Author : Titli Basu

Published on Dec 01, 2023 Updated 0 Hours ago

নিরাপত্তা থেকে শুরু করে বাণিজ্য পর্যন্ত বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ত্রিপাক্ষিক শক্তির উপর চিনা ছায়া ঘনিয়ে আসছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া ত্রিপাক্ষিক শক্তির সামনে চিনা চ্যালেঞ্জ

ক্যাম্প ডেভিড কি উত্তর-পূর্ব এশিয়ার নিরাপত্তাকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করবে? এটি অবশ্যই উত্তর-পূর্ব এশিয়ার কৌশলগত পরিসরের একটি নির্দিষ্ট মুহূর্তকে উন্মোচিত করে। তবুও মূল প্রশ্নটি হল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া ত্রিপাক্ষিক জোট নিয়মভিত্তিক আঞ্চলিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং প্রেসিডেন্ট বাইডেনের গণতন্ত্র ও স্বৈরাচারের মধ্যে প্রতিযোগিতাজয় করার ক্ষেত্রে কতটা ফলপ্রসূ হবে?

 

বেজিং যখন পূর্ব এশিয়ায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন আঞ্চলিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে চাইছে না এবং একটি চিন-রাশিয়া-উত্তর কোরিয়া জোট রূপ নিচ্ছে, তখন ১৮ অগস্ট ওয়াশিংটন তার এশীয় জোট শৃঙ্খল তৈরি করে একটি অনুকূল কৌশলগত পরিসর বজায় রাখার জন্য নিজের দৃঢ় সংকল্প প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছে। একটি শক্তিশালী ত্রিপাক্ষিক নিরাপত্তা সহযোগিতার জন্য ওয়াশিংটনের আকাঙ্ক্ষা ১৯৬৯ সালের নিক্সন-সাতো কোরিয়া ক্লজ থেকে পাওয়া যেতে পারে। যেহেতু মার্কিন-জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া একটি ইন্দো-প্যাসিফিক আলোচনা চালানোর জন্য নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে তাদের ত্রিপাক্ষিকতাকে প্রাতিষ্ঠানিক করে তুলেছে, তাই জোটটির সাফল্য এটিকে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে, বিশেষ করে অমীমাংসিত ঐতিহাসিক স্মৃতি ও ওয়াশিংটনের পূর্ব এশিয়ার প্রধান মিত্রদের মধ্যে ধারণাগত রাজনীতিতে আরও স্থিতিস্থাপক করার উপর নির্ভর করবে।

 

একটি শক্তিশালী ত্রিপাক্ষিক নিরাপত্তা সহযোগিতার জন্য ওয়াশিংটনের আকাঙ্ক্ষা ১৯৬৯ সালের নিক্সন-সাতো কোরিয়া ক্লজ থেকে পাওয়া যেতে পারে।

 

যেখানে জাপানের ২০২২ সালের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল (এনএসএস) আঞ্চলিক নিরাপত্তার প্রসঙ্গে সিওলকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশহিসাবে চিহ্নিত করেছিল, সেখানে দক্ষিণ কোরিয়ার ২০২৩ সালের এনএসএস আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে টোকিয়োর সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়। এটি কোরিয়া-জাপান সম্পর্ককে স্বাভাবিক করার এবং অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা উল্লম্বের গতিকে আরও ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে যুক্তি দর্শিয়েছেদক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থানের পরিবর্তন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টোকিও এবং সিওলের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের ক্ষমতাসম্পন্ন কূটনীতি উন্মোচিত হচ্ছে। দুই দেশ জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন এগ্রিমেন্ট-এর (জিএসওএমআইএ) অধীনে সামরিক বুদ্ধিমত্তা ভাগ করে নেওয়ার সম্পর্ককে সম্পূর্ণ রূপে পুনর্বহাল করেছে, জাপান দক্ষিণ কোরিয়াকে তার পছন্দের রফতানি গন্তব্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং রপ্তানি নিয়ন্ত্রণে নীতিগত আলাপ-আলোচনার অগ্রগতি ঘটিয়েছে। তা সত্ত্বেও, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক নির্বাচনী পরিসর, বিশেষ করে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রগতিশীল শিবির জাপানের ব্যাপারে সন্দিহানএকই ভাবে, জাপানের লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মধ্যে উপদলীয় রাজনীতির ভারসাম্য রক্ষা করা, বিশেষ করে রক্ষণশীল শিবিরের নিরিখে কিশিদার প্রচেষ্টার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।

ইতিমধ্যেই মার্কিন-জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া ত্রিপাক্ষিক জোট ক্যাম্প ডেভিড বিবৃতিতে তাইওয়ানের উল্লেখ করে বেজিংয়ের শিহর জাগিয়েছে। এটি চিনের সমালোচনা থেকেও স্পষ্ট, যেখানে ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে তারা অউকাস, মার্কিন-জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া ও কোয়াড-সহ জোটগুলির সঙ্গে একটি ঠান্ডা লড়াইয়ের মানসিকতা পোষণ করার অভিযোগ তুলেছে। এর পাশাপাশি চিন রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ (আরসিইপি) এবং কম্প্রিহেনসিভ অ্যান্ড প্রোগ্রেসিভ এগ্রিমেন্ট ফর ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ-এর (সিপিটিপিপি) মাধ্যমে অর্থনৈতিক সমন্বয় এবং সংহতি প্রদর্শনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

 

জাপানের লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মধ্যে উপদলীয় রাজনীতির ভারসাম্য রক্ষা করা, বিশেষ করে রক্ষণশীল দলের নিরিখে কিশিদার প্রচেষ্টার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।

 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২০২২ সালের অক্টোবর মাসের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল (এনএসএস) বেজিংকে আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা পুনর্নির্মাণ করার অভিপ্রায় এবং সেই লক্ষ্যে অগ্রসর হওয়ার জন্য ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক, সামরিক ও প্রযুক্তিগত শক্তি-সহ একমাত্র প্রতিযোগীবলে মনে করেছে। জাপানের ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের এনএসএস চিনকে টোকিয়োর জন্য অভূতপূর্ব এবং সবচেয়ে বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জহিসেবে চিহ্নিত করেছে। চিনকেন্দ্রিক ব্যবস্থার আবির্ভাবকে প্রত্যাখ্যান করার ক্ষেত্রে জাপানের কৌশলগত নকশা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার যুদ্ধোত্তর জোটে গভীর ভাবে নিহিতএনএসএস এক দিকে অস্ট্রেলিয়া, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, ইউরোপ, আসিয়ান, ন্যাটো-সহ মিত্র ও সমমনস্ক দেশগুলির মধ্যে একটি মাল্টি-লেয়ার নেটওয়ার্কবা বহুস্তরীয় শৃঙ্খলকে সশক্ত করার পাশাপাশি মার্কিন-জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া এবং মার্কিন-জাপান-অস্ট্রেলিয়ার মতো অন্য ত্রিপাক্ষিক জোটগুলির কাজকেও সহজতর করে তুলেছে।

আজকের ইউক্রেন আগামিকালের পূর্ব এশিয়া হয়ে উঠতে পারে… (তাইওয়ান এবং দক্ষিণ ও পূর্ব চিন সাগরের মতো ঘটনাগুলির উল্লেখ করে) এ হেন আখ্যানকে কিশিদা কার্যকর ভাবে গড়ে তুলেছেন এবং ইউরোপ ও ইন্দো-প্যাসিফিকের দুটি নিরাপত্তা মঞ্চকে এক সুতোয় বাঁধতে সফল হয়েছেন। পূর্ব এশীয় নিরাপত্তার অগ্রভাগে থাকার দরুন পাল্টা-আঘাত হানার ক্ষমতা অর্জন, জিডিপি-র ২ শতাংশ খরচ করে প্রতিরক্ষা খাতে দ্বিগুণ অর্থায়ন এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তাকে মূলধারায় আনার মাধ্যমে জাপান তার এনএসএস-এর নতুন ভাবে পরিকল্পনা করেছে। কৌশলগত শক্তি হিসেবে টোকিয়োর বিকশিত চরিত্র ইন্দো-প্যাসিফিকের শক্তির ভারসাম্যকে স্পষ্টতই নির্ধারণ করবে।

 

চিনকেন্দ্রিক ব্যবস্থার আবির্ভাবকে প্রত্যাখ্যান করার ক্ষেত্রে জাপানের কৌশলগত নকশা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার যুদ্ধোত্তর জোটে গভীর ভাবে নিহিত

 

দক্ষিণ কোরিয়ার ২০২৩ সালের এনএসএস উত্তর কোরিয়াকে তার শীর্ষ নিরাপত্তা সংক্রান্ত অগ্রাধিকার হিসাবে চিহ্নিত করলেও চিন সংক্রান্ত অভ্যন্তরীণ বিতর্ক আরও জটিলসিওল একটি গ্লোবাল পিভোটাল স্টেট হয়ে ওঠার উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে সংজ্ঞায়িত করার পাশাপাশি নিজের লক্ষ্যগুলি ওয়াশিংটনের সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ করে তোলে। কারণ সিওল স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও আইনের প্রশাসনের মতো সর্বজনীন মূল্যবোধ রক্ষা করতে এবং নিয়ম ও নীতির উপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা অটুট রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে হাত মেলাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের এনএসএস বেজিংয়ের সঙ্গে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার একটি স্বাস্থ্যকর এবং আরও পরিপক্ব সম্পর্কগড়ে তোলার ক্ষেত্রে যুক্তি দর্শিয়েছে এবং সমর্থন করেছে যে টার্মিনাল হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স (টিএইচএএডি) স্থাপনা একটি নিরাপত্তামূলক সার্বভৌমত্বের ব্যাপার। প্রেসিডেন্ট ইউন ২০১৭ সালে পূর্ববর্তী মুন জায়ে-র প্রশাসনের সঙ্গে বেজিংয়ের আলোচিত থ্রি নোজনীতি মেনে চলতে অস্বীকার করেছেন অর্থাৎ যেগুলি হল ক) কোনও অতিরিক্ত টিএইচএএডি ব্যবস্থা না থাকা, খ) মার্কিন মিসাইল প্রতিরক্ষা শৃঙ্খলের অংশীদার না হওয়া এবং গ) ওয়াশিংটন এবং টোকিওর সঙ্গে কোনও ত্রিপাক্ষিক সামরিক জোটে না থাকাএই সর্বশেষ ত্রিপাক্ষিক জোটে থ্রি নোজসমঝোতাকে নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে।

 

ইউন প্রশাসন উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি অর্থনৈতিক নির্ভরতা মোকাবিলায় বেজিংয়ের প্রাণশক্তিকে স্বীকৃতি দিলেও সিওল নিঃসন্দেহে একদিকে ওয়াশিংটনের সঙ্গে তার মৈত্রীকে শক্তিশালী করা এবং অন্য দিকে তার জাপান নীতিকে পুনর্বিবেচনা করার ক্ষেত্রে দ্বিমুখী প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। সিওলের বিরুদ্ধে বেজিংয়ের অর্থনৈতিক কড়াকড়ি প্রেসিডেন্ট ইউনকে ওয়াশিংটন ও টোকিয়োর ঘনিষ্ঠ করে তুলেছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় চিনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ২০১৫ সালের ৩৭ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩ সালে ৭৭ শতাংশে পরিণত হয়েছে৷ সিওল ওয়াশিংটন এবং টোকিয়োর সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক সামরিক সহযোগিতাকে জোরদার করেছে; উদাহরণস্বরূপ, যৌথ নৌ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা মহড়া যা এজিস রাডার সিস্টেমে সজ্জিত ডেস্ট্রয়ারগুলিকে একত্র করে, উত্তর কোরিয়া থেকে উদ্ভূত ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি মোকাবিলায় প্রতিরোধ গড়ে তোলে, অথবা জুলাই মাসে হাওয়াইয়ে সামরিক প্রধানদের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের আয়োজন করে

 

উল্লেখযোগ্য ভাবে ত্রিপাক্ষিক জোটটি তথ্য আদান-প্রদানকে গভীরতর করে তুলে এবং অর্থনৈতিক কড়াকড়ি সংক্রান্ত সক্রিয় নীতি সমাধান ও সরবরাহ শৃঙ্খলে ভবিষ্যতে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে এমন বিষয়ে নীতির সমন্বয়জনিত একটি আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম বা প্রারম্ভিক সতর্কীকরণ ব্যবস্থার সূচনা করেছে।

হাই-টেক সাপ্লাই চেনের বা উচ্চ প্রযুক্তি সরবরাহ শৃঙ্খলগুলির ঝুঁকিমুক্তকরণ শক্তির ভারসাম্যকে পুনর্সংজ্ঞায়িত করছে এবং তিন দেশই ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক (আইপিইএফ) ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বারা একটি গণতান্ত্রিক অর্ধপরিবাহী সরবরাহ শৃঙ্খলহিসেবে তুলে ধরা চিপ ফোর জোটের অংশ হয়ে উঠেছে। ক্যাম্প ডেভিডে নেতারা ত্রিপাক্ষিক অর্থনৈতিক নিরাপত্তা আলোচনার তাৎপর্য পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং প্রযুক্তি নিরাপত্তা এবং গুণমানের উপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি, প্রধানত অর্ধপরিবাহী এবং ব্যাটারি-সহ, সরবরাহ শৃঙ্খল স্থিতিস্থাপকতাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। ত্রিপাক্ষিক জোটটি উল্লেখযোগ্য ভাবে তথ্য আদান-প্রদানকে গভীরতর করে তুলে এবং অর্থনৈতিক কড়াকড়ি সংক্রান্ত সক্রিয় নীতি সমাধান ও সরবরাহ শৃঙ্খলে ভবিষ্যতে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে এমন বিষয়ে নীতির সমন্বয়জনিত একটি আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম বা প্রারম্ভিক সতর্কীকরণ ব্যবস্থার সূচনা করেছে। বেআইনি ভাবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির অপব্যবহার এড়াতে এই তিনটি শক্তি প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির মধ্যে তথ্য আদান-প্রদানকে আরও উন্নত করতে ইউএস ডিজরাপ্টিভ টেকনোলজি স্ট্রাইক ফোর্স জাপানি ও দক্ষিণ কোরীয় প্রতিপক্ষের মধ্যে বিনিময় শুরু করবে।

 

যাই হোক, অর্ধপরিবাহী সরবরাহ শৃঙ্খলে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা নীতি নির্মাণকারীদের জন্য সবচেয়ে জটিল প্রতিবন্ধকতাগুলির অন্যতম। কারণ ওয়াশিংটন আন্তর্জাতিক বাধা এড়াতে তাইওয়ান এবং কোরিয় চিপমেকারদের জন্য রফতানি শুল্ক মকুব করার কথা বিবেচনা করবে বলে জানা গিয়েছে। স্যামসাং ইলেকট্রনিক্স, এসকে হাইনিক্স ও টিএসএমসি-সহ শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী সংস্থাগুলি ওয়াশিংটনের সঙ্গে জোরদার তর্কবিতর্কে শামিল হয়েছে। কারণ চিনে তাদের প্রধান উত্পাদন কেন্দ্র অবস্থিত চিন এসকে হাইনিক্স-এর ডিআরএএম-এর উৎপাদন ক্ষমতার প্রায় ৪০ শতাংশের জন্য দায়বদ্ধ। চিন থেকে দূরে চিপ বাস্তুতন্ত্রের পুনরায় প্রকৌশলী নির্মাণ বেশ সময়সাপেক্ষ। বিশ্বব্যাপী অর্ধপরিবাহী বিক্রির প্রায় এক-তৃতীয়াংশই আমদানি হয় চিন থেকে। এটি দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাইওয়ানের পরেই চিপ নির্মাণ দক্ষতায় জাপানকে টপকে গিয়েছে। উপরন্তু চিন জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং এমনকি তাইওয়ানের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার বটে। এ ছাড়াও চিন এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য আমদানির বৃহত্তম উত্স

 

অর্ধপরিবাহী সরবরাহ শৃঙ্খলে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা নীতি নির্মাণকারীদের জন্য সবচেয়ে জটিল প্রতিবন্ধকতাগুলির অন্যতম। কারণ ওয়াশিংটন আন্তর্জাতিক বাধা এড়াতে তাইওয়ান এবং কোরীয় চিপমেকারদের জন্য রফতানি শুল্ক মকুব করার কথা বিবেচনা করবে বলে জানা গিয়েছে।

 

ইতিমধ্যেই উপদ্বীপটি প্রধান শক্তিগুলির জন্য একটি তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ মঞ্চ হিসেবে উত্থিত হয়েছে এবং উত্তর-পূর্ব আঞ্চলিক নিরাপত্তা গঠনের ক্ষেত্রে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ সবচেয়ে সংজ্ঞায়িত প্রতিবন্ধকতাগুলির মধ্যে অন্যতম হিসাবে উন্মোচিত হচ্ছে। পিয়ংইয়ং কোরীয় উপদ্বীপের জন্য গুরুতর হুমকিহয়ে ওঠায় ত্রিপাক্ষিক জোটটির লক্ষ্য হল পিয়ংইয়ং-এ ক্ষেপণাস্ত্র সতর্কীকরণের তথ্য ভাগ করে নেওয়ার কাজটির বাস্তবায়ন ঘটানো, এমনকি তারা উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি মোকাবিলায় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে আরও গভীর করাইতিমধ্যেই জোটটি ক্ষেপণাস্ত্র সতর্কতা তথ্যের রিয়েল-টাইম তথ্য ভাগ করে নেওয়ার জন্য অগস্ট মাসে একটি সামুদ্রিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সতর্কতার পরীক্ষা করেছে। উপরন্তু সাইবার নিরাপত্তা নীতি আলোচনার কেন্দ্রে উঠে আসছে এবং ত্রিপাক্ষিক জোটটি উত্তর কোরিয়ার সাইবার হুমকি মোকাবিলার জন্য একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেছে।

 

প্রতিযোগিতামূলক ভূ-রাজনৈতিক ও ভূ-অর্থনৈতিক স্বার্থ উত্তর-পূর্ব এশীয় নিরাপত্তা পরিসরের প্রধান অংশীদারদের কৌশলগত পছন্দকে সংজ্ঞায়িত করেছে। ত্রিপাক্ষিক জোটটির ভবিষ্যৎ দুটি বিষয়ের উপর নির্ভর করবে: প্রথমত, আগামী বছর আসন্ন মার্কিন নির্বাচন এবং কী ভাবে শীর্ষ প্রতিযোগীদের দ্বারা জাতীয় নিরাপত্তা আলোচনায় জোট শক্তিগুলিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়; এবং দ্বিতীয়ত, টোকিয়ো এবং সিওল কি অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনশীলতা সত্ত্বেও যৌথ প্রচেষ্টা বজায় রাখতে সমর্থ হবে? তা সে যুদ্ধকালীন ইতিহাসের আবেগপূর্ণ সমস্যার সমাধানই হোক বা ফুকুশিমার জল বণ্টন সংক্রান্ত উত্তেজনার সমাধানই হোক।

 


তিতলি বসু জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটির (জেএনইউ) অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.