Author : Hari Seshasayee

Published on Jul 05, 2022 Updated 0 Hours ago

লাতিন আমেরিকায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ প্রচুর; ভারতের উচিত একটি উপযুক্ত নীতি প্রণয়ন করা যাতে এর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়া যায়।

লাতিন আমেরিকা: ভারতের বিদেশ নীতির শেষ সীমান্ত

নিজের ইতিহাসে প্রথম বার ভারত ২০২১-২২ সালে ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বার্ষিক রফতানি অর্জন করেছে। অস্ট্রেলিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সঙ্গে সম্প্রতি স্বাক্ষরিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ), এবং ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডার সঙ্গে চলতি আলোচনা ভারতীয় রফতানিকারকদের নিশ্চিত ভাবে আরও প্রণোদনা  (‌ইনসেন্টিভ)‌ দেবে। এই ধরনের চুক্তিগুলি ভারতের জন্য তেমন সুবিধা নিয়ে আসবে না বলে বেশ কয়েক বছর তা এড়িয়ে যাওয়ার পর, এখন নীতিগত ভাবে উল্টো পথে হেঁটে আরও বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য নয়াদিল্লির আগ্রহ একটি স্বাগত লক্ষণ। এই এফটিএ–গুলি স্বাক্ষর বা আলোচনা করা হচ্ছে পুরনো পরিচিতদের সঙ্গেই, অর্থাৎ ভারতের জন্য ভূ-রাজনৈতিক ও ভূ-অর্থনৈতিক তাৎপর্য বহন করে এমন দেশগুলির সঙ্গে ।

যাই হোক, নয়াদিল্লির ক্ষমতার করিডোরে একটি অঞ্চল সুস্পষ্ট ভাবে দৃষ্টির বাইরে থেকে গেছে, আর তা হল লাতিন আমেরিকা। ভারতের চিলি ও মারকোসার–এর (‌আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, প্যারাগুয়ে এবং উরুগুয়ে সমন্বিত একটি দক্ষিণ আমেরিকান গোষ্ঠী)‌ সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (প্রেফারেনশিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট বা পিটিএ) থাকলেও এগুলি সুযোগের দিক থেকে সীমিত, এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের একটি ছোট শতাংশ এর আওতায় আসে। এই চুক্তিতে আমদানি শুল্ক কিছুটা কম হয়, কিন্তু শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাওয়া যায় না। এফটিএ বা ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির (সিইপিএ) মতো বিনিয়োগ, মানুষে মানুষে আদান–প্রদান বা পরিষেবার ব্যবস্থা পিটিএ-তে থাকে না। এখনও অবধি নয়াদিল্লি লাতিন আমেরিকার সঙ্গে একটিও এফটিএ নিয়ে আলোচনা করতে পারেনি, এবং তা করতে তেমন কোনও আগ্রহও দেখায়নি। দুর্ভাগ্যবশত, নয়াদিল্লির ভূ-অর্থনৈতিক গণনায় এই অঞ্চলটিকে বাদ দেওয়া হয়েছে ইচ্ছাকৃত ভাবে: লাতিন আমেরিকা সর্বদাই ভারতীয় রাজনীতিবিদদের দ্বারা সবচেয়ে কম পরিদর্শন করা অঞ্চল, এবং দিল্লির সাউথ ব্লকে (যেখানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং বিদেশমন্ত্রক রয়েছে) অঞ্চলটি এশিয়া (অথবা মধ্য এশিয়া–সহ এর যে কোনও উপ-অঞ্চল), আফ্রিকা ও ইউরোপের তুলনায় অনেক কম মনোযোগ পায়।

ভারতের চিলি ও মারকোসার–এর (‌আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, প্যারাগুয়ে এবং উরুগুয়ে সমন্বিত একটি দক্ষিণ আমেরিকান গোষ্ঠী)‌ সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (প্রেফারেনশিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট বা পিটিএ) থাকলেও এগুলি সুযোগের দিক থেকে সীমিত এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের একটি ছোট শতাংশ এর আওতায় আসে। এই চুক্তিতে আমদানি শুল্ক কিছুটা কম হয়, কিন্তু শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাওয়া যায় না।

তবুও এই ঘটনা ভারতীয় সংস্থাগুলিকে নিরুৎসাহিত করেনি, যারা লাতিন আমেরিকার সঙ্গে ভারতের অর্থনৈতিক সম্পর্ক গভীর করার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছে। লাতিন আমেরিকা বিষয়ে ভারতের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ রাষ্ট্রদূত আর বিশ্বনাথন ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস–এ একটি নিবন্ধে বলেছেন, “দূরবর্তী লাতিন আমেরিকার কিছু দেশে ভারতের রফতানি প্রতিবেশী দেশ বা একই ধরনের জনসংখ্যাবিশিষ্ট ঐতিহ্যগত বাণিজ্য অংশীদারদের রফতানির চেয়ে বেশি।’‌’‌ প্রকৃত পক্ষে, ব্রাজিলে ভারতের রফতানি ৬.‌৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ভারতের দুই এফটিএ পার্টনার জাপান (৬.‌১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) বা তাইল্যান্ডে (৫.‌৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) রফতানির থেকে বেশি; মেক্সিকোতে ৪.‌৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি কানাডায় (৩.‌৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) বা রাশিয়ায় (৩.‌২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) রফতানির থেকে বেশি। ভারতের গাড়ি, মোটর সাইকেল, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য, জৈব ও অজৈব রাসায়নিক এবং টেক্সটাইলগুলির জন্য লাতিন আমেরিকা অন্যতম প্রধান রফতানি গন্তব্য।

সারণি ১: ভারতের রফতানি গন্তব্য, নির্বাচিত দেশ এবং অঞ্চল, ২০২১-২২

সূত্র:‌ বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রক, ভারত সরকার

তা ছাড়া ভারতও লাতিন আমেরিকা থেকে অত্যাবশ্যক সম্পদ আমদানি করে, যার মধ্যে আছে ভারতের একক বৃহত্তম আমদানি পণ্যের (অশোধিত পেট্রোলিয়াম তেল) ১৫–‌২০ শতাংশ, এবং তামা, রুপো ও সোনার মতো খনিজ ও উদ্ভিজ্জ তেলের অপরিহার্য পরিমাণ।

বাণিজ্যের পাশাপাশি বিনিয়োগের মাধ্যমে ভারতের বেসরকারি ক্ষেত্র লাতিন আমেরিকায় উন্নতি করেছে। এই অঞ্চলে ভারতীয় বিনিয়োগ হিসাবমতো ১২ বিলিয়ন থেকে ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে, এবং এর বেশিরভাগই ওষুধ, অটোমোবাইল, তথ্য প্রযুক্তি, শক্তি ও বিদ্যুৎ পরিবহণ এবং ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের মতো মূল্য সংযোজক ক্ষেত্রে। ভারতীয় সংস্থাগুলি লাতিন আমেরিকার সঙ্গে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে দুটি প্রধান কারণ দ্বারা চালিত হয়:

১। লাতিন আমেরিকা আন্তর্জাতিক ব্যবসার জন্য ‘‌গোল্ডিলক্‌স জোন’‌-এ অবস্থিত।  যেখানে প্রতিযোগিতা তীব্র এবং মানের মাপকাঠি উচ্চ সেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত বাজারগুলি এবং যাদের ক্রয়ক্ষমতা কম সেই আফ্রিকার কম–নিয়ন্ত্রিত বাজারগুলির মধ্যে এটি একটি সুইট স্পট। অঞ্চলটির মাথাপিছু প্রাক-কোভিড জিডিপি (পিপিপি বা ক্রয়ক্ষমতা সমানুপাতিক)‌    ১৬,৬১১ মার্কিন ডলার  যদিও ই ইউ–এর ৪৬,০৬৭ মার্কিন ডলারের থেকে অনেক কম, কিন্তু এটি ভারতের (৬,৯৯৭ মার্কিন ডলার) দ্বিগুণ এবং সাব–সাহারান আফ্রিকার (৪,০৪১) থেকে চারগুণ বেশি। সেদিক থেকে লাতিন আমেরিকার বাজারকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে, যার মাথাপিছু জিডিপি (পিপিপি) ১৫,০৮২ মার্কিন ডলার।

২।একটি সুস্থিত ও ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত জনসংখ্যার লাতিন আমেরিকা বিশ্বব্যাপী উদীয়মান বাজারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ফলস্বরূপ, এই অঞ্চলটি ভারতের মূল্য সংযোজন, উপভোক্তা পণ্য এবং গাড়ি, মোটরসাইকেল, ফার্মাসিউটিক্যালস ও রাসায়নিক পণ্যের রফতানির জন্য পছন্দের গন্তব্য। এই ক্ষেত্রগুলিতে অনেক ভারতীয় সংস্থার লাতিন আমেরিকার বাজারের ভাল অংশ দখলে আছে, এবং এই সংস্থাগুলি তাদের  বৈশ্বিক আয়ের একটি ভাল অংশের জন্য এই অঞ্চলের উপর নির্ভর করে। যেমন, একটি ভারতীয় কৃষি রাসায়নিক সংস্থা ইউনাইটেড ফসফরাস লিমিটেড (ইউপিএল)–এর ভারতের চেয়ে ব্রাজিল থেকে বেশি আয় হয়, আর কলম্বিয়া ও বেশিরভাগ মধ্য আমেরিকার বাজারের নেতা হল বাজাজ।

লাতিন আমেরিকায় ভারত বনাম চিন

অটোমোবাইল, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং আইটি-র মতো নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে লাতিন আমেরিকায় ভারতের নাগাল এতটাই বেশি যে এটি প্রায়শই এই অঞ্চলে চিনকেও ছাড়িয়ে যায়, যা চমকপ্রদ কারণ চিন লাতিন আমেরিকার অসংখ্য দেশে বৃহত্তম বণিক  ও বিনিয়োগকারী। ‘‌‘‌ল্যাটিন আমেরিকা’‌স ট্রিস্ট উইথ দ্য আদার এশিয়ান জায়েন্ট, ইন্ডিয়া’‌’‌ শীর্ষক উড্রো উইলসন সেন্টারের প্রতিবেদনে লেখক দ্বারা প্রকাশিত ডেটা এবং ফলাফলগুলি দেখায় যে ভারতীয় সংস্থাগুলি লাতিন আমেরিকায় কিছু ক্ষেত্রে চিনের চেয়ে বেশি বিনিয়োগ, রফতানি, এবং এমনকি নিয়োগও করে।

এই অঞ্চলে ভারতীয় বিনিয়োগ হিসাবমতো ১২ বিলিয়ন থেকে ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে, এবং এর বেশিরভাগই ওষুধ, অটোমোবাইল, তথ্য প্রযুক্তি, শক্তি ও বিদ্যুৎ পরিবহণ এবং ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের মতো মূল্য সংযোজক ক্ষেত্রে।

এটি ফার্মাসিউটিক্যালের ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে সত্য। একবিংশ শতাব্দী জুড়ে ভারত লাতিন আমেরিকায় চিনের চেয়ে বেশি ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য রফতানি করেছে। ব্যতিক্রম শুধু ২০২১, যখন এই অঞ্চলে কোভিড ভ্যাকসিনের চিনা রফতানি ছিল ভারতের তুলনায় বেশি। এই অঞ্চলটি ভারতীয় ফার্মাসিউটিক্যাল বিনিয়োগের একটি প্রধান প্রাপক: ২৭টি ভারতীয় সংস্থা লাতিন আমেরিকা জুড়ে ৭২টি সহায়ক সংস্থা পরিচালনা করে, এবং তাদের ১৩টি উৎপাদনের কারখানা আছে ৷ লাতিন আমেরিকার অনেক দেশ ক্যান্সার এবং এইচআইভি ওষুধ এবং অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিনের জন্য ভারতের উপর নির্ভর করে।

অটোমোবাইল সেক্টরে, এই অঞ্চলে বেশি গাড়ি সরবরাহ করে ভারত  আর বেশি মোটরসাইকেল এবং অটো যন্ত্রাংশ রফতানি করে চিন। যাই হোক, গাড়ি এবং গাড়ির যন্ত্রাংশের ক্ষেত্রে ভারতীয় সংস্থাগুলি এই অঞ্চলে তাদের চিনা সমকক্ষদের তুলনায় বেশি বিনিয়োগ করে এবং আরও বেশি কর্মসংস্থান দেয়। একটি একক ভারতীয় সংস্থা মাদারসন গ্রুপের ২৭টি অটো যন্ত্রাংশ উৎপাদন কারখানা আছে, এবং তারা ২৫,০০০ লোককে নিয়োগ করে, যা সম্মিলিত ভাবে সব চিনা অটোমোবাইল এবং অটো যন্ত্রাংশ সংস্থাগুলির চেয়ে বেশি।

অবশেষে ভারতীয় আইটি সংস্থাগুলির কথা বলা প্রয়োজন, যেগুলি কার্যত প্রথম ভারত থেকে  লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে প্রবেশ করেছিল। এই সংস্থাগুলি আজ এই অঞ্চলে ৩৮,০০০ জনেরও বেশি মানুষকে নিয়োগ করে৷ যদিও তারা প্রাথমিক ভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার ক্লায়েন্টদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য ‘নিয়ারশোরিং’ মডেল থেকে উপকৃত হতে চেয়েছিল, আজ তারা লাতিন আমেরিকার ক্লায়েন্টদের উপর নির্ভর করে। ভারতীয় আইটি সংস্থাগুলি এমনকি গুয়াতেমালার মতো ছোট দেশগুলিতে প্রবেশ করেছে, যেখানে ভারতের এইচসিএল টেকনোলজিস ২,২৩০ জন মানুষকে নিয়োগ করেছে। এই সংস্থাগুলি পরিষেবা ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য মূল্য যোগ করে, এবং লাতিন আমেরিকার পণ্য রফতানির উপর  নির্ভরশীলতা কমিয়ে বহুমুখী হয়ে ওঠার মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

অন্যান্য ক্ষেত্রে অবশ্য লাতিন আমেরিকায় ভারতের উপস্থিতি চিনের তুলনায় নগণ্য। লাতিন আমেরিকার সঙ্গে ভারতের বার্ষিক ৩০ বিলিয়ন ডলার থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য চিনের ৪০০ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় সামান্য। এই অঞ্চলে চিনা বিনিয়োগ প্রায় ১৫৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, এবং তাদের ঋণ ১৩৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার তুলনা করা যেতে পারে শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সঙ্গে ।

ভারত এই অঞ্চলে প্রচুর শুভেচ্ছা উপভোগ করে। এবং চিনের বিপরীতে ভারত একটি গণতন্ত্র, যে লাতিন আমেরিকার দেশগুলির মতোই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়, যেমন দারিদ্র্য বিমোচন, পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, ঘন ঘন রাজনৈতিক লড়াই এবং নির্বাচনের একটি ক্রমিক চক্র।

তবুও, ভারত–লাতিন আমেরিকা সম্পর্ক উল্লেখযোগ্য ভাবে প্রতিশ্রুতিপূর্ণ। ভারত এই অঞ্চলে প্রচুর শুভেচ্ছা উপভোগ করে। এবং চিনের বিপরীতে ভারত একটি গণতন্ত্র, যে লাতিন আমেরিকার দেশগুলির মতোই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়, যেমন দারিদ্র্য বিমোচন, পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, ঘন ঘন রাজনৈতিক লড়াই এবং নির্বাচনের একটি ক্রমিক চক্র।

লাতিন আমেরিকার প্রতি নয়াদিল্লি এবং বেজিংয়ের দৃষ্টিভঙ্গির একটি প্রধান পার্থক্য  হল চিন দুই দশক ধরে সরকারি শ্বেতপত্র এবং বিশেষ দূতের মাধ্যমে তার লাতিন আমেরিকা নীতি প্রণয়ন ও আপডেট করেছে;‌ অথচ লাতিন আমেরিকার জন্য ভারতের কোনও সরকারি নীতি নেই। এই অঞ্চলটি ভারতের তিনটি কেন্দ্রীভূত বিদেশনীতি বৃত্তের শেষটিতে স্থান পায়।[১] এফটিএ-তে ভারতের নতুন করে আগ্রহ এবং বহির্মুখী দৃষ্টিসম্পন্ন অর্থনৈতিক নীতির পরিপ্রেক্ষিতে নয়াদিল্লির একটি লাতিন আমেরিকা নীতি প্রণয়নের জন্য এখনই উপযুক্ত সময়, যা ভারতের অটোমোবাইল, ফার্মাসিউটিক্যাল, আইটি, শক্তি ও কৃষি সংস্থাগুলির জন্য খুবই লাভজনক হতে পারে। আর তা একই ভাবে লাতিন আমেরিকার পণ্য রফতানিকারকদের এবং এই অঞ্চলের মূল্য সংযোজক উৎপাদন ও পরিষেবা ক্ষেত্রগুলিকে উপকৃত করবে৷


প্রকাশিত মতামত লেখকের এবং তা কলম্বিয়া সরকারের মতামতকে প্রতিফলিত করে না।


[১] ভারতের বিদেশনীতি প্রায়শই তিনটি কেন্দ্রীভূত বৃত্তে পরিচালিত হয়। প্রথম বৃত্তটি প্রতিবেশীদের বোঝায় (সেইজন্যই ভারতের ‘প্রতিবেশ প্রথম’ নীতি), দ্বিতীয়টি বর্ধিত প্রতিবেশী, বিশেষ করে এশিয়া, আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মতো কৌশলগত অংশীদারদের, এবং তৃতীয় ও চূড়ান্ত বৃত্তে লাতিন আমেরিকা সহ বিশ্বের বাকি অংশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.