Published on Mar 15, 2023 Updated 0 Hours ago

অর্থনৈতিক সংস্কারের গবেষণাগারে জন বিশ্বাস বিল একটি পরীক্ষা। এই অপরাধমুক্তকরণ পন্থা কার্যকর করে তোলা বহু দূরের পথ।

অপরাধমুক্তকরণ বিল একটি আংশিক সংস্কার, এটির পরিসর বৃদ্ধি করা উচিত

সাত দশক ব্যাপী নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থায় সম্মতিমূলক সংস্কার সহজ কাজ নয়। এই ব্যবস্থা দ্বারা পরিচালিত আইনে কারাদণ্ডের ধারাগুলিকে অপরাধমুক্ত করার জন্য বেশ কয়েকটি মন্ত্রককে একত্র করার কাজ আরও বেশি কঠিন। এর ফলস্বরূপ সংস্কারবাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজনৈতিক প্রত্যয় এবং ১০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের জিডিপি-র লক্ষ্য-সমন্বিত অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ভারতের ব্যবসায়িক আইনগুলিকে অনুঘটকে পরিণত করার উদ্দেশ্যে শাসক জোটের আইনি অভিপ্রায় থাকা সত্ত্বেও ২০২২ সালের জন বিশ্বাস (বিধান সংশোধন) বিল প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।

বিলটিকে গন্তব্য নয়, দীর্ঘ যাত্রার সূচনা হিসাবে দেখা জরুরি; এটা শেষ নয়, বরং প্রথম ধাপ; এটিকে ইতিমধ্যে ভাল বলে বিবেচনা করা অনুচিত, কারণ কাজটি সবে মাত্র শুরু হয়েছে। সম্মতিমূলক সংস্কারকে যদি ২৪ ঘণ্টার একটি দিন হিসেবে ধরা যায়, তা হলে বিলটি ৩০ বা ৩১ মিনিটের কাজ সমাধা করতে সমর্থ হয়েছে। এই বিল চিন থেকে আসা উদ্বাস্তু পুঁজিপতিদের জায়গা করে দেওয়া জন্য বা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সময়ে অভ্যন্তরীণ পাশবিক সত্তাকে উন্মোচিত করার কাজে একটি অপ্রতুল হাতিয়ার।

জন বিশ্বাস বিল সংসদের যে ৪২টি আইনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, তার মধ্যে অর্ধেকের সামান্য কিছু বেশি বা ২৩টি আইন ব্যবসার পদ্ধতি সরল করার উপর প্রভাব ফেলে; অবশিষ্টগুলি হয় জীবনযাত্রার স্বাচ্ছন্দ্য অথবা প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোকে প্রভাবিত করে। ব্যবসায়িক আইনের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে রাখা হলে, ২৩টি আইন হল ৬৭৮টি আইন সমন্বিত কেন্দ্রীয় সম্মতি মহাবিশ্বের একটি ভগ্নাংশ মাত্র: এটি ২৯ বা ৩.৪ শতাংশের মধ্যে একটির চেয়েও কম। বিলে অপরাধমুক্তকরণের জন্য প্রস্তাবিত ১৮৬টি সম্মতির মধ্যে ১১৩টি বা পাঁচটির মধ্যে তিনটি ব্যবসা করার সঙ্গে সম্পর্কিত। আবার দেশের আইনের ৫২৩৯টি কারাবন্দি-সংক্রান্ত ধারার নিরিখে বিচার করলে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৫০টি ধারায় প্রায় একটি বা ২.১ শতাংশে।

যদি কোনও পরিদর্শক বিপজ্জনক পদার্থ নিয়ে কাজ করা কারখানা থেকে ম্যানেজারের সহায়তা না পাওয়ার দরুন কোনও নমুনা সংগ্রহ করতে অক্ষম হন, তা হলে পাঁচ বছর কারাদণ্ডের ধারাকে অপরাধমুক্ত করে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে।

সম্মতির সংখ্যার ভিত্তিতে যে শীর্ষ পাঁচটি আইনকে অপরাধমুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে: বাণিজ্যিক নৌপরিবহণ আইন, ১৯৫৮; পরিবেশ (সুরক্ষা) আইন, ১৯৮৬; বায়ু (দূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ) আইন, ১৯৮১; জাতীয় আবাসন ব্যাঙ্ক আইন, ১৯৮৭; এবং টাকা তছরুপ প্রতিরোধ আইন, ২০০২, পরিসংখ্যান সংগ্রহ আইন, ২০০৮ এবং বৈধ পরিমাপ আইন, ২০০৯-এর ত্রয়ী। একসঙ্গে এগুলি ১১৩টি কারাদণ্ডের ধারার মধ্যে ৭৩টিকে অপরাধমুক্ত করার প্রস্তাব করেছে।

বাণিজ্যিক নৌপরিবহণ আইন, ১৯৫৮ সবার উপরে রয়েছে এবং এর ২২টি সম্মতিকে অপরাধমুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে৷ এর মধ্যে রয়েছে নথি জাল বা জালিয়াতি করে কোনও নাবিকের কাজে বহাল থাকার ধারা; কাজ পরিত্যাগ এবং লগবুকে প্রতারণামূলক পরিবর্তন বা তা নষ্ট করে দেওয়া। পরিবেশ (সুরক্ষা) আইন, ১৯৮৬-তে ১২টি ধারা, বায়ু (দূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ) আইন, ১৯৮১-তে ১০টি, জাতীয় আবাসন ব্যাঙ্ক আইন, ১৯৮৭-তে আটটি এবং টাকা তছরুপ প্রতিরোধ আইন, ২০০২, পরিসংখ্যান সংগ্রহ আইন, ২০০৮ এবং বৈধ পরিমাপ আইন, ২০০৯-এর মতো অবশিষ্ট তিনটি আইনের প্রত্যেকটিতে সাতটি করে ধারাকে অপরাধমুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

পরিবেশ (সুরক্ষা) আইন, ১৯৮৬-তে অনিচ্ছাকৃত সম্মতি লঙ্ঘন, যেমন ধারা ৭ এবং ৯-এর অধীনে দূষণসৃষ্টিকারী অতিরিক্ত নিঃসরণ সম্পর্কে অসচেতন  হওয়া, যে ক্ষেত্রে শাস্তিস্বরূপ বর্তমানে পাঁচ বছর কারাদণ্ড এবং ১ লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করা আছে, তা পরিবর্তন করে লঙ্ঘনকে অপরাধমুক্ত করতে ১ লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যদি কোনও পরিদর্শক বিপজ্জনক পদার্থ নিয়ে কাজ করা কারখানা থেকে ম্যানেজারের সহায়তা না পাওয়ার দরুন কোনও নমুনা সংগ্রহ করতে অক্ষম হন, তা হলে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের ধারাকে অপরাধমুক্ত করে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে।

বিলে তথ্যপ্রযুক্তি আইন, ২০০০-এর ৬টি ধারাকে অপরাধমুক্ত করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ধারা ৩৩ যা লাইসেন্স সমর্পণ করতে ব্যর্থ হলে; ধারা ৬৭গ যা মধ্যস্থতাকারীদের দ্বারা তথ্য সংরক্ষণ এবং তা আটকে রাখলে; এবং ধারা ৭২-র অধীনে গোপনীয়তা ও বিশ্বাসযোগ্যতা লঙ্ঘন করলে জরিমানার বিধান দেয়। সর্বোপরি, এটি ধারা ৬৬ক-কে অপসারণের প্রস্তাব করে, যা একটি যোগাযোগ পরিষেবার মাধ্যমে আপত্তিকর বার্তা প্রেরণের জন্য শাস্তি প্রদান করে। এটি ২০১৫ সালের ২৪ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের একটি আদেশ অনুসরণ করে যাতে ধারা ৬৬ক-কে বাতিল করা হয়েছিল।

বিলটির লক্ষ্য ‘জীবনযাত্রা এবং ব্যবসা করার সহজতার জন্য বিশ্বাসভিত্তিক প্রশাসনকে আরও উন্নত করতে ছোটখাট অপরাধগুলিকে অপরাধমুক্ত এবং যুক্তিযুক্ত করার উদ্দেশ্যে কিছু আইন সংস্কার করা।’

কারাদণ্ডের ধারাগুলির মধ্যে একটি আইন যা ব্যবসার জন্য অসুবিধাজনক বলে গণ্য হয়, তা হল বৈধ পরিমাপ আইন, ২০০৯। এ ক্ষেত্রে জন বিশ্বাস বিল যে চারটি ক্ষেত্রের অপরাধমুক্তকরণের প্রস্তাব দিয়েছে, সেগুলি হল – ধারা ২৫ (অপ্রামাণিক ওজন বা পরিমাপের ব্যবহার); ধারা ২৭ (অপ্রামাণিক ওজন বা পরিমাপ উত্পাদন); ধারা ২৮ (নির্ধারিত মান লঙ্ঘন করে লেনদেন করা); এবং ধারা ৩১ (নথি দেখাতে না-পারা)। আর একটি সমস্যা হল দ্য বয়লারস অ্যাক্ট, ১৯২৩-এর অধীনে কারাবাসের ধারা, যার আওতায় ধারা ২২ (দুর্ঘটনার প্রতিবেদন করা) এবং ধারা ২৩-এর (বয়লারের অবৈধ ব্যবহার) ক্ষেত্রে দু’টি কারাদণ্ডের ধারাকে অপরাধমুক্তকরণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে৷

ব্যবসা বা নিয়োগকর্তার সম্মতির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, এমন আইনের ধারাগুলির মধ্যে যেগুলিকে অপরাধমুক্তকরণের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে তা হল খাদ্য কর্পোরেশন আইন, ১৯৬৪-র ধারা ৪১এল; ওয়্যারহাউজিং কর্পোরেশনস আইন, ১৯৬২-র ধারা ৩৮; ভারতীয় পোস্ট অফিস আইন, ১৮৯৮-র ধারা ১০; এবং আধার (আর্থিক এবং অন্য ভর্তুকি, সুবিধা এবং পরিষেবাগুলির লক্ষ্যযুক্ত বিতরণ) আইন, ২০১৬-র ধারা ৪১৷

বিলের উদ্দেশ্য ক্ষুরধার ও তীক্ষ্ণ। এতে ‘ন্যূনতম সরকার সর্বোচ্চ প্রশাসন’ এবং ‘বিশ্বাসভিত্তিক প্রশাসন’-এর মতো বিষয় এবং কারণগুলির বিবৃতিকে প্রচারের জন্য চমকদার শব্দবন্ধ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বিলটির লক্ষ্য ‘জীবনযাত্রা এবং ব্যবসা করার সহজতার জন্য বিশ্বাসভিত্তিক প্রশাসনকে আরও উন্নত করতে ছোটখাট অপরাধগুলিকে অপরাধমুক্ত এবং যুক্তিযুক্ত করার উদ্দেশ্যে কিছু আইন সংস্কার করা।’

এর পাশাপাশি বিলটি বিশ্ব অর্থনীতিতে ভারতের স্থানকে স্বীকৃতি দেয়। এটি ‘বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করে ভারতকে সবচেয়ে পছন্দের বৈশ্বিক বিনিয়োগের গন্তব্য’ করে তোলার বিষয়ে কথা বলে এবং ব্যবসার বাস্তুতন্ত্র ও ব্যক্তিগত আত্মবিশ্বাসের বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করার কারণ হিসাবে ‘ক্ষুদ্র অপরাধের জন্য কারাবাসের ভয়’কে স্বীকৃতি দেয়। এটি বিচারগত বোঝা কমানোর চেষ্টা করে তার যুক্তিগুলিকে আরও শক্তিশালী করে তোলে: ‘বিশাল সংখ্যক সমস্যার নিষ্পত্তিতে জটিল পদ্ধতির মাধ্যমে বিচার এবং প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় আদালতকে জড়িত না করে পদ্ধতি, সালিশি এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে ব্যক্তিদের ছোটখাট লঙ্ঘন এবং ত্রুটিগুলির প্রতিকার করতে সক্ষম করবে, যা কখনও কখনও তাদের দ্বারা অজান্তে সংঘটিত হয়, আর এর ফলে সময়, শক্তি ও সম্পদ বাঁচবে।’

যদি কেন্দ্রীয় শ্রম আইন থেকে ৫৩৪টি কারাদণ্ডের ধারা সরিয়ে নেওয়া হয় – যেমন এই সংস্কারগুলি ইতিমধ্যেই ঘটছে কারণ ২৯টি কেন্দ্রীয় আইন চারটি শ্রম কোডের অধীনে একত্র হয়েছে – তা হলে ৪৭০৫টি কারাদণ্ডের ধারা অবশিষ্ট থাকে৷

কিন্তু সংস্কারের অভিপ্রায় এবং প্রস্তাবিত বিলের মধ্যে রাজনৈতিক আস্থার অব্যাখ্যাত অভাবের গভীর শূন্যতা রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। যদি ব্যবসা করার সহজতার দিকে মনোনিবেশ করা হয়, তা হলে দেখা যাবে ৫২৩৯টি কারাদণ্ডের ধারা রয়েছে যা কেন্দ্রীয় সরকারের আওতাধীন। যদি কেন্দ্রীয় শ্রম আইন থেকে ৫৩৪টি কারাদণ্ডের ধারা সরিয়ে নেওয়া হয় – যেমন এই সংস্কারগুলি ইতিমধ্যেই ঘটছে কারণ ২৯টি কেন্দ্রীয় আইন চারটি শ্রম কোডের অধীনে একত্র হয়েছে – তা হলে ৪৭০৫টি কারাদণ্ডের ধারা অবশিষ্ট থাকে৷ এগুলির মধ্যে যদি প্রস্তাবিত বিলটি কেবলমাত্র ১১৩টি ধারাকে অপরাধমুক্ত করে, তা হলে এমন এক আইনি সতর্কতাই পরিলক্ষিত হয়, যা বর্তমান সময়ের রাজনীতি বা সংস্কারবাদী সরকারের কর্মকাণ্ডের জন্য উপযুক্ত নয়।

নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার প্রথম কয়েক মাস থেকেই ২০১৪ সালের অগস্ট মাসে হলফনামা ও প্রত্যয়নের জায়গায় জন ধন যোজনা এবং স্ব-প্রত্যয়নের মাধ্যমে সংস্কারের পথে হেঁটেছে। তারপর থেকে এটি আধার আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সংস্কারের পথকে আরও জোরদার করে তুলেছে। ২০১৭ সালে ২০১৬ থেকে ২০২১ পর্যন্ত দেউলিয়া এবং দেউলিয়াত্ব কোড (ছয়টি সংশোধনী-সহ), ২০১৭ সালে পণ্য ও পরিষেবা কর প্রবর্তন, ২০১৫, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে অপ্রচলিত আইন বাতিল করা এবং এমনকি কৃষি ক্ষেত্রেও ২০২০ সালে সংস্কারের চেষ্টা চালানো হয়েছে। প্রাপকের হাতে সরাসরি সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে এই সংস্কারগুলিকে সশক্ত করা হয়েছে। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পেমেন্ট ব্যবস্থা-সহ এটি অর্থনীতির এক নতুন অর্থায়নকে ত্বরান্বিত করে।

১৯৯১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাও যে ভাবে কোটা-পারমিট রাজের অবলুপ্তি ঘটিয়েছিলেন, ঠিক সেভাবেই দুর্নীতিপরায়ণ, অর্থলোভী এবং ঔপনিবেশিক ইনস্পেক্টর রাজ ধ্বংসকারী সম্মতি সংস্কারগুলিকে আটকে রাখা খুবই আশ্চর্যের। সরকারের এটা অজানা নয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের দ্বারা সংসদে পেশ করা কোম্পানি আইন, ২০১৩-তে সংশোধনীর মাধ্যমে ধারাগুলিকে অপরাধমুক্ত করা হল একটি দিকনির্দেশক ঘটনা এবং ২০১৯ সালের সংশোধনীতে ১৬টি সম্মতিকে ইন-হাউস সালিশি ব্যবস্থায় স্থানান্তরিত করা হয়েছিল; ২০২০-র সংশোধনীর মাধ্যমে আরও ১৮টি; এবং ২০২০ সালের সংশোধনীতে ১১টি সম্মতির ক্ষেত্রে কারাদণ্ডের বিধানকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

এই অপরাধমুক্তকরণের কাজ অন্যান্য অ-শ্রম আইনের ক্ষেত্রেও অনুসরণ করা প্রয়োজন। খাদ্য সুরক্ষা এবং গুণমান আইন, ২০০৬ এবং খাদ্য সুরক্ষা এবং গুণমান আইন (খাদ্যপণ্যের মান এবং খাদ্য সংযোজন) আইন, ২০১১-তে ৪৭০টি কারাদণ্ডের ধারা রয়েছে। খনি আইন ১৯৫২ এবং কয়লা খনি আইন, ২০১৭-তে ২১৬টি কারাদণ্ডের ধারা রয়েছে। বায়োসেফটি অব রিকম্বিন্যান্ট ডিএনএ রিসার্চ অ্যান্ড বায়োকন্টেনমেন্ট সংক্রান্ত আইন এবং নির্দেশিকা, ২০১৭-তে ২০৭টি কারাদণ্ডের ধারা রয়েছে। খনি আইন, ১৯৫২ এবং তেল খনি নিয়ন্ত্রণবিধি, ২০১৭-এ ১৭০টি কারাদণ্ডের ধারা রয়েছে। পেট্রোলিয়াম আইন, ১৯৩৪ এবং পেট্রোলিয়াম বিধিমালা, ২০০২-এ ১২০টি কারাদণ্ডের ধারা রয়েছে। সংস্কারের তালিকা ৬৭৮টি আইনদীর্ঘ। জন বিশ্বাস বিল একটি বহু মন্ত্রণালয় সংস্কার। সংসদের ২৩টি আইন জুড়ে ১১৩টি ধারায় এটি প্রয়োগ করা এর বিস্তৃতির পরিধিকে সীমিত করছে এবং এটিকে ছায়া প্রদানকারী মহীরুহের পরিবর্তে একটি নিতান্তই দর্শনীয় বনসাইতে পরিণত করছে।

এই বিলের দ্বারা প্রভাবিত প্রতিটি নির্বাচনী এলাকা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ থেকে শুরু করে মেগা কর্পোরেশন, বিনিয়োগকারী থেকে স্টার্ট-আপ, শ্রমিক থেকে উদ্যোক্তা এবং সংস্থা থেকে অর্থনীতি… সব কিছুই এই সংস্কার দ্বারা উপকৃত হবে।

যাঁরা ব্যবসায়িক আইন, বিধি, প্রবিধান এবং সম্মতিগুলির উপর নিয়মিত নজর রাখেন, তাঁদের কাছে লোকসভায় উত্থাপিত এবং ২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বর যৌথ সংসদীয় কমিটিতে (জেপিসি) পাঠানো এই বিল নিতান্তই অপ্রয়োজনীয় শক্তি পরীক্ষা। কারণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে বিল যিনি পেশ করেছেন সেই বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল পর্যন্ত সমগ্র সরকার এ বিষয়ে দ্বিধাহীন এবং এটিকে আইনে রূপান্তর করার জন্য সংসদে সরকারের পর্যাপ্ত শক্তি রয়েছে। এই বিলের দ্বারা প্রভাবিত প্রতিটি নির্বাচনী এলাকা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ থেকে শুরু করে মেগা কর্পোরেশন, বিনিয়োগকারী থেকে স্টার্ট-আপ, শ্রমিক থেকে উদ্যোক্তা এবং সংস্থা থেকে অর্থনীতি… সব কিছুই এই সংস্কার দ্বারা উপকৃত হবে। যাঁরা এর বিরোধিতা করছেন – অর্থাৎ সাধারণ সন্দেহপ্রবণ যাঁরা ব্যবসার মাধ্যমে সৃষ্ট সম্পদের পরিবর্তে দারিদ্র্যকে পুনঃবণ্টন করতে চান বা শিকড় গেড়ে বসা দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাতন্ত্র- তাঁরা বৃহত্তর আইনি গণিতের প্রেক্ষিতে অপ্রাসঙ্গিক।

এর পাশাপাশি, সংসদে ১১৩টি ধারাকে অপরাধমুক্ত করার রাজনৈতিক প্রচেষ্টা ৪৭০৫টি ধারার জন্যও প্রযোজ্য হবে – এগুলিকে থামিয়ে রেখে কোনও উদ্দেশ্য পূরণ হবে না। সতর্কতার বিষয় হিসাবে এ কথা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে, সমস্ত কারাদণ্ডের ধারা অপরাধমুক্ত করা অবশ্যই কারও ব্যক্তিগত স্বার্থে নয়। এ ক্ষেত্রে এ কথাই বলার চেষ্টা করা হচ্ছে যে প্রতিটি ধারাকে খতিয়ে ভেবে দেখা এবং তার যৌক্তিকতা থাকা জরুরি: যেটি অপরিহার্য, তাকে বহাল রাখা ও অবশিষ্টকে বর্জন করা – যে ধারাগুলি ইচ্ছাকৃত কর ফাঁকি বা পরিবেশের ধ্বংসকে প্রভাবিত করে, তা ধরে রাখা যেতে পারে এবং প্রক্রিয়া বা ফাইলিং সম্পর্কিত কারাদণ্ডের ধারাগুলিকে বাতিল করা যেতে পারে।

২০২৩ সালের বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রথম সপ্তাহের শেষ দিনে জেপিসি রিপোর্ট পেশ করা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই কমিটির সদস্যদের কাছে আংশিক ভাবে সীমাবদ্ধ এই বিলের পরিসর বৃদ্ধির জন্য সরকারকে আবেদন জানানো, মাত্রার নিরিখে বৃহৎ ও সময়ের নিরিখে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন চিন্তাভাবনা করা, আত্ম-স্বার্থের আমলাতান্ত্রিক প্রবণতাকে ধ্বংস করা, এবং বিশ্বব্যাপী ও দেশীয় পুঁজিকে আকৃষ্ট করার সম্ভাবনাসম্পন্ন সংস্কার সাধন ও স্থিতিশীল কর্মসংস্থান এবং অবিরাম সম্পদ সৃষ্টিকারী কারখানাগুলি খুলে দেওয়ার জন্য সুপারিশ করার আবেদন জানানো হচ্ছে। এমনটা করতে হলে যদি বিল পাশের ব্যাপারটির বাজেট অধিবেশন থেকে বাদল অধিবেশন পর্যন্ত সময় লাগে, তা হলে তা-ও শ্রেয়। তবে এই সম্মতি সংস্কারগুলিকে মোদীর দ্বারা গত আট বছর যাবৎ নির্মিত সামগ্রিক সংস্কারের গতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Authors

Gautam Chikermane

Gautam Chikermane

Gautam Chikermane is a Vice President at ORF. His areas of research are economics, politics and foreign policy. A Jefferson Fellow (Fall 2001) at the East-West ...

Read More +
Rishi Agrawal

Rishi Agrawal

Rishi Agrawal is co-founder and CEO at Avantis RegTech.

Read More +