Published on Sep 30, 2023 Updated 0 Hours ago

সংবেদনশীল মুদ্রানীতি এবং দায়িত্বশীল রাজস্ব নীতি উভয়ের জন্য মুদ্রাস্ফীতি ৪ শতাংশের নিচে রাখার চেষ্টা করা একটি উপযুক্ত মেট্রিক

মুদ্রাস্ফীতি দমনের জন্য চাই একটি সহায়ক রাজস্ব নীতি

গত বছর ব্যাপী নীতি সুদের হারে প্রতিসম ঊর্ধ্বমুখী সমন্বয়ের মাধ্যমে উন্নত অর্থনৈতিক সাধনীগুলির সাহায্যে গৃহীত একটি আর্থিক নীতি যখন এর পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশগুলির মতো স্থবির বৃদ্ধি পুনরুজ্জীবিত করার মরিয়া চেষ্টা করে, তখন এই দুইয়ের দ্বন্দ্ব সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্পষ্টতর হয়ে উঠবেই।

ভারতে যে বৃদ্ধি ক্রমশই রুদ্ধ হচ্ছে, তা ২০২৩ সালের ৬ এপ্রিল প্রকাশিত আরবিআই-এর আর্থিক বিবৃতি থেকেই স্পষ্ট। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে সরকারের ফার্স্ট অ্যাডভান্স এস্টিমেট বা প্রথম অগ্রিম অনুমান ছিল ২০২২-২৩ সালে ৭ শতাংশ বৃদ্ধি। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের জন্য আরবিআই-এর পূর্বাভাস হল ৬.৫ শতাংশ এবং এই অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিক বা কিউ৪-এ ৫.৮ শতাংশে নেমে আসার পতনমুখী প্রবণতা।

বৃদ্ধি এবং বাণিজ্যিক সমস্যা

নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে, বেশির ভাগ অর্থনীতির তুলনায় ভারত তুলনামূলক ভাবে ভাল অবস্থানে রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ডের (আইএমএফ) অনুমান অনুযায়ী ‘…আগামী পাঁচ বছরে বিশ্বব্যাপী বৃদ্ধি প্রায় ৩% থাকবে… ১৯৯০ সাল থেকে আমাদের সর্বনিম্ন মধ্যমেয়াদি বৃদ্ধির পূর্বাভাস এবং গত দুই দশকের গড় ৩.৮%-এর চেয়ে যা অনেকটাই কম।’ নিম্ন আন্তর্জাতিক বৃদ্ধির ফল নিম্ন আন্তর্জাতিক

চাহিদা, যা রফতানি-চালিত বৃদ্ধির সুযোগকে বাধা দেয়। ভারত ২০২২-২৩ সালের মধ্যে ৪৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সম্ভাব্য ভিত্তি (চূড়ান্ত তথ্য উপলব্ধ হওয়ার পরে নিশ্চিতকরণ সাপেক্ষে) থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে সাত বছরে ২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের রফতানিমূলক অর্থনীতি (পণ্যে ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং পরিষেবাগুলিতে আরও ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার) হয়ে ওঠার আকাঙ্ক্ষা রাখে। প্রথম কয়েক বছর অনিশ্চিত রিটার্নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরবর্তী সাত বছরে এটি প্রতি বছর গড়ে ২৪ শতাংশ হারে বৃদ্ধির একটি প্রসারিত লক্ষ্যমাত্রা বলে মনে করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার দ্বারা পতন রোধ করে স্থিতিশীলতার জন্য বৃহৎ কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ঘাটতি অব্যাহত রাখা উচিত, যার পরিমাণ ২০২৩ সালের ৩১ মার্চে ছিল ৫৭৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

ভীষণ সূক্ষ্ম সুদের পার্থক্যে ভারতে বিনিয়োগ থেকে অপ্রতুল ঝুঁকি-ভারযুক্ত রিটার্নের কারণে বিনিয়োগকারীদের নেতিবাচক মনোভাব প্রকট হতে পারে।

ক্রমবর্ধমান ইন্টারেস্ট ডিফারেন্সিয়াল গ্যাপকে গুরুত্ব দেওয়া

সমস্যা হল, যদি ভারত ফেডারেল রিজার্ভের সঙ্গে সমতামূলক ঊর্ধ্বমুখী সুদের হার সমন্বয় থেকে পৃথক হয় এবং ইন্টারেস্ট ডিফারেন্সিয়ালকে অনুমোদন দেয় — বর্তমানে ১.৬  শতাংশ (২০২২ সালের এপ্রিল মাসে ৩.৫ শতাংশের ফারাকের চেয়েও কম) — তা হলে সেই পরিমাণ আরও কমে ১ শতাংশ পয়েন্ট বা তার কম হবে এবং বিনিয়োগকারীর মনোভাবের উপর এর প্রভাব অজানা। ফেডারেল রিজার্ভ দ্বারা ২০১৯ সালের অগস্ট মাস থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত গৃহীত চিপ মানি স্টান্স বা নিম্ন আর্থিক অবস্থানের আগে ফেড রেট এবং রেপো হারের মধ্যে সুদের হারের পার্থক্য ৩ থেকে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশের মধ্যে ছিল। ভীষণ সূক্ষ্ম সুদের পার্থক্যে ভারতে বিনিয়োগ থেকে অপ্রতুল ঝুঁকি-ভারযুক্ত রিটার্নের কারণে বিনিয়োগকারীদের নেতিবাচক মনোভাব প্রকট হতে পারে।

 

দুর্বল রাজস্ব মেট্রিক্সের জন্য পলিসি সুদের হারে নিহিত উচ্চ ঝুঁকির প্রিমিয়াম প্রয়োজন

বৃদ্ধি শক্তিশালী হলেও এটি বিশেষ অসুবিধা সৃষ্টি করবে না। কিন্তু সেই সম্ভাবনাও যথেষ্ট অনিশ্চিত। আরবিআই ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের জন্য মূল্যস্ফীতির মাত্রা ৫.২ শতাংশ বলে অনুমান করেছে, যা খানিক স্বস্তি প্রদান করে। উন্নততর ফিসকাল মেট্রিক্স আরও সাহায্য করতে পারে – ৬ শতাংশের একটি যুগ্ম রাজস্ব ঘাটতি (রাজ্য ও কেন্দ্রের), একটি স্থিতিশীল রাজস্ব উদ্বৃত্ত এবং ২ থেকে ৪ শতাংশের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি বজায় রাখতে। এফডি হ্রাসের পরিকল্পনাটি ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের মধ্যে ৪.৫ শতাংশের নিম্ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো কাঠামোগত সুবিধা ভারতের নেই

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং পূর্ণ কর্মসংস্থানের চেয়েও ভাল অবস্থায় আছে। অনেক উন্নয়নশীল অর্থনীতির মতোই ভারত ভবিষ্যতে অনিশ্চিত বৃদ্ধির সম্মুখীন। পলিসি রেট বা নীতিগত হার বাড়িয়ে মুদ্রাস্ফীতি কমানোর চেষ্টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সর্বদা তাল মিলিয়ে চলা অসম্ভব হয়ে উঠতে চলেছে, যদি ফেডারেল রিজার্ভের হার বৃদ্ধি অন্তহীন হতে শুরু করে এবং তা সম্ভবত ২০২৩-২৪ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান জেরোম পাওয়েল ধারাবাহিক ভাবে বলে এসেছেন যে, তাঁরা ভবিষ্যৎদ্রষ্টা নন এবং কখন হার বৃদ্ধি শেষ হবে, সে বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্ভব নয়। বরং তাঁদের কজ হল মুদ্রাস্ফীতিকে ২ শতাংশ স্তরে নামিয়ে আনা পর্যন্ত মুদ্রানীতি ব্যবহার করা। এবং অবশ্যই ২০২২ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০২৩ সাল… এই এক বছরের মধ্যে ৪.৬৫ শতাংশ হার বৃদ্ধি হওয়া সত্ত্বেও অনুকূল বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান পূর্ণ অবস্থায় থাকার দরুন তাদের পক্ষে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা সহজ। তা সত্ত্বেও মূল্যস্ফীতি-পরবর্তী একটি ‘দ্বিমুখী জয়’সম্পন্ন ‘সফট ল্যান্ডিং’-এর সম্ভাব্যতা সম্পর্কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিরোধ বাড়ছে। উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ক্ষতি হল উচ্চ সুদের হারের বর্ধিত সময়ের স্বাভাবিক পরিণতি…  এ হেন বিশ্বাসও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পলিসি রেট বা নীতিগত হার বাড়িয়ে মুদ্রাস্ফীতি কমানোর চেষ্টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সর্বদা তাল মিলিয়ে চলা অসম্ভব হয়ে উঠতে চলেছে, যদি ফেডারেল রিজার্ভের হার বৃদ্ধি অন্তহীন হতে শুরু করে এবং তা সম্ভবত ২০২৩-২৪ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

দুঃখের বিষয়, মুদ্রাস্ফীতি ৪ শতাংশের নীচে নামার আগে পর্যন্ত ভারতে আর্থিক নীতি স্থির ভাবে প্রয়োগ করার কোনও অর্থনৈতিক পরিসর নেই। ভাল বা খারাপ ফলাফলের দরুন মরসুমি ফারাকের পর ব্যবস্থার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা অন্তর্নিহিত ভোক্তা মূল্যের ভাল সূচক স্বরূপ মূল মুদ্রাস্ফীতির হার বর্তমানে ৬ শতাংশের বেশি রয়েছে।

আরবিআই-এর উপর নির্ভরতা

দুর্বল ট্রেজারি অপারেশন বা রাজস্ব কার্যকলাপ এবং ইউবিএস-এর সঙ্গে একটি বহুস্তরীয় সুইস ব্যাঙ্ক ক্রেডিট সুইস মিশে যাওয়ার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মাঝারি আকারের ব্যাঙ্কগুলির ব্যর্থতা এমন এক অস্বস্তিকর সঙ্কেত যা কেবল মাত্র ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা জুড়ে গভীর, পেশাদার দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারাই উন্মোচন করা সম্ভব এবং বোঝা সম্ভব যে কীসের মাধ্যমে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় ঝুঁকির প্রবেশ ঘটে৷ ভারতীয় ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা কাগজে-কলমে অতি নিয়ন্ত্রিত হলেও দূরদৃষ্টি বিপদ সঙ্কেত তীব্র আকার ধারণ করার আগেই শনাক্ত করার জন্য এত গভীর ও সূক্ষ্ম কি না, তা সময়ই বলবে। নির্বাচনের দৌড়ে ‘দ্রুত জয়’, যা অর্থকে কুক্ষিগত না রেখে সরাসরি মতদাতাদের হাতে অর্থ পৌঁছে দেয় এবং নতুন চাকরির ইঙ্গিতবাহী প্রকল্পগুলিকে সচল রাখে, সেগুলিকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

পরোক্ষ কর কমিয়ে রাজস্ব থেকে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাসের দিকে নজর দেওয়া

অতিমারি জুড়ে অর্থ মন্ত্রক কর রাজস্ব হ্রাস না করার দিকে মনোনিবেশ করেছিল। সামাজিক সুরক্ষার জন্য ব্যয় বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান ঋণ যাতে অস্থিতিশীল না হয়ে ওঠে, তা সুনিশ্চিত করার জন্য এমনটা অপরিহার্য ছিল। এই সমস্যাসঙ্কুল সময়ে অর্থ মন্ত্রক পরিস্থিতিকে খুব ভাল ভাবেই নিয়ন্ত্রণ করেছিল। বর্তমানে অর্থনীতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরোক্ষ কর ব্যবস্থায় উপযুক্ত হ্রাস (আমদানি শুল্ক, পেট্রোলিয়াম পণ্যের উপর আবগারি কর এবং উৎপাদিত পণ্যের উপর জিএসটি) স্থায়ী ভাবে পণ্যের মূল্য হ্রাসের নিরিখে বিবেচনা করা উচিত।

কর রাজস্বের উন্নততর ব্যবহার

কেন্দ্রীয় সরকার পেট্রোলিয়াম পণ্যে কর আরোপ  করে প্রায় ৪.৩ ট্রিলিয়ন টাকা (২০২১-২২) বা জিডিপির ১.৮ শতাংশ উপার্জন করেছে৷ কিন্তু জ্বালানিভিত্তিক মন্ত্রকগুলিকে (পেট্রোলিয়াম, বিদ্যুৎ এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি) বরাদ্দ করা হয়েছিল মাত্র ০.৩৫ ট্রিলিয়ন টাকা বা তাদের থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের মাত্র ৮ শতাংশ। ভারতের কয়লার প্রাথমিক উৎপাদক কোল ইন্ডিয়া ২০২১-২২ সালে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলিকে আবগারি কর এবং অন্যান্য শুল্কে ০.৫৮ ট্রিলিয়ন টাকা প্রদান করেছে। ন্যায্য রূপান্তরের পুঙ্খানুপুঙ্খ পরিকল্পনা নির্ধারণ না করা পর্যন্ত শক্তির রূপান্তর সংক্রান্ত সিংহভাগ কয়লার উপর বর্তালেও – যা মাত্র এক দশক দূরে – তার জন্য মন্ত্রকের বরাদ্দ ছিল মাত্র ০.৫ বিলিয়ন টাকা।

আরবিআই তার মুদ্রাস্ফীতি ব্যবস্থাপনাকে উচ্চ সুদের হারের মাধ্যমে সক্রিয় ভাবে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস করা থেকে পরিস্থিতির উপর নজর রাখার অবস্থানে নিয়ে গেছে। তাদের আশা, মুদ্রাস্ফীতির বাঘ নিজে থেকেই বন্দুকের নাগালে হাজির হবে।

জীবাশ্ম জ্বালানির উপর কর এবং শুল্ক একটি প্রক্সি কার্বন কর হিসাবে বিবেচিত হয়। কিন্তু কার্বন করের বিপরীতে – যা শুধু মাত্র নির্দিষ্ট ব্যবহারের জন্য পৃথগীকৃত – পেট্রোলিয়াম করগুলি শক্তি ব্যবস্থাগুলিকে ডিকার্বনাইজ করার জন্য বা পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তিকে তার পরিবর্তনশীল সরবরাহের ধরন সত্ত্বেও সাশ্রয়ী করে তোলার জন্য ব্যবহার করা হয় না। একই ভাবে প্রতিক্রিয়াশীল জ্বালানির উন্নত ব্যবস্থাপনা (পৌনঃপুনিকতা নিয়ন্ত্রণ করতে) এবং ‘গ্রিড অনুসরণ’ সমতামূলক সরঞ্জামের বিপরীতে ‘গ্রিড গঠন’ নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি গ্রিড বর্ধিতকরণ – যা স্বয়ংক্রিয় ভাবে সরবরাহ এবং চাহিদার ব্যবধানের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করে – ক্ষেত্রে এই ধরনের প্রথম সারির উদ্যোগ গ্রহণকারী বিনিয়োগকারীদের জন্য ক্ষতিপূরণ ভর্তুকি দিয়ে আরও নানাবিধ গবেষণা এবং বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে। এটি সেই বাস্তবিক  বিনিয়োগ, যা ২০৩৫ সালের কাছাকাছি এবং তার পরেও হাইড্রোজেনভিত্তিক জ্বালানি বাণিজ্যিক ভাবে উপলব্ধ না হওয়া পর্যন্ত একটি মসৃণ জ্বালানি রূপান্তরকে সুনিশ্চিত করতে পারে।

একের চেয়ে দুই ভাল

সাম্প্রতিক সময়ে আরবিআই এবং অর্থ মন্ত্রক ঐক্যবদ্ধ ভাবে ভাল কাজ করেছে। এই ঐক্যবদ্ধ কাজ অপরিহার্য, কারণ অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং আর্থিক স্থিরতা পরস্পর সম্পৃক্ত। বর্তমানে আরবিআই উচ্চতর সুদের হারের মাধ্যমে সক্রিয় ভাবে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের অবস্থান থেকে সরে এসে অপেক্ষা করা এবং পরিস্থিতির উপর নজর রাখার পন্থা নিয়েছে। মুদ্রাস্ফীতিকে যদি বাঘের সঙ্গে তুলনা করা হয়, তাহলে এ যেন মাচানে বসে দেখা কখন বাঘ নিজের থেকে বন্দুকের নাগালে আবির্ভূত হবে। আসলে আরবিআই-এর দরকার মুদ্রাস্ফীতির বাঘকে এমনভাবে কোণঠাসা করা যাতে সে আর পালাতে না পারে।

মধ্যবর্তী পণ্য ও পরিষেবা এবং ভোগ্যপণ্যের উপর উচ্চ হারে কর হ্রাস নিহিত উচ্চ মূল্য হ্রাস করার জন্য একটি ভাল বিকল্প। এর ফলস্বরূপ সরকারি মূলধনী ব্যয়ের জন্য সম্পদের সীমাবদ্ধতাও একটি আশীর্বাদ হয়ে উঠতে পারে। সরকারি বিনিয়োগ হল একটি ব্যয়বহুল বৃদ্ধির বিকল্প, যার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব বিদ্যমান এবং যা ঋণ পরিশোধ ও সুদ পরিশোধের বিষয়গুলিকে ভবিষ্যতের রাজস্বের উপর চাপিয়ে দেয়।

কার্যকরী রাজস্ব ঘাটতিকে নিকট মেয়াদে শূন্যে নামিয়ে আনলে তা সামাজিক ব্যয়ের গুরুত্বপূর্ণ ফ্ল্যাগশিপকে প্রভাবিত না করেই বাজেট বিন্যাসে এক বৃহৎ স্ফীত অপ্রয়োজনীয় অংশকে সরিয়ে দিতে পারবে।

বর্তমানে সুদের অর্থপ্রদানগুলি ইতিমধ্যেই অন্যান্য অগ্রাধিকারের তুলনায় বেশি, যা রাজস্ব ব্যয়ের ৩১ শতাংশ। উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি — এমন এক মধ্যমেয়াদি উদ্যোগ যা ধারাবাহিক ভাবে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন এবং সমস্ত ক্ষেত্র ও উদ্যোগকে তার আওতাভুক্ত করার জন্য সংস্কারের দরকার  — অপর একটি মিসিং লিঙ্ক। ২০২৩-২৪-এর কার্যকরী রাজস্ব ঘাটতি (রাজস্ব ঘাটতি থেকে রাজ্য সরকারগুলিকে মূলধনী ব্যয়ের জন্য দেওয়া অনুদান-সহায়তা বাদ দিয়ে) ২০২১-২২-এর ৩.৩ শতাংশ থেকে ১.৭ শতাংশ কম৷ কার্যকরী রাজস্ব ঘাটতিকে নিকট মেয়াদে শূন্যে নামিয়ে আনলে তা সামাজিক ব্যয়ের গুরুত্বপূর্ণ ফ্ল্যাগশিপকে প্রভাবিত না করেই বাজেট বিন্যাসে এক বৃহৎ স্ফীত অপ্রয়োজনীয় অংশকে সরিয়ে দিতে পারবে।

৪ শতাংশের নীচে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করার সংবেদনশীল মুদ্রানীতি এবং দায়িত্বশীল রাজস্ব নীতি উভয়ের জন্যই উপযুক্ত মেট্রিক। শুধু মাত্র আর্থিক নীতির উপর নির্ভর করলে, তা ২০২৪ সালের নির্বাচনে মূল্যবান ভোট হ্রাস করতে পারে, যদি আরবিআই উচ্চ নীতির সুদের হার ব্যবহার করে ফেডারেল রিজার্ভকে অনুকরণ করে। রাজস্ব নীতির জন্য কিছু কর রাজস্ব উৎসর্গ করা, কর-বহির্ভূত রাজস্বের ক্ষতিপূরণের দিকে মনোনিবেশ করা এবং পরোক্ষ করের পরিমাণ কমানোর পাশাপাশি গ্রাহক এবং ব্যবসায়ীদের – বিশেষ করে ছোট, মাঝারি এবং ক্ষুদ্র খাতে – সাম্প্রতিক বছরগুলির শাস্তিমূলক কর থেকে বিরতি প্রদানের ক্ষেত্রে রাজস্ব নীতির জন্য দ্বিমুখী ইতিবাচক সমাধান হতে পারে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.