Published on Jan 23, 2022 Updated 0 Hours ago

যুদ্ধের নতুন পটভূমি হয়ে উঠছে মহাকাশ, তাই আউটার স্পেস ট্রিটি অবিলম্বে সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহাকাশ: বিশ্বজনীন সমরাঙ্গন

২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর রাশিয়া ডাইরেক্ট অ্যাসেন্ট অ্যান্টি স্যাটেলাইট (ডি এ- এস্যাট) পরীক্ষা চালানোর মাধ্যমে তার পুরনো স্যাটেলাইটের একটিকে গুলি করে নামিয়ে আনে। এসাট হল একটি মহাকাশ ক্ষেপণাস্ত্র যার লক্ষ্য শত্রুপক্ষের স্যাটেলাইটকে আক্রমণের মাধ্যমে যুদ্ধ পরিচালনা করার ব্যাপারে বিপক্ষের সামরিক শক্তিকে খর্ব করে দেওয়া। এই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে বেসামরিক স্যাটেলাইট আক্রমণের কাজেও ব্যবহার করা যেতে পারে, আজকের আধুনিক বিশ্বে যার ফল হবে বিপর্যয়কর। এই পরীক্ষার একটি অনিচ্ছাকৃত কিন্তু পূর্বাভাসযোগ্য ফল হল বিপুল পরিমাণ মহাকাশ ধ্বংসাবশেষের সৃষ্টি যা এমনকি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকা মহাকাশচারীদের জীবনকে বিপদের মুখে ঠেলে দেয়। আমেরিকার সুর ধরে একাধিক দেশ এই পরীক্ষার নিন্দা করেছে এবং রাশিয়ার পদক্ষেপকে স্রেফ ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ এবং ‘মহাকাশে দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা’র জন্য বিপদ বলে বর্ণনা করেছে।

এই পরীক্ষার একটি অনিচ্ছাকৃত কিন্তু পূর্বাভাসযোগ্য ফল হল বিপুল পরিমাণ মহাকাশ ধ্বংসাবশেষের সৃষ্টি যা এমনকি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকা মহাকাশচারীদের জীবনকে বিপদের মুখে ঠেলে দেয়।

এখন পর্যন্ত শুধু মাত্র চিন, রাশিয়া, ভারত এবং আমেরিকা সফল ভাবে এস্যাট ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে, যেখানে অন্যান্য অনেক দেশই তাদের নিজস্ব এস্যাট ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণের প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত রয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ছাড়াও ইতিমধ্যেই তৈরি হওয়া এমন অন্য মহাকাশ অস্ত্রগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল শত্রুপক্ষের স্যাটেলাইটকে লক্ষ করে লেজার রশ্মি নিক্ষেপ, জ্যামার, প্লাজমা আক্রমণ এবং অরবিটাল ব্যালিস্টিক মিসাইল। এক কথায় বলতে গেলে, আমরা মহাশূন্যে অস্ত্র প্রতিযোগিতার প্রাথমিক পর্যায়ে দাঁড়িয়ে আছি।

মহাকাশ: বিশ্বজনীন আঙ্গিক

এটা মনে রাখা দরকার যে, মহাকাশ আন্তর্জাতিক আইন দ্বারা একটি ‘গ্লোবাল কমন’ বা বিশ্বজনীন ক্ষেত্র বলে আখ্যায়িত হয়েছে, যার অর্থ হল এমন একটি অঞ্চল যার বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংস্থান যে কোনও রাষ্ট্রের জাতীয় এক্তিয়ারের বাইরে এবং তা আন্তর্জাতিক আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে খোলা সমুদ্র, অ্যান্টার্কটিকা এবং এমনকি সাইবার স্পেসও।

মহাকাশের ব্যবহার ও অন্বেষণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদ ১৯৫৯ সালে আউটার স্পেস কমিটি গঠন করে, যেটি আউটার স্পেস ট্রিটি বা ও এস টি-র খসড়া তৈরি করে। এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য ছিল মহাকাশকে সমস্ত মানবজাতির জন্য একটি বিশ্বজনীন ক্ষেত্র হিসেবে তুলে ধরা বা যাকে বলা হয়েছে ‘সমগ্র মানবজাতির জন্য এক মুক্তাঞ্চল’। ও এস টি-র মতে, ‘চাঁদ এবং অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তু-সহ মহাকাশ সার্বভৌমত্বের দাবি দ্বারা প্রভাবিত জাতীয় এক্তিয়ারের অধিকারের বাইরে। পাশাপাশি তা যে কোনও রকম ব্যবহার, বসবাস এবং অন্যান্য নিয়ম দ্বারা প্রভাবিত নয়।’ এবং ‘সামরিক ঘাঁটি, ইনস্টলেশন বা প্রযুক্তিগত কাঠামো ও কেন্দ্র নির্মাণ, যে কোনও ধরনের অস্ত্রের পরীক্ষা এবং মহাজাগতিক বস্তুগুলির উপরে সামরিক কার্যকলাপ চালানো নিষিদ্ধ।’ এটিতে আরও জানানো হয় যে, ‘রাষ্ট্রগুলি কক্ষপথে বা মহাজাগতিক বস্তুগুলিতে বা অন্য কোনও উপায়ে মহাকাশে পারমাণবিক অস্ত্র বা গণবিধ্বংসী কোনও অস্ত্র স্থাপন করতে পারবে না।’ এখানে বিশ্বজনীন স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল প্রতিষ্ঠিত প্রথাগত আন্তর্জাতিক নিয়মের আওতায় ‘শান্তিপূর্ণ অন্বেষণের’ জন্য মহাকাশের আন্তর্জাতিক ব্যবহার।

ঝুঁকির মুখোমুখি বিশ্বজনীন স্বার্থ

সাম্প্রতিক কালে এই দীর্ঘমেয়াদি আন্তর্জাতিক আদর্শ তার গুরুত্ব হারাচ্ছে, যা সাম্প্রতিক ঘটনাবলি দ্বারা স্পষ্ট হয়েছে। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এমনকি স্পষ্ট ভাবে এ-ও বলেছিলেন যে, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (মহাকাশ)কে একটি বিশ্বজনীন ক্ষেত্র হিসেবে গণ্য করে না।‘ এই অবস্থানের প্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি শুধু মাত্র মহাকাশের জন্য একটি সামরিক কমান্ড প্রতিষ্ঠা করেছে যা স্পেস ফোর্স নামে পরিচিত। আমেরিকার দেখানো পথ ধরে চিন এবং রাশিয়া উভয়েই মহাকাশের জন্য তাদের নিজস্ব সামরিক কমান্ড প্রতিষ্ঠা করেছে, যেগুলির নাম যথাক্রমে স্ট্র্যাটেজিক সাপোর্ট ফোর্স এবং এরোস্পেস ডিফেন্স ফোর্স। এমনকি যে দেশগুলির নিজস্ব মহাকাশ সংক্রান্ত সামরিক কমান্ড নেই, তারাও মহাকাশে সমরাস্ত্র ব্যবহার করার জন্য ব্যাপক পরিমাণে বিনিয়োগ করছে। ইরান সাইবার আক্রমণের পরিকল্পনা করছে যা স্যাটেলাইট ব্যবস্থাকে বিঘ্নিত করতে পারে। উত্তর কোরিয়াও স্যাটেলাইটের রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি সিগন্যালের আসা-যাওয়া প্রতিহত করার কাজ করছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মহাকাশের আরও বেশি করে সামরিকীকরণ ঘটছে। এমনকি, ইতিমধ্যে এটিকে যুদ্ধের পরবর্তী মঞ্চ হিসেবেও উল্লেখ করা হচ্ছে।

ইরান সাইবার আক্রমণের পরিকল্পনা করছে যা স্যাটেলাইট ব্যবস্থাকে বিঘ্নিত করতে পারে। উত্তর কোরিয়াও স্যাটেলাইটের রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি সিগন্যালের আসা-যাওয়া প্রতিহত করার কাজ করছে।

এ ক্ষেত্রে উঠে আসা প্রশ্নটি হল, আন্তর্জাতিক চুক্তির উপস্থিতিতে দেশগুলি কী ভাবে ক্রমাগত মহাকাশের সামরিকীকরণ করছে? এই প্রশ্নের উত্তর আন্তর্জাতিক আইনের মতোই ধোঁয়াশাময়।

প্রথম এবং সর্বাগ্রে ‘শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্য’… এই শব্দবন্ধের সঠিক অর্থ নিরূপণে পৃথিবীর দেশগুলি বিভক্ত। রাশিয়ার মতে, এই শব্দবন্ধের অর্থ হল ‘অ-সামরিক’, যা ১৯৫৯ সালে আন্টার্কটিক চুক্তি অনুযায়ী বেসামরিকীকরণের প্রেক্ষাপটে ব্যবহৃত হয়েছে। এই ব্যাখ্যা অনুসারে মহাকাশে সমস্ত সামরিক সম্পর্কিত কার্যকলাপ অবৈধ হওয়া উচিত। এটিকে অ-সামরিক তত্ত্বও বলা হয়। অন্য দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জোর দিয়ে বলেছে যে, এই শব্দবন্ধের অর্থ ‘অনাগ্রাসী’ হওয়া এবং সেই অনুযায়ী সমস্ত সামরিক উদ্দেশ্য বৈধ, যতক্ষণ তারা রাষ্ট্রপুঞ্জের নিয়ম অনুযায়ী ‘অনাগ্রাসী’ থাকছে, যা ‘হুমকি বা শক্তি প্রদর্শন’কে বাধা দেয়। এটিকে বলা হয় অনাগ্রাসী তত্ত্ব। আন্তর্জাতিক আকাশ ও মহাকাশ আইনের এক জন বিশ্বখ্যাত বিশেষজ্ঞ প্রয়াত অধ্যাপক বিন চেং-এর মতে, ‘ও এস টি-তে শান্তিপূর্ণ শব্দের অর্থ অনাগ্রাসী বলে তর্ক করা আদতে অযৌক্তিক, অবাস্তব এবং এমনকি অদ্ভুত পরিণতির দিকে নিয়ে যায়।’ আজ পর্যন্ত অন্যান্য রাষ্ট্রের তরফে এই ব্যাখ্যা নিয়ে কোনও প্রতিবাদ করা হয়নি। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এত দিন নিজের ব্যাখ্যা বাস্তবায়িত করতে গিয়ে ‘অনাগ্রাসী’ অথবা মহাজাগতিক বস্তুগুলির উপরে সামরিক কার্যকলাপ চালায়নি। যদিও এই ব্যাখ্যার ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্য দেশগুলির পক্ষে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় থেকে মহাকাশে আরও সামরিকীকরণ করা সম্ভব।

দ্বিতীয়ত, ও এস টি দ্বারা জারি করা মহাকাশে অস্ত্র ব্যবহারের মূল নীতিগুলি হল যে, ‘রাষ্ট্রগুলি কোনও ভাবেই মহাকাশে, কক্ষপথে বা মহাজাগতিক বস্তুগুলিতে পারমাণবিক অস্ত্র বা অন্যান্য গণবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন করবে না। এবং বাইরে কোথাও তা সঞ্চয়ও করা যাবে না।’ এখানে মূল কথা হল প্রথম নীতিটি, যেখানে গণবিধ্বংসী অস্ত্র এবং পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর অর্থ হল দেশগুলির মহাকাশে অস্ত্রায়ন করার পথ খোলা থাকছে যতক্ষণ না সেই দেশগুলি পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার করছে। এর পাশাপাশি চুক্তিগুলির নমনীয় ব্যাখ্যার কারণে অন্য সমস্ত ধরনের অস্ত্রের ব্যবহারও ন্যায়সঙ্গত হয়ে উঠতে পারে।

মহাকাশের কার্যকর শাসনের পথে আর একটি বাধা হল প্রয়োগ। বর্তমানে এমন কোনও সংস্থা নেই যারা মহাকাশের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রাখে। ও এস টি ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর আউটার স্পেস অ্যাফেয়ার্স (ইউ এন ও ও এস এ) দ্বারা প্রয়োগ করা হয়, যেটির কার্যকর ভাবে মহাকাশ নিয়ন্ত্রণের আইনি এবং পরিকাঠামোগত ক্ষমতা নেই। একটি কার্যকর প্রয়োগকারী সংস্থার অভাবে মহাকাশের ভাগ্য দেশগুলির বিবেচনার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে, যারা পারস্পরিক সহযোগিতার পরিবর্তে নিজেদের জাতীয় স্বার্থের কথাই বিবেচনা করবে।

পি পি ডব্লিউ টি সংজ্ঞায়িত করেছে যে, ‘মহাকাশ অস্ত্র’ এবং এমনকি ‘ক্ষতি করার অভিপ্রায়’ যা সামরিক এবং অসামরিক প্রযুক্তিকে পৃথক করবে কারণ বেশিরভাগ অসামরিক স্যাটেলাইটেরই সামরিক প্রয়োগ থাকতে পারে।

কী ভাবে মহাকাশ রক্ষা করা সম্ভব?

আপাত দৃষ্টিতে এই প্রশ্নের উত্তর যথেষ্ট সহজ বলে মনে হতে পারে যেখানে একটি নতুন সুসমন্বিত এবং বিশদ চুক্তি আনতে হবে, যেখানে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ এবং বেসামরিকীকরণের উপরে বিধিনিষেধ আরোপ করা থাকবে। কিন্তু বাস্তবে ব্যাপারটি ততটা সহজ নয়। চিন এবং রাশিয়ার তরফে এমন একটা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, যখন মহাকাশে আরও সামরিকীকরণ বন্ধ করার প্রয়াসে তারা এক সঙ্গে ২০০৮ সালে নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলনে প্রিভেনশন অব দ্য প্লেসমেন্ট অফ ওয়েপনস ইন আউটার স্পেস অ্যান্ড অব দ্য থ্রেট অর ইউজ অব ফোর্স এগেনস্ট আউটার স্পেস অবজেক্টস (পি পি ডব্লিউ টি) শীর্ষকে একটি খসড়া চুক্তি জমা দিয়েছিল। পি পি ডব্লিউ টি সংজ্ঞায়িত করেছে যে, ‘মহাকাশ অস্ত্র’ এবং এমনকি ‘ক্ষতি করার অভিপ্রায়’ যা সামরিক এবং অসামরিক প্রযুক্তিকে পৃথক করবে কারণ বেশিরভাগ অসামরিক স্যাটেলাইটেরই সামরিক প্রয়োগ থাকতে পারে। এই চুক্তিটি মহাকাশ সামরিকীকরণের কার্যকর শাসনের প্রেক্ষিতে খুব ভাল জবাব দিতে পারে। ২০১৪ সালে দুটি দেশ দ্বারা পি পি ডব্লিউ টি-র একটি সংশোধিত খসড়া জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০০৮ সালে আমেরিকা এই অজুহাতে খসড়াটি খারিজ করেছিল যে — এই মুহূর্তে মহাকাশে কোনও অস্ত্র প্রতিযোগিতা নেই। তাই অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিরও কোনও প্রয়োজন নেই। যে হেতু মহাকাশ প্রযুক্তির উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা এখন আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে, তাই তারা আগামী ভবিষ্যতে এ রকম কোনও চুক্তিতে সম্মত হবে না।

ভবিষ্যতে যে কোনও সংশোধিত চুক্তি শুধু মাত্র একটি স্বল্পমেয়াদি সমাধানই হবে। কারণ সমস্যাটি নিছক একটি চুক্তির মাধ্যমে সমাধান করার পক্ষে খুব জটিল। মহাকাশের সঠিক শাসন এবং মহাকাশকে তার বিশ্বজনীন অবস্থায় পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার একটি দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীল মডেল তৈরি করতে হলে একটি বিশ্বজনীন প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে যেটি সব সদস্য দেশের মহাকাশভিত্তিক কার্যকলাপের উপর নজর রাখবে। পৃথিবীর কক্ষপথ যে বিশ্বজনীন… এই ধারণার উপরে ভিত্তি করেই এই শাসন ব্যবস্থাটি গড়ে উঠতে পারে, যার জবাবদিহি করার একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা থাকবে এবং আইনগুলি ঠিক মতো বলবৎ হচ্ছে কি না, তার দিকেও খেয়াল রাখবে। এটি কেবল মাত্র মহাকাশকে নিরস্ত্রীকরণে সাহায্যই করবে না, একই সঙ্গে মহাকাশের ধ্বংসাবশেষ বৃদ্ধি, স্যাটেলাইট ধ্বংস করা এবং এমনকি মহাকাশের অনুসন্ধানকে উৎসাহিত করার মতো বিষয়গুলিকেও সাহায্য করবে। আপাত দৃষ্টিতে এটি একটি দীর্ঘায়িত স্বপ্ন বলে মনে হলেও ইতিহাস আমাদের দেখিয়েছে যে, চাইলে দেশগুলি একজোট হয়ে কার্যকর ভাবে বিশ্বের সমস্যাগুলি সমাধানে সক্ষম। লং রেঞ্জ ট্রান্সবাউন্ডারি এয়ার পলিউশন কনভেনশন এবং সংশ্লিষ্ট আচরণবিধি এর এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

উপসংহার

সমগ্র মানবজাতির কল্যাণের জন্য এটি অপরিহার্য যে, মহাকাশ সংক্রান্ত ধারণার একটি বিশ্বজনীন প্রেক্ষিত থাকা আবশ্যক। একটি কঠোর আইন বলবৎকারী সংস্থা এবং শক্তিশালী আন্তর্জাতিক চুক্তির সমন্বয় মহাকাশের অসীম অজানা ও বাধাহীন অন্বেষণে মানবজাতির প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে। একটি বিশ্বব্যাপী শাসন ব্যবস্থা এই পৃথিবীর বাইরে মানুষের অগ্রগতির দিকের পরবর্তী যৌক্তিক পদক্ষেপ। কী ভাবে একটি রাষ্ট্র মহাকাশে তাদের কার্যকলাপ পরিচালনা করে, তা গ্রহের সকল দেশকেই ভাল বা খারাপ ভাবে প্রভাবিত করে। সুতরাং একটি কেন্দ্রীয় ভাবে নিয়ন্ত্রিত শাসনব্যবস্থা যা মহাকাশ সংক্রান্ত অন্বেষণের জন্য একটি দায়িত্বশীল ও নিরাপদ বাস্তুতন্ত্রকে সুনিশ্চিত করে এবং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শান্তিপূর্ণ মহাকাশে অবাধ প্রবেশাধিকারের দ্বার খুলে দেয়… এমনটাই এই সময়ের আদর্শ দাবি।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.