Author : Ullas Rao

Published on Feb 10, 2024 Updated 0 Hours ago

মধ্যপ্রাচ্য এবং জিসিসি দেশগুলির সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের আলোকে ইসলামিক ফাইনান্স একটি বিকল্প আর্থিক সুযোগ নিয়ে আসে, যা বাণিজ্য অর্থায়নের ক্ষেত্রে ভরবেগ জোগায়।

ভারতের অর্থায়ন লক্ষ্য পূরণের জন্য ইসলামিক অর্থ জোগাড় করা

ভারত তার ৭৬টি গৌরবময় বছর পেরিয়ে আসার পর বিচক্ষণতার পরিচায়ক হবে দেশের পরবর্তী প্রধান উন্নয়নমূলক মাইলফলকটি তৈরি করা: ৫ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির মানচিত্র। বর্তমান জিডিপিতে নামমাত্র (‌নমিনাল)‌ বৃদ্ধির হার ১০ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পাঁচ বছর সময় লাগবে। ইসলামিক অর্থ (ইসলামিক ফাইনান্স বা আইএফ) আগামী পাঁচ বছরে ৭০০ বিলিয়ন (১৪ শতাংশ) অবদানের মাধ্যমে উন্নয়নমূলক কর্মসূচি ফাস্ট–ট্র্যাক করার জন্য একটি সম্ভাব্য অগ্রদূতের ভূমিকা পালন করতে পারে। একত্রে, আইএফ নিয়ন্ত্রণাধীন অ্যাসেট আন্ডার ম্যানেজমেন্ট (এইউএম) এখনকার ৩.৯৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ২০২৬ সালের মধ্যে ৫.৯ ট্রিলিয়ন ছুঁতে পারে বলে অনুমান করা হয়েছে৷ ভারতের ব্যাঙ্কিং ও আর্থিক ক্ষেত্র আইএফ–এর জন্য উন্মুক্ত করার ফলে বাজারের শেয়ারের অন্তত ১৪ শতাংশ দখলে আনার সুযোগ রয়েছে,  এবং তা ভারতের মুসলিম জনসংখ্যাকে (১৪ শতাংশের প্রতিনিধিত্বকারী) আনুষ্ঠানিক আর্থিক ব্যবস্থায় সম্পূর্ণরূপে একীভূত করার সুযোগ তৈরি করবে। একটি বিকল্প আর্থিক বাহন হিসাবে বিবেচিত আইএফ–এর আয়তন বর্তমানে ৩.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বিশ্ব অর্থনীতির ৫ শতাংশেরও কম, এবং উদীয়মান বাজারগুলিই এর প্রাথমিক প্রাপক। তাদের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিই (আসিয়ানের অংশ) বেশিরভাগ অংশ নিয়ন্ত্রণ করে, এবং তাদের বেশিরভাগই ভারতের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার। আকর্ষক বিষয় হল, সাংহাই কো–অপারেশন অর্গানাইজেশনের (ভারত বাদে) সমস্ত সদস্য দেশ বিভিন্ন মাত্রায় আইএফ গ্রহণ করেছে। রাশিয়ান ফেডারেশন সক্রিয়ভাবে আইএফ–এর অর্থায়ন লক্ষ্য পূরণের কথা চিন্তা করছে, বিশেষ করে মুসলিম জনসংখ্যা অধ্যুষিত অঞ্চলে।

ইসলামিক অর্থ (ইসলামিক ফাইনান্স বা আইএফ) আগামী পাঁচ বছরে ৭০০ বিলিয়ন (১৪ শতাংশ) অবদানের মাধ্যমে উন্নয়নমূলক কর্মসূচি ফাস্ট–ট্র্যাক করার জন্য একটি সম্ভাব্য অগ্রদূতের ভূমিকা পালন করতে পারে। একত্রে, আইএফ নিয়ন্ত্রণাধীন অ্যাসেট আন্ডার ম্যানেজমেন্ট (এইউএম) এখনকার ৩.৯৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ২০২৬ সালের মধ্যে ৫.৯ ট্রিলিয়ন ছুঁতে পারে বলে অনুমান করা হয়েছে৷ 

ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির (ইউএই) মধ্যে কৌশলগত সম্পর্কের আলোকে ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সিইপিএ)–র সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ইতিমধ্যেই জুন ২০২৩–এ ৫০.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে, এবং আইএফ বাণিজ্যিক অর্থায়নের ক্ষেত্রে একটি বিকল্প আর্থিক বাহন সরবরাহ করে। শরিয়া চুক্তির উপর আবদ্ধ আইএফ–এর সঙ্গে যুক্ত সম্পদ হল সংযুক্ত আরব আমিরশাহির আর্থিক ব্যবস্থার ৩০ শতাংশ, এবং যে সব বাজারে প্রবেশ ঘটেনি তার অন্যতম বৃহত্তম হিসাবে ভারত বাণিজ্য সুযোগ বাড়ানোর ক্ষেত্রে প্রসারণযোগ্য সুবিধাগুলির সঙ্গে এই শিক্ষাগুলিকে সম্ভাব্যভাবে ব্যবহার করতে পারে।


একটি সম্পদ–অর্থনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে, মুরাবাহা বা খরচ–ও–লাভ চুক্তিটি ইসলামি ব্যাঙ্কিং–এ ৮০ শতাংশ রাজস্ব আনয়নকারী একটি প্রধান চুক্তি হয়ে উঠেছে। ব্যাঙ্ক মূলত বিক্রেতা ও ক্রেতার মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করে, এবং ইজারা–গ্রহীতাকে (‌লেসি)‌ সম্পদ ইজারা (‌লিজ)‌ দেওয়ার বিনিময়ে মূল্য ও লাভ উভয়কে অন্তর্ভুক্ত করে ধারাবাহিকভাবে পেমেন্ট নেয়। ইজারাদাতা হিসাবে ব্যাঙ্ক সমস্ত পেমেন্ট পাওয়ার পরে ইজারাদাতার (ক্রেতা) কাছে আইনি মালিকানা স্থানান্তর করে। নীতিগতভাবে, সম্পদের মালিক হিসাবে অর্থপ্রদান সম্পূর্ণ না–হওয়া পর্যন্ত সম্পদের আইনগত অভিভাবক হিসাবে ব্যাঙ্কটি সম্ভাব্য খেলাপি অপরাধ থেকে তুলনামূলকভাবে ভালভাবে সুরক্ষিত থাকে। এর বিপরীতে প্রচলিত ব্যাঙ্কগুলি সমান্তরাল (‌কোল্যাটারাল)‌ সম্পদ রাখলেও খেলাপের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ব্যবস্থা এবং আইনি খাতে অর্থ ব্যয় করার পরে একটি শেষ বিকল্প হিসাবে তার ব্যবহার করে থাকে। একটি ঝুঁকি–প্রশমনের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, আইএফ–ভিত্তিক খরচ–ও–লাভ মডেলের ভারতীয় আর্থিক ক্ষেত্রে একটি প্রতিশ্রুতিসম্পন্ন ভবিষ্যৎ  আছে, কারণ প্রচলিত ব্যাঙ্কগুলি তাদের ব্যালান্স শিট প্রসারিত করার ক্ষেত্রে এই ভেবে আরও বেশি সতর্ক হয়ে যায় পাছে আরও ঋণদান লাভের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়৷

ব্যাপকভাবে প্রচলিত ধারণার বিপরীতে, আইএফ–কে কোনও একচেটিয়া ধর্মীয় আধার দিতে হবে না। নৈতিক অর্থ ও টেকসই অর্থ হল আইএফ–এর সাধারণ সংক্ষিপ্ত রূপ, কারণ ভিত্তিগত ধারণাগুলি একই রকম। যেহেতু বিশ্ব ইউএই–তে কপ২৮ আয়োজন করেছিল, তাই প্রাসঙ্গিক কথা হল এমনকি জলবায়ু অর্থায়নও আইএফ–এর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। দুবাইয়ে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির ঐতিহাসিক কপ২৮ আলোচনাতেও আইএফ–এর কিছু বড় নাম শোনা গিয়েছিল, যার মধ্যে ছিল সৌদি আরবে অবস্থিত ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (আইডিবি), যেটি জলবায়ু ঝুঁকি প্রশমনে আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ঋণদাতাদের আর্থ–সামাজিক অবস্থার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণভাবে চুক্তির নকশা তৈরি করার মাধ্যমে আইএফ অর্থায়নের ব্যবধান পূরণের জন্য আদর্শভাবে উপযুক্ত। ইসলামিক–সাসটেনেবল–ক্লাইমেট (আইএসসি) অর্থায়ন ত্রয়ীতে সরাসরি ঋণ দেওয়ার পরিবর্তে দায়িত্বশীল বিনিয়োগের মাধ্যমে আয় তৈরির ধারণাটি (প্রচলিত ব্যাঙ্কগুলির মতো) মূল স্থাপনা হিসাবে রয়ে গেছে। সুদমুক্ত এবং অত্যধিক ঝুঁকি নেওয়ার নিষেধাজ্ঞা আইএফ–এর প্রধান বৈশিষ্ট্য, এবং প্রথমটি যেখানে ইকুইটি–ফাইনান্সের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ, পরবর্তীটি ডেরিভেটিভ গোত্রের উপকরণগুলিকে এড়িয়ে চলে, কারণ সেগুলিকে অর্থনীতিতে মূল্য যোগ করার জন্য খুব ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করা হয়। ২০০৮ সালের গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইসিস (জিএফসি)–এর পরে গবেষণায় দেখা গেছে যে ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি আইএফ গ্রহণ করছে, তারা তুলনামূলকভাবে সংক্রমণ থেকে আংশিকভাবে সুরক্ষিত ছিল, কারণ এই প্রতিষ্ঠানগুলির বেশিরভাগেরই ব্যালান্স শিটে প্রচলিত (সুদ বহনকারী) ও বিনিয়োগ ব্যাঙ্কের মতো বন্ধকী–সমর্থিত সিকিউরিটিগুলি একটি বড় বোঝা হয় ওঠেনি।

ব্যাপকভাবে প্রচলিত ধারণার বিপরীতে, আইএফ–কে কোনও একচেটিয়া ধর্মীয় আধার দিতে হবে না। নৈতিক অর্থ ও টেকসই অর্থ হল আইএফ–এর সাধারণ সংক্ষিপ্ত রূপ, কারণ ভিত্তিগত ধারণাগুলি একই রকম। 



আইএফ আরও ভালভাবে বোঝার জন্য, একটি ব্যালান্স শিট থেকে এর কাঠামো দেখা কাজের হবে। নীতিগতভাবে, আইএফ প্রতিষ্ঠানগুলি সাধারণত অগ্রিমের পরিবর্তে সম্পদটি নিজের কাছে রাখে, যা আদর্শভাবে ইজারা–সদৃশ কাঠামোর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। এখানে ইজারাদারের (আইএফ ব্যাঙ্ক) ইজারা প্রদানের পর নিয়মিতভাবে লিজ পেমেন্টের বিনিময়ে মেয়াদ শেষে যিনি ইজারা নিয়েছেন তাঁর কাছে বাই ব্যাক করার বিকল্প থাকে। দায়ের অধিকাংশটাই হল ইক্যুইটি–সদৃশ উপকরণ, আমানত (অনন্য বৈশিষ্ট্য সহ), এবং কনভার্টেবলস, যা ‘‌সুকুক’‌ বা ইসলামিক বন্ড নামে পরিচিত। আইএফ–এর একটি প্রধান ভিত হল প্রতিটি বাণিজ্যিক লেনদেনকে এমন একটি সম্পদে কোন্দ্রীভূত করা যা আয় উৎপাদন করতে সক্ষম। এর ফলে ফাটকা বাণিজ্যে নিয়োজিত হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। প্রতিষ্ঠান ও ভোক্তার মধ্যে ঝুঁকি ছড়িয়ে দেওয়া কাঠামোর মধ্যে অনুবিদ্ধ, যেখানে একটি ঐতিহ্যগত ঋণের ঝুঁকি ঋণগ্রহীতাদের দিকে প্রবলভাবে ঝুঁকে থাকে। কাজেই সম্পদের দক্ষ ও কার্যকর ব্যবহারের কারণে আইএফ প্রতিষ্ঠানগুলিতে অনাদায়ী সম্পদের নিম্ন স্তর এবং উচ্চ মুনাফা দেখা যায়।

 

ভারত তার উন্নয়নমূলক আর্থিক চাহিদা মেটাতে ‌আইএফ গ্রহণ করার বিপুল সম্ভাবনা রাখে। আইএফ অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ উদ্দেশ্যগুলিকে কল্পনা করে৷ ক্ষুদ্র ঋণ শহুরে অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারের সঙ্গেসঙ্গে আইএফ দেশের অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল অংশের সেবা করার উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা রাখে, যাঁরা আনুষ্ঠানিক আর্থিক ব্যবস্থার সম্প্রসারণ থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য আদর্শ জায়গায় রয়েছেন। ভারত বিশ্বের অন্যতম সক্রিয় স্টার্ট–আপ হাব হিসাবে উঠে আসার ফলে স্টার্ট–আপ ব্যবসার অদ্ভুত উদীয়মান ঝুঁকি মোকাবিলা করার জন্য দক্ষ মূলধনের প্রয়োজনও সমভাবে বাড়ছে। ‘‌ফোর্স মাজ্যয়’‌ হিসাবে ইক্যুইটি অংশগ্রহণের পাশাপাশি সমৃদ্ধিশীল উদ্যোক্তা বাস্তুতন্ত্র আইএফ থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে উপকৃত হতে পারে, এবং তা সম্ভাব্য সীমাবদ্ধতা আরোপকারী উদ্যোক্তা মূলধনের মতো কঠোর রিটার্ন ম্যান্ডেট আরোপ না করেই। জি২০–র সফল সভাপতিত্বের পর, ভারত তার পূর্বসূরি ইন্দোনেশিয়ার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে, যে দেশটি তার অর্থনীতির দ্রুতগতিতে বৃদ্ধির পথ অনুসরণ করছে একটি ক্রমবর্ধমান আর্থিক ভূচিত্রের ব্যবহার করে, যেখানে মূলধন ও উপভোগের প্রয়োজন মেটাতে আইএফ–এর কৌশলগত ভূমিকা আছে। ইন্দোনেশিয়ার ইক্যুইটি মডেল–ভিত্তিক মাইক্রো–ফাইনান্সের মাধ্যমে আইএফ–কে গ্রহণ নিয়োগযোগ্য দক্ষতা বিকাশের জন্য স্বেচ্ছাসেবী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্থায়নের সুযোগ প্রদান এবং টেকসই আয় তৈরি করার জন্য অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল জনগোষ্ঠীকে ক্ষমতায়নের একটি ভাল উদাহরণ প্রদান করে। ভারতের ক্ষুদ্রঋণ ক্ষেত্রগুলি ঐতিহ্যগতভাবে ‘‌শহুরে দরিদ্র’‌র উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এবং সেগুলির উপস্থিতি বেশি তুলনামূলকভাবে সমৃদ্ধ পশ্চিম এবং দক্ষিণ ভারতে। এই পরিস্থিতিটি বিশেষ করে পূর্বাঞ্চলে আইএফ–ভিত্তিক এমএফআই–গুলির জন্য অব্যবহৃত সম্ভাবনা অন্বেষণের সুযোগ দেয়। যেহেতু ভারত আর্থিক অন্তর্ভুক্তি অর্জন করতে চায়, তাই আইএফ–এমএফআই–গুলির মাধ্যমে পুঁজি এনে তা দিয়ে বিশাল স্বয়ংসম্পূর্ণ সামাজিক উদ্যোগ গড়ে তুলে জনসংখ্যার একটি বৃহত্তর অংশের কাছে পৌঁছনো তার জন্য অনিবার্য৷ মালয়েশিয়াও সফলভাবে আইএফ–কে নিযুক্ত করেছে তার সেই অর্থনৈতিক লক্ষ্যগুলি অর্জনের জন্য যেগুলিকে তার আর্থিক বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্যগুলির মধ্যে গণ্য করা হয়েছে। ইসলামিক ক্যাপিটাল মার্কেটস (আইসিএম)–এর আবাসস্থল হিসাবে দেশটি অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্থায়নের প্রয়োজন মেটাতে আইএফ প্রতিষ্ঠানগুলির উন্নয়নের নিরীক্ষণ, তত্ত্বাবধান ও নেতৃত্বদানের জন্য একটি স্বতন্ত্র কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক কাঠামো গঠন করেছে।

 

ভারত তার উন্নয়নমূলক আর্থিক চাহিদা মেটাতে ‌আইএফ গ্রহণ করার বিপুল সম্ভাবনা রাখে। আইএফ অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ উদ্দেশ্যগুলিকে কল্পনা করে৷

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই)–র সরাসরি অধীনে বিশেষজ্ঞ আইএফ প্রতিষ্ঠানগুলিকে শাখা স্থাপনের অনুমতি দিয়ে বিদেশি ব্যাঙ্কগুলির পরিধি বাড়ানোর মাধ্যমে ভারতের আরও এফডিআই সংগ্রহ করার সুযোগ রয়েছে৷ বিদ্যমান কাঠামোতে, আরবিআই–কে আইএফ ব্যাঙ্কগুলিকে কার্যসঞ্চালনের অনুমতি দেওয়ার জন্য তার কাঠামো প্রসারিত করতে হবে, যা প্রাথমিকভাবে এসএফবি–র কাঠামো অনুকরণ করবে, যদিও আর্থিক চুক্তির অন্তর্নিহিত ব্যবস্থা (যেমন সুদ-মুক্ত) অপরিবর্তিত থাকবে। পুঁজিবাজার নিয়ামক হিসাবে সেবি–ও দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ ও বৃদ্ধিকে সমর্থন করার জন্য কাঠামোটি এমনভাবে  প্রসারিত করতে পারে যাতে আইএফআই–এর এফআইআই–গুলি তাদের কাজকর্মকে এদেশে আবাসিক করে নিয়ে ভারতে বিনিয়োগ করতে পারে । প্রাইভেট ইক্যুইটি, মিউচুয়াল ফান্ড ও আর্থিক পরিষেবা–সহ এই জায়গায় আইএফ–এর সুযোগ বিশাল। নেতৃস্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রের ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রের আর্থিক চাহিদাগুলি পূরণ করার সুযোগের সম্ভাবনাও খুলে দিতে পারে। ভোক্তা ঋণ, বাণিজ্যিক অর্থ ও পরিকাঠামো হল কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র যা এই ধরনের অংশীদারি থেকে উপকৃত হতে পারে, কারণ এই ক্ষেত্রগুলির প্রতিটি সরাসরি জিডিপি–তে অবদান রাখে। তার উপর, এনপিএ–র  প্রেক্ষিতে অত্যধিক ঝুঁকি–প্রতিরোধের বিষয়টি মাথায় রেখে বলা যায়, ভারত তার আকার ও আয়তনের সম্ভাব্যতা উপলব্ধি করার পথে পুঁজির অভাব নিয়ে এগোতে পারে না। সুদমুক্ত ঋণের উপর জোর দেয় বলে একে ভারতের কর্পোরেট ক্ষেত্র ঝুঁকি কমানোর ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত পুঁজির সম্পূর্ণ নতুন পথ হিসাবে স্বাগত জানাবে। একটি নিয়ামক স্যান্ডবক্স ব্যবস্থার দৃঢ়তা মূল্যায়ন করার পাশাপাশি ভারতীয় আর্থিক ক্ষেত্রের নির্দিষ্ট চাহিদা মেটাতে আইএফ–এর সঙ্গে অভিযোজনের জন্য প্রণোদনা প্রদান করতে পারে।

বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও জিসিসি দেশগুলির সঙ্গে ভারতের গভীর ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্কের কারণে এই দেশগুলিতে কর্মরত বিশেষজ্ঞ আইএফ সংস্থাগুলির থেকে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে, এবং এদের ইতিমধ্যেই এই দেশগুলিতে ছড়িয়ে থাকা সমৃদ্ধ প্রবাসী ভারতীয় ডায়াস্পোরাকে পরিবেশন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূ–অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে এনআরআই বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার একটি প্রশস্ত বিকল্প পথও বটে। এমন একটি সময়ে যখন ভারত শীঘ্রই বিশ্বের শীর্ষ তিনটি অর্থনীতির একটি হয়ে ওঠার আশা নিয়ে এগিয়ে দেখছে, আইএফ অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে একটি কৌশলগত উদ্দীপনা হিসাবে কাজ করতে পারে।



উল্লাস রাও দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাশাহি–ভিত্তিক একজন শীর্ষস্থানীয় অ্যাকাডেমিক ও আর্থিক বিষয় সংক্রান্ত অর্থনীতিবিদ যিনি ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিভিন্ন মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Author

Ullas Rao

Ullas Rao

Ullas Rao is a leading academic and financial economist based in Dubai, UAE with stints in prestigious instituions in India and UAE. He's a leading ...

Read More +