Author : Anton Tsvetov

Published on Mar 20, 2024 Updated 0 Hours ago

উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে আস্থার সংকট আন্তর্জাতিক জলবায়ু ব্যবস্থাকে বিষিয়ে তুলছে। উভয় পক্ষের দায় নেওয়া আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধারের পথে প্রথম পদক্ষেপ।

অবিশ্বাসের পরিবেশ কাটিয়ে ওঠা

দুবাইতে কপ২৮ সমাপ্ত হওয়ার পর অন্য সাম্প্রতিক বৈঠকগুলির মতোই প্লেনারি হল ও মিডিয়া মহলে অর্জনের অনুভূতির সঙ্গে মিশে গিয়েছিল হতাশা। মনে হচ্ছে ফলাফলগুলি থেকে খুশি হওয়া তো দূরের কথা, কেউ সত্যিসত্যি সন্তুষ্টও হতে পারেননি।

হ্যাঁ, ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলিকে অপরিবর্তনীয় জলবায়ু ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করার জন্য একটি তহবিল অবশেষে চালু করা হয়েছে, কিন্তু তার জন্য অবদানগুলি যা প্রয়োজন তার থেকে কম, এবং কখন বা কীভাবে অর্থ বিতরণ করা হবে তা এখনও মীমাংসিত নয়। যদিও জীবাশ্ম জ্বালানি সম্পর্কে নতুন ভাষাটি নিয়ে শেষ পর্যন্ত সম্মতি মিলেছে, অনেকে এটিকে লঘুকৃত এবং ত্রুটিপূর্ণ হিসাবে দেখেছেন, কারণ তা তেল, গ্যাস ও কয়লার প্রধান ব্যবহারগুলিকে অবিরত এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রসারিত করার সুযোগ করে দিয়েছে। এটা ঠিক যে, দেশগুলি সম্মত হয়েছে যে প্রশমন ও অভিযোজন উভয়ের জন্য আরও জলবায়ু অর্থায়ন প্রয়োজন, কিন্তু উপায়, মান এবং এমনকি পরিমাপযুক্ত অভিযোজন লক্ষ্যগুলি এখনও অনিশ্চিত। আর দুবাইয়ে শেষ মুহূর্তের ব্যর্থতার কারণে কার্বন বাজার, যা অর্থায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ, তার ভাগ্য অনিশ্চিত থেকে গেল।

যে কোনও আলোচনাকারী আপনাকে বলবেন, সবাই যদি সমানভাবে অসন্তুষ্ট হন তাহলে বুঝতে হবে একটি ভারসাম্যপূর্ণ চুক্তি হয়েছে। এই শেষ চুক্তিগুলি ভারসাম্যপূর্ণ হতে পারে, কিন্তু এ কথা গোপন থাকছে না যে প্যারিস চুক্তির লক্ষ্যগুলির — প্রশমন, অভিযোজন ও অর্থায়নের — ক্ষেত্রেও তাদের অস্বস্তিকর প্রমাণিত হওয়ার প্রবণতা রয়েছে৷


এর একটি মূল কারণ হল উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে অবিশ্বাসকে গভীর করা, যা সবচেয়ে স্পষ্টভাবে ইউএনএফসিসিসি এবং জি ২০ প্রক্রিয়াগুলিতে দেখা যায়।



ক্রমবর্ধমান উদ্বেগজনক বিজ্ঞান এবং জলবায়ু সঙ্কট মোকাবিলার জন্য অর্থনীতি ও সমাজের পরিবর্তনের মাত্রার ক্রমবর্ধমান উপলব্ধির বিপরীতে অগ্রগতি সর্বোত্তমভাবে বললে ধীরে ধীরে হচ্ছে। এর একটি মূল কারণ হল উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে অবিশ্বাস গভীরতর হচ্ছে, যা সবচেয়ে স্পষ্টভাবে ইউএনএফসিসিসি এবং জি ২০ প্রক্রিয়াগুলিতে দেখা গিয়েছে। ক্রমহ্রাসমান আস্থা আলোচনাকারীদের অন্য পক্ষের আনা যে কোনও প্রস্তাবের মধ্যে গোপন লক্ষ্য লুকনো আছে বলে ভাবতে প্ররোচিত করে, নিজেদের অবস্থান আরও দৃঢ় করে, এবং কঠিন সমস্যাগুলিকে এড়িয়ে যেতে প্রলুব্ধ করে।


ক্ষোভের দীর্ঘায়িত পঞ্জি

যখনই বিশ্ব আরও জলবায়ু সংক্রান্ত পদক্ষেপের জন্য ঐকমত্য তৈরি করতে একত্রিত হয়, তখনই যে কোনও সামান্য মতবিরোধ পারস্পরিক একঞ্জিগুচ্ছ অভিযোগ উস্কে দেয় বলে মনে হয়। চরম পর্যায়ে অভিযোগগুলি এরকম কিছু দাঁড়ায়:‌ গ্লোবাল নর্থ অহংকারী ও স্বার্থপর, গ্লোবাল সাউথের ডিকার্বনাইজেশনের প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করে, এবং সমৃদ্ধি তো দূরের কথা, প্রাপ্য মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাত্রার মান অর্জনের উপযুক্ত সুযোগকেও অস্বীকার করে। আর দক্ষিণ সম্পর্কে বলা হয় তারা ধীরজ এবং খরচ না–করে সব কিছু পেতে চায়, এবং বিদ্যমান ও ক্রমবর্ধমান নির্গমনের জন্য দায় নিতে অনিচ্ছুক।

এই ক্ষোভের বেশিরভাগটাই পুরোপুরি  ভিত্তিহীন নয়। ভাঙ্গা প্রতিশ্রুতি আস্থা অর্জনের জন্য খুবই খারাপ। উন্নত দেশগুলি নির্দিষ্ট পদ্ধতিক্রমে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার জলবায়ু অর্থায়নের বাধ্যবাধকতা কম পূরণ করেছে, এবং বারবার শর্ত ও যোগ্যতার প্রশ্ন তুলে সেই বাধ্যবাধকতাকে লঘু করছে। তারা প্রযুক্তির উন্নয়ন ও সক্ষমতার সুবিধা ভোগ করে, যা তাদের দ্রুত ডিকার্বনাইজ করতে এবং উচ্চতর জীবনযাত্রার মানের নিরিখে জলবায়ু–সচেতনতাকে একটি সাশ্রয়ী মূল্যের বিলাসিতা হিসাবে উপভোগ করতে দেয়।

একই সময়ে, উন্নয়নশীল দেশগুলি প্রশমন ঘটাতে ব্যস্ত নয়, যদিও বিজ্ঞান আমাদের বলে জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে খারাপ প্রভাবগুলি এড়াতে এই কাজগুলি অতি–প্রয়োজনীয়। মূল উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে পুনর্নবীকরণযোগ্য স্থাপনা নজিরবিহীন, এবং নির্গমনের তীব্রতা ও সর্বোচ্চ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা  নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু বায়ুমণ্ডল শুধুমাত্র অ্যাবসলিউট বা পরম নির্গমন এবং জিএইচজি ঘনত্বের উপর কাজ করে। বিকাশের জন্য কার্বন পরিসর থাকা এবং নেট শূন্যের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা পাওয়া ন্যায়বিচারের পরিপ্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ যথার্থ, কিন্তু যদি উন্নয়নশীল দেশগুলির জীবনযাত্রার মান অর্জন করতে গিয়ে বিশ্বের সমস্ত দেশে জলবায়ু বিপর্যয় নেমে আসে তবে তা যৌক্তিক হবে না।


উন্নত দেশগুলি নির্দিষ্ট পদ্ধতিক্রমে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার জলবায়ু অর্থায়নের বাধ্যবাধকতা কম পূরণ করেছে, এবং বারবার শর্ত ও যোগ্যতার প্রশ্ন তুলে সেই বাধ্যবাধকতাকে লঘু করছে।


আরেকটি প্রধান সমস্যা হল সেই সব প্রক্রিয়া ও প্ল্যাটফর্ম যেখানে এই সমস্যাগুলি নিয়ে আলোচনা করা হয়। উন্নত দেশগুলি তাদের সমস্ত প্রাতিষ্ঠানিক উত্তরাধিকার–সহ বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে তাদের ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক প্রভাবের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত এবং সক্ষমতাজনিত সুবিধাগুলিকে কাজে লাগাচ্ছে। এই কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলি মনে করে যে আলোচনার খেলাটিতে কারচুপি করা হয়েছে — ইংরাজির এখনও আলোচনার পরিসরে আধিপত্য বিস্তার করা থেকে শুরু করে নিম্ন বা মধ্যম আয়ের আমলাতন্ত্রের উপর আন্তর্জাতিক বৈঠকে একটি উপযুক্ত প্রতিনিধি দল পাঠানোর জাগতিক খরচ চাপিয়ে দেওয়া পর্যন্ত।


কেকটি কাটার অন্যান্য উপায়

উন্নয়নশীল এবং উন্নত দেশগুলির মধ্যে ফাটল, যদিও সবচেয়ে দৃশ্যমান, এটিই একমাত্র বিভাজন নয়, এবং দীর্ঘমেয়াদি গতিশীলতাকেও সংজ্ঞায়িত করতে পারে না। উন্নয়নশীল বিশ্বের মধ্যে — যেমন ১৯৯২ সালের কনভেনশনের কুখ্যাত অ্যানেক্সেস থেকে বোঝা যায় — কিছু প্রধান অর্থনীতি রয়েছে, যারা পরিকাঠামো মেগাপ্রজেক্ট তৈরি করতে, নির্দিষ্ট বৈশ্বিক বাজারে আধিপত্য বিস্তার করতে, মহাকাশে মানুষ পাঠাতে, এবং দরিদ্র দেশগুলির উন্নয়নে অর্থায়ন করতে সক্ষম। এবং তারপরে আছে দুর্বল, ছোট–দ্বীপ, ভূমি–আবদ্ধ বা স্বল্পোন্নত অর্থনীতি, এবং প্রায়শই সর্বোচ্চ মনোযোগের দাবিদার যার উপর তাদের আক্ষরিক অস্তিত্ব নির্ভরশীল।

আবার ‘‌উন্নত’‌ হিসাবে বর্ণিত পরিসরের মধ্যে আমরা পাই অত্যন্ত উন্নত, মাথাপিছু আয়ে সমৃদ্ধ, ডিকার্বনাইজেশন যাত্রায় অনেক এগিয়ে থাকা কিছু দেশ। কিন্তু তার পাশাপাশি  আমাদের বৃহত্তর অর্থনীতিগুলিও রয়েছে, অভ্যন্তরীণভাবে বৈচিত্র্যময় এবং প্রায়শই জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদন ও ব্যবহারের উপর নির্ভরশীল, সেইসঙ্গে কর্মশক্তির স্থানান্তর ও শক্তিশালী স্বার্থ গোষ্ঠী সংক্রান্ত রাজনৈতিক ও সামাজিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন, অনেকটা বৃহৎ উদীয়মান অর্থনীতির মতোই।

যাই হোক, আলোচনাকারী পক্ষগুলির মধ্যে বিভাজন, যদিও আন্তঃসরকারি প্রক্রিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিস্তৃত দীর্ঘমেয়াদি প্রচেষ্টাকে সংজ্ঞায়িত করতে পারে না। গ্লোবালাইজেশন–কাম–ফ্র্যাগমেন্টেশন, পুঞ্জীভূত ভারসাম্যহীনতা এবং অসমতার এই অদ্ভুত যুগে, অন্য চিত্রগুলির সমাধান করতে হবে।


‘‌উন্নত’‌ হিসাবে বর্ণিত পরিসরের মধ্যে আমরা পাই অত্যন্ত উন্নত, মাথাপিছু আয়ে সমৃদ্ধ, ডিকার্বনাইজেশন যাত্রায় অনেক এগিয়ে থাকা কিছু দেশ।



বিশ্ব জলবায়ু বিপর্যয় এড়াতে সফল হোক বা না–হোক, সকলেই নিশ্চিত থাকতে পারেন যে এলিটরা ভালো থাকবেন। শুধু দুর্বল দেশগুলি সবচেয়ে বেশি আঘাতের মুখে পড়বে না, সমস্ত দেশের অরক্ষিত মানুষেরাই পড়বেন। মুম্বই, সাও পাওলো এবং রিয়াদের আশীর্বাদপ্রাপ্ত উচ্চ শ্রেণীগুলি লন্ডন, টোকিও বা মেলবোর্নে তাদের সমকক্ষদের মতোই সুরক্ষিত থাকবেন;‌ আর সান দিয়েগো, মস্কো ও ব্রাসেলসের কায়িক শ্রমিকেরা কিনশাসা, জাকার্তা বা বোগোটার মানুষের মতোই দুর্দশায় পড়বেন।

ক্ষয়ক্ষতি এবং খরচ বিশ্লেষণের প্রতিটি স্তরে পার্থক্য থাকবে। উচ্চবিত্তরা দূরের পাহাড়ে একটি বাঙ্কার তৈরি করতে সক্ষম হবেন;‌ ‘‌নিয়মিত’‌ ধনীরা সারাদিন শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় থাকতে পারবেন;‌ অপেক্ষাকৃত দরিদ্ররা সম্ভবত অসহনীয় তাপ বা ক্রমবর্ধমান সমুদ্রস্তরের কারণে বাস্তুচ্যুত হতে পারেন, কিন্তু যাঁরা চরম দারিদ্র্য ভোগ করছেন তারা অসহনীয় পরিস্থিতির শিকার হতে থাকবেন কোনও প্রস্থান কৌশল ছাড়াই।



কী করা যেতে পারে

এই বিভাজন মোকাবিলায় কিছু কি করা যেতে পারে?

শুরু করার জন্য প্রতিশ্রুতিগুলিকে সম্মান করা একটি ভাল জায়গা হবে, তবে দেশগুলিকে এর বাইরে বেরোতে হবে এবং প্রথমে আরও ভাল ও আরও সৎ ব্যবস্থা তৈরি করার কথা ভাবতে হবে। সিদ্ধান্তের পাঠ্য, সতর্কীকরণ এবং শব্দ বা বাক্যগুলিকে লঘু করার অর্থ হল আন্তর্জাতিকভাবে সম্মত জলবায়ু নীতির নথিগুলি — তা সিওপি সিদ্ধান্ত হোক বা জি২০ ঘোষণাগুলি —  আলোচক ও তাদের নিয়োজক এলাকা উভয়ের দ্বারাই সন্দেহজনক উপহাসের সঙ্গে দেখা হবে। গ্লোবাল স্টকটেক নিয়ে উল্লিখিত সিওপি সিদ্ধান্তটিতে পুরো নথি জুড়ে ১৮ বার ‘‌অ্যাজ অ্যাপ্রোপ্রিয়েট’‌ শব্দবন্ধ আছে, এবং একটি জায়গায় একটি একক অনুচ্ছেদে তিনবার, সেইসঙ্গেই এটি জাতীয় পরিস্থিতির উল্লেখ সহ ১৬ টি অন্যান্য বিবৃতিতে শর্ত যোগ করে। একটি পৃথক অনুচ্ছেদ এমনকি ‘‌জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদানের জাতীয়ভাবে নির্ধারিত প্রকৃতিকে পুনরায় নিশ্চিত করে’‌।

জাতীয় পরিস্থিতির গুরুত্বকে অবমূল্যায়ন করার জন্য নয়, দক্ষ জলবায়ু কর্মের জন্য তা গুরুত্বপূর্ণ, তবে সাধারণ জ্ঞানের আহ্বান জানানোর জন্য একটি বিষয় তুলে ধরা প্রয়োজন। জাতীয়ভাবে নির্ধারিত উপাদানটি প্যারিস চুক্তিতে গভীরভাবে সম্পৃক্ত, এবং এটি সত্যিই অসম্ভাব্য যে কোনও দেশ স্থানীয় প্রেক্ষাপটের বিরুদ্ধে কিছু করবে। তবে বারেবারে সেগুলির পরিবর্তন করা হলে পাঠকের পক্ষে বোঝা অসম্ভব হয় যে শরিকেরা কী করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তারা আদৌ কিছু করতে চায় কিনা। এই ধরনের সূক্ষ্মতা শুধু আস্থাকে আরও ক্ষয় করে।


সিদ্ধান্তের পাঠ্য, সতর্কীকরণ এবং শব্দ বা বাক্যগুলিকে লঘু করার অর্থ হল আন্তর্জাতিকভাবে সম্মত জলবায়ু নীতির নথিগুলি — তা সিওপি সিদ্ধান্ত হোক বা জি২০ ঘোষণাগুলি —  আলোচক ও তাদের নিয়োজক এলাকা উভয়ের দ্বারাই সন্দেহজনক উপহাসের সঙ্গে দেখা হবে।



আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধার করার আরেকটি ভাল উপায় হল উভয় পক্ষের এই গ্রহের উপর তাদের প্রভাবের জন্য দায় নেওয়া, এবং অন্যদের তা করার জন্য অপেক্ষা না–করা। আস্থা তৈরির জন্য ন্যায়বিচার গুরুত্বপূর্ণ, তবে সদিচ্ছাও তাই। যতক্ষণ পর্যন্ত পক্ষগুলি দায়িত্ব এড়িয়ে যাবে — তা সঞ্চিত, মাথাপিছু বা বর্তমান পরম নির্গমন, জলবায়ু অর্থায়ন বা স্থানীয় অভিযোজন, ব্যবসায়িক কার্বন বা ব্যবহারের ধরন, যা নিয়েই হোক — এবং একে স্থগিত করার জন্য এ সব ব্যবহার করবে, বিশ্ব সংশয়াপন্ন থাকবে যে জলবায়ু পরিবর্তন কি সত্যিই এত বড় একটি সমস্যা। বিজ্ঞান দ্বারা অবহিত সরকারগুলি যদি অন্যদের কাজ করার জন্য অপেক্ষা করার সামর্থ্য রাখে, তবে বিপদটিও অস্তিত্বের সঙ্কট ডেকে আনার মতো না–ও হতে পারে, তাই না?

তৃতীয় পন্থা হতে পারে গোঁড়া মতবাদ ও সূত্রভিত্তিক পুনরাবৃত্তির বিকল্প হিসাবে সত্যবাদী বাস্তববাদ। ‘‌নাগালের মধ্যে ১.৫ রাখা’‌ বলতে আসলে কী বোঝায়? আমরা সেখানে পৌঁছতে না–পারলে কী হবে? আমাদের কত জলবায়ু অর্থায়ন প্রয়োজন? আমরা কীভাবে তা ব্যয় করতে যাচ্ছি এবং আমরা তা কোথায় পেতে পারি? জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে আমরা কোন উন্নয়ন চ্যালেঞ্জগুলিকে অগ্রাধিকার দিতে চাই? নির্গমন হ্রাস যদি বৈশ্বিকভাবে ভাল হয়, তাহলে কি আমাদের সত্যিই সব কিছুকে সর্বজনীন বহুপাক্ষিক ফোরামে আনার প্রয়োজন আছে?

জলবায়ু নীতির উচ্চ টেবিলে বসে থাকা দেশগুলি সম্মিলিতভাবে ও স্বতন্ত্রভাবে এতটাই দায়বদ্ধ, আত্ম–সচেতন, দায়িত্বশীল ও সত্যবাদী হয়ে উঠবে যে আস্থার পরিবেশ তৈরি হবে, এমন কোনও নির্বোধ প্রত্যাশা থাকা উচিত নয়। সর্বোপরি, আমরা বৈশ্বিক রাজনীতি ও অর্থনীতির চিরদিনের খুঁতযুক্ত উপায়ের মাধ্যমে একটি অস্তিত্বের সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করছি। অ–রাষ্ট্রীয় কুশীলবদের অনুভূমিক জোট ও সংহতি গড়ে তুলতে হবে, এবং যতটা সম্ভব দায়িত্ব নিতে হবে।

কিন্তু রাষ্ট্রগুলির জন্য এটিই একমাত্র উপয়, এবং একটি সম্মিলিতভাবে উপকারী ফলাফলের জন্য তাদের নিপীড়িত মনোভাব কাটিয়ে উঠতে হবে এবং অন্যদের সঙ্গে আস্থা তৈরিতে সমানভাবে এগিয়ে আসতে হবে।



অ্যান্টন স্ভেতভ একজন আন্তর্জাতিক জলবায়ু নীতি পরামর্শদাতা এবং ইউএনএফসিসিসি ও জি২০–র প্রাক্তন নেগোশিয়েটর।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.