Author : Samantha Keen

Published on Oct 26, 2021 Updated 0 Hours ago

বর্তমানে যখন ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ শেষ হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতকে নিজের ভূমিকা স্পষ্ট করতে হবে এবং চিন ও রাশিয়া-সহ সম্ভাব্য সব সহযোগী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।

ভারত এবং আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি

একটি ‘সফল’ অভিযান শেষ হল অনভিপ্রেত ভাবে। অপ্রত্যাশিত ভাবে সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে যথেষ্ট সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। তবে যার কোনও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নেই, যে যুদ্ধে জয়ের কোনও আশা নেই, তেমন একটি যুদ্ধ থেকে নিজেদের সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা যে বিশৃঙ্খল হবে, তা বলা বাহুল্য। ভিয়েতনাম থেকে আমেরিকার সেনা প্রত্যাহারের ইতিহাস যাঁদের মনে আছে, তাঁরা এই ব্যাপারে অবশ্যই একমত হবেন! যদিও সে সময় সেনা প্রত্যাহারের নেপথ্যে ছিল উত্তর ভিয়েতনামের সঙ্গে বছরের পর বছর ধরে চলা শান্তি আলোচনা।

২০০৩ সালের শুরুতে ডোনাল্ড রামসফেল্ড-এর বেমক্কা ঘোষণা ‘মিশন অ্যাকমপ্লিশড’ বা ‘সার্থক অভিযান’ কী ভাবে এক ‘অনন্ত যুদ্ধ’-এ পরিণত হল, তার কারণ বিশ্লেষণ করবেন ঐতিহাসিকরা। কোণঠাসা করার পরেও তালিবানদের উপর নিজেদের শর্ত আরোপ করার সুযোগ হারানো এবং আফগান সরকার ও আফগান সেনার দুর্বলতার কথা বার বার ইচ্ছাকৃত ভাবে এড়িয়ে যাওয়ার উত্তরও দিতে হবে আমেরিকাকে। আফগানিস্তানের জাতীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণার অভাব, পাকিস্তানের দুমুখো ভূমিকা সম্পর্কে আশ্চর্য রকম নিষ্ক্রিয়তা, ব্যাপক এবং গভীর দুর্নীতির প্রেক্ষিতে আফগান সরকারের প্রতি জনসাধারণের বিরূপতার মতো বিষয়গুলি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। ২০০৬ সাল থেকে তালিবানরা ফের আক্রমণ শুরু করে এবং দক্ষিণ ও পূর্ব আফগানিস্তানের একাধিক প্রদেশ দখল করতে থাকে। সংখ্যায় বহু গুণ হওয়া সত্ত্বেও যথেষ্ট অনুপ্রেরণার অভাবে বিদেশি শক্তির শুরু করা লড়াই চালিয়ে যাওয়া আফগান সেনারা কখনওই তালিবানদের সঙ্গে পেরে ওঠেনি।

তালিবানরা ফের আক্রমণ শুরু করে এবং দক্ষিণ ও পূর্ব আফগানিস্তানের একাধিক প্রদেশ দখল করতে থাকে। সংখ্যায় বহু গুণ হওয়া সত্ত্বেও যথেষ্ট অনুপ্রেরণার অভাবে বিদেশি শক্তির শুরু করা লড়াই চালিয়ে যাওয়া আফগান সেনারা কখনওই তালিবানদের সঙ্গে পেরে ওঠেনি।

যদিও জর্জ ডব্লিউ বুশ-এর পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্টরা আফগানিস্তানে চলতে থাকা এই ‘অসম্ভব যুদ্ধ’ থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছেন, তাঁদেরই চোখের সামনে ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ দীর্ঘায়িত হতে হতে স্পষ্টতই এক অসম্ভব বিদ্রোহ দমন অভিযানে পরিণত হয়েছে। বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী ছিলই। ২০১০ সালের সি এন এন/ ওপিনিয়ন রিসার্চ পোল বা জনমত সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে যে আমেরিকানদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ (প্রায় ৫৫%) তখনই এই যুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন। ওয়াশিংটন পোস্ট প্রকাশিত ‘আফগানিস্তান পেপারস’ অনুযায়ী ২০১৯ সালের মধ্যে অনেক মার্কিন অফিসারই বুঝতে পেরেছিলেন যে এই যুদ্ধে জেতা সম্ভব নয়। আমেরিকানরা এ বিষয়ে যথেষ্ট বাস্তববাদী, কারণ তাঁরা ওসামা-বিন-লাদেনের ধরা পড়া ও মৃত্যুকে এই যুদ্ধের সমাপ্তি বলে মেনে নিতে চেয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই এই বছরের আগস্ট মাসে প্রাপ্তবয়স্ক আমেরিকানদের উপরে করা একটি পিউ রিসার্চ সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ (৫৪%) আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সেনা প্রত্যাহার ‘সঠিক সিদ্ধান্ত’ বলে মনে করছেন।

বিজয়ী তালিবান সেনা যে কাবুলের দরজায় দাঁড়িয়ে আফগান সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার জন্য অপেক্ষা করবে না, সে কথা স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছিল। যদিও পিউ সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে যে, এক বিরাট অংশের মানুষ (প্রায় ৭০%) এ কথা মনে করেন যে, আমেরিকা আফগানিস্তানে তার লক্ষ্য পূরণে ‘ব্যর্থ’ হয়েছে, তবুও আফগানিস্তানের মাটিতে ২০ বছর দীর্ঘ মার্কিন অভিযান পুরোপুরি ভাবে ব্যর্থ হয়েছে কি না, সে কথার উত্তর একমাত্র সময়ই দেবে। এই সময়ে আফগানিস্তানে শিক্ষিত এবং সচেতন নারীদের যে উত্থান প্রত্যক্ষ করা গিয়েছে, তা কোনও ভাবেই অস্বীকার করা যায় না। পাশাপাশি উত্থান হয়েছে এমন এক আফগান নাগরিক সমাজের যা ধীরে হলেও স্পষ্ট ভাবে প্রভাব ফেলছে তালিবান জমানার দ্বিতীয় দফার উপরে। এই সমস্ত স্বরের কণ্ঠরোধের যে অব্যবহিত পদক্ষেপ নতুন তালিবান সরকার নিয়েছে, তা আগামী মাসগুলিতে একই রকম থাকবে কি না সে বিষয়ে সারা পৃথিবীকে মনোযোগের সঙ্গে নজর রাখতে হবে আফগানিস্তানের উপরে।

ভারত  আফগানিস্তানের মধ্যে বোঝাপড়া

নিঃসন্দেহে আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক অবস্থা ভারতের জন্য সুখবর নয়। কিন্তু এমনটা যে ঘটতে চলেছে, তা আঁচ করা গিয়েছিল অনেক আগেই। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মনোনীত প্রার্থী জো বাইডেন ২০১৯ সালে এক বক্তৃতায় স্পষ্ট করে বলেছিলেন, ‘‘(আফগানিস্তানে চলা) অনন্ত যুদ্ধে ইতি টানার সময় পেরিয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। এই যুদ্ধে আমেরিকা খুইয়েছে অসংখ্য প্রাণ এবং সম্পদ।’’ তাঁর অগ্রাধিকার সেই সময়েই স্পষ্ট হয়ে গেছিল যখন তিনি আফগানিস্তানের পরিবর্তে নিজের দেশে গণতন্ত্রের সুদৃঢ়করণ, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সংকটের সমাধান, বিশ্ব স্বাস্থ্য এবং ‘চিনের প্রতি কঠোর মনোভাব’-এর মতো বিষয়গুলির উপরে জোর দেন।

দক্ষিণ এশিয়া এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ক্রমপরিবর্তনশীল পরিস্থিতি ভারতের জন্য এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে যা ভারতকে তার কৌশল পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করেছে।

স্বাভাবিক ভাবেই আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক অবস্থার প্রেক্ষিতে দক্ষিণ এশিয়ার সুরক্ষার পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পাকিস্তান এবং চিনের সঙ্গে সীমানা সংঘাতের কথা মাথায় রেখেই ভারতকে এই বিষয়ে ভাবতে হবে। ভারতকে এ বিষয়েও নজর দিতে হবে যে তালিবানের দ্বিতীয় জমানার ক্ষেত্রে ভারত ‘অপেক্ষা কর এবং নজর রাখ’ পন্থা অবলম্বন করলেও চিন এবং রাশিয়া দুই দেশের সরকারই আফগানিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যদিও এশিয়ার এই অঞ্চলের অন্তর্গত একাধিক দেশ নতুন তালিবান সরকার নিয়ে তাদের অবস্থান ব্যক্ত করেছে বা করছে, তবুও প্রতিবেশী দেশগুলির প্রতি তালিবানদের তরফে কোনও নীতির কথা এখনও ঘোষণা করা হয়নি।

মনে রাখতে হবে যে, আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে প্রতিশ্রুতি পূরণে আমেরিকার নির্ভরযোগ্যতা খুব খারাপ ভাবে মার খেয়েছে। এবং এ কথাও অস্বীকার করার উপায় নেই যে, সদ্য আয়োজিত অউকাস (অস্ট্রেলিয়া-ব্রিটেন-আমেরিকা) জোটের অধিবেশন কোয়াড (চতুর্দেশীয় সুরক্ষা সম্মেলন) জোটের ঔজ্জ্বল্য কমিয়েছে অনেকটাই। এক দিকে অউকাস একটি ত্রিপাক্ষিক সুরক্ষা চুক্তি যার মূল লক্ষ্য ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চিনের বিস্তার রোধ করা, অন্য দিকে কোয়াড (কোয়াড্রিল্যাটেরাল সিকিউরিটি ডায়লগ) বা চতুর্দেশীয় সুরক্ষা সম্মেলনের মাঝে ‘সুরক্ষা’ শব্দটি থাকলেও এটিকে চারটি গণতন্ত্রের মধ্যে একটি অনানুষ্ঠানিক চুক্তি হিসেবে গণ্য করা হয়। এর মূল কাজ হল বিশ্বের ভাল করা, যা নেহাত ধোঁয়াটে একটি ধারণা। হোয়াইট হাউসে হওয়া কোয়াড-এর সাম্প্রতিকতম অধিবেশনে এই বিষয়টি ওঠেইনি। এই অধিবেশনটিকে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ‘কোভিড, জলবায়ু পরিবর্তনের সংকট এবং নতুন প্রযুক্তি সংক্রান্ত সমস্যার মোকাবিলায়’ গণতান্ত্রিক শক্তিগুলির একত্রীকরণ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

দক্ষিণ এশিয়া এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ক্রমপরিবর্তনশীল পরিস্থিতি ভারতের পক্ষে অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছে, যা ভারতকে তার কৌশল পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করেছে। যেমনটা জন মেনার্ড কেনস সাবধান করেছিলেন- যে হেতু আমরা বাস্তব তথ্য অস্বীকার করতে পারি না, তাই আমাদের উচিত বাস্তব সম্পর্কে নিজেদের ধারণার পুনর্বিবেচনা করা। এবং জর্জ কেনান-এর নীতি নির্ধারকদের দেওয়া সেই বিখ্যাত উপদেশ যেখানে তিনি স্পষ্ট বলছেন, ‘‘একবগগা ভাবে অবাস্তব বা অলাভদায়ক লক্ষ্যের পেছনে তাড়া করার চেয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং সাহসী ভাবে সকল ত্রুটিপূর্ণ ও ভিত্তিহীন অবস্থানের সমাপ্তি ঘটানো অনেক সম্মানের।’’

চিন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ব্যাপক ভাবে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা না করলে হয়তো কোয়াড বা চতুর্দেশীয় জোট অথবা অউকাস-এর মতো ত্রিদেশীয় জোট গঠনের প্রয়োজন হত না। তবুও চিনের প্রতি সর্বস্তরে তীব্র বিরোধিতাই ভারতের নীতি নির্ধারণের ভিত্তি হতে পারে না।

 একবিংশ শতাব্দীতে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে একটি বহুমাত্রিক সম্পর্ক গড়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে। বাইডেনের দেওয়া নিজের দেশে গণতন্ত্রের ‘সংস্কার এবং পুনরুজ্জীবন’-এর পাশাপাশি ‘বিশ্বব্যাপী গণতান্ত্রিক শক্তিগুলির জোট আরও শক্তিশালী’ করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভারত অনেকটাই আশাবাদী। যদিও প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য এবং দুই দেশের সাধারণ মানুষের পারস্পরিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক ক্রমশ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে, এ কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে সাধারণ ভিত্তিগুলি হল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, সহনশীলতা এবং সামাজিক বৈচিত্র্য। এই কারণগুলির জন্যই ভারত বর্তমানে সারা পৃথিবীর কাছে বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায় একটি আদর্শ দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। এই বিষয়গুলির সশক্তিকরণের জন্য ভারতকে তার সকল বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা রদ করতে হবে, দৈনন্দিন জীবনের রুচির বৈচিত্র্যের প্রতি আরও সহনশীল হতে হবে এবং সকল ধর্ম ও জাতির মানুষের প্রতি সমমর্যাদার বিষয়টিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হতে হবে।

যদিও আমেরিকার সঙ্গে সুসম্পর্ক ভারতের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তবুও নিজের নিকটতম প্রতিবেশী দেশগুলির প্রতিও তাকে নজর দিতে হবে। সোভিয়েত যুগে, এমনকি তার পরেও রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক মজবুত ছিল। কিন্তু গত কয়েক বছরে এই সম্পর্কটি ক্রমশ দুর্বলতর হয়েছে এবং বর্তমানে সেটি অর্থনৈতিক দিক থেকে ‘ক্রেতা-বিক্রেতা’র সম্পর্কের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত একটি নিম্নমুখী সম্পর্কে পরিণত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে বর্তমানে ভারত এবং রাশিয়ার মধ্যে হওয়া বাণিজ্য সম্ভাব্য পরিমাণের তুলনায় অনেকটাই কম। একই রকম ভাবে, ভারতে রাশিয়ান অস্ত্রের রফতানির পরিমাণ ৭৯% (২০০৮-২০১২) থেকে কমে হয়েছে ৬২% (২০১৩-২০১৮)। তবে আমেরিকার তরফে আইনি নিষেধাজ্ঞার হুমকি সত্ত্বেও ভারত ২০১৮ সালে আমেরিকার কাটসা অ্যাক্ট উপেক্ষা করে রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনেছে, যা রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের মেরামত এবং উন্নতির প্রেক্ষিতে ভারতের দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হওয়ার একটি যথার্থ উদাহরণ।

এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে, গত দুই দশকে আমেরিকা এবং রাশিয়ার সম্পর্ক এক তীব্র কোন্দলে পরিণত হয়েছে, যার প্রকৃত কারণগুলি ধোঁয়াশাপূর্ণ এবং অস্বচ্ছ। ভারত এই দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ককে পুনর্বহাল করার চেষ্টা চালাতে পারে যার সুফল পেতে পারে এই অঞ্চল-সহ বিশ্বের অন্য দেশগুলিও। একই রকম ভাবে চিনের সঙ্গে সীমানা সংঘাতের জন্য আবশ্যিক ভাবে প্রস্তুত থাকার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন এবং সন্ত্রাসবাদ দমনের মতো বিষয়গুলিতে পারস্পরিক সহযোগিতার দিকটিও খতিয়ে দেখতে হবে ভারতকে। এ কথা ঠিক যে, চিন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ব্যাপক ভাবে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা না করলে হয়তো কোয়াড বা চতুর্দেশীয় জোট অথবা অউকাস-এর মতো ত্রিদেশীয় জোট গঠনের প্রয়োজন হত না। তবুও চিনের প্রতি সর্বস্তরে তীব্র বিরোধিতাই ভারতের নীতি নির্ধারণের ভিত্তি হতে পারে না। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে ভারতের গুরুত্ব সর্বাধিক। পারস্পরিক আলাপ-আলোচনায় এই গুরুত্ব কাজে লাগিয়ে চিন এবং রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার সময় এসেছে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.