Image Source: Getty
বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড জে ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন থেকে বিশাল অন্তর্নিহিত প্রত্যাশা রয়েছে। দেশীয় অর্থনীতির ক্ষেত্রর অভ্যন্তরমুখী দৃষ্টিভঙ্গিতে সরে যাওয়া থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক দোলাচলের মাধ্যমে বাহ্যিক বিঘ্ন পর্যন্ত, ট্রাম্পের আগামী চার বছরের প্রেসিডেন্সি অননুমেয় হতে চলেছে।
এবং তবুও, বিশ্ব রাজনীতিতে সাম্প্রতিক পরিবর্তনের সামগ্রিক প্রেক্ষিতে, ফলাফলগুলি অনুমানযোগ্য। যা স্পষ্ট তা হল বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশে মানুষ বামপন্থীদের নিয়ে এবং তাদের প্রসারিত পরিসরে বিরক্ত। এখানে, অ্যাজেন্ডা-অনুগামী সরকার ও মতাদর্শ-চালিত মিডিয়া প্রান্তিক বামপন্থীদের যে ক্ষমতা দিয়েছিল তা দক্ষিণপন্থীদের কাছে ভোট পৌঁছে দিয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সর্বত্রই নির্বাচনী লড়াইয়ে বাম অ্যাজেন্ডাগুলি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। আমেরিকান ও ইউরোপীয়রা যেভাবে ভোট দিয়েছে, তার মধ্যে সাধারণ বিষয় হল এই ভৌগোলিক অঞ্চলগুলিতে ধ্বংসে লিপ্ত অবৈধ অভিবাসীদের মোকাবিলা করতে সরকারের অক্ষমতা বা অনিচ্ছা। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে উচ্চ মূল্যস্ফীতি হল আরেকটি উদ্বেগের বিষয়; এবং তার সঙ্গে আছে মন্দা ও চাকরির অভাব।
আমেরিকান ও ইউরোপীয়রা যেভাবে ভোট দিয়েছে, তার মধ্যে সাধারণ বিষয় হল এই ভৌগোলিক অঞ্চলগুলিতে ধ্বংসে লিপ্ত অবৈধ অভিবাসীদের মোকাবিলা করতে সরকারের অক্ষমতা বা অনিচ্ছা।
বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র ভারতের ক্ষেত্রে বিষয়টি অনন্য: বিভিন্ন বর্ণন সত্ত্বেও, দেশটি বাম-ডান বিভাজনে আবদ্ধ হতে অস্বীকার করে, যদিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী্র তৃতীয় মেয়াদকে 'দক্ষিণ' বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। মোদীর সঙ্গে এখন সহযাত্রী হবেন ট্রাম্প, কারণ তাঁকেও গণতন্ত্রবিরোধী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যদিও নিজ নিজ দেশের গণতন্ত্রই তাঁদের ভোট দিয়ে আবার ক্ষমতায় এনেছে—দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প এবং তৃতীয় মেয়াদে মোদীকে।
এই চিহ্নিতকরণের বাইরে ট্রাম্পের দ্বিতীয় এবং চূড়ান্ত মেয়াদ কীভাবে কার্যকর হবে, এবং তাঁর ভোটাররা বা বৃহত্তর বিশ্ব কী আশা করতে পারে সে সম্পর্কে আরও বড় প্রশ্ন রয়েছে। তাঁর "মেক আমেরিকা গ্রেট এগেন" নির্বাচনী অবস্থানের আওতায় তিনি ২০টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে সীমানা সিল করা, আউটসোর্সিং বন্ধ করা, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একটি ম্যানুফ্যাকচারিং পরাশক্তিতে পরিণত করা, বাকস্বাধীনতা রক্ষা করা, ইউরোপ ও পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি পুনরুদ্ধার করা, মার্কিন ডলারকে বিশ্বের রিজার্ভ মুদ্রা হিসাবে বজায় রাখা, পুরুষদের নারীদের খেলাধুলা থেকে দূরে রাখা, হামাসপন্থী উগ্রবাদীদের দেশ থেকে বার করে দেওয়া এবং কলেজ ক্যাম্পাসকে “আবার নিরাপদ ও দেশপ্রেমিক” হিসাবে গড়ে তোলা।
নিরাপত্তা এবং ভূ-রাজনীতি
এই ২০টি মূল প্রতিশ্রুতির মধ্যে কয়েকটির অন্তর্নিহিত ধারণা হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি ক্ষয়িষ্ণু শক্তি এবং ট্রাম্প তা পরিবর্তন করার চেষ্টা করবেন। তাই তাঁর প্রথম কয়েকটি পদক্ষেপ হবে নিরাপত্তা ও ভূ-রাজনীতিকে ঘিরে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে, যা রাশিয়া এবং পশ্চিম উভয়ই শেষ করতে চায়, ট্রাম্প প্রবেশ করবেন এবং তাঁর কথাকে গুরুত্ব দিতে হবে। নতুন লাল রেখাকে স্বীকৃতি দিয়ে একটি নতুন সমঝোতার ভিত্তিতে নিউ ডিল বা নতুন চুক্তি এই অঞ্চলে এক অস্বস্তিকর শান্তির সূচনা করবে। কিয়েভ সম্ভবত তার কিছু অঞ্চল হারাবে, মস্কোর মুখ রক্ষা পাবে, এবং ব্রাসেলস নির্বিকারভাবে শান্তি সম্মেলন চালিয়ে যাবে।
ট্রাম্প ব্রাসেলস-কে নিজস্ব নিরাপত্তার লক্ষ্যে অর্থায়নের জন্যও তাঁর আগের মেয়াদের মতোই চাপ দেবেন। এখনও পর্যন্ত ইউরোপের নিরাপত্তা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাঁর প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেছিলেন যে ইইউ-কে তার জিডিপির ২ শতাংশ দিয়ে নিজের সুরক্ষার জন্য অর্থ প্রদান করতে হবে। সামরিক পরিষেবায় আরও ইউরোপীয়দের নিয়োগের পাশাপাশি তিনি সেই দাবিটিও আবার তুলতে পারেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এগুলিকে কতটা মান্যতা দিল, সেটাই হবে নর্থ অ্যাটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনে (ন্যাটো) মার্কিন উপস্থিতির মাত্রার একটি মূল নির্ধারক। জার্মানি সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক যোগদানের বিষয়ে কথোপকথন শুরু করেছে; অন্যান্য দেশও তা অনুসরণ করবে।
নতুন লাল রেখাকে স্বীকৃতি দিয়ে একটি নতুন সমঝোতার ভিত্তিতে নিউ ডিল বা নতুন চুক্তি এই অঞ্চলে এক অস্বস্তিকর শান্তির সূচনা করবে।
ইজরায়েলের সঙ্গে হুথি ও ইরান সমর্থিত হামাস ও হিজবুল্লার যুদ্ধটিতে ভিন্ন ঘটনা ঘটবে। ট্রাম্প সম্ভবত ঘরোয়া স্তরে এই অঞ্চলের সঙ্গে জড়িত হওয়ার সময় হামাসের প্রতি নৈতিক সমর্থনের চাপ উপেক্ষা করবেন। তবে "হামাসপন্থী উগ্রবাদীদের" নির্বাসিত করা বক্তৃতায় সহজ, কিন্তু তা কার্যকর করা কঠিন হতে পারে। এদিকে ইরান ইতিমধ্যেই ট্রাম্পের প্রথম প্রভাব অনুভব করছে, কারণ ট্রাম্পের বিজয়ের পরপরই তার মুদ্রা বিপর্যস্ত হয়েছে ; এরপর নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আর্থিক চাপ কীভাবে কাজ করবে সেটা দেখতে হবে।
ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে চিনের অ-গ্রহণযোগ্য কাজকর্মের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ যখন শুরু হওয়ার পথে, সেই সময় চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সমঝোতামূলক বিবৃতি দিচ্ছেন যাতে সমাধানের পথ তৈরি হয়। শি বলেছেন, "ইতিহাস দেখিয়েছে যে চিন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতার থেকে উপকৃত হয় এবং সংঘাতের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।" তাঁর পক্ষ থেকে ট্রাম্প চিনকে মোকাবিলা করার সময় সম্ভবত আরও লেনদেনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি নেবেন।
এই পন্থা ভারতকেও প্রভাবিত করবে। তাঁর প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্ব তৈরি এবং অস্ত্র বিক্রিতে প্রয়াসী হয়েছিলেন। তা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে, লেনদেনের ক্ষেত্র হল ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল। সুতরাং, উপরিতলের পরিবর্তনগুলিকে বাদ দিয়ে চতুর্ভুজ নিরাপত্তা সংলাপ-এর (কোয়াড) সামগ্রিক দিকনির্দেশনা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা যায়।
এই অঞ্চলে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের অধীনে বাংলাদেশও রয়েছে। এখানে, ট্রাম্পের সম্পৃক্ততা আরও কঠোর হতে পারে, হিন্দুদের প্রতি তার সমর্থন এবং তাদের বিরুদ্ধে "বর্বর হিংস্রতার" নিন্দা আরও জোরালো হতে পারে। হিংসার মোকাবিলা না করেই ইউনূস "সকলের জন্য শান্তি, সম্প্রীতি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি" র বার্তা দিয়েছেন। এটি কীভাবে সেখানে উপস্থিত হিন্দুদের বিরুদ্ধে হিংসার পরিসমাপ্তি ঘটায় তা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। এবং হিন্দুদের প্রতি ট্রাম্পের সমর্থন কানাডায় হামলার শিকার হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি প্রসারিত হয় কি না, যার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অপরাধগুলিকে হোয়াইটওয়াশ করছেন, তা দেখা বাকি রয়েছে।
ব্যবসা এবং প্রবিধান
দীর্ঘদিন ধরে, ট্রাম্প সমর্থক এবং বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক অতি-নিয়ন্ত্রণ এবং সেই সঙ্গে জরিমানাকে "লফেয়ার" (অভিসন্ধিমূলক আইন) বলে অভিযোগ করে আসছেন। মাস্ক সম্ভবত একটি নতুন সরকারি দক্ষতা কমিশনের প্রধান হতে পারেন, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৬.৭৫ ট্রিলিয়ন ডলারের ফেডারেল বাজেট থেকে ২ ট্রিলিয়ন ছাঁটাই করবে। কালক্ষেপ না করার জন্য পরিচিত ব্যক্তিটির থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত সুপারিশ এবং কাজের আশা করতে পারে। এটি স্বল্পমেয়াদে কিছু পদাধিকারীর ক্ষতি করবে, কিন্তু মধ্যমেয়াদে দেশের জন্য ভালো হবে, এবং তার ফলাফল ট্রাম্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই দেখা যাবে।
মাস্ক সম্ভবত একটি নতুন সরকারি দক্ষতা কমিশনের প্রধান হতে পারেন, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৬.৭৫ ট্রিলিয়ন ডলারের ফেডারেল বাজেট থেকে ২ ট্রিলিয়ন ছাঁটাই করবে।
নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে দুটি বড় বাধার বিষয়ে (মেগা ডিজরাপটর) পুনর্বিবেচনার ফলে দ্রুত বৃদ্ধি ঘটবে। এটি মোদীর দ্বিতীয় মেয়াদে ভারতে শুরু হয়েছিল, যখন সংসদ ২০২৩ সালের আগস্টে কয়েকটি অর্থনৈতিক লঙ্ঘনকে অপরাধমূলক আখ্যা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য জন বিশ্বাস (বিধানের সংশোধন) আইন প্রণয়ন করেছিল। কিন্তু এই পদক্ষেপটি সামনের একটি বৃহত্তর যৌক্তিককরণের কাঠামো মাত্র — ব্যবসা করার জন্য ২৬,১৩৪টি কারাদণ্ডের ধারার মধ্যে এই আইনটি শুধুমাত্র ১১৩টিকে অপরাধ আখ্যামুক্ত করেছে৷ জন বিশ্বাস ২.০ আনার কাজ চলছে৷
কেন্দ্রীয় সরকারের স্তরে, কাজটি এত বড় নয়: ৫,২৩৯টি ধারা যুক্তিযুক্ত করা দরকার। একবার হয়ে গেলে, এটি আমলাতন্ত্রের অনৈতিক টাকা চাওয়া এবং দুর্নীতি হ্রাস করবে। কিন্তু ভারতের স্বদেশী ডিপ স্টেট (সরকারি প্রশাসনের ভেতরে একটি অতি-প্রভাবশালী অংশ) এই সব পরিবর্তন করতে ইচ্ছুক নয়। শুধুমাত্র শিল্পকে চ্যালেঞ্জগুলির জন্য দায়ী করার পরিবর্তে এই পরিবর্তনের সূচনা কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের উপর নির্ভর করে৷ তাঁর কাছে তথ্য আছে, তাঁর ম্যান্ডেট আছে, এমনকি তাঁর উদ্দেশ্যও আছে, কিন্তু মনে হচ্ছে সবই জড়তা হাইজ্যাক করছে। সম্ভবত মাস্কের দৃষ্টিভঙ্গি মন্ত্রী গয়ালের জন্য অনুপ্রেরণা হিসাবে কাজ করতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একটি ম্যানুফ্যাকচারিং সুপার পাওয়ারে পরিণত করতে ট্রাম্পের লক্ষ্যের একটি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতি রয়েছে। এর অর্থ হবে একটি অভ্যন্তরমুখী অর্থনৈতিক সত্তা তৈরি করা। ট্রাম্প সারা বিশ্বের উদ্যোক্তাদের কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আকর্ষণীয় করে তোলার চেষ্টা করবেন, বিশেষ করে অত্যাধুনিক শিল্পে। তবে কীভাবে এটি শ্রম মজুরি বাড়িয়ে তুলবে তা স্পষ্ট নয়। ভারত বা ভিয়েতনামের মতো দেশ যারা তাদের ম্যানুফ্যাকচারিং ক্ষেত্র প্রসারিত করতে চায়, তাদের জন্য এর অর্থ হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা।
একটি অভ্যন্তরমুখী অর্থনীতির অর্থ হবে শুল্ক যুক্তিযুক্ত করা। এখানে, ভারতের মতো দেশগুলি সমস্যায় পড়বে। তাঁর প্রথম মেয়াদে এবং তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের দৌড়ের সময় তিনি ভারতকে "শুল্ক অপব্যবহারকারী" বলে অভিহিত করেছিলেন। একটি সহজলভ্য রাজনৈতিক ফল হিসাবে শুল্ক দুটি গণতন্ত্রের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ কথোপকথনের বিষয় হবে। ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার হিসাবে, বাণিজ্য দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কসূত্র হিসাবে কাজ করবে।
ট্রাম্প সারা বিশ্বের উদ্যোক্তাদের কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আকর্ষণীয় করে তোলার চেষ্টা করবেন, বিশেষ করে অত্যাধুনিক শিল্পে।
৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের জিডিপি-র বিপরীতে ১১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য কিন্তু আদৌ যা হওয়া উচিত তার ধারেকাছে কোথাও নেই। ১০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনীতি হলে এই বাণিজ্যের পরিমাণ স্বাভাবিক ভাবেই ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হওয়া উচিৎ। তবে চ্যালেঞ্জ হল এটিকে ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে নিয়ে যাওয়া। তাই শুল্ক ব্যবস্থাপনা দ্বিপাক্ষিক আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে। উভয় দেশকে বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে একটি মহাকৌশল অবলম্বন করতে হবে, এবং নিরাপত্তা, প্রযুক্তি ও কৌশলগত বিষয়কে অর্থনৈতিক আলোচনায় একীভূত করতে হবে।
ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতির শেষ ধাপে ক্রিপ্টোকারেন্সির বৈধতা দেখা যেতে পারে। এর অনেক কিছুই বলা যত সহজ করা ততটা নয়। ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলি তাদের নিজস্ব চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত একটি দেশও তার জনগণকে আঘাত না করে এই পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে না। ক্রিপ্টোকারেন্সিকে বৈধতা দেওয়ার কাজ খুব ধুমধাম করে চলতে থাকবে, কিন্তু দেশটির বদলে যাওয়ার সম্ভাবনা কম।
পশ্চিমীরা (ইইউ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) রাশিয়াকে সুইফট থেকে বার করে দিলে বিশ্বের রিজার্ভ কারেন্সি হিসাবে ডলারের শক্তি তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলে। বিপরীতে, এটি বিশ্বের বাকি দেশগুলিকে ভাবতে বাধ্য করেছে ব্রিকস দেশগুলির দ্বারা সাধারণ মুদ্রা প্রচলনের মতো বিকল্পগুলি সম্পর্কে৷ শুধু ক্রিপ্টোকারেন্সি আঁকড়ে ধরলেই তা বিশ্বাসযোগ্যতা প্রদান করবে না; বরং রাশিয়াকে সুইফটে ফিরিয়ে আনা সেই কাজটি করতে পারে, যার সম্ভাবনা ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে বেশি বলে মনে হচ্ছে।
পশ্চিমীরা (ইইউ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) রাশিয়াকে সুইফট থেকে বার করে দিলে বিশ্বের রিজার্ভ কারেন্সি হিসাবে ডলারের শক্তি তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলে।
অবশেষে, ভিসার মতো অন্যান্য সমস্যা রয়েছে। এখানে, ট্রাম্পের "অভিবাসন আক্রমণ বন্ধ করার" লক্ষ্য থাকা সত্ত্বেও, ভারতীয়দের একটি ভাল জায়গা আছে। ট্রাম্পের যাদের থামানো বা নির্বাসন দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তারা অভিবাসী নয়, অবৈধ অভিবাসী। বেশিরভাগ ভারতীয় সদর দরজা দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে। অভিবাসন নীতিতে সামান্য পরিবর্তন সত্ত্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিভার জন্য, এবং সেই কারণে ভারতীয়দের জন্য, উন্মুক্ত থাকবে।
সর্বোপরি, ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন দেখায় যে কীভাবে মূলধারার মিডিয়া, তার সমস্ত পক্ষপাত, বর্ণন ও মতাদর্শসহ, ভোটের ফলাফলের ক্ষেত্রে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন করতে খুব বেশি ব্যস্ত, বাম ভবিষ্যতের প্রতি খুব বেশি আচ্ছন্ন এবং সাধারণ মানুষের (ও পডকাস্টে) স্বরের জন্য বধির, মার্কিন মূলধারার মিডিয়া এমন ভোটারদের নিন্দা করতে থাকবে যারা তাদের সব কিছু, এমনকি কথোপকথন-সহ X-এ স্থানান্তরিত করেছে, যাকে ইলন মাস্ক "সত্যের রিয়েল-টাইম উৎস" হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন।
গৌতম চিকারমানে অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.