Author : Swati Prabhu

Published on Oct 18, 2024 Updated 0 Hours ago

ভারত উন্নয়নের গতিপথের বিভিন্ন স্তরে থাকা একই ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি অন্যান্য দেশের সঙ্গে তার নিজস্ব উন্নয়নমূলক অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে চাইছে।

ভারতীয় ফরমুলা

যাকে অর্থনৈতিক অগ্রগতি বলে মনে করা হয়, তা যে সামাজিক কল্যাণ লক্ষ্যের সঙ্গে মিলবে এমন কোনও কথা নেই। প্রকৃতপক্ষে, মোট দেশীয় পণ্য মূলত অর্থনীতি পরিমাপের একটি সূচক, মানব কল্যাণের নয়। এইভাবে, উন্নয়নের বর্তমান স্থিতিকে অবিলম্বে এমন উন্নয়ন মডেল দিয়ে প্রতিস্থাপিত করা দরকার যা ন্যায্য, টেকসই এবং প্রকৃতিগতভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক।

স্থিতিশীল উন্নয়নে অর্থায়ন গ্লোবাল সাউথের দুর্বল জনসম্প্রদায়ের সামনে প্রধান বাধাগুলির মধ্যে একটি। রাষ্ট্রপুঞ্জের ইন্টার-এজেন্সি টাস্ক ফোর্সের একটি প্রতিবেদন সতর্ক করে যে, বর্তমান এসডিজি অর্থায়ন ঘাটতি সময়মতো পূরণ না করলে তা একটি বিশাল ও স্থায়ী উন্নয়ন-‌বিভাজনে পরিণত হতে পারে। বেশ কয়েকটি নিম্ন-আয়ের অর্থনীতি, ছোট উন্নয়নশীল দ্বীপরাষ্ট্র, এবং স্বল্পোন্নত দেশ ক্রমবর্ধমান ঋণের চাপে ভুগছে। এটি তাদের পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টাকে বিপন্ন করছে, এবং আর্থিক চাপ ও জলবায়ু দুর্বলতার একটি দুষ্টচক্র তৈরি করছে।

উন্নয়ন অংশীদারিত্ব কোনও নতুন ঘটনা নয়। কিন্তু ভারত, চিন, ইন্দোনেশিয়া ও ব্রাজিলের মতো কিছু উন্নয়নশীল অর্থনীতির (পুনরায়) উত্থান এবং তারা দক্ষতা প্রশিক্ষণ, সক্ষমতা-নির্মাণ, জ্ঞান ভাগ করে নেওয়ার ক্ষেত্রগুলিতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্থান জোগানোর দায়িত্ব নেওয়ার পর উন্নয়ন অংশীদারিত্বে পশ্চিমের একচেটিয়া আধিপত্য আর নেই। । অধিকন্তু, 'সহায়তা' থেকে 'সহযোগিতা'য় একটি রূপান্তর ঘটেছে, যা একটি সমতাভিত্তিক সম্পর্ককে প্রতিফলিত করে। এছাড়াও সম্পদ, অর্থ বা জ্ঞানের স্থানান্তর এখন আর কোনও বাধ্যবাধকতা নয়, বরং বৃহত্তর বৈশ্বিক ভালো অর্জনের শর্ত।


সরকারি উন্নয়ন সহায়তার বর্তমান মডেল উন্নয়নশীল বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে অক্ষম বলে মনে হচ্ছে।



কিন্তু ন্যায্য অর্থায়ন অর্জনের জন্য বিদ্যমান অর্থায়ন স্থাপত্যের সংস্কার প্রয়োজন। যাদের প্রয়োজন সেই দেশগুলিকে শুধুমাত্র পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থায়নের ব্যবস্থা করলেই হবে না, বরং অর্থের প্রয়োজনীয় গুণমানও  — এমন অর্থ যা স্থায়িত্ব তৈরি করে — সুরক্ষিত করতে হবে। সরকারি উন্নয়ন সহায়তার বর্তমান মডেল উন্নয়নশীল বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে অক্ষম বলে মনে হচ্ছে। এছাড়াও, অবশ্যই এমন সব সমাধান খুঁজতে হবে যা প্রাইভেট ক্যাপিটাল ফান্ড ও বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ রেমিট্যান্সের মতো গুরুত্বপূর্ণ উৎসগুলির মাধ্যমে বিদ্যমান ওডিএ স্তরের পরিপূরণ করবে এবং তা বাড়াবে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন যে মূলধনের এই ব্যক্তিগত পুলগুলি একটি অব্যবহৃত সম্পদ। বেসরকারি ক্ষেত্রকে যুক্ত করা ও আকৃষ্ট করার জন্য জনহিতকর মূলধনের সঙ্গে রেয়াতি সরকারি তহবিলের সমন্বয়ে মিশ্রিত অর্থায়নের বিকল্পটিও অনুসন্ধান করা যেতে পারে।

মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তার মাত্রা বিশাল। ২০২২ সালের শুরু থেকে ৩০% বেড়ে এখন প্রায় ৩৬০ মিলিয়ন মানুষের সাহায্যের প্রয়োজন বলে অনুমান করা হয়; আর মানবিক চাহিদার ৮০% সংঘাত দ্বারা চালিত হয়। মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের কার্যালয় কর্তৃক প্রকাশিত গ্লোবাল হিউম্যানিটারিয়ান ওভারভিউ ২০২৪ রিপোর্ট অনুযায়ী, এই বছর মানবিক সংকটের জন্য তহবিলের প্রয়োজনীয়তা অনুমান করা হয়েছে প্রায় ৪৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অধিকন্তু, ২০২৩ সালে, দাতারা রাষ্ট্রপুঞ্জের মোট তহবিল চাহিদার মাত্র ৩৫% পূরণ করতে পেরেছে। আরও খারাপ, চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলির আকারে জলবায়ুর জরুরি অবস্থা মানবিক জরুরি অবস্থাকে ত্বরান্বিত করছে।


চিন বা পশ্চিমের মতো নয়, উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি জৈব, যা উন্নয়নশীল বিশ্বের চাহিদা পূরণের জন্য এটিকে আরও উপযুক্ত  করে তোলে।



গ্লোবাল সাউথের কণ্ঠস্বর হিসেবে নিজেকে তুলে ধরে, ভারত উন্নয়ন কূটনীতির ক্ষেত্রে তার খেলাকে বড় করে তুলেছে। চিন বা পশ্চিমের মতো নয়, উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি জৈব, যা উন্নয়নশীল বিশ্বের চাহিদা পূরণের জন্য একে আরও উপযুক্ত করে তোলে। নয়াদিল্লি জোর দিয়ে বলে যে তার উন্নয়ন  হস্তক্ষেপের লক্ষ্য হল স্থানীয় ক্ষমতা ও সুযোগ তৈরি করা। নিজেই একটি উন্নয়নশীল অর্থনীতি হওয়ার কারণে, ভারতও উন্নয়নের গতিপথের বিভিন্ন স্তরে থাকা অভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি অন্যান্য দেশের সঙ্গে তার নিজস্ব উন্নয়নমূলক অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে চাইছে। তদুপরি, বেজিংয়ের সঙ্গে নয়াদিল্লিও গ্লোবাল সাউথের প্রকৃত উদ্বেগের কথা তুলে ধরছে। জি২০-তে আফ্রিকান ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্তি এর একটি উদাহরণ।

যাই হোক, অংশীদারিত্বের প্রচেষ্টা প্রতিযোগিতামুক্ত নয়। কীভাবে উন্নয়ন সহযোগিতা বাস্তবে প্রদানকারীর কৌশলগত স্বার্থ পূরণের একটি প্রবেশদ্বার হয়ে ওঠে, তা নিয়ে বিতর্ক চলছে। এই পটভূমিতে, উন্নয়নের দিকে ‘ভারতীয় পথ’ গ্লোবাল সাউথের স্বার্থে কাজ করতে পারে।



এই ভাষ্যটি প্রথমে
দ্য টেলিগ্রাফ -‌এ  প্রকাশিত হয়েছিল।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.