Author : Oommen C. Kurian

Published on Feb 16, 2024 Updated 0 Hours ago

অন্তর্বর্তী বাজেটে সরকার তার ইউনিভারসাল হেলথ কভারেজ পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভগুলিতে মনোনিবেশ করেছে বলে মনে হচ্ছে, যেমন স্বাস্থ্যসেবা পরিকাঠামো, মেডিকেল শিক্ষা, ও ওষুধ উৎপাদন।

অন্তর্বর্তী বাজেট ২০২৪: অতিমারির বছরগুলিতে ভারতের স্বাস্থ্য ব্যয়

নির্বাচনের পরে জুলাই মাসে একটি পূর্ণ বাজেট পেশ হওয়ার আগে অন্তর্বর্তী বাজেট ২০২৪ কোনও বড় ঘোষণা করবে বলে আশা করা হয়নি। তবে বাজেটে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কয়েকটি নতুন উদ্যোগ ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন বাজেটের নথিগুলি আমাদের অতিমারি চলাকালীন এবং পরে গত কয়েক বছরে স্বাস্থ্য বরাদ্দ ও ব্যয় দেখার সুযোগ দেয়। অতিমারির অনিশ্চয়তার পরিপ্রেক্ষিতে, গত কয়েকটি বাজেটে বাজেট অনুমান (বিই), সংশোধিত অনুমান (আরই),  এবং প্রকৃত ব্যয়ের মধ্যে বড় রকমের পার্থক্য দেখা গিয়েছে। অন্তর্বর্তী বাজেটের স্বাস্থ্য সংখ্যার দ্রুত বিশ্লেষণের পাশাপাশি এই নিবন্ধটিতে বাজেট অনুমান, সংশোধিত অনুমান এবং সেই সময়ের প্রকৃত ব্যয়ের উপর ভিত্তি করে গত ছয় বছরে স্বাস্থ্য ব্যয়ের বিস্তৃত প্রবণতা বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে।


অন্তর্বর্তী বাজেটে ঘোষণা

একটি নির্বাচনী বছরে অন্তর্বর্তী বাজেটে কোনও বড় উদ্যোগ প্রত্যাশিত না–হলেও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা এবং আপডেট করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের ঘাটতি এবং ভারতে চিকিৎসা শিক্ষার ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোর দিকে লক্ষ্য রেখে বিদ্যমান হাসপাতালের পরিকাঠামো ব্যবহার করে অতিরিক্ত মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। এপ্রিল ২০২৩–এ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ১,৫৭৯ কোটি ভারতীয় রুপি বাজেট বরাদ্দ সহ ১৫৭টি নতুন নার্সিং কলেজ তৈরির অনুমোদন দেয়, যার মধ্যে ১,০১৬ কোটি রুপি কেন্দ্রীয় অংশ। সাম্প্রতিক বাজেট নথিগুলি নির্দেশ করে যে এখনও পর্যন্ত ৮৬টি কলেজের জন্য বিশদ প্রকল্প প্রতিবেদন (ডিপিআর) অনুমোদিত হয়েছে, এবং ৭৩টি কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিটিতে ২ কোটি টাকার প্রাথমিক তহবিল বিতরণ করা হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের ঘাটতি এবং ভারতে চিকিৎসা শিক্ষার ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোর দিকে লক্ষ্য রেখে বিদ্যমান হাসপাতালের পরিকাঠামো ব্যবহার করে অতিরিক্ত মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন।


এছাড়াও, ৯ থেকে ১৪ বছর বয়সী মেয়েদের জন্য জরায়ুমুখের ক্যান্সারের টিকা দেওয়ার বিধান প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবার উপর সরকার কীভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে তা তুলে ধরে। এর সঙ্গে আছে মিশন ইন্দ্রধনুষের অংশ হিসাবে টিকা পরিচালনার জন্য ইউ–উইন প্ল্যাটফর্মের প্রবর্তন, যা দেশব্যাপী টিকা কভারেজ বাড়াতে এবং ভ্যাকসিনের মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য রোগ কমাতে সাহায্য করতে পারে। তার উপর, বাজেটে মা ও শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবার কার্যকারিতার প্রবাহটি মসৃণ করা এবং বাড়ানোর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য প্রকল্পগুলিকে একটি একক ব্যাপক কর্মসূচিতে একীভূত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ‘‌সক্ষম অঙ্গনওয়াড়ি’‌ ও ‘‌পোষণ ২.০’‌ প্রকল্পের অধীনে পুষ্টি, প্রাথমিক শৈশব যত্ন এবং সামগ্রিক শিশু বিকাশের উন্নতির জন্য অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির মান উন্নততর করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে, যাতে এই কেন্দ্রগুলি জনসম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সংস্থান হিসাবে জায়গা করে নেয়৷

আয়ুষ্মান ভারত প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার সম্প্রসারণ ঘটিয়ে তাতে সমস্ত আশা কর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকাদের — মোট প্রায় ১.৫ মিলিয়ন কর্মী — অন্তর্ভুক্ত করার ঘটনাটি তৃণমূল স্বাস্থ্যসেবা বিতরণে এই প্রথম সারির স্বাস্থ্যকর্মীরা যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তার স্বীকৃতি দিয়ে তাঁদের ব্যাপক স্বাস্থ্যসেবা কভারেজ দেওয়ার প্রয়াস। অনুমান করা হচ্ছে যে, প্রতি পরিবারে পাঁচজন সদস্য রয়েছেন, এবং এটি এই প্রকল্পে সম্ভাব্য প্রায় ৭.৫ মিলিয়ন নতুন সদস্য যুক্ত করবে।


অন্তর্বর্তী বাজেটের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সংখ্যা

স্বাস্থ্য খাতে গত বছরের সংশোধিত অনুমান ছিল ৮৬,২১৬ কোটি ভারতীয় রুপি (আয়ুষ ও ফার্মাসিউটিক্যালস সহ), আর এই বছরের বরাদ্দ ৭৮,৪৬১ কোটি রুপি — অর্থাৎ সামগ্রিক স্বাস্থ্য বাজেট ১২,২৪৫ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে, নামমাত্র তুলনা করলে বৃদ্ধিটি আরও মাঝারি — ২.৬ শতাংশ — যা মূল্যস্ফীতির পুরোটাও কভার করে না। যাই হোক, স্বাস্থ্যের বাজেটে অতিমারি–পরবর্তী বৃদ্ধির কারণে (‌নমিনাল)‌ হিসাবে যা ১৪ শতাংশের বেশি৷ কিন্তু ২০২৩ বাজেট অনুমানের সঙ্গে গত বছরের (২০২৩–২৪) স্বাস্থ্য বরাদ্দের জন্য সামগ্রিক বাজেটের অনুমানে নিম্নগামী সংশোধনের ঘটনাটি নতুন নয়। ২০২২ সালেও এমনটা হয়েছিল, যখন চাহিদার অভাবে কোভিড–১৯ প্রস্তুতির জন্য বরাদ্দ করা অর্থের প্রয়োজন হয়নি। তবে এটা সত্য যে যেমন পানীয় জলে এখন দেখা যাচ্ছে এবং স্যানিটেশনে আগে দেখা গিয়েছে, সেইভাবে স্বাস্থ্য খাতে এখনও বরাদ্দ ও ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পায়নি। এছাড়াও, অতিমারি বছরগুলিতে কম ব্যবহৃত প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য সুরক্ষা যোজনা (পিএমএসএসওয়াই) ও পিএম–আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো মিশন (পিএম–এবিএইচআইএম)–এর মতো পরিকাঠামো–কেন্দ্রিক প্রকল্পগুলিতে সর্বশেষ বরাদ্দ গত বছরের বাজেটের অনুমানের তুলনায় সামান্য কম। এই প্রকল্পগুলির জন্য গত বছরের সংশোধিত অনুমানগুলি বাজেটের অনুমানের তুলনায় যথেষ্ট কম ছিল, যা কম ব্যবহার নির্দেশ করে, এবং এই প্রবণতা সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বাস্থ্য ব্যতীত অন্য মন্ত্রক ও পিএসইউগুলির অধীনে থাকা সরকারি হাসপাতালগুলিকে একীভূত এবং উন্নত করার জন্য একটি কমিটি গঠনের পরিকল্পনা সম্ভবত এই বাজেটে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের জন্য সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘোষণা।

 

আরও গুরুত্বপূর্ণ, ঐতিহাসিক তথ্যের দিকে নজর দিলে প্রমাণিত হয় যে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের বাজেট বাস্তব অর্থে প্রাথমিক বৃদ্ধির পর একই জায়গায় আটকে আছে বলে মনে হচ্ছে। স্বাস্থ্য মানবসম্পদ (এইচএইচআর) সংক্রান্ত ফাঁকগুলি, বিশেষ করে গ্রামীণ হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির, সমাধান না–করা পর্যন্ত এর উন্নতি হবে না। সরকার এই বিষয়টি উপলব্ধি করেছে বলে মনে হচ্ছে, বিশেষ করে এই বাজেটেও রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রের নেতৃত্বাধীন মেডিকেল শিক্ষার উপর ক্রমাগত জোর দেওয়ায়। অতিমারির সময়ে জনসাধারণের ভালর জন্য বিভিন্ন মন্ত্রক ও পাবলিক সেক্টর আন্ডারটেকিংস–কে (পিএসইউ) স্বাস্থ্যসেবা পরিকাঠামোয় একত্র হতে দেখা গিয়েছিল। এই পদ্ধতিটিকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে গিয়ে, সীতারামন বাজেট বক্তৃতার সময় এই হাসপাতালগুলিকে মেডিকেল কলেজে উন্নীত করার জন্য সরকারের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। স্বাস্থ্য ব্যতীত অন্য মন্ত্রক ও পিএসইউগুলির অধীনে থাকা সরকারি হাসপাতালগুলিকে একীভূত ও উন্নত করার জন্য একটি কমিটি গঠনের পরিকল্পনা সম্ভবত এই বাজেটে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের জন্য সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘোষণা। এটি সরকারি ক্ষেত্রের স্বাস্থ্য শিক্ষা পরিকাঠামোতে শত শত যদি না–ও হয়, তা হলেও বহু হাসপাতালকে যুক্ত করবে।


মহামারি বছরের বাজেট: একটি ঘনিষ্ঠ চেহারা
 

এই বিশ্লেষণের জন্য আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রক, আয়ুষ মন্ত্রক ও ফার্মাসিউটিক্যালস বিভাগের বরাদ্দগুলিকে একসঙ্গে স্বাস্থ্য হিসাবে বিবেচনা করব। ফার্মাসিউটিক্যালস দপ্তরের অতীতে মোটামুটি ছোট বাজেট ছিল, কিন্তু ডাঃ মনসুখ মান্ডাভিয়ার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রীর পাশাপাশি ভারতের রাসায়নিক ও সার মন্ত্রী হিসাবে দ্বৈত দায়িত্ব নেওয়ার পর এর বাজেট বরাদ্দ অনেক বেড়ে গিয়েছে, যা স্বাস্থ্যসেবা নীতি ও ওষুধ উৎপাদন অনুশীলনগুলি সারিবদ্ধ করার ক্ষেত্রে একটি অনন্য অভিমুখ এবং একটি কৌশলগত সুবিধা প্রতিফলিত করে।

২০২৫ সালের মধ্যে অর্জনের লক্ষ্যে জাতীয় স্বাস্থ্য নীতি ২০১৭–এ যা কল্পনা করা হয়েছিল, ভারত এখনও সেভাবে স্বাস্থ্যের উপর জিডিপির ২.৫ শতাংশের আদর্শ সরকারি ব্যয়ের
কাছাকাছি কোথাও নেই। তবে, অতিমারির জরুরি অবস্থা দেখেছে স্বাস্থ্যের উপর সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। চিত্র ১ দেখায় কীভাবে প্রাক–মহামারি দুটি বছরে বাজেট অনুমান, সংশোধিত অনুমান ও প্রকৃত ব্যয় একই পরিসরে ছিল। যাই হোক, অতিমা্রির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রয়োজন মেটাতে ২০২০ ও ২০২১ উভয় বছরেই বড় ধরনের ঊর্ধ্বমুখী সংশোধন হয়েছিল।


২০২২ সাল থেকে সংশোধিত অনুমানগুলি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে, প্রাথমিকভাবে ভ্যাকসিনেশনের মতো অতিমারি হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা হ্রাসের কারণে, এবং সেইসঙ্গে সম্ভবত অতিমারি চলাকালীন বাধার কারণে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত ক্ষমতা বাড়ানোর অনেক উদ্যোগ প্রভাবিত হওয়ার কারণে। যাই হোক, এই বিপত্তিগুলির ফলে বাজেটের প্রাককলনের নিম্নগামী সংশোধন হয়নি, এবং সরকার স্বাস্থ্য বাজেটকে অতিমারি পর্যায়ে রেখেছে। সরকারের দৃষ্টি নিবদ্ধ রয়েছে পরিকাঠামো তৈরি করা এবং একটি ভিত্তিকে সংহত করার উপর, যার উপর একটি সর্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ (ইউএইচসি) ব্যবস্থা গড়ে উঠতে পারে। এ ক্ষেত্রে গুরুত্ব পাবে স্বাস্থ্যসেবা পরিকাঠামো, মেডিকেল শিক্ষা, এবং দেশের লক্ষ্যগুলির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ফার্মাসিউটিক্যাল উৎপাদন।

 


‌সূত্র:
https://www.indiabudget.gov.in/ বাজেট নথি, বিভিন্ন বছর, লেখক দ্বারা সংকলিত।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের পাশাপাশি স্বাস্থ্য গবেষণা বিভাগ নিয়ে গঠিত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের (এমওএইচএফডব্লিউ) এবং আয়ুষ মন্ত্রকের বাজেট বরাদ্দ ও ব্যয়ের দিকে চিত্র ২চিত্র ৩ নজর দেয়। এমওএইচএফড্বলিউ ও আয়ুষ মন্ত্রকের ক্ষেত্রে পূর্বে প্রথমটি সামগ্রিক স্বাস্থ্য বাজেটের ৯০ শতাংশেরও বেশির অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও, ২০২১ ব্যতীত বাজেট চক্রের সময় দুটিই একই ধরনের প্রবণতার অংশীদার ছিল। অতিমারির সময় সরকারি ক্ষেত্রের এমওএইচএফডব্লিউ ও আয়ুষ হাসপাতাল উভয়কেই সামগ্রিক স্বাস্থ্যসেবা কৌশল পরিচালনার জন্য একীভূত করা হয়েছিল। তবে সংক্রমণ যখন শীর্ষে পৌঁছয় তখন স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবাগুলির পাশাপাশি পরিকাঠামো তৈরির কাজ ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়েছিল। সেই সময় নিরাময়মূলক পরিষেবাগুলি প্রধানত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল, এবং আয়ুশ অনাক্রম্যতা বাড়ানো ও ক্রনিক অবস্থা পরিচালনার জন্য টেলিমেডিসিন পরিষেবাগুলিতে মনোনিবেশ করেছিল। এটি আংশিকভাবে ২০২১ সালে আয়ুশের তহবিলের কম ব্যবহারকে ব্যাখ্যা করতে পারে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ব্যবহারের অভাব সংশ্লিষ্ট বছরগুলিতে বাজেট অনুমানকে প্রভাবিত করেনি, এবং ‘‌স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা শিক্ষার জন্য মানবসম্পদ’‌ শিরোনামের আওতায় মূলধনী সম্পদ সৃষ্টিতে ৫০০০ কোটি ভারতীয় রুপির বেশি বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছিল, এমনকি সেই সময়ও যখন ২০২২ সালের প্রকৃত ব্যয় এবং ২০২৩ সালের সংশোধিত অনুমান উভয়ই ২০০০ কোটির নিচে ছিল। এ থেকে বোঝা যায় তখনও মেডিকেল শিক্ষায় রাষ্ট্রীয় সম্পদ তৈরি করার লক্ষ্যটি অবিচল ছিল।


‌সূত্র:
https://www.indiabudget.gov.in/ বাজেট নথি, বিভিন্ন বছর, লেখক দ্বারা সংকলিত।

আগে যেমন আলোচনা করা হয়েছে, অতিমারি চলাকালীন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতিগুলির মধ্যে একটি ছিল স্বাস্থ্য ও ওষুধ ক্ষেত্রের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সারিবদ্ধতা। ২০২১ সালে একজন মন্ত্রীর হাতেই উভয় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের প্রয়োজনীয়তা ও ফার্মাসিউটিক্যাল ক্ষেত্রের সক্ষমতার মধ্যে যে সুষম ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন, তা সরকার বুঝেছিল। ফলস্বরূপ, ভারতের ইউএইচসি পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসাবে ফার্মাসিউটিক্যাল ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে বেশি বাজেট বরাদ্দ দেখা গিয়েছে। ২০১৮ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ফার্মাসিউটিক্যাল ক্ষেত্রে বরাদ্দ ১৫ গুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, যেমন চিত্র ৪ দেখায়। এই ঘটনাটি এখনও গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেনি।


সূত্র:
https://www.indiabudget.gov.in/ বাজেট নথি, বিভিন্ন বছর, লেখক দ্বারা সংকলিত।

একটি তুলনামূলক দৃষ্টিকোণে রাখার জন্য উল্লেখ প্রয়োজন যে ২০১৮ সালে ফার্মাসিউটিক্যালসের জন্য নামমাত্র বাজেট বরাদ্দ ছিল, আয়ুশের প্রায় এক–ষষ্ঠাংশ। কিন্তু ২০২৪ সালে তা আয়ুষ মন্ত্রকের বরাদ্দকে ছাড়িয়ে গিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ফার্মাসিউটিক্যাল ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতার উপর নতুন করে জোর দেওয়ার ফলে।  প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেনটিভ (পিএলআই) স্কিম এবং জন ঔষধি স্কিম উভয়ই এই বছরের বরাদ্দে যথেষ্ট বৃদ্ধি দেখেছে।

 

সংক্ষেপে, স্যানিটেশন ক্ষেত্র ও পানীয় জলের ক্ষেত্রে যা করা হয়েছে, সেইভাবে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে যথেষ্ট সম্পদ সরবরাহের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করা এখনও বাকি আছে। তবে ভারত সরকার বাজেট বরাদ্দে তার ইউএইচসি পরিকল্পনাগুলির গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভগুলিতে মনোনিবেশ করছে বলে মনে হচ্ছে, যথা স্বাস্থ্যসেবা পরিকাঠামো, মেডিকেল শিক্ষা, ও ফার্মাসিউটিক্যাল উৎপাদন। সেই কারণে, এমন কয়েকটি বিষয়ে প্রকৃত ব্যয়কে প্রভাবিত করার মতো ব্যাঘাত এবং অতিমারি–প্ররোচিত জরুরি তহবিল হ্রাসের প্রয়োজনীয়তা সত্ত্বেও, প্রকৃত বরাদ্দ অতিমারি–পরবর্তী সময়ে হ্রাস পায়নি (চিত্র ১)। এখন আগামী এক বছরে ক্ষেত্রটি এই বরাদ্দ খরচ করতে পারে কি না তা দেখার বিষয়।



ওমেন সি. কুরিয়ান একজন সিনিয়র ফেলো এবং অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের হেড অব হেলথ ইনিশিয়েটিভ

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.