Published on Dec 06, 2021 Updated 0 Hours ago

ন্যায্য অতিক্রমণের জন্য কথোপকথন আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে গ্লোবাল সাউথ–কেই, যাতে তা হয়ে ওঠে আরও অন্তর্ভুক্তিকর, এবং কথার থেকে পরিণত হয় কাজে।

সীমিত–কার্বন ভবিষ্যতে পৌঁছনোর ন্যায্য পথ

এই নিবন্ধ একটি সিরিজের অংশ যার নাম: নেট–জিরোয় অতিক্রমণের পথ ও নীতি


নতুন আইপিসিসি সিক্স্থ অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্টে স্পষ্টই বলা হয়েছে, একবিংশ শতাব্দী শেষ হওয়ার আগে বিশ্বের উষ্ণায়নকে ১.‌৫ ডিগ্রির সীমায় ধরে রাখতে হলে আগামী দশকগুলোই শেষ সুযোগ।[১] এই রিপোর্টে জোর দিয়ে একথাও বলা হয়েছে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের নানা ধরনের বিপর্যয় থেকে আমাদের গ্রহকে বাঁচাতে হলে অর্থনীতিগুলোকে সীমিত–কার্বন বা ডিকার্বনাইজ করতে হবে (‌অর্থাৎ কার্বন ডাইঅক্সাইড ও অন্যান্য গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ অনেকটা কমাতে হবে)। অবশ্যই এখন, এবং গত কয়েক বছর ধরে, কার্বন–হ্রাস ও স্বচ্ছ শক্তিতে অতিক্রমণের অঙ্গীকার জোরালো হচ্ছে। প্রায় ১৩০টি দেশ, যারা বিশ্বের জিএইচজি (গ্রিনহাউস গ্যাস)‌ নিঃসরণের ৭৩ শতাংশের জন্য দায়ী, হয় নেট জিরোয় পৌঁছনোর লক্ষ্য ঘোষণা করেছে অথবা তা বিবেচনা করছে। এই লক্ষ্য যদি পুরোপুরি অর্জন করা সম্ভব হয়, তা হলে বিশ্বের উষ্ণায়ন এই শতাব্দীশেষে ২ ডিগ্রির মধ্যে বেঁধে রাখা সম্ভব হবে।

কার্বন সীমিত করার লাভ তুলতে হলে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে অতিক্রমণগুলো যেন ন্যায় ও সমতার ভিত্তিতে বণ্টিত হয়। এটাকেই রাষ্ট্রপুঞ্জ বলেছে, ‘‌কাউকে যেন পেছনে ফেলে না–রাখা হয়’‌।

সীমিত–কার্বনের লক্ষ্য হল স্থিতাবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা, এবং রাষ্ট্রগুলো যে ভাবে তাদের অর্থনেতিক ব্যবস্থার পরিকল্পনা করে বা তা চালায় তা পুনর্বিবেচনা করা। এই প্রক্রিয়া চলছে এমন অনেক দেশে যারা প্যারিস চুক্তি ও/‌অথবা নেট জিরোয় পৌঁছনোর লক্ষ্যে কাজ করছে। তবে এখনকার দৃষ্টিভঙ্গি হল প্রযুক্তিবিদ–নির্ভর, অথবা সঠিক নীতি, উৎসাহ ও অর্থসংস্থানের প্রযুক্তি–অর্থনৈতিক মূল্যায়নের পরিণাম। মানুষের দিকে, বিশেষ করে সবচেয়ে অরক্ষিত ও প্রান্তিক মানুষের দিকে, তারা সামান্যই মনোযোগ দেয়।

কার্বন সীমিত করার লাভ তুলতে হলে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে এই অতিক্রমণগুলো যেন ন্যায় ও সমতার ভিত্তিতে বণ্টিত হয়। এটাকেই রাষ্ট্রপুঞ্জ বলেছে, ‘‌কাউকে যেন পেছনে ফেলে না–রাখা হয়’‌। কাজেই সীমিত–কার্বন অতিক্রমণ সম্পূর্ণ করতে যা আবশ্যক তা হল ন্যায়বিচার, সমতা ও অন্তর্ভুক্তির প্রতি স্থায়ী আনুগত্য, এবং অন্যদেরও সেই পথের অনুবর্তী করে তোলার প্রয়াস।

জলবায়ু ন্যায়বিচার  ন্যায্য অতিক্রমণ

জলবায়ু পরিবর্তন প্রসঙ্গে ‘‌ন্যায়বিচার’‌–এর ধারণার অনেকগুলি দিক আছে, এবং বিভিন্ন শরিক এই সমস্যাটির বিভিন্ন সমাধান খুঁজছে। আন্তর্জাতিক মহল আজ ‘‌জলবায়ু ‌ন্যায়বিচার’‌ বলতে যা বোঝে, এবং যা ‘‌ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণ’‌–এর ধারণার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে যুক্ত, তার উৎপত্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে পরিবেশগত বিপদের অন্যায় বণ্টনের বিরুদ্ধে ১৯৮০–র দশকের প্রতিবাদ আন্দোলন। আরও সম্প্রতি পরিবেশগত ন্যায়বিচারের সংকীর্ণ ধারণাটিকে ‘‌জলবায়ু ‌ন্যায়বিচার’‌ আরও প্রসারিত করেছে, এবং স্থানীয় পরিবেশগত প্রশ্নগুলির থেকে তা হয়ে উঠেছে জলবায়ু পরিবর্তনের বিশ্বজনীন সমস্যা সংক্রান্ত। সেই সঙ্গেই এখন নজর দেওয়া হচ্ছে জলবায়ুগত প্রভাব ও কাজকর্মের বণ্টনগত পরিণতির ওপর। ইন্ডিয়া ক্লাইমেট কোলাবরেটিভ–এর সাম্প্রতিক সংজ্ঞা অনুযায়ী, ‘জলবায়ু ‌ন্যায়বিচার’‌ হল এই বিষয়টির স্বীকৃতি যে দরিদ্রতম ও প্রান্তিক মানুষের উপর সামাজিক, অর্থনৈতিক, জনস্বাস্থ্য ও অন্যান্য প্রশ্নে জলবায়ু পরিবর্তনের অ–সমানুপাতিক ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। জলবায়ু ‌ন্যায়বিচার এই বৈষম্যের সমস্যাটির মোকাবিলা করতে চায় প্রত্যক্ষ ভাবে দীর্ঘমেয়াদি প্রশমন ও দ্রুত–সঙ্কটমুক্তির কৌশলের ভিত্তিতে।

এই টাস্ক ফোর্স ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে মেলামেশা করেছিলএবং জোর দিয়ে বলেছিল এমন নীতি  পরিকল্পনা তৈরি করা প্রযোজন যা স্থানীয় প্রাসঙ্গিকতা মাথায় রাখবে এবং সেই প্রক্রিয়ায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীগুলিকে যুক্ত করবে।

যাতে করে আরও ন্যায্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায় সেই লক্ষ্যে ‘‌ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণ’‌ নজর কেন্দ্রীভূত করেছে ব্যবস্থাগত পরিবর্তনের ওপর। প্যারিস চুক্তির শুরুতেই সরকারগুলোকে বলা হয়েছে ‘‌শ্রমশক্তির ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণ এবং জাতীয় অগ্রাধিকার অনুযায়ী উপযুক্ত কাজ ও ভাল মানের চাকরির সুযোগ তৈরির বাধ্যবাধকতা’‌ মাথায় রাখতে। এর ফলে এই বিষয়টি নিয়ে আরও গবেষণা ও অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। গ্লোবাল নর্থ বা উন্নত দেশগুলোতে এই বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে, এবং তারা এখন জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে অতিক্রমণের আর্থসামাজিক সমস্যাগুলির সমাধান খুঁজছে।

যেমন, ২০১৮ সালে কানাডা তৈরি করেছিল টাস্ক ফোর্স অন জাস্ট ট্রানজিশন ফর কোল পাওয়ার ওয়র্কারস অ্যান্ড কমিউনিটিজ। এর উদ্দেশ্য ছিল ধাপে ধাপে কয়লার ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়ার কী প্রভাব সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীগুলির উপর পড়বে এবং কী ভাবে তাদের পাশে দাঁড়ানো যাবে তা খতিয়ে দেখা। এই টাস্ক ফোর্স ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে মেলামেশা করেছিল, এবং জোর দিয়ে বলেছিল এমন নীতি ও পরিকল্পনা তৈরি করা প্রযোজন যা স্থানীয় প্রাসঙ্গিকতা মাথায় রাখবে, এবং সেই প্রক্রিয়ায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীগুলিকে যুক্ত করবে। এই সুপারিশগুলির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে কানাডা পরবর্তী পাঁচ বছরে ‘‌কর্মী অতিক্রমণ কেন্দ্র’‌ স্থাপন এবং বেতন ও পেনশন রক্ষার নতুন উপায় খোঁজার জন্য ৩ কোটি ৫০ লক্ষ মার্কিন ডলার বরাদ্দ করে। তার আগে ২০১৮ সালে জার্মানি কমিশন অন গ্রোথ, স্ট্রাকচারাল ইকনমিক চেঞ্জ, অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট নামে একটি এজেন্সি তৈরি করে। এর কাজ ছিল ২০৩০ সালের মধ্যে সে দেশের শক্তি ক্ষেত্রের নিঃসরণ হ্রাসের লক্ষ্যে পৌঁছতে কোন সময়ের মধ্যে কী কী কাজ করতে হবে তার সুপারিশ করা, এবং কয়লা শ্রমিকদের ও খনি অঞ্চলের ন্যায্য অতিক্রমণের পরিকল্পনা তৈরি করা। এই কমিশন নানা সামাজিক শ্রম ব্যবস্থার মাধ্যমে শ্রমিকদের রক্ষা করার কথা বলেছিল। জার্মান সরকার সুপারিশগুলি গ্রহণ করে ২০৩৮ সাল পর্যন্ত সময়ের জন্য কয়লা অঞ্চলে ৪ হাজার কোটি ইউরো বরাদ্দ করেছে। স্পেনও ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণের জন্য একটি ‘‌ডিল’‌–এর কথা বিবেচনা করছে। এই ডিলে কয়লা শিল্পের জন্য যে ভর্তুকি দেওয়া হত, তা বরাদ্দ করা হবে বন্ধ–হয়ে–যাওয়া খনি অঞ্চলের একটি সুস্থিত উন্নয়নের পরিকল্পনার জন্য। এই ডিলে কাজ–হারানো শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজে রাখা, স্বেচ্ছাবসর, খনি অঞ্চলগুলির সুস্থিত উন্নয়ন, বনাঞ্চল ফিরিয়ে আনা ও পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য ২৫ কোটি ইউরো ধরা হয়েছে।

ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণ নিয়ে এখন যে আলোচনা চলছে তার দুটো গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা আছে:‌ এর পেছনে রয়েছে প্রধানত কর্মসংস্থানের কর্মসূচি, আর এটি তৈরি হচ্ছে মূলত গ্লোবাল নর্থ–এর পরিপ্রেক্ষিত থেকে। ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণের এখনকার অভিজ্ঞতার কেন্দ্রবিন্দু চাকরি ও স্বীকৃত শ্রমিক ইউনিয়নগুলির সঙ্গে আলোচনা। উদ্দেশ্যের দিক থেকে ঠিক হলেও এই সঙ্কীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গিতে শুধু প্রাতিষ্ঠানিক কাজের কথা ভাবা হচ্ছে, আর তাই এই দৃষ্টিভঙ্গি গ্লোবাল সাউথের (‌উন্নয়নশীল)‌ কয়লা–নির্ভর দেশগুলির জন্য যথোপযুক্ত নয়, কারণ সেখানে কাজ ও জীবিকার সুযোগ, আর তার সঙ্গে পরিবেশের সম্পর্ক, অনেক বেশি সমস্যাসঙ্কুল। উন্নয়নের অধিকার, শক্তির বেড়ে–চলা চাহিদা, ও কম গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের দায়ভাগ নিয়ে বিতর্ক ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণ সংক্রান্ত আলোচনার পরিসর আরও সীমিত করছে।

সামাজিক ভাবে ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণের পথে

গ্লোবাল সাউথ হোক বা নর্থ, কার্বন সীমিত করার কাজ চলছে, এবং এখন তা চলছে ক্ষেত্রনির্দিষ্ট স্তরে। চিলড্রেন্‌স ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ফাউন্ডেশন (‌সিআইএফএফ)‌ অনেক দেশে স্বচ্ছ শক্তিতে অতিক্রমণের কাজে সাহায্য করে, আর এর লক্ষ্য হল বিশ্বব্যাপী শক্তি ব্যবস্থা, যানবাহন, শিল্প, দক্ষতাসম্পন্ন কুলিং, এবং জমির ব্যবহার ও খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তর ঘটানো। ‌সিআইএফএফ–ও এখন চেষ্টা করছে যাতে এই অতিক্রমণ হয়ে ওঠে ন্যায্য, সুষ্ঠু এবং এতে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করা যায়। এটা যে বিভিন্ন অঞ্চল বা ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভাবে কাজ করবে তা মাথায় রেখে সিআইএফএফ স্থানীয় স্তরের উপযুক্ত কম–কার্বন, ও পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ সামাজিক ভাবে ন্যায়সঙ্গত, অতিক্রমণের ব্যবস্থা করতে চাইছে। তার মধ্যে স্থানীয় অংশীদারদের অভিজ্ঞতা ও প্রত্যাশাকেও স্থান দেওয়া হচ্ছে।

চিলড্রেন্‌স ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ফাউন্ডেশন (‌সিআইএফএফ)‌ অনেক দেশে স্বচ্ছ শক্তিতে অতিক্রমণের কাজে সাহায্য করেআর এর লক্ষ্য হল বিশ্বব্যাপী শক্তি ব্যবস্থাযানবাহনশিল্পদক্ষতাসম্পন্ন কুলিংএবং জমির ব্যবহার  খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তর ঘটানো।

‘‌সামাজিক ভাবে ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণ’‌–এর প্রশ্নে সিআইএফএফ–এর দৃষ্টিভঙ্গির তিনটে গুরুত্বপূর্ণ দিক আছে:‌ (১) চাকরি:‌ নানা ধরনের উপযুক্ত কাজ ও জীবিকার সুযোগ তৈরি করা; কাজ হারানো ও বাস্তুচ্যুতির ক্ষেত্রে যথেষ্ট ও স্থায়ী সামাজিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা; এবং দক্ষতার উন্নয়নের প্রয়াস; (২) ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার: অতিক্রমণের সময় সমতার বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে (‌ক্ষেত্রগত স্তরে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মীদের মধ্যে, আর বৃহত্তর পর্যায়ে বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশের মধ্যে)‌, এবং দেখতে হবে যেন সিদ্ধান্তগ্রহণ ও সুবিধার বণ্টনের মধ্যে ন্যায়বিচার থাকে; এবং (৩) অন্তর্ভুক্তি: যার অর্থ লিঙ্গ, জাতি, উন্নয়নের স্তর ইত্যাদি নির্বিশেষে অতিক্রমণে সবাই অর্থবহ ভাবে অংশ নিতে পারে ও লাভবান হতে পারে সেই জায়গাটা তৈরি করা।

কার্যকর করার নীতিসমূহ

যদিও ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণ নিয়ে ভাবনাচিন্তা দ্রুত পরিণত হচ্ছে, এবার কিন্তু সেগুলো দ্রুত কার্যকর করতে হবে। চলতি দশক হল ফলপ্রসূ কাজ করার দশক। এই সময়েই পুরো পৃথিবী ২০৩০–এর মধ্যে সাসটেনেব্‌ল ডেভলপমেন্ট গোল্‌স (‌এসডিজি)‌ পূর্ণ করার চেষ্টা করছে।। তাই এখন সময় হয়েছে উন্নয়ন সম্পর্কিত আলোচনার সঙ্গে ‘‌ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণ’‌কে যুক্ত করার। ‘‌ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণ’–এ উন্নয়ন সম্পর্কে বিশ্বজনীন ধারণার মাপকাঠিগুলোই বদলে ফেলতে হবে। এটা এমন একটা কাজ যা আরও জটিল হচ্ছে বিভিন্ন দেশ উন্নয়নের বিভিন্ন স্তরে থাকায়। গ্লোবাল নর্থ–এর দেশগুলো ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণকে দেখছে নীতিগত ও কৌশলগত ব্যবস্থার মিশ্রণ হিসেবে, কিন্তু তাদের সঙ্গে গতি মিলিয়ে চলা মধ্য বা নিম্ন আয়ের দেশগুলোর পক্ষে কঠিন, কারণ তারা এখনও উন্নয়নের নানা সমস্যায় জর্জরিত।

সামাজিক ভাবে ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণের বিষয়টি তুলে ধরার সময় একটা বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ: এখনও অবধি এই সংলাপের খুব বেশি অংশভাগ ছিল গ্লোবাল নর্থ–এর। এখন যা আবশ্যক তা হল গ্লোবাল সাউথ–এর বৌদ্ধিক মূলধনকে মূল্য দেওয়ার, কারণ এই সব অঞ্চলের দেশগুলো যখন নিঃসরণ হ্রাসে ব্যবস্থা নেবে তখন বিরাট সংখ্যক মানুষ অতিক্রমণের শরিক হবে।

ভারতে তৃণমূল স্তরে চালানো একটি প্রভাবশালী সমীক্ষা[২] অনুধাবনের চেষ্টা করেছিল ভারতের কয়লাখনি অঞ্চলে ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণ–এর অর্থ কী, আর সেই কাঠামোটার আবশ্যক উপাদানগুলোই বা কী। এই সমীক্ষায় পূর্ব ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের রামগড়ের থেকে শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। রামগড়ের সব পরিবারের মধ্যে কয়লার উপর নির্ভরশীলতা তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বেশি:‌ ২৭ শতাংশ। আবার এই পরিবারগুলির প্রায় ৭৫ শতাংশ ছিল অপ্রাতিষ্ঠানিক কয়লা অর্থনীতির অংশ, আর মাত্র ২৯ শতাংশ সরাসরি কয়লা সংস্থাগুলির কর্মী। তা ছাড়া কয়লাখনির বণ্টনমূলক প্রভাব ছিল খুব সীমিত, এবং উপকার পৌঁছত খুব কম সংখ্যকের কাছে। জেলায় মৌলিক পরিকাঠামো ও পরিষেবার সরবরাহ চাহিদার তুলনায় অনেক কম:‌ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংখ্যা অপ্রতুল (‌যাতে জনসংখ্যার মাত্র অর্ধেক পরিষেবা পেতে পারেন)‌, এবং নলবাহিত জল আসে গ্রামীণ বাড়িগুলির ১৭ শতাংশে। জেলার সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থাও খারাপ:‌ ৬৩ শতাংশ পরিবারের মাসিক আয় ১৩৫ মার্কিন ডলারের কম। কয়লাখনির উপর নজর কেন্দ্রীভূত থাকায় অর্থনীতির অন্যান্য ক্ষেত্রের বা বৈচিত্র‌্যের বিকাশ হয়নি।

শিল্পে স্বচ্ছ শক্তিতে অতিক্রমণের প্রভাব পড়বে সেই সব ক্ষেত্রের উপর নির্ভরশীল মানুষের কাজ  জীবিকায়এবং তখন তাঁদের দক্ষতা বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে। 

কাজেই ভারতে ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণের বিষয়টি একক শিল্প (‌কয়লা)‌ ও তার সংশ্লিষ্ট কর্মীদের প্রতিস্থাপিত করার মতো সরলরৈখিক নয়। বরং এটি পুরো অর্থনীতিতে ব্যাপ্ত ও স্থানীয় ভাবে–উপযুক্ত অতিক্রমণ, যা কয়লাখনি অঞ্চলগুলিতে ‘‌‌সম্পদের অভিশাপ’‌–এর উল্টো দিকে নিয়ে যাবে। ওই সমীক্ষায় বলা হয়েছে ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণের কাঠামো রূপায়িত করতে হবে জেলাস্তরে, এবং তার সহায়ক হিসেবে থাকতে হবে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে।

ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণের বিষয়টি নিয়ে আর একটি সফল কাজ হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায়, এবং সেটিও কয়লা পর্যায়ক্রমে তুলে দেওয়ার প্রসঙ্গে। এসকম, সে দেশের একটি জাতীয় পরিষেবা, ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণের মধ্যে দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় কয়লা–নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে কার্বন হ্রাসের গতি দ্রুততর করতে প্রয়াসী হয়েছে। এই অতিক্রমণের ভিত্তি হল আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি থেকে সুবিধাজনক হারে অর্থ সংগ্রহ করে বাতিল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিকে নতুন ভাবে কাজে লাগানো এবং কয়লা খনি ও কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের কাজের নতুন সুযোগ তৈরি করা। প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা এসকম–এর বিস্তারিত পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন এবং প্ল্যাটিনাম ও লিথিয়াম খনির ক্ষেত্রেও একই ধরনের উদ্যোগের কথা বলেছেন। গ্লোবাল সাউথ থেকে এই ধরনের পরিপ্রেক্ষিত সকলের ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণের জন্য সহায়ক হবে।

একই সঙ্গে সংলাপ আরও বিস্তীর্ণ করতে হবে যাতে ক্ষেত্রগত পরিপ্রেক্ষিত থেকে অতিক্রমণের পরিকল্পনা করা যায়। এখনও অবধি প্রায় সব প্রয়াস কয়লাকে কেন্দ্র করে হচ্ছে। তবে এটাও স্বীকার করতে হবে যে পরিবহণ, জমির ব্যবহার ও শিল্পেও কার্বন নিঃসরণ সীমিত করার কাজ চলছে। ইলেকট্রিক গাড়ি যখন আগের ইন্টারনাল কমবাশান এঞ্জিনবিশিষ্ট (আইসিই)‌ গাড়িকে প্রতিস্থাপিত করতে থাকবে, তখন পরিবহণ ক্ষেত্রের কর্মীরা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কারণ তখন ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক দক্ষতার চাহিদা বাড়বে, আর মোটর ইঞ্জিন সংক্রান্ত ও ধাতব কাজের দক্ষতার চাহিদার কমবে। ইলেকট্রিক যান সংক্রান্ত বাস্তুতন্ত্রের প্রয়োজন মেটানোর দক্ষতা যত বাড়বে, আইসিই গাড়ির সঙ্গে জড়িত অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মীরা তত বেশি কাজ হারাবেন। একই ভাবে শিল্পে স্বচ্ছ শক্তিতে অতিক্রমণের প্রভাব পড়বে সেই সব ক্ষেত্রের উপর নির্ভরশীল মানুষের কাজ ও জীবিকায়, এবং তখন তাঁদের দক্ষতা বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে।

অর্থসংস্থানের প্রশ্ন

এটা স্পষ্ট যে ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণের জন্য প্রয়োজন পুরো ব্যবস্থাব্যাপী পরিকল্পনা ও সহায়তা; কিন্তু যা ততটা স্পষ্ট নয় তা হল এর জন্য টাকা কোথা থেকে আসবে। রাষ্ট্রকে অর্থের সংস্থান করতে হবে অতিক্রমণে ক্ষতিগ্রস্তদের তাৎক্ষণিক সহায়তার জন্য, কর্মীদের একাংশের নতুন করে দক্ষতায়ন ও নতুন কাজ খুঁজে দেওয়ার জন্য, এবং ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের ও ক্ষেত্রগুলির, বিশেষ করে অরক্ষিত জনগোষ্ঠীগুলির ন্যায্য, অন্তর্ভুক্তিকৃত সুস্থিত উন্নয়নের পথ তৈরি করার জন্য। এরকম সার্বিক আর্থিক পরিকল্পনার একটি হল ইওরোপিয়ান ইউনিয়নের জাস্ট ট্রানজিশন মেকানিজম, যা পর্যায়ক্রমে কয়লার ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলির জন্য ২০২১–২০২৭–এর মধ্যে ৬,৫০০–৭,৫০০ কোটি মার্কিন ডলার জোগাড় করতে প্রয়াসী হয়েছে। গ্লোবাল নর্থ–এর অভিজ্ঞতা থেকে যদি একটিও শিক্ষা গ্রহণ করতে হয়, তা হল সম্পদের প্রয়োজন ব্যাপক। আনুমানিক হিসাব মতো গ্লোবাল সাউথ–এরও এরকমই অর্থের প্রয়োজন। দক্ষিণ আফ্রিকার জাস্ট এনার্জি ট্রানজিশন ট্রানজ্যাকশন আগামী দুই দশকের মধ্যে ১,১০০ কোটি মার্কিন ডলার তোলার লক্ষ্য স্থির করেছে। এই টাকা তোলা হবে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক ঋণ বা সহজ শর্তের ঋণ থেকে।

এই উদাহরণগুলো থেকে বোঝা যায় সরকারের প্রতি স্তরকে একটি ভূমিকা নিতে হবে, এবং অর্থের দ্বারা পুষ্ট সার্থক ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণ নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক থেকে জাতীয় হয়ে নীচের স্তরের স্থানীয় প্রশাসনকে এর সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। কিন্তু কোভিড–১৯–এর কারণে অনেক নিম্ন ও মধ্য–আয়ের দেশের আর্থিক ক্ষমতা নিঃশেষিত হয়েছে, এবং তার ফলে তাদের পক্ষে ন্যায়সঙ্গত হবে এমন সবুজ ও সুস্থিত অর্থনীতি তৈরি করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই প্রয়াসে অর্থসংগ্রহের একটা প্রধান উৎস বলে ধরা হয় কার্বন কর। কিন্তু এর সিংহভাগ বহন করতে হয় গরিব মানুষকে, যা তাঁদের পক্ষে বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। তার ফলে ন্যায়সঙ্গতির লক্ষ্যটিই আক্রান্ত হয়। তা ছাড়া ধনী দেশগুলো কার্বন করের থেকে পাওয়া টাকা নিম্ন আয়ের পরিবারগুলির মধ্যে পুনর্বণ্টনের ব্যবস্থা করে এর মধ্যে নিহিত রাজনীতি সহজ করে নিতে পারে, কারণ তাদের কাছে বিনিয়োগের অর্থসংস্থানের অন্য উপায়ও আছে। এর থেকে এই বিষয়টিই আরও স্পষ্ট হয় অন্যায্যতা গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মজ্জার মধ্যে ঢুকে আছে।

মোটের ওপর দাতা ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এখন পুনরুদ্ধারের কাজে উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলোকে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ২০২১ থেকে শুরু করে পরবর্তী পাঁচ বছরের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ দাতাদের জলবায়ু অর্থসংস্থানে বছরে ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতিকে ছাপিয়ে যাওয়া, এবং যাতে বড় মাপের বেসরকারি বিনিয়োগ আসতে পারে তার জন্য আন্তর্জাতিক সরকারি অর্থের সঙ্গে সক্ষমতা তৈরির উপযোগী পরিবেশের প্রশ্নটিকে সংযুক্ত করা। এসডিজি–সম্পর্কিত আর্থিক সমাধানসমূহের থেকে অর্থ পাওয়ার ব্যবস্থা অনেকটা বাড়াতে পারলে, যার মধ্যে থাকবে প্রকল্প উন্নয়নে অনুদান থেকে পরিকাঠামোর জন্য সহজ শর্তে ঋণ, তা হবে সক্ষম ও ন্যায়সঙ্গত পরিবেশবান্ধব বৃদ্ধির ক্ষেত্রে যুগান্তকারী অর্জন।

ধনী দেশগুলো কার্বন করের থেকে পাওয়া টাকা নিম্ন আয়ের পরিবারগুলির মধ্যে পুনর্বণ্টনের ব্যবস্থা করে এর মধ্যে নিহিত রাজনীতি সহজ করে নিতে পারেকারণ তাদের কাছে বিনিয়োগের অর্থসংস্থানের অন্য উপায়ও আছে।

আরও কার্যকর পর্যায়ে ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণের সহায়ক হিসেবে থাকবে নানা পর্যায়ে আরও নানা অংশীদার। এর মধ্যে নিম্নলিখিতদের থাকতে হবে:

• ক্ষতিগ্রস্ত কর্মী (‌প্রাতিষ্ঠানিক ও ‌অপ্রাতিষ্ঠানিক) ও জনগোষ্ঠীগুলির সামাজিক সুরক্ষার জন্য সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রের সহায়তা।

• জীবিকার সুযোগ তৈরির ক্ষেত্রে বৈচিত্র নিয়ে আসা।

• কর্মীদের দক্ষতা বাড়ানো ও আবার প্রশিক্ষণের জন্য বড় মাপের সহায়তার প্যাকেজ।

• একটি অঞ্চলের সুস্থিত উন্নয়নের জন্য স্থানীয় উন্নয়ন তহবিল। এর একটা উদাহরণ হল ভারতের ডিস্ট্রিক্ট মিনারেল ফাউন্ডেশন, যার কাজ হল খনি অঞ্চলে জীবিকার পথ তৈরি করা ও স্থানীয় কাজের ব্যবস্থা করা।

 এখনকার বিভিন্ন তহবিল থেকে টাকা পাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে, যার মধ্যে আছে দ্বিপাক্ষিক ও ত্রিপাক্ষিক সংগঠনের তহবিল, আর সেই সঙ্গে নিম্ন আয়ের দেশগুলো ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবিকার পথ করে দেওয়ার জন্য গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড–এর মতো বিশ্বজনীন তহবিল।

•জনকল্যাণের জন্য মূলধন, যার থেকে সৃজনশীল নীতি ও আর্থিক সমাধানের মাধ্যমে আরও সহায়তার পথ খুলে যায়।

সামনের পথ

কম–কার্বন অর্থনীতির পথে ন্যায়সঙ্গত উত্তরণ অবশ্যই একটা মূল্যবান লক্ষ্য। জলবায়ু রাজনীতি যে ভাবে এগোচ্ছে তা থেকে স্পষ্ট আমাদের কাজের ফলে যে সামাজিক বৈষম্য তৈরি হতে পারে তার ঠিকমতো সমাধান আমাদের করতেই হবে;‌ আর তা না–পারলে জলবায়ু সংক্রান্ত সব কাজকর্ম লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যে সব চরম ঘটনা ঘটছে তা অরক্ষিত মানুষকে আরও বিপদের মুখে ফেলছে। কাজেই বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীর পাশে না–দাঁড়িয়ে যদি আরও অন্যায্য একটি ব্যবস্থা তৈরি করা হয়, যেখানে শুধু মুষ্টিমেয়র লাভ হয়, তবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই জেতা যাবে না।

অনেক অংশীদারকে (‌মিত্র ও শত্রু সবাইকে)‌ একত্র হয়ে এমন জোট তৈরি করতে হবে যা বিশ্বজুড়ে সীমিত–কার্বনের লক্ষ্যে ন্যায়সঙ্গত অতিক্রমণের নীতিগুলোকে আরও সুসংহত করবে। এই লক্ষ্যে প্রথমে একটি গ্লোবাল জাস্ট ট্রানজিশন ফেসিলিটি খোলা যেতে পারে, যা প্রয়োজনীয় ক্ষমতা সৃষ্টির কাজ করবে, পরিবর্তন সংক্রান্ত সামগ্রিক ভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবে, আর গ্লোবাল সাউথের নেতৃত্ব থেকে আসা বৌদ্ধিক ক্ষমতার ব্যবহার করবে। তারপর যা করার প্রয়োজন তা হল বিভিন্ন দেশে ও ক্ষেত্রে বড় মাপের অর্থের সংস্থান ও পরিকল্পনা।

সীমিত–কার্বন পৃথিবী তবেই অর্থবহ হবে যদি নতুন ব্যবস্থা হয় ন্যায্য, সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিকৃত। এখনই সেই লক্ষ্যে কাজ শুরু করার সঠিক সময়।


[১] আইপিসিসি, ২০২১, ক্লাইমেট চেঞ্জ ২০২১: দ্য ফিজিকাল সায়েন্স বেসিস। এটি ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ–এর সিক্স্থ অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট–এর ওয়ার্কিং গ্রুপ ওয়ানের অবদান।
[২] আইফরেস্ট, জাস্ট ট্রানজিশন ইন ইন্ডিয়া: অ্যান এনকোয়্যারি ইনটু দ্য চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড অপরচুনিটিজ অফ আ পোস্ট–কোল ফিউচার, ২০২০

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.