Published on Sep 16, 2024 Updated 0 Hours ago

কোবাল্ট সমৃদ্ধ ফেরো ম্যাঙ্গানিজের জন্য এএনএস মাউন্ট অন্বেষণ করার বিষয়ে ভারতের তরফে চাপ স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘ মেয়াদে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

শ্রীলঙ্কা: স্বল্প পরিচিত সামুদ্রিক সমস্যা ভারতের সম্পর্ককে চাপের মুখে ফেলতে পারে

ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে নতুন সমস্যা-সহ দীর্ঘকাল ধরে অমীমাংসিত দ্বিপাক্ষিক বিষয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে ফের উঠে এসেছে। কূটনৈতিক ভাবে যত্ন সহকারে এই সমস্যা মোকাবিলা না করা হলে ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের টানাপড়েনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে নাদু’টি সমস্যা আন্তঃসম্পর্কিতবরং এ কথাও বলা চলে যে, একটি সমস্যা থেকেই অন্য সমস্যাটির সৃষ্টি হয়েছে এবং দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশীর মধ্যে আর কটি নতুন সামুদ্রিক সমস্যার সম্ভাবনাও এখন প্রকট হয়ে উঠছে।

ই সমস্যার কেন্দ্রে রয়েছে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে জামাইকার কিংস্টনে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল সিবেড অথরিটি (আইএসবিএ) কাছে কোবাল্ট-সমৃদ্ধ ফেরো-ম্যাঙ্গানিজ ভূত্বক অন্বেষণের অনুমতি দেওয়ার জন্য ভারতের তরফে জমা দেওয়া আবেদন। এই অঞ্চলটিকে সমুদ্রবিজ্ঞানী এবং ভূতাত্ত্বিকরা আফানাসি নিকিতিসি-মাউন্ট’ (এএনএস) নামে চেনেন। বর্তমানে এএনএস আন্তর্জাতিক জলসীমায় শ্রীলঙ্কার উপকূল থেকে ১০৫০ কিমি দক্ষিণ-পূর্বে এবং ভারতীয় উপকূল থেকে ১৩৫০ কিলোমিটার দূরে মধ্য ভারত মহাসাগরে অবস্থিত।

আইএসবিএ-কাছে ভারতের অনুরোধের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে শ্রীলঙ্কা। এর পাশাপাশি দেশটির মহাদেশীয় শেলফের বাইরের সীমা নির্ধারণের জন্য ইউএন কমিশন অন দ্য লিমিটস অফ দ্য কন্টিনেন্টাল শেলফ (ইউএনসিএলসিএস) থেকে দীর্ঘদিনের মুলতুবি থাকা ছাড়পত্রের কথা উল্লেখ করেছে শ্রীলঙ্কা

আইএসবিএ-কাছে ভারতের অনুরোধের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে শ্রীলঙ্কা। এর পাশাপাশি দেশটির মহাদেশীয় শেলফের বাইরের সীমা নির্ধারণের জন্য ইউএন কমিশন অন দ্য লিমিটস অফ দ্য কন্টিনেন্টাল শেলফ (ইউএনসিএলসিএস) থেকে দীর্ঘদিনের মুলতুবি থাকা ছাড়পত্রের কথা উল্লেখ করেছে শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার বিদেশমন্ত্রক বলেছে যে, এই বিষয়গুলির সঙ্গে সম্পর্কিত শ্রীলঙ্কার সার্বভৌম অধিকার হরণ সংক্রান্ত যে সাম্প্রতিক জল্পনা জনপরিসরে উঠে এসেছে, তা এই বিষয় সংক্রান্ত বাস্তব পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠেনিশ্রীলঙ্কার বিবৃতি উদ্ধৃত করে কলম্বো ভারতীয় হাইকমিশনও একই রকম প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

পাল্টা আবেদন

আইএসবিএ-মতাদেশ হল আন্তর্জাতিক জলসীমায় গভীর-সমুদ্র অনুসন্ধানের জন্য সদস্য-রাষ্ট্রগুলির আবেদন বিবেচনা করা এবং অনুমোদন করা, যা ইউএন কনভেনশন অন দ্য ল অব দ্য সি-এর (আনক্লজ) ১২ নম্বর ধারার আওতাধীন। ভারত ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে এএনএস অনুসন্ধানের জন্য আবেদন করেছিল। এর বিপরীতে, ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন-এর (ইইজেড) বাইরে দেশের মহাদেশীয় শেলফকে প্রসারিত করার জন্য ২০০৯ সালের ৮ মে ইউএনসিএলসিএস-এর কাছে শ্রীলঙ্কাও আবেদন জমা দেয়। প্রসঙ্গক্রমে, সেই আবেদনের সময়টি তিন দশক দীর্ঘ জাতিগত যুদ্ধ’-র এক পাক্ষিক সময়কাল আগে করা হয়েছিল।

শ্রীলঙ্কার বিদেশমন্ত্রক মনে করিয়ে দিতে চেয়েছে যে, কী ভাবে আনক্লজ-এর ৭৬তম অনুচ্ছেদ অনুসারে, সমস্ত উপকূলীয় দেশ ২০০ নটিক্যাল মাইল এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন-এর (ইইজেড) বাইরে বর্ধিত মহাদেশীয় শেলফ দাবি করার অধিকারী। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, একটি উপকূলীয় দেশ হিসেবে শ্রীলঙ্কাতার প্রযুক্তিগত ও বৈজ্ঞানিক তথ্য এবং অন্যান্য উপাদান ইউএনসিএলসিএস-এর সামনে বিশেষ পদ্ধতির আওতায় উপস্থাপন করেছে। এটি বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণাঞ্চলের রাষ্ট্রগুলির মধ্যে স্টেটমেন্ট অফ আন্ডারস্ট্যান্ডিং-এ (এসওইউ) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এবং পদ্ধতিটি ইউএনসিএলসিএস-এর অ্যানেক্স ২-এর অনুচ্ছেদ ৪- আওতাধীন

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, ইউএনসিএলসিএস ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে কলম্বোর দাখিল বা আবেদনটি বিবেচনা করার জন্য একটি সাব-কমিশন নিযুক্ত করেছিল এবং উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে। যাই হোক, ইউএনসিএলসিএস এখনও শ্রীলঙ্কার আবেদন জমা দেওয়ার বিষয়ে তার সুপারিশগুলি প্রকাশ্যে আনেনি। শ্রীলঙ্কার আবেদনটি ইউএনসিএলসিএস-এর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষাধীন। ভারতের পাল্টা আবেদনের দরুন শ্রীলঙ্কা ফের বিষয়টি নিয়ে আবেদন করেছে। কলম্বো বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কূটনৈতিক পদ্ধতির মাধ্যমে এ বিষয়ে আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।

নব জীবন

৪০০ কিমি দীর্ঘ এবং ১৫০ কিমি প্রশস্ত আফানাসি নিকিতিন সি-মাউন্ট বা এএনএস আসলে নিরক্ষীয় ভারত মহাসাগরে সমুদ্রের নীচের পর্বত এটি ৪৮০০ মিটার গভীরতায় আশপাশের সমুদ্রের তল থেকে ১২০০ মিটার উত্থিত একটি প্রধান মালভূমি এবং সি মাউন্ট উচ্চতা নিয়ে গঠিত, যার মধ্যে দুটি আবার ১৬০০ মিটার এবং ২০৫০ মিটার জলের গভীরে অবস্থিত।

শ্রীলঙ্কার তরফে ধীর গতির উপকূলীয় শেলফ দাবি এবং ভারতের আপত্তি বা পাল্টা-দাবিগুলি আরও বেশি জোরালো হয়ে ওঠে যখন ভারত সরকারের আর্থ সায়েন্স মন্ত্রকের একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান আর্থ সিস্টেম সায়েন্স অর্গানাইজেশন (ইএসএসও) ২০২৪ সালের ১৮ জানুয়ারি আইএসবিএ-র সেক্রেটারি জেনারেলের কাছে একটি আবেদন জমা দেয়। ভারত মধ্য ভারত মহাসাগরে কোবাল্ট-সমৃদ্ধ আফানাসি নিকিতিন সি-মাউন্ট অনুসন্ধানের জন্য ১৫ বছরের কাজের পরিকল্পনার অনুমোদন চেয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইএসএসও আইএসবিএ-তে ৫ লক্ষ মার্কিন ডলারের আবেদন মূল্যও জমা দিয়েছে।

শ্রীলঙ্কার বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতি অনুসারে, কোবাল্ট-সমৃদ্ধ ফেরো-ম্যাঙ্গানিজ স্তরগুলি সম্পূর্ণ ভাবে একটি অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে, যা কলম্বো তার মহাদেশীয় শেলফের অধীনে দাবি করেছে তাই কলম্বো এই বিবেচনাগুলি আইএসবিএ-র নজরে এনেছে এবং ইউএনসিএলসিএস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শ্রীলঙ্কার জমা দেওয়া আবেদনের বিষয়ে চূড়ান্ত সুপারিশ না করা পর্যন্ত এই বিষয়টিকে স্থগিত রাখার অনুরোধ করা হয়েছে’আইএসবিএ এই বিষয়ে প্রযোজ্য পদ্ধতি অনুসরণ করছে এবং বিষয়টি এখনও আলোচনাধীন,’ শ্রীলঙ্কার বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

ঘটনাচক্রে, আফানাসি-নিকিতিন সি-মাউন্ট ভারত মহাসাগরের একমাত্র গভীর-সমুদ্র অঞ্চল নয়, যেটির জন্য ভারত খনিজ খনির উদ্দেশ্যে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এ ছাড়াও রয়েছে কার্লসবার্গ রিজ, যেটি সেশেলসের সমান্তরালে অবস্থিত ও যা পলি-মেটালিক নোডিউল বা বহু ধাতব স্ফীতিতে সমৃদ্ধ এবং বাণিজ্যিক ভাবে কার্যকর পরিমাণে যেখানে অন্তত তিনটি ধাতু অর্থাৎ তামা, সীসা এবং দস্তার সন্ধান মিলেছে

গুপ্তচরবৃত্তির চেয়েও বেশি

বিগত তিন বছরে এই অংশগুলিতে প্রতিপক্ষ চিনের পিএলএ-নৌবাহিনীর গবেষণা জাহাজগুলি দ্বারা ঘন ঘন আগ্রাসনের দরুন নয়াদিল্লির তৎপরতা থেকেই বিষয়টি স্পষ্ট। যাই হোক, চিন আন্তর্জাতিক মঞ্চে শ্রীলঙ্কার মহাদেশীয় শেলফের দাবিকে সমর্থন করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং পরবর্তী সময়ে কলম্বো কোবাল্ট স্তরের অনুসন্ধান পেলে মামলার রায় কলম্বোর অনুকূলে গেলে এই ধাতুকে বাণিজ্যিক কাজে লাগানোর বিষয়ে শ্রীলঙ্কাকে চিনের সহায়তা করার প্রসঙ্গে অন্তত এখনও পর্যন্ত গণমাধ্যমে কোন ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। ভূমিভিত্তিক খননের উপর চিন আফগানিস্তান, মায়ানমার এবং আফ্রিকা জুড়ে এই ধরনের কাজ করে চলেছে

ভারত মহাসাগরের এই অংশগুলিতে ২০২১ এবং ২০২২ সালে প্রথম দুটি চিনা জাহাজ কার্লসবার্গ রিজ এবং/অথবা এএনএস-এর দিকে বিশেষ ভাবে নজর দিয়েছিল কি না, সে সম্পর্কে জানা যায়নিকারণ গভীর সমুদ্রে অন্বেষণের জন্য ভারত আইএসবিএ-র কাছে ছাড়পত্র চাওয়ার আগে পর্যন্ত চিনের তরফে কোনও কিছুই আনুষ্ঠানিক ছিল না। কলম্বো প্রায় রাতারাতি শ্রীলঙ্কার বন্দরে বিদেশি গবেষণা জাহাজ নোঙর করার বিষয়ে এক বছরের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পরে তৃতীয় চিনা জাহাজটি এই বছরের শুরুতে এক মাসের মধ্যে দু’-দুবার মলদ্বীপে নোঙর করেছিল।

ভারত মহাসাগরের এই অংশগুলিতে ২০২১ এবং ২০২২ সালে প্রথম দুটি চিনা জাহাজ কার্লসবার্গ রিজ এবং/অথবা এএনএস-এর দিকে বিশেষ ভাবে নজর দিয়েছিল কি না, সে সম্পর্কে জানা যায়নিকারণ গভীর সমুদ্রে অন্বেষণের জন্য ভারত আইএসবিএ-র কাছে ছাড়পত্র চাওয়ার আগে পর্যন্ত চিনের তরফে কোনও কিছুই আনুষ্ঠানিক ছিল না।

শ্রীলঙ্কার বিদেশমন্ত্রী আলি সাবরি এক বছরের শেষে অর্থাৎ ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি বিদেশি গবেষণা জাহাজের উপর থেকে বছরব্যাপী নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে কথা বলার পর জাপান সম্প্রতি চিনা বিদেশি জাহাজের প্রত্যাবর্তন সংক্রান্ত স্বাধীনতা দিয়েছে। মন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন যে, আনক্লজ-এর অধীনে, দেশটির এই বিষয়ে বাছবিচারের কোনও স্বাধীনতা নেই। এ কথা অবশ্য আলাদা যে, অক্টোবর মাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নতুন সরকারের হাতে থাকতে পারে।

প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর মলদ্বীপ সরকারও দাবি করেছে যে চিনা জাহাজটিকে যখন নোঙর করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, তখন কেবল মাত্র পণ্য পুনরায় মজুত করা, কর্মী স্থানান্তরের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল এবং কোনও গবেষণার কাজের সুযোগ দেওয়া হয়নি। জাহাজটি সেই পুরো মাস যাবৎ এবং আরও বেশি সময় ধরে সমুদ্রের এই অংশে ছিল তা এএনএস এবং কার্লসবার্গ রিজে গবেষণার কাজ করার সম্ভাবনাকে খারিজ করে দেওয়া যায় না। কারণ ততক্ষণে ভারত আইএসবিএ-র কাছে আবেদন জমা দিয়েছে। চিনা গবেষণার কথা সত্যি হলে ভারতীয় কৌশলগত চিন্তাবিদদের এই সন্দেহই পুনর্বিবেচনা করতে হবে যে, চিনা গবেষণা জাহাজগুলি স্থলভাগে ভারতীয় কৌশলগত সম্পদের উপর গুপ্তচরবৃত্তি’ চালাচ্ছিল।

প্রলোভন, বাধ্যবাধকতা

ঘটনাচক্রে, শ্রীলঙ্কায় ফ্রন্টলাইন সোশ্যালিস্ট পার্টি (এফএসপি) - যাকে কেন্দ্র-বাম জনতা বিমুক্তি পেরামুনা (জেভিপি) বিচ্ছিন্ন জঙ্গিদল হিসাবে বিবেচনা করা হয় - দাবি করেছে যে প্রতিবেশী ভারত ‘দেশের অব্যাহত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সঙ্কটকে নির্লজ্জ ভাবে কাজে লাগাচ্ছে।’ এবং ভারত এমনটা করছে একটি মহাসাগরীয় অঞ্চলে কোবাল্ট অন্বেষণের মাধ্যমে, যেটিকে  শ্রীলঙ্কা তার বর্ধিত মহাদেশীয় শেলফের একটি অংশ বলে দাবি করেছে। এফএসপি মুখপাত্র চিনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মাঝেই এই অন্বেষণ চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাইওয়ানের সঙ্গে ভারত একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে বলেও উল্লেখ করেছেন।

একটি নির্বাচনী বছরে একটি নির্দিষ্ট অংশের তরফে – যেটি এক সময় ভারত-বিরোধী জেভিপি ছিল - মূল প্রসঙ্গ এবং ভারতকে লক্ষ্য করে সংশ্লিষ্ট সমালোচনা মূল দলটিকে বিভ্রান্তিতে ফেলে দিতে পারে। নব্বইয়ের দশকে এক সময়ের জঙ্গিদলটির গণতন্ত্রীকরণের পর থেকে জেভিপি নিজেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে একটি সম্ভাব্য গভর্নমেন্ট-ইন-ওয়েটিং বা অপেক্ষমান সরকার বলে মনে করে।

একটি নির্বাচনী বছরে একটি নির্দিষ্ট অংশের তরফে – যেটি এক সময় ভারত-বিরোধী জেভিপি ছিল - মূল প্রসঙ্গ এবং ভারতকে লক্ষ্য করে সংশ্লিষ্ট সমালোচনা মূল দলটিকে বিভ্রান্তিতে ফেলে দিতে পারে।

২০২২ সালে গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষেকে ক্ষমতাচ্যুত করে ঐতিহাসিক আরাগালায় গণ বিক্ষোভে জেভিপি এবং এফএসপি একে অপরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল এফএসপি-ও প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ার অভিপ্রায় ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে যে কোন প্রতিযোগিতামূলক ভারত-বিরোধিতা জেভিপি দ্বারা একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক সর্পিলসমান হতে পারে, যার মধ্যে বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহে এবং এসজেবি বিরোধী নেতা সজিথ প্রেমদাস-সহ চিরাচরিত ভাবে গণতান্ত্রিক প্রার্থীরাও জড়িয়ে পড়তে পারেন।

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য এটি স্বল্প, মাঝারি এবং দীর্ঘ মেয়াদে প্রভাব ফেলতে পারে। তা-ও এমন একটি সময়ে যখন দুই দেশ একটি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক-নির্বাচনী বিষয় হিসাবে ‘কাচ্চাতিভু সমস্যা’র পুনরুজ্জীবনের ফলে সৃষ্ট ক্ষতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। মধ্য সাগরে শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনীর একজন নাবিকের মৃত্যুর ঘটনার পরপর মধ্য রাতে ভারতীয় জেলেদের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার জেলেদের সংঘর্ষে ভারতে চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। যদি অত্যন্ত যত্ন সতর্কতার সঙ্গে এই সংঘাত পরিচালনা না করা হয়, তা হলে এই জোড়া সমস্যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এমন চাপের মুখে ফেলতে পারে, যা যুদ্ধোত্তর অতীতের অন্য যে কোন সময়ের চাইতেও গুরুতর হবে।

 


এন সত্য মূর্তি চেন্নাইভিত্তিক নীতি বিশ্লেষক ও রাজনৈতিক ধারাভাষ্যকার।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.