Author : Kabir Taneja

Published on Feb 28, 2025 Updated 0 Hours ago

গত পনেরো মাস ধরে ইজরায়েল-ইরান দ্বন্দ্ব এমন একটি কেস স্টাডি যা এখনও আধুনিক যুদ্ধে মানুষের বুদ্ধিমত্তার গুরুত্ব তুলে ধরে, এবং নতুন প্রযুক্তির ফাঁক উন্মোচন করে।

মধ্যপ্রাচ্যে আধুনিক যুদ্ধ: গোয়েন্দা তথ্য বনাম আক্রমণাত্মক প্রতিরক্ষা

সঙ্কট-তাড়িত মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, এবং নিজেদের সুবিধামতো আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিকে রূপ দেওয়ার জন্য, রাষ্ট্র ও অ-রাষ্ট্রীয় খেলোয়াড়দের কৌশলগত পছন্দগুলির একটি বিন্যাস গত ১৫ মাস ধরে দেখা গিয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইজরায়েলের বিরুদ্ধে হামাসের সন্ত্রাসবাদী হামলা ইজরায়েল ও ইরান উভয়ের কৌশলকে যতটা সম্ভব একটি পূর্ণমাত্রার প্রচলিত যুদ্ধের কাছাকাছি নিয়ে যায়। ইজরায়েল যখন গাজায় হামাস এবং পরে লেবাননে হিজবুল্লাকে দুর্বল করার দিকে মনোনিবেশ করেছিল, সেই সময় ইরানের ‘‌প্রতিরোধের অক্ষ’‌ নকশাটিও উল্লেখযোগ্য অস্থিরতার মুখোমুখি হয়েছিল।


২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইজরায়েলের বিরুদ্ধে হামাসের সন্ত্রাসবাদী হামলা ইজরায়েল ও ইরান উভয়ের কৌশলকে যতটা সম্ভব একটি পূর্ণমাত্রার প্রচলিত যুদ্ধের কাছাকাছি নিয়ে যায়।



ইজরায়েল-ইরান গতিশীলতা বহু বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যের কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মূলবিন্দু হয়ে রয়েছে, কারণ আরব শক্তিগুলি তাদের অর্থনৈতিক ও আর্থিক শক্তি তৈরিতে আরও বেশি মনোযোগ দিয়েছে। তারা 
নিরপেক্ষতার একটি স্তর তৈরি করতে তেহরানের মতো শত্রুদের সঙ্গে স্বল্পমেয়াদি চুক্তি করেছে এবং ইজরায়েলের সঙ্গে ব্যাক-চ্যানেল আলোচনাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। যাই হোক, ইসলামি রেভলিউশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) ও কুদস ফোর্সের প্রয়াত প্রধান কাসেম সোলেইমানির তৈরি ইরানের ‘‌ফরওয়ার্ড ডিফেন্স’‌ বা ‘‌আক্রমণাত্মক প্রতিরক্ষা’‌ কৌশল মোকাবিলা করার জন্য ইজরায়েল বেছে নিয়েছে ‘‌ফরওয়ার্ড অফেন্স’‌ বা  ‘‌আগুয়ান আক্রমণ’‌-‌এর কৌশল, এবং তার জন্য অগ্রাধিকার দিয়েছে গোয়েন্দা তথ্যকে।

আগুয়ান আক্রমণ

ইজরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি, বিশেষ করে এর বহির্দেশীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর ইন্ট্যালিজেন্স অ্যান্ড স্পেশাল অপারেশনস, যা মোসাদ নামেই বেশি পরিচিত, দীর্ঘদিন ধরেই এর দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি কৌশলগত প্রতিরক্ষার প্রাথমিক স্তর। ইজরায়েলি নিরাপত্তা চিন্তার প্রধান ধারণা হল অনুভূত হুমকির বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক কিন্তু লক্ষ্যভিত্তিক পদ্ধতিতে এমনভাবে কাজ করা, যা বেশিরভাগ সমগোত্রীয় এজেন্সি করে না। এই ভঙ্গিটি প্রচলিত যুদ্ধ শুরু করার আগে হুমকির উপলব্ধি মোকাবিলা করার সুযোগ দেয়। যেহেতু ইজরায়েল একটি ছোট রাষ্ট্র, প্রচলিত সংঘাত এর জন্য একটি সম্ভাব্যভাবে ব্যয়বহুল ও অস্তিত্ব রক্ষার বিষয়। ইজরায়েল পূর্বে একটি প্রচলিত ব্যবস্থায় ভালভাবে কাজ করেছে, যেমনটি ১৯৭৩ সালের ইয়োম কিপপুর যুদ্ধের সময় প্রত্যক্ষ করা হয়েছিল। সেই সময় দেশটি মিশর ও সিরিয়ার নেতৃত্বে আরব রাষ্ট্রগুলির একটি জোটকে রুখে দিয়েছিল। একটি গোয়েন্দা-প্রথম কৌশলসহ গোপনীয় অভিযানকে অগ্রাধিকার দেওয়া হলে তা একটি রাষ্ট্রের জন্য শুধু কৌশলগত নয়, বরং চলমান গতিশীলতাসম্পন্ন উল্লেখযোগ্য প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা করে। সাংবাদিক রোনেন বার্গম্যান
গোপন ইজরায়েলি নিরাপত্তা পদ্ধতি সম্পর্কে তাঁর বিশদ বিবরণে ১৯৪০-‌এর দশক থেকে শুরু হওয়া গতিশীল নিরাপত্তা কৌশলগুলির একটি মূল হাতিয়ার হিসাবে হত্যাকে অগ্রাধিকারের পদ্ধতি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তারপর থেকে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলি, যেমন জার্মানির মিউনিখে ১৯৭২ সালের অলিম্পিক গেমসে নিজেদের ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর বলে অভিহিত করা একটি প্যালেস্তাইনি মিলিশিয়ার ইজরায়েলি ক্রীড়াবিদদের হত্যা, প্রতিরক্ষার প্রথম স্তম্ভ হিসাবে গতিশীল গোয়েন্দা তথ্যের প্রয়োজন চিহ্নিত করেছে।


ইরানের অভ্যন্তরে সে দেশের পরমাণু বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করে ইজরায়েলের অভিযানগুলি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে সময়-সীমাবদ্ধ বিপর্যয় সৃষ্টি করেছিল, এবং আর্থিক ও অস্ত্র প্রবাহকে ব্যাহত করার জন্য ইজরায়েল বিশ্বজুড়ে হামাস ও হিজবুল্লা অপারেটিভদের ক্রমাগত লক্ষ্যবস্তু করে।



উপরোক্ত প্রবণতাগুলিকে মাথায় রেখে, ৭ অক্টোবরের হামলার পর লেবাননজুড়ে হিজবুল্লার শতাধিক অপারেটিভকে লক্ষ্য করে পেজার দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানোর মতো অভিযানগুলি বুঝিয়ে দেয় ইজরায়েলি নিরাপত্তা স্থাপত্যে দীর্ঘমেয়াদি গোপন  অভিযানের গুরুত্ব কতটা।
ইরানের অভ্যন্তরে সে দেশের পরমাণু বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করে ইজরায়েলের অভিযানগুলি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে সময়-সীমাবদ্ধ বিপর্যয় সৃষ্টি করেছিল, এবং আর্থিক ও অস্ত্র প্রবাহকে ব্যাহত করার জন্য ইজরায়েল বিশ্বজুড়ে হামাস ও হিজবুল্লা অপারেটিভদের ক্রমাগত লক্ষ্যবস্তু করে চলেছে। কার্যকরী গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই ব্যাপক নিরাপত্তা যন্ত্রের কিছু তৎপরতার একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হল ২০১০ সালে দুবাইতে মোসাদ-এর একটি হিট স্কোয়াডের হাতে হামাসের প্রধান অস্ত্র সংগ্রাহক মাহমুদ আল-মাভুর হত্যা। অনেকগুলো বছর পেরিয়ে এসে ইজরায়েলি নিরাপত্তাকরণের ৭ অক্টোবর-পরবর্তী সংস্করণের দিকে তাকালে দেখা যাবে, ২০২৩ সালে হামাসের সাফল্যের পর ব্যাপকভাবে আহত অহঙ্কারের নেতৃত্বে ইজরায়েল মধ্য-তেহরানে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াহকে হত্যা করেছিল। এটি গভীর-মূল এবং দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনার সংহতকরণের এমন ধারাবাহিকতা প্রতিফলিত করে যার জন্য ইজরায়েল পরিচিত হয়ে উঠেছে।

আক্রমণাত্মক প্রতিরক্ষা

দীর্ঘমেয়াদি সুবিধার জন্য ইরান এই অঞ্চল জুড়ে মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলির রাজনৈতিক লক্ষ্যগুলিকে ইন্ধন জুগিয়ে একটি ‘‌আক্রমণাত্মক প্রতিরক্ষা স্থাপত্য’ তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে ইরানের কৌশল তেহরানের জন্য, বিশেষ করে সর্বশক্তিমান ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি)-এর জন্য, অনেক সাফল্য অর্জন করেছে। বিশেষজ্ঞ হামিদ রেজা আজিজি ইরানের আক্রমণাত্মক প্রতিরক্ষা কৌশলটিকে
চিহ্নিত করেছেন "নতুন সামরিক মতবাদ নয়, বরং প্রতিরোধের একটি বিকশিত ও আধুনিকীকৃত রূপ" হিসাবে। যদিও লেবাননের হিজবুল্লার মতো গোষ্ঠী ইরানের আদর্শিক অঙ্গের সঙ্গে প্রবাদপ্রতিমভাবে সংযুক্ত, অন্যদের ক্ষেত্রে — যেমন হামাস, যা একটি সুন্নি প্যালেস্তাইনি মিলিশিয়া, এবং হুথি, একটি জায়েদি শিয়া রাজনৈতিক ও জঙ্গি গোষ্ঠী (যা আনসার আল্লাহ নামেও পরিচিত) — ভিন্নতা রয়েছে, যেখানে ইরান একটি সীমার বাইরে হস্তক্ষেপ না-‌করা পছন্দ করে। এর অর্থ হল, একটি কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে, ‘‌প্রতিরোধের অক্ষ’‌-‌এর সম্পূর্ণ নকশার সব সময়ই একটি সীমিত  জীবনরেখা ছিল।


শীর্ষস্তরীয় মার্কিন সামরিক প্রযুক্তি এবং ডিজিটাল ও সাইবার প্রযুক্তিতে উল্লেখযোগ্য দেশীয় অগ্রগতির সাহায্য নিয়ে ইরান ইজরায়েলের সামরিক শক্তির কৌশলগত প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসাবে যে প্রক্সিগুলির জালিকাকে সমর্থন করে এসেছে, তা বর্তমানে উল্লেখযোগ্য বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে।



উদাহরণস্বরূপ, ইজরায়েলি সামরিক অভিযানে হামাস ও হিজবুল্লা উভয়ের ক্ষতির পরে, হুথিরা এখনও একটি সম্ভাব্য শক্তি হিসাবে থেকে গিয়েছে। হুথিরা এমন একটি আদর্শিক পটভূমি থেকে এসেছে যা জায়েদি ও ওয়াহাবিদের মধ্যে, বা স্পষ্ট ভাষায় বললে সুন্নি ও শিয়াদের মধ্যে,
মূল দ্বন্দ্বের ধারণা প্রচার করে। বাস্তব রাজনৈতিক অর্থ হল তাদের সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা সৌদিদের সঙ্গে, যা ২০১৫ সালে শুরু হয়েছিল, আজ আলোচনা, দর-‌কষাকষি ও রাজনৈতিক সমঝোতার পর্যায়ে নেমে এসেছে। হুথিদের নেতৃত্বকে খতম করতে না-‌পারা যেমন গোয়েন্দা তথ্যের প্রাপ্যতার অভাব বোঝায়, তেমনই অন-গ্রাউন্ড, লাইভ ইন্ট্যালিজেন্সের গুরুত্বও তুলে ধরে। ২০২১ সালে বাইডেন প্রশাসনের সংগঠনটির উপর সন্ত্রাসবাদী তকমা অপসারণের পরে ট্রাম্পের অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন আবার একে একটি মনোনীত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসাবে চিহ্নিত করছে, তবে এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কৌশলগত বিমান হামলার পরিকল্পনা এ যাবৎ এর বিরুদ্ধে কোনও কার্যকরী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে।
 
আপাতত হামাস বা হিজবুল্লার চেয়ে বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন হিসাবে দেখা হচ্ছে ‘‌অক্ষের’‌ মূল সদস্যের এই পুনর্নির্মাণটি, যা চিনের মধ্যস্থতায় ২০২৩ সালে ইরান-সৌদি সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ চুক্তির সঙ্গেও রাজনৈতিকভাবে সংযুক্ত। প্যালেস্তাইনের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার আহ্বান-‌কেন্দ্রিক সমাবেশ ঘটিয়ে হুথিরা ইজরায়েলকে হুমকি ও লক্ষ্যবস্তু করা অব্যাহত রাখলেও, তারা ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির সঙ্গেও সারিবদ্ধ বলে মনে হচ্ছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ইয়েমেনি মিলিশিয়াটি, যারা লোহিত সাগরের জলপথে শত শত বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ব্যাহত করেছে, তারা এখন অ-ইজরায়েলি বাণিজ্যিক জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করবে না।

যাই হোক, এখনও অবধি, হামাস ও হিজবুল্লার শক্তিক্ষয়ের পাশাপাশি সিরিয়ার বাশার আল-আসাদের শাসনের পতন ‘‌অক্ষ’‌ নকশায় সবচেয়ে বড় আঘাত করেছে। শীর্ষস্তরীয় মার্কিন সামরিক প্রযুক্তি এবং ডিজিটাল ও সাইবার প্রযুক্তিতে উল্লেখযোগ্য দেশীয় অগ্রগতির সাহায্য নিয়ে ইরান ইজরায়েলের সামরিক শক্তির কৌশলগত প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসাবে যে প্রক্সিগুলির জালিকাকে সমর্থন করে এসেছে, তা বর্তমানে উল্লেখযোগ্য বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যে 'আধুনিক যুদ্ধ' থেকে শিক্ষা

মধ্যপ্রাচ্যের প্রেক্ষাপট থেকে আধুনিক যুদ্ধের ধারণাটি সঠিকভাবে অনুসন্ধান করার উপায় হল পুরো অঞ্চল নিয়ে মাথা না-‌ঘামিয়ে নির্দিষ্টভাবে ইজরায়েল-ইরান প্রতিযোগিতায় মনোনিবেশ করা। ৭ অক্টোবরের সন্ত্রাসবাদী হামলা এমন একটি উদাহরণ যেখানে নিরাপত্তাকরণে প্রযুক্তির উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা দীর্ঘমেয়াদি  সমাধানের পরিবর্তে বরং উদ্বেগের একটি বিকাশশীল সমস্যা হিসাবে উঠে এসেছে। প্রচলিত অর্থ থেকে বেরিয়ে এসে মধ্যপ্রাচ্যে প্রযুক্তির বিতর্কটি আদৌ প্রচলিত সেনাবাহিনী বা অস্ত্রব্যবস্থার সঙ্গে শুরু হয়নি, বরং শুরু হয়েছিল অ-রাষ্ট্রীয় খেলোয়াড়দের হাতে, যারা স্থূল ধরনের ড্রোন তৈরি ও ব্যবহার করেছে। তথাকথিত ইসলামিক স্টেট (আইএসআইএস বা আরবিতে দায়েশ নামেও পরিচিত) এক ধরনের অনুঘটক ছিল, যারা প্রাথমিক পর্যায়ে তাদের দলে যোগ দেওয়া ইউরোপ ও তার বাইরের প্রকৌশলীদের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ড্রোন তৈরির জন্য ওয়ার্কশপ  তৈরি করেছিল।


২০১১ সালে পাকিস্তানে আল-কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করা এবং ২০১৯ সালে সিরিয়ার বারিশাতে আইএসআইএস প্রধান ও খলিফা আবু বকর আল বাগদাদির হত্যা, উভয়ই ছিল মানব গোয়েন্দা তথ্যের পণ্য।



যাই হোক, মধ্যপ্রাচ্য দেখিয়েছে যে আধুনিক যুদ্ধ স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র, প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) কেন্দ্রিকতা নিয়ে বিতর্কের বাইরে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে। যদিও এই সরঞ্জামগুলি মঞ্চগুলিতে অগ্রণী অস্ত্রাগার হয়ে উঠতে পারে, যেমন বড়-শক্তির প্রতিযোগিতায়, তবে আরও আঞ্চলিক, সাম্প্রদায়িক ও মতাদর্শগত সংঘাতের জন্য এখনও আগেকার অভিযানগত ও গোয়েন্দা তথ্যের ব্লুপ্রিন্টের প্রয়োজন হবে।

ডেটা মাইনিং, ওপেন-সোর্স ইন্ট্যালিজেন্স (ওসইন্ট), ও সিগন্যাল ইন্ট্যালিজেন্স (২০০০-এর দশকের গোড়ার দিকে যা টেকনোলজি ইন্ট্যালিজেন্স বা টেকইন্ট নামে পরিচিত ছিল)-‌এর মতো নতুন কৌশলগুলি তথ্যের ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে, কিন্তু মানব গোয়েন্দা তথ্য (হিউমিন্ট)-‌ভিত্তিক দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা এখনও অন্য যে কোনও উপাদানের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ রয়ে গিয়েছে। ২০১১ সালে পাকিস্তানে আল-কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করা এবং ২০১৯ সালে সিরিয়ার বারিশাতে আইএসআইএস প্রধান ও খলিফা আবু বকর আল বাগদাদির হত্যা, উভয়ই ছিল মানব গোয়েন্দা তথ্যের পণ্য। যুক্তরাজ্যের সিক্রেট ইন্ট্যালিজেন্স সার্ভিস, যা এমআই৬ নামে বেশি পরিচিত, তার প্রধান রিচার্ড মুর ২০২৩ সালে
বলেছিলেন যে, এআই-এর বিস্তার সত্ত্বেও ‘‌গুপ্তচরবৃত্তির ভবিষ্যৎ মানুষের দেওয়া গোয়েন্দা তথ্য ও বিচারের মধ্যে নিহিত’‌। এটি ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বিশিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থাগুলির এমন একটির বিরল কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি, যার মধ্যপ্রাচ্যে সাফল্য ও ব্যর্থতার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে

পরিশেষে,দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি কৌশলগত চিন্তাভাবনাগুলিকে প্রাথমিকভাবে উপলব্ধ প্রযুক্তির ক্ষমতার দ্বারা আকৃতি দেওয়ার পরিবর্তে পৃথক মঞ্চগুলি থেকে নেওয়া পাঠ এবং তাদের প্রয়োজনের সঙ্গে আরও সংযুক্ত করা অপরিহার্য। ইজরায়েল-ইরান দ্বন্দ্ব অধ্যয়নের সুযোগ এবং আধুনিক ও প্রচলিত যুদ্ধের ধারণার মধ্যে ফাঁক সম্পর্কে একটি আকর্ষণীয় কেস স্টাডি।



কবির তানেজা অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের একজন ডেপুটি ডিরেক্টর ও ফেলো।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.