-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
ভারত বর্তমানে একটি নিরাপদ সাইবার পরিসর নির্মাণ করতে এবং সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগকে অগ্রাধিকার দিতে একটি বৈশ্বিক অংশীদারিত্বের নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে
২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর ভারত জি২০-র সভাপতিত্বের ভার গ্রহণ করে। জি২০ এমন একটি গোষ্ঠী যা বিশ্বের ২০টি বৃহত্তম অর্থনীতিকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসে। রাশিয়া-ইউক্রেন সঙ্কটের কারণে অতিমারি-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের শ্লথ গতি এবং বর্ধিত ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার নিরিখে গত দু’বছরে জি২০-র অগ্রাধিকারগুলি বিবর্তিত হয়েছে। যদিও ডিজিটাল গণপরিকাঠামো, জলবায়ু পরিবর্তন ও স্থিতিশীলতা, সরবরাহ শৃঙ্খল স্থিতিস্থাপকতা এবং সংশোধিত বহুপাক্ষিকতাবাদের মতো বিষয়গুলি ভারতের কর্মসূচিতে প্রাধান্য পাবে। বিশ্ব যখন একুশ শতকের তৃতীয় দশকে প্রবেশ করেছে, তখন এই সভাপতিত্ব ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহণে সাহায্য করবে।
জি২০ ফোরামে উন্নত সাইবার নিরাপত্তা সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো এবং ডিজিটাল গণমঞ্চের নিরাপত্তা ও সংহতি সুনিশ্চিত করতে অবদান রাখতে পারে। সুতরাং ২০২৩ সালে ভারতের সভাপতিত্বে ডিজিটাল কর্মসূচির আওতায় সাইবার নিরাপত্তা একটি প্রধান মনোযোগের কেন্দ্র হতে চলেছে।
তবে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র যা এখনও অস্থিতিশীল রয়ে গিয়েছে এবং জি২০ স্তরে যা ধারাবাহিক মনোযোগের দাবি রাখে, তা হল সাইবার নিরাপত্তা। একটি নিরাপদ সাইবার পরিসরের প্রয়োজনীয়তা অত্যাবশ্যক। কারণ সাইবার হুমকির সংখ্যা ও ধরনে একটি তাত্পর্যপূর্ণ বৃদ্ধি লক্ষ করা গিয়েছে, বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোতে: সর্বশেষ উদাহরণ হল একটি র্যানসমওয়্যার আক্রমণের কারণে নয়াদিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেসে সৃষ্ট বিপর্যয়ের ঘটনা। ২০২২ সালের মাইক্রোসফ্ট ডিজিটাল ডিফেন্স রিপোর্ট অনুসারে, রাষ্ট্র-সমর্থিত শক্তিগুলি তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্র, আর্থিক পরিষেবা, পরিবহণ ব্যবস্থা এবং যোগাযোগ পরিকাঠামো-সহ গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠা্মোর উপর অত্যাধুনিক সাইবার আক্রমণের পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে। যদিও এ ধরনের হুমকির সম্ভাব্য সর্বগ্রাসী প্রভাব এই গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোগুলির সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ার এবং ডিজিটাল গণমঞ্চগুলিকে বিপর্যস্ত করার ক্ষমতা রাখে অর্থাৎ সেই সব পরিকাঠামো যা সরকারি পরিষেবা সরবরাহ করতে সক্ষম করে। সুতরাং সাইবার সুরক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো এবং ডিজিটাল গণমঞ্চগুলি জাতীয় নিরাপত্তা, উন্নত প্রশাসন ও সর্বোপরি নাগরিকদের আস্থা বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত জরুরি।
জি২০ ফোরামে উন্নত সাইবার নিরাপত্তা সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো এবং ডিজিটাল গণমঞ্চের নিরাপত্তা ও সংহতি সুনিশ্চিত করতে অবদান রাখতে পারে। সুতরাং ২০২৩ সালে ভারতের সভাপতিত্বে ডিজিটাল কর্মসূচির আওতায় সাইবার নিরাপত্তা একটি প্রধান মনোযোগের কেন্দ্র হতে চলেছে।
২০১৫ সালে জি২০ আন্টালিয়া শীর্ষ সম্মেলনে বৈশ্বিক নেতারা স্বীকার করে নিয়েছেন যে, আমরা ইন্টারনেট অর্থনীতির যুগে বাস করছি যা আমাদের সামনে সুযোগ এবং প্রতিবন্ধকতা দুইই নিয়ে এসেছে। ২০১৬ সালে চিনা প্রেসিডেন্সির সময় একটি জি২০ ডিজিটাল ইকোনমি টাস্ক ফোর্স গঠিত হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল ডিজিটাল প্রযুক্তি সম্পর্কিত সমস্যাগুলি মোকাবিলায় একটি অভিন্ন সাধারণ বোঝাপড়া তৈরি করা, তবে সাইবার নিরাপত্তা সেই পরিসরের অন্তর্ভুক্ত ছিল না। ২০২০ সালে সৌদি প্রেসিডেন্সি জি২০ সাইবার সিকিউরিটি ডায়লগের (ডিজিটাল ইকোনমি টাস্ক ফোর্সের অংশ হিসাবে) সূচনা করে এবং এমএসএমই-গুলির (ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি আকারের উদ্যোগ) সাইবার স্থিতিস্থাপকতার উপর মনোযোগ দিয়ে ডিজিটাল অর্থনীতি এবং সাইবার নিরাপত্তার ব্যবধানের মাঝে সেতুবন্ধন করে। ডিজিটাল অর্থনীতি মন্ত্রীদের বৈঠকে ভারত ডিজিটাল মঞ্চগুলিকে বিশ্বস্ত, নিরাপদ এবং সুরক্ষিত করার তাত্পর্যকে তুলে ধরে।
২০২১ ও ২০২২ সালে যথাক্রমে ইতালি ও ইন্দোনেশিয়ার সভাপতিত্বে সাইবার নিরাপত্তার উপর মনোযোগ বহাল ছিল, যা ডিজিটাল ইকোনমি ওয়ার্কিং গ্রুপের আলোচনায় সাইবার পরিসরের উপর জোর দেওয়ার মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়ার সভাপতিত্বে সাম্প্রতিকতম বালি লিডারস ডিক্লেয়ারেশনে সাইবার নিরাপত্তার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অন্য বিষয়গুলির মধ্যে বিশেষ করে যেগুলির উপর আলোকপাত করা হয়েছে, সেগুলি হল:
১) বিভ্রান্তিমূলক প্রচার ও সাইবার হুমকি মোকাবিলা এবং সংযোগ পরিকাঠামোয় নিরাপত্তাকে সুনিশ্চিত করার গুরুত্ব প্রদান;
২) সাইবার সংক্রান্ত ঘটনার প্রতিবেদনে বৃহত্তর অভিন্নতা অর্জনের বিষয়ে ফিন্যান্সিয়াল স্টেবিলিটি বোর্ডের পরামর্শ প্রদান।
এটি জি২০-র এই স্বীকৃতিই প্রদর্শন করে যে, গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো এবং ডিজিটাল মঞ্চগুলির নিরাপত্তা এবং নিরবচ্ছিন্ন কার্যকারিতার উপর ডিজিটাল অর্থনীতির বিশ্বাসযোগ্যতা নির্ভর করে। এই ব্যবস্থাগুলিকে উন্নততর সুরক্ষা জোগানোর নিরিখে ভারত বাকি সদস্যদের সঙ্গে নির্দেশিকা নীতিগুলি গ্রহণ এবং ব্যবহারিক উপায়ে অভিযোজনের মাধ্যমে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে জি২০-র কাজকে এগিয়ে নিতে পারে।
জি২০–র মূল উদ্যোগে সাইবার নিরাপত্তাকে আরও স্পষ্ট ভাবে তুলে ধরার সময় এসেছে, বিশেষ করে যখন সাইবার পরিসরে নিয়মভিত্তিক ব্যবস্থা সৃষ্টির প্রচেষ্টা সীমিত সাফল্য অর্জন করেছে।
ভারতের কর্মসূচিতে বিশেষ করে নিম্নলিখিত বিষয়গুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত:
সংক্ষেপে এ কথাই বলা যায় যে, সাইবার নিরাপত্তা আন্তর্জাতিক ঘটনাবলির একটি অপরিহার্য প্রেক্ষিত হয়ে উঠেছে, যা তার অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবের দরুন যথেষ্ট মনোযোগের দাবি রাখে। জি২০-র মূল উদ্যোগে সাইবার নিরাপত্তাকে আরও স্পষ্ট ভাবে তুলে ধরার সময় এসেছে, বিশেষ করে যখন সাইবার পরিসরে নিয়মভিত্তিক ব্যবস্থা সৃষ্টির প্রচেষ্টা সীমিত সাফল্য অর্জন করেছে। ২০২৩ সালে জি২০-র সভাপতি হিসাবে ভারত এ কথাই সুনিশ্চিত করতে পারে যে, ক্ষেত্রটি যেন বৈশ্বিক মঞ্চে তার প্রাপ্য গুরুত্ব পায়।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Dr Sameer Patil is Director, Centre for Security, Strategy and Technology at the Observer Research Foundation. His work focuses on the intersection of technology and national ...
Read More +