Author : Swati Prabhu

Published on Mar 22, 2024 Updated 0 Hours ago

২০২৪ উন্নয়ন অর্থায়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর হতে পারে, কারণ কীভাবে দেশগুলি জলবায়ু প্রয়োজনীয়তার পাশাপাশি তাদের ওডিএ বরাদ্দ নির্দেশিত করে তা পর্যবেক্ষণ করা আকর্ষণীয় হবে।

২০২৪ সালে ‘ন্যায্য অর্থায়নের’ জন্য ওডিএ-র পুনর্বিন্যাস

অতিমারির আর্থিক প্রচ্ছায়ার একটি প্রতিফলন হিসাবে মূল্যস্ফীতি আক্রমণের মুখে পড়লেও, তার বিরুদ্ধে স্থিতিস্থাপক থেকে বিশ্ব অর্থনীতি তার কিছুটা দক্ষতার প্রমাণ রেখেছে। অর্গানাইজেশন ফর ইকনমিক কো–অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) অনুসারে, গত বছরের ২.৯ শতাংশের তুলনায় ২০২৪ সালে জিডিপি বৃদ্ধির হার মৃদু শ্লথতার সঙ্গে ২.৭ শতাংশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । যাই হোক, স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্থায়নের ব্যবধান পূরণের জন্য ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার ক্রমবর্ধমান আহ্বানের মধ্যে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ভূচিত্র একটি ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে। এটি খণ্ডিত ও ভঙ্গুর অবস্থায় আছে। ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্ব, পুনর্নবীকৃত অস্থিতিশীলতা, এবং একটি শ্লথ অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের দৃশ্যমান পরিণতির পরিপ্রেক্ষিতে তাই উন্নয়ন–প্রদানকারীদের তাদের অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্স (ওডিএ) কৌশলগুলি পুনর্বিবেচনা করার ব্যাপক প্রয়োজন রয়েছে৷ যদিও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য গ্লোবাল নর্থ উন্নয়ন–প্রদানকারীদের বেশ কয়েকটি প্রতিশ্রুতির বৃদ্ধি দেখেছে, জলবায়ু অর্থায়ন এখনও যা প্রয়োজন তার থেকে কম। ২০২২ সালে ওডিএ–এর মোট পরিমাণ সর্বকালের সর্বোচ্চ ২০৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার স্পর্শ করা সত্ত্বেও, এটি এসডিজি–র বাস্তবায়নের জন্য ২,০০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বার্ষিক চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হয়েছে। ২০২৩ সালে প্রকাশিত ওইসিডি পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২১ সালে বরাদ্দকৃত দ্বিপাক্ষিক ওডিএ–র প্রায় ২৭.৬ শতাংশ জলবায়ু সক্রিয়তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে, যা ২০২০ সালের ৩৩.৭ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়েছিল (চিত্র ১)। এই পরিসংখ্যানগুলির একটি ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষণ এ কথাও প্রকাশ করে যে, যদিও ওডিএ–র একটি বড় অংশের লক্ষ্য জলবায়ু সক্রিয়তা (প্রশমন ও অভিযোজন উভয়ই), তবে এটি এই বরাদ্দের জন্য মৌলিক চালক ছিল না। ২০২১ সালে প্রায় ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার জলবায়ুকে একটি প্রধান উদ্দেশ্য হিসাবে বহন করেছে, যেখানে ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পেয়েছে সেই সব উদ্যোগ যা জলবায়ুকে একটি তাৎপর্যপূর্ণ লক্ষ্য হিসাবে ধরেছে।

চিত্র ১: দ্বিপাক্ষিক জলবায়ু-সম্পর্কিত ওডিএ–র স্ন্যাপশট (২০১৩–২০২১)

সূত্র: ‌
ওইসিডি

অধিকন্তু, যদিও অ্যাজেন্ডা ২০৩০ গৃহীত হওয়ার পর থেকে ওইসিডি–র উন্নয়ন সহায়তা কমিটির (ডিএসি) সদস্যদের জলবায়ু সম্পর্কিত উন্নয়ন অর্থায়ন
প্রায় ৬৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যাদের এটি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সেই পরিবেশগতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলি এর একটি কম অংশ পেয়েছিল। সেন্টার ফর গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট –এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে দাতারা বিভিন্ন জলবায়ু তহবিলের অংশ হিসাবে যা একত্র করেছেন — যেমন বিশ্ব ব্যাঙ্কের ব্যানারে গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড (জিসিএফ), গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফেসিলিটি (জিইএফ), এবং ক্লাইমেট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (সিআইএফ) — এর মাত্র ৫.৩৭ শতাংশ ১০টি সর্বাধিক জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ অর্থনীতির কাছে গিয়েছে। এটি একটি ‘‌অসঙ্গত জলবায়ু অর্থায়ন প্রক্রিয়ার গোলকধাঁধা’‌ প্রতিফলিত করে, যা অনুধাবনের ক্ষমতা নিম্ন–আয়ের ও ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলির নেই। অতিরিক্তভাবে, একটি দৃশ্যমান বিভাজন লক্ষ্য করা যায় যখন প্রশমনের বিপরীতে জলবায়ু অভিযোজনের জন্য ওডিএ বরাদ্দ করার ক্ষেত্রে অনেকগুলি ত্রুটির কথা উঠে আসে:‌ ক) ঝুঁকি ভাগ করা ও অনুমিত হিসাবের অভাব; খ) প্রণোদনার অভাব, বিশেষ করে অভিযোজন অর্থায়নের ক্ষেত্রে বেসরকারি ক্ষেত্রের জন্য; গ) তহবিল গ্রহণ ও নিয়োগের স্থানীয় ক্ষমতার অভাব, ইত্যাদি।


যে দেশগুলির প্রয়োজন তাদের শুধু পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থায়নই নয়, বরং অর্থের প্রয়োজনীয় গুণমান সুরক্ষিত করার অবস্থানে থাকতে হবে, অর্থাৎ অর্থের এমন ব্যবহার করতে হবে যা স্থিতিশীলতা তৈরি করে। 



তার উপর, শুধু জলবায়ু অর্থায়নই নয়, ২০২৩ সালে অর্থায়নের কথোপকথনে উঠে এসেছে মানবিক সহায়তার বিষয়টিও। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের অফিস (ইউএনওসিএইচএ) দ্বারা প্রকাশিত গ্লোবাল হিউম্যানিটারিয়ান ওভারভিউ ২০২৪ রিপোর্ট অনুসারে, মানবিক সংকট মোকাবিলায় অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তা এই বছর প্রায় ৪৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে বলে অনুমান করা হয়েছে। অধিকন্তু, ২০২৩ সালে দাতারা রাষ্ট্রপুঞ্জের মোট তহবিল প্রয়োজনের মাত্র ৩৫ শতাংশ পূরণ করতে পেরেছে, অর্থাৎ, ৫৬.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে ১৯.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অবশ্যই বিশ্বব্যাপী অশান্তির অভূতপূর্ব বৃদ্ধি — ইউক্রেন, ইজরায়েল ও গাজা, সুদান, এবং আফগানিস্তান — স্বাভাবিকভাবেই উন্নয়ন প্রদানকারীদের উপর চাপ সৃষ্টি করেছে। সংখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে ওডিএ নাটকীয়ভাবে বাড়লেও ক্রমবর্ধমান প্রয়োজনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে ব্যর্থ হয়েছে। তাহলে ওডিএ কি বিশ্বব্যাপী প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলায় অযোগ্য? ওডিএ –র পুনর্বিন্যাস করা প্রয়োজন, নাকি ওডিএ–র বাইরেও ভাবতে হবে? মিশরের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রী রানিয়া আল–মাশাত বলেছেন, এর উত্তর সম্ভবত ‘‌
ন্যায্য অর্থায়নের’‌ অনুশীলনকে সমর্থন করার মধ্যে রয়েছে। অবশ্যই যে দেশগুলির প্রয়োজন তাদের শুধু পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থায়নই নয়, বরং অর্থের প্রয়োজনীয় গুণমান সুরক্ষিত করার অবস্থানে থাকতে হবে, অর্থাৎ অর্থের এমন ব্যবহার করতে হবে যা স্থিতিশীলতা তৈরি করে। সম্ভবত, প্রতিযোগী উন্নয়ন প্রদানকারীদের মধ্যে সহযোগিতাকে উৎসাহিত করা একটি ক্রমবর্ধমান খণ্ডিত বিশ্বে ইতিবাচক পথ তৈরি করতে পারে। তাছাড়া, বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন ‘‌সহযোগিতা’‌, অর্থাৎ প্রতিযোগী উন্নয়ন প্রদানকারীদের একই উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য একসঙ্গে কাজ করা, বিতরণের সুবিধা করে দিয়ে উদ্ভাবনী অর্থায়নের মডেল, নিম্ন মূল্য, ও উন্নততর গণপণ্যের ব্যবস্থা করতে পারে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে হিসাব করা হয় যে, বিশ্বব্যাপী বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের ৪১০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি আর্থিক সম্পদ রয়েছে, যার মধ্যে ২.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলিতে ছড়িয়ে আছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন যে মূলধনের এই ব্যক্তিগত ক্ষেত্রগুলি বিশ্বব্যাপী অব্যবহৃত সম্পদগুলির মধ্যে একটি। এই প্রেক্ষাপটে বেসরকারি ক্ষেত্রকে সম্পৃক্ত ও আকৃষ্ট করার জন্য জনহিতকর মূলধনের সঙ্গে রেয়াতি সরকারি তহবিলের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে মিশ্রিত অর্থায়নের বিকল্পটিও কার্যকরভাবে অন্বেষণ করা যেতে পারে। তবে, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন সহজে আসে না। অবশ্যই, এক্ষেত্রে গ্লোবাল সাউথ দেশগুলিকে পরিপ্রেক্ষিতে রাখা দরকার, যারা ‘‌সহায়তা’‌ ও ‘‌সহায়তা’‌ শিল্পের অনুশীলনের উপনিবেশীকরণের কারণে গ্লোবাল নর্থ–এর সঙ্গে সহযোগিতা করার বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে সতর্ক ছিল । যদিও শুধু অর্থায়ন নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থার কোনও সম্পূর্ণ তালিকা নেই, বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে ওডিএ–র পুনর্বিন্যাসের জন্য তিনটি প্রাথমিক উপাদানের   উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে হবে —ক) উত্তর–দক্ষিণ বিভাজন অতিক্রম করে ঝুঁকিপূর্ণ ভৌগোলিক অঞ্চলে পৌঁছনো; খ) পারস্পরিক স্বার্থের মূল্য অনুধাবন, দায়িত্বের সঙ্গে একাত্মতা, এবং বোঝা ভাগ করে নেওয়ার মাধ্যমে নতুন নীতি তৈরি করা; গ) নতুন জোট গঠনের জন্য অর্থের শূন্যতা পূরণের লক্ষ্যে নতুন কণ্ঠ, কুশীলব ও এজেন্সি আনা। এই অর্থে, ২০২৪ সম্ভবত উন্নয়ন অর্থায়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর হতে পারে। এটি পর্যবেক্ষণ করা আকর্ষণীয় হবে যে দেশগুলি কীভাবে তাদের ওডিএ বরাদ্দগুলি ও জলবায়ু প্রয়োজনীয়তার সমন্বয়সাধন করে এবং কীভাবে তা ব্যবহার করে।



স্বাতী প্রভু অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সেন্টার ফর নিউ ইকনমিক ডিপ্লোম্যাসি (সিএনইডি)–র একজন অ্যাসোসিয়েট ফেলো।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.