Author : Oommen C. Kurian

Published on May 07, 2022 Updated 0 Hours ago

ভারতে কোভিড-১৯ অতিমারিতে অতিরিক্ত মৃত্যুর আনুমানিক হিসেব নিয়ে ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন (আই এইচ এম ই)–এর উপস্থাপিত গবেষণার একটি সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ।

কোভিডের সংখ্যা নির্ধারণ: সব অতিমারি মডেলই ভুল; কিছু কাজের এবং কিছু কাজের নয়

কোভিড-১৯ সম্পর্কিত মৃত্যুহারের একটি মডেল তৈরি করার প্রয়াসে ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন (আই এইচ এম ই)–এর গবেষকরা ২০২০ ও ২০২১ সালের জন্য ভারত–সহ ১৯১টি দেশে অতিমারি থেকে অতিরিক্ত মৃত্যুর একটি হিসেব তৈরি করেছেন। ফলাফলগুলি সম্প্রতি ‘দ্য ল্যানসেট’–এ প্রকাশিত হয়েছে। বৈশ্বিক অধ্যয়নের ভারতীয় অংশটি মূলত অতিরিক্ত মৃত্যুর অভিজ্ঞতাজনিত হিসেবের উপর ভিত্তি করে তৈরি। এতে অতিমারির বছরগুলির জন্য মৃত্যুর হিসেবের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে সাম্প্রতিক প্রাক-অতিমারি বছরগুলিতে রিপোর্ট করা সমস্ত কারণজনিত মৃত্যুর হিসেবের ভিত্তিতে ‘‌প্রত্যাশিত মৃত্যুর’‌ সংখ্যার। ১২টি ভারতীয় রাজ্যে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে, বেশিরভাগটাই ২০২০ ও ২০২১ সালে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যাবৃদ্ধির সময়ে। গবেষকেরা দাবি করেছেন যে যদিও ১ জানুয়ারি ২০২০ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২১–এর মধ্যে সরকারি ভাবে বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯-এ মৃতের সংখ্যা ছিল ৫৯ লাখ, কিন্তু ওই একই সময়ে প্রকৃত ‘‌অতিরিক্ত’‌ মৃত্যু ঘটেছে ১.৮২ কোটি। সমীক্ষা অনুসারে, আনুমানিক কোভিড-১৯ ও নন-কোভিড-১৯ অতিরিক্ত মৃত্যুর সর্বাধিক সংখ্যা পাওয়া গিয়েছে ভারতে (৪১ লাখ), এবং পরোক্ষ ভাবে এই ধরনের মৃত্যুকে কোভিড-১৯ মৃত্যু হিসেবে ধরা হয়েছে। সেই অনুযায়ী দাবি করা হয়েছে যে ভারতে কোভিড-১৯ মৃত্যুর সংখ্যা আনুষ্ঠানিক ভাবে রেকর্ড করা মৃত্যুর সংখ্যার চেয়ে আট গুণ বেশি।

উপসংহার প্রশ্নাতীত নয়

আরও বেশ কয়েকটি অনুরূপ প্রয়াস চলছে, এবং সেই কারণে একটি পিয়ার-রিভিউড জার্নালে বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯-সম্পর্কিত অতিরিক্ত মৃত্যুর প্রথম হিসেব প্রকাশ করার জন্য বিশ্বব্যাপী দৌড় চলছিল। আই এইচ এম ই দলটি সেই দৌড়ে জিতেছে। কিন্তু এই হিসেব বিভিন্ন কারণে সমস্যাসঙ্কুল। প্রথমত, এই ধরনের যে কোনও হিসেবের উৎকর্ষ নির্ভর করে  উপলব্ধ তথ্যের গুণমান, মডেলটিতে কী ভাবে অনিশ্চয়তার বিষয়টি রাখা হয়েছে, এবং আনুমানিক হিসেবের বৈশিষ্ট্যের উপর। দ্বিতীয়ত, অতিমারি চলাকালীন শুধু কোভিড–১৯-এর জন্য মৃত্যু এবং কোভিড–১৯ ও নন–কোভিড–১৯ মিলিয়ে মৃত্যুর মধ্যে পার্থক্য করা খুব কঠিন কাজ। তৃতীয়ত, প্রাক-অতিমারি সময়ের মৃত্যুর রিপোর্টকে অতিমারি চলাকালীন মৃত্যুর রিপোর্টের প্রক্সি হিসেবে ধরে নেওয়া ঠিক নয়। এই প্রসঙ্গে মিডিয়া নিবন্ধগুলিতে যা দাবি করা হয়েছে সেই মতো এটা ধরে নেওয়া ভুল যে ৪১ লাখ মৃত্যু ‘‌অতিরিক্ত’‌ মৃত্যু, বা এগুলি সবই কোভিড-১৯–এর কারণে মৃত্যু ছিল।

প্রাক-অতিমারি বছরগুলিতে সি আর এস-এর কাছে পুরো সংখ্যা নথিভুক্ত না–হওয়ার ঘটনা ও অতিমারি বছরের জন্য আনুমানিক মৃত্যুর হিসেব এই সমীক্ষায় কষা হয়েছে সীমিত সংখ্যক মাসের জন্য রিপোর্ট–করা নিবন্ধিত মৃত্যুর সংখ্যার সঙ্গে তুলনা করে।

বর্তমান আই এইচ এম ই অধ্যয়নটি ২০২০ ও ২০২১ সালের উচ্চ সংক্রমণের মাসগুলিতে ১২টি রাজ্যের অপ্রমাণিত সিভিল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম (সি আর এস) ডেটার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, যা মূলত সংবাদ ও অ–প্রাথমিক উৎস থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে, এবং তা এই দুই বছরের জন্য মৃত্যুহার বার করতে ব্যবহার করা হয়েছে। তথ্যের বৈধতা বা গুণমান যাচাই করা হয়েছে কি না তা প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট নয়। প্রাক-অতিমারি বছরগুলিতে সি আর এস-এর কাছে পুরো সংখ্যা নথিভুক্ত না–হওয়ার ঘটনা ও অতিমারি বছরের জন্য আনুমানিক মৃত্যুর হিসেব এই সমীক্ষায় কষা হয়েছে সীমিত সংখ্যক মাসের জন্য রিপোর্ট–করা নিবন্ধিত মৃত্যুর সংখ্যার সঙ্গে তুলনা করে, এবং এর বেশিরভাগই হল জুলাই ২০২০ ও জুন ২০২১–এর মধ্যেকার। সেই হিসেবটাও করা হয়েছে একই সময়ের জন্য ২০১৮ ও ২০১৯–এর গড় মৃত্যুর তুলনা করে। তবে অতিমারিতে সাড়া দেওয়ার জন্য পুরো স্বাস্থ্য–ব্যবস্থাকে যতটা ভাল ভাবে সাজিয়ে তোলা সম্ভব হয়েছিল, তা বিবেচনা করলে বোঝা যাবে স্বাভাবিক সময়ে মৃত্যুর সংখ্যার কম নথিভুক্তির মাত্রা আর কোভিড-১৯ মৃত্যুর কম নথিভুক্তির তুলনা খুব ভাল তুলনা হবে না। এছাড়াও, কোভিড-১৯ আক্রান্তদের পরিবারগুলিকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে, এবং অসুখটি সম্পর্কে আরও ভাল করে যাতে খবর আসে তার জন্য উৎসাহ তৈরি করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর ফলে ১৮টি রাজ্য মিলিয়ে ২০২১ সালের মাঝামাঝি থেকে রিপোর্ট করা ৮০,০০০–এরও বেশি মৃত্যু পরে নথিভুক্ত হয়েছে। রিপোর্টেড ব্যাকলগগুলি ‘দ্য ল্যানসেট’–এর বিশ্লেষণে ব্যবহার করা হলেও আমরা জানি না যে এই বিশদগুলি লেখকদের গণনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কিনা।

লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, তুলনায় ধনী দেশগুলিতে রুটিন সিআরএস ডেটা পাওয়া গেলেও আই এইচ এম ই গবেষকরা তাঁদের বিশ্লেষণে মৃত্যু নিবন্ধনের বিলম্বিত তথ্যগুলো বাদ দিয়েছিলেন। ভারতে কিন্তু মৃত্যু নিবন্ধনে বিলম্ব সিআরএস-এর একটি পদ্ধতিগত বৈশিষ্ট্য, এবং সেই কারণেই মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির রিপোর্ট করা তথ্যের বৈধতা যাচাই না–করে তা কী ভাবে ব্যবহার করা হল তা স্পষ্ট নয়। তা ছাড়া ভারত সরকার যথার্থতা অর্জনের জন্য নিয়মিত ভাবে মৃত্যুর সংখ্যা প্রকাশ করে। প্রকৃতপক্ষে ভারত সরকার নিজেই নিবন্ধিত ও আনুমানিক মৃত্যুর মধ্যে ব্যবধানও নির্দেশ করে। যেমন ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ভারতজুড়ে সিআরএস-এ নিবন্ধিত ১.৪৬ কোটি মৃত্যুর পাশাপাশি দেশে ভারত সরকারের হিসেব অনুযায়ী অনুমিত মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১.৬৫ কোটি। এখানে পার্থক্য ছিল ১৯.২ লক্ষের। নমুনা নিবন্ধন ব্যবস্থার (এসআরএস) ডেটা ব্যবহার করে মৃত্যুর দ্বিতীয় সেটটির হিসেব কষা হয়। এর তথ্য ও পদ্ধতি পাবলিক ডোমেনে আছে। যে হেতু মৃত্যু নিবন্ধন উন্নততর হয়েছে (২০১৯ সালে ৯২ শতাংশ), তাই নিবন্ধিত এবং অনুমানের মধ্যে ব্যবধান ধারাবাহিক ভাবে হ্রাস পেয়েছে। এই সমস্ত নতুন করে করা হিসেব বিনামূল্যে পাবলিক ডোমেনে উপলব্ধ। এ সবের খুব কমই ভারতীয় মিডিয়াতে নাটকীয় বা চাঞ্চল্যকর কভারেজ পেয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, সরকারের বিশেষজ্ঞরা বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র প্রকাশ করে নিজেদের আগেকার হিসেবগুলিকে সংশোধন করে বাড়িয়েছেন, এবং তার কিছুটা দ্য ল্যানসেট-এই প্রকাশিত হয়েছে।

ভারতে কিন্তু মৃত্যু নিবন্ধনে বিলম্ব সিআরএস-এর একটি পদ্ধতিগত বৈশিষ্ট্য, এবং সেই কারণেই মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির রিপোর্ট করা তথ্য বৈধতা যাচাই না–করে কী ভাবে ব্যবহার করা হল তা স্পষ্ট নয়।

দুই বছরে ৪১ লাখ অতিরিক্ত মৃত্যুর আখ্যানে ভেসে যাওয়ার আগে ভারতের স্বাস্থ্য ও ডেটা সিস্টেম এবং মৃত্যুর সঠিক হিসেব কষার জটিলতাগুলি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। অত্যাধুনিক চিকিৎসার সুবিধাগুলি কী ভাবে ছড়িয়ে আছে তা মাথায় রেখে বলা যেতে পারে, একটি রাজ্যে মৃত্যুর যে ঘটনাগুলি উল্লেখিত নয়, তা অন্য রাজ্যে রেকর্ড করা আছে। বিভিন্ন রাজ্যের লোকেরা প্রায়শই গুরুতর অসুস্থতার ক্ষেত্রে কেরালার মতো রাজ্যে আরও ভাল স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবার সুযোগ নেয়। ফলে কেরালায় সাধারণ বছরগুলিতে মৃত্যু নিবন্ধন প্রায়শই ১০০ শতাংশের বেশি হয়েছে, এবং কেরালার ৫৮,৫০০ রিপোর্ট হওয়া কোভিড–১৯ মৃত্যু একই সময়ের জন্য সিআরএস সিস্টেমের ‘‌অতিরিক্ত মৃত্যু’‌র  রিপোর্টের তুলনায় অনেক বেশি। রাজ্যস্তরের আন্ডার রিপোর্টিংকে যে প্রায়শই অত্যধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়, সেই বিষয়টি সম্ভবত আইএইচএমই অধ্যয়নে মাথায় রাখা হয়নি।।

কিছু হিসেব অনুসারে, ২০২০ ও ২০২১ যদি ‘‌স্বাভাবিক বছর’‌ হত, তা হলে দুই কোটি মানুষ বা প্রতিদিন ২৭,০০০-এর বেশি মানুষ নন-কোভিড-১৯ কারণে মারা যেতেন। অতিমারি বছরগুলিতে, অন্তর্নিহিত অবস্থা বা অন্যান্য গুরুতর অসুস্থতা নির্বিশেষে, যাঁরা তাঁদের মৃত্যুর সময় বা কাছাকাছি সময়ে কোভিড-১৯ পজিটিভ ছিলেন তাঁদের ভারতে কোভিড-১৯ মৃত্যু হিসেবে গণনা করা হয়েছে। অন্যান্য অসুখে গুরুতর অসুস্থ অনেক রোগীর কোভিড-১৯ পজিটিভ অবস্থা শুধু বাধ্যতামূলক পরীক্ষার কারণে হাসপাতালে প্রবেশের সময়েই নজরে এসেছিল। এ থেকে বোঝা যায় যে এগুলিকে ‘‌অতিরিক্ত মৃত্যু’‌ হিসেবে ধরার পরিবর্তে কোভিড-১৯ ব্যতিরেকে ভারতে প্রতিদিন ২৭,০০০ মৃত্যুর একটি প্রধান সাবসেট হিসেবে ধরা যুক্তিযুক্ত। এছাড়াও, বিশেষ করে যে রাজ্যগুলিতে স্বাস্থ্যব্যবস্থা দুর্বল, সেখানে ২০২০ ও ২০২১ সালে যে অতিরিক্ত মৃত্যু ঘটেছিল তার অনেকগুলি কোভিডের কারণে অন্য অসুখের ক্ষেত্রে বিলম্বিত বা অনুপলব্ধ চিকিৎসার কারণেও হয়ে থাকতে পারে।

হু-এর কোভিড-১৯–এ বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যার প্রকল্প এখনও দক্ষিণ এশিয়ার জন্য কোনও হিসেব প্রকাশ করেনি, সম্ভবত দুর্বল ডেটা সিস্টেমের প্রেক্ষাপটে সঠিক হিসেব কষতে অসুবিধার কারণে। হু–এর মতে আফ্রিকা, পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় ও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১০৬টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে মাত্র ১৬টির কাছে এই ধরনের বাস্তবসম্মত গণনা করার জন্য পর্যাপ্ত তথ্য রয়েছে। যাই হোক, আই এইচ এম ই গবেষকদল এই বাধ্যতামূলক সীমাবদ্ধতাকে অগ্রাহ্য করেছে বলে মনে হচ্ছে, এবং বিভিন্ন মানের যে কোনও ধরনের ডেটা ব্যবহার করেছে, যা প্রায়শই মিডিয়া নিবন্ধ থেকে নেওয়া। এমনটা করার কারণ হল বিশ্বব্যাপী একটা হিসেব তুলে ধরা। গবেষণাটি নিয়ে বিপদাশঙ্কাপূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর মিডিয়া কভারেজ এই বিষয়টি উল্লেখ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

উপসংহার

অপ্রতুল ও নিম্ন মানের ডেটার উপর ভিত্তি করে কোভিড-১৯ মডেলিং ইতিমধ্যেই প্রচুর ক্ষতি করেছে, যার মধ্যে আছে লকডাউন এবং অন্য অসুখগুলির মূল্যে কোভিডের জন্য দ্রুত চিকিৎসা ব্যবস্থা ঢেলে সাজার এককমুখী সিদ্ধান্ত। আমরা কোভিড-১৯ মৃত্যুহার অনেক বাড়িয়ে দিয়ে আসন্ন তরঙ্গের ক্ষেত্রে আবার একই ভুল করতে পারি না। প্রমাণের একটি হালকা স্তরের উপর ভিত্তি করে এই গবেষণাটি চালানো হলেও, কাজটি প্রকৃতপক্ষে যতটা না কোভিড–সম্পর্কিত, তার চেয়ে বেশি তা অতিমারি চলাকালীন অন্যান্য কারণে মৃত্যুর বিষয়ে প্রযোজ্য। এটা আশা করা যায় যে যখন ভারতীয় রাজ্যগুলি থেকে আরও পদ্ধতিগত সিআরএস ডেটা উপলব্ধ করা হবে, লেখকরা তাঁদের বর্তমান অনুমানগুলি সংশোধন করবেন, এবং আরও প্রসঙ্গ-নির্দিষ্ট হিসেব উপস্থাপন করবেন। ভারতীয় রাজ্যগুলির মধ্যে মহাদেশসম বৈচিত্র্যের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, রাজ্য-স্তরের ডেটা উপলব্ধ হলে এই অনুশীলন সম্ভব হবে, শক্তিশালী কিন্তু অবাস্তব অনুমানের ভিত্তিতে নয়।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.