কাঠমান্ডুতে অপ্রত্যাশিত ভাবেই বিভিন্ন প্রান্তিক রাজনৈতিক দল অর্থাৎ নেপালি কংগ্রেস (এনসি) এবং কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল-ইউনিফাইড মার্কসিস্ট লেনিনিস্ট (সিপিএন-ইউএমএল) সিপিএন-ইউএমএল-এর চেয়ার কে পি শর্মা অলির নেতৃত্বে সরকার গঠনের জন্য হাত মিলিয়েছে এবং অলি নেপালের নতুন প্রাইম মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। বহুবর্ষজীবী রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার ধারাবাহিকতাকে দর্শিয়ে এই জোট ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে শেষ সাধারণ নির্বাচনের পর থেকে ১৯ মাসের মধ্যে ক্ষমতাসীন জোটের চতুর্থ পরিবর্তনকে তুলে ধরেছে।
গত নির্বাচনের পর থেকে কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল-মাওইস্ট সেন্টার-এর (সিপিএন-এমসি) চেয়ারম্যান পুষ্প কমল দাহাল (প্রচণ্ড) প্রতিনিধি পরিষদে ২৭৫টি আসনের মধ্যে মাত্র ৩২টি আসন থাকা সত্ত্বেও সর্বোচ্চ ক্ষমতায় আসীন ছিলেন। প্রাক্তন গেরিলা নেতা ও প্রবীণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব প্রচণ্ড ধারাবাহিক ভাবে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান সুনিশ্চিত করতে সক্ষম হন। কারণ তিনি কৌশলে ত্রিশঙ্কু অবস্থায় থাকা সংসদের সুযোগ নিতে সমর্থ হন এবং দেশের সংসদে প্রায় সমান সংখ্যক আসন থাকা দু’টি বৃহত্তম রাজনৈতিক দল এনসি ও সিপিএন-ইউএমএল-এর মধ্যে দলবদল করতে থেকেছেন। প্রচণ্ড এনসি এবং অন্যান্য ছোট দল নিয়ে গঠিত ডেমোক্র্যাটিক লেফট ইলেক্টোরাল অ্যালায়েন্স বা গণতান্ত্রিক বাম নির্বাচনী জোটের মধ্যে থেকে ২০২২ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। যাই হোক, তিনি ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে তাঁর নেতৃত্বে সরকার গঠনের জন্য নির্বাচনের পর সিপিএন-ইউএমএল-এর সঙ্গে অংশীদার হতে সময় নেননি। তবে নির্বাচন-পরবর্তী জোটও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। সরকারকে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে নিয়ন্ত্রণ করার অলির প্রবণতার কারণে প্রচণ্ড রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রাক্কালে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে নেপালি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধেন এবং এই পদের জন্য কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থন করেছিলেন। আবার, অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক চাপের দরুন ২০২৪ সালের মার্চ মাসে তিনি অলির সঙ্গে হাত মেলাতে সিপিএন-ইউএমএল-এর সঙ্গে আবার জোটে ফিরে আসেন।
সরকারকে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে নিয়ন্ত্রণ করার অলির প্রবণতার কারণে প্রচণ্ড রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রাক্কালে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে নেপালি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধেন এবং এই পদের জন্য কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থন করেছিলেন। আবার, অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক চাপের দরুন ২০২৪ সালের মার্চ মাসে তিনি অলির সঙ্গে হাত মেলাতে সিপিএন-ইউএমএল-এর সঙ্গে জোটে ফিরে আসেন।
পরবর্তী সময়ে স্বল্পকালীন বাম জোট দু’টি বৃহত্তম দলের মধ্যে হওয়া সাত দফা চুক্তি দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে। ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তি অনুযায়ী, অলি প্রথম দু’বছরের জন্য সরকারের নেতৃত্ব দেবেন এবং ২০২৭ সালের পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত এনসি চেয়ারম্যান শের বাহাদুর দেউবা ক্ষমতা গ্রহণ করবেন। তবে এই ধরনের ব্যবস্থাপনা যে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত টিকে থাকবেই, সে কথা জোর দিয়ে বলা যায় না।
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে কেন্দ্র করে অজনপ্রিয় বাগাড়ম্বর
শুধু মাত্র বিরল ব্যতিক্রম ছাড়া ১৯৯০ সালে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তনের পর থেকে জোট রাজনীতি একটি স্বাভাবিক ব্যবস্থাপনা হয়ে উঠেছে। নির্বাচনের আগে এবং পরবর্তী জোটের পরিবর্তনের ফলে বিভিন্ন মতাদর্শ অভিমুখী দলগুলির মধ্যে সব ধরনের অংশীদারিত্ব তৈরি হয়েছে। ২০১৫ সালের সংবিধানের অধীনে বর্তমান মিশ্র নির্বাচনী ব্যবস্থার মধ্যে জোটগুলি আরও অনিবার্য হয়ে উঠেছে, যেখানে একক-দলীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার সম্ভাবনা প্রায় অসম্ভব। ১৯৯০ সাল থেকে জোটের প্রবণতার দিকে নজর রাখলে দেখা যাবে, দীর্ঘ দিন ব্যাপী তৃতীয় বৃহত্তম দল সরকার গঠনের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব নির্ধারণে অথবা দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতাশালী নির্ধারণের ক্ষেত্রে নির্ধারক ভূমিকা পালন করে। প্রচণ্ড ২০২২ সালের নির্বাচনের পরে সাধারণ জনসমর্থন সত্ত্বেও ঘন ঘন জোট পরিবর্তন করার এ হেন সুযোগটি ব্যবহার করেছিলেন। এ ছাড়াও, নতুন রাজনৈতিক দলগুলির অপ্রত্যাশিত উত্থান - ২১টি আসন নিয়ে রাষ্ট্রীয় স্বতন্ত্র পার্টি (আরএসপি), ছ’টি আসন নিয়ে জনমত পার্টি এবং চারটি আসন নিয়ে নাগরিক উন্মুক্তি পার্টি - রাজনৈতিক দৃশ্যপটকে আরও জটিল করে তুলেছে এবং স্থিতিশীল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করার বিষয়টিকে কঠিন করে তুলেছে।
আস্থা ভোটের প্রস্তাব পেশ করার জন্য সংসদে বক্তৃতাকালে নবনির্বাচিত প্রাইম মিনিস্টার অলি সাত দফা চুক্তি প্রকাশ করেন এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, জাতীয় স্বার্থ রক্ষা এবং সুশাসন ও উন্নয়ন সুনিশ্চিত করার জন্য বৃহত্তম দলগুলির একত্রিত হওয়ার বাধ্যবাধকতার উপর জোর দেন। অলির ঘোষণা অনুযায়ী, চুক্তিতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সংবিধান সংশোধনের বিধান রয়েছে। সংবিধানের কোন কোন বিধান সংশোধন করা হবে, তার উল্লেখ না করা হলেও নির্বাচনী ব্যবস্থা সংশোধন করতে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার উদ্দেশ্যে জাতীয় দল হিসাবে গণনা করার জন্য প্রয়োজনীয় ভোটের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে উভয় পক্ষের আওয়াজ জোরালো হচ্ছে। যাই হোক, ওলি দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি আইন প্রণেতাদের সমর্থন পেয়েছেন, যা সাংবিধানিক সংশোধনীর জন্য যথেষ্ট। তবে বৃহত্তর জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করার বিষয়টি সহজ হবে না। অলি এবং দেউবা উভয়েই এ বিষয়ে সচেতন যে, সাংবিধানিক সংশোধনীর খেলা শুরু করলে জোটের অভ্যন্তরে এবং এর বাইরে থেকে আরও সংশোধনীর অনুরোধ আসতে পারে, যা আসলে সমগ্র পরিস্থিতিকে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার দিকে চালিত করবে।
মতাদর্শগত পার্থক্য সত্ত্বেও স্বার্থ একত্রিত করা
এনসি এবং সিপিএন-ইউএমএল -এর মধ্যে অংশীদারিত্ব বাড়ানোর জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সুশাসন ও উন্নয়ন সংক্রান্ত কর্মসূচিগুলির বিবৃত অজনপ্রিয় আখ্যান থাকা সত্ত্বেও এই সময়ে অসম্ভাব্য জোটের জন্য তাৎক্ষণিক স্বার্থের সংমিশ্রণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমত, বৃহত্তম দল হওয়া সত্ত্বেও দেউবা এবং অলি একটি স্বতন্ত্র তৃতীয় অংশগ্রহণকারীকে সরকার পরিচালনা করতে দেওয়ার বিষয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন। এর পাশাপাশি, এনসি এবং সিপিএন-ইউএমএল-এর মধ্যে মতবিরোধের সুযোগ নিয়ে জোট পাল্টানোর বিষয়ে প্রচণ্ডের অস্থিরতা উভয় দলের নেতৃত্বকেই হতাশ করেছিল। এমনকি প্রচণ্ড এই দাবিও করেছিলেন যে, তাঁর দলের কাছে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের ক্ষমতা রয়েছে এবং তিনি এ-ও বলেন যে, তাঁর সরকারের পতন কেউ ঘটাতে পারবে না। কারণ সম্পূর্ণ মেয়াদে টিকে থাকার জন্য বিভিন্ন রকমের কৌশল তাঁর জানা।
এনসি এবং সিপিএন-ইউএমএল-এর মধ্যে মতবিরোধের সুযোগ নিয়ে জোট পাল্টানোর বিষয়ে প্রচণ্ডের অস্থিরতা উভয় দলের নেতৃত্বকেই হতাশ করেছিল।
দ্বিতীয়ত, অলি দীর্ঘদিন ধরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় ফিরে আসতে চেয়েছিলেন এবং চুক্তি অনুযায়ী প্রচণ্ডের ক্ষমতায় আসার অপেক্ষা না করে সুযোগের সন্ধানে ছিলেন। প্রচণ্ডের ‘ম্যাজিক ট্রিক’ বা ‘জাদু কৌশল’ সংক্রান্ত বিবৃতি তাঁর সন্দেহ আরও বাড়িয়ে তোলে। এ দিকে, এনসি ক্যাডারদের মধ্যে অসন্তোষ ক্রমশ বাড়তে থাকে, যখন বৃহত্তম দল সত্ত্বেও তাঁদের বিরোধী আসনে পর্যবসিত করা হয় এবং এটি এনসি নেতৃত্বকে একটি নতুন জোট গঠনের দিকে চালিত হতে চাপ দেয়। এমনকি এর জন্য অলিকে প্রথম দুই বছরের মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মেনে নিতেও বাধ্য হয়।
তৃতীয়ত, নতুন রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় স্বতন্ত্র পার্টি (আরএসপি) দ্বারা নির্বাচনী ও রাজনৈতিক পরিসর লঙ্ঘন এনসি এবং সিপিএন-ইউএমএলকে-র বিরক্তির কারণ হয়েছিল। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী পর্যায়ের পদের ক্ষমতা ভাগ করে নেওয়া এবং জোট গঠনে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বৃহত্তম দলগুলির জন্য অসন্তোষের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
চতুর্থত, প্রচণ্ডের নেতৃত্বে দুর্নীতি কেলেঙ্কারির ধারাবাহিক তদন্ত এবং এনসি ও সিপিএন-ইউএমএল উচ্চপদস্থ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উভয় পক্ষের মধ্যে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। জাল ভুটানি উদ্বাস্তু কেলেঙ্কারি, ললিতা নিবাস জমি কেলেঙ্কারি, গিরি বন্ধু টি এস্টেট জমি দখল, ৬০ কেজি সোনা কেলেঙ্কারি-সহ উভয় দলের কিছু শীর্ষ নেতা ও তাঁদের আত্মীয়-স্বজনও তদন্তের আওতায় জড়িয়ে পড়েন।
পঞ্চমত, সিপিএন-এমসি-কে বাগে আনতে এনসি এবং সিপিএন-ইউএমএল-এর অভিন্ন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য এই জোটই ছিল এক মাত্র যুক্তিসঙ্গত বিকল্প। উভয় দলের নেতারা বারবার প্রচণ্ডের বিশ্বাসঘাতকতার কুখ্যাত প্রবণতা উপলব্ধি করেছেন। তাঁদের সাধারণ কর্মসূচিই হবে প্রচণ্ডকে মূল স্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন করা, শেষ পর্যন্ত তাঁকে একাই পরবর্তী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধ্য করা। এর পাশাপাশি পদের জন্য অলির প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে সফল করা ও পরবর্তী নির্বাচনী সরকারের এনসি-কে এগিয়ে রাখাও হবে তাদের লক্ষ্য।
জোটের কাঁটা হয়ে থাকবে বিদেশনীতি
এনসি এবং সিপিএন-ইউএমএল-এর মনোভাবের পার্থক্য বৈদেশিক সম্পর্ক সংক্রান্ত আচরণেই স্পষ্ট এবং এর নেপথ্যে রয়েছে দল দু’টির মধ্যে আদর্শগত পার্থক্য ও বিভিন্ন বিদেশি শক্তির প্রতি অব্যবহিত আচরণ। সিপিএন-ইউএমএল চেয়ার অলি যখন সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তখন এনসি চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন প্রাইম মিনিস্টার শের বাহাদুর দেউবার স্ত্রী এবং এনসি-তে তাঁর পরে ‘সম্ভবত’ সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা আরজু রানা দেউবা বিদেশমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। পূর্ববর্তী সরকারে প্রধানমন্ত্রীরা বৈদেশিক বিষয় পরিচালনার ক্ষেত্রে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করতেন। তবে এখন বিদেশ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আরও ব্যাপক আলোচনা আশা করা যায়। সম্প্রতি বিদেশমন্ত্রকের নতুন মন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণের পরই বিআরআই-এর বাস্তবায়ন পরিকল্পনার উপর জোর দিয়েছিলেন। চিনের ফ্ল্যাগশিপ উদ্যোগটি বিস্তৃত গবেষণা, পরামর্শ এবং আলোচনা ছাড়া সেটির বর্তমান অবস্থায় স্বাক্ষর করা যাবে না। চিন দীর্ঘদিন ধরে কাঠমান্ডু প্রশাসনকে বামপন্থী শক্তির মাধ্যমে বাস্তবায়ন পরিকল্পনা নিয়ে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ দিয়ে আসছে। প্রচণ্ডের অধীনে পূর্ববর্তী সিপিএন-ইউএমএল এবং সিপিএন-এমসি সরকার জুন মাসে নেপাল-চিন কূটনৈতিক আলোচনা প্রক্রিয়ার বৈঠকের সময় পরিকল্পনা নথিতে প্রায় স্বাক্ষর করেছিল। কিন্তু সংসদে এনসি ক্ষমতায় আসার পর শেষ মুহূর্তে সরকার পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছে। এ দিকে, অলি স্বভাবতই চিনপন্থী হিসেবে পরিচিত এবং এনসি ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষাবলম্বী। এ বার অলি একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা ভোগ করবেন না এবং বিদেশনীতির বিষয়গুলি বৃহত্তর আলোচনার আওতায় আনা হবে। যাই হোক, স্থিতাবস্থার প্রচার ছাড়া অন্য কোনও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আশা করা যায় না।
প্রচণ্ডের অধীনে পূর্ববর্তী সিপিএন-ইউএমএল এবং সিপিএন-এমসি সরকার জুন মাসে নেপাল-চিন কূটনৈতিক আলোচনা প্রক্রিয়ার বৈঠকের সময় পরিকল্পনা নথিতে প্রায় স্বাক্ষর করেছিল।
জোটের ভাগ্য এবং আগামিদিনের পথ
এই জোটটি এনসি এবং সিপিএন-ইউএমএল-এর ক্ষমতা দখলের জন্য অত্যন্ত আবশ্যক, যা অন্যথায় উল্লেখযোগ্য ভাবে কম আসনবিশিষ্ট দলগুলি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। বিশেষ করে দেশের দু’টি বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের জোটের দরুন ত্রিশঙ্কু অবস্থায় থাকা সংসদের সুযোগ নিয়ে বারবার জোট পরিবর্তন করে রাজনীতির ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকার যে সুযোগ প্রচণ্ড নিয়েছেন, তার প্রেক্ষিতে এমনটা সম্ভব। তবে এটি নতুন জোটের ভাগ্য সুনিশ্চিত করার জন্য কিছুই করে না। অলির ক্ষমতা কুক্ষিগত করা এবং জোটের অংশীদারদের পাশ কাটিয়ে যাওয়ার ইতিহাস ইঙ্গিত দেয় যে, এই বিন্যাস চলতে থাকলে নতুন জোটের স্থিতিশীলতা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। ইতিমধ্যে, এনসি এবং সিপিএন-ইউএমএল-এর কাছে তাদের ভাবমূর্তি পুনরুজ্জীবিত করা এবং উন্নত পরিষেবা প্রদান, শাসনব্যবস্থা ও উন্নয়নের উপর মনোযোগ দিয়ে তাদের নির্বাচনী ভিত্তি সুরক্ষিত করার উপযুক্ত মুহূর্ত আসীন। এমনটা করতে ব্যর্থ হলে পরবর্তী নির্বাচনে বিকল্প রাজনৈতিক দল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে জায়গা হারানোর ঝুঁকি থেকেই যাবে।
অর্পণ গেলাল নেপালের সেন্টার ফর সোশ্যাল ইনোভেশন অ্যান্ড ফরেন পলিসির (সিইএসআইএফ) রিসার্চ ও প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.