Published on Mar 08, 2023 Updated 1 Days ago
থিঙ্ক২০ ইন্ডিয়া ইনসেপশন কনফারেন্স | স্বাগত ভাষণ এবং মূল বক্তব্য

টি২০ ইন্ডিয়া কোর গ্রুপের সভাপতি; টি২০ টাস্ক ফোর্স ৩ এবং ৭-এর সভাপতি; এবং এমপি-আইডিএসএ-র ডিরেক্টর জেনারেল অ্যাম্বাসাডর সুজন আর চিনয় থিঙ্ক২০ ইন্ডিয়া ইনসেপশন কনফারেন্সের দ্বিতীয় দিনে স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন। তিনি সিক্স’টি’ অর্থাৎ ট্রেড (বাণিজ্য), টেকনোলজি (প্রযুক্তি), টেনেট (নীতি), টেররিজম (সন্ত্রাসবাদ), ল্যাক অব ট্রাস্ট (আস্থার অভাব) এবং টেরিটরির (অঞ্চল) বিশেষ উল্লেখ সহ-সাথে বৈশ্বিক বিশ্বের সমস্ত উপাদান এবং ভেক্টরগুলির প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়ার কথা তুলে ধরেন। তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন যে, কীভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জি২০-কে কার্যক্রমকেন্দ্রিক এবং উচ্চাভিলাষী করতে চেয়েছেন এবং তা করার প্রচেষ্টায় সংশ্লিষ্ট সকলকেই অভিনন্দন জানিয়েছেন।

তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ডব্লিউএইচও এবং ডব্লিউটিও-এর মতো সংস্থাগুলি বাণিজ্যের রাজনীতি এবং বৈশ্বিক অতিমারি দ্বারা দুর্বল হয়ে পড়লেও জি২০ তাদের সঙ্গে একত্রে কাজ করে স্থিতিশীল সমাধান খুঁজে বের করার বিষয়ে আশাবাদী। সর্বোপরি তিনি ভৌগোলিকভাবে বৈচিত্র্যময় এবং লিঙ্গ অন্তর্ভুক্তিমূলক অন্য সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করা, টি৭ এবং জাপানের সঙ্গে সক্রিয় যোগাযোগ রাখা এবং গ্লোবাল থিঙ্ক ট্যাঙ্কগুলির সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক বজায় রাখার মতো ভারতের থিঙ্ক২০ গোষ্ঠীর অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলি তুলে ধরেন। তিনি বলেন যে, ভারত তার সভাপতিত্বের মাধ্যমে নতুন ধারণা সৃষ্টি করবে এবং গ্লোবাল সাউথের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠবে। তিনি বক্তব্যের উপসংহারে বৈশ্বিক বিশ্বের জন্য একটি নতুন নৈতিক কম্পাস বা দিকনির্দেশক গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে বিশ্বায়নের জন্য মানবকেন্দ্রিক এবং মূল্যবোধভিত্তিক পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন।

জি২০-র স্যু শেরপা অ্যাম্বাস্যাডর অভয় ঠাকুর তাঁর ভাষণে এ কথা বলেন যে, ভারতের জি২০ প্রেসিডেন্সি এমন একটি সন্ধিক্ষণে উপস্থিত হয়েছে, যখন জলবায়ু পরিবর্তন, এসডিজি-তে অগ্রগতির অভাব এবং অর্থনৈতিক ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মতো বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা প্রকট হয়ে উঠেছে। তিনি  এই সমস্যাগুলির সমাধানে জি২০-র ভূমিকার উপর বিশেষ জোর দেন। তিনি গোষ্ঠীটির উচ্চাভিলাষী, লক্ষ্য এবং কর্মমুখী হওয়ার নিরিখে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গিকেই পুনর্ব্যক্ত করেন। জি২০ লোগো এবং ভাবনা সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন যে, পৃথিবী একটি গ্রহপন্থী দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করে এবং পদ্মফুল প্রতিবন্ধকতার মাঝে বৃদ্ধিকেই সূচিত করে। ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’ ভাবনাটি এক বিশ্ব, এক পরিবার এবং এক ভবিষ্যতের ভাবধারাকেই দর্শায়। মহা উপনিষদের নীতির উপর ভিত্তি করে এর ভাবনা এবং লোগো সকল প্রকার জীবন এবং তাদের আন্তঃসম্পৃক্ততার অন্তর্ভুক্তির ধারণারই প্রতিনিধিত্ব করে। তিনি আরও বলেন যে, অন্ধকারময় পরিস্থিতিতে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি হওয়ার দরুন ভারতের গুণমানসম্পন্ন সমাধান প্রদানের সম্ভাবনা রয়েছে। জি৭, জি২০, কোয়াড, সার্ক এবং অন্যান্য গোষ্ঠীর সদস্য হিসাবে ভারত উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে ব্যবধান পূরণের কাজ করতে পারে।

তিনি আরও যোগ করেন যে, জি২০ দেশগুলি ছাড়াও নয়টি দেশ এবং ১৪টি সংস্থাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল এবং এটি কোনও প্রেসিডেন্সিতে সর্বকালের বৃহত্তম অংশগ্রহণ। অ্যাম্বাস্যাডর অভয় ঠাকুর বলেন যে, জি২০-তে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকারমূলক আলোচনাগুলি মিশন লাইফ, জলবায়ু কর্মসূচি ও এসডিজি, পর্যাপ্ত সম্পদের বণ্টন ও দূষণহীন রূপান্তরের অর্থায়ন, দূষণহীন শক্তি এবং উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়গুলিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হবে। তিনি দক্ষ পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি এবং শূন্য লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের উদ্দেশ্যে দূষণহীন হাইড্রোজেন উদ্যোগের দিকেও মনোনিবেশ করেন। পাশাপাশি তিনি ভারত এবং আফ্রিকার মতো দেশগুলির ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক চাহিদা মোকাবিলা করার জন্য প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং শক্তি সমাধানের প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন।

তিনি সৌদি প্রেসিডেন্সিতে জি২০-এর অন্যতম উল্লেখযোগ্য সাফল্য হিসেবে ডেট সার্ভিস সাসপেনশন ইনিশিয়েটিভের প্রশংসা করেন এবং ভারতীয় প্রেসিডেন্সির সমাধান করার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরেন। অর্থ খাতে তিনি বৈশ্বিক ঋণ সংস্কার এবং এসডিজি ফাইন্যান্স গ্যাপ কমানোর প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। তিনি প্রযুক্তির রূপান্তর এবং তা কাজে লাগানো, বৈশ্বিক জনকল্যাণের জন্য কৃষি ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে উন্নয়নমূলক সমাধানের জন্য ডিজিটাল মঞ্চগুলির প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন। তিনি ডিজিটাল মঞ্চের পাশাপাশি ডিজিটাল সরকারি পরিকাঠামোর জন্য একটি সাধারণ কাঠামো গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তাকেও ব্যক্ত করেন। এর পাশাপাশি তিনি বলেন যে, বৈশ্বিক সংস্থাগুলিকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়ে উঠতে হবে এবং সমৃদ্ধি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পথ নির্ধারণের জন্য নারীচালিত উন্নয়নের উপর জোর দিতে হবে। তিনি জি২০-র প্রতি ভারত সরকারের ধারণা অর্থাৎ জনভাগীদারি বা জনগণের প্রেসিডেন্সির মতো ধারণা পুনর্ব্যক্ত করার মাধ্যমে তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।

সম্পূর্ণ ভাষণটি দেখতে গেলে এখানে ক্লিক করুন।


এই অনুষ্ঠানটির প্রতিবেদন ওআরএফ-এর অ্যাসোসিয়েট ফেলো গোপালিকা অরোরা দ্বারা সঙ্কলিত।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.