Author : Harsh V. Pant

Published on Jan 11, 2025 Updated 0 Hours ago
প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত ট্রাম্প প্রার্থী ট্রাম্পের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছেন

ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই ট্রাম্প তাঁর প্রশাসনের নীতিগত অগ্রাধিকারের রূপরেখা তুলে  ধরেছেন, এবং এটি বেশ স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তিনি তাঁর প্রচারাভিযানের প্রতিশ্রুতির বেশিরভাগ দিক থেকেই পিছিয়ে আসার কোনো প্রয়োজন দেখছেন না। বাইডেন জমানার ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের বিরুদ্ধে তাঁর জয়ের দিকে ফিরে তাকালে দেখা যাবে, ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেছিলেন অভিবাসন, অর্থনীতি ও অন্য মূল বিষয়গুলিতে ফোকাস করে তিনি যে প্রচারাভিযান চালিয়েছিলেন তা ডেমোক্র‌্যাটদের বার্তার চেয়ে দেশের মানুষের মনে বেশি অনুরণিত হয়েছিল, কারণ সেগুলি নিয়েই ভোটারদের মনে উদ্বেগ বেশি ছিল। "আমি মনে করি না ওরা [ডেমোক্র্যাটরা] দেশের অনুভূতি বুঝতে পেরেছিল," ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেছিলেন। তাঁর মতে, রিপাবলিকান পার্টি হয়ে উঠেছে “সাধারণ জ্ঞানের” দল। এবার তিনি শুধু জনপ্রিয় ম্যান্ডেটই জেতেননি, মার্কিন হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস ও সেনেট উভয়ের নিয়ন্ত্রণও থাকবে রিপাবলিকানদের হাতে।

'ফিরিয়ে আনুন'

ট্রাম্প সাধারণ মানুষের মনোভাব নিয়ে তাঁর মূল্যায়ন সঠিক প্রমাণিত হয়েছে বলে মনে করেন, এবং সাক্ষাৎকারে তাই তিনি স্পষ্ট করেছেন যে তিনি তাঁর অ্যাজেন্ডা এগিয়ে নিয়ে যেতে চান। তবে তাঁর সাক্ষাৎকারে সুরটি নরম এবং মৃদু ছিল, এবং তিনি দেশকে এর সাফল্য নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে ঐক্যবদ্ধ করার কথা বলছেন। তাঁর কথায়: “আমি সত্যিই আমাদের দেশকে সফল করতে চাই। আমি অতীতে ফিরে যেতে চাই না। আমি আমাদের দেশকে সফল করতে চাই। প্রতিশোধ হবে সফলতার মাধ্যমে। আমরা যদি সাফল্য পাই — তার দেশ সফল হয়েছে, সেটাই হবে আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি — আর তা কী বিশাল সাফল্য হবে। তা  ফিরিয়ে আনুন।”


ট্রাম্প সাধারণ মানুষের মনোভাব নিয়ে তাঁর মূল্যায়ন সঠিক প্রমাণিত হয়েছে বলে মনে করেন, এবং তাঁর সাক্ষাৎকারে তাই তিনি স্পষ্ট করেছেন যে তিনি তাঁর অ্যাজেন্ডা এগিয়ে নিয়ে যেতে চান। 



তবে লিজ চেনির মতো তাঁর প্রাক্তন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের জেলে যেতে হতে পারে, এমন সম্ভাবনার কথাও তিনি বলেছেন। তিনি এও বলেছেন যে তিনি বিশ্বাস করেন যে, প্রায় ১,২০০ জনের ‘‌বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ’‌ অংশ যাঁরা হয় দোষ স্বীকার করেছেন বা ৬ জানুয়ারির হামলায় জড়িত থাকার জন্য বিচারে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, তাঁদের কারাগারে থাকা উচিত নয়। তিনি কার্যভার গ্রহণ করার "প্রথম ঘণ্টায়" সম্ভাব্য ক্ষমা পর্যালোচনা শুরু করবেন।

অভিবাসীরা প্রধান লক্ষ্য

অভিবাসন তাঁর মূল অগ্রাধিকার বলে মনে হচ্ছে। অবৈধ অভিবাসনকে তিনি ‘‌আমাদের দেশের উপর আক্রমণ’‌ হিসাবে বর্ণনা করেছেন, যার বিরুদ্ধে লড়ার জন্য নির্বাসন প্রক্রিয়ায় সামরিক বাহিনীসহ ন্যাশনাল গার্ড ও স্থানীয় আইন প্রয়োগকারীদের ব্যবহার করা প্রয়োজন, যা আইনত চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। তিনি অভিবাসীদের ফিরিয়ে নিতে ইচ্ছুক নয় এমন দেশগুলির উপর শুল্ক বসানোর হুমকি দিচ্ছেন:‌ "যদি তারা এদের ফিরিয়ে না নেয়, আমরা সেই দেশগুলির সঙ্গে ব্যবসা করব না, এবং আমরা সেই দেশগুলির উপর খুব চড়া হারে শুল্ক বসাব।" ট্রাম্প ১৪তম সংশোধনীর দ্বারা নিশ্চিত করা জন্মাধিকার নাগরিকত্ব বাতিল করার জন্য তাঁর প্রচারাভিযানের প্রতিশ্রুতিও পুনর্ব্যক্ত করেছেন, এবং ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি নির্বাহী পদক্ষেপের মাধ্যমে এই অধিকারটি বাতিল করার চেষ্টা করতে  পারেন।

অন্যান্য অভ্যন্তরীণ সমস্যা যা ট্রাম্পের জন্য তাঁর প্রশাসনের প্রাথমিক দিনগুলিতে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে, তা হল উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা, মার্কিন তেল শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করা (‘‌ড্রিল, বেবি, ড্রিল’‌), ফেডারেল শিক্ষা বিভাগকে ছোট করা এবং বেশিরভাগ দায়িত্ব রাজ্য সরকারগুলির কাছে হস্তান্তর করা। ট্রাম্প ‘‌ওয়াশিংটনের শিক্ষা বিভাগ কার্যত বন্ধ করার’‌ আহ্বান জানাচ্ছেন, যার জন্য কংগ্রেসের সম্মতি প্রয়োজন।

ইউক্রেন নিয়ে একটি 'চুক্তি'

বিদেশনীতির ফ্রন্টেও, তিনি তাঁর পূর্বসূরির সঙ্গে বিভাজনরেখাটি বেশ স্পষ্ট করে চলেছেন। তিনি ইউক্রেনকে মার্কিন-প্রদত্ত আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেমস বা এটিএসিএমএস নামক দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে আঘাত হানার অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে বাইডেন প্রশাসনের নীতির সঙ্গে তাঁর ‘‌তীব্র‘‌ মতানৈক্যের কথা তুলে ধরেছেন, এবং যুক্তি দিয়েছেন যে এই নীতিটি ‘‌শুধু এই যুদ্ধ তীব্রতর করে এটিকে আরও খারাপ করে তুলছে’‌। তিনি পরামর্শ দিয়ে চলেছেন যে তিনি ইউক্রেনকে পরিত্যাগ করতে চান না। তবে এটি করার উপায়, ট্রাম্পের জন্য, একটি চুক্তিতে পৌঁছনো, কারণ যুদ্ধটি একটি ‘‌ট্র্যাজেডি’‌ যেখানে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ‘‌বিস্ময়কর’‌ সংখ্যক মানুষ নিহত হয়েছেন।

ট্রাম্প ‘‌ওয়াশিংটনের শিক্ষা বিভাগ কার্যত বন্ধ করার’‌ আহ্বান জানাচ্ছেন, যার জন্য কংগ্রেসের সম্মতি প্রয়োজন।



মধ্যপ্রাচ্যে তাঁর নতুন কিছু বলার আছে। তাঁর শেষ মেয়াদে, তিনি ‘‌একটি বাস্তবসম্মত দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের’‌ আহ্বান জানিয়েছিলেন, কিন্তু এখন তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন যে তিনি ‘‌শান্তির জন্য যে কোনও ধরনের সমাধান’‌ সমর্থন করেন, এবং ‘‌দুই-রাষ্ট্র ব্যতীত অন্যান্য ধারণাও রয়েছে’‌। একটি আকর্ষণীয় মূল্যায়নে তিনি বলেছিলেন যে, তিনি "একটি দীর্ঘস্থায়ী শান্তি চান, এমন শান্তি যেখানে আগামী তিন বছরে ৭ অক্টোবর ঘটবে না। এবং এটি করার অনেক উপায় আছে। আপনি এটি দুই-রাষ্ট্র দিয়ে করতে পারেন, তবে এটি করা যেতে পারে এমন অন্য অনেক উপায় রয়েছে।" এই বক্তব্য বিভিন্ন ধরনের ব্যাখ্যার জন্য উন্মুক্ত, এবং সেইটাই সম্ভবত ট্রাম্পের উদ্দেশ্য ছিল।

সবটা সহজ রাখা

এবং অবশেষে, শাসনে ট্রাম্পের প্রিয় হাতিয়ার হিসাবে রয়ে গিয়েছে শুল্ক। তিনি আমেরিকার তিনটি বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদারকে — মেক্সিকো, কানাডা ও চিনকে — শুল্ক দিয়ে টার্গেট করতে চান। চিত্তাকর্ষক বিষয় হল, তিনি আরও বলেছেন যে তিনি এমন ‘‌নিশ্চয়তা দিতে পারবেন না’‌ যে শুল্ক আমেরিকানদের জন্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি ঘটাবে না।



এই ভাষ্যটি প্রথম
এনডিটিভি
-‌তে প্রকাশিত হয়েছিল।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.