রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা ভারতের বিদেশনীতি বিশ্লেষণ করার সময় ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে তার বাস্তবায়ন পরীক্ষা করার প্রবণতা দর্শান, যেখানে অর্থনৈতিক উদারীকরণের পরে প্রভাবের চিরাচরিত সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রটি অর্থনৈতিক প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সম্পূরক হয়েছে। যাই হোক, ইন্দো-প্যাসিফিক সামুদ্রিক পরিসরগুলির প্রতি গভীর আগ্রহ অদূরদর্শিতার পরিচয় দিতে পারে। কারণ ‘বর্ধিত প্রতিবেশ’-এর অন্যান্য অঞ্চলকে প্রায়শই উপেক্ষা করা হয়।
এগুলির মধ্যে একটি অঞ্চল হল মধ্য এশিয়া, যেটি ভারতের নিরাপত্তার জন্য কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে আমরা মধ্য এশিয়ার রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ভারতের একটি বর্ধিত রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা প্রত্যক্ষ করেছি। এটি ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ঘটনা থেকে উদ্ভূত হয়। ভারত-মধ্য এশিয়া সংলাপ এবং সম্প্রতি পরিচালিত ২০২২ সালে প্রথম ভারত-মধ্য এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে এই বর্ধিত আগ্রহের প্রমাণ পাওয়া যায়। দ্বিতীয় বৈঠকটি এই বছর অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আন্তঃসম্পর্কিত রাজনৈতিক কাঠামো
১৯৯৫ সালে, ভারতীয় বংশোদ্ভূত কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জগদীশ ভগবতী মার্কিন অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য ব্যবস্থার কাঠামো চিত্রিত করার সময় ‘স্পাগেটি বোল’ শব্দবন্ধটি ব্যবহার করেছিলেন। এর অর্থ হল, দেশটির বাণিজ্যিক অংশীদারদের মধ্যে অর্থনৈতিক বিকল্পগুলির আন্তঃসম্পর্ক এবং জটিলতা। একই ভাবে, মধ্য এশিয়ার বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিসর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বলয়ের অসংখ্য কাঠামোগত অস্তিত্ব দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে। যেমন সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও), ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়ন (ইএইইউ), কমনওয়েলথ অফ ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্টেটস (সিআইএস), কালেক্টিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশন (সিএসটিও), অর্গানাইজেশন অব তুর্কিক স্টেটস (ওটিএস), সেন্ট্রাল এশিয়া + ফরম্যাটস (মধ্য এশিয়া + সংশ্লিষ্ট বিন্যাস) এবং রিজিওনাল সিকিউরিটি ডায়লগ অফ আফগানিস্তান অ্যান্ড কোয়াড্রিল্যাটেরাল অ্যান্ড কোঅর্ডিনেশন মেকানিজম-এর (কিউসিসিএম) মতো কিছু নির্দিষ্ট ব্যবস্থা। একই সঙ্গে এমন কোনও ব্যবস্থাপনা নেই যা মধ্য এশিয়ার পাঁচটি রাষ্ট্র অর্থাৎ কাজাখস্তান, কিরঘিজস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং উজবেকিস্তানকে একক রাজনৈতিক সত্তা হিসেবে একত্রিত করে।
বর্তমান রাজনৈতিক কাঠামো বৃহৎ শক্তিগুলির স্থায়ী স্বার্থকে সুনিশ্চিত করে, যা জ্বালানির সংস্থান, ট্রানজিট রুট বা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসাবে মধ্য এশিয়ার কৌশলগত ভূমিকাকে স্বীকৃতি দেয়।
আঞ্চলিক দেশগুলির মধ্যে আর্থ-সামাজিক দ্বন্দ্ব অসংখ্য বিন্যাসের অস্তিত্বের প্রধান কারণ, যা দেশগুলিকে আঞ্চলিক সমন্বিতকরণের পথপ্রদর্শক হিসাবে কাজ করার সুযোগ করে দেয়। সর্বোপরি, বর্তমান রাজনৈতিক কাঠামো বৃহৎ শক্তিগুলির স্থায়ী স্বার্থকে সুনিশ্চিত করে, যা জ্বালানির সংস্থান, ট্রানজিট রুট বা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসাবে মধ্য এশিয়ার কৌশলগত ভূমিকাকে স্বীকৃতি দেয়।
রাশিয়া এই অঞ্চলটিকে প্রভাবের একটি প্রাকৃতিক ক্ষেত্র হিসাবে মনে করে। ২০২৩ সালের কনসেপ্ট অব ফরেন পলিসি অব দ্য রাশিয়ান ফেডারেশনের সিএ রাষ্ট্রগুলির কৌশলগত ভূমিকা এবং গুরুত্ব তুলে ধরে। বিশেষ করে আঞ্চলিক সমন্বিতকরণ এবং যৌথ নিরাপত্তার প্রেক্ষাপটে সিআইএস-কে রাশিয়ান ফেডারেশনের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি করা হয়েছিল। নথিটি ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার প্রতি যথেষ্ট মনোযোগ প্রদান করে, বিশেষ করে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তিগত সম্পর্ক সম্প্রসারণের উপর মনোযোগ দেয়। বিদ্যমান ভূ-রাজনৈতিক গতিশীলতার আলোকে এ কথা স্পষ্টতই বলা যেতে পারে যে, ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে অংশীদারিত্ব বেশ কয়েকটি সুনির্দিষ্ট বিষয়ের উপর মনোযোগ দেবে - ক) এসসিও-তে সম্পৃক্ত হওয়া; খ) আইএনএসটিসি-র উন্নয়ন; গ) ডিজিটাল উন্নয়ন এবং জ্বালানি অংশীদারিত্বে সহযোগিতা; ঘ) আফগানিস্তান সম্পর্কিত বিষয়ে সম্পৃক্ততা।
যদিও মধ্য এশিয়ায় ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে আজকের সহযোগিতাকে ‘উচ্চ পর্যায়ের’ বলে মনে করা যেতে পারে। কারণ এটি যৌথ অর্থনৈতিক প্রকল্পগুলি বাদ দিয়ে শুধুমাত্র বহুপাক্ষিক কাঠামোর মধ্যে সম্পৃক্ত থাকার উপর জোর দেয়।
রাজনৈতিক কারণ: সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন
রাশিয়া এসসিও-র প্রভাবকে শক্তিশালী করার পক্ষে। এমনটা করার জন্য গোষ্ঠীটির সদস্যপদ সম্প্রসারণের মাধ্যমে ভৌগোলিক প্রসার বৃদ্ধি এবং আলোচনার অধীনস্থ বিষয়গুলির সংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে তার রাজনৈতিক মর্যাদা শক্তিশালী করতে পারে। এই ভাবে, চিনের আশঙ্কা ও অনিচ্ছা সত্ত্বেও রাশিয়া ২০১৭ সালে ভারতের (এবং পাকিস্তানের) অন্তর্ভুক্তিকে সমর্থন করেছিল। ভারত এবং রাশিয়া একটি আলাপ-আলোচনার মঞ্চ এবং নিরাপত্তা বৃদ্ধির একটি সাধনী হিসাবে এসসিও-র ভূমিকা সম্পর্কে একই ধারণা পোষণ করে। কিন্তু একই সময়ে দুই দেশের বৈদেশিক নীতির গণনায় কাঠামোর গুরুত্ব পরিবর্তিত হয়। রাশিয়া এসসিও-কে নিরাপত্তার দিক থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হিসেবে মনে করে, যেখানে ভারত এটিকে ইউরেশিয়া অঞ্চলে রাজনৈতিক উপস্থিতি বজায় রাখার এক সাধনী বলে মনে করে। এই বৈপরীত্যের নেপথ্যে থেকেছে সংগঠনটির অভ্যন্তরে ভারতের সম্মুখে উপস্থিত রাজনৈতিক কার্যকলাপের সীমাবদ্ধতা, যা উদ্ভূত হয়েছে চিন ও পাকিস্তানের সঙ্গে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে। এসসিও-তে চিনের প্রভাবশালী ভূমিকা নিয়ে ভারতের আশঙ্কা রাশিয়া ভাগ করে নেয় না। তা সত্ত্বেও ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে অস্তিত্বগত মতানৈক্যের কারণে, বিশেষ করে রিজিওনাল অ্যান্টি-টেররিস্ট স্ট্রাকচার বা আঞ্চলিক সন্ত্রাসবিরোধী কাঠামোর (আরএটিএস) মধ্যে সংস্থাটির কার্যকারিতা হ্রাস পাওয়ার বিষয়ে কিছু আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল।
রাশিয়া এসসিও-কে নিরাপত্তার দিক থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হিসেবে মনে করে, যেখানে ভারত এটিকে ইউরেশিয়া অঞ্চলে রাজনৈতিক উপস্থিতি বজায় রাখার এক সাধনী বলে মনে করে।
এটি সর্বাত্মক ভাবে স্বীকৃত যে, চিন এসসিও-কে মধ্য এশিয়ায় তার অর্থনৈতিক প্রভাব প্রসারিত করার একটি প্রক্রিয়া হিসাবে দেখে, তবে ভারত এবং রাশিয়া উভয়ের জন্যই নিরাপত্তা উদ্বেগ বিদ্যমান। অদূর ভবিষ্যতে অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে। ভারতকে এখন চিনের অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের একটি সম্ভাব্য বিকল্প হিসাবে দেখা হয় এবং এসসিও-র নবম সদস্য হিসাবে ইরানের অন্তর্ভুক্তি সম্ভাব্য ভাবে তার অর্থনৈতিক কর্মসূচিকে বিস্তৃত করতে পারে। বিশেষ করে আইএনএসটিএস-এর মধ্যে অবকাঠামো প্রকল্পগুলির উন্নয়নের ক্ষেত্রে। এই বিষয়ে, কৌশলগত চাবাহার বন্দর উন্নয়ন ও ঢেলে সাজানোর জন্য ১০ বছরের চুক্তি আশাবাদকেই অনুপ্রাণিত করে।
অর্থনৈতিক সহযোগিতা: ইএইইউ এবং আইএনএসটিসি
রাশিয়ার বৈদেশিক নীতির এশীয় ভেক্টর তথাকথিত ‘বৃহত্তর ইউরেশীয়’ অংশীদারিত্ব গঠনের সঙ্গে গভীর ভাবে সম্পর্কিত। যদিও শব্দটির নিহিতার্থ কিছুটা অস্বচ্ছ রয়ে গিয়েছে, বিশেষ করে এর বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে। উদ্দেশ্যগুলি এখনও একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী পদ্ধতিতে প্রচার করা হয় – ‘ইউরেশিয়াকে শান্তি, স্থিতিশীলতা, পারস্পরিক আস্থা, উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধি দ্বারা চিহ্নিত একটি সমন্বিত আন্তঃমহাদেশীয় রাষ্ট্রে রূপান্তর করা’। ধারণাটি প্রাথমিক ভাবে অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যগুলি অনুসরণ করে, মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক-অর্থনৈতিক জোটগুলির একটি শৃঙ্খলের অভিমুখে ধারাবাহিক অগ্রগতির প্রতিনিধিত্ব করে।
বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ে রাশিয়া এবং ভারতের মধ্যে অভিন্নতার দু’টি প্রধান ক্ষেত্র রয়েছে — ইউএইইউ বাণিজ্য সহযোগিতা চুক্তির কাঠামোর মধ্যে সহযোগিতা এবং আইএনএসটিসি-র উন্নয়ন।
ইএইইউ-এর সঙ্গে এফটিএ চুক্তির কারণে ভারতের আমদানি শুল্ক হ্রাস রাসায়নিক শিল্প পণ্য, সূর্যমুখী তেল, কয়লার মতো রাশিয়ার রফতানির বৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হিসাবে কাজ করতে পারে।
ভারতের বাণিজ্য নীতি শুল্ক এবং অশুল্ক বাধা উভয় ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্য রকমের সুরক্ষাবাদ প্রদর্শন করে। মোস্ট ফেভারড নেশনস (এমএফএন) শাসনের অধীনে গড় শুল্ক ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১৩.৪ শতাংশ থেকে ১৮.১ শতাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইএইইউ-এর সঙ্গে এফটিএ চুক্তির কারণে ভারতের আমদানি শুল্ক হ্রাস রাসায়নিক শিল্প পণ্য, সূর্যমুখী তেল, কয়লার মতো রাশিয়ার রফতানির বৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হিসাবে কাজ করতে পারে। এবং অন্য দিকে ভারত ওষুধ, কৃষিপণ্য, চামড়াজাত পণ্য, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম এবং বস্ত্রের রফতানি বৃদ্ধি করতে পারে।
যাই হোক, উচ্চ প্রত্যাশা বাস্তব পরিস্থিতি দ্বারা সীমাবদ্ধ। প্রথমত, আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে আলোচনা দীর্ঘকাল বিলম্বিত হতে পারে এবং দৃষ্টিভঙ্গি ভারতীয় ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের উদ্বেগের কারণে কিছুটা আচ্ছন্ন হতে পারে। দ্বিতীয়ত, বাণিজ্য ঘাটতি বৃদ্ধি পাবে। তৃতীয়ত, বিদ্যমান বাণিজ্য ও লজিস্টিক্যাল রুটের অদক্ষতার প্রাথমিক উদ্বেগ বিদ্যমান। লজিস্টিক সমস্যার সমাধান না হলে চুক্তির প্রভাব নামমাত্র হতে পারে। সর্বোপরি, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে নর্ড স্ট্রিম গ্যাস পাইপলাইনে নাশকতা গুরুত্বপূর্ণ পরিবহণ পরিকাঠামোর দুর্বলতাকেই দর্শিয়েছে এবং বর্ধিত নিরাপত্তা আশ্বাসের জন্য আবেদন জানিয়েছে।
উলটো দিকে, এ কথা বিশ্বাসযোগ্য যে, এই সম্পর্ক এমন এক এফটিএ-র দিকে চালিতে করতে পারে, যা আইএসএসটিসি-এর উন্নয়নকে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করবে। অন্য ভাবে বললে, বাণিজ্যের পরিমাণ সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক স্বার্থের বাধ্যবাধকতাগুলি লজিস্টিকের অগ্রগতি ঘটাবে, যার সঙ্গে পারস্পরিক সুবিধাগুলি দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পের কার্যকারিতার জন্য সংযোগবিন্দু হিসাবে কাজ করবে। এই উপলব্ধির একটি উদাহরণ ২০২৩ সালের শেষের দিকে ইএইইউ এবং ইরানের এফটিএ স্বাক্ষরের মধ্যে পাওয়া যেতে পারে। ইউক্রেন সংঘাতের পরে প্রকল্পগুলির প্রতি আগ্রহ অপরিবর্তিত ছিল, যা এই জানুয়ারি মাসে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের ইরান সফরের সময়ে প্রদর্শিত হয়েছিল। এবং রাশিয়া ইসলামি প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে কিছু বাস্তব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। তদুপরি, ভারত এবং ইএইইউ-এর মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করার প্রশ্নটি নতুন প্রেরণা পেয়েছে। কারণ দলগুলি আলাপ-আলোচনা পুনরায় শুরু করার কথা ঘোষণা করেছে।
ইউক্রেন সংঘাতের পরে প্রকল্পগুলির প্রতি আগ্রহ অপরিবর্তিত ছিল, যা এই জানুয়ারি মাসে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের ইরান সফরের সময়ে প্রদর্শিত হয়েছিল। এবং রাশিয়া ইসলামি প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে কিছু বাস্তব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
রাশিয়া আইএনএসটিসি-কে মধ্য, ভলগা এবং কাস্পিয়ান অঞ্চলে অগ্রসর হওয়ার সহায়ক হিসাবে বিবেচনা করে, যখন প্রধান আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক ধমনীগুলির সঙ্গে রাশিয়ার বন্দরগুলিকে সমন্বিত করে। করিডোরটি সুয়েজ খালের একটি কার্যকর বিকল্প হিসাবে আবির্ভূত হওয়ার জন্য প্রস্তুত এবং সম্ভাব্য ডেলিভারি সময় ও পরিবহণ খরচ ৩০-৪০ শতাংশ কমিয়ে দেবে। রাজনৈতিক ভাবে, রাশিয়ার লক্ষ্য হল কাস্পিয়ান অঞ্চলে অ-আঞ্চলিক শক্তিগুলিকে পাশ কাটানো এবং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) অধীনে লজিস্টিক প্রচেষ্টাগুলির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার জন্য মিডল করিডোর (টিএমটিএম) এবং ট্রান্সপোর্ট করিডোর ইউরোপ-ককেশাস-এশিয়ার (টিআরএসিইসিএ) মতো প্রতিযোগী প্রকল্পগুলির মধ্যে একটি কৌশলগত ভারসাম্য বজায় রাখা।
উপসংহার
রাশিয়া ইউরেশিয়ায় ভারতের ক্রমবর্ধমান ভূমিকাকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভাবে আশাবাদের আলোকে দেখে। ভারতের কোয়াড-এ অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে বাধা সত্ত্বেও রাশিয়া এসসিও-র মধ্যে ভারতকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার এবং বৃহত্তর ইউরেশীয় অংশীদারিত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। ভারত এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে গভীরতর রাজনৈতিক সম্পর্ক বেশির ভাগ রুশ রাজনৈতিক অভিজাতদের নজরে পড়ে না, যখন বিশেষজ্ঞ সম্প্রদায় ভারতের মধ্য এশিয়ার অবস্থানের প্রতি তুলনামূলক ভাবে কম মনোযোগ প্রদান করে। এর জন্য দায়ী করা যেতে পারে ভারতের পরিমিত বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক প্রভাব এবং ভারতে রুশ বিশেষজ্ঞদের সীমিত সংখ্যাকে। তা সত্ত্বেও, রাশিয়া এবং মধ্য এশীয় উভয় অঞ্চলেই ভারতের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক উপস্থিতিকে শক্তিশালী করার সম্ভাবনা স্বীকৃতি পেয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে তা চিনের অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের বিপরীতে অনুকূল বিকল্প হিসাবে ভারতের ভূমিকা নিয়ে আলোচনাকে উস্কে দিতে পারে, যদিও এ ক্ষেত্রে মাত্রা এবং বিন্যাস একাধিক কারণ দ্বারা নির্ধারিত হবে।
ইভান স্কেদ্রভ অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ভিজিটিং ফেলো।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.