Author : Kabir Taneja

Published on Mar 02, 2024 Updated 0 Hours ago

বিদ্যমান রায়েল-প্যালেস্তাইন সঙ্কট তেহরানের প্রতিরোধের অক্ষ’-এর জন্য জোরালো প্রচার চালানোর মাধ্যমে বৃহত্তর ইরায়েল-ইরান দ্বন্দ্বকে সংযুক্ত করেছে। এই অক্ষ আফগানিস্তান এবং পাকিস্তান থেকে সেনা নিয়োগ করে চলেছে।

ইরানের ‘প্রতিরোধবাহিনী’ এবং দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে তার সেতুবন্ধন

রায়েল এবং হামাসের মধ্যে গাজায় যুদ্ধ এত দিন গড়ানোর পরেও এবং বেশ কিছু সংখ্যক আটকদের বিনিময় সংক্রান্ত প্রয়াস সফল হলেও শত্রুতার অবসান ঘটানোর মতো কোনও অগ্রগতিই সাধিত হয়নি। গাজার প্যালেস্তাইনিরা ৭ অক্টোবর হামাস দ্বারা সংগঠিত সন্ত্রাসবাদী হামলার কারণে রায়েলি সামরিক প্রতিক্রিয়ার শিকার হচ্ছেন। সেই সঙ্কটের উপর উত্তেজনার পারদ ক্রমঅন্যান্য মঞ্চেও বিস্তৃত হচ্ছে, বিশেষ করে যেখানে ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়া বা সেনাবাহিনী একটি ‘প্রতিরোধ’ আখ্যানের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহ প্রদর্শন করেছে।

লোহিত সাগর আক্ষরিক অর্থেই বিশ্ব বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধমনী, যা সুয়েজ খালের মাধ্যমে ইউরোপকে এশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করে। সেই লোহিত সাগরের উপর দিয়ে যাতায়াতকারী বাণিজ্যিক জাহাজের উপর সাম্প্রতিক হামলা আসলে ইরান সমর্থিত হুতি জঙ্গিদের দ্বারা এবং ইয়েমেন থেকে পরিচালিত বিদ্যমান সঙ্কটের পরিসর সম্পর্কে একটি ধারণা প্রদান করে। এটি কেবল ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন ফল্ট লাইন বা চ্যুতিরেখাতেই থেমে থাকেনি। বরং তার ঊর্ধ্বে উঠে তেহরানের প্রতিরোধ অক্ষ’-এর প্রচারের সুরে সুর মিলিয়ে বৃহত্তর ইরায়েল-ইরান প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেও বিস্তৃত হয়েছে। ইরানের কুদস ফোর্সের কম্যান্ডার ইসমায়েল কানি নভেম্বর মাসে হামাসের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করার সময় বলেছিলেন, ‘প্রতিরোধের অক্ষে আপনার ভাইয়েরা আপনার সঙ্গেই ঐক্যবদ্ধ... কোনও প্রতিরোধগাজা এবং প্যালেস্তাইনে শত্রুকে তার লক্ষ্য অর্জন করতে দেবে না।’ ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় কুদসের প্রধান হিসেবে নিহত ইরানি কম্যান্ডার কাসেম সোলেমানিকে কানি প্রতিস্থাপন করেন। ইরান সমর্থিত ইরাক, সিরিয়া ইয়েমেন জুড়ে মিলিশিয়াদের এই আন্তর্জালসম বিন্যাসকে এখন প্রতিরোধ নামক একটি সমসত্ত্ব ধারণার অন্তর্গত বলেই মনে করা হচ্ছে। গত এক দশক যাবৎ এই অঞ্চলে সোলেমানির সাফল্যের আখ্যান এইপ্রতিরোধ’-এর ধারণাটিকে দর্শায়

 

লোহিত সাগর আক্ষরিক অর্থেই বিশ্ব বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধমনী, যা সুয়েজ খালের মাধ্যমে ইউরোপকে এশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করে। সেই লোহিত সাগরের উপর দিয়ে যাতায়াতকারী বাণিজ্যিক জাহাজের উপর সাম্প্রতিক হামলা আসলে ইরান সমর্থিত হুতি জঙ্গিদের দ্বারা এবং ইয়েমেন থেকে পরিচালিত বিদ্যমান সঙ্কটের পরিসর সম্পর্কে একটি ধারণা প্রদান করে।

 

মনে করা হয়, ইয়েমেনের হুতি, লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইরাকের কাতাইব হিজবুল্লাহ এবং গাজার হামাসের মতো গোষ্ঠীগুলি ইরান-সমর্থিত প্রতিরোধের অংশ হলেও কিছু এমন ছোট ও স্বল্প পরিচিত প্রভাবক্ষেত্রও বিদ্যমান, যেগুলিকে সঙ্কট প্রসারিত হলে তেহরান নিজের মতো করে কাজে লাগাতে পারে। আফগানিস্তানে ফাতেমিয়ুন ব্রিগেড এবং পাকিস্তানে জয়নাবিয়ুন ব্রিগেড হল সেই শিয়া মিলিশিয়া, যাদের সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় সেই যুদ্ধকে কেন্দ্র করে গঠন করা হয় এবং যার মধ্যে ইসলামিক স্টেটের (আইএসআইএস বা আরবি ভাষায় দায়েশ) বিরুদ্ধে লড়াই অন্তর্ভুক্ত ছিল। জয়নাবিয়ুনের ভিত্তির নেপথ্যে রয়েছে ২০১৫ সালে দামেস্কের সাইয়িদাহ জয়নাব মসজিদে হামলা, যা সুন্নি জঙ্গিদের দ্বারা লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল এবং যার জন্য ইরান যুদ্ধের উদ্দেশ্যে প্রথমে কিছু পাকিস্তানি শিয়াদের নিয়োগ করেছিল। শিয়ারা পাকিস্তানের জনসংখ্যার মাত্র ১০-১৫ শতাংশ। ২০১৮ সালে প্রায় ১৬০০ যোদ্ধাসংখ্যাবিশিষ্ট হওয়ার পর থেকে আর তেমন সক্রিয় না থাকা জয়নাবিয়ুন দলটির হিজবুল্লা-র মতো কোনও বিশেষ প্রতীক ছিল না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৯ সালে জয়নাবিয়ুনকে তার অর্থনৈতিক কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। জয়নাবিয়ুনকে ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যে মৌলিক পার্থক্যের দৃষ্টিকোণ থেকেও বিচার করা যেতে পারে, বিশেষ করে বেলুচিস্তানের মতো বিষয়গুলিতে। বেলুচিস্তান এমন একটি বিদ্রোহ-প্রবণ প্রদেশ, যেখানে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদকে উস্কানি দেওয়ার জন্য ইসলামাবাদ তেহরান উভয়েই প্রায়শই একে অপরকে অভিযুক্ত করে থাকে

আফগানিস্তান আবার আর এক দেশ, যেখানে ইরান শিয়া জনসংখ্যাকে তার ফাইটিং ক্যাডার বা যুদ্ধরত সেনার শক্তকরণের জন্য ব্যবহার করেছে। ২০১৪ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের যুদ্ধশক্তিকে শক্ত করতে সাহায্য করার জন্য ফাতেমিয়ুন ব্রিগেড গঠন করা হয়েছিল। পাকিস্তানের যুদ্ধরত গোষ্ঠীর অনুরূপ এই ব্রিগেড আবার আফগান শিয়া শরণার্থীদের নিয়ে গঠিত, যাঁরা বছরের পর বছর ধরে নিরাপত্তার জন্য ইরানে পাড়ি দিয়েছেন। ব্রিগেড আফগান শিয়া হাজারা সম্প্রদায় থেকেও নিয়োগ করে। হাজারারা আবার একটি এমন সংখ্যালঘু গোষ্ঠী, যাঁরা আফগানিস্তানের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশেরও কম এবং তালিবান আবার ক্ষমতায় আসার দরুন এই হাজারা্রা তালিবানের রোষের মুখে পড়েছে্ন। ২০১৮ সাল পর্যন্ত ২০০০ জনেরও বেশি আফগান শিয়া সিরিয়ায় যুদ্ধ করতে গিয়ে মারা গিয়েছে এবং সেখানে ২০০০০-এরও বেশি যোদ্ধা এক পর্যায়ে সক্রিয় রয়েছে বলে খবর যাই হোক, আফগান শিয়ারা প্রায়শই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা সত্ত্বেও ইরানের বিশিষ্ট ইসলামি রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পোরালস (আইআরজিসি) দ্বারা যথেষ্ট অর্থ পায়নি বলে অভিযোগ করেছে। কেউ কেউ সুন্নিবাদ সালাফিবাদের বিরুদ্ধে শিয়াদের রক্ষার আদর্শের উপর ভিত্তি করে ইরানের বিন্যাসে যোগ দিলেও অন্য অনেকে, বিশেষ করে আফগানিস্তান থেকে এই বিন্যাসে যোগদান করেছিল মূলত বেতন পাবে বলে। মতাদর্শ দারিদ্র্য আফগানিস্তানকে বিদেশি যোদ্ধা নিয়োগের জন্য একটি উর্বর ভূমিতে পরিণত করেছে। সোলেমানি এর আগে সিরিয়ায় আফগান শিয়াদের কবরও পরিদর্শন করেছেন, যাঁরা লড়াইয়ে নিহত হয়েছিলেন। এই পরিদর্শনের নেপথ্যে সেই যোদ্ধাদের জন্য স্বীকৃতি ছাড়াও সোলেমানি অবশ্য এই বার্তাই দিতে চেয়েছিলেন যে, যোদ্ধারা কেবল কামানের খোরাক নয়, বরং শিয়া উদ্দেশ্যের হিদ।

 

হাজারারা আবার একটি এমন সংখ্যালঘু গোষ্ঠী, যাঁরা আফগানিস্তানের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশেরও কম এবং তালিবান আবার ক্ষমতায় আসার দরুন এই হাজারারা তালিবানের রোষের মুখে পড়েছেন।

 

২০২১ সালে তালিবান যখন আফগানিস্তানে ক্ষমতায় ফিরে আসে, তখন অনেকেই ফাতেমিয়ুনকে একটি ইতিমধ্যে প্রশিক্ষিত গোষ্ঠী হিসাবে মনে করেছিল, যেটি তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে, প্রয়োজনে দেশটিতে রানের স্বার্থকে সুরক্ষিত করতে পারে এবং আদতে তারা  এমন একটি ভাণ্ডার, যাদের অর্থের বিনিময়ে প্রলোভন দেখানো যেতে পারে। সম্প্রসারিত মধ্যপ্রাচ্যে লড়াইয়ের জন্য আরও বেশি সংখ্যক যোদ্ধার প্রয়োজন। কাবুলের পতনের আগে ফাতেমিয়ুনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের জন্য একটি কৌশলগত সম্পৃক্ততা’ বলে মনে করেছিল এবং পরবর্তী সময়ে এই আশঙ্কাও কাজ করেছিল যে, তেহরান মার্কিন সৈন্য এবং আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে স্বার্থের উপর আক্রমণ চালানোর কাজে এই অভিজ্ঞ যোদ্ধাদের ব্যবহার করতে পারে। কয়েক মাস পরে, রাষ্ট্রের পাশাপাশি এই নিরাপত্তা উদ্বেগগুলিও তালিবানরা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছিল। ফাতেমিয়ুন নিজেকে আফগানিস্তানে একটি শক্তিশালী সমজাতীয় গোষ্ঠী হিসাবে প্রদর্শন না করলেও প্রধানত এমন দুঁদে যোদ্ধাগোষ্ঠী হিসেবে তুলে ধরেছে, যারা শুধু মাত্র যুদ্ধের বিনিময়ে বেতন পাওয়ার প্রত্যাশী।

আফগানিস্তান পাকিস্তানে জয়নাবিয়ুন এবং ফাতেমিয়ুন উভয়েরই কর্মসংস্থান সীমিত থাকা সত্ত্বেও, এটি শুধুমাত্র মধ্যপ্রাচ্যেই নয় বরং তার অন্যান্যসীমান্তেও শিয়া বাস্তুতন্ত্রকে একত্র করতে ইরানের সক্ষমতা সফল ভাবে প্রদর্শন করেছে। ভারতে এই ধরনের কোন সংহতি না ঘটলেও শিয়ারা ভারতের মুসলিম জনসংখ্যার প্রায় ১৩-১৫ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে এবং এটি বর্তমানে ইরানের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিয়া জনসংখ্যা হয়ে উঠেছে। এদের মধ্যে একটি বিশেষ অংশ কাশ্মীরে সঙ্ঘবদ্ধ রয়েছে, যেখানে শিয়া সংগঠনগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে সোলেমানিকে হত্যার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করেছিল। এবং সম্ভবত আরও আশ্চর্যের বিষয় হল এই যে, ভারতে শিয়ারা সালাফিবাদের (যা সুন্নি ইসলামের মধ্যে থাকে) বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করার কারণে ভারতে ক্ষমতায় থাকা দক্ষিণপন্থী ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নির্বাচনী পক্ষ বলে পরিচিত।

রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে হামাসের একটি বড় সাফল্য হল, এটি সন্ত্রাসএবং প্রতিরোধ’-এর মধ্যকার আখ্যানটিকে একেবারে অস্পষ্ট করে দিয়েছে। ইরানের নেতৃত্ব সেই হিজবুল্লা, হামাস এবং এমনকি ফাতাহ-এর প্রধানদের সঙ্গে দেখা করেন, যারা বর্তমান প্যালেস্তাইনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের বিরোধিতা করছে। এবং এই ঘটনা স্পষ্টতই দর্শায় যে, নানাবিধ আন্তর্জাতিক আখ্যান থাকা সত্ত্বেও তেহরান প্রকাশ্যে এবং স্পষ্ট ভাবে তার ইরায়েল-বিরোধী মার্কিন-বিরোধী শক্তিদের একত্র করতে প্যালেস্তাইনি উদ্দেশ্যকে কাজে লাগাচ্ছে। আঞ্চলিকের চেয়ে বেশি ও আদর্শগত ভাবে আন্তর্জাতিক হয়ে ওঠার লক্ষ্যে ইরান গাজা যুদ্ধকেও ব্যবহার করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলেজের ছাত্রাবাস থেকে শুরু করে ইউরোপের সংসদীয় বিতর্কে তাদের নিয়ে আলোচনা থেকেই ইরানের আন্তর্জাতিক হয়ে ওঠার বিষয়টি স্পষ্ট।

 

ইরানের নেতৃত্ব সেই হিজবুল্লা, হামাস এবং এমনকি ফাতাহ-এর প্রধানদের সঙ্গে দেখা করেন, যারা বর্তমান প্যালেস্তাইনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের বিরোধিতা করছে। এবং এই ঘটনা স্পষ্টতই দর্শায় যে, নানাবিধ আন্তর্জাতিক আখ্যান থাকা সত্ত্বেও তেহরান প্রকাশ্যে এবং স্পষ্ট ভাবে তার ইরায়েল-বিরোধী মার্কিন-বিরোধী শক্তিদের একত্র করতে প্যালেস্তাইনি উদ্দেশ্যকে কাজে লাগাচ্ছে।

 

যাই হোক, ‘প্রতিরোধী’ গোষ্ঠীটিও বেশ বৈচিত্র্যময়। যেখানে ইরান-সমর্থিত শক্তিগুলি একই পতাকাধারী হয়ে উঠতে চাইছে, সেখানে আবার আল-কায়েদা ইসলামিক স্টেটের সহযোগী-সহ অন্যরাও এই মুহূর্তটিকে নিজেদের আখ্যান প্রচার করা এবং তাদের নিজস্ব স্বার্থ অবস্থানকে শক্ত করে তোলার এক অনন্য সুযোগ বলে মনে করে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, পাকিস্তানে জামায়াত-ই-ইসলামির আমির সিরাজুল হক সম্প্রতি প্যালেস্তাইনের সঙ্গে কাশ্মীর প্রসঙ্গকে একই পঙ্‌ক্তিতে বসিয়েছেন এবং কোনও নেতা বা রাষ্ট্র নয়, বরং সকল মুসলমানকে একত্র হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের এক জমায়েতে সিরাজুল হক বলেন, উম্মাহ তার মেরুদণ্ডহীন শাসকদের কারণে এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে। মুজাফফরাবাদের মাটি থেকে আমি পাকিস্তানের শাসকদের পাশাপাশি অন্য স মুসলিম রাষ্ট্রকেও (কাশ্মীর ও প্যালেস্তাইনের স্বাধীনতার জন্য) অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কোঅপারেশনের (ওআইসি) আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত ও কর্মসূচির উপর নির্ভর না করে বাস্তব পদক্ষেপ করার আহ্বান জানাই।’ ইরানের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম রাইসি তাঁর আরব প্রতিপক্ষদের সঙ্গে গাজায় ওআইসি বৈঠকে যোগ দিতে এক দশক পর নভেম্বর মাসে সৌদি আরব ভ্রমণ করার দরুন এই সংহতির মধ্যে এমন অনেক গোষ্ঠীরয়েছে, যারা আসলে ইরানের স্বার্থ অনুযায়ী কাজ করে না

পরিশেষে, বর্তমান সঙ্কটকে ভূ-রাজনৈতিক ভূ-কৌশলগত হিসেব-নিকেশের নিরিখে যতটা কাঁচা বলে মনে হয়, মতাদর্শের নিরিখে অবস্থা ততটাও নয়। ইরানের দিক থেকে দেখলে বর্তমান প্রশাসন ব্যবস্থার সুরক্ষা সংরক্ষণ তার কৌশলগত লক্ষ্যগুলির শীর্ষে রয়েছে, যেমনটা তার আঞ্চলিক আরব প্রতিবেশী দেশ এবং তাদের নিজস্ব রাজতান্ত্রিক ধর্মতান্ত্রিক রাজনৈতিক বাস্তুতন্ত্রতেও পরিলক্ষিত হয়। পাকিস্তান আফগানিস্তানের মতো দেশগুলি এ হেন যোদ্ধা নির্মাণের উর্বর স্থল বলা চলে, যারা ব্যর্থ বা প্রায় ব্যর্থ রাষ্ট্রগুলির বাস্তবতাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠছে এবং অন্য দেশগুলি নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য সেই সব যোদ্ধাকে কাজে লাগাচ্ছে, যেমনটা জয়নাবিয়ুন এবং ফাতেমিয়ুন ব্রিগেডের ভিত্তি দ্বারা প্রদর্শিত হয়েছে। এই অ-রাষ্ট্রীয় বিকৃতি এককালীন বা একপাক্ষিক নয়। একটি ক্রমবর্ধমান বিশৃঙ্খল বিশ্বব্যবস্থায় কৌশলগত কার্যকলাপের হেন অপ্রচলিত পদ্ধতি সকলের জন্য বিপজ্জনক ও ধ্বংসাত্মক হলেও শুধু মাত্র নিজেদের স্বার্থ শক্তি অর্জন করার চক্রকেই অব্যাহত রাখবে।

 


কবির তানেজা অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের ফেলো।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Author

Kabir Taneja

Kabir Taneja

Kabir Taneja is a Fellow with Strategic Studies programme. His research focuses on Indias relations with West Asia specifically looking at the domestic political dynamics ...

Read More +