২০২৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ইন্দোনেশিয়ার চূড়ান্ত নির্বাচনে নতুন প্রেসিডেন্ট জেনারেল প্রবোও সুবিয়ান্তো ক্ষমতায় এসেছেন, বর্তমানে যিনি দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি দুই প্রতিদ্বন্দ্বী থাকা সত্ত্বেও ৫০ শতাংশ ভোট পাওয়ার সীমানা অতিক্রম করে যথেষ্ট ভোটে জিতেছেন। দেশের নির্বাচন আপাতত সমাপ্ত হয়েছে। কারণ এখন কোনও রান অফ ইলেকশনের আর প্রয়োজন নেই। ইন্দোনেশিয়ায় যদি কেউ ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেতে ব্যর্থ হন, তা হলে শীর্ষ দুই প্রতিযোগীর মধ্যে এই ধরনের রান অফ ইলেকশন বাধ্যতামূলক।
ইন্দোনেশিয়ার নির্বাচনে প্রজন্মগত পরিবর্তনের বিষয়টির উৎকৃষ্টতম উদাহরণ হল, দুই মেয়াদের প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো আগের নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রবোও দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবেন। তাঁর সহপ্রার্থী ছিলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জোকোইয়ের ছেলে। রাজনৈতিক সাযুজ্যের এ হেন অনন্য সমন্বয় আশাতীত। নতুন প্রেসিডেন্ট কি ইন্দোনেশিয়া শাসনের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনবেন না কি জোকোইয়ের উত্তরাধিকারই শক্তিশালী বলে প্রমাণিত হবে, বিশেষ করে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে জোকোইয়ের ছেলে জিব্রান রাকাবুমিং রাকার উপস্থিতির মধ্য দিয়ে?
ইন্দোনেশিয়ার নির্বাচনে প্রজন্মগত পরিবর্তনের বিষয়টির উৎকৃষ্টতম উদাহরণ হল, দুই মেয়াদের প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো আগের নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রবোও দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবেন।
নিজের বংশ না হলেও, জোকোই স্পষ্টতই নিজের উত্তরাধিকার গড়ে তুলছেন। তাঁর ছেলে ২০২১ সালে পার্টাই ডেমোক্র্যাসি ইন্দোনেশিয়া পেরজুয়ানগান-এর (ইন্দোনেশিয়ান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অব স্ট্রাগল বা পিডিআইপি) প্রার্থী রূপে সোলোর মেয়র হিসাবে তাঁর জায়গায় ক্ষমতায় আসেন। প্রয়োজনীয় বয়সসীমার নীচে থাকা সত্ত্বেও তিনি এখন ভাইস-প্রেসিডেন্টের পদে বহাল হয়েছেন। তাঁর ভাই কায়েসাং পাঙ্গারেপ - জোকোইয়ের দুই ছেলের মধ্যে কনিষ্ঠতম – ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যুব ইন্দোনেশিয়ান সলিডারিটি পার্টির (পিএসআই) প্রধান হিসাবে মনোনীত হন। পার্লামেন্ট নির্বাচনের আগে এই বিষয়টিকে অনেকেই ভাল ভাবে নেননি। প্রেসিডেন্ট জোকোই নিজে ৬২ বছর বয়সি এবং সেই কারণেই তাঁর বহু বছরের রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে।
জোকোইকে সোলোর আপেক্ষিক আড়াল থেকে বের করে আনা হয়েছিল, যেখানে তিনি ২০১২ সালে একজন সফল ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এবং পরবর্তী কালে মেয়র পদে বহাল হন। সেই সময়ে মেগাবতী সুকর্ণপুত্রীর পিডিআইপি এবং জেনারেল প্রবোও সুবিয়ান্তোর গেরিন্দ্রা পার্টি ব্যবস্থা চালিয়ে যাওয়ার জন্য জোট করেন। ২০০৯ সালে এই দুই দলের জোট ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কাছে নির্বাচনে পরাজিত হয়। এর ফলস্বরূপ, জোকোইকে জাকার্তার নতুন গভর্নর হিসেবে নিযুক্ত করা হয়, যেখানে গেরিন্দ্রা একটি দূরবর্তী দ্বীপ থেকে আহককে ডেপুটি গভর্নর হিসেবে নিয়ে আসে। এর দু’বছর পর ২০১৪ সালে যখন জোকোই পিডিআইপি-র পক্ষে প্রেসিডেন্ট পদে জয়লাভ করেন, তখন আহক গভর্নর হন।
পিডিআইপি বিশ্বাস করে যে, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দলটি এখনও মেগাবতী সুকর্ণপুত্রীর মাতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থার অধীনে রয়েছে এবং তিনি সব সিদ্ধান্ত নেন। এই দলটি সম্ভবত সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে জোকোইকে বাদ দিয়ে এবং তাঁকে শুধুমাত্র একজন দলীয় সদস্য হিসাবে বিবেচনা করার মূল্যায়নে ভুল করেছে। সম্ভবত, এই অনুমানটি ২০১২ সালে সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছিল, যখন জোকোই গভর্নর হিসাবে নির্বাচিত হন বা এমনকি ২০১৪ সালে যখন তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনীত হন। ১০ বছর পরেও জোকোইয়ের ব্যক্তিত্ব ও বুদ্ধিমত্তা একই রকম রয়েছে, যা পিডিআইপি নিজের কাজে ব্যবহার করতে পারত। তাঁর পক্ষে ৮০ শতাংশ মানুষের ব্যাপক সমর্থন ছিল। এর পরিবর্তে, পিডিআইপি জোকোইকে পাশ কাটিয়ে সেন্ট্রাল জাভার গভর্নর গঞ্জার প্রনোভোকে প্রার্থী হিসাবে নিয়ে আসে। কিন্তু জোকোইর এতে মত ছিল না। জোকোই মেগাবতীর তুলনায় – যিনি অতীতে করা কোনও প্রতিশ্রুতিই রাখেননি - প্রবোওর সঙ্গে উন্নত বোঝাপড়া করেছিলেন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি নিরপেক্ষতা বজায় রেখেছিলেন। তাঁর সমন্বয়কারী মন্ত্রী ও ঘনিষ্ঠ সহযোগী জেনারেল লুহুত পাঞ্জাইতান এ কথা বলতে দ্বিধা করেননি যে, জোকোই নিরপেক্ষ থাকলেও সম্ভবত প্রবোও-এরই জোকোইয়ের উত্তরাধিকার বজায় রাখার সম্ভাবনা ছিল সবচেয়ে বেশি।
প্রচারে স্পষ্টতই জোকোই প্রবোওকে সমর্থন করেছিলেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি নিরপেক্ষতা বজায় রেখেছিলেন। তাঁর সমন্বয়কারী মন্ত্রী ও ঘনিষ্ঠ সহযোগী জেনারেল লুহুত পাঞ্জাইতান এ কথা বলতে দ্বিধা করেননি যে, জোকোই নিরপেক্ষ থাকলেও সম্ভবত প্রবোও-এরই জোকোইয়ের উত্তরাধিকার বজায় রাখার সম্ভাবনা ছিল সবচেয়ে বেশি। এ ভাবে জোকোই-মেগাবতী দ্বন্দ্ব সেই দোলাচলে থাকা ভোটারকে বিভক্ত করেছে, যাঁরা এত দিন পিডিআইপি-কে সমর্থন করেছিল। তরুণদের মধ্যে এক প্রজন্ম দল ছেড়ে চলে গিয়েছে এবং প্রবোওর বর্ষীয়ান স্নেহময় অভিভাবকসম ভাবমূর্তির প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে। তাঁর সুদৃঢ় সোশ্যাল মিডিয়া কার্যকলাপ অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার রাজনীতিতে অন্যান্য ফাটলও রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী মুসলিম দলগুলির প্রভাব কমে গিয়েছে। নাহাদুতুল উলামা (৯৫ মিলিয়ন সদস্য) এবং মুহাম্মদিয়া (৫০ মিলিয়ন সদস্য) প্রায়শই পর্দার আড়ালে থেকে এক জোটে কাজ করার চেষ্টা করেছিল। তবে তাদের সমর্থন এবং নেতৃত্ব বিভক্ত থেকেছে।
তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে জোকোই নাহাদুতুল উলামার (এনইউ) নেতা মারুফ আমিনকে নিজের সহ-সভাপতি হিসেবে নিয়োগ করলেও তাঁকে প্রকাশ্যে খুব কমই দেখা যায় বা তাঁর বক্তব্য শোনা যায়। এনইউ-র বেশ কয়েকজন নেতা আক্ষরিক অর্থেই প্রভুপন্থী। নবীন প্রজন্মের কেউ কেউ প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ও জাকার্তার গভর্নর অ্যানিস বাসওয়েদানকে সমর্থন করেন। ২০১৯ সালে মুহাম্মদিয়া এবং এনইউ-এর বাইরের উগ্রপন্থী মুসলিমরা এক পর্যায় পর্যন্ত প্রবোওকে সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু এ বার তাঁরা অ্যানিসকে সমর্থন করছেন। অবশ্য পরবর্তী পর্যায়ে এই সমর্থনেও বিভাজন লক্ষ করা যায় এবং অনেকেই সে সময়ে আবার প্রবোওকে সমর্থন করতে শুরু করেন। ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে বড় ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান অ্যানিসের সহপ্রার্থী প্রবোও হওয়া সত্ত্বেও এমনটা ঘটেছে। ন্যাশনাল অ্যাওকেনিং পার্টির (পিকেবি) নেতা মুহাইমিন ইস্কান্দারের ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে বড় ইসলামি সংগঠন এনইউ-এর সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে। এই সম্পর্ক অ্যানিসকে সাহায্য করেছে এবং ২৫ শতাংশ ভোট পেয়ে তিনি দ্বিতীয় স্থানে জায়গা করে নিয়েছেন, যেখানে প্রবোও প্রায় ৫৮ শতাংশ এবং গঞ্জার ২০ শতাংশের কম ভোট পেয়েছিলেন।
এ ভাবে পিডিআইপি সমর্থনের ভিত্তি ব্যবহার করে, ঐতিহ্যবাহী মুসলিম প্রাতিষ্ঠানিক সমর্থন পেয়ে এবং উগ্র মুসলিমদের বিভাজনের কারণে প্রবোও নিজের জন্য একটি বৃহত্তর নির্বাচনী পরিসর তৈরি করতে সক্ষম হন। এতে পিডিআইপি এবং নিয়মিত মুসলিম সমর্থকদের মধ্যে থেকে জোকোই সমর্থনও প্রকাশ্যে এসেছে। জোকোই-এর দীপ্তি এবং জনপ্রিয়তার সাহায্যে প্রবোও অন্য প্রার্থীদের তুলনায় ব্যাপক ভোটে এগিয়ে থাকতে সমর্থ হয়েছেন।
২০১৯ সালে মুহাম্মদিয়া এবং এনইউ-এর বাইরের উগ্রপন্থী মুসলিমরা এক পর্যায় পর্যন্ত প্রবোওকে সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু এ বার তাঁরা অ্যানিসকে সমর্থন করছেন। অবশ্য পরবর্তী পর্যায়েও এই সমর্থনেও বিভাজন লক্ষ করা যায় এবং অনেকেই সে সময়ে আবার প্রবোওকে সমর্থন করতে শুরু করেন।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে পুরনো যোগসূত্রের অভিযোগে প্রবোওকে আক্রমণ করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে সেগুলির মোকাবিলা করেন। ইন্দোনেশিয়ার ২০৪ মিলিয়ন ভোটারের মধ্যে ৫২ শতাংশই ৪০ বছরের কমবয়সি। এই অভিযোগের ব্যাপকতা বোঝার বয়স তাঁদের হয়নি। এই যুব সমর্থন প্রবোও-এর বিজয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।
তা হলে এটি কি সুকর্ণ রাজবংশের অবসানের ইঙ্গিত দেয়? ইন্দোনেশিয়ার প্রতিষ্ঠাতা সুকর্ণর কন্যা মেগাবতী কিছুটা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। তিনি ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ২০০১ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট থাকলেও পূর্ণ মেয়াদ পাননি। প্রবোওর সঙ্গে জোট বাঁধার জন্য তাঁর অব্যবহিত প্রচেষ্টা সফল হয়নি। তিনি একজন পলিটিক্যাল গডমাদার বা রাজনৈতিক ক্ষমতাময়ীর ভূমিকা পালন করতে শুরু করেন, প্রেসিডেন্ট পদের জন্য জোকোইকে তালিকাভুক্ত করেন এবং স্থানীয় গভর্নর ও অন্যান্য পদের জন্য আরও অনেককে তালিকাভুক্ত করেন। এটি পার্টির শক্ত ঘাঁটির কারণে হয়েছে, যা প্রায় ২০ শতাংশের বেশি ভোট আনতে পারে এবং এর ফলস্বরূপ পার্লামেন্টে বেশি আসন জিততে পারে।
তবে তাঁর নিজের সন্তানদের আদৌ কোনও দীপ্তি আছে বলে মনে হয় না। তাঁর মেয়ে পুয়ান মহারানিকে জোকোই প্রথম মেয়াদে সমন্বয়কারী মন্ত্রী হিসেবে স্থান দিয়েছিলেন, যে পদটি একজন মন্ত্রীর চেয়ে এক ধাপ উঁচু। দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি স্পিকার ছিলেন। একজন বন্ধুত্বপূর্ণ মানুষ হওয়া সত্ত্বেও তিনি মেগাবতীর মতো রাজনৈতিক অগ্রগতি দর্শাতে পারেননি। তাঁর ছেলে পার্লামেন্টে থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক পরিসর তৈরি করতে পারেননি।
তা হলে সুকর্ণ উত্তরাধিকারের এখন কী হবে? মেগাবতীর দল অত্যন্ত খারাপ ভাবে রাষ্ট্রপতিত্বের ক্ষমতা হারালেও পার্লামেন্টে ও প্রদেশগুলিতে পিডিআইপি-ই এখনও প্রধান দল। মেগাবতী জোকোইকে তাঁর সম্ভাব্য উত্তরাধিকারী হিসাবে রয়ে যাওয়ার বিষয় থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। জোকোই এখন দুই তরুণ ছেলেকে নিয়ে রাজনীতিতে নিজের উত্তরাধিকার গড়ে তুলছেন।
ফলে আমরা এখন যে পরিস্থিতির সম্মুখীন হব তা হল, মেগাবতীর ছায়া থেকে বেরিয়ে আসা একটি নতুন অভিজাতদলের উত্থান। এই নতুন অভিজাতরা জোকোইয়ের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করবেন। প্রবোও তাঁর অনুগত অভিজাতদের জোকোইয়ের অনুগত করে তুলবেন, যা বেশ কিছু সময় যাবৎ ঘটেনি। আগের মেয়াদে নির্বাচনে হেরে গেলেও প্রবোওকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে জোকোই-ই নিযুক্ত করেছিলেন। তিনি তাঁর গেরিন্দ্র দলকে সরকারে নিয়ে আসেন। এই ভূমিকা এখন আরও প্রসারিত হবে।
একজন বন্ধুত্বপূর্ণ মানুষ হওয়া সত্ত্বেও তিনি মেগাবতীর মতো রাজনৈতিক অগ্রগতি দর্শাতে পারেননি। তাঁর ছেলে পার্লামেন্টে থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক পরিসর তৈরি করতে পারেননি।
জোকোই চাইবেন যে, তাঁর উত্তরাধিকার বজায় থাকুক। এর মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার অবকাঠামো নির্মাণ অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যার জন্য চিন থেকে একাধিক সহায়তা পাওয়া যাবে। প্রবোও সম্ভবত এটি বজায় রাখার চেষ্টা করবেন। তবে অন্যান্য অংশীদারকেও এ বিষয়ে যোগ দিতে হবে, যাতে ইন্দোনেশিয়ার উপর চিনের প্রভাব ব্যাপক না হয়ে ওঠে। জোকোই নিকেল ও অন্যান্য খনিজ প্রক্রিয়াকরণ শুরু করার জন্য একটি বৃহত্তর জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিভঙ্গির পক্ষে ছিলেন। বৈদ্যুতিক গতিশীলতা খাতের বৃদ্ধির কারণে এই খনিজগুলির বৃহত্তর গুরুত্ব রয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার নিকেল খনিতে চিন ব্যাপক হারে বিনিয়োগ করেছে। জোকোই চেয়েছিলেন যে, ইন্দোনেশিয়ায় আরও প্রক্রিয়াকরণ করা হোক যাতে মূল্য সংযোজনও ঘটে। তা হলে তা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলিতে বিনিয়োগ আনতে পারত, যা নিকেল প্রক্রিয়াকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। জোকোই চান যে, ইন্দোনেশিয়া ইলেকট্রিক ভেহিকেল সাপ্লাই চেনের এক বিশেষ অংশ হয়ে উঠুক। প্রবোও-এরও এই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জোকোই-র নিজস্ব প্রকল্প হল কালিমান্তানে নতুন রাজধানী নির্মাণ, যার নাম নুসান্তরা। এটি জাকার্তায় নির্ধারিত হিসাবে যানজট কমাতে না পারলেও সরকারি অফিসগুলিকে দূরবর্তী স্থানে নিয়ে যেতে সক্ষম করবে। তবে তার চেয়েও বেশি করে বললে এটি একটি নতুন শহর তৈরি করবে, যা আরও সমসাময়িক এবং স্থিতিশীল হতে পারে। এমনকি নুসান্তরা সম্পর্কে প্রবোওর একই দৃঢ় মতামত না থাকলেও তিনি এই প্রেসিডেন্ট বিতর্কে মোটেও অস্বীকার করেননি যে, তিনি নুসান্তরার কাছে সুবিশাল জমির মালিক ছিলেন, যা নগরায়ণের বৃদ্ধির ফলে উপকৃত হবে।
এবং অবশেষে জোকোই চাইবেন যে, তাঁর নাম ও উত্তরাধিকার সুকর্ণ-মেগাবতী উত্তরাধিকারের ঊর্ধ্বে উঠে পরিচিত হোক। প্রবোও এটি অনুসরণ করতে বিশেষ ভাবে সাহায্য করবেন। কারণ জোকোইয়ের ছেলে তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং সম্ভবত ভবিষ্যতের প্রেসিডেন্টও হতে পারেন।
এই কারণে তাঁদের ক্ষমতাসীন অনওয়ার্ড ইন্দোনেশিয়া কোয়ালিশন সমর্থন পাবে। ইতিমধ্যেই গোলকার ও গেরিন্দ্র দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহত্তম দল নতুন পার্লামেন্টে রয়েছে। ডেমোক্র্যাটিক পার্টি, ন্যাশনাল ম্যান্ডেট পার্টি (পিএএন) এবং অন্য ছোট দলগুলিও একজোট হবে। পিডিআইপি এবং অ্যানিসকে সমর্থনকারী দলগুলির কী হবে, তা দেখার বিষয়। জোকোইয়ের কাছে বড় জোট গঠনের ক্ষমতা রয়েছে। ৪৭১ জন পার্লামেন্ট সদস্য অথবা বা ৫৭৫ জন আইনপ্রণেতার ৮২ শতাংশ জোকোইয়ের সমর্থনে ছিলেন। তবে আপাতত প্রবোও প্রেসিডেন্ট হিসাবে তাঁর প্রাথমিক মেয়াদে জোকোইয়ের দক্ষতার উপরেই নির্ভর করবেন।
গুরজিৎ সিং জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, ইথিওপিয়া, আসিয়ান এবং আফ্রিকান ইউনিয়নে ভারতের রাষ্ট্রদূত। তিনি এশিয়া আফ্রিকা গ্রোথ করিডোরের (এএজিসি) সিআইআই টাস্ক ফোর্সের সভাপতি।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.