Published on Mar 08, 2025 Updated 0 Hours ago

প্যারিস চুক্তি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়া হল জলবায়ু অর্থায়ন পুনর্বিন্যাস এবং সরকারি, বেসরকারি ও জনহিতকর পুঁজি ব্যবহার করে একটি ন্যায়সঙ্গত ও স্থিতিশীল বাস্তুতন্ত্র তৈরি করার একটি সুযোগ।

জলবায়ু অর্থায়ন পুনর্বিবেচনা: প্যারিস চুক্তি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্থান কি নতুন দরজা খুলে দিতে পারে?

 

প্যারিস চুক্তি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক প্রত্যাহার বৈশ্বিক জলবায়ু কর্মে একটি উল্লেখযোগ্য ব্যবধান সৃষ্টি করেছে। মাত্র কয়েক মাস আগে কপ২৯-এ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ জলবায়ু অর্থায়ন লক্ষ্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, যা জলবায়ু সঙ্কট মোকাবিলায় দেশটির দায়বদ্ধতাকেই দর্শায়। এই আকস্মিক পরিবর্তন শুধু জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টাকেই দুর্বল করে না, বরং বৈশ্বিক জলবায়ু অর্থায়নের স্থিতিশীলতা নিয়েও সমালোচনামূলক প্রশ্ন উত্থাপন করে।

প্যারিস চুক্তি কমন বাট ডিফারেনসিয়েটেড রেসপনসিবিলিটিস(সিবিডিআর) নীতির মাধ্যমে এই ভারসাম্যহীনতার মোকাবিলা করতে চায় এবং বৃহত্তম দূষণকারী হিসাবে গ্লোবাল নর্থকে এই বোঝার একটি বৃহত্তর অংশের দায় নিতে অনুরোধ করে।

পরিবর্তনশীল জলবায়ু কর্মসূচিকে সক্ষম করার জন্য অর্থই প্রধান বিষয়, নির্গমন কমানোর জন্য পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি প্রকল্পের মাধ্যমে হোক বা অবকাঠামো এবং কৃষিতে স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধিকারী উদ্যোগ দিয়েই হোক। এটি গ্লোবাল  সাউথের সেই দেশগুলির জন্য বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ, যেগুলি জলবায়ু সঙ্কটের ধাক্কা বহন করলেও তা মোকাবিলার জন্য তাদের আর্থিক সঙ্গতির অভাব রয়েছে এই বৈষম্য প্রকট: উন্নয়নশীল দেশগুলি বৈশ্বিক নির্গমনে সবচেয়ে কম অবদান রাখলেও সবচেয়ে মারাত্মক পরিণতির সম্মুখীন হয়। প্যারিস চুক্তি কমন বাট ডিফারেনসিয়েটেড রেসপনসিবিলিটিস(সিবিডিআর) নীতির মাধ্যমে এই ভারসাম্যহীনতার মোকাবিলা করতে চায় এবং বৃহত্তম দূষণকারী হিসাবে গ্লোবাল নর্থকে এই বোঝার একটি বৃহত্তর অংশের দায় নিতে অনুরোধ করে। যাই হোক, আর্থিক প্রতিশ্রুতি পূরণে বারংবার ব্যর্থতা জলবায়ু অর্থায়নের ব্যবধানকে আরও প্রশস্ত করেছে, যার ফলে দুর্বল দেশগুলি ক্রমবর্ধমান জলবায়ু ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে।

চিত্র ১: বিশ্বব্যাপী জলবায়ু অর্থায়ন এবং ২০৫০ সালের মধ্যে আনুমানিক চাহিদা

 Rethinking Climate Finance Can The Us Exit From The Paris Agreement Open New Doors

সূত্র: ক্লাইমেট পলিসি ইনিশিয়েটিভ (সিপিআই), ২০২৪

তহবিলের ঘাটতি ছাড়াও জলবায়ু অর্থায়নের গুণমানও একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের বিষয়। ২০২৩ সালে পাবলিক ক্লাইমেট ফিন্যান্স বা জলবায়ু সংক্রান্ত সরকারি তহবিলের ৬৭ শতাংশ প্রশমন প্রচেষ্টার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল এবং শুধুমাত্র ৩৩ শতাংশ অভিযোজনের জন্য বরাদ্দ করা হয়। নির্গমন হ্রাস করা অত্যাবশ্যক হলেও নেট শূন্যে রূপান্তর জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবগুলির তুলনায় অনেক পিছিয়ে রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, যখন গায়ানার লক্ষ্য ২০৫০ সালের মধ্যে শূন্য নির্গমন, তখন তার রাজধানী জর্জটাউন ২০৩০ সালের মধ্যে ডুবে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই অভিযোজন খাতে বরাদ্দ নির্গমন প্রচেষ্টায় বরাদ্দের সঙ্গে সমান না হলেও অত্যন্ত জরুরি অবশ্যই যাই হোক, অভিযোজন প্রচেষ্টাকে প্রায়শই তহবিল আকর্ষণ করার জন্য যুঝতে হয়। কারণ প্রশমন প্রকল্পের তুলনায় অর্থনৈতিক লাভের পরিমাণ কম, যা গ্লোবাল সাউথের দুর্বলতার চক্রকে স্থায়ী করে। সর্বোপরি, জলবায়ু অর্থায়নে অনুদানের উপর ঋণের আধিপত্য ইতিমধ্যেই ঋণে জর্জরিত উন্নয়নশীল দেশগুলির ঘাড়ে আরও বোঝা চাপিয়েছে, যা জলবায়ু ন্যায়বিচারের নীতিকে দুর্বল করে তোলে

বিদ্যমান আর্থিক ভারসাম্যহীনতা বৈশ্বিক জলবায়ু শাসনে একটি গভীর পদ্ধতিগত ব্যর্থতাকেই দর্শায় এবং তা জলবায়ু অর্থায়নের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য পরিমাণগত ও গুণমানগত ক্ষেত্রে কৌশলগত পদ্ধতি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তাকে দর্শায়।

বিদ্যমান আর্থিক ভারসাম্যহীনতা বৈশ্বিক জলবায়ু শাসনে একটি গভীর পদ্ধতিগত ব্যর্থতাকেই দর্শায় এবং তা জলবায়ু অর্থায়নের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য পরিমাণগত ও গুণমানগত ক্ষেত্রে কৌশলগত পদ্ধতি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তাকে দর্শায়। যাই হোক, এ হেন ধাক্কার মধ্যে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু অর্থায়নের কাঠামোকে পুনরায় কল্পনা ও শক্তিশালী করার সুযোগ রয়েছে। জলবায়ু অর্থায়নের পদ্ধতিগত অদক্ষতা মোকাবিলায় মার্কিন প্রত্যাহারকে কি আসলে ঘুরে দাঁড়ানোর ডাকবলে মনে করা যেতে পারে? কী ভাবে উন্নয়নশীল অর্থনীতি - যা জলবায়ু পরিবর্তনের অসামঞ্জস্যপূর্ণ ক্ষতি বহন করে - স্থিতিস্থাপকতা গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সুরক্ষিত করতে পারে? আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, কী ভাবে বিশ্ব অতীতের ব্যর্থ প্রতিশ্রুতি অতিক্রম করে আরও অন্তর্ভুক্ত, স্থিতিশীল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারে?

প্রথমত, মার্কিন প্রত্যাহার ও সীমিত প্রাপ্যতা সত্ত্বেও সরকারি অর্থায়ন এখনও বিশ্বব্যাপী জলবায়ু অর্থায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসাবে রয়ে গিয়েছে। এটি নীতিগত গ্যারান্টি, ভর্তুকি ও রেয়াতি অর্থায়নের মাধ্যমে ব্যক্তিগত বিনিয়োগকে ঝুঁকিমুক্ত করার জন্য একটি অপরিহার্য অনুঘটক হিসাবে কাজ করে। গ্রিন বন্ড, সার্বভৌম স্থিতিশীল তহবি এবং মিশ্রিত অর্থ ব্যবস্থার মতো উদ্যোগগুলি সম্পদ সংগ্রহের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, ভারতের সভরিন গ্রিন বন্ড উদ্যোগ - যা ২০২৩ সালে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছে - প্রদর্শন করে যে, কী ভাবে জননীতি ব্যক্তিগত পুঁজিকে আকার দিতে পারে। তাই সরকারকে অবশ্যই একটি সক্ষম পরিবেশ তৈরিতে নিজেদের ভূমিকা বৃদ্ধি করতে হবে, যা জলবায়ু অর্থায়নের সুবিধার জন্য বিনিয়োগকে আকর্ষণ করে। জলবায়ু ন্যায়বিচারের প্রসঙ্গ ছাড়াও, উন্নত দেশগুলিরও জলবায়ু প্রভাব মোকাবিলায় একটি নিহিত আগ্রহ রয়েছে। ২০২৩ সালে গ্রিনফিল্ড বিনিয়োগ ২২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ৬০ শতাংশ মেগা প্রকল্পগুলি উন্নয়নশীল এশীয় অর্থনীতিতে কেন্দ্রীভূত হয়েছে। গ্লোবাল সাউথের মোট রফতানি মূল্য ২০২২ সালে ৫৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলে মূল ভূমিকা দ্বারা চালিত হয়েছে। যাই হোক, জলবায়ুজনিত বিঘ্নও রয়েছে। যেমন ২০২২ সালে পানামা খালে মারাত্মক খরা সমুদ্রপথে বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটায়, যার ফলে প্রায় ৫০০ থেকে ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত ক্ষতি হয়। এই ধরনের ব্যাঘাত বাড়ছে, বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খল জুড়ে প্রবল প্রভাব ফেলছে এবং মূল্যের অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে। তাই জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতায় বিনিয়োগ করা গ্লোবাল নর্থের জন্য শুধু একটি নৈতিক বাধ্যবাধ্যকতাই নয়, বরং একটি অর্থনৈতিক প্রয়োজনীয়তাও বটে।

মিশ্রিত আর্থিক সমাধানগুলির মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলা করার জন্য সরকার ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে অবশ্যই বেসরকারি ক্ষেত্রের সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করতে হবে, যা বিনিয়োগকে ঝুঁকিমুক্ত করতে ও আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

দ্বিতীয়ত, বেসরকারি অর্থায়নের পরিমাণের সুবিধা গ্রহণ করা জরুরি। ২০২৩ সালে বেসরকারি বিনিয়োগ মোট জলবায়ু অর্থায়নের ৪৯ শতাংশের জন্য দায়ী এবং এই পরিমাণ আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। ব্যবস্থাপনায় ২১০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার সম্পদের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, পেনশন তহবিল এবং বহুজাতিক কর্পোরেশনের জলবায়ু উদ্ভাবন ও বাজার সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দূষণহীন অবকাঠামো, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ও জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রে এই তহবিলগুলিকে সংহত করা গুরুত্বপূর্ণ। সংস্থাগুলি ক্রমবর্ধমান ভাবে নিষ্ক্রিয়তার আর্থিক ও সুনামগত ঝুঁকিগুলিকে স্বীকৃতি দিচ্ছে, যা স্থিতিশীল বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি করছে। এনভায়রনমেন্টাল, সোশ্যাল, অ্যান্ড গভর্নেন্স (ইএসজি) কাঠামোর উত্থান দূষণহীন অর্থায়নকে রেকর্ড মাত্রায় প্ররোচিত করেছে, যেখানে বিশ্বব্যাপী স্থিতিশীল বিনিয়োগের পরিমাণ ২০২৩ সালে ৩৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে যাই হোক, অনুভূত ঝুঁকি, নীতির অনিশ্চয়তা এবং ই-কন প্রকল্পের উন্নয়নে ব্যাঙ্কযোগ্য প্রকল্পের অভাবের মতো উল্লেখযোগ্য বাধা অব্যাহতই রয়েছে। মিশ্রিত আর্থিক সমাধানগুলির মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলা করার জন্য সরকার ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে অবশ্যই বেসরকারি ক্ষেত্রের সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করতে হবে, যা বিনিয়োগকে ঝুঁকিমুক্ত করতে ও আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। অগ্রগতি সত্ত্বেও বেসরকারি অর্থায়ন প্রশমনের দিকে প্রবল ভাবে ঝুঁকছে, যখন অভিযোজন মোট বেসরকারি জলবায়ু অর্থায়নের মাত্র ১.৬ শতাংশ পেয়ে থাকে সর্বাত্মক জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা সুনিশ্চিত করার জন্য এই ভারসাম্যহীনতার সংশোধন অত্যন্ত আবশ্যক। প্রকল্পের পাইপলাইনগুলিকে শক্তিশালী করা, নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থাকে উন্নত করা এবং ঝুঁকি ভাগ করে নেওয়ার প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ করা আসলে প্রশমন ও অভিযোজন প্রচেষ্টা উভয়ের জন্য বেসরকারি পুঁজি আনার ক্ষেত্রে মূল চাবিকাঠি হয়ে উঠবে।

চিত্র ২: বিশ্বব্যাপী জলবায়ু অভিযোজন প্রবাহ ও প্রয়োজন

 Rethinking Climate Finance Can The Us Exit From The Paris Agreement Open New Doors

সূত্র: সিপিআই, ২০২৪

পরিশেষে এ কথা বলা জরুরি, জনহিতৈষী জলবায়ু অর্থায়নের মাত্রার জন্য একটি সর্বাত্মক অব্যবহৃত সুযোগের প্রতিনিধিত্ব করে। ২০২৩ সালে জলবায়ু উদ্যোগের জন্য জনহিতৈষী তহবিল ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা রেকর্ড ৪.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে কিন্তু এটি এখনও বিশ্বব্যাপী মোট জনহিতকর তহবিলের ২ শতাংশেরও কম। বেশিরভাগ জনহিতকর উদ্যোগ দারিদ্র্য বিমোচন ও স্বাস্থ্যের মতো খাতগুলিকে অগ্রাধিকার দিয়ে চলেছে এবং প্রায়শই এই সত্যটিকে উপেক্ষা করে যে, জলবায়ু পরিবর্তন সমস্ত স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য এটি মোকাবিলা করার জন্য জনহিতৈষী শক্তিগুলিকে অবশ্যই বৃহত্তর উন্নয়ন কৌশলগুলিতে জলবায়ু কর্মসূচিকে সমন্বিত করার প্রয়োজনকে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং আরও সামগ্রিক পদ্ধতির জন্য জলবায়ু-কেন্দ্রিক উদ্যোগগুলিতে সংস্থানগুলিকে সমন্বিত করতে হবে। এই পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য হয়ে উঠছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার জলবায়ু প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসার সঙ্গে সঙ্গে মাইকেল ব্লুমবার্গ প্যারিস চুক্তিতে মার্কিন অবদান বজায় রাখার জন্য পদক্ষেপ করেছে। গ্লোবাল সাউথেও ইন্ডিয়ান  ক্লাইমেট কোলাবোরেটিভের মতো উদ্যোগগুলি তহবিলের ব্যবধান পূরণের জন্য স্থানীয় সংস্থানগুলিকে একত্রিত করছে ঝুঁকি কমানো ও আর্থিক লাভের উপর সামাজিক প্রভাবকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য জনহিতৈষী ক্ষমতা এটিকে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে উচ্চ-ঝুঁকির অভিযোজন প্রকল্পগুলিকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে একটি আদর্শ সাধনী করে তোলে। সরকারগুলি শুল্ক প্রণোদনা প্রদান করে, নিয়ন্ত্রক প্রক্রিয়াগুলিকে সঙ্কুচিত করে এবং মিশ্রিত অর্থায়ন মডেলগুলি সম্প্রসারণ করে, যা অতিরিক্ত বিনিয়োগ আনতে জনহিতৈষী পুঁজির সুবিধা প্রদান করার মাধ্যমে এই প্রচেষ্টাগুলিকে আরও কাজে লাগাতে পারে

বেশিরভাগ জনহিতকর উদ্যোগ দারিদ্র্য বিমোচন ও স্বাস্থ্যের মতো খাতগুলিকে অগ্রাধিকার দিয়ে চলেছে এবং প্রায়শই এই সত্যটিকে উপেক্ষা করে যে, জলবায়ু পরিবর্তন সমস্ত স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য

মার্কিন প্রত্যাহারকে একটি ব্যাঘাত বা সুযোগ যা-ই মনে করা হোক না কেনজলবায়ু অর্থায়নে গভীর অদক্ষতার মোকাবিলা করার জন্য একটি ঘুরে দাঁড়ানোর ডাক বলে মনে করা উচিত। একটি স্থিতিস্থাপক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক জলবায়ু অর্থায়ন বাস্তুতন্ত্র গড়ে তোলার জন্য সরকারি, বেসরকারি ও জনহিতকর অর্থায়নের পরিপূরক শক্তিগুলিকে কাজে লাগানোর মধ্যেই এগোনো সম্ভব। সরকারি অর্থায়নকে অবশ্যই ভিত্তিগত ইক্যুইটি প্রদান করতে হবে এবং এটি নিশ্চিত করতে হবে যে পদ্ধতিগত দুর্বলতাগুলির সমাধান করা হয়েছে। নিজের সুবিশাল সম্পদ-সহ বেসরকারি পুঁজি পরিমাপযোগ্য ও প্রভাবচালিত প্রকল্পগুলিকে সমর্থন করার জন্য নীতি প্রণোদনার মাধ্যমেই পরিচালিত হওয়া উচিত। জনহিতৈষী উচ্চ-ঝুঁকির অভিযোজন প্রচেষ্টাকে ঝুঁকিমুক্ত করতে পারে এবং আরও বিনিয়োগের জন্য একটি অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। সঙ্কটের পরিস্থিতি আসলে সমস্ত ক্ষেত্র থেকেই কৌশলগত পদক্ষেপের দাবি রাখে এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায্য ও কার্যকর জলবায়ু অর্থব্যবস্থা তৈরি করে, যা অতীতের বাগাড়ম্বর থেকে অনেকটা এগিয়ে এসে নিজের প্রতিশ্রুতি রাখতে সক্ষম করে তোলে।

 


শ্যারন সারা থাওয়ানে অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন, কলকাতার ডিরেক্টরের এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট।

অপর্ণা রায় অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সেন্টার ফর নিউ ইকোনমিক ডিপ্লোমেসির ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনার্জির ফেলো ও প্রধান।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.