Published on Jul 05, 2022 Updated 0 Hours ago

এমডিপি–র উচিত দলের মধ্যে রাজনৈতিক অন্তর্দ্বন্দ্ব বন্ধ করা এবং আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্ট উপস্থাপন করা।

মলদ্বীপ: এমডিপি–র কি দলীয় ভোটে খারাপ ভোটদানের হারের কারণে উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত?

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখে প্রচার চালানো হয়েছে এমন একটি নির্বাচনে, যেখানে দ্বীপব্যাপী সমাবেশ থেকে শুরু করে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ সহ সব উপকরণই ছিল, তাতে ক্ষমতাসীন মলদ্বীপ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এমডিপি) তার অর্থনৈতিক উন্নয়ন মন্ত্রী ফায়াজ ইসমাইলকে দলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছে৷ প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ইসমাইল ২৭,০০০ ভোট (৫৮ শতাংশ) পেয়েছেন , আর দলের প্রধান ও পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ নাশিদের  গোষ্ঠীর প্রার্থী ইমতিয়াজ ফাহমি ওরফে ইনথি, যিনি নিজে একজন এমপি, তিনি ২০,০০০ ভোট (৪২ শতাংশ) পেয়েছেন।

কাকতালীয় ভাবে, ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সঙ্গে এই চেয়ারম্যান নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের শতাংশ একই রকম। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী এমডিপি–র সোলির ভোট ছিল ৫৮ শতাংশ এবং পরাজিত আবদুল্লা ইয়ামিনের ৪২ শতাংশ। কিন্তু তুলনা সেখানেই শেষ হওয়া উচিত।

এবারের দলীয় নির্বাচনে দলটির মহিলা ও ছাত্র শাখার প্রেসিডেন্টের পদদুটিও জিতেছে টিম সোলি। ইনথি প্রাথমিক ভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করলেও ভোটের পর ইনথি  নাশিদ  উভয়েই বিজয়ীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন, তাঁর এবং প্রেসিডেন্ট সোলির সঙ্গে একত্রে কাজ করার আগ্রহের ইঙ্গিত দিয়েছেন, এবং এই ভাবে আগামী বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিতব্য অতি–গুরুত্বপূর্ণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দলের জন্য একটি মসৃণ পথ তৈরি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইসমাইল সতর্ক আশাবাদের সঙ্গে বলেছিলেন যে এখন সব পক্ষই যখন ফলাফল মেনে নিয়েছে তখন ‘‌দল বিভক্ত থাকলেও আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি’‌।

এমডিপি চেয়ারম্যান নির্বাচনের প্রচার কয়েক সপ্তাহ ধরে চলেছিল, আর সে সময় কোনও পক্ষই দলের প্রতি ক্যাডারদের বৃহত্তর দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা থেকে শুরু করে কোনও সুযোগই ছাড়েনি।

ক্ষমতাসীন দলের জন্য অবশ্য উদ্বেগের একাধিক বিষয় থেকে গেছে। এমডিপি চেয়ারম্যান নির্বাচনের প্রচার কয়েক সপ্তাহ ধরে চলেছিল, আর সে সময় কোনও পক্ষই দলের প্রতি ক্যাডারদের বৃহত্তর দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা থেকে শুরু করে কোনও সুযোগই ছাড়েনি। বিগত তিনটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে (২০০৮, ২০১৩, ও ২০১৮) ভোটারদের উপস্থিতি ছিল ৯০ শতাংশের বেশি। এই পটভূমিতে, ৪৭,০০০ ভোটদাতার সংখ্যা ছিল দলের দাবি করা ৯৪,০০০ সদস্যের অর্ধেক। এই ঘটনা হয় নির্বাচন কমিশনের ৫৪,০০০ সদস্যের দাবিকে সঠিক প্রমাণ করে, অথবা ক্রমাগত নেতৃত্বের জন্য দ্বন্দ্ব নিয়ে সদস্যদের মোহভঙ্গকে, বা দুটোকেই।

এই ঘটনা আরও বেশি স্পষ্ট ছিল মালেতে, যেখানে দেশটির আনুমানিক ৩০০,০০০ ভোটারের প্রায় অর্ধেক রয়েছেন (তাঁদের মধ্যে কিছু তাঁদের স্থানীয় দ্বীপে ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত)। রাজধানীতে, প্রায় ৩,৭৯৩ ভোটার (ইনথির জন্য ১,৯২০) এমডিপি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন, যা দেখায় যে দেশব্যাপী স্থানীয় কাউন্সিলে ইয়ামিনের প্রতিদ্বন্দ্বী পিপিএম-পিএনসি জোটের কাছে গত বছরের এপ্রিলে ঐতিহ্যগত  দুর্গটি হারানোর পরে দল এখনও তা পুনরুদ্ধার করতে পারেনি।

আশঙ্কা হল যে এমডিপি দ্বন্দ্বের অবসান না করলে, এবং গত দু’‌বছর বিরোধীদের থেকেও  বেশি করে নাশিদ যে ভাবে সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন তা বন্ধ করে সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে না–পারলে, ক্যাডার বাদে বাকি যাঁরা সব সময়েই এমডিপি–কে ভোট দেন তাঁদের একটা বড় অংশ, এবং যে ২০-৩০ শতাংশ ‘‌দোদুল্যমান’‌ থাকেন তাঁরা, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে দূরে সরে থাকতে পারেন। দলীয় প্রশাসনিক পদ ভাগাভাগির ক্ষেত্রে দুই শিবিরের দ্বীপভিত্তিক পারস্পরিক বোঝাপড়া এক্ষেত্রে কিছুটা হলেও সাহায্য করবে। ইসমাইল নির্বাচনের আগে ২০,০০০ ‘‌বোগাস সদস্য’‌ আছেন বলে দাবি করার পরে দলীয় সদস্যপদ যাচাই করার মধ্যে দিয়ে এই লক্ষ্যে পদক্ষেপ করা যেতে পারে।

অশেষ বিড়ম্বনা

ভোটের আগে এটি প্রেসিডেন্ট  নির্বাচনের জন্য দলের মনোনীত প্রার্থী বাছাইয়ের প্রথম পদক্ষেপ বলে প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রচারকে গুরুত্ব দিতে চাননি ইসমাইল। আর তাঁর জয়ের পরে স্পষ্টতই প্রেসিডেন্ট সোলির কথা মাথায় রেখে তিনি বলেন যে এই ভোটের উদ্দেশ্য ছিল ‘প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়া’‌।

তবে, সোলি নিজে কোনও অবস্থান স্পষ্ট করেননি।  দুই বছরের প্রতিযোগিতামূলক প্রস্তুতির কালে তাঁর এক সময়ের বন্ধু ও পরামর্শদাতা নাশিদ একাধিকবার দলীয় প্রাইমারিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। সোলি কিন্তু সারাক্ষণ নীরবতা বজায় রেখেছেন। এবার তাঁর মুখপাত্র কিছুটা এগিয়ে বলেছেন যে প্রেসিডেন্ট কাউকে বলেননি যে তিনি ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না’‌। পার্টি চেয়ারম্যান নির্বাচনের মধ্যে একটি চ্যাট শোয়ে সোলি প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না বলে ঘোষণা করা হলে তিনি এ কথা বলেন। এই বক্তব্য যদি দলীয় কর্মীদের প্রভাবিত করেও থাকে, অন্তত ভোটের  ফলাফলে তা দেখা যায়নি।

দলীয় প্রশাসনিক পদ ভাগাভাগির ক্ষেত্রে দুই শিবিরের দ্বীপভিত্তিক পারস্পরিক বোঝাপড়া এক্ষেত্রে কিছুটা হলেও সাহায্য করবে। ইসমাইল নির্বাচনের আগে ২০,০০০ ‘‌বোগাস সদস্য’‌ আছেন বলে দাবি করার পরে দলীয় সদস্যপদ যাচাই করার মধ্যে দিয়ে এই লক্ষ্যে পদক্ষেপ করা যেতে পারে।

পার্টির চেয়ারম্যানের পাশাপাশি সোলি শিবির এমডিপি মহিলা শাখার সভাপতির পদ জিতেছে। এই ভোটে  ৪১,০০০ মহিলা সদস্যদের (যা দাবি করা হয়েছিল) মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ৪৯ শতাংশ সদস্য। রোজাইনা আদম  প্রদত্ত ভোটের ৬০ শতাংশ পেয়ে ১১,৭০৮-৭,৯৬১ ভোটে‌ জিতেছেন। একই ভাবে, সোলি ক্যাম্পের রিফগা শিহাম এমডিপি যুব শাখার সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন, যার রেকর্ড করা সদস্য সংখ্যা ৩২,০০০। এটি টিম সোলির জন্য অবশ্যই একটি ক্লিন সুইপ। কিন্তু বিশেষ করে মহিলা এবং যুব শাখার ক্ষেত্রে পছন্দের ব্যক্তি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যা ঘটল তা এমডিপি সদস্যদের,  এবং বর্ধিত ভাবে মলদ্বীপের ভোটারদের, এই অংশগুলির ব্যক্তিগত আনুগত্য সম্পর্কে  এতদিনকার প্রচলিত ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী বিশ্বাসগুলি ভেঙে দিয়ে থাকতে পারে।

টানা তৃতীয় জয়

এমডিপি–র অভ্যন্তরীণ নির্বাচনে এটি সোলি শিবিরের টানা তৃতীয় জয়। এর আগে তারা জিতেছে দেশব্যাপী জেনারেল কাউন্সিল নির্বাচনে, যার সদস্যেরা পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত পার্টি কংগ্রেসের ভোটদাতা। তারপরে এই বছরের শুরুতে হাউসের নেতা হিসেবে মোহাম্মদ আসলামের ক্ষেত্রে (৪০-২৫) একটি ভাল জয় এসেছে। তবুও, এক পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বীরা যা স্বীকার করতে প্রস্তুত ছিল তার চেয়ে ইনথির তুলনামূলক ভাল প্রদর্শন এবং দুর্বল ভোটদানের হার সোলি শিবিরকে, এবং সামগ্রিক ভাবে দলের নেতৃত্বকে, উদ্বিগ্ন করা উচিত।

এখন যে হেতু নাশিদ শিবির আবারও যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে, তাই নীতি ও কর্মসূচির দায়িত্বে থাকা পার্টির সভাপতি হিসেবে স্পিকার নাশিদ এবং পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দলীয় প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী ইসমাইল আগামী সপ্তাহ এবং মাসগুলিতে  কী ভাবে দলের অবস্থার উন্নতি করতে এক সঙ্গে কাজ করার পরিকল্পনা করেন, তা দেখার বিষয়। এটি শুধুমাত্র তখনই ফলাফল দেবে যখন ক্যাডার এবং ভোটাররা একই ভাবে নিশ্চয়তা পাবেন যে এমডিপি–তে দলাদলি অতীতের বিষয়, এবং কোনও পক্ষই এখন এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মধ্যে নতুন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়বে না বা চমক আনবে না।

এখন যে হেতু নাশিদ শিবির আবারও যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে, তাই নীতি ও কর্মসূচির দায়িত্বে থাকা পার্টির সভাপতি হিসেবে স্পিকার নাশিদ এবং পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দলীয় প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী ইসমাইল আগামী সপ্তাহ এবং মাসগুলিতে কী ভাবে দলের অবস্থার উন্নতি করতে এক সঙ্গে কাজ করার পরিকল্পনা করেন, তা দেখার বিষয়।

এখন প্রশ্ন হল নাশিদ ১৬ আগস্ট পার্টি কংগ্রেস ডাকবেন কি না, যেমনটি একতরফা ভাবে আগে ঘোষণা করা হয়েছিল। এর জন্য সোলি–নিয়ন্ত্রিত জেনারেল কাউন্সিলের অনুমোদন প্রয়োজন হবে। ইঙ্গিত এই রকম ছিল যে নাশিদ চেয়েছিলেন কংগ্রেস প্রেসিডেন্টের প্রাইমারির তারিখ ঠিক করুক, কিন্তু ফায়াজ ইসমাইলের নির্বাচনের পরে তিনি সম্ভবত ধীরগতিতে এগোতে চাইবেন। এরকম ইঙ্গিত পাওয়া গেছে  যে প্রাইমারিগুলির জন্য একটি তারিখ নির্ধারণ করা হলেই ক্ষমতাসীন সোলি দ্বিতীয় মেয়াদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিষয়ে তাঁর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন।

সামনে যাই ঘটুক না কেন, তার থেকে আলাদা ভাবে এমডিপি–কে তাদের তিনটি বিদ্যমান মিত্রদের জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ চেহারা তৈরি করতে হবে, যাতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ সম্ভব হয়। তাদের ভোটভিত্তিগুলির এক্ষেত্রে শুধু একটি সীমিত অবদান রয়েছে৷ মন্ত্রী ফায়াজ ইসমাইলকে  অভিনন্দন বার্তায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আধালাত জোটের নেতা শেখ ইমরান আবদুল্লা উল্লেখ করেছেন কী ভাবে ‘‌রাজনৈতিক দলগুলির অভ্যন্তরীণ স্বার্থ নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে জড়িয়ে যায়’‌।

উপনির্বাচনে জয়ী ইয়ামিন শিবির

একটি তুলনায় কম তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হল বিরোধী দল পিপিএম-এর ফতিমাথ নাজিমার শহরতলির ভিলিমালে মহিলা উন্নয়ন কমিটির আসনে জয়। তিনি সম্প্রতি তৈরি হওয়া মলদ্বীপ ন্যাশনাল পার্টির (এমএনপি) আমিনাথ শিজাকে ৩৫৯-৩৫৮ ভোটে পরাজিত করেছেন, যা পুনঃগণনার পর নিশ্চিত ভাবে ঘোষিত হয়৷ ক্ষমতাসীন এমডিপি আসনটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেনি, যদিও তাদের সদস্যের মৃত্যুর কারণেই পদটি শূন্য হয়েছিল। এর কারণ দলের স্থানীয় ইউনিট সময় শেষ হওয়ার আগে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেনি।

সামনে যাই ঘটুক না কেন, তার থেকে আলাদা ভাবে এমডিপি–কে তাদের তিনটি বিদ্যমান মিত্রদের জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ চেহারা তৈরি করতে হবে, যাতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ সম্ভব হয়।

যাই হোক, যা কম তাৎপর্যপূর্ণ নয় তা হল ফতিমাথ নাজিমার হয়ে প্রচারের সময় প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিনের নিজের সৎ-ভাই এবং প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল গাইয়ুমের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে এই অভিযোগ আনা যে ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮–এ ‘‌অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা’‌ বলে অভিযোগ তোলার পিছনে ‘‌প্রধান ষড়যন্ত্রকারীদের একজন’‌ ছিলেন গাইয়ুম। ইয়ামিন আদালতের পাঁচ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ–এর রায়ে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট নাশিদকে (যিনি ‘‌কারাগার থেকে ছুটিতে’‌ থাকাকালীন ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছিলেন)‌ খালাস করে দেওয়ার দিকে আঙুল তুলেছেন। পরবর্তী সময়ে গাইয়ুমের গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে সেটা তাঁর স্বার্থরক্ষার জন্য  করা হয়নি, কারণ তিনি জাতীয় স্বার্থে কাজ করেছিলেন।

গাইয়ুমের মামুন রিফর্ম মুভমেন্ট (এমআরএম) অবিলম্বে বিচারবিভাগকে প্রভাবিত করার বিষয়ে ইয়ামিনের দাবি এবং ক্ষমতায় ফিরে এলে দেশের সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রধানদের কারারুদ্ধ করার হুমকির তদন্ত করার জন্য কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানায়। আলাদা করে গাইয়ুম জোর দিয়ে বলেছেন যে তিনি এমআরএম–এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন তাঁর মেয়ে ও প্রাক্তন মন্ত্রী দুনিয়া মামুন তিনি এমএনপি–কে সমর্থন করছেন বলে দাবি করার পরে।

সীমাবদ্ধতা উন্মোচিত

একই সঙ্গে পুলিশ আবদুল্লা ইয়ামিনের পিপিএম অফিস থেকে ‘‌ইন্ডিয়া আউট’‌ টি–শার্টগুলি সরিয়ে দিয়েছে, এবং মালে-র রাস্তায় পড়ে থাকা স্লোগান–লেখা হ্যান্ডবিলের উৎস অনুসন্ধান করছে। তারা ইয়ামিনের বাড়ি এবং পার্টি অফিসের দেয়ালে তাঁর গ্রেফতারের দাবিতে মধ্যরাতে যে গ্রাফিতির স্প্রে-পেন্টিং করা হয়েছিল তার তদন্তও করছিল। এক নির্ভরযোগ্য প্রতিবেশীর প্রতি ‘‌বন্ধুত্বহীন’‌ আচরণের কারণে সোলি প্রেসিডেনশিয়াল ডিক্রির মাধ্যমে ‘ইন্ডিয়া আউট’‌ নিষিদ্ধ করার পরে  ইয়ামিনের প্রচারাভিযান অবৈধ হয়ে যায়।

গাইয়ুমের মামুন রিফর্ম মুভমেন্ট (এমআরএম) অবিলম্বে বিচারবিভাগকে প্রভাবিত করার বিষয়ে ইয়ামিনের দাবি এবং ক্ষমতায় ফিরে এলে দেশের সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রধানদের কারারুদ্ধ করার হুমকির তদন্ত করার জন্য কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানায়।

ইয়ামিন তাঁর ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচারাভিযানের জন্য যতই সোরগোল করে থাকুন না কেন, তাঁর দল অন্য দিকে তাকিয়ে থাকাই অব্যাহত রেখেছে, এবং সফররত মার্কিন সামরিক দলের সঙ্গে মলদ্বীপের সেনাদের প্রশিক্ষণ অনুশীলনের দিকে মনোনিবেশ করেছে। সম্ভবত ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক সামরিক সহযোগিতা চুক্তি  এবং এই বছরের শুরুর দিকে মালেতে আরেকটি চুক্তির মাধ্যমে তা আরও প্রসারিত হওয়ার দৌলতে ‘‌এক্সারসাইজ ব্ল্যাক মারলিন ২২-২’‌ নামের এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু হয়, যা ১৪ মে থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত চলে। এর বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে ছিল মার্কসম্যানশিপ, কাউন্টার-আইইডি, ব্রিচিং ও ক্লোজ কোয়ার্টার ব্যাটল৷

ঘটনার চার বছর পর নিষিদ্ধ ঘোষিত ‘‌ইন্ডিয়া আউট’‌ প্রচারাভিযানকে গাইয়ুম-বিরোধী আক্রমণ দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে চাওয়ার মধ্যে যে অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্ব রয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে মনে হয় এর মধ্যে দিয়ে আপাতত ইয়ামিনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারাভিযানের সীমাবদ্ধতা প্রকাশ পেয়েছে। তাঁর ৩০ বছরের দীর্ঘ প্রেসিডেন্টের কার্যকালের দিন থেকে গাইয়ুম জমানা ও ভারত উভয়ই ‘‌কল্যাণমূলক ক্ষেত্রের’‌ প্রতি দায়বদ্ধ ছিল।  তারপর গাইয়ুম ২০১৮ সালে  ইয়ামিনের পথে গিয়েছিলেন এবং ক্ষমতাসীন অবস্থায় হেরেছিলেন।

পরের মাসে যখন ফৌজদারি আদালতের দুটি রায় আসার কথা  আছে, সেই সময় ইয়ামিনের  সমর্থকেরা তাঁদের আগের চেয়ে বেশি সমর্থন করতে এগিয়ে আসছেন, বিশেষ করে তাঁকে ডিসকোয়ালিফাই করে দেওয়ার এবং সেই কারণে সর্বোচ্চ ভোট হস্তান্তর করা যাবে এমন কোনও প্রার্থীকে দাঁড় করানোর সম্ভাবনার মধ্যে। রাজনীতি এখনও অনিশ্চিত অবস্থায় রয়েছে, এবং তাই এমডিপি–র জন্য এখনই সময় নিজেদের অভ্যন্তরীণ পার্থক্যগুলিকে মিটিয়ে নেওয়ার। তা না–করলে তাঁদের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আরও কঠিন হয়ে পড়তে পারে, কারণ কোভিড-পরবর্তী যুগেও তাঁদের পার্টি চেয়ারম্যান নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল কম।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.