-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
উচ্চ প্রবৃদ্ধির হার সত্ত্বেও মূলধন-সমৃদ্ধ এবং শ্রমসম্পন্ন খাতের মধ্যে ভারতের অর্থনৈতিক দ্বৈতবাদ অন্তর্ভুক্তিমূলক অগ্রগতির ক্রমবর্ধমান ব্যবধানকে তুলে ধরে, যা একটি স্পষ্ট আহ্বানের প্রয়োজনীয়তাকে দর্শায়।
ভারতের অর্থনৈতিক ভূ-পরিসর একটি গতিশীল, মূলধন-নিবিড় আধুনিক ক্ষেত্র এবং চিরাচরিত, শ্রম-নিবিড় ক্ষেত্রের মধ্যে ক্রমাগত চ্যালেঞ্জের সহাবস্থান দ্বারা চিহ্নিত। এই দ্বৈতবাদ দীর্ঘদিন ধরে ভারতের প্রবৃদ্ধির আখ্যানকে সংজ্ঞায়িত করেছে। সাম্প্রতিক ঘটনাবলি দ্রুততম বর্ধনশীল বৃহৎ অর্থনীতি হিসেবে ভারতের ব্যতিক্রমী কর্মক্ষমতাকে তুলে ধরলেও গভীর কাঠামোগত ভারসাম্যহীনতা অব্যাহতই রয়েছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস (জিইপি) রিপোর্ট এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক থেকে প্রাপ্ত অনুমানগুলি দর্শায় যে, ভারত আগামী দুই অর্থবর্ষে যথাক্রমে প্রায় ৬.৭ শতাংশ ও ৬.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হার বজায় রাখতে প্রস্তুত, যা বিশ্বব্যাপী ২.৭ শতাংশের প্রক্ষেপিত গড়কে উল্লেখযোগ্য ভাবে ছাড়িয়ে যাবে। এই শক্তিশালী কর্মক্ষমতা মূলত একটি পুনরুজ্জীবিত পরিষেবা এবং উৎপাদন ক্ষেত্র দ্বারা পরিচালিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা রূপান্তরমূলক সরকারি উদ্যোগ দ্বারা চালিত। তবুও দেশের দ্বৈতবাদী কাঠামো সত্যিকার অর্থে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করে চলেছে।
ভারতের প্রবৃদ্ধির আখ্যান: অর্থনৈতিক অগ্রগতি সত্ত্বেও দ্বৈতবাদী উন্নয়ন
বিশ্বব্যাপী অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও শক্তিশালী মৌলিক ভিত্তির উপর নির্ভরশীল ভারতের জোরাল প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস সমৃদ্ধ পরিষেবা ক্ষেত্র এবং দেশের উৎপাদন ভিত্তিকে সশক্ত করার মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যানের অধীনে অবকাঠামোগত আধুনিকীকরণ থেকে শুরু করে ছোট ব্যবসা ও স্টার্টআপগুলিকে সহজতর করার জন্য নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থাগুলিকে সরলীকরণ পর্যন্ত… সরকারি উদ্যোগগুলি এর প্রবৃদ্ধিকে সক্ষম করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই সংস্কারগুলি আধুনিক ক্ষেত্রের সম্প্রসারণকে চালিত করেছে এবং বছরের পর বছর ধরে ব্যক্তিগত চাহিদার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করেছে, যা ঋণের উন্নত অধিকার ও একটি শক্তিশালী শ্রমবাজার দ্বারা সমর্থিত।
প্রধানমন্ত্রী গতি শক্তি জাতীয় মাস্টার প্ল্যানের অধীনে অবকাঠামোগত আধুনিকীকরণ থেকে শুরু করে ছোট ব্যবসা ও স্টার্টআপগুলিকে সহজতর করার জন্য নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থাগুলিকে সরলীকরণ পর্যন্ত… সরকারি উদ্যোগগুলি এর প্রবৃদ্ধিকে সক্ষম করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
স্টার্টআপ ইন্ডিয়া, মেক ইন ইন্ডিয়া এবং প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেনটিভ স্কিমের মতো কর্মসূচিগুলির উদ্ভাবন আসলে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং উৎপাদন ও সংশ্লিষ্ট শিল্প ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদানের প্রতি সরকারের প্রতিশ্রুতিকে আরও জোরদার করেছে। এই উদ্যোগগুলি একটি স্বনির্ভর ও বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতামূলক অর্থনীতি গড়ে তোলার উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রচেষ্টাকেই দর্শায়। তবে চিরাচরিত ক্ষেত্রগুলি পিছিয়ে রয়েছে। সেকেন্ডারি ও টার্শিয়ারি ক্ষেত্রগুলিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও ভারতে কাঠামোগত দ্বৈততা স্পষ্ট। কৃষিক্ষেত্রেই এখনও সবচেয়ে বেশি নিয়োগ হয়। এই ক্ষেত্রে প্রায় ৪৬ শতাংশ কর্মী বাহিনী কাজ করে (২০২২-২৩ সালের হিসাবে)। তবে তা মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) মাত্র ১৫ শতাংশ অবদান রাখে। অসংগঠিত বা অনানুষ্ঠানিক ক্ষেত্র ৮৬ শতাংশ কর্মী বাহিনীকে নিয়োগ করে এবং মোট মূল্য সংযোজনের (জিভিএ) প্রায় ৪৩ থেকে ৫২ শতাংশ (২০১৭-১৮ সালের আনুমানিক) অবদান রাখে এবং অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে হলেও এটি অনুন্নত অংশ হিসাবেই রয়ে গিয়েছে। এই অবিচল দ্বৈততা ভারতের অর্থনীতির দ্রুত আধুনিকীকরণকারী অংশগুলিতে শ্রম পুনর্বণ্টনের চ্যালেঞ্জকে তুলে ধরে।
অর্থনৈতিক তত্ত্ব অনুযায়ী, উন্নয়নের ফলে একটি কাঠামোগত পরিবর্তনের দিকে পরিচালিত হওয়া উচিত যেখানে শ্রম চিরাচরিত, নিম্ন-উৎপাদনশীল ক্ষেত্র (যেমন কৃষি) থেকে উচ্চ-উৎপাদনশীল শিল্পে (উৎপাদন এবং পরিষেবা) রূপান্তরিত হবে। তবে ভারতের তথ্য ভিন্ন আখ্যানের কথাই বলে। আধুনিক ক্ষেত্রগুলিতে কৃষির তুলনায় উৎপাদনশীলতার মাত্রা প্রায় চার গুণ বেশি হলেও আপেক্ষিক স্থবিরতা সত্ত্বেও পরবর্তী কালের কর্মসংস্থানের ধারাবাহিক ভাবে উচ্চ অংশ আয় বৈষম্যকে আরও শক্তিশালী করে তুলছে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিকে ব্যাহত করছে। যদিও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আয়ের মাত্রা বৃদ্ধি করেছে এবং পরিবারগুলিকে উচ্চ আয়ের গোষ্ঠীতে রূপান্তরিত করতে সক্ষম করেছে, তবুও দ্বৈতবাদী কাঠামোর কারণে বৈষম্য, অনানুষ্ঠানিকতা ও কর্মসংস্থানের দুর্বলতার কাঠামোগত সমস্যাগুলি অব্যাহত রয়েছে ও তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। জনসংখ্যার শীর্ষ ১ শতাংশ এখন জাতীয় আয়ের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নিয়ন্ত্রণ করে, যা সম্পদের বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে তোলে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক সংহতির সম্ভাবনাকেও ক্ষুণ্ণ করে।
মূলত শ্রম-নিবিড় ও খণ্ডিত জমির মালিকানার দরুন কৃষিক্ষেত্রটি মাত্রা ও আধুনিকীকরণের অর্থনীতি অর্জনের জন্য লড়াই করে, যা বৃহত্তর অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্বৃত্তকে সীমিত করে।
উদাহরণস্বরূপ, চিরাচরিত কৃষিক্ষেত্র ভারতের প্রবৃদ্ধির গতিপথকে বাধা দিয়ে চলেছে। কারণ হিসেবে দর্শানো যায় এর অন্তর্নিহিত নিম্ন উৎপাদনশীলতা ও প্রযুক্তিগত ভাবে পিছিয়ে থাকার বিষয়। মূলত শ্রম-নিবিড় ও খণ্ডিত জমির মালিকানার দরুন কৃষিক্ষেত্রটি মাত্রা ও আধুনিকীকরণের অর্থনীতি অর্জনের জন্য লড়াই করে, যা বৃহত্তর অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্বৃত্তকে সীমিত করে। ঋণের সীমিত অধিকার এবং দুর্বল বাজার লভ্যতার কারণে কাঠামোগত জড়তাও বৃদ্ধি পায়, যা উৎপাদন ও পরিষেবার মতো উচ্চ-মূল্যের ক্ষেত্রে শ্রমের মসৃণ পুনর্বণ্টনকে বাধাগ্রস্ত করে। ফলস্বরূপ, স্থায়ী গ্রামীণ দারিদ্র্য ও অদক্ষ সম্পদ বরাদ্দ সামগ্রিক উৎপাদনশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, যা ভারতের অর্থনৈতিক অভিসৃতি এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির পথে একটি উল্লেখযোগ্য বাধা তৈরি করে।
এ ছাড়াও, ভারতে মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৯০ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক রয়ে গিয়েছে। এ ক্ষেত্রে আবার মূলধন ও প্রযুক্তির অভাব রয়েছে, যা কেবল উৎপাদনশীলতাকেই দমিয়ে রাখে না, বরং কম মজুরি ও ন্যূনতম উদ্ভাবনের চক্রকেও স্থায়ী করে তোলে। অনানুষ্ঠানিক ইনপুটের উপর আনুষ্ঠানিক ক্ষেত্রের নির্ভরতা এই আন্তঃনির্ভরতাকে আরও দৃঢ় করে তোলে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির জন্য ব্যাপক কাঠামোগত সংস্কারকে অপরিহার্য করে তোলে। সীমিত গ্রামীণ সুযোগের প্রতিক্রিয়া হিসেবে গ্রাম থেকে শহরে দ্রুত অভিবাসন উল্লেখযোগ্য শহুরে চ্যালেঞ্জের দিকে পরিচালিত করেছে। এই শহুরে চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে অন্যতম হল আবাসন সঙ্কট, যানজট ও পরিবেশগত অবনতি, যা ভারসাম্যহীন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত বাহ্যিক প্রভাবগুলিকে দর্শায়।
অনানুষ্ঠানিক ইনপুটের উপর আনুষ্ঠানিক ক্ষেত্রের নির্ভরতা এই আন্তঃনির্ভরতাকে আরও দৃঢ় করে তোলে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির জন্য ব্যাপক কাঠামোগত সংস্কারকে অপরিহার্য করে তোলে।
সমন্বয়ের কি আদৌ কোনও সুযোগ আছে?
অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার পাশাপাশি উচ্চ প্রবৃদ্ধির হার বজায় রাখার জন্য ভারতকে এমন একটি পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে, যা তার দ্বৈতবাদী ক্ষেত্রগুলির মধ্যে ব্যবধান পূরণ করতে সহায়তা করে। নিম্নলিখিত কিছু বিষয় বৃহত্তর নীতিগুলিকে সক্ষম করার জন্য বিদ্যমান প্রচেষ্টাগুলিকে জোরদার এবং শক্তিশালী করতে পারে:
আগামী অর্থবর্ষে প্রায় ৬.৭ শতাংশ হারে স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে এবং ভারত বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ভূপরিসরে আধিপত্য বিস্তার করতে প্রস্তুত।
ভারতের অর্থনৈতিক আখ্যান উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও স্থিতিস্থাপকতা, বিশেষ করে বিশ্বব্যাপী মন্দার মধ্যেও শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা বজায় রাখার ক্ষমতার কথা বলে। আগামী অর্থবর্ষে প্রায় ৬.৭ শতাংশ হারে স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে এবং ভারত বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ভূপরিসরে আধিপত্য বিস্তার করতে প্রস্তুত। তা সত্ত্বেও একটি ক্রমবর্ধমান আধুনিক ক্ষেত্র এবং একটি স্থিতিশীল চিরাচরিত ক্ষেত্রের সম্মিলিত শক্তি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ উপস্থাপন করে। দ্রুত প্রবৃদ্ধির লাভগুলি ন্যায়সঙ্গত ভাবে ভাগ করে নেওয়ার জন্য প্রগতিশীল কর, শ্রম-নিবিড় শিল্পায়ন, উন্নত ঋণ লভ্যতা এবং ব্যাপক গ্রামীণ উন্নয়নের মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিদ্যমান সরকারি উদ্যোগের মধ্যে এই নীতিগুলিকে সমন্বিত করা ভারতের অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতাকে শক্তিশালী করবে এবং আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের পথ প্রশস্ত করবে, যেখানে উচ্চাকাঙ্ক্ষা, উদ্ভাবন ও কৌশলগত শাসন সমাজের সকল অংশকে উন্নত করার জন্য সমন্বিত হবে।
দেবস্মিতা সরকার অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সেন্টার ফর নিউ ইকোনমিক ডিপ্লোমেসির অ্যাসোসিয়েট ফেলো।
মনীশ বৈদ্য ওআরএফ-এর রিসার্চ ইন্টার্ন।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Debosmita Sarkar was an Associate Fellow with the SDGs and Inclusive Growth programme at the Centre for New Economic Diplomacy at Observer Research Foundation, India. Her ...
Read More +
Manish Vaid is a Junior Fellow at ORF. His research focuses on energy issues, geopolitics, crossborder energy and regional trade (including FTAs), climate change, migration, ...
Read More +