-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
যদিও জিডিপি বৃদ্ধির ফলে শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে, ভারতের কার্বন ও শক্তির তীব্রতা গত এক দশকে কমেছে, যা বৈশ্বিক গড় থেকে কম
পটভূমি
বর্তমান অবস্থার বিশ্লেষণ, এবং শক্তি ক্ষেত্রের ভবিষ্যৎ অবস্থার পূর্বাভাস, ভারতে স্থিতিশীল অর্থনৈতিক উন্নয়নের দীর্ঘমেয়াদি নীতি গঠনের মূল উপাদান। শক্তির ব্যবহার, অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ও পরিবেশ সুরক্ষার মধ্যে যোগসূত্র এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিদ্যমান অর্থনীতির বৈশিষ্ট্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে, গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে উন্নয়নশীল অর্থনীতির শক্তির তীব্রতা পর্যায়ক্রমে সবচেয়ে দক্ষ অর্থনীতির শক্তির তীব্রতার স্তরে পৌঁছে যায়। প্রথম পর্যায়ে, যখন শক্তি-সাশ্রয়ী কর্মসূচি পরিচালিত হয় এবং অর্থনীতির কাঠামোতে ধীরে ধীরে পরিবর্তন ঘটে (যেমন পরিষেবা ক্ষেত্রের বৃদ্ধি), তখন শক্তির তীব্রতা দ্রুত হ্রাস পায়। তারপরে, এমনকি শক্তি-সাশ্রয়ী প্রযুক্তিগুলি চালু করা হলেও, অন্তর্নিহিত প্রযুক্তিগুলি পরিবর্তিত না হওয়ায় জ্বালা্নি ও শক্তি সংরক্ষণের মোট সম্ভাবনা হ্রাস পায় এবং শক্তির তীব্রতা রৈখিকভাবে কমে। ভারতের শক্তির অন্তিম-ব্যবহারকারী ক্ষেত্রগুলি — শিল্প, ভবন, পরিবহণ ও অন্যান্য — গত তিন দশকে শক্তি সঞ্চয় প্রযুক্তির কারণে শক্তির তীব্রতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করেছে। এর ফলে অর্থনীতিতে কার্বনের তীব্রতা কমে গিয়েছে।
শক্তি উপভোগ
২০২২ সালে, ভারতের শক্তি ব্যবহারের ৪০ শতাংশেরও বেশি ছিল শিল্পের, এবং তারপরে আবাসিক ক্ষেত্রের, যা শক্তির প্রায় ২৫ শতাংশের উপভোক্তা ছিল। পরিবহণ ক্ষেত্রে প্রায় ১৭ শতাংশ শক্তি ব্যয়িত হত, যেখানে কৃষি ও বনায়ন প্রায় ৫ শতাংশের জন্য দায়ী ছিল। বাণিজ্যিক ও রাষ্ট্রীয় পরিষেবাগুলি প্রায় ৩ শতাংশ উপভোগের জন্য দায়ী ছিল, এবং অনির্দিষ্ট ও অ-শক্তি ব্যবহার বাকি ৯ শতাংশের জন্য। ২০০৯ সালে শিল্পে শক্তির ব্যবহার আবাসিক শক্তির ব্যবহারকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল, এবং ২০২২ সালে শিল্প শক্তির ব্যবহার আবাসিক ক্ষেত্রের প্রায় আড়াই গুণ ছিল। ৩৭ শতাংশ ভাগ-সহ কয়লা ছিল শিল্প শক্তির বৃহত্তম উৎস। ২৯ শতাংশে জৈব জ্বালানি ও বর্জ্য দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস; বিদ্যুতের অংশ প্রায় ১৯ শতাংশ এবং তেলের অংশ ১০ শতাংশ। শিল্পে জ্বালানি ব্যবহারে প্রাকৃতিক গ্যাসের অংশ ছিল প্রায় ৫ শতাংশ। আবাসিক এবং অন্যান্য ভবনে শক্তি ব্যবহারে বায়োমাসের (ফায়ার ওয়র্ড, পশুর গোবর ও বর্জ্য) প্রাধান্য রয়েছে, যা প্রায় ৫৯ শতাংশের জন্য দায়ী, এবং তারপরে আছে বিদ্যুৎ ও তেল, যার প্রতিটির অংশ প্রায় ১৯ শতাংশ। কয়লা আবাসিক শক্তি ব্যবহারের ২ শতাংশেরও কম, এবং প্রাকৃতিক গ্যাস ১ শতাংশেরও কম। তেল পণ্য হল পরিবহণ ক্ষেত্রে ব্যবহৃত শক্তির প্রায় ৯২ শতাংশ, যা একটি স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা; প্রাকৃতিক গ্যাসের পরিমাণ ৩ শতাংশের বেশি, জৈব জ্বালানি প্রায় ৩ শতাংশ এবং বিদ্যুৎ প্রায় ২ শতাংশ।
শক্তি তীব্রতা
বিশ্বব্যাপী শক্তির তীব্রতা ২০২৩ সালে মাত্র ১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা ২০১০-২০১৯ সালের প্রতি বছর গড় ১.৮ শতাংশ হ্রাসের চেয়ে কম, এবং ২° সেন্টিগ্রেড জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য অপ্রতুল। ২০২২ সালে অর্জিত ২.৫ শতাংশ হারের তুলনায় এই হ্রাস অনেক ধীরগতির ছিল। ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী শক্তির ব্যবহার ২.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে বিশ্বব্যাপী জিডিপি (মোট আভ্যন্তর উৎপাদন) ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে শক্তির তীব্রতার মাত্রা ও প্রবণতা বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপকভাবে ভিন্ন, যা অর্থনৈতিক কাঠামো এবং শক্তি দক্ষতা অর্জনের পার্থক্য প্রতিফলিত করে।
ওইসিডি (অর্গানাইজেশন ফর ইকনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) দেশগুলিতে ২০১০-২০১৯ সালের মধ্যে প্রতি বছর ২.১ শতাংশ হ্রাসের প্রবণতার তুলনায় ২০২৩ সালে ৩.১ শতাংশ হ্রাস শক্তির তীব্রতায় একটি বড় হ্রাস ছিল । এটি প্রধানত উচ্চ হারে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং দুর্বল শিল্প কার্যকলাপের কারণে ঘটেছিল। ইইউ (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) অঞ্চলে শক্তির তীব্রতা ৪.৭ শতাংশ কমেছে — শক্তির ব্যবহার ৪ শতাংশ কমেছে, যেখানে জিডিপি ০.৫ শতাংশ হারে সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের শক্তির তীব্রতা এখন বৈশ্বিক গড় থেকে ৪২ শতাংশ কম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা উভয় ক্ষেত্রেই শক্তির তীব্রতা ২ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছে, এবং জাপানে এটি ৫.৩ শতাংশ কমেছে। দক্ষিণ কোরিয়ায়, শক্তির তীব্রতা ৪.১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, আর অস্ট্রেলিয়ায় এটি স্থিতাবস্থায় ছিল। ওইসিডি-র বাইরে প্রায় কোনও পরিবর্তন ছিল না। চিনে ২০১০-২০-এর প্রতি বছর ৩.৯ শতাংশের দ্রুত পতনের বিপরীতে ২০২৩ সালে এটি ১.৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল, যা বৈশ্বিক গড়ের থেকে ৩২ শতাংশ বেশি। শক্তির তীব্রতা রাশিয়ায় প্রতি বছর ৩.২ শতাংশ, আফ্রিকায় প্রতি বছর ২.৭ শতাংশ এবং লাতিন আমেরিকায় প্রতি বছর ১.২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। অন্যদিকে, একই সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে এটি প্রতি বছর ২.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০০০-১০ সালে প্রতি বছর ১.৩২ শতাংশ এবং ১৯৯০-২০০০ সালে প্রতি বছর ০.৬১ শতাংশ হ্রাসের তুলনায় ২০১০-২০ সালে ভারতে শক্তির তীব্রতা প্রতি বছর ১.৫৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে । গত তিন দশকে শক্তির তীব্রতা হ্রাসের তুলনায় অর্থনীতির কার্বনের তীব্রতা অনেক ধীর গতিতে কমেছে। ১৯৯০-২০০০ সালে, কার্বনের তীব্রতা প্রতি বছর ০.৩৬ শতাংশ এবং ২০০০-১০ সালে কার্বনের তীব্রতা ০.২৩ শতাংশ কমেছে। ২০১০-২০ সালে কার্বনের তীব্রতা প্রতি বছর ১.৩ শতাংশ কমেছে, যা রেকর্ড অনুযায়ী দ্রুততম। গত তিন দশকে ভারতের সামগ্রিক শক্তির তীব্রতা ৫৭ শতাংশ কমেছে, যেখানে কার্বনের তীব্রতা ৩৬ শতাংশ কমেছে। ভারতের কার্বনের তীব্রতা জিডিপির প্রতি ইউনিটে ব্যবহৃত শক্তি হিসাবে পরিমাপ করা হয়, যা ক্রয় ক্ষমতার সমতা (পিপিপি) শর্তে হিসাব করা হয়, এবং তা বৈশ্বিক গড় থেকে কম, কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাপানের তুলনায় অনেক বেশি।
ইস্যু
শক্তি উপভোগ পদার্থবিদ্যার মৌলিক সূত্রগুলি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এর অর্থ হল, অর্থনীতির শক্তি উপভোগ তাপগতিবিদ্যার সূত্র অনুসরণ করে। জিডিপি উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত শক্তি নষ্ট হয় না, রূপান্তরিত হয়। এর অন্যতম পরিণতি হল জলবায়ু পরিবর্তন। এর অর্থ এই যে, একটি অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া হিসাবে জিডিপি উৎপাদন পরিবেশের উপর প্রভাব ফেলে, কারণ এই প্রক্রিয়ায় শক্তির এমন একটি চূড়ান্ত ব্যয় হয় যা মানুষ অন্য কিছু দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে পারে না। অতএব, শক্তির উৎস প্রতিস্থাপনের অসুবিধাগুলি ভারত ও অন্যত্র অর্থনৈতিক চক্রের স্থিতিশীলতাকে দুর্বল করে।
শক্তি উপভোগ ও জিডিপি, শিল্পের উৎপাদন মূল্য ও জাতীয় আয়ের মধ্যে সম্পর্কের বিশ্লেষণ অর্থনৈতিক উৎপাদনের একটি বিন্দু চিহ্নিত করতে পারে (যদি থাকে), যেখানে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি আর অতিরিক্ত শক্তি ব্যয় তৈরি করে না। আরেকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল শক্তি উপভোগ ও উৎপাদনের স্থূল মূল্যের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে কার্যকারণের দিকনির্দেশ। বিশেষভাবে, প্রশ্ন হল যে শক্তি উপভোগ বৃদ্ধি জিডিপি বৃদ্ধির দিকে চালিত করে এইটা সত্য না কি তার উল্টোটা, অর্থাৎ উচ্চতর জিডিপি উৎপাদন কি আরও বেশি শক্তি ব্যবহারের দিকে চালিত করে? ভারতে শক্তির তীব্রতা এবং কার্বনের তীব্রতা হ্রাসের প্রবণতাসহ সামগ্রিক শক্তি ব্যবহার বৃদ্ধি প্রস্তাব করে যে উভয় বিবৃতিই সত্য।
উৎস: শক্তি ব্যবহার ও কার্বন নির্গমনের জন্য বিশ্ব শক্তির পরিসংখ্যানগত পর্যালোচনা; জিডিপি-র জন্য বিশ্বব্যাঙ্ক ডেটাবেস
লিডিয়া পাওয়েল অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একজন ডিস্টিংগুইশড ফেলো।
অখিলেশ সতী অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একজন প্রোগ্রাম ম্যানেজার।
বিনোদ কুমার টোমর অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Ms Powell has been with the ORF Centre for Resources Management for over eight years working on policy issues in Energy and Climate Change. Her ...
Read More +Akhilesh Sati is a Programme Manager working under ORFs Energy Initiative for more than fifteen years. With Statistics as academic background his core area of ...
Read More +Vinod Kumar, Assistant Manager, Energy and Climate Change Content Development of the Energy News Monitor Energy and Climate Change. Member of the Energy News Monitor production ...
Read More +