Author : Manoj Joshi

Published on Feb 04, 2024 Updated 0 Hours ago

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে বিভাজনের গভীরতা একটি ভঙ্গুর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পূর্বাভাস প্রদান করে।

এ বছরের নির্বাচনের আগে ব্যাপক মার্কিন বিভাজন

প্রাক্তন মার্কিন ডিফেন্স সেক্রেটারি রবার্ট এম গেটসের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইউএস) নিরাপত্তার নিরিখে সম্ভবত এই সময়কার সবচেয়ে বড় হুমকির সম্মুখীন। তিনি রাশিয়া, চি, ইরান এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যকার জোটের ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, ‘এই দেশগুলির সম্মিলিত পারমাণবিক অস্ত্রাগার কয়েক বছরের মধ্যে তার নিজস্ব আকারের প্রায় দ্বিগুণ হয়ে উঠতে পারে। দুর্ভাগ্যবশত তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটি সুসংগত প্রতিক্রিয়ার পরিবর্তে এমন একটি প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে, যা ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকানস-এমতো প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে গভীর বিভাজনকেই দর্শায়। কিন্তু হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস-এর স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির তাঁর নিজের দলের সদস্য দ্বারা অপসারণের ঘটনা দর্শায় যে, কংগ্রেসে রিপাবলিকান পার্টি গভীর মেরুকরণ ও বিভাজন সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছে হাউস অ রিপ্রেজেন্টেটিভসে রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠদের অস্থায়ী ভাবে সরকারকে অর্থায়নের জন্য তাদের নিজস্ব বিল পাস করতে অস্বীকার করার ফলে এই বিভাজন আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। একটি সর্বাঙ্গীন অচলাবস্থা সামান্য ব্যবধানে এড়ানো গেলেও যে সব কারণের জন্য এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তা অমীমাংসিতই রয়েছে। এ হেন অচলাবস্থা বাস্তবে ঘটলে তা এক দশকের মধ্যে চতুর্থ বারের মতো হত এবং তা দীর্ঘায়িত হলে লক্ষাধিক নিম্ন উপার্জনকারী মানুষ দুর্দশার সম্মুখীন হতেন, যাঁরা খাদ্য সহায়তা পান এবং একই সঙ্গে সামরিক-সহ ফেডারেল কর্মচারীদের বেতনহীনতার সম্মুখীন হতে হত।

একটি সর্বাঙ্গীন অচলাবস্থা সামান্য ব্যবধানে এড়ানো গেলেও যে সব কারণের জন্য এই পরিস্থিতি হয়েছে, তা অমীমাংসিতই রয়েছে। এ হেন অচলাবস্থা বাস্তবে ঘটলে তা এক দশকের মধ্যে চতুর্থ বারের মতো হত এবং তা দীর্ঘায়িত হলে লক্ষাধিক নিম্ন উপার্জনকারী মানুষ দুর্দশার সম্মুখীন হতেন, যাঁরা খাদ্য সহায়তা পান এবং একই সঙ্গে সামরিক-সহ ফেডারেল কর্মচারীদের বেতনহীনতার সম্মুখীন হতে হত।

 

এই সব কিছুই চরম দক্ষিণপন্থী রিপাবলিকানদের একটি ছোট গোষ্ঠীর কৃতক্রমের ফলাফল, যারা স্বার্থসিদ্ধির জন্য নিজস্ব দল এবং দেশকে অচল করে তুলেছে। গত বছর জুন মাসে রিপাবলিকান কংগ্রেসের নেতৃত্ব এবং বাইডেন প্রশাসনের মধ্যে আগামী ১০ বছরের জন্য ফেডারেল বাজেটের অর্থায়ন সংক্রান্ত একটি চুক্তি হয়েছে এবং বাজেট ঘাটতি ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার মানো হয়েছে। কিন্তু মেক আমেরিকা গ্রেট এগেন (মেএজিএ) প্রচারকারী রিপাবলিকানরা কংগ্রেসে প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়াগুলি উৎখাত করে, যেগুলি দ্বারা ত দিন পর্যন্ত তাদের দল চালিত হয় এবং তারা ১ অক্টোবর অর্থবর্ষ শুরু হওয়ার আগে ১৩টি বরাদ্দ বিল পাসের অনুমতি দেয়নি অতীতের অচলাবস্থা থেকে এই সমস্যাটিকে যা পৃথক করে, তা হল বর্তমান সমস্যাটি যতটা না রিপাবলিকান বনাম ডেমোক্র্যাট, তার চেয়ে অনেক বেশি রিপাবলিকানদের নিজেদের মধ্যে লড়াই। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে সরকার দ্বারা পাস করা অস্থায়ী তহবিল - যা নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে - পদক্ষেপ অশান্তি দমন করতে ব্যর্থ হয়েছে। কংগ্রেসের প্রয়োজন হল ১২টি বার্ষিক ব্যয় বিলের সবগুলি পাস করানো অথবা অন্য একটি অস্থায়ী তহবিল অনুমোদন করানো। কিন্তু তার আগে এটিকে অবশ্যই এমন একটি হাউসে নতুন স্পিকার নির্বাচন করতে হবে, যেখানে রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য গভীর ভাবে মতবিভক্ত। বাহ্যিক ভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভাল করছে সামরিক প্রেক্ষিতে ব্যয়ের দিক থেকে প্রতিপক্ষ দেশের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে আছে। দেশটির অর্থনীতি দুর্দশা সংক্রান্ত অনুমান ভুল প্রমাণিত হয়েছে এবং এ ক্ষেত্রে দেশটি যথেষ্ট উন্নতি করেছে। দেশটির নতুন শিল্প নীতি এখন কার্যকর হয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাকি বিশ্বের মধ্যে প্রযুক্তিগত ব্যবধান উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। অন্য দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশটি ততটা ভাল অবস্থায় নেই। রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে এবং চিনের অর্থনীতি ক্রমদুর্বল হয়ে পড়ছে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে সতর্কতামূলক সঙ্কেত রয়েছে। অচলাবস্থার প্রাক্কালে ক্রেডিট রেটিং ফার্ম মুডি সতর্ক করে জানিয়েছে যে, মার্কিন সরকারের অচলাবস্থা সম্ভবত তার রেটিং-এও প্রভাব ফেলতে পারে। মুডি’স হল শীর্ষ তিনটি ক্রেডিট রেটিং ফার্মের মধ্যে একমাত্র, যেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একটি ‘এএএ’ রেটিং প্রদান করে। এএএ-কে সর্বোচ্চ গুণমানসম্পন্ন ও সর্বনিম্ন ঋণ ঝুঁকিসম্পন্ন বলে। কয়েক মাস আগে ফিচ রেটিং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ‘এএ+’-এ নামিয়ে আনে, যার নেপথ্যে ছিল ঋণের সীমা সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব এবং প্রশাসনিক সমস্যা। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল ঋণ সীমা সংক্রান্ত সমস্যার নিরিখে ২০১১ সালেই এমন রেটিং দিয়েছিল।

 

অচলাবস্থার প্রাক্কালে ক্রেডিট রেটিং ফার্ম মুডিস সতর্ক করে জানিয়েছে যে, মার্কিন সরকারের অচলাবস্থা সম্ভবত তার রেটিং-এও প্রভাব ফেলতে পারে।

 

বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অদ্ভুত দ্বৈততার চিত্র উপস্থাপন করে। এক দিকে, দেশটির একটি সমৃদ্ধ অর্থনীতি রয়েছে, যার বৃহৎ প্রযুক্তি সংস্থারা বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা চালিত একটি ভবিষ্য নির্মাণে আগ্রহী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাফল্যকে অন্য ভাবেও পরিমাপ করা হচ্ছে- সারা বিশ্ব থেকে অভিবাসীদের নিরলস ঢেউ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে এসে ভিড় করছে কিন্তু দেশটিতে প্রকৃত সামাজিক অচলাবস্থা রয়েছে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে প্রকাশ পায়। এই সঙ্কট কতটা গভীর, তা ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি স্পষ্ট হয়ে ওঠে, যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলকে বদলে দেওয়ার জন্য একটি বিদ্রোহের চেষ্টা চালানো হয়েছিল। উদ্বেগজনক সত্যটি হল এই যে, অভ্যুত্থানের চেষ্টা সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০ শতাংশ মার্কিন ভোটার বিশ্বাস করে যে, জো বাইডেন ভোট জালিয়াতির কারণে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন।

 

দীর্ঘস্থায়ী সঙ্কটের অন্যান্য প্রেক্ষিতও রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এক সময় সামাজিক গতিশীলতার দেশ থাকলেও গত ৫০ বছরে সে দেশে কোটিপতির সংখ্যা দশ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ অদক্ষ শ্রমিকদের আপেক্ষিক মজুরি প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে এবং কলেজের ডিগ্রি ছাড়াই ৬৪ শতাংশ মার্কিনদের প্রকৃত মজুরি অনেকাংশেই কমে গিয়েছেএ ধরনের পরিস্থিতি সামাজিক কলহ ও দুর্দশা মোচন করতে পারে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ মানুষ গৃহহীন। নিউইয়র্ক টাইমসের মতে, গৃহহীনতার নেপথ্যে বিভিন্ন কারণ থাকলেও প্রাথমিক কারণটি হল মজুরিতে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষয় এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে পড়া। মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং মাদকাসক্তির মতো অন্যান্য সমস্যারয়েছে। কিন্তু দেশের প্রাথমিক সমস্যা হল আবাসনের উচ্চ খরচ এবং সাশ্রয়ী মূল্যের বাড়ি খুঁজে পাওয়ার অসুবিধা। নিউ ইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগো, মিয়ামি, বস্টন, সিয়াটেল এবং সান ফ্রান্সিসকো মতো বড় শহরগুলিতে এই পরিস্থিতি ক্রমশ পতনের দিকে এগোচ্ছেগত এক দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২০টি বৃহত্তম মেট্রো এলাকা মিলিয়ে প্রায় এক মিলিয়ন মানুষ জীবিকা হারিয়েছে কোভিড-১৯-এর জন্য এই দুর্দশা ত্বরান্বিত হয়েছিল। সব ক্ষেত্রেই হেন সঙ্কোচন অনিবার্য সমস্যা ডেকে নিয়ে এসেছে- দরিদ্র যুবকদের জন্য আবাসন আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে, অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে, গণপরিবহণ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এবং ফাঁকা অফিসের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছেতবু আর কটি নেতিবাচক সূচক হল এই যে, আয়ুষ্কাল সর্বদা একটি জাতির অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্বাস্থ্যের চিহ্ন, যা কোভিড সঙ্কটের বেশ আগে থেকে অর্থাৎ ২০১৪ সাল থেকে হ্রাস পাচ্ছে। ওয়াশিংটন পোস্টের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘দেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং জাতিগত বিভাজনের ফলে সমস্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।’ এটি মোটেই আশ্চর্যের বিষয় নয় যে, ১৯৮০ সাল থেকে দরিদ্র এবং ধনীদের মধ্যে মৃত্যুর হারের ব্যবধান ৫৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে

 

সব ক্ষেত্রেই এ হেন সঙ্কোচন অনিবার্য সমস্যা ডেকে নিয়ে এসেছে- দরিদ্র যুবকদের জন্য আবাসন আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে, অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে, গণপরিবহণ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এবং ফাঁকা অফিসের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

জাতি, লিঙ্গ এবং আগ্নেয়াস্ত্রেমতো সমস্যাগুলির ভিত্তিতে দেশের বিভাজন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং রিপাবলিকান ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজন গভীরতর হয়েছে। বর্ণবাদ বিরোধী বা গর্ভপাতের অধিকারের লড়াইয়ে প্রতিবাদীরা যখন অতি-দক্ষিণপন্থী গোষ্ঠী এবং বেসামরিক জঙ্গিগোষ্ঠীর সম্মুখীন হয়, তখন এই পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়। হুমকি হিংসার ঘটনা অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। বিভাজনের প্রেক্ষিতে একটি প্রধান সমস্যা উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন অ্যাসল্ট রাইফেল-সহ বন্দুকের মালিকানা সংক্রান্ত প্রবিধান বা তাদের অভাবের সঙ্গে সম্পর্কিত। গত বছরের গস্ট মাস পর্যন্ত, ৪৭০টিরও বেশি প্রকাশ্যে গুলিচালনার ঘটনা ঘটেছে এবং গত তিন বছর ধরে প্রত্যেক বছরে ৬০০টিরও বেশি এ হেন ঘটনা লক্ষ করা গিয়েছে। মার্কিনরা কঠোর আগ্নেয়াস্ত্র আইন সমর্থন করলেও তারা একটি সুসংগঠিত লবি বিরোধিতা করে, যা কোন নতুন বিধিনিষেধের বিরোধী। মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট নিজেই দক্ষিণপন্থীদের ঘাঁটি হয়ে উঠেছে। যখন আদালত নারীদের গর্ভপাতের অধিকার বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন একটি বড় বিভাজন সৃষ্টি হয় এবং এ হেন রায়ের ফলে ১৪টি স্টেটে গর্ভপাত নিষিদ্ধ হয়। নতুন মেয়াদ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আগ্নেয়াস্ত্রের অধিকার, ফেডারেল এজেন্সিগুলির ক্ষমতা, সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ এবং জেরিম্যানডারিং বা নির্বাচনী ক্ষেত্রের অসম বণ্টনের মাধ্যমে কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দলকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার মতো বড় সমস্যাগুলির মোকাবিলা করতে হবে ৬:৩ অনুপাতে দক্ষিণন্থীদের ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা মার্কিন রাজনৈতিক ব্যবস্থা এবং সমাজকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। মার্কিন নির্বাচনে এমন কোনও সুযোগই নেই, যা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বর্তমান ক্ষমতাধীন জো বাইডেনের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে পারে অর্থাৎ পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ারও সম্ভাবনা নেই। এই নির্বাচনের এক দিকে রয়েছেন এমন এক ব্যক্তি যার বিরুদ্ধে আনা একাধিক অপরাধমূলক এবং জালিয়াতির ঘটনায় বিচার চলছে ও এই বছর সেই সংক্রান্ত রায় প্রকাশ্যে আসবে। অন্য দিকে রয়েছেন ৮১ বছর বয়সি ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট, যাঁর বিরুদ্ধে মার্কিন হাউস অ রিপ্রেজেন্টেটিভসে অপরাধমূলক তদন্তের শুনানি চলছে এবং যিনি তাঁর নিজের দলকে উত্সাহ জোগাতে অক্ষম

 

এই নির্বাচনের এক দিকে রয়েছেন এমন এক ব্যক্তি যার বিরুদ্ধে আনা একাধিক অপরাধমূলক এবং জালিয়াতির ঘটনায় বিচার চলছে ও এই বছর সেই সংক্রান্ত রায় প্রকাশ্য আসবে।

 

মার্কিন কংগ্রেস বা সেদেশের সুপ্রিম কোর্টের মতো প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতা এই আখ্যানের একটি অংশ মাত্র। এর নেপথ্যে অন্যতম কারণ হল, জেরিম্যানডারিং (নির্বাচনী ক্ষেত্রের অসম বণ্টনের মাধ্যমে কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দলকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া), যা নিশ্চিত করে যে নির্বাচনে মাত্র কয়েকটি বাস্তব প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছে। মার্কিন কংগ্রেস নিজেই মান্ধাতার আমলের নিয়মের ভিত্তিতে গঠিত এবং এর পদ্ধতি পরিবর্তনকে আরও কঠিন করে তোলে। বিশ্বের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে বিষয়টি হল: আগামী বছরগুলিতে কেমন ধরনের মার্কিন নেতৃত্ব আশা করা যেতে পারে? ইতিমধ্যেই ট্রাম্পের আমেরিকা ফার্স্ট’ দৃষ্টিভঙ্গির স্বাদ পাওয়া গিয়েছে, যিনি মিত্র এবং অংশীদারদের অবজ্ঞা করেন এবং পুতিন কিম জং উনের প্রতি অনুকূল মনোভাব পোষণ করেন। জো বাইডেন তাঁর সম্পৃক্ততা এবং জোট গঠনের নীতি দ্বারা একটি নির্দিষ্ট স্থিতিশীলতা এনেছিলেন এবং আত্মসচেতন ভাবে মার্কিন নীতির নেতৃত্ব পুনরুদ্ধার করেছিলেন। ২০২৪ সালের নির্বাচনটি ২০২০ সালের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি বলে মনে হলেও তেমনটা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কোন কমত্য না থাকা আসলে এই প্রমাণ করে যে, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ইউক্রেনকে সমর্থন করার জন্যও পূর্ণাঙ্গ দ্বিপাক্ষিক সমর্থন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফেও নেই। বাইডেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগের আহ্বান, মিত্র এবং অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয় বজায় রাখা এবং চিনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার নীতি অনুসরণ করেছেন। তবে রিপাবলিকান পার্টি এবং ট্রাম্প কী অনুসরণ করবেন, তা স্পষ্ট নয়। প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের বিভাজনমূলক উত্তরাধিকার সমস্ত বিষয়ে রিপাবলিকানদের অবস্থানকে ছাপিয়ে গিয়েছে এবং এতে মার্কিন বিদেশনীতিতে অনিশ্চয়তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

 


মনোজ জোশী অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ডিস্টিঙ্গুইশড ফেলো।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.