টাস্ক ফোর্স ৬ অ্যাকসিলারেটিং এসডিজিস: এক্সপ্লোরিং নিউ পাথওয়েজ টু দ্য ২০৩০ এজেন্ডা
সারসংক্ষেপ
সমস্ত আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়ায় লিঙ্গ সমতা সুস্পষ্ট লক্ষ্য হলেও নারীরা পদ্ধতিগত ভাবে এক অসম বিশ্বের সঙ্গে লড়াই করছেন। এই পলিসি ব্রিফ বা নীতি সংক্ষেপে পাঁচটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে, যেগুলির জন্য উন্নয়নমূলক সহযোগিতা লিঙ্গ বৈষম্যের সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে: (১) অপ্রতুল তহবিল, (২) লিঙ্গ ন্যায়বিচারের উপর প্রভাব সম্পর্কিত প্রতিবেদনের জন্য ব্যাপক পরিমাণে লিঙ্গ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করার অপ্রতুল ব্যবস্থা, (৩) পর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত কর্মী ও সম্পদের অভাব এবং দুর্বল পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন, (৪) উন্নয়নশীল দেশগুলির স্থানীয় সংস্থাগুলির দুর্বল অংশগ্রহণ এবং (৫) লিঙ্গের প্রতি একটি অ-রাজনৈতিক ‘স্মার্ট ইকোনমিকস’ বা ‘বুদ্ধিমান অর্থনীতি’র মনোভাব।
আন্তর্জাতিক প্রশাসনে জি২০-র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক উন্নয়নমূলক শক্তি হিসাবে তার সদস্য দেশগুলির গুরুত্ব এবং লিঙ্গ সমতার প্রতি মঞ্চটির দায়বদ্ধতা, লিঙ্গ সমতাকে উন্নীত করার জন্য আন্তর্জাতিক উন্নয়ন কাঠামোয় এক ব্যাপক পরিবর্তনকে উস্কে দেওয়ার কাজে এক আদর্শ মঞ্চ। অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে এই নীতি সংক্ষেপটি ‘স্মার্ট ইকোনমিক্স’ দৃষ্টিভঙ্গি ত্যাগ করা এবং লিঙ্গভিত্তিক একটি পৃথক জি২০ ট্র্যাক স্থাপনের সুপারিশ করে।
প্রতিবন্ধকতা
সমস্ত আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়া এবং দায়বদ্ধতায় লিঙ্গ সমতা একটি সুস্পষ্ট লক্ষ্য এবং নির্দেশক নীতি। সাস্টেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল বা স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ৫-এর লক্ষ্য হল লিঙ্গ সমতা অর্জন এবং সকল নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়ন। আন্তর্জাতিক উন্নয়নমূলক সহযোগিতায় লিঙ্গ উদ্বেগকে মূলধারার আওতাভুক্ত করার কাজে উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা সত্ত্বেও লিঙ্গ সমতা একটি দূরবর্তী লক্ষ্য হিসাবেই রয়ে গিয়েছে। ২০২২ গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমান গতিতে বিশ্বব্যাপী লিঙ্গ ব্যবধান নির্মূল করতে ১৩২ বছর সময় লাগবে।(১) এ ছাড়াও, কোভিড-১৯ অতিমারি নারীর ক্ষমতায়ন এবং অধিকার সংক্রান্ত পূর্ববর্তী অগ্রগতিকে নস্যাৎ করে দিয়েছে এবং লিঙ্গ সমতার প্রক্রিয়াটির গতি হ্রাস করেছে। বিশ্বব্যাপী নানাবিধ প্রমাণ দর্শায় যে, অতিমারি বিদ্যমান লিঙ্গভিত্তিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যকে আরও সুদৃঢ় করেছে, অবৈতনিক পরিচর্যা প্রদানের কাজের বোঝা এবং গার্হস্থ্য ও দাম্পত্য হিংসার পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে।(২) ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী কর্মসংস্থান হারানোর নিরিখে নারীদের পরিমাণ ছিল ৪৫ শতাংশ, যেখানে ব্যবস্থাপক পদে কর্মরত নারীদের পরিমাণ ২৮.৩ শতাংশ হারে ২০১৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত অপরিবর্তিত থেকেছে।(৩) এর পাশাপাশিই, পরিচর্যার বর্ধিত দায়িত্ব, আয়ের প্রয়োজন, সামাজিক পরিষেবা স্থগিত থাকা এবং স্কুল বন্ধের কারণে সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণির বেশ কিছু শিশুকে বলপূর্বক বাল্যবিবাহের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ২০২২ সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০৩০ সাল নাগাদ প্রাক-অতিমারি আনুমানিক ১০০ মিলিয়ন পরিসংখ্যান ছাড়াও আরও ১০ মিলিয়ন কন্যাশিশুর বাল্যবিবাহ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।(৪) কৃষি ক্ষেত্রে অত্যধিক প্রতিনিধিত্ব করা সত্ত্বেও বেশির ভাগ উন্নয়নশীল দেশে কৃষি জমির উপর নারীদের মালিকানার অধিকারের অভাব বিদ্যমান, যা পরিবারের পুরুষ সদস্যদের উপর তাদের নির্ভরতা বৃদ্ধি করেছে। ২০১৯ সালের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী নারীরা জি২০ দেশগুলির সংসদে এক-তৃতীয়াংশেরও কম সদস্য পদে প্রতিনিধিত্ব করেন। এর পাশাপাশি জি২০ দেশগুলির মধ্যে ১৮টি দেশে ১৮ শতাংশ নারীরা পুরুষদের তুলনায় কম উপার্জন করেন।(৫)
যদিও বেজিং প্ল্যাটফর্ম ফর অ্যাকশন, কমিশন অন দ্য স্ট্যাটাস অফ উইমেন এবং এজেন্ডা ২০৩০-র মতো মঞ্চগুলি লিঙ্গ ন্যায়বিচার ও সমতাকে এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টাকে সমন্বিত করতে কার্যকর হয়েছে, কিন্তু আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি মূলত নারীদের জীবনে রূপান্তরমূলক পরিবর্তন আনতে ব্যর্থ হয়েছে। মাতৃমৃত্যুর হার ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তালিকাভুক্তির মতো উন্নয়ন সূচকে উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধিত হলেও শ্রমশক্তি, প্রশাসনব্যবস্থা এবং সম্পদের মালিকানায় নারীদের অংশগ্রহণে খুব সামান্যই অগ্রগতি দেখা গিয়েছে।(৬)
আন্তর্জাতিক উন্নয়নমূলক সহযোগিতা লিঙ্গ বৈষম্যকে মোকাবিলা করতে এবং আক্ষরিক অর্থে নারীর ক্ষমতায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এর নেপথ্যে বেশ কিছু কারণ রয়েছে- (১) অপ্রতুল তহবিল, (২) লিঙ্গ ন্যায়বিচারের উপর প্রভাব সম্পর্কিত প্রতিবেদনের জন্য ব্যাপক পরিমাণে লিঙ্গ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করার অপ্রতুল ব্যবস্থা, (৩) পর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত কর্মী ও সম্পদের অভাব এবং দুর্বল পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন, (৪) উন্নয়নশীল দেশগুলির স্থানীয় সংস্থাগুলির দুর্বল অংশগ্রহণ এবং (৫) লিঙ্গের প্রতি একটি অ-রাজনৈতিক ‘স্মার্ট ইকোনমিকস’ বা ‘বুদ্ধিমান অর্থনীতি’র মনোভাব অথবা এফিসিয়েন্সি অ্যাপ্রোচ বা দক্ষতামূলক মনোভাব।
লিঙ্গ-নির্দিষ্ট কর্মসূচির জন্য পর্যাপ্ত তহবিলের অভাব একটি বড় বাধা। ওইসিডি-র অনুমান অনুসারে, এক দশক বৃদ্ধি পাওয়ার পর লিঙ্গ সমতার জন্য সরকারি উন্নয়ন সহযোগিতার অংশ ২০১৮-১৯ সালের ৪৪.৫ শতাংশ থেকে ২০২০-২১ সালে ৪৪ শতাংশে নেমে এসেছে।(৭) এ ছাড়াও বিশেষজ্ঞরা যুক্তি দিয়েছেন যে, লিঙ্গ সংক্রান্ত কর্মসূচির জন্য নির্ধারিত ৯৯ শতাংশেরও বেশি সংস্থান রূপান্তরমূলক এবং স্থিতিশীল পরিবর্তনের আসল চালক নারীবাদী আন্দোলন অথবা তৃণমূল স্তরীয় সংগঠনগুলির জন্য ব্যবহৃত হওয়ার পরিবর্তে সরকার, বড় সংস্থা বা উন্নয়নমূলক সংস্থার বাজেট মেটাতে (পরামর্শদাতাদের বেতন এবং অন্যান্য প্রশাসনিক ব্যয়ের আকারে) খরচ করা হয়।(৮) এর পাশাপাশি লিঙ্গবিচ্ছিন্ন সহায়তামূলক তথ্যের অভাবের কারণে লিঙ্গ এবং প্রকৃত ফলাফলের উপর উন্নয়নমূলক ব্যয়ের সম্পূর্ণ চিত্র পাওয়া দুষ্কর। লিঙ্গ বিচ্ছিন্ন তথ্য প্রায়শই সেন্ট্রাল রিপোজিটরি বা কেন্দ্রীয় ভান্ডারে সহজলভ্য পদ্ধতিতে প্রকাশিত হয় না এবং প্রায়শই তা অসম্পূর্ণ ও অপরিমাপযোগ্য হয়।(৯)
বিশেষজ্ঞরা আরও যুক্তি দিয়েছেন যে, লিঙ্গ সমতার প্রতি দায়বদ্ধতা পর্যাপ্ত কর্মীর সংখ্যা, পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন দ্বারা অনুসৃত হয়নি।(১০) অনেক ক্ষেত্র- নির্দিষ্ট কর্মসূচি বহুমাত্রিক কর্মের সুযোগ হাতছাড়া করতে বাধ্য হয়। কারণ এমনটা করার জন্য লিঙ্গ এবং অন্যান্য ক্ষেত্র-নির্দিষ্ট বা দেশ/প্রসঙ্গ-নির্দিষ্ট দক্ষতার জ্ঞান আবশ্যক, যা বেশির ভাগ সীমিত দক্ষতাসম্পন্ন উন্নয়নমূলক পেশাদারদের মধ্যে অনুপস্থিত।(১১) আন্তর্জাতিক উন্নয়নমূলক সংস্থাগুলির গঠন এবং কাজও ফলাফলকে প্রভাবিত করে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, অংশীদারিত্বের সূচনাকারী উন্নয়নমূলক কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে প্রায়শই তাঁরা যে দেশে কাজ করেন, সেগুলির স্থানীয় বাস্তবতা সম্পর্কে বোঝার অভাব রয়েছে।(১২) আন্তর্জাতিক উন্নয়নমূলক সংস্থাগুলি প্রায়শই একটি সুনির্দিষ্ট ধরাবাঁধা কার্যক্রমের আওতাভুক্ত হয় এবং স্থানীয় পর্যায়ে কাজ করে এমন ছোট লিঙ্গভিত্তিক সংস্থাগুলিকে বাদ দিয়ে প্রকল্প নকশা, জটিল ব্যবস্থাপনা এবং প্রয়োজনীয় ফলপ্রদায়ী ক্ষেত্রে আরও বেশি ক্ষমতা ভোগ করে।(১৩) উন্নয়নশীল দেশগুলির বৃহত্তর উন্নয়নমূলক উপস্থিতিসম্পন্ন ক্ষুদ্র সংস্থাগুলি আন্তর্জাতিক উন্নয়নমূলক সংস্থাগুলির প্রয়োজনীয় জটিল পদ্ধতির সঙ্গে প্রায়শই মানিয়ে চলতে ব্যর্থ হয়।
যদিও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের বিষয় হল যে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি লিঙ্গ সমতার একটি অ-রাজনীতিকরণ আখ্যান উপস্থাপন করেছে, যা একচেটিয়াভাবে পরিমাপযোগ্য অগ্রগতির ভিত্তিতে নির্ধারিত। অন্য ভাবে বললে, অপরিমাপযোগ্য বিষয়গুলি হয় উপেক্ষা করা হয়েছে বা বাদ দেওয়া হয়েছে। বেশির ভাগ আন্তর্জাতিক উন্নয়নমূলক সংস্থা এবং বৃহৎ অলাভজনক সংস্থাগুলি লিঙ্গ সমতাকে ‘স্মার্ট ইকোনমিকস’ বা ‘বুদ্ধিমান অর্থনীতি’ হিসাবে উপস্থাপন করে এবং প্রভাব ও ফলাফলের উপর সর্বাধিক এবং পরিমাপযোগ্য গুরুত্বের উপর জোর দেয়। নারীর শ্রম ও উৎপাদনশীলতার উন্নতিকে শুধু মাত্র অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার হাতিয়ার হিসেবে দেখা হয়। স্মার্ট ইকোনমিকসের একগুচ্ছ প্রবিধানের আওতায় লিঙ্গ সমতার আলোচনায় সমতা এবং ন্যায়বিচারের অধিকার বা ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতার নৈতিক ভিত্তির অনুপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। এ কথা স্বীকার করা গুরুত্বপূর্ণ যে, লিঙ্গ সমতা একটি গভীর রাজনৈতিক সমস্যা এবং এটি অক্ষতিকারক ধারণা নয়; বরং এটি ক্ষমতা, সুবিধা এবং সম্পদের বিদ্যমান বণ্টনকে চ্যালেঞ্জ জানায়।(১৪) সুতরাং একটি সম্পর্কগত সমস্যা এবং পরিকাঠামোগত অসমতার বিষয় হিসাবে লিঙ্গ সমতাকে সরকার, উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান এবং সমাজ দ্বারা সরাসরি সম্বোধন করা উচিত।(১৫)
এই চ্যালেঞ্জগুলি লিঙ্গ রাজনীতিতে ক্রমবর্ধমান প্রবণতা এবং ঔপনিবেশিক ও জাতিগত চিন্তাভাবনার ব্যাপকতার পাশাপাশি বিদ্যমান, যার মধ্যে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ক্ষেত্র নির্মিত এবং স্থিত। পদ্ধতিগত অন্যায়, ঔপনিবেশিক যুক্তি, বর্ণবাদী বক্তব্য, ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদ এবং উদীয়মান আন্তর্জাতিক সঙ্কটের পরিপ্রেক্ষিতে (যেমন অতিমারি) এই চ্যালেঞ্জগুলি ব্যবস্থা, প্রতিষ্ঠান, নীতি এবং অনুশীলনের মধ্যে সম্পৃক্ত, যা লিঙ্গ-প্রতিক্রিয়াশীল নীতিগুলির অগ্রগতি হ্রাস করে চলেছে। বর্তমান পরিস্থিতির পরিবর্তন করার জন্য আন্তর্জাতিক উন্নয়নমূলক সংস্থা এবং এই ক্ষেত্রের অন্যান্য শক্তি মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে।
আন্তর্জাতিক উন্নয়নমূলক সংস্থাগুলি তাদের তহবিল পরিকাঠামো এবং নীতি গঠনের ক্ষমতার কারণে উন্নয়নমূলক ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকলেও লিঙ্গের প্রতি তাদের পদ্ধতি রূপান্তরমূলক পরিবর্তন সূচনাকারী চর্চা ও নীতিগুলির অগ্রগতিকে সীমিত করে। এই পরিবর্তনের জন্য লিঙ্গ সংক্রান্ত আরও পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ প্রয়োজন। কারণ এটি ক্ষমতার সঙ্গে সম্পর্কিত এবং তাই বৈষম্যের (পুনরায়) উত্পাদনের সঙ্গেও সংযুক্ত। লিঙ্গ সম্পর্কে একটি নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গিও এ ক্ষেত্রে শিক্ষামূলক। একটি নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করে আন্তর্জাতিক উন্নয়নমূলক সংস্থাগুলি লিঙ্গের একক আখ্যানের ঊর্ধ্বে উঠে আরও সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ করতে সক্ষম হবে যা অন্যান্য অন্যায়ের সঙ্গে লিঙ্গ ন্যায়বিচারের সংযোগের জন্য দায়ী। উদাহরণ স্বরূপ জাতিগত, শরণার্থীদের প্রতি, যুদ্ধ এবং সংঘাতের সময় হিংসা এবং বর্ণভিত্তিক অবিচারের কথা বলা যায়। লিঙ্গ সম্পর্কিত একটি নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্লেষণমূলক উপাদান সরবরাহ করে এবং জেন্ডার প্রোগ্রামিং বা লিঙ্গভিত্তিক কর্মসূচিতে এবং নীতিতে অগ্রগতির সম্ভাবনাকে প্রসারিত করে।
জি২০-র ভূমিকা
বিশ্বব্যাপী জিডিপি-র প্রায় ৮৫ শতাংশ, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ৭৫ শতাংশ এবং আন্তর্জাতিক জনসংখ্যার দুই তৃতীয়াংশের প্রতিনিধিত্বকারী ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং ১৯টি দেশের একটি মঞ্চ হিসেবে জি২০-র গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা রয়েছে।(১৬) রাষ্ট্রপ্রধানদের বার্ষিক সভা মঞ্চটি কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং এটি আন্তর্জাতিক প্রশাসনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইইউ-সহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, জার্মানি, ফ্রান্স এবং ব্রিটেনের মতো উন্নত দেশগুলি উন্নয়নমূলক সহযোগিতার বৃহত্তম প্রদানকারী। ২০২১ সালে উন্নয়নমূলক সহযোগিতায় আনুষ্ঠানিক ভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবদান ছিল ৪২.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ব্রিটেনের ১৫.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, জার্মানির ৩২.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, জাপানের ১৭.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ইইউ-এর ১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।(১৭) চিন, ভারত এবং ব্রাজিলের মতো গ্লোবাল সাউথের উন্নয়নমূলক অংশীদাররা গত দুই দশকে তাদের উন্নয়নমূলক সহযোগিতা কর্মসূচির মাত্রা প্রসারিত করেছে। ২০২০ সালে চিনের উন্নয়নমূলক সহযোগিতার পরিমাণ দাঁড়ায় ২.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে, যার লক্ষ্য ছিল লিঙ্গ সমতা-সহ এজেন্ডা ২০৩০-এর উপর গুরুত্ব দেওয়া।(১৮) ২০২০ সালে ব্রাজিলিয়ান কোঅপারেশন এজেন্সি অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে সম্পদের আন্তঃসীমান্ত স্থানান্তরের মাধ্যমে স্থিতিশীল উন্নয়নের খাতে প্রায় ৩৩.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে।(১৯) ওইসিডি এবং অ-ওইসিডি দাতা দেশগুলির মধ্যে তুলনা করা কঠিন। কারণ উভয় ক্ষেত্রে সংজ্ঞাগত ভাবে ব্যাপক ফারাক রয়েছে। সংশ্লিষ্ট তথ্য আন্তর্জাতিক উন্নয়নমূলক শক্তি হিসাবে জি২০-র একাধিক উন্নয়নশীল দেশের ক্রমবর্ধমান গুরুত্বকে তুলে ধরে। যেমন জি২০ শীর্ষ সম্মেলনগুলি উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচিকে রূপদান করার গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ প্রদান করে।
জি২০ নেতারা ২০০৯ সালের লন্ডন সামিটে প্রথম লিঙ্গ সমতার কথা বললেও প্রথম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপটি মেক্সিকোয় ২০১২ সালের লস কাবোস সামিটে গ্রহণ করা হয়েছিল, যেখানে সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের দুর্বল অংশগ্রহণকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাধা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।(২০) রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে পরবর্তী শীর্ষ সম্মেলনটির প্রধান লক্ষ্য ছিল নারীদের জন্য আর্থিক শিক্ষা এবং নারীদের উদ্যোগমূলক দক্ষতার উপর৷ ২০১৪ ব্রিসবেন অ্যাকশন প্ল্যান শ্রমশক্তিতে নারীদের বৃহত্তর অংশগ্রহণ এবং নারীদের কর্মসংস্থানের মানের উন্নতির প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে। জি২০ নেতারাও জাতীয় পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে তাদের দেশে শ্রমশক্তির অংশগ্রহণে লিঙ্গ ব্যবধান ২৫ শতাংশ হ্রাস করার লক্ষ্যে সম্মত হন।(২১) ২০১৫ সালে তুরস্কের সভাপতিত্বের সময় জি২০ প্রক্রিয়ায় লিঙ্গ বিষয়ক সমস্যাগুলিকে মূলধারায় অন্তর্ভুক্তিকে সুনিশ্চিত করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপটি ছিল একটি অফিসিয়াল এনগেজমেন্ট গ্রুপ ডব্লিউ২০ (উইমেন ২০) গঠন করা।
জি২০-এর লিঙ্গ সংক্রান্ত দায়বদ্ধতা প্রাথমিক ভাবে নারী শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং নারীদের জন্য কাজের অবস্থার উন্নতির উপর জোর দিলেও(২২) ২০১৫ সাল থেকে তার মনোযোগের পরিধি নারী উদ্যোক্তা ও কৃষকদের ক্ষেত্রে প্রসারিত হয়েছে, যা বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, কারিগরি দক্ষতা ও গণিতে নারীদের অংশগ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে।(২৩) ২০১৭ সালে লিঙ্গভিত্তিক হিংসা বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল৷ ২০২০ সালে জি২০ নারীদের উপর কোভিড-১৯ অতিমারির অসম প্রভাবকে স্বীকৃতি দিয়ে লিঙ্গ বৈষম্য মোকাবিলা করার সিদ্ধান্ত নেয়৷ ২০২২ সালে ইন্দোনেশিয়ার সভাপতিত্বে জি২০ উচ্চ মানের এবং সাশ্রয়ী মূল্যের পরিষেবা প্রদানকারী ব্যবস্থা, ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং এমএসএমই অবকাঠামোয় বৃহত্তর বিনিয়োগের উপর জোর দেয়।(২৪) বর্তমান ভারতের সভাপতিত্বে লিঙ্গ সমতা এবং ‘নারী নেতৃত্বাধীন উন্নয়ন’-এর উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।
ভারতের সভাপতিত্বের অধীনে তিনটি প্রধান মনোযোগের ক্ষেত্র হল: (১) নারীদের দ্বারা গৃহীত উদ্যোগ: ইক্যুইটি এবং অর্থনীতির জন্য উভমুখী লাভদায়ক পরিস্থিতি; (২) তৃণমূল-সহ সকল স্তরে নারীদের নেতৃত্বের প্রচারের কাজে অংশীদারিত্ব এবং (৩) শিক্ষা যা নারীর ক্ষমতায়ন এবং সমান শ্রমশক্তির অংশগ্রহণের মূল চাবিকাঠি।(২৫)
এখনও লিঙ্গ সমতার উপর জি২০-এর মনোযোগ কোনও সুদৃঢ় বাস্তব পদক্ষেপে রূপান্তরিত হয়নি। প্রাথমিক ভাবে লিঙ্গ সংক্রান্ত ব্যবহৃত শব্দের পরিমাণ ২০০৯ সালের লন্ডন সামিটে মাত্র ৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২১ সালের রোম সামিটে ১৬ শতাংশ উন্নীত হয়েছে।(২৬) ২০০৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে জি২০ লিঙ্গ সমতার বিষয়ে ৮০টি মূল প্রতিশ্রুতি এবং ৩৯টি সম্পর্কিত প্রতিশ্রুতি প্রদান করলেও সদস্য দেশগুলির মধ্যে গড় সম্মতির পরিমাণ ছিল ৬২ শতাংশ (সমস্ত বিষয়ে ৭২ শতাংশের গড় সম্মতির বিপরীতে)।(২৭) এটি মূলত লিঙ্গ প্রতিশ্রুতিগুলির দুর্বল পর্যবেক্ষণের কারণেই ঘটে থাকে। জি২০ দেশগুলি এবং উন্নয়নমূলক সংস্থাগুলি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করতে ব্যর্থ হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, অতিমারিটি নারীদের জীবনে কঠোর ভাবে আঘাত হানায় সদস্য দেশগুলি ডিজিটালকরণের জন্যও চাপ দিয়েছিল। কিন্তু প্রযুক্তি এবং দক্ষতার লব্ধতা সম্পর্কে নারীদের উদ্বেগগুলির কোনও সমাধানই করা হয়নি। একই ভাবে বিশ্ব হাইব্রিড ওয়ার্ক কালচার বা কাজের সঙ্কর সংস্কৃতিতে স্থানান্তরিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকার এবং উন্নয়নমূলক সংস্থাগুলি অর্থনীতি এবং গার্হস্থ্য ও দাম্পত্য হিংসার শিকার হওয়া নারীদের উদ্বেগের সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সহযোগিতার একটি মঞ্চ হিসেবে জি২০-র গুরুত্ব, আন্তর্জাতিক উন্নয়নে সদস্য দেশগুলির ক্রমবর্ধমান ভূমিকা এবং লিঙ্গ সমতার প্রতি গোষ্ঠীটির অঙ্গীকারের কারণে লিঙ্গ সমতাকে উন্নীত করার জন্য আন্তর্জাতিক উন্নয়নমূলক পরিকাঠামোয় সর্বাঙ্গীন পরিবর্তন আনার কাজে এটি একটি আদর্শ মঞ্চ।
সুপারিশ
নারীর অধিকার রক্ষা এবং লিঙ্গ সমতাকে উন্নীত করা অত্যাবশ্যক। কিন্তু আন্তর্জাতিক উন্নয়নমূলক সহযোগিতা তার বর্তমান পরিসরে নারী ও মেয়েদের সম্মুখীন পদ্ধতিগত অবিচারের মোকাবিলা করতে সক্ষম নয়। সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারী ও মেয়েদের পূর্ণ অংশগ্রহণের জন্য (নেতৃত্বের ভূমিকা-সহ) একটি মৌলিক পরিবর্তন প্রয়োজন। এর জন্য সঙ্কীর্ণ অর্থনৈতিক লক্ষ্যগুলি অনুসরণ করার পাশাপাশি পরিমিত কল্যাণমূলক পদক্ষেপের বর্তমান ত্রুটিপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে লিঙ্গ, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং নারীর জীবন নিয়ন্ত্রণকারী নিয়মগুলির অসম ক্ষমতার সম্পর্কের মতো কাঠামোগত সমস্যাগুলির সমাধানকারী নারীবাদী মনোভাবে সরে আসা দরকার। এই নীতি সংক্ষেপে এসডিজি ৫ অর্জনকে ত্বরান্বিত করার জন্য নিম্নলিখিত সুপারিশগুলি প্রস্তাব করা হয়েছে।
- লিঙ্গ সমতার জন্য তহবিলের প্রবাহ বৃদ্ধি করা:লিঙ্গ সমতার জন্য ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতিগুলি এখনও পর্যন্ত সমস্যা সমাধানকারী কর্মসূচিতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ ঘটাতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে এই ধরনের কর্মসূচিতে অবিলম্বে তহবিলের প্রবাহ বাড়ানো জরুরি।
- মানব সম্পদে উন্নত তথ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক উন্নয়নকে সর্বাধিক ভাবে কাজে লাগানো: লিঙ্গ সমতার ক্ষেত্রে অর্থায়নের পরিমাণ বৃদ্ধি লিঙ্গ-বিচ্ছিন্ন তথ্যের অভাব এবং পরিকল্পনার জন্য প্রশিক্ষিত কর্মী, লিঙ্গ-নির্দিষ্ট কর্মসূচির বাস্তবায়ন এবং নিরীক্ষণের অভাবজনিত সমস্যার কারণে লিঙ্গ ন্যায়বিচারকে সশক্ত করে তোলে না। অতএব এই চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলায় সংস্থান এবং প্রচেষ্টাকে চালিত করা জরুরি। লিঙ্গ বিচ্ছিন্ন তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশের জন্য পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করা উচিত এবং উন্নয়নমূলক পেশাদারদের ক্ষেত্র/প্রসঙ্গ-নির্দিষ্ট দক্ষতা এবং লিঙ্গ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার।
- লিঙ্গ সমতার জন্য ‘স্মার্ট ইকোনমিকস’ পন্থা অবলম্বন না করা এবং ইক্যুইটি ও ন্যায়বিচারের উপর মনোযোগ দেওয়া: আন্তর্জাতিক উন্নয়নমূলক সংস্থাগুলিকে অবশ্যই লিঙ্গ সমতার জন্য দক্ষতা বা ‘স্মার্ট ইকোনমিকস’ পদ্ধতির মনোভাব ত্যাগ করতে হবে। উৎপাদনশীলতা বা বৃদ্ধি বাড়ানোর উপায়ের পরিবর্তে লিঙ্গ সমতাকে লক্ষ্য হিসেবে অনুসরণ করা উচিত। আন্তর্জাতিক উন্নয়নমূলক সহযোগিতার উচিত নেতিবাচক সামাজিক নিয়ম এবং মনোভাব মোকাবিলার প্রতি মনোনিবেশ করা, যা নারীর জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বকে বাধা দেয়। অর্থনৈতিক বৃদ্ধির পরিবর্তে লিঙ্গ সমতা এবং তৃণমূল স্তরের উন্নয়নের উপর মনোযোগ প্রদানকারী উন্নয়নমূলক সহযোগিতার একটি উদাহরণ হল ভারতের ‘সোলার মামা’ প্রকল্প। আইটিইসি প্রোগ্রামের মাধ্যমে ভারত সরকার প্রত্যন্ত বিদ্যুৎহীন গ্রামের নিরক্ষর গ্রামীণ নারীদের সৌর প্রকৌশলী হতে এবং তাঁদের গ্রামে বিদ্যুৎ আনার জন্য প্রশিক্ষণ দেয়। ২০১৬ সালে ৭৮টি দেশ থেকে ১৬টি আইটিইসি কোর্সের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত প্রায় ৮০০ জন ‘সোলার মামা’ ৫০০টিরও বেশি গ্রামে ৫০০০০ বাড়িতে বিদ্যুদয়ন ঘটান।(২৮) ১৪টি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশেও ভারত অনুরূপ প্রচেষ্টা শুরু করেছে, যেখানে গ্রামীণ মহিলারা ২৮০০টি বাড়িতে বিদ্যুদয়ন করেছেন।(২৯) আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির উচিত এ ধরনের কম খরচসাপেক্ষ উন্নয়নমূলক সমাধানগুলি সমর্থন করা এবং তা পরিমাপে সাহায্য করে।
- উন্নয়নশীল দেশগুলিতে স্থানীয় সংস্থাগুলির বৃহত্তর অংশগ্রহণ:লিঙ্গ সমতা এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য রূপান্তরমূলক পরিবর্তন অর্জনের সবচেয়ে কার্যকর উপায়গুলির মধ্যে অন্যতম হল স্থানীয় নারী সম্পৃক্ত সংস্থাগুলির সঙ্গে বৃহত্তর সহযোগিতা। দেশগুলিকে অবশ্যই ছোট এবং স্থানীয় তৃণমূল স্তরের সংস্থাগুলিতে সংস্থান স্থানান্তর এবং তাদের অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করার জন্য প্রক্রিয়াগুলিকে সহজতর করার বিষয়ে বিবেচনা করতে হবে। প্রকল্পের নকশায় স্থানীয় সংস্থাগুলির বৃহত্তর অবদান থাকা উচিত।
- শেরপা ট্র্যাকের অধীনে লিঙ্গভিত্তিক পৃথক জি২০ ট্র্যাক: ভারতের সভাপতিত্বের অধীনে নারী-নেতৃত্বাধীন উন্নয়নের গুরুত্বের নিরিখে জি২০-র উচিত শেরপা ট্র্যাকের আওতায় একটি পৃথক ওয়ার্কিং গ্রুপ গড়ে তোলা। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক উন্নয়নমূলক প্রক্রিয়া লিঙ্গ সমতা আনতে সক্ষম হবে এবং নারী ও মেয়েদের জীবনে রূপান্তরমূলক পরিবর্তন সূচিত করবে।
- জি২০ দেশগুলিতে ‘অ্যাম্বাস্যাডর-অ্যাট-লার্জ ফর জেন্ডার-রেসপন্সিভ বাজেটিং’-এর কার্যালয়:বহুপাক্ষিক উন্নয়নমূলক সহযোগিতায় লিঙ্গকে মূলধারায় আনার জন্য পুঁজির সঠিক ব্যবহার করতে জি২০ দেশগুলির উচিত নিজ নিজ বিদেশ মন্ত্রকের আওতায় ‘অ্যাম্বাস্যাডর-অ্যাট-লার্জ ফর জেন্ডার-রেসপন্সিভ বাজেটিং’-এর কার্যালয় স্থাপনের কথাও বিবেচনা করা। ‘অ্যাম্বাস্যাডর-অ্যাট-লার্জ ফর জেন্ডার-রেসপন্সিভ বাজেটিং’-এর কার্যালয় উন্নয়নমূলক সহযোগিতা ও আন্তঃসহযোগিতা কর্মসূচিতে লিঙ্গ তহবিল নির্মাণ ও তার প্রভাব মূল্যায়ন পর্যবেক্ষণ করতে পারে। এর পাশাপাশি বার্ষিক শ্বেতপত্রের সুনির্দিষ্ট অধ্যায়ের মাধ্যমে তাদের দেশে লিঙ্গ সমতার অগ্রগতির উপর নজর রাখতে পারে।
পাদটীকা
১) ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম, গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট ২০২২
২) ইউএন উইমেন অ্যান্ড আনস্টিরিয়োটাইপ অ্যালায়েন্স, ২০২২
৩) ইউনাইটেড নেশনস, দ্য সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস রিপোর্ট ২০২২
৪) ইউনাইটেড নেশনস, দ্য সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস রিপোর্ট ২০২২
৫) ভার্জিনিয়া আলোনসো-অ্যালব্যারন প্রমুখ, জেন্ডার বাজেটিং ইন জি২০ কান্ট্রিজ, আইএমএফ ওয়ার্কিং পেপার নং ২০২১/২৬৯, ইন্টারন্যাশনাল মনিটরি ফান্ড, ২০২১
৬) ক্যারেন গ্রোন, টোনি অ্যাডিসন এবং ফিন টার্প, ‘এড ফর জেন্ডার ইকুয়ালিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট: লেসনস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস’, জার্নাল অফ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট, ২৮:৩, ২০১৬
৭) অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ‘অফিশিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্স ফর জেন্ডার ইকুয়ালিটি অ্যান্ড উইমেন’স এমপাওয়ারমেন্ট: আ স্ন্যাপশট’, ২০২৩
৮) এল লিভার, কে মিলার এবং কে স্তাজেওক্সা, মুভিং মোর মানি টু দ্য ড্রাইভারস অব চেঞ্জ: হাউ বাইল্যাটেরাল অ্যান্ড মাল্টিল্যাটেরাল ফান্ডারস ক্যান রিসোর্স ফেমিনিস্ট মুভমেন্টস, এডব্লিউআইডি অ্যান্ড মামা ক্যাশ উইথ সাপোর্ট ফ্রম দ্য কাউন্ট মি ইন! কনসোর্টিয়াম, ২০২০
৯) শার্লট স্মিথ, ‘আ প্রিলিমিনারি লুক অ্যাট দ্য স্টেট অব জেন্ডার ডিজঅ্যাগ্রিগেটেড এড ডেটা’, রিলিফওয়েব, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৮
১০) ক্যারেন গ্রোন, টোনি অ্যাডিসন এবং ফিন টার্প, ‘এড ফর জেন্ডার ইকুয়ালিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট: লেসনস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস’
১১) ক্যারেন গ্রোন, টোনি অ্যাডিসন এবং ফিন টার্প, ‘এড ফর জেন্ডার ইকুয়ালিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট: লেসনস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস’
১২) রানিয়া এগনাতিওস এবং ফ্রাঞ্চেসকা এল আসমার, ‘মেকিং দ্য কেস ফর আ ট্রান্সফর্মড ডেভেলপমেন্ট ইকোসিস্টেম: আ ফেমিনিস্ট রিফ্লেকশন অন দি এক্সপিরিয়েন্স অব রুটসল্যাব ইন লেবানন’, জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ২৮ (২০২০): ৬৯-৮৩
১৩) রানিয়া এগনাতিওস এবং ফ্রাঞ্চেসকা এল আসমার, ‘মেকিং দ্য কেস ফর আ ট্রান্সফর্মড ডেভেলপমেন্ট ইকোসিস্টেম: আ ফেমিনিস্ট রিফ্লেকশন অন দি এক্সপিরিয়েন্স অব রুটসল্যাব ইন লেবানন’
১৪) লার্স এঙ্গবার্গ-পিডারসেন, ‘গ্লোবাল নর্মস, জেন্ডার ইকুয়ালিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন: দ্য নিড টু বিল্ড অন স্ট্রং লোকাল সাপোর্ট টু চেঞ্জ জেন্ডার রিলেশনস’, রিলেট ইনস্তিতুতো এলকানো, মে ২০১৯
১৫) সিলভিয়া চ্যান্ট এবং ক্যারোলিন সুইটম্যান, ‘ফিক্সিং উইমেন অর ফিক্সিং দ্য ওয়ার্ল্ড? ‘স্মার্ট ইকোনমিকস’, এফিশিয়েন্সি অ্যাপ্রোচেস অ্যান্ড জেন্ডার ইকুয়ালিটি ইন ডেভেলপমেন্ট’, জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ২০:৩, নভেম্বর ২০১২, ৫১৭-৫২৯
১৬) অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ‘হোয়াট ইজ দ্য জি২০?’
১৭) অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন প্রোফাইলস, ওইসিডি পাবলিশিং, প্যারিস, ২০২২
১৮) চায়না ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন এজেন্সি, হোয়াইট পেপার: চায়না ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন অন দ্য নিউ এরা, জানুয়ারি ১০, ২০২১
১৯) অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ‘আদার অফিশিয়াল প্রোভাইডারস নট রিপোর্টিং টু দি ওইসিডি’, ইন ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন প্রোফাইলস, ওইসিডি পাবলিশিং, প্যারিস, ২০২২
২০) ড্যানিয়েল নেফ এবং ওয়াকিম বেৎজ, ‘জেন্ডার জাস্টিস অ্যাজ অ্যান ইন্টারন্যাশনাল অবজেক্টিভ: ইন্ডিয়া ইন দ্য জি২০’, জার্মান ইনস্টিটিউট অব গ্লোবাল অ্যান্ড এরিয়া স্টাডিজ, ২০১৭
২১) জি২০ অস্ট্রেলিয়া, ‘ব্রিসবেন অ্যাকশন প্ল্যান’, নভেম্বর ২০১৪
২২) জুলিয়া কুলিক, ‘জি২০ পারফর্ম্যান্স অন জেন্ডার ইকুয়ালিটি’, দ্য গ্লোবাল গভর্ন্যান্স প্রজেক্ট, ২০২১
২৩) জুলিয়া কুলিক, ‘জি২০ পারফর্ম্যান্স অন জেন্ডার ইকুয়ালিটি’
২৪) কাজল জোশি এবং নিবেদিতা হাতিবড়ুয়া, ‘হাউ ইন্ডিয়া’জ জি২০ প্রেসিডেন্সি ক্যান পেভ দি ওয়ে ফর ইনক্লুসিভ জেন্ডার কমিটমেন্টস’, স্বত্ব, মার্চ ২১, ২০২৩
২৪) মিনিস্ট্রি অফ উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট, ‘ইফ ইউ ওয়ান্ট টু গেট ইয়োর ফিউচার রাইট, ইফ ইউ ওয়ান্ট টু বি ফিউচার-রেডি, মেক সিওর দ্যাট উইমেন আর দ্য সেন্টার অব দ্য ডিসকোর্স অ্যান্ড দ্যাট উইমেন আর অ্যাট দ্য সেন্টার অব ইয়োর ডিসিশনস’ সেজ ডব্লিউসিডি মিনিস্টার অন ফার্স্ট ডে অব জি-২০ এমপাওয়ার ইনসেপশন মিটিং ইন আগ্রা’, প্রেস ইনফর্মেশন ব্যুরো, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৩
২৬) জুলিয়া কুলিক, ‘জি২০ পারফর্ম্যান্স অন জেন্ডার ইকুয়ালিটি’
২৭) জুলিয়া কুলিক, ‘জি২০ পারফর্ম্যান্স অন জেন্ডার ইকুয়ালিটি’
২৮) ইউনাইটেড নেশন, ‘দ্য বেয়ারফুট সোলার মামাজ অব দি ওয়ার্ল্ড’, ইন্ডিয়া পার্সপেক্টিভ, ২০১৬
২৯) মিনিস্ট্রি অব ফিন্যান্স, ‘এক্সপেন্ডিচার প্রোফাইল ২০২৩-২৪: জেন্ডার বাজেট’
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.