Author : Ramanath Jha

Published on Apr 03, 2023 Updated 0 Hours ago
যোশিমঠ থেকে শিক্ষা: হিমালয় উন্নয়ন মডেলের প্রয়োজনীয়তা

ভারতের উত্তরাখণ্ডের একটি ছোট পাহাড়ি শহর যোশিমঠে ভূমিধসের সাম্প্রতিক ঘটনা হিমালয় বাস্তুতন্ত্রের ভঙ্গুরতাকেই প্রকাশ্যে এনেছে। এই সঙ্কট হিমালয়ের প্রাকৃতিক সম্পদের শোষণ এবং বিপজ্জনক অঞ্চলে পর্যটন শিল্পের দরুন সৃষ্ট চাপ-সহ উন্নয়ন এবং পরিবেশগত স্থিতিশীলতার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে তীব্র বিতর্ক তৈরি করেছে। এই সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন তুলে ধরে যে, হিমালয় অঞ্চলের এমন একটি সমন্বিত উন্নয়নমূলক প্রচেষ্টার প্রয়োজন, যা তার অনন্য বাস্তুতন্ত্রের কথা মাথায় রেখে মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যে দ্বন্দ্বকে কমিয়ে আনবে।

আরোপণ: রমানাথ ঝা, ‘লেসনস ফ্রম যোশিমঠ:দ্য নিড ফর হিমালয়ান ডেভেলপমেন্ট মডেল’, ওআরএফ ইস্যু ব্রিফ নং৬১৬, ফেব্রুয়ারি২০২৩, অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন।

ভূমিকা

২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের শুরু থেকে উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার একটি ছোট শহর[১] যোশিমঠ ‘ধসে যাওয়া শহর’-এ পরিণত হয়েছে। সেখানকার আবাসিক ও বাণিজ্যিক পরিকাঠামো এবং রাস্তা জুড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে এবং অনেক এলাকা বসবাস বা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।[২] এর পর থেকে যোশিমঠকে ‘দুর্যোগপ্রবণ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।, [৪] এর ফলস্বরূপ রাজ্য সরকার শহরের মধ্যে ও তার আশেপাশে আরও নির্মাণ নিষিদ্ধ করে দেয় এবং বিপজ্জনক অঞ্চল(৪) থেকে ৬০০টিরও বেশি পরিবারকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এর পাশাপাশি ‘অনিরাপদ’ হওয়ার কারণে বেশ কিছু পরিকাঠামোও ভেঙে ফেলা হয়েছে।[৫]

যোশিমঠ গাড়োয়াল হিমালয় পর্বতমালায় ৬০০০ ফুট (১৮৯০ মিটার) উপরে অবস্থিত। ২০০১ সালের আদমসুমারি অনুযায়ী ১৩২০২ জনের জনসংখ্যা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১১ সালের আদমসুমারি অনুসারে সেখানকার জনসংখ্যা হয়েছে ১৬,৭০৯[৬], যা প্রায় ২৭ শতাংশের দশকব্যাপী বৃদ্ধিকে নির্দেশ করে।[৭] ২০২৩ সালে এর আনুমানিক জনসংখ্যা হতে পারে ২২৯০০।[৮] এই শহরটি বদ্রীনাথ মন্দির এবং হেমকুণ্ড সাহিবের মতো তীর্থস্থানগুলির একটি প্রবেশদ্বার, বেশ কয়েকটি পর্বত আরোহণ অভিযানের সূচনা বিন্দু,[৯] এবং এটি ভারতের শীর্ষ তিনটি স্কি গন্তব্যগুলির মধ্যে একটি আউলির কাছে অবস্থিত।[১০] যোশিমঠ একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হওয়ার দরুন পর্যটন শিল্প শহরটির স্থিতিশীলতার উপর প্রভাব ফেলেছে। যোশিমঠ এবং সংলগ্ন এলাকাটি চিনের সঙ্গে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) রক্ষার দায়িত্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভারতীয় গ্যারিসন কেন্দ্র। সামরিক হার্ডওয়্যার এবং ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা-সহ ২০,০০০-এরও বেশি সৈন্য এই এলাকায় অবস্থান করছে।

এ ঘটনায় আরও অনেক নির্মাণ অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে এবং যোশিমঠে ভূমি ধসের ঘটনা(ক) বৃদ্ধি পাওয়ায় অসংখ্য মানুষ বাস্তুচ্যুত হবেন। ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনের ন্যাশনাল রিমোট সেন্সিং সেন্টারের একটি প্রাথমিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, ২০২২ সালের এপ্রিল মাস থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে জমির তলদেশ অবনমনের প্রক্রিয়া ছিল ‘ধীর’, যোশিমঠ ৮.৯ সেন্টিমিটার ধসে যায়। ২০২২ সালের ২৭ ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ৮ জানুয়ারির মধ্যে (’১৩ দিন ব্যাপী দ্রুত অবনমনপর্ব’) শহরটি ৫.৪ সেন্টিমিটার ধসে গিয়েছে। এই প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে যে, ভূমি ধসের কারণে পুরো শহরটি অস্তিত্বের সঙ্কটের সম্মুখীন হতে পারে।[১১] কিছু পরিবেশবিদ পরামর্শ দিয়েছেন যে, এই অঞ্চলের অন্যান্য মানববসতিও শীঘ্রই একই ধরনের সঙ্কটের মুখোমুখি হতে পারে।[১২]

এই সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদনটিতে যোশিমঠের বিদ্যমান পরিস্থিতির বিশ্লেষণ করে প্রধানত শহর ও তার আশপাশে উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত নথি, শহরে পর্যটনের চাপ এবং আন্তর্জাতিক সীমান্তে প্রতিরক্ষা প্রয়োজনীয়তাগুলির বিষয়গুলিকে মূল্যায়ন করা হচ্ছে। যোশিমঠের বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে এই সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদনটি এমন একটি উন্নয়নমূলক মডেলের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে যা ভঙ্গুর হিমালয় অঞ্চলকে বিবেচনা করেছে এবং যার মধ্যে বেশ কয়েকটি অনুরূপ বসতি রয়েছে (উদাহরণস্বরূপ, নৈনিতাল এবং মুসৌরি)। এই প্রতিবেদনে বিশেষ করে ভারতের মূল ভূখণ্ডে তার তাৎপর্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে: ‘হিমালয় বাস্তুতন্ত্র ভারতীয় ভূখণ্ডের পরিবেশগত নিরাপত্তার জন্য অত্যাবশ্যক এবং এমনটা করার জন্য অরণ্যের আচ্ছাদন রক্ষা করা, পানীয় জল, সেচ ও জলবিদ্যুতের উৎস বহু বর্ষজীবী নদীগুলিকে প্রবহমান রাখা, জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণ, উচ্চ মূল্যের কৃষির জন্য একটি সমৃদ্ধ ভিত্তি এবং স্থিতিশীল পর্যটনের জন্য অনন্য ভূখণ্ড গড়ে তোলা।’[১৩]

যোশিমঠের পরিস্থিতির ব্যাখ্যা

১৯৭৬ সালে উত্তরপ্রদেশ সরকার যোশিমঠে জমির অবনমনের সমস্যা অধ্যয়নের জন্য গাড়োয়ালের তৎকালীন কমিশনার এম সি মিশ্রের নেতৃত্বে ১৮ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে।(খ) এই রিপোর্টে দেখানো হয়েছে যে, যোশিমঠ স্থিতিশীল শিলার উপর নয়, বরং সূক্ষ্ম মাইকেশিয়াস বালুকাময় এবং কাদামাটি উপাদানের আলগা বিন্যাসের বড় অস্থায়ী বোল্ডারের ভূমিধস ভরের উপর অবস্থিত। শিলাগুলি স্ফটিকসম যা সিস্টোজ নিসিক এবং কোয়ার্টজিটিক।’[১৪] রিপোর্টে এ-ও বলা হয়েছে যে, যোশিমঠ একটি উল্লেখযোগ্য আকারের প্রাচীন ভূমিধস ক্ষেত্রের উপরেই অবস্থিত।[১৫]

পরবর্তী বেশ কয়েকটি গবেষণাও এই তথ্যগুলির পুনরাবৃত্তি করেছে। ২০১৮ সালে উত্তরাখণ্ড স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (ইউএসডিএমএ) উল্লেখ করেছে যে, শহরের অবস্থানটির মধ্যে ভূমিধসের প্রবণতা ছিল এবং যোশিমঠের আশেপাশের এলাকাটি অতিরিক্ত চাপযুক্ত উপাদানের একটি পুরু স্তর দ্বারা আবৃত ছিল।[১৬] আরও বলা হয়েছে যে, শহরটি একটি ভঙ্গুর পাহাড়ের ঢালে অবস্থিত যা পশ্চিম ও পূর্বে কর্মনাশা ও ঢাকনালা নদী এবং দক্ষিণ ও উত্তরে ধৌলিগঙ্গা এবং অলকানন্দা নদী দ্বারা বেষ্টিত।[১৭] ইউএসডিএমএ-র নির্বাহী পরিচালক পীযূষ রাউতেলা বলেন, ‘বৃহৎ বোল্ডার এবং বেসিক ও সিস্টোজ শিলার টুকরোগুলি ধূসর রঙের, পলি ও বালির বিন্যাসে সৃষ্ট হয়েছে। এর ফলে শহরটি ধসপ্রবণ হয়ে পড়েছে।’[১৮] ইউএসডিএমএ সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে বহুবর্ষজীবী নদী, উপরের অংশের উল্লেখযোগ্য তুষার এবং নিম্ন সমন্বিত বৈশিষ্ট্য-সহ ব্যাপকভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত নিসিক শিলা এলাকাটিতে ভূমিধসের প্রবণতা বৃদ্ধি করেছে।[১৯] এই সব তথ্য সমর্থিত হয়েছে সেই সকল গবেষণার ফলে, যেখানে প্রমাণিত হয়েছে যে, উত্তরাখণ্ড হিমালয় আবহাওয়া ও ভূ-পদার্থগত দিক থেকে বিপদপ্রবণ।[২০]

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চামোলিতে একটি হিমবাহী হ্রদে বিস্ফোরণের ফলে বিধ্বংসী বন্যা হয়েছিল। এর ফলে ২০৪ জন মানুষ এবং ১৮৬টি গবাদি পশুর মৃত্যু হয়। এর ফলে ভবন, রাস্তা, সেতু এবং রাইনি ও তপোবনের জলপ্রকল্পগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে ভূমিধসপ্রবণ অঞ্চলটিতে বিরূপ প্রভাব পড়ে।[২১] ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর যোশিমঠে ১৯০ মিমি-এর রেকর্ড পরিমাণ ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার দরুন অঞ্চলটি আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। স্যাটেলাইট তথ্য তুলে ধরেছে যে, এই প্রভাব পাহাড়ি নদীগুলির খাতকে প্রসারিত করে ও গতিপথের পরিবর্তন ঘটায়, যার ফলে ঢালের অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পায়।[২২]

গবেষণাগুলি দর্শিয়েছে যে, ইকো-টেকটনিক(গ) এবং জিওমরফিক(ঘ) কারণগুলির সঙ্গে আবহাওয়াজনিত(ঙ) বৈশিষ্ট্যগুলি যুক্ত হয়ে যোশিমঠ অঞ্চলকে অবনমনের নিরিখে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।[২৩] উল্লেখযোগ্য ভাবে, চামোলি জেলা ভারতের সিসমিক জোনিং ম্যাপের জোন ৫-এর (ভূমিকম্পের জন্য সংবেদনশীলতম অঞ্চল) মধ্যে পড়ে।[২৪] এ ছাড়াও যোশিমঠ বৈক্রিতা থ্রাস্টের – একটি টেকটনিক চ্যুতি রেখার – উপর অবস্থিত। মেন সেন্ট্রাল থ্রাস্ট এবং পান্ডুকেশ্বর থ্রাস্ট (যেগুলি প্রধান ভূতাত্ত্বিক চ্যুতিরেখা(চ)) কাছাকাছিই অবস্থিত।[২৫]

মিশ্র কমিটির সুপারিশ এবং উন্নয়নমূলক কাজ

মিশ্র কমিটি স্থল পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে যোশিমঠ এবং বিস্তীর্ণ অঞ্চল সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছে। ১৯৬২ সালের পরে এই এলাকায় গৃহীত ভারী নির্মাণ প্রকল্প এবং রাস্তা ও ভবন নির্মাণের জন্য যোশিমঠের প্রাকৃতিক বনভূমিকে নির্বিচারে ধ্বংস করার কথাও কমিটি বিবেচনা করেছে।[২৬] কমিটি ভারী নির্মাণ কাজ সীমিত করার পরামর্শ দেয় এবং বলে মাটির ভার বহন ক্ষমতা ও অঞ্চলটির স্থিতিশীলতার পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা করার পরেই এই ধরনের কাজের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। ঢাল খননের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করারও সুপারিশ করা হয়েছিল। উল্লেখযোগ্যভাবে, কমিটি রাস্তা মেরামত বা অন্যান্য নির্মাণের জন্য পাথর অপসারণের উদ্দেশ্যে বিস্ফোরণ ঘটানো বা খনন করার কাজ এড়িয়ে যাওয়ার সুপারিশ করেছে। এর পাশাপাশি এই পরামর্শও দিয়েছে যে ভূমিধসপ্রবণ এলাকায় পাহাড়ের তলদেশ থেকে পাথর এবং বোল্ডারগুলি সরানো উচিত নয়। কারণ এটি করলে টো সাপোর্ট বা তলদেশের ভারসাম্য(ছ) নষ্ট হবে এবং ভূমিধসের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে।[২৭] এটি আরও পরামর্শ দিয়েছে যে, যদি ফাটল তৈরি হয় তবে সেগুলিকে চুন, স্থানীয় মাটি এবং বালি দিয়ে ভরাট করা উচিত। কমিটি উল্লেখ করেছে যে, গাছ কাটা শহরের স্থিতিশীলতার জন্য বিপদ ডেকে এনেছে এবং মাটি ও জলসম্পদ সংরক্ষণের জন্য গাছ ও ঘাস ব্যাপক ভাবে রোপণ করার কাজে উৎসাহ দেওয়া জরুরি। এতে বলা হয়েছে যে, জনপদে কাঠ ও জ্বালানি কাঠ সরবরাহের জন্য গাছ কাটা কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং স্থানীয়দের জ্বালানির বিকল্প উত্স সরবরাহ করতে হবে। এটি শহরটির ঢালে কোনও রকম কৃষিকাজ এড়ানোর সুপারিশও করেছে।[২৮]

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ওই এলাকায় অতিরিক্ত জল জমেছে। যেহেতু জলের যে কোনও ক্ষরণ বিপর্যয়কর হতে পারে, তাই কমিটি খোলা নালা এবং ভেজা গর্তগুলি বন্ধ করার ও পয়ঃপ্রবাহের জন্য কংক্রিট নির্মিত বর্জ্য নালা নির্মাণ বন্ধ করার সুপারিশ করেছে।[২৯] ভূমিধস প্রতিরোধ করার জন্য মুক্ত অঞ্চলে বৃষ্টির জলের ক্ষয় এড়াতে কমিটি একটি নির্দিষ্ট নিষ্কাশন ব্যবস্থা নির্মাণের সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া তারা পরামর্শ দিয়েছে যে, রাস্তাগুলি পাকা হওয়া উচিত এবং তাতে স্কাপার থাকা উচিত নয় যা রাস্তার উপরিতল থেকে জল সরিয়ে দিতে সক্ষম।[৩০] কমিটি ভাঙন রোধ করতে নদীর তীরে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে সিমেন্ট ব্লক স্থাপন করার কথাও বলেছে। এর পাশাপাশি কমিটি সুপারিশ করেছ যে, অঞ্চলটির পাদদেশে ঝুলন্ত বোল্ডারগুলিকে যথাযথ আলম্ব (সাপোর্ট) প্রদান করা হবে এবং ক্ষয় প্রতিরোধ এবং ও নদী-বিষয়ক প্রশিক্ষণের(জ) ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মিশ্র কমিটির সুপারিশ সত্ত্বেও এই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি পরিকাঠামো প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। তপোবন-বিষ্ণুগড় প্রকল্প,[৩১] ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশন (এনটিপিসি) দ্বারা একটি ৫২০ মেগাওয়াট রান-অফ-রিভার জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চামোলি জেলার ধৌলিগঙ্গা নদীর উপর নির্মিত হচ্ছে এবং এটি বার্ষিক প্রায় ২৫৫৮ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রকল্পটিতে একটি ১২.১ কিলোমিটার লংহেড রেস টানেল(ঝ) এবং তিনটি সুড়ঙ্গ(ঞ) খননের কাজও রয়েছে। এই কাজগুলির জন্য এই টানেল বোরিং মেশিন এবং সম্ভবত ড্রিল ও সুড়ঙ্গ নির্মাণ সংক্রান্ত বিস্ফোরণ পদ্ধতির ব্যবহার প্রয়োজন।[৩২]

কয়েক জন বিশেষজ্ঞ বলেছেন যে, সুড়ঙ্গ নির্মাণ সংক্রান্ত বিস্ফোরণের ফলে যোশিমঠ জুড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে[৩৩] এবং রাজ্য সরকার জানিয়েছে যে, ভূমিধসের ক্ষেত্রে প্রকল্পটির ভূমিকা তদন্ত করবে।[৩৪] যাই হোক, রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে বিদ্যুৎ মন্ত্রকের এক আধিকারিক জোর দিয়ে বলেন যে, বর্তমান সঙ্কটে প্রকল্পটির কোনও প্রতিকূল ভূমিকা নেই এবং মিশ্র কমিটির উপসংহার অর্থাৎ অবস্থানজনিত কারণে শহরের দুর্বলতাগুলির কথাই পুনর্ব্যক্ত করেন।[৩৫] বেশ কিছু সরেজমিন গবেষণা এই দাবিগুলিকে সমর্থন জুগিয়েছে।[৩৬]

অল ওয়েদার রোড উদ্যোগের অধীনে হেলাং-মারোয়ারি বাইপাস সড়ক – যা যোশিমঠের ১৩ কিলোমিটার আগে শুরু হয়েছে – এই অঞ্চলের আর একটি বড় নির্মাণ প্রকল্প।[৩৭] এই রাস্তা নির্মাণের দু’টি প্রধান উদ্দেশ্য রয়েছে – বদ্রীনাথ ধামের দূরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার কমিয়ে আনা এবং ভারত-চিন সীমান্তে সৈন্যদের চলাচল সহজ এবং ত্বরান্বিত করা। প্রকল্পটি নাগরিকদের উদ্যোগ যোশিমঠ বাঁচাও সংঘর্ষ সমিতির (সেভ যোশিমঠ মুভমেন্ট) কাছ থেকে কিছু বিরোধিতার সম্মুখীন হলেও – যারা বিষয়টিকে সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে গিয়েছিল – আদালত ২০২২ সালের মে মাসে নির্মাণের অনুমোদন দেয়।[৩৮] উল্লেখযোগ্যভাবে, গোষ্ঠীটি বারবার এই অঞ্চলে বড় পরিকাঠামো প্রকল্পের বিরোধিতা করেছে এবং তাদের পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করেছে।[৩৯] ২০২১-২২ সালে গোষ্ঠীটি এলাকার সমস্যাগুলিকে মূল্যায়ন করার জন্য স্থানীয় এবং স্বাধীন বিজ্ঞানীদের সমন্বয়ে বেশ কয়েকটি অভ্যন্তরীণ কমিটি গঠন করেছিল এবং এমন একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছিল যা বেশ কয়েকটি বিকল্প সমাধানের প্রস্তাব দেয়। এই প্রতিবেদনটি ২০২২ সালে সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হলেও তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।

যোশিমঠে পর্যটকদের ক্রমবর্ধমান তৎপরতার ফলে একাধিক বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ইউএসডিএমএ-র দেওয়া ২০২২ সালের অগস্ট মাসের প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছে যে, বহন ক্ষমতা বিবেচনা না করেই অনেক নির্মাণকার্য অনুপযুক্তভাবে পরিকল্পিত।(ট) এর পাশাপাশি, যেহেতু যোশিমঠে বর্জ্য জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই, তাই ভূমির উপরিতলে মানুষের কার্যকলাপ(ঠ) প্রাকৃতিক জল নিষ্কাশন ব্যবস্থাগুলিকে অবরুদ্ধ করেছে, জলের প্রবাহকে নতুন নিষ্কাশন পথ খুঁজে বের করতে বাধ্য করেছে। অতিরিক্ত চাপের ফলে ভূমির শক্তি হ্রাস পেয়েছে।

একটি হিমালয় উন্নয়ন কৌশল

যোশিমঠের বাসিন্দা এবং সেখানে কর্মরত সেনাবাহিনীকে[৪০] বর্তমানে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে এবং একই সঙ্গে কর্তৃপক্ষ একটি ‘নতুন যোশিমঠ’ গড়ে তোলার কথাও বিবেচনা করছে, যে কাজের জন্য শহরের কাছাকাছি চারটি স্থানের মূল্যায়ন করা হয়েছে।[৪১] তবুও এই সঙ্কট বৃহত্তর হিমালয় অঞ্চলের ভঙ্গুরতাকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং অন্যান্য পার্বত্য শহরে অনুরূপ বিপর্যয় এড়াতে বিকল্প পন্থা বিবেচনা করার প্রয়োজনীয়তা উত্থাপন করেছে।

গাড়োয়াল হিমালয় ৫১ মিলিয়নেরও[৪২] বেশি মানুষের বাসস্থান এবং অঞ্চলটির দুর্বলতা থাকা সত্ত্বেও এ হেন সুবিশাল জনসংখ্যার সম্পূর্ণ রূপে স্থানান্তর সম্ভব নয়। উল্লেখযোগ্য ভাবে অঞ্চলটির কিছু সুবিধাও রয়েছে, যা বৃহত্তর কল্যাণ সাধনের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, এখানে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। একটি প্রাকৃতিক এলাকা হিসেবে অঞ্চলটি পর্বত অভিযান, রক ক্লাইম্বিং, ট্রেকিং এবং অন্যান্য পর্যটন সংক্রান্ত কার্যকলাপের জন্যও অন্যতম আকর্ষণ। অঞ্চলটি ধর্মীয়ভাবে উল্লেখযোগ্য হওয়ার দরুন অসংখ্য তীর্থযাত্রীকে আকর্ষণ করে। এই ধরনের পর্যটন কার্যকলাপ স্থানীয়দের আয়ের উৎস প্রদান করে, যারা অন্যথায় অন্যত্র কর্মসংস্থানের সন্ধান করতে বাধ্য হতেন। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, বদ্রীনাথ মন্দিরের পথে(ড) যোশিমঠের পূর্ববর্তী চারটি শহরের ২০১৮ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, সেখানকার ৫৭.৫ শতাংশ পরিবার পর্যটন পরিষেবায় নিযুক্ত ছিল যার মধ্যে ৩৭.৫ শতাংশ শুধুমাত্র পর্যটনের উপর নির্ভরশীল।[৪৩] এর পাশাপাশি, এই অঞ্চলে এমন অনেক সংবেদনশীল এলাকা রয়েছে যা চিনের সীমান্তবর্তী এবং সেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপস্থিতি এবং পরিকাঠামো থাকা প্রয়োজন।

এই আলোকে কিছু উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল কার্যকলাপের পদ্ধতি এবং পরিমাণ, যা মানব-প্রকৃতির দ্বন্দ্বকে হ্রাস করতে সক্ষম হবে। হিমালয় হল বিশ্বের নবীনতম পর্বতশ্রেণি, যেখানে অস্থিতিশীল ঢালগুলি ধস এবং ভূমিক্ষয়প্রবণ।[৪৪] অঞ্চলটি ভারতের ভূমিকম্পপ্রবণতম অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি। সর্বোপরি এই অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে চরম এবং আকস্মিক বৃষ্টিপাত হয়েছে।[৪৫] যেমন হিমালয় অঞ্চল ভারতের সমভূমি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এবং এই বাস্তুতন্ত্রের জন্য একটি ভিন্ন উন্নয়ন মডেলের প্রয়োজন।

এলাকাটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন গন্তব্য হওয়ার দরুন এবং আগামী বছরে উচ্চ পর্যটক সংখ্যার সম্ভাবনার দরুন[৪৬] অঞ্চলটিতে পর্যটন সংক্রান্ত নির্মাণ বৃদ্ধি পাবে। ফলে অঞ্চলটিকে অবশ্যই বহন ক্ষমতার ধারণার সঙ্গে সাযুজ্য বজায় রেখে চলতে হবে (যা উত্তরাখণ্ড সরকার ইতিমধ্যেই সুপারিশ করেছে[৪৭])। উল্লেখযোগ্যভাবে সরকার একটি কার্যকর তীর্থযাত্রী ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থার বাস্তবায়নের উপরেও জোর দিয়েছে।[৪৮] এর অর্থ হল প্রতিদিন এবং প্রতিটি মরসুমে অঞ্চল বা একটি নির্দিষ্ট স্থান ভ্রমণে অনুমতিপ্রাপ্ত পর্যটকের সংখ্যা হ্রাস করা। উত্তরাখণ্ড এবং প্রকৃতপক্ষে হিমালয়ের অন্য ভারতীয় রাজ্যগুলি ভুটানের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, যা ভ্রমণকারীদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য উচ্চ হারের স্থিতিশীল উন্নয়ন মূল্য ধার্য করেছে।[৪৯] এর পাশাপাশি বর্তমানে অনেক পাহাড়ি শহরে যানবাহন প্রবাহ সীমিত করার জন্য একটি হিল-টাউন ট্যাক্স বা পাহাড়ি-শহর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে যা অন্যান্য শহরেও জারি করা যেতে পারে। এটি শহরের রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে কিছু রাজস্বও প্রদান করবে।[৫০]

হিমালয় অঞ্চলে নির্মাণ প্রকল্পের জন্য একগুচ্ছ আলাদা নির্মাণের গুণমান স্ট্যান্ডার্ড এবং নির্মাণ সংক্রান্ত আইনি প্রবিধান প্রয়োজন। এই গুণমানগুলিকে হালকা ওজনের পরিকাঠামো এবং উচ্চতার উপর বিধিনিষেধকে বাধ্যতামূলক করা উচিত। এই ভঙ্গুর অঞ্চলে স্থিতিশীলতার মানদণ্ডের সঙ্গে সাযুজ্য রাখার জন্য নির্মাণ নিয়ন্ত্রণ বিধানগুলিকে পুনর্বিন্যাস করতে হবে। ১৯৬০-এর দশকে, নির্মাণের (সরকারি চত্বর-সহ) পরিকাঠামোগুলিকে হালকা রাখার জন্য করোগেটেড রুফ ব্যবহার করা হয়েছিল এবং একতলায় সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছিল।[৫১] কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলিতে যোশিমঠ এবং আশেপাশের অঞ্চলে পর্যটন ব্যবস্থার বিকাশের ফলে ভঙ্গুর ঢালে একাধিক বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। বাস্তুতন্ত্রের জন্য উপযোগী পরিকাঠামোর পক্ষে এই ধরনের নির্মাণ অবিলম্বে পরিহার করা উচিত। সংশোধিত নির্মাণ প্রবিধানে ভূমিকম্প-নিরাপদ নির্মাণ প্রযুক্তি এবং বাড়ি, স্কুল, ব্যবসা কেন্দ্র ও অফিসে অ-পরিকাঠামোগত ঝুঁকির বাধ্যতামূলক হ্রাসকে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।[৫২] এই নতুন নির্মাণ প্রবিধানকে এই অঞ্চলে বিদ্যমান পরিবেশকে রক্ষার জন্য কঠোর ভাবে প্রয়োগ করতে হবে। এই প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য, উত্তরপ্রদেশ থেকে উত্তরাখণ্ড আলাদা হওয়ার পর থেকে নগর ও দেশ পরিকল্পনা বিভাগের কোনও পুনর্গঠন হয়নি।[৫৩] শহর পরিকল্পনা তদারকি করার জন্য পর্যাপ্ত কর্মী-সহ অবিলম্বে এমনটা করা জরুরি।

জলবিদ্যুতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটিও একই রকম গুরুত্বপূর্ণ যে, প্রতিটি সম্ভাব্য অঞ্চলকে পরিষেবার মধ্যে চাপানো উচিত নয়।[৫৪] উচ্চ ভূমিধসের ঝুঁকি এবং বৃহৎ আকারে মানব পুনর্বাসনের কারণে খুব বড় বাঁধ নির্মাণও সম্পূর্ণ ভাবে বাতিল করা উচিত।[৫৫] এই অঞ্চলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলির বর্তমান লক্ষ্য প্রায় ৭০টি প্রকল্প নির্মাণ করা এবং ৯০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা[৫৬] হলেও জরুরি ভিত্তিতে তার পর্যালোচনা করা দরকার। নদী উপত্যকার ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলকে চিহ্নিত করা প্রয়োজন এবং নদী তীরবর্তী গ্রামের মানুষদের নিরাপদ এলাকায় পুনর্বাসন করা প্রয়োজন।[৫৭] এর পাশাপাশি ইতিমধ্যেই চলমান প্রকল্পগুলি এমনভাবে পুনর্বিন্যাস করা দরকার, যাতে তা নদীর প্রবাহের অনুকূল হতে পারে।

উপসংহার

জাতীয় এবং স্থানীয় প্রয়োজনীয়তার পরিপ্রেক্ষিতে সকলেরই সম্মত হওয়া জরুরি যে, হিমালয় অঞ্চলে উন্নয়ন প্রয়োজন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল গৃহীত উন্নয়নের পরিমাণ এবং মডেল। সমগ্র বাস্তুতন্ত্র এবং মূল ভূখণ্ডে অঞ্চলটির গুরুত্ব বিবেচনা করে এই অঞ্চলের উন্নয়নমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত।

হিমালয় অঞ্চলে উন্নয়নের পরিমাণ স্থিতিশীল হওয়া উচিত। এ হেন মডেল কখনও আতিশয্যময় হওয়া উচিত নয় এবং ভঙ্গুর বাস্তুতন্ত্রের কথা মাথায় রেখেই মডেলটি নির্মাণ করা উচিত। পর্যটন এবং পরিকাঠামো নির্মাণে বিধিনিষেধ স্থানীয় কর্মসংস্থানের উপর বিরূপ প্রভাব ফেললেও পরিবেশ ক্ষেত্রে বৃহত্তর বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে – জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, ব্যাপক মাত্রায় বৃক্ষরোপণ এবং অরণ্যায়ন, হিমবাহ ও জলাশয় সুরক্ষা এবং উচ্চ গুণমানসম্পন্ন জৈব কৃষি।[৫৯] এই ধরনের কর্মকাণ্ডের উন্নয়ন প্রায় নিশ্চিতভাবেই পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের সূচনা করার মাধ্যমে অন্যান্য ক্ষেত্রে কর্মহীন মানুষদের সংস্থান জোগাবে।


পাদটীকা

(ক) ভূগর্ভস্থ পদার্থের গতিবিধির কারণে ভূ-পৃষ্ঠের ধীরে ধীরে বা আকস্মিক অবনমনকে ভূমির অবনমন বা ধসে যাওয়া বলে, যা প্রায়শই পাম্পিং, ফ্র্যাকিং বা খনন কাজের ফলে জমি থেকে জল, তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস বা খনিজ সম্পদ নিষ্কারণের সময়ে সৃষ্ট হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ (যেমন ভূমিকম্প) ও ভারী  মানবিক কার্যকলাপও (যেমন ভারী নির্মাণ বা ভূগর্ভস্থ জলের নিষ্কাষণ) ভূমিধসের কারণ হতে পারে।

(খ) ২০০০ সালে পৃথক রাজ্য হিসেবে উত্তরাখণ্ড গঠনের আগে যোশিমঠ উত্তর প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত ছিল।

(গ) টেকটনিক পৃথিবীর ভূত্বকের গঠন এবং তার উপরিভাগে ঘটে যাওয়া বৃহৎ আকারের প্রক্রিয়াগুলির সঙ্গে সম্পর্কিত।

(ঘ) ভূ-প্রকৃতি ল্যান্ডস্কেপ এবং পৃথিবীর পৃষ্ঠের অন্যান্য প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সম্পর্কিত।

(ঙ) আবহাওয়াবিদ্যা হল বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞানের একটি শাখা, যেখানে আবহাওয়ার পূর্বাভাসের উপর প্রধান মনোনিবেশ করা হয়।

(চ) চ্যুতি হল এমন একটি ফাটল বা ভাঙন বা দু’টি শিলার মাঝের ফাটলবিশিষ্ট অঞ্চল। চ্যুতিগুলি ব্লকগুলিকে একে অপরের থেকে দূরে সরে যেতে সাহায্য করে। ভূমিকম্পের ফলে এই চলন দ্রুত অথবা ধীরে ধীরে ঘটতে পারে। চ্যুতিগুলি কয়েক মিলিমিটার থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে।

(ছ) ঢালের তলদেশ ঢাল নিয়ে গঠিত মাটির ভরের নীচের বা ভিত্তির অংশকে বোঝায়।

(জ) নদী প্রশিক্ষণ হল নদীপ্রবাহকে পথ প্রদর্শনের জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো নির্মাণ।

(ঝ) হেড রেস টানেল বা চাপযুক্ত টানেল হল দীর্ঘ টানেল এবং শ্যাফ্ট-সহ মাঝারি আকারের বাঁধ যা বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্দেশ্যে জলের জন্য উচ্চ স্তর সৃষ্টি করতে নির্মিত হয়। এগুলি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হয়।

(ঞ) সুড়ঙ্গ হল আনুভূমিক ক্ষেত্র যা প্রবেশ বা নিষ্কাশনের উদ্দেশ্যে খনির মধ্যে ব্যবহার করা হয়।

(ট) একটি অঞ্চলে কোনও কার্যক্রম যে এলাকা পর্যন্ত সম্পন্ন করা যায়, বহন ক্ষমতা তেমন একটি স্তর।

(ঠ) এটি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মানুষের কার্যকলাপের কারণে পরিবেশগত পরিবর্তনকে বোঝায়।

(ড) রাতুরা, গৌচর, নন্দপ্রয়াগ এবং চামোলি।

[১] উত্তরাখণ্ড ট্যুরিজম, ‘যোশিমঠ’

[২] হিন্দুস্থান টাইমস, ‘সিঙ্কিং যোশিমঠ: ক্র্যাকস ডেভেলপ অন ইন্ডিয়া-চায়না বর্ডার রোড; পিএমও টু হোল্ড ক্রুশিয়াল মিট’, ইউটিউব ভিডিয়ো, ৩.১০ মিনিট, জানুয়ারি ৮, ২০২৩

[৩] ‘উত্তরাখণ্ডস যোশিমঠ ডিক্লেয়ারড ডিজাস্টার-প্রোন এরিয়া আফটার ‘সিঙ্কিং’, ক্র্যাকস ডিটেক্টেড’, এনডিটিভি, জানুয়ারি ৯, ২০২৩

[৪] ‘উত্তরাখণ্ড গভর্নমেন্ট অর্ডারস ইভ্যাকুয়েশন অব ৬০০ ফ্যামিলিজ ফ্রম যোশিমঠ’, স্ক্রল, জানুয়ারি ৭, ২০২৩

[৫] গৌরব তলওয়ার, ‘পিডব্লিউডি গেস্ট হাউস, টু মোর প্রাইভেট হাউজেস টু বি ডেমোলিশড ইন যোশিমঠ’, টাইমস অফ ইন্ডিয়া, জানুয়ারি ১৯, ২০২৩

[৬] অফিস অব দ্য রেজিস্ট্রার অ্যান্ড সেনসাস কমিশনার, মিনিস্ট্রি অব হোম অ্যাফেয়ার্স, গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া, ‘সেনসাস অফ ইন্ডিয়া ২০১১’

[৭] অফিস অব দ্য রেজিস্ট্রার অ্যান্ড সেনসাস কমিশনার, মিনিস্ট্রি অব হোম অ্যাফেয়ার্স, গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া, ‘সেনসাস অফ ইন্ডিয়া ২০০১’

[৮] পপুলেশন সেনসাস, ‘যোশিমঠ টাউন পপুলেশন ২০১১-২০২৩’

[৯] অন্বেষা, ‘যোশিমঠ, উত্তরাখণ্ড: ট্রেকিং ডেস্টিনেশন অ্যান্ড প্লেসেস টু ভিজিট’, মোক্সটেন, মে ৮, ২০২০

[১০] উত্তরাখণ্ড স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি, গভর্নমেন্ট অফ উত্তরাখণ্ড, ‘স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান ফর রিস্ক রিডাকশন’, অগস্ট, ২০১৮

[১১] নীরজ সন্তোষী, ‘যোশিমঠ স্যাঙ্ক বাই ৫.৪ সিএম ইন জাস্ট ১৩ ডেজ, সেজ ইসরো রিপোর্ট’, হিন্দুস্থান টাইমস, জানুয়ারি ১৪, ২০২৩

[১২] সুনিতা নারাইন, ‘যোশিমঠ, এ ওয়েল-ইঞ্জিনিয়ার্ড ক্যালামিটি’, ডাউন টু আর্থ, জানুয়ারি ১০, ২০২৩

[১৩] ডিপার্টমেন্ট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া, ‘ন্যাশনাল মিশন ফর সাসটেনিং দ্য হিমালয়ান ইকো-সিস্টেম আন্ডার ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’, জুন ২০১০

[১৪] গভর্নমেন্ট অফ উত্তর প্রদেশ, ‘মিশ্র কমিটি রিপোর্ট’, ১৯৭৬, প্যারা ১, পৃষ্ঠা ৩

[১৫] গভর্নমেন্ট অফ উত্তর প্রদেশ, ‘মিশ্র কমিটি রিপোর্ট’, ১৯৭৬, প্যারা ২, পৃষ্ঠা ৩

[১৬] ‘স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান ফর রিস্ক রিডাকশন’

[১৭] নীরজ সন্তোষী, ‘জিওলজি টু আনপ্ল্যানড কনস্ট্রাকশন: ডিকোডিং হোয়াই যোশিমঠ ইজ সিঙ্কিং’, হিন্দুস্থান টাইমস, জানুয়ারি ৭, ২০২৩

[১৮] সন্তোষী, ‘জিওলজি টু আনপ্ল্যানড কনস্ট্রাকশন: ডিকোডিং হোয়াই যোশিমঠ ইজ সিঙ্কিং’

[১৯] সন্তোষী, ‘জিওলজি টু আনপ্ল্যানড কনস্ট্রাকশন: ডিকোডিং হোয়াই যোশিমঠ ইজ সিঙ্কিং’

[২০] ভি পি সতি, ‘গ্লেসিয়ার বার্স্টস-ট্রিগারড ডেব্রি ফ্লো অ্যান্ড ফ্ল্যাশ ফ্লাড ইন ঋষি অ্যান্ড ধৌলিগঙ্গা ভ্যালিজ: আ স্টাডি অন ইটস কজেস অ্যান্ড কনসিকোয়েন্সেস’, ন্যাশনাল হ্যাজার্ডস রিসার্চ ২ (২০২২) ৩৩-৪০

[২১] ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি, মিনিস্ট্রি অব হোম অ্যাফেয়ার্স, গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া, ‘স্টাডি অব কজেস অ্যান্ড ইমপ্যাক্টস অব দি উত্তরাখণ্ড ডিজাস্টার অন ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ইন রউনথি গাধেরা, ঋষিগঙ্গা অ্যান্ড ধৌলিগঙ্গা ভ্যালি: মেজারস টু রিডিউস ডিজাস্টার রিস্কস’, এপ্রিল ২০২২

[২২] সন্তোষী, ‘জিওলজি টু আনপ্ল্যানড কনস্ট্রাকশন: ডিকোডিং হোয়াই যোশিমঠ ইজ সিঙ্কিং’

[২৩] সন্তোষী, ‘জিওলজি টু আনপ্ল্যানড কনস্ট্রাকশন: ডিকোডিং হোয়াই যোশিমঠ ইজ সিঙ্কিং’

[২৪] আর্বান ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট, উত্তরাখণ্ড, ‘প্রেজেন্টেশন অন: উত্তরাখণ্ড – ডিজাস্টার রেজিস্ট্যান্ট টেকনোলজিস, সিসমিক জোনিং ম্যাপ অফ ইন্ডিয়া’, জুলাই ২৭-২৮, ২০১৮

[২৫] সন্তোষী, ‘জিওলজি টু আনপ্ল্যানড কনস্ট্রাকশন: ডিকোডিং হোয়াই যোশিমঠ ইজ সিঙ্কিং’

[২৬] সান্তিয়া গোরা এবং বিজয় আনন্দ, ‘যোশিমঠ: ১৯৭৬ রিপোর্ট ওয়ার্নড দ্যাট টাউন ওয়াজ অন এনশিয়েন্ট ল্যান্ডস্লাইড, হিউম্যান অ্যাক্টিভিটি পোজেস ডেঞ্জার’, সিএনবিসি টিভি ১৮, জানুয়ারি ৮, ২০২৩

[২৭] গভর্নমেন্ট অফ উত্তর প্রদেশ, ‘মিশ্র কমিটি রিপোর্ট’, ১৯৭৬

[২৮] গভর্নমেন্ট অফ উত্তর প্রদেশ, ‘মিশ্র কমিটি রিপোর্ট’

[২৯] গভর্নমেন্ট অফ উত্তর প্রদেশ, ‘মিশ্র কমিটি রিপোর্ট’, ১৯৭৬, পৃষ্ঠা ১২-১৩

[৩০] বন্দনা রামানি, ‘যোশিমঠ ক্রাইসিস: হোয়াই দ্য ১৯৭৬ মিশ্র কমিটি রিপোর্ট ইজ প্রোফেটিক’, মানি কন্ট্রোল, জানুয়ারি ৮, ২০২৩

[৩১] ‘তপোবন-বিষ্ণুগোড় হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার প্ল্যান্ট, উত্তরাখণ্ড’, পাওয়ারটেকনোলজি ডট কম, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৪

[৩২] ‘তপোবন-বিষ্ণুগোড় হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার প্ল্যান্ট, উত্তরাখণ্ড’

[৩৩] ‘এক্সপার্টস ব্লেম এনটিপিসিজ হাইড্রো প্রোজেক্ট ফর যোশিমঠ ডিজাস্টার’, ইন্ডিয়া টিভি, জানুয়ারি ৯, ২০২৩

[৩৪] কৌটিল্য সিং, ‘এনটিপিসি প্রোজেক্ট রোল ইন যোশিমঠস সিঙ্কিং বিয়িং প্রোবড: উত্তরাখণ্ড’, টাইমস অফ ইন্ডিয়া, জানুয়ারি ১৪, ২০২৩

[৩৫] শ্রেয়া জয়, ‘যোশিমঠ: এনটিপিসি নট রেসপন্সিবল: পাওয়ার সিকিউরিটি’, রেডিফ, জানুয়ারি ১৬, ২০২৩

[৩৬] সঞ্জয় দত্ত, ‘এনটিপিসি প্রোজেক্ট নট টু ব্লেম ফর যোশিমঠ সিঙ্কিং: প্যানেল ইন ২০১০’, টাইমস অফ ইন্ডিয়া, জানুয়ারি ১৩, ২০২৩

[৩৭] নীতিন সেমওয়াল, ‘দ্য বিগেস্ট অ্যান্ড লঙ্গেস্ট ব্রিজ অফ উত্তরাখণ্ড উইল বি বিল্ট ইন যোশিমঠ হেলাং টু মারোয়াড়ি বাইপাস, নো দ্য কমপ্লিট প্ল্যান’, হিন্দুস্থান নিউজ হাব, অক্টোবর ৮, ২০২২

[৩৮] ‘হেলাং-মারোয়াড়ি বাইপাস রোড ক্লিয়ারড বাই দ্য সুপ্রিম কোর্ট, দ্য মুভমেন্ট অফ আর্মি ইন চায়না বর্ডার এরিয়া উইল বি স্মুদ’, সতলোক এক্সপ্রেস, মে ১৪, ২০২২

[৩৯] ইসমত আরা, ‘অ্যাট দ্য ফল্ট লাইনস’, ফ্রন্টলাইন, জানুয়ারি ২৭, ২০২৩

[৪০] ‘আর্মি রিলোকেটস সাম ট্রুপ্স ফ্রম এরিয়াজ সারাউন্ডিং যোশিমঠ’, ইকোনমিক টাইমস, জানুয়ারি ১২, ২০২৩

[৪১] শিবানী আজাদ এবং কৌটিল্য সিং, ‘যোশিমঠ রেসিডেন্টস টু বি রিলোকেটেড টু দিজ রিহ্যাবিলিটেশন সাইটস’, টাইমস অফ ইন্ডিয়া, জানুয়ারি ১৭, ২০২৩

[৪২] ডিপার্টমেন্ট অব সোশ্যাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, মিনিস্ট্রি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া, ‘ন্যাশনাল মিশন ফর সাসটেনিং দ্য হিমালয়ান ইকো-সিস্টেম আন্ডার ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’, জুন ২০১০

[৪৩] ‘স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান ফর রিস্ক রিডাকশন’

[৪৪] নারাইন, ‘যোশিমঠ, এ ওয়েল-ইঞ্জিনিয়ার্ড ক্যালামিটি’

[৪৫] নারাইন, ‘যোশিমঠ, এ ওয়েল-ইঞ্জিনিয়ার্ড ক্যালামিটি’

[৪৬] চন্দ্র ভূষণ, ‘হিলস, স্টপ কপিয়িং দ্য প্লেইনস’, টাইমস অফ ইন্ডিয়া, জানুয়ারি ১৭, ২০২৩

[৪৭] ‘স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান ফর রিস্ক রিডাকশন’

[৪৮] ‘স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান ফর রিস্ক রিডাকশন’

[৪৯] ভূষণ, ‘হিলস, স্টপ কপিয়িং দ্য প্লেইনস’

[৫০] চেতন ভগত, ‘স্টপ। ক্যানসেল ইয়োর হিল হলিডে’, টাইমস অফ ইন্ডিয়া, জানুয়ারি ১৩, ২০২৩

[৫১] অমিত ভট্টাচার্য, ‘টাইম টু লুক আউট ফর আদার যোশিমঠস’, টাইমস অফ ইন্ডিয়া, জানুয়ারি ১৫, ২০২৩

[৫২] ‘স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান ফর রিস্ক রিডাকশন’

[৫৩] ভূষণ, ‘হিলস, স্টপ কপিয়িং দ্য প্লেইনস’

[৫৪] মৃদুলা রমেশ, ‘যোশিমঠস স্যালভেশন লাইজ অন আ নিউ পাথ বাট উইল উই ওয়াক ইট?’, টাইমস অফ ইন্ডিয়া, জানুয়ারি ১৫, ২০২৩

[৫৫] ভি পি সতি, ‘ল্যান্ডস্কেপ ভালনারেবিলিটি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন ইস্যুজ: আ স্টাডি অব হাইড্রোপাওয়ার প্রোজেক্টস ইন গাড়োয়াল রিজিয়ন, হিমালয়া’, ন্যাচরাল হ্যাজার্ডস, ২০১৫, ভলিউম ৭৫, নম্বর ৩

[৫৬] নারাইন, ‘যোশিমঠ, এ ওয়েল-ইঞ্জিনিয়ার্ড ক্যালামিটি’

[৫৭] সতি, ‘গ্লেসিয়ার বার্স্টস-ট্রিগারড ডেব্রি ফ্লো অ্যান্ড ফ্ল্যাশ ফ্লাড ইন ঋষি অ্যান্ড ধৌলিগঙ্গা ভ্যালিজ: আ স্টাডি অন ইটস কজেস অ্যান্ড কনসিকোয়েন্সেস’

[৫৮] নারাইন, ‘যোশিমঠ, এ ওয়েল-ইঞ্জিনিয়ার্ড ক্যালামিটি’

[৫৯] ভূষণ, ‘হিলস, স্টপ কপিয়িং দ্য প্লেইনস’

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.