Author : Sushant Sareen

Published on Feb 13, 2024 Updated 0 Hours ago

ইটের বদলে পাটকেল ছোড়ার মনোভাব বজায় থাকলেও ইরান বা পাকিস্তান কেউই এই সঙ্কটকে গুরুতর করে তুলতে চায় না। কোনও পক্ষই প্রকাশ্য সংঘাত চায় না বা তা চালিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থায় নেই।

ইরান ও পাকিস্তান সংঘর্ষ: ইতিমধ্যেই বিপর্যস্ত ইসলামাবাদের জন্য আর এক সঙ্কট

ইরান-পাকিস্তান সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলি বছরের পর বছর ধরে চোরাচালান, মানব পাচার, মাদক ব্যবসা এবং অবশ্যই বিদ্রোহী ও সন্ত্রাসবাদীদের চলাচলের জন্য কুখ্যাত। এই সীমান্ত অঞ্চলে কখনওই স্থিতাবস্থা থাকে না। কারণ সংঘর্ষ, বড় মাপের অনুপ্রবেশ, অভিযান এবং এমনকি মাঝে মাঝে গোলাগুলি চালনা এই অঞ্চলের নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। কিন্তু উভয় দেশই যেনতেনপ্রকারেণ এই বারের মতো পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেরিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পেরেছে। দুই দেশই সকল স্তরে একে অপরের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকেছে এবং এমনকি সীমান্তে নিয়মিত ভাবে সংঘটিত সঙ্কটগুলিকে শুধু মাত্র নিষ্পত্তি করার জন্যই নয়, সন্ত্রাসবাদের সমস্যাকেও মোকাবিলা করার জন্য পদক্ষেপ করেছে। এখন পর্যন্ত এটুকুই বলা সম্ভব।

 

ইরান-পাকিস্তান হামলা: ইটের বদলে পাটকেল

গত ১৬ জানুয়ারি ইরান পাকিস্তানভিত্তিক সুন্নি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী জইশ আল-আদলের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের মাটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ড্রোন হামলা চালায়। এটি ইরানের পক্ষ থেকে একটি গুরুতর হামলা, যার নেপথ্যে ছিল না কোনও সতর্কতা এবং পাকিস্তান এটিকে একটি বিনা উস্কানিমূলক আক্রমণ হিসাবে মনে করেছিল। পাকিস্তান প্রাথমিক ভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস করে সমস্ত দ্বিপাক্ষিক সফর বাতিল করে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানায়। কিন্তু ১৮ জানুয়ারি পাকিস্তান ইরানে বালোচ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কথিত শিবিরের উপরে পাল্টা হামলা শুরু করে। হামলা ও পালটা হামলার পরে বল এখন আবার ইরানের কোর্টে। গোটা বিশ্বই প্রায় অপেক্ষা করছে এবং দেখতে চাইছে যে, ইরান সংঘাতকে দ্বিতীয় পর্যায়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়, না কি কোনও হামলা না চালিয়েই পিছিয়ে যেতে আগ্রহী।

 

১৯৯৮ সালে মাজার-ই-শরিফে তালিবানরা ইরানের কূটনীতিকদের হত্যা করার পর ইরানিরা ক্রোধানলে জ্বলছিল। সেই সময় ইরান আফগান সীমান্তে তাদের বাহিনী জড়ো করেছিল এবং যুদ্ধের হুমকি দিয়েছিল, অথচ কখনও তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল হয়নি।

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া কিছু অসমর্থিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরান নাকি পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চল খালি করেছে, পাকিস্তানের সীমান্তের দিকে সৈন্য ও বেশ কিছু পরিমাণে ব্যালিস্টিক মিসাইল ব্যাটারি মোতায়েন করছে। এ সব কিছুই শক্তি প্রদর্শনের ইরানি প্রয়াস। এমনকি ইরান পাকিস্তান সীমান্তের কাছে একটি বড় বিমান প্রতিরক্ষা মহড়াও করছে। এর বেশির ভাগই সম্ভবত ইরানের দেখনদারি ছাড়া আর কিছুই নয় এবং এ কথা বলাই চলে যে, এই গতিশীলতা আগামী কোনও বড় পদক্ষেপের নেপথ্যে লুকিয়ে থাকা কোন ধরনের বিশেষ প্রস্তুতির ইঙ্গিত নয়। ইরানের তরফে এই ধরনের প্রস্তুতির দেখনদারি নতুন কিছু নয়। ১৯৯৮ সালে মাজার-ই-শরিফে তালিবানরা ইরানের কূটনীতিকদের হত্যা করার পর ইরানিরা ক্রোধানলে জ্বলছিল। সেই সময় ইরান আফগান সীমান্তে তাদের বাহিনী জড়ো করেছিল এবং যুদ্ধের হুমকি দিয়েছিল, অথচ কখনও তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল হয়নি। ইরান-পাকিস্তানের মধ্যে বর্তমান দেনাপাওনার অঙ্ক ঠিক কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তা নিয়েই চলছে চাপানউতোর। কোন পক্ষই প্রকাশ্য সংঘাত চায় না বা সেই সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার মতো সামর্থ্য রাখে না। পাকিস্তান বিষয়টিকে জনসাধারণের আখ্যানের অংশ করে তুলতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত সমঝোতামূলক সুরই গাইবে। ইতিমধ্যেই দুই পক্ষ যথেষ্ট গোলযোগ সৃষ্টি করেছে এবং এ কথা প্রায় স্পষ্ট যে, কেউই আর পরিস্থিতিকে গুরুতর করে তুলতে ইচ্ছুক নয়।

তবে আপাত ভাবে ভুল মনে হলেও কিছু সম্ভাবনার কথা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সম্ভবত ইরান একটি ভুল অঙ্ক কষেছিল যে, একই দিনে তারা ইরাক, সিরিয়া ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হামলা চালাবে। ইরান সম্ভবত পাকিস্তানকে একটি সফট টার্গেট বা নেহাতই দুর্বল প্রতিপক্ষ হিসাবে মনে করেছিল এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গেলে তা হবে কম খরচসাপেক্ষ। পাকিস্তান তার নিজের অস্তিত্বগত সঙ্কটে এতটাই জর্জরিত ছিল যে, দেশটি প্রতিশোধ নিতে পারেনি বা নেওয়ার ক্ষমতা রাখে না। পাকিস্তান ইতিমধ্যেই তিনটি ক্ষেত্রে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে - ভারত, আফগানিস্তানের তরফে আসা ইসলামি বিদ্রোহ এবং ইমরান খান প্রসঙ্গে অভ্যন্তরীণ অশান্তি। ইরানের সঙ্গে চতুর্থ সংঘাতপর্বের উন্মোচন পাকিস্তান এড়িয়ে যেতে চায়, বা বলা যায় ইরান এমনটাই বিশ্বাস করেছিল। পাকিস্তান সেনাবাহিনীও আক্ষরিক অর্থে কোনও প্রকার যুদ্ধ করার মতো পরিস্থিতিতে নেই। এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন প্রাক্তন সেনাপ্রধান। অর্থনৈতিক ভাবে দেশটিতে কী চলছে, তা স্পষ্ট নয় এবং অর্থনীতিগত ভাবে পাকিস্তান কোনও প্রকার উত্তপ্ত সংঘাত সামলানোর মতো অবস্থায় নেই। সর্বোপরি, পাকিস্তান এমন কয়েকটি কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে পারে, যার জন্য ইরানকে কোন মূল্যই চোকাতে হবে না। পাকিস্তানে জইশ আল-আল সন্ত্রাসবাদীদেলক্ষ্য করে হামলা চালালে ইরানের অভ্যন্তরীণ জনগণকে সন্তুষ্ট করা যেতে পারে। কারণ ইরানের অত্যন্ত অশান্ত সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশ গত কয়েক মাস যাবৎ ক্রমাগত হামলার সাক্ষী থেকেছে। এই আক্রমণগুলির মাধ্যমে ইরান এই ইঙ্গিত দিতে চেয়েছে যে, ইরানের জমি ব্যবহার করে যে সব দেশ প্রক্সি যুদ্ধ চালানোর চেষ্টা করবে, তাদেরকে যথাযোগ্য মূল্য চোকাতে হবে।

 

পাকিস্তান ইতিমধ্যেই তিনটি ক্ষেত্রে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে - ভারত, আফগানিস্তানের তরফে আসা ইসলামি বিদ্রোহ এবং ইমরান খান প্রসঙ্গে অভ্যন্তরীণ অশান্তি।

 

পাকিস্তানের দুর্বলতা সম্পর্কে ইরানের বিশ্লেষণ নেহাতই ভুল ছিল না। ইরান স্পষ্টতই মূল্যায়ন করতে পেরেছিল পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া অর্থাৎ পাকিস্তান আক্ষরিক অর্থেই দুর্বল হয়ে পড়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রটি যে পরিমাণ গুরুতর অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, নিরাপত্তা, সামাজিক প্রাতিষ্ঠানিক চাপের মধ্যে রয়েছে, সে কথা বিবেচনা করেই পাকিস্তান প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে কারণ এমনটা না করার অর্থ হল শুধু মাত্র ইরানের তরফেই নয়, বরং ভারতের মতো অন্যান্য আঞ্চলিক শক্তির তরফেও পাকিস্তান প্রবল কোণঠাসা হয়ে পড়বে। তাই শুধু কূটনৈতিক ভাবে নয়, সামরিক ভাবেও প্রতিক্রিয়া জানানো পাকিস্তানের জন্য আসলে কৌশলগত ভাবে টিকে থাকার লড়াই হয়ে উঠেছে। তবে তার জন্য পাকিস্তান কিন্তু ইরানকে নির্বিকার হতে প্ররোচিত করেনি। বরং অভ্যন্তরীণ ভাবে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী পরিচালিত মিশ্র প্রশাসনিক কৌশলের কাছে ইরানকে পাল্টা আঘাত করা ছাড়া পাকিস্তানের হাতে আর কোন বিকল্প ছিল না। সেনাবাহিনী দিন দিন অত্যন্ত অজনপ্রিয় হয়ে পড়েছে এবং ইরানের হামলার পরও সেনাবাহিনীর অবস্থা একটুও বদলায়নি। পাকিস্তানের আঞ্চলিক ও আদর্শগত সীমান্ত-অভিভাবক হিসেবে সেনাবাহিনীর সুনাম প্রশ্নের মুখে পড়েছে। সামাজিক গণমাধ্যমে ট্রোলরা এই ব্যঙ্গই করেছে যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী কি কেবল মাত্র ইমরান খানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর জন্য এবং ইমরানকে ন্দি করার জন্যই উপযুক্ত? পাকিস্তানকে বিদেশি শক্তির হাত থেকে রক্ষা করার ন্যূনতম ক্ষমতাও কি দেশটির আর অবশিষ্ট নেই? তাই উপযুক্ত এবং যথাযোগ্য সামরিক প্রতিক্রিয়া দেওয়া আসলে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর রাজনৈতিক ভাবে টিকে থাকার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং আশা করা যায় যে, এই প্রথম দফার ইটের বদলে পাটকেল ছোড়ার পরে দুই পক্ষের তরফেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

আর যদি সত্যিই তেমনটা হয়, তা হলে পাকিস্তান খুশি হবে। পাকিস্তান নিজের প্রচলিত প্রতিরোধ পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবে এবং তার প্রতিবেশীদের (বিশেষ করে আফগানিস্তান ও ভারত) এই বার্তা দিতে পারবে যে, যদি কেউ তার উপর আক্রমণ হানে, তা হলে পাকিস্তানও চুপ করে বসে থাকবে না, বরং যথাযোগ্য প্রত্যুত্তর দেবে। পাকিস্তান রাজনৈতিক ভাবে সশস্ত্র বাহিনীর শক্তিসঞ্চয় করতে থাকবে এবং সাময়িক ভাবে হলেও জনসাধারণের মধ্যে নিজের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করতে পারে। যদি পাকিস্তানের ভাগ্য সদয় হয়, তা হলে শুধু আরব বিশ্বকেই (যারা সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পাকিস্তানকে বেল আউট করার ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র সাহায্য করেনি) নয়, বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও নিজের উপযোগিতা প্রদর্শন করতে এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগাতে সক্ষম হবে। পাকিস্তান যে কোনও মতেই ইরানকে উস্কানি দিতে প্রস্তুত নয়, তা অবশ্য অন্য বিষয়। পাকিস্তান জানে যে, পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ইরানকে সমর্থন করার মতো উল্লেখযোগ্য সম্পদ এবং সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। তাই ইরানকে উস্কানি দিলে তা পাকিস্তানের জন্য ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতির জন্ম দেবে। যাই হোক, পাকিস্তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরব রাষ্ট্রগুলিকে একই সুতোয় সংযুক্ত করতে এবং যতটা সম্ভব তাদের তরফ থেকে ত্রাণ নিংড়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাবে। অন্য দিকে, পাকিস্তান বর্তমানে তার তিনটি প্রতিবেশী দেশ অর্থাৎ আফগানিস্তান, ভারত এবং ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটিয়েছে। এমন এক সময়ে যখন পাকিস্তানের শাসকরা বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য মরিয়া চেষ্টা করছেন এবং পাকিস্তানকে সন্ত্রাস নয়, বরং বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে তুলে ধরার প্রয়াস চালাচ্ছে্ন, তখন ইরানের সঙ্গে প্রকাশ্য বিরোধ পাকিস্তানের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

পাকিস্তান জানে যে, পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ইরানকে সমর্থন করার মতো উল্লেখযোগ্য সম্পদ এবং সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। তাই ইরানকে উস্কানি দিলে তা পাকিস্তানের জন্য ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতির জন্ম দেবে।

 

তবে ইরানের কাছে পাকিস্তানের তরফে প্রতিশোধ নিঃসন্দেহে একটি দ্বিধার জন্ম দিয়েছে। ইরান যদি সংঘাত চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তা হলে দেশটি নিজের জন্য আর এক সংঘাত-বিন্দু উন্মোচন করবে। এমনটা করা মোটেই ইরানের জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হবে না, বিশেষ করে সেই সময়ে যখন ইরান নিজেই পশ্চিম এশিয়ায় (মধ্যপ্রাচ্য) ইরায়েল-প্যালেস্তাইন যুদ্ধের বিস্তৃত সংঘাতে গভীর ভাবে জড়িয়ে পড়েছে। অন্য দিকে, ইরান যদি পিছিয়ে যায়, তা হলে তা এই অঞ্চলের অন্যান্য শক্তির কাছে এই বার্তাই প্রেরণ করবে যে, ইরানের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করার উপায় হল তার প্রক্সিদের লক্ষ্যবস্তু করা নয়, বরং সরাসরি দেশটির উপরেই আঘাত আনা সম্ভব। ‘সাপের মাথায় (পড়ুন ইরান) আঘাত না করলে মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা আনা সম্ভব নয় বলে গুঞ্জন উঠেছে। পাকিস্তানের হামলার প্রত্যুত্তর না দেওয়া আসলে পরোক্ষ ভাবে ইরানের প্রতিপক্ষদের দেশটির উপর হামলা চালাতে প্রলুব্ধ করতে পারে, যাতে ইরানকে প্যারা-স্টেট প্রক্সিগুলির মাধ্যমে এই অঞ্চলে সমস্যা সৃষ্টি করা থেকে বিরত রাখা যায়। আরও গুরুত্বপূর্ণ হল, ইরানের সমর্থনে উৎসাহিত হয়ে পাকিস্তানভিত্তিক সুন্নি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি আস্কারা পেয়ে ইরানে আরও বেশি পরিমাণে আক্রমণ চালাতে পারে। এই সম্ভাবনাকেও একেবারে নস্যাৎ করে দেওয়া যায় না।

 

মধ্যপ্রাচ্যে জটিল পরিস্থিতি

যদি ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা প্রকট না হয়, তা হলে এই সম্ভাবনা রয়েছে যে, দুই পক্ষ কয়েক সপ্তাহ পরে, কিংবা কয়েক মাস পরে একে অপরের সঙ্গে ফের সমঝোতায় আসবে। কিন্তু এই উত্তেজনা যদি প্রকাশ্য শত্রুতা বা উত্তপ্ত সীমান্তাবস্থার দিকে চালিত করে, তা হলে তা মধ্যপ্রাচ্যে ইতিমধ্যেই অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে আরও নড়বড়ে করে তুলবে। এবং এই পরিস্থিতি আবার ভারতকে প্রভাবিত করবে কারণ এ হেন অশান্তি ভারত আরব উপসাগরীয় দেশগুলির মধ্যে জ্বালানি সরবরাহের পথ এবং বাণিজ্যিক করিডোরগুলিকে ব্যাহত করতে পারে। আবার প্রায় একই রকমের উদ্বেগের বিষয় হল এই যে, হেন উত্তেজনা চিনের জন্য তার কৌশলগত অংশীদার ইরান চিনের ভোক্তা রাষ্ট্র পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে অঞ্চলটিতে নিজেদের কূটনৈতিক উপস্থিতি সম্প্রসারিত করার মোক্ষম সুযোগ করে দেবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে মাথা গলিয়ে কেউকেটা হয়ে ওঠার মতো অবস্থায় এই মুহূর্তে নেই। তাই সেই আসনটি এই মুহূর্তে ফাঁকাই রয়েছে এবং চিন বেশ নির্লজ্জ ভাবে তা দখল করার জন্য মুখিয়ে রয়েছে।


সুশান্ত সারিন অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Author

Sushant Sareen

Sushant Sareen

Sushant Sareen is Senior Fellow at Observer Research Foundation. His published works include: Balochistan: Forgotten War, Forsaken People (Monograph, 2017) Corridor Calculus: China-Pakistan Economic Corridor & China’s comprador   ...

Read More +