, এই বিষয়টি স্পষ্ট নয় যে বর্তমান অতিমারি থেকে সবচেয়ে ফলপ্রসূ পাঠগুলি বিশ্বব্যাপী কুশীলবদের দ্বারা ব্যাপকভাবে স্বীকৃত ও গৃহীত হয়েছে কি না, এবং ভবিষ্যতের অতিমারি সংক্রান্ত  আলোচনায় তা প্রতিফলিত হচ্ছে কিনা। যদি আমরা বিশ্বাস করি যে একটি চুক্তি প্রকৃতপক্ষে বিশ্বব্যাপী সহযোগিতা ও সম্মতি নিয়ে আসবে, তবে আমাদের দেখতে হবে জি৭–বহির্ভূত দেশগুলির, বিশেষ করে দরিদ্রতম দেশগুলির, চাহিদা কতটা ভালভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে।

অতিমারি চুক্তি এবং এর উৎস

কাউন্সিল অফ ইউরোপ–এর তথ্য অনুসারে অতিমারি সংক্রান্ত একটি আন্তর্জাতিক চুক্তির কথা এর প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল প্যারিস পিস ফোরামে ২০২০ সালের  নভেম্বরে সর্বপ্রথম প্রস্তাব করেছিলেন। এই ধারণাটিকে ২০২১ সালের গোড়ার দিকে  জি৭ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা স্বীকৃতি দিয়েছিলেন এবং সমর্থন করেছিলেন। তারপরে পদক্ষেপটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)–র এক্তিয়ারে চলে যায়, যারা বিভিন্ন অতিমারি–সম্পর্কিত বিষয় বিবেচনা করার জন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলির একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে, এবং ২০২১ সালের নভেম্বরের শেষের দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য পরিষদের (ডব্লিউএইচএ) একটি বিশেষ অধিবেশনের আয়োজন করে। বিশেষ অধিবেশনে এই ঐকমত্য তৈরি হয়েছিল যে অতিমারি প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়ার জন্য একটি  নতুন আন্তর্জাতিক আইনি উপকরণ প্রয়োজন, যার মধ্যে ‘সাম্যের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দিয়ে একটি সামগ্রিক–সরকার ও সামগ্রিক–সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে’‌। নথিগুলি ঘনিষ্ঠভাবে দেখলে মনে হয়, কিছু সদস্য রাষ্ট্র চেয়েছিল যে উপকরণটি যেন অন্য ধরনের স্বাস্থ্যসংক্রান্ত আপৎকালীন অবস্থা এবং মধ্য থেকে দীর্ঘমেয়াদি পরিণতিগুলিকেও অন্তর্ভুক্ত করে।

হু একটি আন্তঃসরকারি আলোচনাকারী সংস্থা (আইএনবি) গঠন করে, যা সমস্ত সদস্য রাষ্ট্র এবং সহযোগী সদস্যদের জন্য উন্মুক্ত ছিল, আর তার দায়িত্ব ছিল ‘‌হু কনভেনশন, অতিমারি প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া সম্পর্কিত অন্য ধরনের আন্তর্জাতিক উপকরণ বা চুক্তি’‌র (অতিমারি চুক্তি)‌ খসড়া তৈরি করা ও তা নিয়ে আলোচনা সংগঠিত করা।

যেমন নির্দেশিত ছিল সেইভাবে হু আন্তঃসরকারি আলোচনাকারী সংস্থা (আইএনবি) গঠন করে, যা সমস্ত সদস্য রাষ্ট্র ও সহযোগী সদস্যদের জন্য উন্মুক্ত ছিল, আর তার দায়িত্ব ছিল ‘‌হু কনভেনশন, অতিমারি প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া সম্পর্কিত অন্য ধরনের আন্তর্জাতিক উপকরণ বা চুক্তি’‌র (অতিমারি চুক্তি)‌ খসড়া তৈরি করা এবং তা নিয়ে আলোচনা সংগঠিত করা। ২০২২ জুড়ে, হু বিভিন্ন পরামর্শ, গণশুনানি এবং আইএনবি সভাগুলিকে অনলাইনে উপলব্ধ করার মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য স্বচ্ছতার সঙ্গে এই কাজ করেছে। বিশেষ অধিবেশনের নির্দেশ অনুসারে, ওই উপকরণের খসড়া তৈরি করা এবং তা নিয়ে আলোচনার সময়কাল দ্রুত হবে, এবং ডব্লিউএইচএ–র মে ২০২৪–এর বৈঠকে মধ্যে একটি খসড়া তৈরি হয়ে যাবে বলে প্রত্যাশিত। এর অর্থ হল যে ২০২৩ হল সেই বছর যেখানে আদর্শবাদী ভাষণ বা অন্তর্ভুক্তিমূলক তথ্য সংগ্রহের প্রচেষ্টা চলে যাবে বাস্তব রাজনীতি এবং শব্দ নিয়ে চুলচেরা আলোচনার জগতে। একটি ধারণাগত খসড়া বা ‘‌কনসেপশনাল জিরো ড্রাফট ’‌ ২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশ্যে আনা হয়েছিল।

আলোচনার প্রক্রিয়া

প্রশ্ন হল অতিমারি চুক্তি কী সুযোগ এনে দেবে এবং তার মধ্যে কী ধরনের ঝুঁকি থাকবে? প্রথমত, একটি নতুন আন্তর্জাতিক উপকরণ প্রাথমিকভাবে ২০২১ সালে ডব্লিউএইচও দ্বারা সমর্থিত এবং অনুসৃত হয়েছিল এই কারণে যে বর্তমান আন্তর্জাতিক আইনি উপকরণ, পদ্ধতি ও নিয়মগুলি দেশগুলি ও বিশ্বব্যবস্থাকে দ্রুত, কার্যকরভাবে বা ন্যায্যভাবে কোভিড–১৯–এর বিরুদ্ধে সাড়া দেওয়ার প্রশ্নে অপ্রতুল বলে স্বীকৃত হয়েছিল। প্রধান ফোকাস ছিল ইন্টারন্যাশনাল হেলথ রেগুলেশনস  (আইএইচআর)–এর অপ্রতুলতার উপর, যার কাজ সংক্রামক ব্যাধি দেশের সীমানা অতিক্রম করে ছড়িয়ে পড়লে সরকারগুলিকে পথনির্দেশ দেওয়া। আইএইচআর প্রথম ১৯৬৯ সালে  অনুমোদিত হয়েছিল এবং শুধু ছয়টি সংক্রামক রোগের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিল। প্রায় সব আন্তঃসীমান্ত জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি (জৈবিক, রাসায়নিক, রেডিওলজিক্যাল, ইত্যাদি) এর আওতায় আনার জন্য এটি বহুবার সংশোধন করা হয়েছে। সর্বশেষ সংশোধনটি ২০০৫ সালে হয়েছিল, এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিস্তৃত ঘটনা সম্পর্কে হু–কে অবহিত করার জন্য রাষ্ট্রীয় বাধ্যবাধকতার উপর স্পষ্টভাবে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিল। এখন যা বিভ্রান্তিকর ও বিশৃঙ্খল দেখাচ্ছে তা হল ডব্লিউএইচএ–র দুটি ওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরি করা। একটি গ্রুপ কোভিড–১৯ অতিমারির কারণে উত্থাপিত জরুরি বিষয়গুলি প্রতিফলিত করার জন্য আইএইচআর–এর সংশোধন নিয়ে কাজ করবে, এবং দ্বিতীয় দল একটি অতিমারি চুক্তির খসড়া তৈরি করবে। উভয় গ্রুপই ২০২৪ সালের মে মাসে তাদের খসড়া নথি ডব্লিউএইচএ–এর কাছে উপস্থাপন করবে।

আইএইচআর প্রথম ১৯৬৯ সালে অনুমোদিত হয়েছিল এবং শুধু ছয়টি সংক্রামক রোগের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিল। প্রায় সব আন্তঃসীমান্ত জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি (জৈবিক, রাসায়নিক, রেডিওলজিক্যাল, ইত্যাদি) এর আওতায় আনার জন্য এটি বহুবার সংশোধন করা হয়েছে।

স্পষ্টতই, দুটি গ্রুপের বিষয়গুলির মধ্যে যথেষ্ট অতিক্রমণ (‌ওভারল্যাপ)‌ রয়েছে, এবং অনেক দেশেরই একাধিক প্রক্রিয়া চালনা করার মতো কূটনৈতিক সংস্থান নেই। কিছু ভাষ্যকার উল্লেখ করেছেন যে আইএইচআর হল প্রাযুক্তিক ও প্রয়োগ বিষয়ক;‌ আর অতিমারি চুক্তিটি ভিন্ন, কারণ এটি অনেক বেশি ‘‌রাজনৈতিক’‌, এবং তা আন্তর্জাতিক সহায়তা, প্রযুক্তিতে প্রবেশের সুযোগ এবং বৈশ্বিক সাম্যের মতো  সমস্যাগুলির মোকাবিলা করে। এই দ্বিত্ব বোঝার আরেকটি উপায় আছে। তা হল এখন যখন ডব্লিউএইচএ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য প্রয়াস রাজনৈতিকভাবে সক্রিয়, এবং জাতীয় নেতারা যখন স্বীকার করেছেন যে স্বাস্থ্য নির্ধারক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা পরস্পর–সংযুক্ত, তখন দেশের স্বার্থরক্ষার দুটি সুযোগ থাকা শুধু একটি সুযোগের চেয়ে ভাল। যাই হোক, মনে হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আইএইচআর সংশোধনের সুযোগকে সীমায়িত করেছে ডব্লিউএইচএ ২০২২–এ একটি বোঝাপড়ার প্রস্তাব এনে, যাতে বলা হয়েছে  আইএইচআর ওয়ার্কিং গ্রুপের শুধুই প্রযুক্তিগত সংশোধনের একটি লক্ষ্যযুক্ত গুচ্ছ অনুসরণ করা উচিত। ২০২৩ সালের মে মাসে ডব্লিউএইচএ–র বৈঠকে সেই সীমায়িতকরণের কৌশলটি অনুমোদিত হবে কি না তা দেখতে হবে।

আইএইচআর–কে সরিয়ে রাখা যাক। খসড়া অতিমারি চুক্তির এক্তিয়ারটি আইএইচআর ও বর্তমান বৈশ্বিক শাসন ব্যবস্থার অপ্রতুলতাগুলিকে মোকাবিলা করা থেকে শুরু করে সমতা–কেন্দ্রিক একটি সামগ্রিক–সরকার ও সামগ্রিক–সমাজ পদ্ধতির আকাঙ্ক্ষার দিকে প্রসারিত। রাষ্ট্রপুঞ্জের নথি ও উপকরণগুলি যেমন হয়, সেভাবেই এই খসড়াটি অসংখ্য এবং প্রায়শই বিরোধপূর্ণ নৈতিক নীতি এবং অন্যান্য ধারণাকে স্বীকৃতি দেয়, যেমন রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব, বৈশ্বিক সহযোগিতা, প্রতিটি জীবনের সমান মূল্য, প্রতিটি মানুষের স্বাস্থ্যের মানবাধিকার, দেশের সীমানা ছাড়িয়ে পরস্পর নির্ভরশীল দুর্বলতা, প্রমাণভিত্তিক সিদ্ধান্ত, অভিন্ন স্বাস্থ্য ইত্যাদি। উপকরণের মূল বিষয় হল প্যাথোজেন ও সম্পর্কিত সুবিধাগুলি ভাগ করা; বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খল ও অতিমারি প্রতিক্রিয়া পণ্য সরবরাহ; স্বাস্থ্যব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ; হু–এর ভূমিকা; জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও  সাক্ষরতা; প্রাসঙ্গিক সম্পদের স্থিতিশীল অর্থায়ন; এবং, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, অতিমারি প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়াগুলির জন্য দায়বদ্ধতার স্তর নির্ধারণ; এবং আরও বিস্তৃতভাবে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও সমাজের পুনরুদ্ধার ।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অদৃশ্য বিষয়গুলি হল বৈশ্বিক ন্যায্যতা ও মানবাধিকার;‌ অতিমারি দ্বারা নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত অধিকাংশ মানুষ নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে বাস করেন।

২০২৩–এ খসড়া চুক্তিটি বিকশিত হবে, বিশেষ করে মে মাসে ডব্লিউএইচএ বৈঠকে, আইএনবি ও সাব–আইএনবি ড্রাফটিং গ্রুপের অন্য অনেক বৈঠকে, এবং বেসরকারি কুশীলব ও নেটওয়ার্কগুলির অন্যান্য হস্তক্ষেপের মাধ্যমে। যে কথা উল্লেখযোগ্য তা হল ধারণাগত খসড়াটি নীতি, ধারণা ও বিষয়গুলির একটি বিস্তৃত গুচ্ছকে চিহ্নিত করলেও রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট অধিকার ও কর্তব্যগুলি সম্পর্কে কোনও সারগর্ভ বক্তব্য উপস্থাপন, বা বিভিন্ন রাষ্ট্রের ক্ষমতা অনুসারে পৃথগীকরণ থেকে এখনও অনেক দূরে। আরও মৌলিক প্রশ্নগুলি উপেক্ষা করা হয়েছে, যেমন অতিমারি বলতে কী বো‌ঝায়, এবং এটি কখন শুরু বা শেষ হয়, বা অতিমারির শুরু বা শেষ ঘোষণা করার ক্ষমতা কার থাকা উচিত। সম্ভবত, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অদৃশ্য বিষয়গুলি হল বৈশ্বিক ন্যায্যতা ও মানবাধিকার;‌ অতিমারি দ্বারা নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত অধিকাংশ মানুষ নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে বাস করেন। এই ধরনের দেশের প্রতিনিধিরা চুক্তিতে তাঁদের জনগণের চাহিদা ও স্বার্থ প্রতিফলিত করতে অনুপ্রাণিত বা সক্ষম কি না, তা স্পষ্ট নয়। সুশীল সমাজকে এই আলোচনার প্রক্রিয়ায় গঠনমূলকভাবে জড়িত থাকার জন্য যে স্বল্প জায়গা দেওয়া হয়েছে, তা এই ধরনের উদ্বেগগুলির সমাধান আরও কঠিন করে তুলবে। যাই হোক, ডব্লিউএইচএ ২০২২–এ এই দেশগুলির মধ্যে কয়েকটি দেখিয়ে দিয়েছে যে তারা সত্যিই দ্বিমত পোষণ করলে গোটা সমাবেশকে পঙ্গু করে দিতে পারে। সম্ভবত, ডব্লিউএইচএ–তে কিছু জি৭–বহির্ভূত দেশের এই নবার্জিত আস্থা অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে, এবং ২০২৩ সালের অতিমারি চুক্তির আলোচনার সময়েও তা দেখা যাবে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.