Published on May 30, 2025 Updated 0 Hours ago

ট্রাম্পের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্সির সময় ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তনগুলির মধ্য দিয়ে এগনোর সময় উদীয়মান সামুদ্রিক ও প্রযুক্তিগত হুমকি মোকাবিলায় কোয়াডকে গোয়েন্দা সহযোগিতা আরও গভীর করতে হবে

কোয়াড গোয়েন্দা সহযোগিতা: প্রতিযোগিতামূলক যুগে সম্ভাবনা

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানের সাইডলাইনে কোয়াডের বিদেশমন্ত্রীদের প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিকে বিশ্লেষকেরা ‘‌সংক্ষিপ্ত ও মিষ্টি’‌ বলে বর্ণনা করেছিলেন। শীর্ষ সম্মেলনের ‌বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশটি, যেখানে মার্কিন বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিও মন্ত্রিসভার সদস্য হিসাবে প্রথম ভূমিকায় অবতীর্ণ হন, পরিবর্তিত ও ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতামূলক নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে কোয়াডের স্থায়ী ঐক্য ও কৌশলগত গুরুত্বকে তুলে ধরেছিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখন তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালনের সময় এই প্রতিযোগিতামূলক নিরাপত্তা ব্যবস্থার মুখোমুখি হয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে এর সদস্য-রাষ্ট্রগুলির মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতার মাত্রা এবং মানের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগির প্রশ্নটি এই জাতীয় বিষয়গুলির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে, বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক এবং তার বাইরেও আরও প্রতিযোগিতামূলক ভূ-রাজনৈতিক দৃশ্যপটে।



গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগির প্রশ্নটি এই জাতীয় বিষয়গুলির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে, বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক এবং তার বাইরেও আরও প্রতিযোগিতামূলক ভূ-রাজনৈতিক দৃশ্যপটে।



নতুন সমন্বয়: জলদস্যু বিরোধিতা এবং সমুদ্র তলদেশের সচেতনতা

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল এবং বৃহত্তর সমুদ্র অঞ্চলে নতুন নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জগুলি সামনে এসেছে। রাষ্ট্র-সমর্থিত এবং অ-রাষ্ট্রীয় উভয় পক্ষের দ্বারা পরিচালিত জলদস্যুতা ভারত মহাসাগর অঞ্চলের (আইওআর)
পশ্চিম প্রান্তে পুনরুত্থিত হচ্ছে, যা বিপন্ন করছে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য প্রবাহকে এবং ফলস্বরূপ বিশ্ব অর্থনীতিকে, বিশেষ করে কোয়াডের অর্থনৈতিক শক্তিকে। অন্যত্র, সুইডেনের ও সম্প্রতি তাইওয়ানের জলসীমার কাছে সাবমেরিন কেবলের ক্ষতিতে চিনের সন্দেহজনক ভূমিকা সমুদ্রের তলদেশে ক্রমবর্ধমান আক্রমণাত্মক ক্ষমতার দিকে ইঙ্গিত করে। এই উভয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কোয়াড গোয়েন্দা পরিষেবাগুলিকে যৌথ কৌশল এবং সর্বোত্তম অনুশীলন বিকাশ করতে হবে।


কোয়াড দেশগুলি সামুদ্রিক ক্ষেত্রের মধ্যে, বিশেষ করে সমুদ্র পৃষ্ঠে উদ্ভূত অনন্য গোয়েন্দা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়, পারদর্শী প্রমাণিত হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, ২০২২ সালে চালু হওয়া
ইন্দো-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ ফর মেরিটাইম ডোমেন অ্যাওয়ারনেস (‌আইপিএমডিএ)-‌এর মতো ব্যবস্থাগুলি 'ডার্ক শিপিং'-এর মতো নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জগুলিকে যৌথভাবে মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে কোয়াডের প্রচেষ্টাকে এক শক্তিশালী পদক্ষেপ হিসাবে তুলে ধরেছে। 'ডার্ক শিপিং',-‌এর সংশ্লিষ্ট সামুদ্রিক জাহাজগুলি প্রায়শই সংগঠিত অপরাধ সিন্ডিকেট এবং অবৈধ রাষ্ট্রীয়/অ-রাষ্ট্রীয় খেলোয়াড়দের সঙ্গে যুক্ত থাকে, এবং ঐতিহ্যবাহী নজরদারি স্থাপত্য এড়িয়ে তাদের কার্যক্রমে গোপনীয়তা অর্জনের চেষ্টা করে। তবুও, এর মোকাবিলায় মনোযোগ থাকে প্রধানত সমুদ্রপৃষ্ঠের উপর। কিন্তু সাবমেরিন ডোমেন — বিস্তৃত গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় পরিকাঠামোর বিশাল নেটওয়ার্কের কারণে ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার একটি পরিসর — বর্ধিত গোয়েন্দা ভাগাভাগি এবং সেন্সর ও অস্ত্র ব্যবস্থার মতো সমুদ্রতলের আইএসআর প্রযুক্তির যৌথ বিকাশের ক্ষেত্রে কোয়াড সদস্য-রাষ্ট্রগুলির মধ্যে বৃহত্তর সমন্বয়ের দাবি রাখে। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠেয় পরবর্তী কোয়াড লিডার্স সামিটে আইপিএমডিএ আপডেট করাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ, যাতে সমুদ্রতল পরিসর সচেতনতা (ইউডিএ) কে এমডিএ-এর মূল কাজ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা যায় এবং এই লক্ষ্যে সক্ষমতা ও যোগাযোগ কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা যায়।



কোয়াড দেশগুলি সামুদ্রিক ক্ষেত্রের মধ্যে, বিশেষ করে সমুদ্র পৃষ্ঠে উদ্ভূত অনন্য গোয়েন্দা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়, পারদর্শী প্রমাণিত হয়েছে।



জাতীয় পর্যায়ে, ভারতের তথ্য সংযোজন কেন্দ্র-ভারত মহাসাগর অঞ্চল (আইএফসি-আইওআর) ২০২০-র দশকের মাঝামাঝি সময়ে কোয়াড সদস্য-রাষ্ট্রগুলির মধ্যে এই ধরনের কিছু সমন্বয়কে সক্ষম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, যা নয়াদিল্লিকে তার কোয়াড অংশীদারদের মধ্যে একটি অ্যাজেন্ডা-নির্ধারক হিসাবে স্থাপন করবে। যা তেমনভাবে প্রচারিত নয় তা হল, আইএফসি-আইওআর-এর গত এক বছরে সাফল্য উল্লেখযোগ্য, এবং এর রিয়েল-টাইম গোয়েন্দা তথ্যের প্রচার মারকস বিশেষ বাহিনীকে ২০২৪ সালের গোড়ার দিকে
জলদস্যু-‌বিরোধী বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জনে সহায়তা করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের নৌ-‌প্রতিনিধি সহ বেশ কয়েকজন আন্তর্জাতিক যোগাযোগ কর্মকর্তাকে আতিথেয়তা দেওযার পর আইএফসি-আইওআর এখন কোয়াডের মধ্যে ভারতের গোয়েন্দা কৌশলের স্থাপত্যে একটি বৃহত্তর ভূমিকা পালন করার জন্য উপযুক্ত অবস্থানে রয়েছে, এবং তা এর মাধ্যমে  কোয়াডকে তার মহৎ কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম করবে।


ট্রাম্প ২.০: লক্ষ্যণীয়ভাবে ইতিবাচক

ওভাল অফিসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পুনরায় প্রবেশ বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন ধরনের  সমাদর পেয়েছে। পশ্চিম ইউরোপ মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক ভূখণ্ডগত দাবি এবং তাঁর দেশের মধ্যে রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জোগাড়ের বিষয়ে সতর্ক থাকলেও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মতামত
অনেক কম কঠোর। বরং অনেকেই তাঁর লেনদেনবাদ এবং কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গিকে তাদের নিজস্ব বিদেশনীতির জন্য সম্ভাব্যভাবে অনুকূল বলে স্বাগত জানিয়েছেন। কোয়াডের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন দৃষ্টিভঙ্গির ক্ষেত্রে, বা গোয়েন্দা সহযোগিতা সম্পর্কিত প্রশ্নগুলির সঙ্গে সম্পর্কিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভূমিকার ক্ষেত্রেও, একই রকম যুক্তি প্রয়োগ করা যেতে পারে।


শুরুতেই, ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির অধীনে আন্তঃকোয়াড গোয়েন্দা সহযোগিতার সম্ভাবনা ইতিবাচক বলে মনে হচ্ছে — বিশেষ করে যেহেতু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তর্কাতীতভাবে, ব্লকের সবচেয়ে শক্তিশালী সদস্য। মার্কো রুবিও, এনএসএ মাইকেল ওয়াল্টজ, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার অন্য গুরুত্বপূর্ণ সদস্যেরা বেজিংয়ের বিরুদ্ধে একটি সাধারণভাবে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করার পর, এবং সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চিনা আমদানির উপর শুল্ক আরোপের হুমকি বাস্তবায়িত হওয়ার পর, যুক্তিসঙ্গতভাবে অনুমান করা যায় যে ট্রাম্প প্রশাসন কোয়াডের মধ্যে তার লেনদেনে এই নীতিমালা অব্যাহত রাখবে, যার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্যের মতো কৌশলগত সক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টাও অন্তর্ভুক্ত। প্রকৃতপক্ষে, প্রথম ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০২০ সালের গ্রীষ্মে গালওয়ান সঙ্কটের সময় ভারতকে
পরোক্ষ গোয়েন্দা সহায়তা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। প্রকল্প ২০২৫ এর অংশগুলি, যা ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য নীতিগত নীলনকশা হিসাবে কাজ করবে বলে অনুমান করা হচ্ছে, কোয়াড চ্যানেলের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে।



প্রথম ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০২০ সালের গ্রীষ্মে গালওয়ান সঙ্কটের সময় ভারতকে পরোক্ষে গোয়েন্দা সহায়তা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।


তবুও, চ্যালেঞ্জগুলি এখনও রয়ে গিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের মধ্যে এখন প্রযুক্তি জগতের বিভিন্ন শক্তিশালী উদ্যোক্তা এবং শিল্পপতিরা রয়েছেন, যাঁদের প্রায়শই চিনে বিশাল ব্যবসায়িক স্বার্থ রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, এই ধরনের ঘটনাগুলি বিশ্লেষকদের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের বেজিংয়ের প্রতি সম্ভাব্য ঝোঁক বা 'ডিল' সম্পর্কে উদ্বেগ তৈরি করেছে। এইভাবে গোয়েন্দা তথ্য ভাগ করে নেওয়ার অখণ্ডতা ও সুরক্ষা ঘিরে কাউন্টার-‌ইনট্যালিজেন্স সংক্রান্ত উদ্বেগও প্রচুর। ভারত অবশ্য তুলনামূলকভাবে অক্ষত রয়েছে, কারণ দেশটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ হলেও চুক্তিবদ্ধ অংশীদার নয়,‌ এবং তাই অস্ট্রেলিয়া বা জাপানের তুলনায় মার্কিন গোয়েন্দা অ্যাজেন্ডার উপর তুলনামূলকভাবে কম নির্ভরশীল। ক্যানবেরা ও টোকিও উভয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের মধ্যে যে অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে, তা কোয়াডের মতো একটি ক্ষুদ্রতর গোষ্ঠীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যার ফলে বৃহত্তর গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি এবং সহযোগিতার উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।


আমেরিকাতে দেশের
গোয়েন্দা সম্প্রদায়ের আকার কমানোর জন্য অভ্যন্তরীণ প্রচেষ্টা কোয়াডের জন্য পরিণতি বয়ে আনবে। সিআইএ-র নতুন পরিচালক জন র‍্যাটক্লিফের কথা যদি বিশ্বাস করা হয়, তাহলে সিআইএ-র সর্বশেষ ও আরও সরল আকারটি চিনের বিরুদ্ধে — যে দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘‌সবচেয়ে বড় ভূ-রাজনৈতিক হুমকি’ — লক্ষ্যভিত্তিক ও আক্রমণাত্মকভাবে আরও সম্পদ উৎসর্গ করার সুযোগ করে দেবে। এটি কোয়াডের সদস্য-রাষ্ট্রগুলির উদ্বেগ প্রশমন ও স্বার্থের প্রতি অনুকূল। তবুও, একটি সঙ্কুচিত ও ক্রমবর্ধমানভাবে অপ্রত্যাশিত সিআইএ কিন্তু অন্য কোয়াড সদস্য রাষ্ট্রগুলির পরিষেবা সম্প্রসারিত ও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়, যাতে মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য এবং এর সঙ্গে সংযুক্ত কূটনৈতিক বোঝা কমানো যায়। প্রকৃতপক্ষে, দ্বিতীয় ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে মার্কিন গোয়েন্দা সম্প্রদায়ের পরিবর্তিত চেহারা কোয়াড সদস্য-রাষ্ট্রগুলিকে তাদের জাতীয় গোয়েন্দা সম্প্রদায়গুলির সম্প্রসারণ ও সংস্কারের মাধ্যমে স্বতন্ত্রভাবে কৌশলগত শক্তি বিকাশের সুযোগ করে দেবে;‌ এবং একইসঙ্গে সাধারণ স্বার্থ বজায় রাখার জন্য ছোট, প্রায়শই ত্রিপক্ষীয় কাঠামোতে সহযোগিতার পথ প্রশস্ত করবে। এটি সাফারি ক্লাবের মতো রূপ নিতে পারে — যেটি ছিল ১৯৭০ এর দশকের শেষের দিকে প্রতিষ্ঠিত মিশর, সৌদি আরব, মরক্কো, ফ্রান্স ও বিপ্লব-পূর্ব ইরানের নিরাপত্তা পরিষেবাগুলির মধ্যে আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যে সাধারণ স্বার্থ বজায় রাখার জন্য পঞ্চপক্ষীয় গোয়েন্দাতথ্য ভাগাভাগি নেটওয়ার্ক। এটি সেই সময় তৈরি হয় যখন তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী গোয়েন্দা অংশীদার সিআইএ-‌র ডানা ছেঁটে ফেলা হয়েছিল তার ক্ষমতার অপব্যবহারের তদন্তকারী চার্চ কমিটির নির্দেশে। যদিও ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের মধ্যে গোয়েন্দা সহযোগিতার একটি নতুন মডেলের ঠিক একই আকার নেওয়ার প্রয়োজন নেই, তবে এটি অন্য কোয়াড সদস্য-রাষ্ট্রগুলিকে কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন বজায় রেখে এবং ভবিষ্যতে ওয়াশিংটনের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা এড়াতে মার্কিন গোয়েন্দা পরিষেবাগুলির সঙ্গে যতটা সম্ভব সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করতে সক্ষম করবে।



দ্বিতীয় ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে মার্কিন গোয়েন্দা সম্প্রদায়ের পরিবর্তিত চেহারা কোয়াড সদস্য-রাষ্ট্রগুলিকে তাদের জাতীয় গোয়েন্দা সম্প্রদায়গুলির সম্প্রসারণ ও সংস্কারের মাধ্যমে স্বতন্ত্রভাবে কৌশলগত শক্তি বিকাশের সুযোগ করে দেবে;‌ এবং একইসঙ্গে সাধারণ স্বার্থ বজায় রাখার জন্য ছোট, প্রায়শই ত্রিপক্ষীয় কাঠামোতে সহযোগিতার পথ প্রশস্ত করবে।



একইসঙ্গে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে উদীয়মান প্রযুক্তির ক্ষেত্রে, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে, চিনের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চলতি প্রতিযোগিতা এই ক্ষেত্রটিতে সহযোগিতার ব্যবস্থার প্রেক্ষিতে প্রতিকূল পরিণতি ডেকে আনতে পারে। কারণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোয়াডের
গুরুত্বপূর্ণ ও উদীয়মান প্রযুক্তি ওয়ার্কিং গ্রুপ দ্বারা প্রদর্শিত বহুপাক্ষিকতার চেয়ে জাতীয় উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেয়। এর ফলে গোয়েন্দা যোগাযোগের উপর ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে, যা অংশীদার গোয়েন্দা পরিষেবাগুলিকে এই ক্রমবর্ধমান পরিসরের মধ্যে সেরা অনুশীলনে ও বিপদের কারণগুলির পূর্ণাঙ্গ ধারণা অর্জনে বাধা দেবে।


জাতীয় কাউন্টার-‌ইনট্যালিজেন্স: বহুপাক্ষিক সহযোগিতার জন্য একটি পূর্বশর্ত

কোয়াডের সদস্য রাষ্ট্রগুলি তাদের জাতীয় গোয়েন্দা পরিষেবাগুলির সক্ষমতা জোরদার করার জন্যও পদক্ষেপ করছে, যা হল বহুপাক্ষিক গোয়েন্দা ভাগাভাগির অপরিহার্য শর্ত এবং এমন একটি পরিসরে আস্থা ও তথ্য ভাগাভাগির জন্য প্রণোদনা যেখানে গোপনীয়তা প্রায়শই ঘনিষ্ঠভাবে সুরক্ষিত রাখা হয়, এমনকি মিত্রদের কাছ থেকেও। জাপানি কাউন্টার ইন্ট্যালিজেন্স এজেন্সিগুলির দীর্ঘদিন ধরে এই বিষয়ে ঘাটতি থেকে গিয়েছে, কারণ তাদের
শুধুই 'সাংগঠনিক' বিপদ-‌খেলোয়াড়দের দিকে লক্ষ্য রাখার জন্য কাজ করতে বলা হয়েছিল (এমন একটি মডেল যা প্রায়শই রাষ্ট্র-সমর্থিত শিল্প গুপ্তচরবৃত্তির বাস্তবতার সঙ্গে সমন্বিত নয়)। আরও সম্প্রতি, চিনা হ্যাকার গ্রুপ মিররফোর্সের সমন্বিত সাইবার আক্রমণের মুখোমুখি অবস্থায় এই সীমাবদ্ধতা আরও ভাল বোঝা গিয়েছিল। তবুও সাম্প্রতিক সময়ে জাপান তার জাতীয় গোপনীয়তা সুরক্ষিত করার প্রচেষ্টা শুরু করেছে। ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে সরকারের অভ্যন্তরে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক বিভাগে কর্মরতদের উপর আরও শক্তিশালী নিরাপত্তা পরীক্ষা প্রতিষ্ঠার জন্য আইন প্রণয়ন করা হয়েছে, যে বিভাগটি ক্রমবর্ধমানভাবে চিনা গুপ্তচরবৃত্তির লক্ষ্যবস্তু।



ভারতের মাল্টি-এজেন্সি সেন্টার (এমএসি) আগামী মাসগুলিতে সম্প্রসারিত হতে চলেছে, যা দেশীয় সংস্থাগুলির মধ্যে বৃহত্তর আন্তঃকার্যক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি গোয়েন্দা তথ্যের বহিরাগত প্রবাহের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করবে।



ভারতের মাল্টি-এজেন্সি সেন্টার (এমএসি)
আগামী মাসগুলিতে সম্প্রসারিত হতে চলেছে, যা দেশীয় সংস্থাগুলির মধ্যে বৃহত্তর আন্তঃকার্যক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি গোয়েন্দা তথ্যের বহিরাগত প্রবাহের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করবে। একইভাবে, অস্ট্রেলিয়াও গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত কর্মসূচি — যা বিশেষ করে অওকাস ম্যান্ডেটের অধীনে পরিচালিত, যেমন যৌথ পারমাণবিক সাবমেরিন টাস্কফোর্স — সুরক্ষিত করার জন্য আপস-বিরোধী ব্যবস্থার উপর জোর দিতে শুরু করেছে এই প্রকল্পগুলির মধ্যে এএসআইও অফিসারদের অন্তর্ভুক্ত করে।


সম্ভবত ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে আর কখনও কোয়াড এবং এর যৌথ প্রচেষ্টার এত বেশি প্রয়োজন পড়েনি। এশিয়ায় ভূ-রাজনৈতিক ত্রুটি-বিচ্যুতির সম্প্রসারণ, বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক জোয়ারের পরিবর্তন, এবং ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে প্রযুক্তিগত ও কৌশলগত অভিন্নতার নতুন ক্ষেত্রগুলির উত্থান এই নতুন ক্ষেত্রগুলিতে, বিশেষ করে গোয়েন্দা ক্ষেত্রে, যৌথ সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার পুনরাবৃত্তি করে। সম্ভাব্যতার পরিপ্রেক্ষিতে এই ক্ষেত্রে যৌথ সহযোগিতা কীভাবে পরিচালিত হবে, তা এমন এক সময়ে চূড়ান্তভাবে এর সাফল্য ও কার্যকারিতা নির্ধারণ করবে যখন আমরা ২১ শতকের দ্বিতীয় চতুর্থাংশে প্রবেশ করছি।



অর্চিষ্মান রায় গোস্বামী অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একজন অনাবাসী জুনিয়র ফেলো।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Author

Archishman Ray Goswami

Archishman Ray Goswami

Archishman Ray Goswami is a Non-Resident Junior Fellow with the Observer Research Foundation. His work focusses on the intersections between intelligence, multipolarity, and wider international politics, ...

Read More +