Published on Mar 12, 2025 Updated 0 Hours ago

পেনশনের জন্য ব্যয় যেহেতু খুব বেশি, তাই স্থিতাবস্থাকে অবশ্যই আরও উচ্চাভিলাষী পুনর্গঠনের জন্য পথ করে দিতে হবে

প্রতিরক্ষা তহবিলের জন্য বাজেটের বাইরে অনুসন্ধান

মোদী সরকারের তৃতীয় মেয়াদের প্রথম পূর্ণ বাজেটে ৬.৮১ ট্রিলিয়ন ভারতীয়  রুপি বরাদ্দ করা হয়েছে, যা ২০২৪-২৫ কেন্দ্রীয় বাজেটে বরাদ্দকৃত ৬.২১ ট্রিলিয়ন রুপি থেকে ৯.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যাইহোক, ৪.৮৮ ট্রিলিয়ন রুপি বরাদ্দসহ রাজস্ব ব্যয় যার মধ্যে বেতন, পেনশন, রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত ও পরিকাঠামো অন্তর্ভুক্ত মোট প্রতিরক্ষা বাজেটের ৭১.৭৫ শতাংশ।

সর্বশেষ বাজেটের প্রভাব ইঙ্গিত করে যে পেনশন বিল, যা রাজস্ব ব্যয়ের শিরোনামের অন্তর্ভুক্ত, ১৩.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৪-২৫ সালের ১.৪১ ট্রিলিয়ন থেকে ২০২৫-২৬ সালে ১.৬০ ট্রিলিয়ন রুপি হয়েছে। পেনশন এখন বেশ কিছু বছর ধরে বার্ষিক প্রতিরক্ষা বাজেটের ২০ শতাংশ বা তার বেশি হয়ে দাঁড়িয়েছে। পেনশন বিলের এই উচ্চ বৃদ্ধি মূলত ২০১৫ সালে সরকারের ওয়ান র‍্যাঙ্ক ওয়ান পেনশন (ওআরওপি) প্রকল্প বাস্তবায়নের কারণে ঘটেছে, যেখানে প্রতি পাঁচ বছরে পেনশনের পরিমাণের ঊর্ধ্বমুখী সংশোধন হয়৷ ফলস্বরূপ, সরকার প্রদত্ত সম্পদ বরাদ্দ প্রতিরক্ষা বাজেটে বিকৃতি সৃষ্টি করে, এবং মূলধনী ব্যয়ের মূল্যে রাজস্ব ব্যয়  বৃদ্ধি করে৷

চিন ও পাকিস্তানের সামরিক হুমকি ও সক্ষমতা, এবং সেইসঙ্গে ভারতের তুলনায় তাদের সামরিক ব্যয়ের পরিপ্রেক্ষিতে, নিজেদের ব্যয় মূল্যায়ন ও নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তাকে সরকার সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করতে পারে না।



চিন ও পাকিস্তানের সামরিক হুমকি ও সক্ষমতা, এবং সেইসঙ্গে ভারতের তুলনায় তাদের সামরিক ব্যয়ের পরিপ্রেক্ষিতে, নিজেদের ব্যয় মূল্যায়ন ও নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তাকে সরকার সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করতে পারে না। তা সত্ত্বেও, ভারত ও তার প্রতিপক্ষের মধ্যে সক্ষমতার ব্যবধান মেটাতে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকীকরণের জন্য মূলধন বরাদ্দের লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন উপায়ে বাজেটের খামতি পূরণ করতে পারে।

অগ্রসর হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হল অন্তত আংশিকভাবে ১৫তম অর্থ কমিশনের সুপারিশগুলি গ্রহণ করা। কমিশন পেনশন ও বেতনের দায় কমানোর আহ্বান জানিয়েছিল৷ ২০২২ সালের জুনে, মোদী সরকার অগ্নিবীর প্রকল্প চালু করেছিল, যা সশস্ত্র পরিষেবাগুলিতে নিয়োগকে চার বছরের মধ্যে সীমাবদ্ধ করতে চেয়েছিল। ১৫তম অর্থ কমিশনের কাজের মধ্যে অবশ্য অগ্নিবীর প্রকল্পের সুপারিশগুলি অন্তর্ভুক্ত ছিল না। এই প্রকল্প চার বছরের কর্মমেয়াদের পরে অগ্নিবীর কর্মীদের সশস্ত্র পরিষেবাগুলির নিয়মিত ক্যাডার হিসাবে ধরে রাখার হার ২৫ শতাংশে সীমাবদ্ধ করতে চায়। যাঁদের ধরে রাখা হবে না, তাঁরা তাঁদের চার বছরের চাকরির মেয়াদের পরে ১১ লাখ টাকা পাবেন।

বর্তমানে অবশ্য এই ধরে রাখার হার এখনও চূড়ান্ত করা হচ্ছে, এবং তা প্রত্যাশার তুলনায় আরও বেশি বিতর্কিত বলে প্রমাণিত হচ্ছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী এই হার ২৫ শতাংশের উপরে উন্নীত করা উচিত কি না, সে বিষয়ে এখনও অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা ও পরামর্শ করছে। সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে, অগ্নিবীর প্রকল্পটি প্রতিরক্ষা রাজস্ব বাজেটের অধীনে পেনশন দায় কমিয়ে আনতে পারে। প্রারম্ভিক ২৫ শতাংশে সীমাবদ্ধ করার তুলনায় ধরে রাখার হার অনেক বেশি শতাংশে বাড়ানোর একটি সমস্যা হল যে, এটি প্রকল্পের খরচ-সঞ্চয় সুবিধাগুলিকে হ্রাস করতে পারে, বা এমনকি এর উদ্দেশ্যকে বানচাল করে দিতে পারে, যে উদ্দেশ্যটি হল উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাওয়া বেতন ও পেনশন দায়বদ্ধতাগুলি সীমিত করা। যাই হোক না কেন, অগ্নিবীর প্রকল্পের কারণে খরচ ও পে-অফ বাবদ সঞ্চয় ২০৩০-‌এর দশকের বেশ কিছু বছর না হওয়া পর্যন্ত বাস্তবায়িত হবে না। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রকল্পটির বাস্তবায়ন অপরিহার্য।


প্রারম্ভিক ২৫ শতাংশে সীমাবদ্ধ করার তুলনায় ধরে রাখার হার অনেক বেশি শতাংশে বাড়ানোর একটি সমস্যা হল যে, এটি প্রকল্পের খরচ-সঞ্চয় সুবিধাগুলিকে হ্রাস করতে পারে, বা এমনকি এর উদ্দেশ্যকে বানচাল করে দিতে পারে, ‌যে উদ্দেশ্যটি হল উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাওয়া বেতন ও পেনশন দায়বদ্ধতাগুলি সীমিত করা।



যাই হোক, ১৫তম অর্থ কমিশন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের (এমওডি) ইনপুটগুলির উপর ভিত্তি করে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছে, যেগুলি সরকারের অন্তত আংশিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা দরকার। প্রথমটি হল প্রতিরক্ষা সম্পত্তি বিক্রি করা বা কমপক্ষে ইজারা দেওয়া।

দ্বিতীয় প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে সরকার প্রতিরক্ষা অধিগ্রহণের জন্য সম্পদ বাড়াতে পারে, তা হল প্রতিরক্ষা বন্ড ইস্যু করা। রপ্তানি থেকে প্রতিরক্ষা রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্র ইউনিট (ডিপিএসইউ) ও অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিগুলির (ওএফ) অর্জিত সমস্ত লাভ একচেটিয়াভাবে প্রতিরক্ষা উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা উচিত। ডিপিএসইউ-এর বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আর্থিক আয় প্রতিরক্ষা বাজেটের অধীনে মূলধন অধিগ্রহণের খরচের অংশ বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।

আরেকটি বিকল্প হল ডেট সিকিউরিটিজ ব্যবহার করে প্রতিরক্ষা বন্ড তৈরি করা। সাধারণভাবে, প্রতিরক্ষা বন্ড হল নাগরিকদের কাছে মানসিক আবেদন একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সামরিক অধিগ্রহণের লক্ষ্যে সরকারকে অর্থ ধার দেওয়ার জন্য তাদের কাছে অনুরোধ। এই সময়ে সরকার বা এমনকি একটি কোম্পানি বিনিয়োগকৃত পরিমাণের উপর সুদ প্রদান করবে, যার হার সাধারণত বাজারের হারের কম। মূল অর্থ বিনিয়োগের মেয়াদ শেষে ফেরত দেওয়া হবে। ১৫তম অর্থ কমিশন ‘‌ওয়ান টাইম লাম্প সাম গ্রান্ট’‌ও সুপারিশ করেছে, যা অর্থ মন্ত্রকের দ্বারা অপ্রতুলভাবে ব্যবহার করা তহবিলগুলিকে ফের ব্যবহার করার সুযোগ করে দিতে পারে


প্রতিরক্ষা বন্ড হল নাগরিকদের কাছে মানসিক আবেদন একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সামরিক অধিগ্রহণের লক্ষ্যে সরকারকে অর্থ ধার দেওয়ার জন্য তাদের কাছে অনুরোধ। এই সময়ে সরকার বা এমনকি একটি কোম্পানি বিনিয়োগকৃত পরিমাণের উপর সুদ প্রদান করবে, যার হার সাধারণত বাজারের হারের কম।



এছাড়াও, পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) এবং সমন্বিত পণ্য ও পরিষেবা কর (আইজিএসটি)-‌এর মতো শুল্ক ও কর ব্যবস্থা থেকে প্রতিরক্ষা পরিষেবাগুলির সমস্ত ক্রয়কে ব্যাপকভাবে ছাড় দেওয়ার জন্য একটি নীতি তৈরি করা যেতে পারে। কমিশনের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং সুপারিশগুলির মধ্যে ছিল একটি অ-মেয়াদি প্রতিরক্ষা তহবিল তৈরি করা, একটি ধারণা যা ২০০৪-০৫ অন্তর্বর্তী বাজেটের সময় থেকে বিদ্যমান। কিন্তু মোদী সরকার সাংবিধানিক চ্যালেঞ্জগুলির মুখোমুখি হওয়ার কারণে এর বাস্তবায়ন করতে দ্বিধা বোধ করেছে৷ মূলধন অধিগ্রহণের অর্থায়নের জন্য  চূড়ান্ত, এবং সম্ভবত সবচেয়ে সম্ভাব্য, বিকল্পটি হল প্রতিরক্ষা সেস।

পরিষেবাগুলির জন্য মূলধন অধিগ্রহণের অর্থায়নে সরকার যে পথই বেছে নিক না কেন, তার জন্য নির্বিশেষে স্থিতাবস্থাকে আরও উচ্চাভিলাষী পুনর্গঠনের জন্য পথ করে দিতে হবে।



এই ভাষ্যটি প্রথম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড -‌এ প্রকাশিত হয়।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.