Author : Manjari Singh

Published on Apr 04, 2023 Updated 0 Hours ago
ভারত-ইউএই-ইজরায়েল সম্পর্ক: স্বাভাবিকীকরণ থেকে পরিপূরক, সমন্বয় এবং সহযোগিতা

এই প্রতিবেদনটি রাইসিনা এডিট ২০২৩ সিরিজের অংশ


সম্পর্কহীনতা থেকে গোপন আঁতাত হয়ে সম্পর্কের স্বাভাবিকীকরণ পর্যন্ত… ভারত, ইজরায়েল এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির (ইউএই) মধ্যে অংশীদারিত্ব বিগত দশকগুলিতে পরিবর্তিত হয়েছে। ভারত-ইজরায়েল-ইউএই ত্রিপাক্ষিকতা বর্তমান আকারে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাস্তববাদ এবং গঠনবাদ পদ্ধতির মধ্যে সংমিশ্রণের একটি সুনির্দিষ্ট উদাহরণ প্রদান করে। রিয়েলপলিটিককে কাজে লাগানোর মাধ্যমে তিনটি দেশকে তাদের জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ার অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। একই সময়ে, ভূ-রাজনৈতিক এবং প্রধানত ভূ-অর্থনৈতিক বাস্তবতা উদীয়মান অপ্রচলিত বৈশ্বিক সঙ্কটের সঙ্গে তিনটি দেশকে ভারত-মধ্যপ্রাচ্যের খাদ্য ও শক্তি করিডোর নির্মাণের মতো অভিন্ন স্বার্থের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পরিচালিত করেছে।(১)

১৯৪৮ সালের মে মাসে ইজরায়েলের স্বাধীনতার ভূ-রাজনৈতিক জটিলতার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৫০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ইহুদি দেশটিকে স্বীকৃতি দেয়। তবে প্যালেস্তাইনের বিষয়ে উদ্বেগের কারণে নয়াদিল্লি তেল আভিভের সঙ্গে তার সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চার দশকেরও বেশি সময় নিয়েছিল। শীঘ্রই প্রতিরক্ষা এবং কৃষি তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তি হয়ে ওঠে। বহুমুখী পরিসরে কৌশলগত অংশীদারিত্ব শুধুমাত্র ২০১৭ সালের জুন মাসে শুরু হয়েছিল, যখন ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইনে পৃথক ভাবে সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নয়াদিল্লির পৃথগীকরণের মনোভাবের ইঙ্গিত দেন।(২) ১৯৯২ সালের স্বাভাবিকীকরণটি প্রাথমিকভাবে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙনের সঙ্গে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশের পরিবর্তনের দ্বারা চালিত হয়েছিল। মোদী প্রশাসনের অধীনে ভূ-অর্থনৈতিক চালিকাশক্তিগুলি মতাদর্শগত ভাবে সমান্তরাল হয়েও ইহুদি দেশটির সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেছে।(৩)

বর্তমানে ভারত ও ইজরায়েলের মধ্যে মোট বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭.৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।(৪) প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ইজরায়েল ভারতের মোট অস্ত্র আমদানির প্রায় ৮.৪৮ শতাংশ সরবরাহ করে এবং রাশিয়া (৪৬ শতাংশ), ফ্রান্স (২৭ শতাংশ) এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (১২ শতাংশ) এর পরে দেশটি চতুর্থ বৃহত্তম সরবরাহকারী। কৃষি সহায়তার পরিপ্রেক্ষিতে ইজরায়েল শুধুমাত্র ভারতের সঙ্গে তার কৃষি প্রযুক্তি এবং জল সংরক্ষণ প্রযুক্তিই ভাগ করে নেয়নি, বরং সারা দেশে প্রায় ৩০টি কৃষি ‘উৎকর্ষ কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠা করেছে।(৫) কূটনৈতিক সহায়তার মতো ইজরায়েল দেশের কৃষি উন্নয়নে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে একটি বিশেষ নিয়োগ হিসাবে ভারতে তার কৃষি ও জলের সংযুক্তির দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।(৬)

ইন্দো-আমিরাতি সম্পর্ক ইতিমধ্যেই শক্তি, অর্থনীতি ও প্রবাসীদের মতো তিনটি ই-এর উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে এবং এই সম্পর্ক প্রধানত লেনদেনমূলক। ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে দুই দেশ একটি সর্বাঙ্গীন কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করে এবং একাধিক পরিসরে তাদের সম্পর্ক বিকশিত হতে শুরু করে। বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি শুধুমাত্র ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম শক্তি সরবরাহকারীই নয় (২০,৩২০.২২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)(৭), এর পাশাপাশি ২০২১-২২ সালে মোট ৭৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য করার সুবাদে তার তৃতীয় বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদারে রূপান্তরিত হয়েছে।(৮)

অন্যদিকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি একসময় ইজরায়েলের নামমাত্র প্রতিপক্ষ থাকলেও ২০১০ সাল থেকে উভয় দেশের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে ইজরায়েল আবুধাবিতে তার প্রথম কূটনৈতিক মিশন চালু করে।(৯)

এভাবে দ্বিপাক্ষিক স্তরে ইজরায়েল এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সঙ্গে ভারতের সম্পৃক্ততা এবং ইজরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মধ্যে সম্পর্কের ক্রমশ উন্নতিই ঘটেছে। ২০২০ সালের অগস্ট মাসে অতিমারি চলাকালীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় আব্রাহাম অ্যাকর্ডস-এর(১০) আওতায় সংযুক্ত আরব আমিরশাহি-ইজরায়েল সম্পর্কের স্বাভাবিকীকরণ ত্রিপাক্ষিক সম্পর্কের পথ প্রশস্ত করেছে। এটি একই সঙ্গে তিনটি অংশীদারকে ভবিষ্যতের অংশীদারিত্বের জন্য তাদের অনন্য শক্তিগুলিকে চালিত করতে সাহায্য করেছে, যার মধ্যে ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ করিডোর বরাবর একটি আন্তঃআঞ্চলিক ক্রমের সূচনা করে। এই আন্তঃআঞ্চলিক ক্রম অর্থনৈতিক পরিপূরকতা, সম্ভাব্য প্রাণবন্ত বাস্তুতন্ত্র এবং প্রযুক্তিগত ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। প্রকৃত অর্থে সম্পর্কের ‘স্বাভাবিকীকরণ’ দেশগুলিকে তিনটি সি-র দিকে চালিত করেছে: কমপ্লিমেন্টারিজ, কোঅপারেশন এবং কোলাবরেশন অর্থাৎ পরিপূরকতা, সমন্বয় এবং সহযোগিতা।

এই উন্নয়নগুলি বেশ কিছু গবেষককে এই ত্রিপাক্ষিকতাকে একটি ‘ইন্দো-আব্রাহামিক অ্যাকর্ড’(১১) হিসেবে উল্লেখ করতে চালিত করেছে, যা পশ্চিম এশিয়ায় তার প্রভাব বিস্তার করে নয়াদিল্লির নবলব্ধ, বিশ্বস্ত ভূ-রাজনৈতিক পরিসরকে প্রতিফলিত করে। এর পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার দৈত্য হিসাবে ভারতের মর্যাদা বিশ্বের কাছে আর অপরিচিত নয়। ভারতের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং বৃদ্ধি, যা দেশের ক্রয়ক্ষমতার সমতা বৃদ্ধি করেছে, এটিকে অংশীদার দেশগুলির দ্বারা সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের জন্য একটি লাভজনক বাজার করে তুলেছে।(১২)(১৩)

ভারত-ইউএই-ইরায়েল ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতা

ইজরায়েল এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার আট মাস পরে ভারত ২০২১ সালের মে মাসে এই দু’টি আঞ্চলিক শক্তির সঙ্গে একটি ত্রিপাক্ষিক অংশীদারিত্বে স্বাক্ষর করেছে। বর্তমানে ২০৩০ সালের মধ্যে আনুমানিক ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তিটির মূল্ লক্ষ্য হল সংযুক্ত আরব আমিরশাহির একটি ল্যান্ডমার্ক প্রকল্পের জন্য ভারতে উদ্ভাবনী রোবোটিক সোলার ক্লিনিং প্রযুক্তি তৈরি করা।(১৪) প্রকল্পটির একটি একক কর্মসূচি  থাকলেও এটি উদ্ভাবন এবং ব্যবসায়িক সম্ভাবনার সঙ্গে যুক্ত। তাই দুই দেশের সামগ্রিক সহযোগিতায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

একইভাবে চতুষ্পাক্ষিক স্তরে ভারত-ইজরায়েল-ইউএই এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে অর্থনৈতিক সহযোগিতার লক্ষ্যে একটি ক্ষুদ্রপাক্ষিক গঠন করেছিল। (এর পরে ২০২২ সালের জুলাই মাসে তার ‘আইটুইউটু’ নামকরণ করা হবে।) শেরপা, বিদেশমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপ্রধান… বিভিন্ন স্তরে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। জল, জ্বালানি, পরিবহণ, মহাকাশ, স্বাস্থ্য এবং খাদ্য নিরাপত্তা থেকে শুরু করে পারস্পরিক স্বার্থের বেশ কিছু প্রচলিত ও অপ্রচলিত ক্ষেত্র থাকা সত্ত্বেও বিশ্বব্যাপী আঞ্চলিক শক্তি এবং খাদ্য নিরাপত্তার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে।(১৫)

ক্ষুদ্রপাক্ষিকতার লক্ষ্য অন্তর্ভুক্তিমূলক হওয়া এবং পরিকাঠামো, সংযোগ, কম কার্বন উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উদ্যোগে সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতকেই সম্পৃক্ত করা। এভাবে ত্রিপাক্ষিক এবং চতুষ্পাক্ষিক উভয় স্তরেই তার পশ্চিম এশীয় অংশীদারদের সঙ্গে ভারতের সম্পৃক্ততার লক্ষ্য হল সহযোগিতার জন্য ক্ষেত্রগুলির মধ্যে সমন্বয় সাধন।

ভারত কি একটি আন্তঃআঞ্চলিক সংযোগ করিডোরের পরিকল্পনা করছে?

২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ইউএই এবং ইজরায়েলের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত শান্তিচুক্তিটি পশ্চিম এশীয় দুই গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারের সঙ্গে ভারতের ত্রিপাক্ষিক স্তরের মিথস্ক্রিয়াকে সহজতর করেছে।(১৬) এর আগে ভারত এই অঞ্চলে তার কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের কার্যকর প্রয়োগের মাধ্যমে পৃথকভাবে ইজরায়েল এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি উভয়ের সঙ্গেই একটি সমৃদ্ধ সম্পর্ক বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছিল।(১৭)

একইভাবে ভারত এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একটি ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি (সিইপিএ) স্বাক্ষর করেছে, যা ২০২২ সালের মে মাসে কার্যকর হয়েছে এবং তা দুই দেশের মধ্যে অবাধ, উন্মুক্ত এবং বৈষম্যহীন বাণিজ্যকে সুনিশ্চিত করে।(১৮) সর্বাঙ্গীন চুক্তিটি ৮০ শতাংশেরও বেশি বাণিজ্য পণ্যের উপর শুল্ক হ্রাস বা অপসারণের মাধ্যমে ভারতীয় বাজারে ইউএই থেকে পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে আরও বেশি লভ্যতাকে সূচিত করে।

ভারত ও ইজরায়েল তাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে সহজতর করার জন্য অনুরূপ একটি চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে।(১৯) মিশরের সঙ্গে ভারতের ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং এই অঞ্চলে তার ক্রমবর্ধমান আগ্রহ ইঙ্গিত দেয় যে, দেশটি বেশ কয়েকটি অংশীদারের সঙ্গে একটি ব্যাপক আন্তঃ-আঞ্চলিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য উন্মুখ।

এ ভাবে ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি (পারস্য উপসাগরে) এবং ইজরায়েলের (ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে) মধ্যে একটি প্রাণবন্ত ত্রিপাক্ষিক সম্পর্ক; অংশীদারদের মধ্যে ব্যাপক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি; এবং অন্যান্য আন্তঃআঞ্চলিক শক্তির অন্তর্ভুক্তি—সবই এই ইঙ্গিত দেয় যে, লোহিত সাগর ও উপসাগর হয়ে ভারত ভূমধ্যসাগরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের পরিকল্পনার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে।(২০) ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত ১২তম স্যার বানি ইয়াস ফোরামের আলোচনায় সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, সৌদি আরব, মিশর, গ্রিস, ইজরায়েল এবং সাইপ্রাসের বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।(২১)

প্রস্তাবিত করিডোরটি ভারত, উপসাগর, আফ্রিকার কিছু অংশ ও পূর্ব ভূমধ্যসাগর, ইউরোপের অঞ্চলগুলির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করবে। এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলেও এই ধরনের একটি সংযোগ করিডোর আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ পরিবহণ করিডোর(২২) এবং ইউরোপ, রাশিয়া, মধ্য এশিয়া, ইরান ও আফগানিস্তানকে ভারতের সঙ্গে সংযোগকারী চাবাহার বন্দর(২৩) গড়ে তোলার ভারতের উদ্যোগের সমতুল্য। রাশিয়া এবং ইরান পরের দু’টি প্রকল্পে ভারতের অংশীদার হলেও সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং ইজরায়েলের সঙ্গে সংযুক্তি করিডোর উন্নয়নে আমেরিকার অংশগ্রহণ বহুপাক্ষিক স্তরে ভারতের কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের সর্বোত্তম উদাহরণ। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই করিডোরগুলি তৈরি করে ভারত তার আন্তঃ-আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে শুধুমাত্র মালবাহী নিরাপদ ট্রানজিট সুরক্ষিত করার লক্ষ্যই রাখে না, তার পাশাপাশি ইন্দো-প্যাসিফিকের পশ্চিম প্রান্তে নিজের স্বার্থও রক্ষা করছে। এক দিক থেকে দেখলে এটি বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের ভারতের নিজস্ব সংস্করণ।

খাদ্য এবং জ্বালানি করিডোর

বিশ্বের অনেক অংশে কোভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাব এবং চলমান ইউরোপীয় যুদ্ধের কারণে বিদ্যমান বৈশ্বিক খাদ্যসঙ্কট বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে পশ্চিম এশিয়ায় খাদ্যের চাহিদা মারাত্মক বেড়েছে। অঞ্চলটি তার খাদ্য চাহিদার জন্য রাশিয়া এবং ইউক্রেনের উপর নির্ভরশীল। ২০২২ সালের মে মাসে খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) রিপোর্ট অনুসারে, খাদ্যের জন্য রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয়ের উপর নির্ভরশীল ৫০টি দেশের মধ্যে প্রায় ১০টি পশ্চিম এশিয়া এবং উত্তর আফ্রিকা (ডব্লিউএএনএ) অঞ্চলে অবস্থিত, সংশ্লিষ্ট দুই দেশের উপর যাদের সম্মিলিত নির্ভরতা ৩০ শতাংশের বেশি।(২৪)

ত্রিপাক্ষিক এবং চতুষ্পাক্ষিক উভয় স্তরেই, ভারত-ইউএই-ইজরায়েল দক্ষিণ এশিয়া এবং ডব্লিউএএনএ উভয় ক্ষেত্রেই খাদ্য নিরাপত্তার সমস্যা মোকাবিলায় খাদ্য করিডোর তৈরির কাজ করছে। একটি ভারত-মধ্যপ্রাচ্য খাদ্য করিডোর যা একটি নব্য পশ্চিম এশিয়ার মূল্য সরবরাহের শৃঙ্খল, এর লক্ষ্য হল তিনটি দেশের বাণিজ্যিক, বিনিয়োগ, বাজার এবং প্রযুক্তিগত সমন্বয়কে কাজে লাগিয়ে একটি ত্রিপাক্ষিক জোট গঠন করা এবং একটি খাদ্য রফতানিকারক শক্তিপুঞ্জ হয়ে ওঠা।(২৫)

উদ্ভাবনী, কৃষি-প্রযুক্তি এবং জলবায়ু-স্মার্ট প্রযুক্তি থেকে তৈরি সম্ভাব্য খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খল ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ প্রস্তাবিত সংযোগ করিডোর বরাবর বাণিজ্যিক সম্পর্ককে কার্যকর ভাবে পুনর্গঠন করতে পারে। একই সময়ে এই করিডোর আন্তঃআঞ্চলিক অংশীদারদের জন্য একটি জ্বালানি করিডোর হিসাবেও ব্যবহৃত হবে। দীর্ঘস্থায়ী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ খাদ্য এবং জ্বালানির সরবরাহ ও চাহিদার মাঝে ব্যবধান তৈরি করেছে এবং এভাবে এই দুটিই অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে উঠেছে, যা সংযোগ করিডোর দ্বারা প্রভাবিত হবে।

নিশ্চিতভাবে এ কথা বলা যায় যে, সংযোগ, জ্বালানি এবং খাদ্যের তিনটি করিডোরের ভূ-রাজনৈতিক ও ভূ-অর্থনৈতিক তাৎপর্য নতুন নয়; এই প্রকল্পগুলির প্রাণশক্তি এই সত্যের উপরেই নির্ভরশীল যে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং ইজরায়েল উভয় দেশই পৃথকভাবে ভারতের খাদ্য উত্পাদন এবং বিতরণকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ভারত-মধ্যপ্রাচ্য খাদ্য ও জ্বালানি করিডোরের কৌশলগত শক্তি এবং স্থায়িত্ব এই সত্য থেকে উদ্ভূত যে, প্রথমত দ্বিপাক্ষিক স্তরে এটি জৈবভাবে উন্নত এবং শক্তিশালী হয়েছে। বেসরকারি ক্ষেত্র, যৌথ উদ্যোগ বিনিয়োগ এবং দ্বিপাক্ষিক সরকারি-বেসরকারি সম্পৃক্ততাকে বিবেচনা করার মাধ্যমে অংশীদার দেশগুলি করিডোরের কার্যকারিতা সুনিশ্চিত করতে চাইছে।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ২০১৪ সাল থেকে ইজরায়েল ভারতের কৃষি খাতে দ্বিপাক্ষিকভাবে জড়িত ছিল যখন এটি সারা দেশে সেন্টার অফ এক্সিলেন্স (সিওই) তৈরি করা শুরু করে। বর্তমানে ভারতে বেসরকারি সংস্থাগুলি সম্পর্কিত ৩০টি ইজরায়েল-নির্মিত সিওই রয়েছে, যেগুলি কৃষকদের প্রশিক্ষণের কাজে মনোনিবেশ করে এবং ফসলের ফলন বাড়াতে কৃষি-প্রযুক্তি এবং স্মার্ট-প্রযুক্তির কার্যকর ব্যবহার সুনিশ্চিত করে। একই ভাবে ২০১৯ সাল থেকে ভারতে ফুড পার্ক স্থাপন ইতিমধ্যেই ইউএই-র লজিস্টিক পরিকল্পনার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, যা আইটুইউটু কাঠামোর আগেকার পরিকল্পনা ছিল।(২৬)

দ্বিপাক্ষিক স্তরের বাইরে সম্পৃক্ত থাকা অংশীদার দেশগুলিকে করিডোর বরাবর আরও স্থিতিশীল খাদ্য-জল-জ্বালানি সম্পর্কযুক্ত পদ্ধতি নিয়োগের দিকে মনোনিবেশ করতে সক্ষম করে। এ ভাবে আইটুইউটু-তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করে অংশগ্রহণকে আরও বাধ্যতামূলক করে তুলবে। করিডোরগুলির সুবিধাপ্রাপকদের মধ্যে আমেরিকা না থাকলেও আন্তঃআঞ্চলিক অংশীদারিত্বে দেশটির সম্পৃক্ততা এটিকে ইন্দো-প্যাসিফিকের কৌশলগত কাঠামোয় তার উপস্থিতি চিহ্নিত করে খানিক সুবিধা প্রদান করে। পশ্চিম ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যিক ও কৌশলগত পদচিহ্ন পরীক্ষা করার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে পশ্চিম এশিয়ায়, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আপাতদৃষ্টিতে তার জমি হারাচ্ছে।

তাই উভয় দেশের উদ্যোগের মধ্যে একটি সমন্বয় রয়েছে। আইটুইউটু প্রকল্পের অধীনে ইউএই ভারত জুড়ে সমন্বিত খাদ্য করিডোর এবং ফুড-পার্কগুলির একটি শৃঙ্খল নির্মাণে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। খাদ্য-জল-জ্বালানির সম্পর্ককে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ফুড পার্কগুলিকে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে তারা একই সঙ্গে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং খাদ্যের অপচয় হ্রাস, জল সংরক্ষণ ও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির উত্সগুলিকে কাজে লাগাবে। একই সময়ে করিডোর তিনটি প্রধান উদ্দেশ্য অর্জনের লক্ষ্যে খাদ্য এবং জ্বালানি নিরাপত্তার দিকগুলিকে আরও সামগ্রিকভাবে মোকাবিলা করতে চায়— যেমন, ভারতে ফসলের ফলন বৃদ্ধি; কৃষকদের উন্নতমানের বীজ সরবরাহ করা, কৃষি প্রযুক্তি সুবিধা দিয়ে সজ্জিত করা ও ফসলের উৎপাদিত পণ্য ভাল হারে বাজারজাত করার মাধ্যমে তাদের আয় বৃদ্ধি করা; এবং দক্ষিণ এশীয় ও পশ্চিম এশীয় বাজারের জন্য রফতানির গুণমান বজায় রাখা।(২৭)

সুতরাং, এটি খাদ্য নিরাপত্তার লভ্যতা, প্রাপ্যতা, ব্যবহার এবং এর ফলে সামর্থ্য ও স্থিতিশীলতার দিকগুলির উপর নজর দেবে।(২৮) করিডোর ব্যবহার জলবায়ু-স্মার্ট প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে খাদ্য ও জ্বালানির লভ্যতা এবং ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি সুনিশ্চিত করে, কৃষি প্রযুক্তি প্রাপ্যতার দিকটিকে সম্বোধন করে; অতিরিক্ত এবং স্থিতিশীল সরবরাহ দ্রব্যমূল্য বজায় রাখতে সাহায্য করে খাদ্য নিরাপত্তার সামর্থ্য, ব্যবহার এবং স্থিতিশীলতার উপাদানগুলির উপর নজর দেয়।

দ্বিতীয় প্রকল্পটি আইটুইউটু এবং ত্রিপাক্ষিক সম্পৃক্ততার উপর জোর দিয়েছে, যার লক্ষ্য হল দ্বারকা, গুজরাটে ৩০০ মেগাওয়াটের বায়ু এবং সৌরশক্তির ক্ষমতা-সহ একটি হাইব্রিড শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। ইউএস ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (ইউএসটিডিএ) এবং ইউএই-র ইন্টারন্যাশনাল রিনিউয়েবল এনার্জি এজেন্সি (আইআরইএনএ) জ্ঞান ও বিনিয়োগ অংশীদার হিসেবে এই প্রস্তাবে বিনিয়োগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইউএসটিডিএ প্রকল্পের সম্ভাব্য সমীক্ষায় ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। বেসরকারি খাতের সংস্থাগুলির সম্পৃক্ততা প্রকল্পটিকে ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০০ গিগাওয়াট অজীবাশ্ম জ্বালানির ধারণক্ষমতায় পৌঁছনোর ভারতের লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম করবে। এভাবে প্রকল্পের সাফল্য পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তিক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খল কেন্দ্র হওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের সম্ভাবনাকে সংজ্ঞায়িত করবে।(২৯)

প্রতিটি অংশীদারের শক্তি অর্থাৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি, ইজরায়েলের শীর্ষস্থানীয় জলবায়ু-বান্ধব প্রযুক্তি, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিনিয়োগ ক্ষমতা এবং ভারতের মানবসম্পদ, বিস্তীর্ণ চাষযোগ্য জমি এবং ব্যবসায়িক সম্ভাবনাকে সহজ করার জন্য সীমিত কূটনৈতিক প্রতিবন্ধকতাকে কাজে লাগিয়ে যৌথ উদ্যোগ হয়ে উঠতে পারে। ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ করিডোর বরাবর আন্তঃ-আঞ্চলিক খাদ্য এবং জ্বালানির প্রয়োজনীয়তা পূরণে এটি একটি কার্যকর সমাধান।

উপসংহারে বলা যায়, ইজরায়েল-ইউএই সম্পর্কের স্বাভাবিকীকরণ ভারতকে দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক, চতুষ্পাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক স্তরে তার দুই প্রাণবন্ত পশ্চিম এশীয় অংশীদারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে সক্ষম করেছে। এই ধরনের বহুস্তরীয় সম্পৃক্ততা দেশগুলিকে তাদের তিন ধরনের সি – পরিপূরকতা, সহযোগিতা এবং সমন্বয়ের – বিভিন্ন পরিসরে শৃঙ্খল নির্মাণ করেছে৷ ইউরোপ-ভূমধ্যসাগর-উপসাগর-ভারত করিডোর বরাবর একটি আন্তঃ-আঞ্চলিক সংযোগ করিডোর বিকাশের ক্ষেত্রে এই ধরনের ফলাফলভিত্তিক মানসিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

একটি খাদ্য-জল-জ্বালানি সম্পর্কযুক্ত পদ্ধতি ব্যবহার করে তিনটি দেশ পশ্চিম ইন্দো-প্যাসিফিক বরাবর তাদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্ভাবনাকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে রয়েছে। এমন এক সময়ে যখন ইন্দো-প্যাসিফিক ভারতের কৌশলগত সমীকরণে ব্যাপকভাবে জায়গা করে নিয়েছে, তখন এই অঞ্চলে তার কৌশলগত উদ্দেশ্য পূরণে ইউএই এবং ইজরায়েলের সঙ্গে আরও শক্তিশালী অংশীদারিত্ব স্থাপন গুরুত্বপূর্ণ হবে। সর্বোপরি, খাদ্য, জ্বালানি এবং জল ভবিষ্যতের গুরুত্বপূর্ণ অপ্রচলিত কৌশলগত উপাদান। বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলে দক্ষতার সঙ্গে সরবরাহ করে ভারত এবং এর আন্তঃ-আঞ্চলিক অংশীদাররা বিশ্বব্যাপী শীর্ষ আলোচনায় তাদের স্থান চিহ্নিত করছে।


পাদটীকা

১) মাইকেল তানচুম, ‘দি ইন্ডিয়া-মিডল ইস্ট ফুড করিডর: হাউ দি ইউএই, ইজরায়েল অ্যান্ড ইন্ডিয়া আর ফর্জিং আ নিউ ইন্টার-রিজিওনাল সাপ্লাই চেন’, দ্য মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউট, জুলাই ২৭, ২০২২

২) সঞ্জীব মিগলানি এবং তোভা কোহেন, ‘ইন্ডিয়াজ মোদী হেডস টু ইজরায়েল, লিফটিং দ্য কার্টেন অন ক্লোজ টাইজ’, রয়টার্স, জুন ৩০, ২০১৭

৩) মঞ্জরী সিং এবং চিরায়ু ঠক্কর, ‘দ্য রিয়েল স্টোরি বিহাইন্ড ইন্ডিয়া অ্যান্ড ইজরায়েলস সারপ্রাইজিং অ্যালায়েন্স’, হারেৎজ, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২২

৪) নয়না ভরদ্বাজ, ‘ইন্ডিয়া-ইজরায়েল বাইল্যাটেরাল ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ট্রেন্ডস’, ইন্ডিয়া ব্রিফিং, অগস্ট ২৫, ২০২২

৫) মঞ্জরী সিং এবং চিরায়ু ঠক্কর, ‘ইন্ডিয়া অ্যান্ড ইজরায়েল মিন বিজনেস, ইন মেনি নিউ সেক্টরস’, দি ইকোনমিক টাইমস, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২২

৬) মঞ্জরী সিং, ‘ক্যান আইটুইউটু অ্যাড্রেস ইন্ডিয়াজ ফুড সিকিউরিটি চ্যালেঞ্জেস?’ দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২

৭) ডিরেক্টর জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি), ‘ইমপোর্ট: কমোডিটি অ্যান্ড কান্ট্রিওয়াইজ’, এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ডেটাব্যাঙ্ক, ২০২২

৮) এমব্যাসি অফ ইন্ডিয়া ইন আবু ধাবি, ‘বাইল্যাটেরাল ইকনমিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল রিলেশনস’, গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া

৯) বরক রাবিড, ‘এক্সক্লুসিভ: ইজরায়েল টু ওপেন ফার্স্ট ডিপ্লোম্যাটিক মিশন ইন আবু ধাবি’, হারেৎজ, নভেম্বর ২৭, ২০১৫

১০) ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে ইজরায়েল এবং কয়েকটি আরব দেশের মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যেমন সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, বাহরাইন এবং শেষ পর্যন্ত মরক্কো (যেটি ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে কার্যকর)। সাধারণ উত্তরাধিকারের ভিত্তিতে চুক্তিটিকে ধর্মতাত্ত্বিক গুরুত্ব দেওয়ার জন্য শান্তিচুক্তিটির নামকরণ করা হয়েছিল আব্রাহাম অ্যাকর্ডস। আব্রাহাম বা ইব্রাহিম (ইসলামে) হলেন আইজ্যাক (একজন ইহুদি) এবং ইসমাইলের (একজন আরব মুসলিম) বাবা। নামকরণ এটিই দর্শায় যে, আব্রাহাম মুসলমান এবং ইহুদি উভয়েরই পিতৃসম এবং তাই ইহুদি এবং মুসলমানরা ভ্রাতৃসম। যেহেতু পরিবার এবং রক্তের সম্পর্ক একটি ঘনিষ্ঠ সামাজিক কাঠামোর অংশ, তাই চুক্তিতে এমন একটি নাম মনোনীত করা এর সাফল্যেরই প্রতীক হবে।

১১) মহম্মদ সোলিমান, ‘অ্যান ইন্দো-আব্রাহামিক অ্যালায়েন্স অন দ্য রাইজ: হাউ ইন্ডিয়া, ইজরায়েল অ্যান্ড দি ইউএই আর ক্রিয়েটিং আ নিউ ট্রান্সরিজিওনাল অর্ডার’, মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউট, জুলাই ২৮, ২০২১

১২) ৭ শতাংশ বৃদ্ধি নিয়ে ভারতের অর্থনীতি বর্তমানে ৩.৫৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে, যা দেশটিকে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত করেছে। ক্রয়ক্ষমতার সমতার দিক থেকে ভারত তৃতীয় স্থানে রয়েছে। আরও বিশদ বিবরণের জন্য, দ্রষ্টব্য মার্টিন আর্মস্ট্রং, ‘ইন্ডিয়া ওভারটেকস ইউকে টু বিকাম ফিফথ বিগেস্ট ইকনমি’, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২।

১৩) রবি ভূতলিঙ্গম, ‘দি ‘এশিয়ান এজ’ অ্যান্ড রোল অব চায়না অ্যান্ড ইন্ডিয়া’, গ্লোবাল টাইমস, জুলাই ১৪, ২০১৯

১৪) রেজাউল এইচ লস্কর, ‘ইউএই ট্রেড ডিলস উইথ ইন্ডিয়া, ইজরায়েল হোল্ড পোটেনশিয়াল ফর এক্সটেনসিভ ট্রাইল্যাটেরাল কোঅপারেশন: নাওর গিলন’, দ্য হিন্দুস্থান টাইমস, মে ৩১, ২০২২

১৫) মিনিস্ট্রি অফ এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স, (এমইএ)

১৬) ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস পিস এগ্রিমেন্ট: ট্রিটি অফ পিস, ডিপ্লোম্যাটিক রিলেশনস অ্যান্ড ফুল নর্মালাইজেশন বিটুইন দি ইউনাইটেড আরব এমিরেটস অ্যান্ড দ্য স্টেট অফ ইজরায়েল’, ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০

১৭) আলেকজান্ডার কর্নওয়েল, ‘ইজরায়েল, ইউএই বুস্ট টাইজ উইথ ফ্রি ট্রেড প্যাক্ট’, রয়টার্স, মে ৩১, ২০২২

১৮) ‘ইউএই-ইন্ডিয়া কম্প্রিহেনসিভ ইকনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট’, ইউনাইটেড আরব এমিরেটস মিনিস্ট্রি অফ ইকনমি

১৯) মিনিস্ট্রি অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, ‘ইন্ডিয়া-ইজরায়েল ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ) নেগোসিয়েশনস’, গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া

২০) সিদ্ধান্ত সিবাল, ‘প্ল্যানস আফুট ফর কানেক্টিভি ফ্রম মেডিটেরিয়ান টু ইন্ডিয়া ভিয়া গালফ’, ডব্লিউআইওএন, অক্টোবর ৫, ২০২১

২১) সিদ্ধান্ত সিবাল, ‘প্ল্যানস আফুট ফর কানেক্টিভিটি ফ্রম মেডিটেরিনিয়ান টু ইন্ডিয়া ভায়া গালফ’

২২) ‘এক্সপ্লেনড: আইএনএসটিসি, দ্য ট্রান্সপোর্ট রুট দ্যাট হ্যাজ রাশিয়া অ্যান্ড ইন্ডিয়াজ ব্যাকিং’, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, জুলাই ১৪, ২০২২

২৩) মঞ্জরী সিং, ‘দ্য চাবাহার পোর্ট ইমপ্যারাটিভ’, ইন ইরান আন্ডার ইব্রাহিম রাইসি: দ্য ভিউ ফ্রম ইন্ডিয়া, স্পেশ্যাল রিপোর্ট নম্বর ১৫৪, সম্পাদনা কবীর তানেজা, অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন, অগস্ট ২০২১, পৃষ্ঠা ৫-৯

২৪) লেবানন, মিশর, লিবিয়া, ওমান, সৌদি আরব, ইয়েমেন, তিউনিসিয়া, ইরান, জর্ডন এবং মরক্কো, রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে প্রচুর পরিমাণে আমদানি করে। অতিরিক্ত তথ্যের জন্য দ্রষ্টব্য ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (এফএও), ইমপ্যাক্ট অব দি ইউক্রেন-রাশিয়া কনফ্লিক্ট অন গ্লোবাল ফুড সিকিউরিটি রিলেটেড ম্যাটারস আন্ডার দ্য ম্যান্ডেট অব দ্য ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন অব দি ইউনাইটেড নেশনস (এফএও), মে ২০২২, https://www.fao.org/3/nj164en/nj164en.pdf.

২৫) তানচুম, ‘দি ইন্ডিয়া-মিডল ইস্ট ফুড করিডোর: হাউ দি ইউএই, ইজরায়েল অ্যান্ড ইন্ডিয়া আর ফর্জিং আ নিউ ইন্টার-রিজিওনাল সাপ্লাই চেন’

২৬) আইটুইউটু হল ভারত-ইজরায়েল-ইউএই-আমেরিকা চতুষ্পাক্ষিক এবং আন্তঃ-আঞ্চলিক সম্পৃক্ততার একটি সংক্ষিপ্ত রূপ, যার লক্ষ্য হল সমালোচনামূলক ও পারস্পরিক স্বার্থের ছ’টি ক্ষেত্রকে মোকাবিলা করা। খাদ্য এবং শক্তি বর্তমান বিন্যাসে সহযোগিতার দু’টি সর্বাধিক কেন্দ্রীভূত ক্ষেত্র।

২৭) মঞ্জরী সিং, ‘ক্যান আইটুইউটু অ্যাড্রেস ইন্ডিয়াজ ফুড সিকিউরিটি চ্যালেঞ্জেস?’

২৮) ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (এফএও), ফুড সিকিউরিটি, জুন ২০০৬, https://www.fao.org/fileadmin/templates/faoitaly/documents/pdf/pdf_Food_Security_Cocept_Note.pdf

২৯) মঞ্জরী সিং, ‘আইটুইউটু: শেপিং স্টেবল অ্যান্ড প্রসপারাস মিডল ইস্ট’, ইন্ডিয়া অ্যান্ড দি ওয়ার্ল্ড ৫, নম্বর ৩, ৬৬-৭১

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Author

Manjari Singh

Manjari Singh

Manjari Singh is Assistant Professor at the Amity Institute of International Studies Amity University Noida India. She has previously served as Associate Fellow at the ...

Read More +