Author : Binoj Basnyat

Published on Jun 25, 2022 Updated 0 Hours ago

সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার ইন্দো-প্যাসিফিক নীতি প্রকাশ করেছে যেখানে অঞ্চলটিতে আমেরিকার নিরবচ্ছিন্ন আগ্রহের ইঙ্গিত দেওয়ার পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ায় তার মিত্র দেশগুলির ভয় নিরসনের চেষ্টা করা হয়েছে।

ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল ২০২২: একটি বিশ্লেষণ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল সলোমন দ্বীপপুঞ্জে পা রাখার মাত্র কয়েক দিন আগেই চিন এবং সলোমন দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে একটি নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা দক্ষিণ পশ্চিম প্যাসিফিক অঞ্চলে পিপলস লিবারেশন আর্মির (পি এল এ) উপস্থিতিকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো চিরাচরিত নিরাপত্তা প্রদানকারী দেশগুলি এই ঘটনায় যথেষ্ট উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে এমন এক সময়ে যখন ইউরোপীয় নিরাপত্তার ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে পড়েছে এবং ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই আমেরিকা ও রাশিয়ায় সম্পর্ক আরও বেশি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে, তখন চিনের এই সক্রিয়তা দেশগুলির দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন তাঁর ফিজি সফর চলাকালীন বলেন, ‘আমরা ইন্দো-প্যাসিফিকে আমাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সচেতন’ এবং সলোমন দ্বীপপুঞ্জে একটি দূতাবাস গড়ে তোলার জন্য তিনি আবেদনও জানান। এই ঘোষণার মাত্র কয়েক দিন আগেই চিনের প্রেসিডেন্ট শি এবং রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ‘নো লিমিট’ বা ‘সীমাহীন’ কৌশলগত অংশীদারিত্বের কথা ঘোষণা করেন। এই ঘোষণা বিশ্ব ব্যবস্থায় এক ‘নতুন যুগ’-এর সূচনা করে, যার প্রধান উদ্দেশ্য হবে একজোট হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কাজ করা।

সামরিক, আন্তঃসংস্থা, রাজকোষ এবং ইউ এস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টকে (ইউ এস এ আই ডি) কাজে লাগিয়ে এবং অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথ ইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসিয়ান), কোয়াড্রিল্যাটেরাল সিকিউরিটি ডায়লগ (কোয়াড), অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ত্রিপাক্ষিক নিরাপত্তা চুক্তির (অউকাস) মতো অংশীদারিত্ব জোট ও আঞ্চলিক সংস্থাগুলিকে সঙ্গে নিয়ে এগোনোই নিরাপত্তা প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

সম্প্রতি হোয়াইট হাউসও ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি ২০২২ (আই পি এস-২২) প্রকাশ করেছে। এই ধরনের ঘোষণার পরে সাধারণত আঞ্চলিক কৌশল এবং প্রতিরক্ষা কৌশলের ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এ বার তেমনটা ঘটতে দেখা যায়নি। ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি (আই পি এস) বা কৌশলের প্রধান লক্ষ্য হল অঞ্চলটিকে অবাধ ও মুক্ত, সংযুক্ত, সমৃদ্ধ, সুরক্ষিত এবং স্থিতিস্থাপক করে তোলা, যেমনটা অন্য গণতন্ত্রগুলির ক্ষেত্রে দেখা যায়। ভারতকে অঞ্চলটির এক অন্যতম প্রধান শক্তি রূপে বিবেচনা করা হচ্ছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘ভারতের ক্রম উত্থান এবং আঞ্চলিক নেতৃত্ব প্রদানের ক্ষমতা’কে সমর্থন জোগানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন যে, ‘আমরা এমন এক ইন্দো-প্যাসিফিকের স্বপ্ন দেখছি, যেটি মুক্ত, সংযুক্ত, সমৃদ্ধ, স্থিতিস্থাপক ও সুরক্ষিত এবং আমরা আপনাদের প্রত্যেকের সঙ্গে একজোট হয়ে কাজ করে এই লক্ষ্য অর্জন করতে চাই।’ অনেকেই সন্দেহ করছিলেন যে, রাশিয়ার আগ্রাসন আই পি আর মুলতুবির কারণ হয়ে দাঁড়াবে, কিন্তু অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের কূটনৈতিক কৌশলে অঞ্চলটির প্রতি নিরবচ্ছিন্ন দায়বদ্ধতার প্রতিশ্রুতি লক্ষ করা গিয়েছে। সামরিক, আন্তঃসংস্থা, রাজকোষ এবং ইউ এস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টকে (ইউ এস এ আই ডি) কাজে লাগিয়ে এবং  অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথ ইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসিয়ান), কোয়াড্রিল্যাটেরাল সিকিউরিটি ডায়লগ (কোয়াড), অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ত্রিপাক্ষিক নিরাপত্তা চুক্তির (অউকাস) মতো অংশীদারিত্ব জোট ও আঞ্চলিক সংস্থাগুলিকে সঙ্গে নিয়ে এগোনোই নিরাপত্তা প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

এ কথা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, চিন-আমেরিকা দ্বৈরথ আই পি আর-এ অথবা প্রশান্ত মহাসাগরে প্রতিফলিত হবে যে হেতু উদীয়মান চিন এবং আমেরিকা উভয়েই ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক ব্যবস্থা অবলম্বন করে একটি একক আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।

চিনের প্রতিক্রিয়া এবং দক্ষিণ এশিয়া

বেজিংয়ের প্রভাবের বৃত্ত, তা অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক, সামরিক বা প্রযুক্তিগত যে ক্ষেত্রেই হোক না কেন, দক্ষিণ এশীয় ও দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলিতে তীব্রতর হচ্ছে এবং তা আমেরিকা ও তার জোটসঙ্গী দেশগুলিকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। চিন এ কথা বুঝতে পেরেছে যে, আমেরিকা ও তার সঙ্গী দেশগুলির নেতৃত্বের সংযোগ সূত্র গড়ে তোলার প্রচেষ্টা অঞ্চলটিতে চিনের স্বার্থবিরোধী হয়ে উঠবে। চিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা এক অন্য মাত্রায় পৌঁছতে চলেছে যা ঠান্ডা লড়াইয়ের সময়ে মার্কিন-সোভিয়েত শত্রুতার তুলনায় অনেকটাই আলাদা। এক জন আন্তর্জাতিক রফতানিকারী হিসেবে অর্থনৈতিক গুরুত্ব থাকার পাশাপাশি চিন প্রকৌশল উদ্ভাবনের এক ঘাঁটি এবং এ আই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা, হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, জৈব প্রযুক্তি বা বায়ো টেকনোলজি, রোবোটিকস ও কোয়ান্টাম প্রযুক্তির মতো দ্বিমুখী, উদীয়মান এবং ধ্বংসাত্মক প্রযুক্তি নির্মাণের কেন্দ্র হিসেবে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে।

চিন-আমেরিকা দ্বৈরথ আই পি আর-এ অথবা প্রশান্ত মহাসাগরে প্রতিফলিত হবে যে হেতু উদীয়মান চিন এবং আমেরিকা উভয়েই ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক ব্যবস্থা অবলম্বন করে একটি একক আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।

চিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এক জন অভিভাবকের বদলে একটি সমস্যা রূপেই বিবেচনা করে। চিনের কাছে আই পি এস ২২ এমন এক পুনর্বিবৃতি যা বলতে চায় চিন তার উত্থান শান্তিপূর্ণ ভাবে ঘটাবে না, ঘটাতে চায়ও না। সে সক্রিয় ভাবে পশ্চিমি দেশগুলিকে এবং বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থাকে নেতিবাচক ভাবে প্রভাবিত করতে চাইছে। সেই জন্য বিশ্ব জুড়ে প্রচলিত ‘চায়না থ্রেট থিয়োরি’ এবং ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে যুক্ত করে এমন এক ভূ-রাজনৈতিক তত্ত্ব ‘ফ্যান্টাসি টার্গেটিং চায়না’কে ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক ফলাফলের কথা মাথায় রেখে চিনের উত্থানকে প্রতিহত করতে পশ্চিমি দেশগুলি কড়া ব্যবস্থা নিতে সক্রিয় হবে। অন্য দিকে চিনের মতে, কোয়াড, অউকাসের মতো আঞ্চলিক জোট এবং অন্য ত্রাণ কর্মসূচিগুলিকে চিনের বিস্তার প্রতিরোধে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ভারত এবং আই পি এস

চিন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং কোয়াড বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ, যার মাল্টি সেক্টোরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকনমিক কো-অপারেশন (বিমস্টেক) ও সাউথ এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কো-অপারেশনের (সার্ক) মতো আঞ্চলিক জোটগুলির সঙ্গে সম্পর্কের সমতা বজায় রেখে চলা ভারতের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হতে চলেছে। দক্ষিণ এশিয়ার ছোট দেশগুলি-সহ ভারতের বিদেশ নীতি জোট নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে বহুপাক্ষিকতার দিকে চালিত হলেও ভারতের সামনে চিনের সঙ্গে অমীমাংসিত সীমান্ত সমস্যা এবং বাণিজ্য ঘাটতির মতো উল্লেখযোগ্য সমস্যা বর্তমান। জলবায়ু পরিবর্তন, মুক্ত বাণিজ্য ও স্থিতিশীল উন্নয়নের মতো সাধারণ আন্তর্জাতিক স্বার্থের প্রেক্ষিতে আন্তঃসহযোগিতা এবং দক্ষিণ এশিয়ায় তার আঞ্চলিক প্রভাব অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য ভারত চিন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের সঙ্গেই ভাল সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। আই পি এস ২২-এ ভারতকে এক সহযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার, ঘনিষ্ঠ নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের অনুকূল এক গণতন্ত্র, ভারত মহাসাগর ও দক্ষিণ এশিয়াকে নেতৃত্ব দানে সক্ষম এক সক্রিয় ও সংযুক্ত দেশ, কোয়াডের প্রগতিশীল শক্তি এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির নিরিখে এক চালিকাশক্তি রূপে বিবেচনা করা হয়েছে। এবং এটিতে ‘ভারতের অব্যাহত উত্থান ও আঞ্চলিক নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা’কে সমর্থন করা হয়েছে। এই কৌশলে বলা হয়েছে, আমরা এমন এক কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার কাজ চালিয়ে যাব যাতে দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক জোটের মাধ্যমে স্থিতিশীলতা উন্নত করতে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একজোটে কাজ করতে পারে; স্বাস্থ্য, মহাকাশ ও সাইবার স্পেসের মতো নতুন ক্ষেত্রগুলিতে পারস্পরিক সমন্বয় সাধনের পাশাপাশি উভয় দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত আন্তঃসহযোগিতা বৃদ্ধি করা এবং এক মুক্ত ও অবাধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা চালানো হবে।’ লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল বা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর চিনের আগ্রাসী ও সহিংস কার্যকলাপের প্রেক্ষিতে অঞ্চলটিতে এক সুরক্ষা প্রদানকারী রূপে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন জোগানোর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বৃহত্তর প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্ব গড়ে তুলবে।

আই পি এস ২২-এ ভারতকে এক সহযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার, ঘনিষ্ঠ নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের অনুকূল এক গণতন্ত্র, ভারত মহাসাগর ও দক্ষিণ এশিয়াকে নেতৃত্ব দানে সক্ষম এক সক্রিয় ও সংযুক্ত দেশ, কোয়াডের প্রগতিশীল শক্তি এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির নিরিখে এক চালিকাশক্তি রূপে বিবেচনা করা হয়েছে।

দক্ষিণ এশীয় রাজনৈতিক সম্পর্ক

চিন ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিকে মূলত চিন-ভারত বৈরিতার দ্বারা সংজ্ঞায়িত করতে পরিচালিত করেছে যেখানে চিনকে একটি অঞ্চল-বহির্ভূত শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের প্রেক্ষিতে বর্তমানে চিনের স্বার্থ তালিবানের আওতায় থাকা আফগানিস্তান এবং সামরিক শাসনের আওতাভুক্ত মায়ানমারের সঙ্গে সম্পর্কিত: দক্ষিণ এশিয়ার যে দুটি দেশ ক্রমশ গণতন্ত্রের পথ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি চিন-পাকিস্তান ইকনমিক করিডোর, ট্রান্স হিমালয়ান মাল্টি-ডাইমেনশনাল কানেক্টিভিটি নেটওয়ার্ক এবং চিন-মায়ানমার ইকনমিক করিডোরের বিষয়ে চিন অত্যন্ত আগ্রহী। এগুলি সবই ভারত মহাসাগর এবং ১.৩৮ বিলিয়নের ভারতীয় বাজারে প্রবেশের বিকল্প কৌশল। আই পি এস-এর এক সক্রিয় অংশ হিসেবে ন’টি দক্ষিণ এশীয় দেশের  মধ্যে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, মলদ্বীপ, মায়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার মতো সাতটি ছোট দেশকে চিন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সাহায্যের প্রলোভন দেখিয়ে আঞ্চলিক ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা ভারতকে বিপদে ফেলতে চাইছে। মার্কিন উপস্থিতি এবং কৌশলী পদক্ষেপ অঞ্চলটিতে সাম্যাবস্থা বজায় রাখার পাশাপাশি অঞ্চলটির রাজনীতিতে ভারতের প্রভাবের যৌক্তিকতাকে কৌশলগত দিক থেকে স্বীকৃতি দেবে। একই সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে আঞ্চলিক নেতৃত্ব অর্জনের জন্য উৎসাহিত করছে এবং কিছু ছোট দেশের ভয়কে প্রশমিত করছে যারা ভারতকে হুমকি হিসেবে দেখে।

দক্ষিণ এশীয় দেশগুলি অর্থনৈতিক বৃদ্ধির জন্য তাদের সম্পদকে কৌশলগত সংযোগ গড়ে তুলতে এবং পরিকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যবহার করতে আগ্রহী। এই দেশগুলি উন্নয়নের জন্য চিনা সহায়তার প্রাপক এবং ভারতীয় রাজনৈতিক প্রভাবের ভারসাম্য বজায় রাখতে চিনকে ব্যবহার করছে। নেপাল দ্বারা সদ্য অনুমোদিত এম সি সি-র মতো অর্থনৈতিক পরিকাঠামো, ২০২২ সালে শুরু হওয়া জি৭ সম্মেলনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগ বিল্ড ব্যাক বেটার ওয়ার্ল্ড-এর (বি থ্রি ডব্লিউ) মতো নয়া ভূ-রাজনৈতিক তত্ত্বের মাধ্যমে নতুন সুযোগ সামনে উঠে আসছে। চিন, ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো তিনটি বৃহৎ শক্তির সামনে নিজেদের স্বার্থ উত্থাপিত করা এবং তাদের বিরোধিতা করার সম্ভাবনা ছোট দেশগুলির জন্য কূটনৈতিক ভাবে দুরূহ। নেপালে সরকার পরিবর্তনের পর এম সি সি-র অনুমোদনের পাশাপাশি চিনের প্রতিক্রিয়া এবং শ্রীলঙ্কায় এমসিসিকে অনুমোদনে ব্যর্থতা এই বাস্তবতাকেই তুলে ধরে। এটি আই পি আর-এ উদ্ভূত এক নতুন দ্বিমেরুকরণের সঙ্গে ছোট দেশগুলির বৈদেশিক নীতি নির্ধারণের স্বাধীনতার উপরে প্রভাব ফেলবে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.