চিনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)–র আন্তর্জাতিক উন্নয়ন লিয়াজোঁ অফিস জুলাই মাসে নেপালে সিল্ক রোডস্টার প্ল্যাটফর্ম উদ্বোধন করেছে। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)–এর সূচনার ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বেজিং–এর বক্তব্য অনুসারে ‘নতুন ধারণা’র অর্থ হল, কাঠমান্ডুতে বিআরআই–এর পরিধি প্রসারিত করা এবং নেপালের সঙ্গে রাজনৈতিক ও মানুষের–সঙ্গে–মানুষের সম্পর্ক আরও জোরদার করা। সাম্প্রতিক কয়েক মাসে নেপাল ও চিনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিআরআই সম্পর্কিত উন্নয়ন এবং এর আওতাভুক্ত প্রকল্পগুলির দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। যদিও চিন চেয়েছে কাঠমান্ডুর বিআরআই–তে যোগদানের আগে স্বাক্ষরিত প্রকল্পগুলিকে এতে সংযুক্ত করতে, নেপালি পক্ষ এই ধরনের বিস্তৃত অন্তর্ভুক্তির অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করেছে। পোখরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে ঘিরে বিতর্ক এবং সেখানে মূল পরিকাঠামো তৈরির প্রশ্নটি, এবং তার পাশাপাশি এটিকে বিআরআই–এর অধীনে একটি ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প বলে চিনের একতরফা ঘোষণার মধ্যে এটি দৃশ্যমান ছিল। কাজেই বিআরআই–এর অধীনে একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম হিসাবে প্রধানত মানুষের–সঙ্গে–মানুষের সহযোগিতা ও বিনিময়ের কথা ঘোষণা করা এ কথাই নিশ্চিত করে যে বেজিং স্থলবেষ্টিত দেশটিতে বিআরআই–এর অধীনে কিছু অগ্রগতি দেখানোর উপর কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে। প্ল্যাটফর্মের লক্ষ্য চিনের প্রভাব বৃদ্ধির জন্য উভয় পক্ষের মধ্যে পূর্ববিদ্যমান সাংস্কৃতিক ও মানুষের–সঙ্গে–মানুষের সম্পর্ক আরও গভীর করা।
যদিও চিন চেয়েছে কাঠমান্ডুর বিআরআই–তে যোগদানের আগে স্বাক্ষরিত প্রকল্পগুলিকে এতে সংযুক্ত করতে, নেপালি পক্ষ এই ধরনের বিস্তৃত অন্তর্ভুক্তির অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করেছে।
‘‘সিল্ক রোডস্টার—একটি উন্নত ভবিষ্যতের জন্য এই যাত্রার শরিক হোন!’’
‘...চিনের স্থানীয় সরকার, বিশ্ববিদ্যালয়, উদ্যোগ ও প্রতিষ্ঠান’–এর সংস্থানগুলি ব্যবহার করার লক্ষ্যে আটটি নেপালি রাজনৈতিক দল এবং বেশ কয়েকটি চিনা বৃত্তিমূলক প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোগের প্রতিনিধিদের নিয়ে প্ল্যাটফর্মটি ভক্তপুরে উদ্বোধন করা হয়েছিল। এটির পাঁচটি প্রকল্প এলাকা রয়েছে: সিল্ক রোড এমবার্কমেন্ট, সিল্ক রোড এনজয়মেন্ট, সিল্ক রোড এনহ্যান্সমেন্ট, সিল্ক রোড এনলাইটেনমেন্ট এবং সিল্ক রোড এমপাওয়ারমেন্ট। এর মধ্যে রয়েছে তরুণ জনগোষ্ঠীকে প্রযুক্তিগত দক্ষতা প্রদান, স্বল্পমেয়াদি শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়, উভয়পক্ষের উদ্যোগের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি, সাংস্কৃতিক প্রদর্শনী করা এবং চিনা সংস্কৃতি ও শি জিনপিংয়ের চিন্তাধারা সম্পর্কে অপর পক্ষকে অবহিত করা, এবং বিনামূল্যে স্বাস্থ্যপরীক্ষা, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি মেরামত ইত্যাদির মতো কিছু ছোট পরিষেবা প্রদান।
’ইনট্রোডাকশন অফ সিল্ক রোডস্টার অ্যান্ড ইটস ফাইভ সিগনেচার প্রোজেক্ট' নামক কনসেপ্ট পেপার অনুসারে, যা অনেক নিউজ পোর্টাল দেখেছিল, চিন দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার এমন অনেক দেশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এই প্ল্যাটফর্মটি চালু করে যারা বেজিংয়ের সঙ্গে আরও ব্যবহারিক সহযোগিতার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল। এটি, বেজিং বলেছে, আন্তঃদলীয় বিনিময় এবং ফ্রেন্ডস অফ সিল্ক রোড ক্লাব–এর মতো সংগঠনের মাধ্যমে করা সম্ভব, যা এ পর্যন্ত প্রোগ্রামের অধীনে উল্লিখিত কার্যক্রমগুলিকে সহজতর করবে৷ এই স্থানীয় স্তরের আদান–প্রদানগুলি দলের সঙ্গে দলের এবং রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের গতিশীলতাকে উন্নত করবে, এবং কাঠমান্ডুর কাছে চিনের উন্নয়নের শিক্ষা উপস্থাপিত করবে। কিন্তু চিন এই উদ্যোগটিকে বিআরআই–এর একটি নতুন উপাদানে পরিণত করার চেষ্টা করলেও এর অধিকাংশ উপাদান — জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আদান–প্রদান — সবসময়ই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অংশ ছিল।
বিআরআই–এর পরিধি বাড়ানো?
২০২৩ সালের জুনে একটি চিনা দল নেপাল–চিন ফ্রেন্ডশিপ ড্রাগন বোট রেস উৎসবে যোগ দিতে পোখরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছিল। যেখানে নেপালি নেতারা প্রাথমিকভাবে দেশটিতে পর্যটক প্রবাহ বাড়ানোর ক্ষেত্রে অনুষ্ঠানটির ক্ষমতার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিলেন, সেখানে চিন বিআরআই–এর আওতায় দ্বিপাক্ষিক গণ–কূটনীতির উদাহরণ হিসাবে এই প্রতিযোগিতার বিজ্ঞাপন দিয়েছিল। পোখরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মতো মূল পরিকাঠামো প্রকল্পের ক্ষেত্রেও বিআরআই–এর পরিধির অধীনে এমন সফট পাওয়ার উদ্যোগের বিষয়টি জুড়ে দেওয়ার অর্থ হল বড় প্রকল্পগুলি নিয়ে নানা বাধা সত্ত্বেও বিআরআই যে এগিয়ে চলেছে তা তুলে ধরার মরিয়া প্রয়াস।
একটি চিনা দল নেপাল–চিন ফ্রেন্ডশিপ ড্রাগন বোট রেস উৎসবে যোগ দিতে পোখরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ড সেপ্টেম্বরে আট দিনের বেজিং সফর করেছেন, যেখানে প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং ছাড়াও চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তিনি দেখা করেছেন। এই সফরের সময়, এমন খবর রয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী ২০১২ সাল থেকে নেওয়া পোখরা বিমানবন্দর এবং অন্যান্য প্রকল্পের ঋণ মকুব করার অনুরোধ করেছেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল আরও অনুদান–ভিত্তিক প্রকল্প অনুমোদন করতে চিনা পক্ষের কাছে আহ্বান জানানো। তিনি একটি ‘সিগনেচার প্রোজেক্ট’–এর জন্য অনুদানের অনুরোধ করেছেন, আর চিনে দেশটির রাষ্ট্রদূত অনুদানের মাধ্যমে বড় প্রকল্পে তহবিল দেওয়ার জন্য বেজিংকে অনুরোধ করেছেন।
২০১৯ সালের জুনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ওলির নেতৃত্বের সময় কাঠমান্ডু বিআরআই–এর অধীনে অর্থায়নের জন্য মোট ৩৫টি প্রকল্প চিহ্নিত করেছিল — পরিকাঠামো, জ্বালানি, সংযোগ, ব্যবসা–বাণিজ্য ইত্যাদি — যা পরে নয়টিতে নামিয়ে আনা হয়েছিল, সম্ভবত চিনা পক্ষের চাপে এবং অনুদান–ভিত্তিক প্রকল্পের জন্য নেপালের অগ্রাধিকারের কারণে। কিন্তু চার বছর পরেও নয়টি প্রকল্পের কোনওটিই বাস্তবায়িত হয়নি।
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে চিন থেকে একটি দল কাঠমান্ডু–কেরুং রেলপথের সম্ভাব্যতা অধ্যয়ন করতে নেপালে পৌঁছেছিল। এটি বিআরআই–এর অধীনে নয়টি প্রকল্পের মধ্যে একটি, কিন্তু কোনও প্রকল্প নির্মাণ পর্যায়ে পৌঁছয়নি, এমনকি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কোনও কাঠামোও আকার পায়নি। তখন কিছু কর্মকর্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্বের জন্য নেপালের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার অভাবকে দায়ী করেন। বর্তমান নেপালি রাষ্ট্রদূত অবশ্য সেই দাবি অস্বীকার করে নেপালি প্রকল্পগুলিকে অগ্রাধিকার না–দেওয়ার জন্য বেজিংকে দোষারোপ করেছেন। সেই কারণে উভয় পক্ষই কতটা বিনিয়োগ করবে সে সম্পর্কে এখনও কোনও স্পষ্টতা নেই। উভয় পক্ষের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকে প্রকল্পের আর্থিক পদ্ধতি সম্পর্কে কোনও স্পষ্টীকরণ নেই, যা অনুদান ও ঋণের বিষয়ে বিতর্ক তৈরি করে। ২০২২ সালের মার্চ মাসে ওয়াং ই–এর সফরের সময় এই উদ্বেগগুলি উত্থাপিত হয়েছিল৷ আরও ঋণ নেওয়ার প্রতি নেপালি পক্ষের এই সংযম এবং আরও ব্যয়বহুল প্রকল্পের ভয়, এই সবের কারণে চিনের সফট পাওয়ার কূটনীতিতে নতুন করে দৃষ্টি নিবদ্ধ করার প্রয়োজন হয়ে থাকতে পারে৷
বর্তমান নেপালি রাষ্ট্রদূত অবশ্য সেই দাবি অস্বীকার করে নেপালি প্রকল্পগুলিকে অগ্রাধিকার না–দেওয়ার জন্য বেজিংকে দোষারোপ করেছেন। সেই কারণে উভয় পক্ষই কতটা বিনিয়োগ করবে সে সম্পর্কে এখনও কোনও স্পষ্টতা নেই।
সফট পাওয়ারের অনুসন্ধান
সিল্ক রোডস্টার প্ল্যাটফর্মের অন্তর্নিহিত ফোকাস হল উভয় দেশের জনগণ ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন। উদ্বোধনের সময় চিনা পক্ষ বিদেশি রাজনৈতিক দলগুলিকে চিন সম্পর্কে আরও ভাল করে জানতে সক্ষম করার জন্য চিনে ‘স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণের সুযোগ’ প্রদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। চিন–নেপাল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সবসময় রাজনৈতিক স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়েছে। নেপালের রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা চিনা বৈদেশিক নীতির একটি হাতিয়ার, যা বেজিং প্রায়শই ব্যবহার করেছে। এটি চিনের কমিউনিস্ট পার্টি এবং নেপালের কমিউনিস্ট পার্টিগুলির মধ্যে সখ্যের একটি কারণ হতেই পারে, তবে এমনকি অ–কমিউনিস্ট দলগুলিও কিছু অনুষ্ঠানে চিনের সঙ্গে দলীয় স্তরে আলাপচারিতায় লাভবান হয়েছে। বেজিং ২০১৬ সাল থেকে আফ্রিকার দেশগুলিতে রাজনৈতিক দলের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে, এবং ২০১৭ সালে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দলের সঙ্গে ওয়র্ল্ড পলিটিকাল পার্টিজ ডায়ালগ–এর আয়োজন করেছিল। এই সংলাপটি সেই একই বিভাগ দ্বারা সংগঠিত হয়েছিল যেটি সিল্ক রোডস্টার প্ল্যাটফর্মটি চালু করে।
যখন নেপালের দুটি কমিউনিস্ট পার্টি ২০১৭ সালে একীভূত হয়, তখন তারা সিপিসি–র সঙ্গে একটি দলীয় স্তরের ছয় দফা দ্বিপাক্ষিক চুক্তিও স্বাক্ষর করে। সেই সময়ে এই চুক্তিটি নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি (এনসিপি)–র ২০০ সদস্যকে শি জিনপিংয়ের চিন্তাধারার উপর একটি কর্মশালায় যোগদানের সুযোগ করে দেয়, এবং সিপিসি–র সঙ্গে আরও বিনিময়ের পরিকল্পনা করা হয় —উচ্চ পর্যায়ের সফর, আদর্শগত প্রশিক্ষণ, ইত্যাদি। চিনের আগের কর্মসূচিগুলিরও লক্ষ্য ছিল সক্ষমতা তৈরি করা, চিনা সংস্কৃতির উপর বক্তৃতা, স্থানীয় সরকারগুলিতে ফিল্ড ট্রিপ ইত্যাদি, এবং এ সবই নতুন প্ল্যাটফর্মেরও উপাদান। কর্মশালাগুলি এই আশঙ্কায় সমালোচিত হয়েছিল যে চিন সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া এবং দেশের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করতে সক্ষম হবে।
নতুন করে একটি কর্মসূচির অধীনে এই সমস্ত উদ্যোগের পুনরাবৃত্তি নেপালে বিআরআই–এর কাজ এগিয়ে চলেছে বলে তুলে ধরাটা চিনা পক্ষের কাছে কতটা জরুরি তা বুঝিয়ে দেয়।
বেজিং নেপালি শিক্ষার্থীদের এবং/অথবা সাধারণভাবে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি প্রদানের বিধানটিকে দ্বিমুখী বিনিয়োগ হিসাবে বিবেচনা করে। এটি অন্তত স্বল্প ও মাঝারি মেয়াদে তরুণদের কর্মশক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করার অনুমতি দেয়, এবং যখন তারা দেশে ফিরে যায় তখন চিনা শিক্ষা তাদের চিনা সংস্কৃতি এবং শেখার পদ্ধতির পক্ষটিকে সমর্থন করতে সক্ষম করে, যার ফলস্বরূপ তাদের নিজ নিজ দেশে চিনের প্রভাব বিস্তার করা সম্ভব হয়। যেহেতু নেপালি ছাত্রদের একটি বড় সংখ্যা চিনা বৃত্তির উপর নির্ভর করে, এই প্রবণতা কিছু সময়ের জন্য অব্যাহত থাকবে। ২০০৪–২০১৬ সালের মধ্যে বিআরআই দেশগুলি থেকে চিনে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা আটগুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল। ২০১২ সালে, বিআরআই চালু হওয়ার আগে, বিআরআই–এর অধীনে থাকা দেশগুলি থেকে ৫৩ শতাংশেরও কম মানুষ চিনা সরকারি বৃত্তি পেয়েছিল। ২০১৬ সালের মধ্যে সংখ্যাটি ৬১ শতাংশে পৌঁছেছিল। বিআরআই দেশগুলির জন্য বৃত্তি সিল্ক রোড প্রোগ্রাম হিসাবে বাজারজাত করা হয়। যেহেতু নেপাল বিআরআই–তে স্বাক্ষর করেছে, তাই চিন নেপালি শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির সংখ্যা বাড়িয়েছে। ২০১৮ সালে দেশে প্রায় ৬,৪০০ নেপালি ছাত্র রয়েছে। আবার নতুন করে একটি কর্মসূচির অধীনে এই সমস্ত উদ্যোগের পুনরাবৃত্তি বুঝিয়ে দেয় নেপালে বিআরআই–এর কাজ এগিয়ে চলেছে বলে তুলে ধরাটা চিনা পক্ষের কাছে কতটা জরুরি।
ভারত ও চিনের মধ্যে প্রতিযোগিতার উপর নেপালে জনমতের একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ৭০ শতাংশ উত্তরদাতা কাঠমান্ডুতে ভারতকে আরও দৃশ্যমান দেশ হিসাবে বিবেচনা করেন ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক এবং পারিবারিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে। যারা চিনকে বেশি দৃশ্যমান বলে মনে করেন (২৬ শতাংশ), তাঁদের কাছে রাজধানীতে বড় পরিকাঠামো প্রকল্পের উপস্থিতি ছিল দৃশ্যমানতার সবচেয়ে বড় স্মারক। বিআরআই–এর অধীনে এই সফট পাওয়ার উপাদানগুলির অন্তর্ভুক্তি দুই পক্ষের মধ্যে রাজনৈতিক ও জনগণের সম্পর্ককে আরও প্রসারিত করতে, কাঠমান্ডুর অভ্যন্তরে চিনের প্রভাব আরও বাড়াতে, এবং বিআরআই ও সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলিকে কীভাবে কল্পনা করা হয় তা পুনরায় সংজ্ঞায়িত করতে বেজিংয়ের প্রচেষ্টাকে প্রতিফলিত করে। শ্রীলঙ্কার মতো অন্য ছোট দেশগুলির মতোই চিন নেপালেও অভিজাতদের পাকড়াও করার উপর নির্ভর করে, কিন্তু পরবর্তীতে সেই দেশগুলি যে পথ অনুসরণ করেছে তা বড় প্রকল্পগুলিতে তার সমস্ত বাজি রাখার বিরুদ্ধে চিনকে সতর্ক করেছে। নতুন এই উদ্যোগে এই সতর্কতা স্পষ্ট। এটি নেপালে বিআরআই–এর চাকা সচল করতে সাহায্য করে কিনা তা আগামী মাসগুলোতে দেখা যাবে।
শিবম শেখাওয়াত অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একজন গবেষণা সহকারী
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.