Published on Mar 09, 2023 Updated 2 Days ago

সরকারের নিরলস শক্তি, পরিচালনা, উদ্ভাবন এবং দ্রুত স্ব-সংশোধনের দ্বারা ২০২২ চালিত হয়েছে।

ভারত: ২০২২ সালের দৃশ্যপট এবং তদুপরি

কোভিড-১৯ অর্থনীতির বিপুল ক্ষতি করায় এবং ধনী ও দরিদ্র উভয় ধরনের মানুষের মৃত্যু হওয়ার কারণে আপাতদৃষ্টিতে ২০২০ ছিল আতঙ্কের বছর। ২০২১ সালটি ছিল আশার বছর। বিশেষত ব্যাপক টিকাকরণ কর্মসূচি, আপৎকালীন চিকিৎসা সুবিধা বৃদ্ধি এবং ৮০০ মিলিয়ন নাগরিকের জন্য বিনামূল্যে খাদ্যশস্যের মতো বিশেষ সামাজিক সুরক্ষা প্রদানের দরুন সে বছর অতিমারির প্রকোপ নিস্তেজ হয়েছে। ২০২২ ছিল উপলব্ধি এবং সংহতির বছর: এই উপলব্ধি যে, ভারত এখনও বহিরাগত হুমকির সামনে অরক্ষিত এবং অতীতের লাভগুলিকে প্রাতিষ্ঠানিক স্থিতিস্থাপকতায় সমন্বিত করার জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক কার্যকারিতা, পুঁজির বণ্টন ও তার ব্যবহার, আমাদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা পরিষেবাগুলির সুযোগ ও প্রসার বৃদ্ধি, প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি এবং জ্বালানি নিরাপত্তায় কাঠামোগত পরিবর্তন।

২০২২ ছিল উপলব্ধি এবং সংহতির বছর: এই উপলব্ধি যে, ভারত এখনও বহিরাগত হুমকির সামনে অরক্ষিত এবং অতীতের লাভগুলিকে প্রাতিষ্ঠানিক স্থিতিস্থাপকতায় সমন্বিত করার জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক কার্যকারিতায় কাঠামোগত পরিবর্তন।

অভ্যন্তরীণ রাজনীতি – একই রকম

কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সরকারের পরবর্তী নির্বাচনের নিরিখে প্রস্তুত হওয়ার জন্য ২০২৪ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সময় রয়েছে এবং এই নির্বাচনে তাদের হারানো কঠিন হবে। কিন্তু বিজেপির ব্যাপক বৃদ্ধি গভীরতা এবং প্রসারের নিরিখে কিছুটা হলেও কমেছে। বিদ্যমান সুবিধার অগ্রগতি আগামী দিনেও বজায় থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর একটি প্রধান কারণ হল, প্রাথমিকভাবে হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, গোয়া, কর্নাটক এবং উত্তরাখণ্ডের মতো যে রাজ্যগুলিতে প্রতিযোগিতামূলক বিকল্প নেতৃত্বের অভাব ছিল, সে সব রাজ্যে তারা এখনও শাসন চালিয়ে যাচ্ছে। তার পরবর্তী পর্যায়ের বৃদ্ধি অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, তামিলনাড়ু, কেরল, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, দিল্লি এবং পঞ্জাবের মতো রাজ্যে শিকড় গেড়ে থাকা আঞ্চলিক দলগুলির প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন হয়েছে।

ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (আইএনসি) শাসিত রাজস্থান এবং ছত্তিশগড়ে ২০২৩ সালে নির্বাচন হতে চলেছে, যেমনটা হতে চলেছে বিজেপি-শাসিত কর্নাটকেও। তিনটি রাজ্যের জন্যই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে যত্ন আশা করা যায়। এই বলে, বিজেপি লোকসভার ৪৫২টি আসনের মধ্যে ৩০৩টি দখল করেছে, যা মোট ভোটের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি। জোট দলগুলি ছাড়াই এটির একটি শক্তিশালী কার্যকরী সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, যা দলটিকে অন্যত্র তাদের কার্যকরী মনোযোগ দেওয়ার রাজনৈতিক পরিসর প্রদান করে। কিন্তু এমনটা কি তারা করবে? খুব সম্ভবত না। বিজেপি-র রথ রোলস রয়েসের মতোই অব্যর্থ দর্শন দ্বারাই পরিচালিত। অর্থাৎ একটি ‘যথেষ্ট ভাল’ ঝুঁকি ব্যবধানই যথাযথ নয়। লক্ষ্য হল শূন্য রাজনৈতিক ঝুঁকি বা শূন্য রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা।

দলটির নিবেদিত ভোটারদের ব্যক্তিগত জনকল্যাণকে প্রত্যক্ষ ভাবে সহায়তা না জুগিয়ে জনসম্পদকে সাধারণ মানুষের পরিষেবার কাজে ব্যবহার করার প্রয়াসই তাদের কাছ থেকে আশা করা যায়। ক্ষমতায় থাকাকালীন শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকার নয়, ২০টি বৃহত্তম রাজ্যের মধ্যে ন’টিতেও তাদের আর্থিক নীতি বহাল রয়েছে। কিন্তু ক্ষমতা তার নিজস্ব রাজনৈতিক ঔদ্ধত্যের জন্ম দেয়। যার ফলে আম আদমি পার্টি পঞ্জাবে শীর্ষ অবস্থানে পৌঁছতে এবং ১৫ বছর যাবৎ বিজেপি শাসনের অধীনে থাকার পরে সদ্য একীভূত দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার মাধ্যমে দিল্লিতে নিজেদের শিকড় আরও গভীর ভাবে প্রোথিত করতে সক্ষম হয়েছে।

ইতিমধ্যে, ভারত জোড়ো যাত্রা (লিঙ্ক ভারত মার্চ) দর্শকদের বিমোহিত করেছে। রাহুল গান্ধী মুগ্ধ, তারকাখচিত অনুসারীদের একটি কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেন, যার মধ্যে ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পূর্ববর্তী গভর্নর রঘুরাম রাজনও ছিলেন।

কূটনীতি- বুদ্ধিমান পদক্ষেপ

বছরের সেরা কূটনীতিক ছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর, যিনি দেশের জন্য লোভনীয় দামে জ্বালানি ক্রয়ের কথা মাথা রেখে রাশিয়াকে দোষী সাব্যস্ত না করে এবং পশ্চিমী দেশগুলির মূল্যবোধভিত্তিক আহ্বানের সঙ্গে আপস না করার কঠিন কাজটি করে ‘পশ্চিমী জোটে’ সদ্য-অর্জিত বন্ধুদের রোষের কারণ হন। রুশ তেল বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা এবং ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার ফলে বাজারে জ্বালানির দাম দ্রুত হারে বেড়েছে। ইউরোপ দশকব্যাপী সস্তায় রুশ তেল ও গ্যাস আমদানি করা সত্ত্বেও পেট্রোলিয়াম আমদানি-নির্ভর ভারত এবং অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতির উপর প্রেসিডেন্ট পুতিনের ক্ষমতা খর্ব করার জন্য সুলভ মূল্যে লব্ধ রুশ তেল বয়কট চাপিয়ে দেওয়ার বৈষম্যের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন জয়শঙ্কর। ভবিষ্যতে পশ্চিমী জোট দেশগুলির সঙ্গে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও বর্তমানে ভারতের জন্য রাশিয়া থেকে অস্ত্র সরবরাহের সুবিধা বজায় রাখা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। আরও গুরুত্বপূর্ণ হল, একটি দুর্বল রাশিয়া চিন ছাড়া কারও স্বার্থে লাগবে না।

২০২৩ সালব্যাপী জি২০-র পর্যায়ক্রমিক প্রেসিডেন্সির দায়িত্ব নেওয়ার মাধ্যমে ভারত অস্থায়ীভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলির স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করার ভার বহন করছে। এই ক্ষমতা সে পেয়েছে ইন্দোনেশিয়ার কাছ থেকে এবং বর্তমান বছরের শেষে তা ব্রাজিলের হাতে তুলে দেবে। এটি নেহরু-যুগের একটি পরিচিত ভঙ্গি।  কিন্তু দ্ব্যর্থহীন ‘ধনী হওয়া গৌরবজনক’ মন্ত্রে অভিযোজিত হয়ে সাফল্য অর্জন করা এক বিশ্বায়িত অর্থনীতিতে তার সাবলীলতা প্রশ্নের মুখে পড়ছে। এ কথা একই রকম অসম্ভাব্য যে, ভারত রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে একটি শান্তি মীমাংসার জন্য আলোচনা চালাতে সক্ষম। কারণ ইউরোপীয় ঘটনাবলিতে ভারতের বর্ধমান উপস্থিতি ব্যাহত করার জন্য চিন এ হেন যে কোনও প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করার চেষ্টা চালাবে৷

বৃদ্ধি এবং মুদ্রাস্ফীতি- উভয় ক্ষেত্রেই সীমিত সাফল্য

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে বৃদ্ধির প্রত্যাশাকে বাঁচিয়ে রাখার মতো একটি শক্ত পথে হাঁটছে বিশ্ব। চিন থেকে আফ্রিকার কম টিকাপ্রাপ্ত দেশগুলিতে, যেখানে চিনা সংস্থাগুলি সক্রিয়, সেখানে অতিমারির পুনরায় ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা একটি সম্পূর্ণ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে ব্যাহত করেছে। তা সত্ত্বেও, চিন কর্তৃক কোভিড নির্মূল করার ব্যর্থ কৌশল পরিত্যাগ করা বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলকে পুনরুজ্জীবিত করবে, জ্বালানি-সহ পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি করবে এবং উৎপাদিত পণ্য সরবরাহ করবে। ইউরোপে একটি হিমায়িত সংঘাত এবং পুনরুজ্জীবিত অর্থনৈতিক কার্যকলাপ ভারতের পক্ষে অনুকূল। কিন্তু বাস্তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতি এবং অবশিষ্ট বিশ্বের রসাতলে যাওয়া আটকাতে মুদ্রাস্ফীতির কারণকে শিকড় থেকে উৎপাটন করার জন্য ‘নিজের অবস্থানে অনড় থাকা’র ফেডারেল রিজার্ভের কঠোর অবস্থান।

দেশীয় ‘বৃদ্ধি-মুদ্রাস্ফীতি গতিশীলতা’র সঙ্গে তাল মিলিয়ে খানিক হ্রস্ব গতিতেই আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস ফেডারেল রিজার্ভ দ্বারা নির্ধারিত উচ্চ সুদের হারের দিক নির্দেশনামূলক নেতৃত্ব অনুসরণ করার বিষয়ে নমনীয় ছিলেন। জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকির মুখে থাকা ভারতীয় টাকার এদেশ থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে পুঁজির উড়ানের ফলে অবমূল্যায়ন হয়, কিন্তু অবশ্যই এক নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে। আমদানিকৃত পণ্য এবং জ্বালানির অভ্যন্তরীণ মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আরবিআই এবং অর্থ মন্ত্রকের মধ্যে কার্যকর সমন্বয় অভ্যন্তরীণ দাম কমিয়ে আমদানিকৃত পণ্যের উপর কার্যকর করের হারকে যৌক্তিক করে তোলে, যখন জ্বালানি রফতানি থেকে ব্যাপক লাভের উপর কর আরোপ করা হয়েছিল।

লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি অভ্যন্তরীণ মুদ্রাস্ফীতি কর রাজস্বের পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে, যা অর্থনৈতিক মন্দায় ক্ষতিগ্রস্তদের উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে, যদিও তা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে নয়। কেন্দ্রীয় সরকার জিডিপি-র  প্রায় ০.৬ শতাংশ ব্যবহার করে প্রতি মাসে ৮০০ মিলিয়ন নাগরিকের মধ্যে মাথাপিছু বিনামূল্যে পাঁচ কিলোগ্রাম দানাশস্য বিতরণের ব্যবস্থা করেছে, যা সরকারি কর্মচারীদের জন্য পেনশনের পরেই ভারতের বৃহত্তম জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি। এটি একটি ব্যয়বহুল ব্যবস্থা হলেও জনসংখ্যার সর্বনিম্ন তিনটি স্তরে অতিরিক্ত উপার্জনের সঞ্চার করে এবং এর ফলে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি হয়।

বিশ্লেষকরা দেখেছেন, ভারতে নন-মেরিট ভর্তুকির পরিমাণ জিডিপি-র ১২ শতাংশেরও বেশি, যা একটি উল্লেখযোগ্য প্রত্যক্ষ উপার্জন ভর্তুকির মাধ্যমে অগণিত দুর্বল পরিবারকেন্দ্রিক কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলিকে প্রতিস্থাপন করার জন্য যথেষ্ট। এমনটা করার অর্থ হল উত্তর ভারতের কৃষকদের কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যে শস্য সংগ্রহে রাজ্যের ক্ষমতা খর্ব করা এবং এর ফলে ১৯৬৬-৬৭ সালে সবুজ বিপ্লবের পর থেকে এই ভর্তুকির সুবিধাভোগী বেশির ভাগ সচ্ছল কৃষকের কাছ থেকে ঐতিহাসিক ভাবে একটি অর্থনৈতিক অবলম্বন সরিয়ে নেওয়া। ২০২০ সালে বৈচিত্র্যময় উত্পাদনশীলতা বাড়ানোর জন্য মোদী সরকার দ্বারা কৃষি বাজারগুলির উদারীকরণের চেষ্টা একটি শক্তিশালী নেতিবাচক প্রতিরোধকে উস্কে দেয়৷ এই প্রচেষ্টাটি পরের বছরেই পরিত্যাগ করা হয়। এবং এই অচলাবস্থা নিকট ভবিষ্যতেও বজায় থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। খাদ্য, জ্বালানি এবং সারের উপর কৃষি ভর্তুকির খরচ জিডিপি-র প্রায় ২ শতাংশ। উৎপাদনে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টি না করা এবং পরিবারগুলিকে যথেষ্ট কাজের সুযোগ না থাকা কৃষি ক্ষেত্রের দিকে ঠেলে দেওয়ার মূল্য হল এটি।

ভারতে প্রকৃত বৃদ্ধি – যা অতিমারির পূর্বেও দুর্বল ছিল – প্রতি বছর ৫.৫ থেকে ৬ শতাংশ হারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে চলেছে। অদূর ভবিষ্যতে সশক্তিকরণ এবং স্থিতিশীলতাই ভারতীয় অগ্রাধিকার হয়ে থাকবে এবং পরিকল্পনাবিদরা চেষ্টা চালাবেন কীভাবে উচ্চতর বৃদ্ধির  জন্য পরিকাঠামোগত বাধাগুলিকে অপসারণ করা যায়। প্রশাসনিক সীমাবদ্ধতা এ ক্ষেত্রে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার দরুন প্রতিষ্ঠানগুলি বিপাকে পড়ছে, যা পদ্ধতিগত সমাধানের জন্য খুব একটা আদর্শ নয়। নির্বাচনী ব্যবস্থা সরকারকে দ্রুত হারে গ্রহণযোগ্য মাত্রায় সরকারি পরিষেবা বৃদ্ধির জন্য একটি অংশগ্রহণমূলক, অগ্রাধিকারপন্থী পথে চালিত করতে সমর্থ নয়। বেসরকারি ক্ষেত্রের ভূমিকা এবং আকার বৃদ্ধি করা, সরকারি কার্যকারিতাকে মূল সার্বভৌম দায়িত্বে পর্যবসিত করা এবং ভবিষ্যতের বৃদ্ধি থেকে ক্রমবর্ধমান আর্থিক পুঁজিগুলিতে সরকারি অংশীদারিকে সীমাবদ্ধ করার মতো কাজগুলি বিশ বাঁও জলে রয়েছে। লক্ষ্যযুক্ত, অব্যর্থ, সর্বজনীন সামাজিক সুরক্ষা পরিষেবাগুলির অনুপস্থিতিতে, প্রযুক্তিচালিত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অসাম্যও বৃদ্ধি পেতে বাধ্য, যা একটি ভিন্নধর্মী, বহুভাষিক, বহুধর্মীয়, বহু-সাংস্কৃতিক, মহাদেশীয় মাপকাঠির ‘সাম্প্রতিক’ গণতন্ত্রে সামাজিক গঠনকে আরও ভেঙে ফেলবে।

অদূর ভবিষ্যতে সশক্তিকরণ এবং স্থিতিশীলতাই ভারতীয় অগ্রাধিকার হয়ে থাকবে এবং পরিকল্পনাবিদরা চেষ্টা চালাবেন কীভাবে উচ্চতর বৃদ্ধির জন্য পরিকাঠামোগত বাধাগুলিকে অপসারণ করা যায়।

ভারত কখনওই ব্যবসায়িক মানসিকতা, অভ্যন্তরীণ লজিস্টিকস বা সহায়ক সরকারি প্রক্রিয়া ও প্রবিধানসম্পন্ন একটি আধুনিক, রফতানিকারী দেশ ছিল না। মোদী সরকার দেশের ব্যবসায়িক পরিস্থিতি উন্নত করার চেষ্টা চালিয়েছে এবং বিচারবিভাগকে অপরাধমুক্ত করা এমন একটি চলমান প্রচেষ্টা। বিমান, রেল, সড়ক এবং বন্দরগুলির মতো পরিকাঠামোগত সংযোগগুলির উন্নতি উল্লেখযোগ্য গতিশীলতা প্রদান করেছে। পৌর স্তর থেকে উপরের স্তর পর্যন্ত সরকারি প্রক্রিয়াগুলির ডিজিটালকরণ এবং সংযোগ শৃঙ্খল সশক্তকরণের মতো সুবিশাল কাজ এখনও পর্যন্ত ধীর গতিতে এগিয়ে চলেছে৷ মূলধনী ব্যয় এবং বাজেটে নির্ধারিত প্রত্যাশিত আয় ও ব্যয়ের পরিমাণের উপর প্রমাণিত তদারকি বাড়ানোর জন্য এবং সরকারি খাতের রাজস্ব সংগ্রহ ও ব্যয়ের অডিট রিপোর্টিংকে গতিশীল করে তোলার জন্য পরিকাঠামোগত প্রকল্পগুলি সমন্বিত করার উদ্দেশ্যে নির্মিত জাতীয় তথ্যভাণ্ডার ‘গতি শক্তি’কে কাজে লাগিয়ে সব বাজেট লাইন আইটেমের ক্ষেত্রে একই ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

প্রায় দশ বছর ক্ষমতায় থাকার পর নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকার খানিক তৃপ্তি অনুভব করতে পারে। নিরলস শক্তি, উদ্যম, উদ্ভাবন এবং দ্রুত আত্ম-সংশোধন উন্নয়নের গতিকে অব্যাহত রেখেছে। সামনের দিকে তাকালে আগামী দিনে প্রাতিষ্ঠানিক উৎকর্ষের জন্য প্রযুক্তিগত ভিত্তি নির্মাণ করাই আরও ভাল পরিকল্পনা হতে পারে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.