Author : Ankita Dutta

Published on May 24, 2023 Updated 0 Hours ago

ইউক্রেন সঙ্কটে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলির প্রতিক্রিয়া ইতিহাসের দ্বারা প্রভাবিত

ইউক্রেন প্রশ্নে দক্ষিণ এশিয়ার দোলাচল: জাতীয় স্বার্থ এবং ইতিহাসের বোঝা

ইউক্রেন সঙ্কটের প্রেক্ষিতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলি স্বতন্ত্র এবং ক্ষেত্রবিশেষে ভিন্নমুখী অবস্থান নিয়েছে। এক দিকে এই অবস্থানগুলি ঠান্ডা লড়াইয়ের সময় তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক এবং অন্য দিকে বর্তমান বিশ্বে বৃহৎ শক্তির প্রতিযোগিতা এবং সেই প্রতিষ্ঠিত ও উদীয়মান শক্তিগুলির সঙ্গে তাদের এখনকার  সম্পর্ক দ্বারা চালিত। ফলে নিরপেক্ষ এবং রাশিয়ার বিরোধিতায় দ্ব্যর্থহীন অবস্থান গ্রহণকারীদের মধ্যে স্পষ্টতই বিভাজন রয়েছে। এই নিবন্ধটিতে ছ’টি দক্ষিণ এশীয় দেশের (আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল এবং শ্রীলঙ্কা)  অবস্থান বিশ্লেষণ করা হয়েছে এবং ইউক্রেন সঙ্কটে এই দেশগুলির বর্তমান প্রতিক্রিয়া কীভাবে তাদের ইতিহাস দ্বারা প্রভাবিত, সেই দিকেও আলোকপাত করা হয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় সোভিয়েত শঙ্কা

সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে দ্রুত হারে তার সম্পর্কের প্রসার ঘটাতে শুরু করে এবং নিজেকে জোট নিরপেক্ষ দেশগুলির জন্য একটি নিরাপদ ও নিরপেক্ষ শক্তি হিসেবে তুলে ধরে। কমিউনিস্ট চিন এবং সোভিয়েত রাশিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিভাজন এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যখন মস্কো চিন ব্যতীত বিশ্বস্ত অংশীদারদের জন্য এশিয়ায় খোঁজ শুরু করে। মস্কোর দক্ষিণ এশিয়া নীতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপুঞ্জের কর্মসূচিতে সোভিয়েত অবদানের বৃদ্ধি ঘটে এবং ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৬ সালের মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন রাষ্ট্রপুঞ্জের তহবিলে ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বর্তমান অঙ্কে আনুমানিক ৪২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) প্রদান করেছিল। ১৯৬০ সাল থেকে ১৯৮০-র দশক পর্যন্ত ইউএসএসআর শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করে এবং ১৯৬৬ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তাসখন্দ ঘোষণাপত্র স্বাক্ষরে মধ্যস্থতা করে।

মস্কোর দক্ষিণ এশিয়া নীতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপুঞ্জের কর্মসূচিতে সোভিয়েত অবদানের বৃদ্ধি ঘটে এবং ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৬ সালের মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন রাষ্ট্রপুঞ্জের তহবিলে ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বর্তমান অঙ্কে আনুমানিক ৪২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) প্রদান করেছিল।

বলা যেতে পারে, বর্তমান সঙ্কটে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির প্রতিক্রিয়া ইতিহাস এবং বর্তমান জাতীয় স্বার্থের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার প্রয়াস দ্বারা চালিত। ছ’টি দক্ষিণ এশিয়ার দেশের মধ্যে আফগানিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা এই সংঘাতে তাদের সরকারি অবস্থান হিসাবে নিরপেক্ষতাকে বেছে নিয়েছে। আফগানিস্তানের ইসলামিক এমিরেট – যেটিকে তারা ‘নিরপেক্ষতার বৈদেশিক নীতি’ বলে অভিহিত করেছে, সেটির অনুসরণে রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয়কেই আলাপ-আলোচনা এবং শান্তিপূর্ণ পথে সঙ্কট সমাধানের অনুরোধ জানিয়েছে। এর পাশাপাশি, শ্রীলঙ্কা শান্তি ও নিরাপত্তার ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতে আলাপ-আলোচনা ও কূটনীতিকেই পথ হিসেবে বেছে নেওয়ার কথা বলেছে। কলম্বোর জন্য রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয়ই তার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ উৎস – ২০২০ সালে উভয় দেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পরিমাণ ছিল শ্রীলঙ্কার মোট আমদানি ও রফতানির যথাক্রমে ২ শতাংশ এবং ২.২ শতাংশ। এই দেশগুলি থেকে শ্রীলঙ্কার প্রধান আমদানি হল খাদ্যশস্য, লোহা ইত্যাদি এবং উভয় দেশে তার প্রধান রফতানিকৃত বস্তুটি হল কালো চা। শ্রীলঙ্কার মোট পর্যটক প্রবাহে অবদানকারী শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যেও রয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। সংশ্লিষ্ট সঙ্কটের ফল শ্রীলঙ্কাতেও গভীরভাবে অনুভূত হচ্ছে, যা সে দেশের জ্বালানি ও খাদ্য ঘাটতিকে বহুগুণ বাড়িয়ে তুলেছে এবং নিম্নগামী অর্থনীতি ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির জন্ম দিয়েছে।

বাংলাদেশ নিরপেক্ষতার একটি অনানুষ্ঠানিক নীতি গ্রহণ করেছে। ঢাকা রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রস্তাব থেকে বিরত ছিল এবং তারা উভয়পক্ষকে সঙ্কট সমাধানে শান্তিপূর্ণ পথ ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছে। দেশটি এক দিকে বৃহৎ শক্তির প্রতিযোগিতা থেকে দূরত্ব বজায় রাখা এবং ‘সকলের প্রতি বন্ধুত্ব, কারও প্রতি বিদ্বেষ নয়’ ধারণার ভিত্তিতে আলাপ-আলোচনার জন্য তার কূটনৈতিক স্থান উন্মুক্ত রাখার নীতি অনুসরণ করেছে। ইউক্রেন সঙ্কটের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া আসলে তার দীর্ঘমেয়াদি নীতিরই কূটনৈতিক ধারাবাহিকতা। ইউএসএসআর-এর সঙ্গে ঢাকার ঐতিহাসিক সম্পর্কও বিদ্যমান: সোভিয়েত ইউনিয়ন শুধুমাত্র ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় ভারত ও বাংলাদেশকে সমর্থনই জোগায়নি, বরং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং সেনা প্রত্যাহারের জন্য মার্কিন-সমর্থিত প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছিল। ঠান্ডা লড়াই-পরবর্তী সময়ে রাশিয়া বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার হয়ে ওঠে এবং জ্বালানি, পরিকাঠামো ইত্যাদি খাতে সহযোগিতা করে। এ কথাও উল্লেখ্য যে, ঢাকার অনুপস্থিতিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দোলাচলের আলোকে দেখা যেতে পারে। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় ওয়াশিংটন পাকিস্তানের সমর্থনে বঙ্গোপসাগরে তার নৌ টাস্ক ফোর্স পাঠিয়েছিল। অতি সম্প্রতি মার্কিন সরকার বাংলাদেশে জিহাদি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নিয়োজিত একটি আধা-সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের উপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যা বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়েছে।

আফগানিস্তানের ইসলামিক এমিরেট – যেটিকে তারা ‘নিরপেক্ষতার বৈদেশিক নীতি’ বলে অভিহিত করেছে তার অনুসরণে রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয়কেই আলাপ-আলোচনা এবং শান্তিপূর্ণ পথে সঙ্কট সমাধানের অনুরোধ জানিয়েছে।

নেপাল, ভুটান এবং মালদ্বীপের সঙ্গে রাশিয়া ও ইউক্রেনের সম্পর্ক সীমিত। যদিও রাশিয়ার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক এখনও কিয়েভের সঙ্গে সম্পর্কের তুলনায় গভীরতর। নেপালকে রাশিয়া হেলিকপ্টার, বিনিয়োগ এবং মানবিক সহায়তা প্রদান করেছে। ভুটান এবং মালদ্বীপের পর্যটন ক্ষেত্র রাশিয়া দ্বারা উপকৃত হয়। সঙ্কট শুরু হওয়ার পর থেকে নেপাল রাশিয়ার পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ ও রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদ লঙ্ঘনের জন্য মস্কোকে দায়ী করেছে। নেপাল যখন রাশিয়ার সমালোচনা করেছে, তখন ভুটান ছোট রাষ্ট্রগুলির উপর সঙ্কটের প্রভাব এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের মূল্যবোধ ও নীতিগুলিকে সমুন্নত রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেছে। এ কথা ইউএনজিএ-তে স্পষ্ট হয়, যখন তার স্থায়ী প্রতিনিধি বলেছিলেন যে, ‘ভুটান সংঘাত থেকে হাজার মাইল দূরে থাকলেও সংঘাতের অনুরণন অনুভব করতে সক্ষম’। মালদ্বীপ উভয় পক্ষকে শান্তি ও রাজনৈতিক সমাধানের পথ খোঁজার আহ্বান জানিয়েছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে এই দেশগুলির প্রতিক্রিয়া অঞ্চলটিতে শক্তিদ্বন্দ্বের টানাপড়েন থেকে উদ্ভূত ভূ- রাজনৈতিক উদ্বেগ ও দেশগুলির ভৌগোলিক অবস্থানের ফসল।

এই দেশগুলি কমবেশি রাষ্ট্রপুঞ্জে তাদের মতদানের নিরিখে ধারাবাহিকতা দর্শিয়েছে। তারা তাদের নিজ নিজ বৈদেশিক নীতির সিদ্ধান্ত গ্রহণের একটি অন্তর্দৃষ্টি উপস্থাপন করে ভূ-রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক কারণের আন্তঃসম্পৃক্ততাকেই তুলে ধরে। ভোটের ধরন এই অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক পরিসরে পরিবর্তন এবং ক্ষমতার প্রতিযোগিতায় দেশগুলির বিদেশনীতির স্বায়ত্তশাসন হারানোর ক্রমবর্ধমান উদ্বেগকেই দর্শায়।

সারণি: ইউএনজিএ প্রস্তাবনায় মতদান 

  ইউএনজিএ প্রস্তাবনা  
  রাশিয়া যাতে ইউক্রেন ত্যাগ করে, সেই দাবি, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণের দাবি, ১৪ নভেম্বর, ২০২২ ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা, ১২ অক্টোবর, ২০২২ মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে রাশিয়াকে অপসারণের দাবি, ৭ এপ্রিল, ২০২২ ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের মানবিক পরিণতি, ২৪ মার্চ, ২০২২ ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার সকল সামরিক শক্তি প্রত্যাহারের দাবি, ২ মার্চ, ২০২২
আফগানিস্তান পক্ষে পক্ষে পক্ষে —– পক্ষে পক্ষে
বাংলাদেশ বিরত বিরত পক্ষে বিরত বিরত পক্ষে
ভুটান পক্ষে বিরত পক্ষে বিরত পক্ষে পক্ষে
মালদ্বীপ পক্ষে পক্ষে পক্ষে বিরত পক্ষে পক্ষে
নেপাল পক্ষে বিরত পক্ষে বিরত পক্ষে পক্ষে
শ্রীলঙ্কা বিরত বিরত বিরত বিরত বিরত বিরত

উৎস: একাধিক সূত্র থেকে গৃহীত ও লেখকের নিজস্ব সংকলন

প্রস্তাবনা স্বরূপ অতীতের উপস্থাপন

বর্তমান পরিস্থিতির পরিহাস হল এই যে, দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিক্রিয়া ইউএসএসআর-এর সঙ্গে তাদের সম্পর্কের উত্তরাধিকার দ্বারা পরিচালিত। তবুও ইউক্রেন একসময় ভৌগোলিক ভাবে ইউএসএসআর-এর একটি অংশ ছিল এবং একই রকম ভাবে তারাও এই উত্তরাধিকারের জন্য সমানভাবে দাবি করতে পারে। ইউক্রেনীয়রা তাদের প্রচেষ্টাকে সমর্থন জুগিয়েছিল, যেমন বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছিল। তবে এই সত্য ঘটনাপ্রবাহে চাপা পড়ে গিয়েছে বলে মনে হয়। এই প্রেক্ষিতে সংঘাতটি ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে হলেও এটিকে ঠান্ডা লড়াইয়ের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখা হচ্ছে। সর্বোপরি এবং দুঃখজনক ভাবে ইউক্রেনীয় স্বায়ত্তশাসন ইতিহাসের ভারে চাপা পড়ে গিয়েছে।

ভৌগোলিক এবং ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতার একটি জাতীয় আখ্যান নির্মাণের প্রক্রিয়া কেবল অঞ্চল নয়, সময়ের দাবি জানায় এবং বর্তমান সময়ে দেশগুলি কীভাবে একে অপরের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করছে, সেই বিষয়টিকেও প্রভাবিত করে। এ কথা দুর্বোধ্য বলে মনে হলেও, রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের প্রতিক্রিয়া স্বরূপ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে পরিলক্ষিত বিভাজনের নেপথ্যে থাকা ধারণাটি বোঝার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে এটি এই সত্যকেও দর্শায় যে, বৃহৎ শক্তি প্রতিযোগিতায় জড়িয়ে পড়ার অনিবার্যতা সম্পর্কে অঞ্চলটি অবগত। ইউক্রেন সঙ্কট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রতিযোগিতাকে প্রকাশ্যে নিয়ে এলেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির জন্য প্রধান উদ্বেগের বিষয় হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-চিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা।

সুতরাং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলি এই অঞ্চলে উদীয়মান প্রতিযোগিতার প্রতি তাদের প্রতিক্রিয়া দেওয়ার সময় নিজ নিজ জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে ঠান্ডা লড়াই এবং ইউক্রেন সঙ্কটের পাঠগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চালাবে। এ ক্ষেত্রে রাশিয়ার জন্য সমর্থন লক্ষ করা গেলেও তা তার কাজের জন্য নয়, বরং একদা রাশিয়া যে মনোভাব দর্শিয়েছে, তার দরুন বলা চলে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.