Author : Sushant Sareen

Published on May 10, 2022 Updated 0 Hours ago

ইমরান খান বিদায় নিলেও পাকিস্তান অগোছালো অবস্থাতেই থাকবে।

ইমরানের ইনিংস শেষ হলেও পাকিস্তানের সমস্যা মেটেনি

প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ডেপুটি স্পিকারের ভোট নিতে না–দেওয়ার সিদ্ধান্তকে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট অবৈধ ও অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছিল, এবং সঠিক ভাবেই ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিকে পুনরুজ্জীবিত করেছিল। অন্য কোনও দেশে এই ধরনের সর্বসম্মত রায় কোনও চিন্তাভাবনার খোরাকই হবে না, কারণ এটি একটি অ–বিতর্কিত ও সরল মামলা হিসেবে গণ্য হবে। তবে ইমরান খানের জমানা যে ভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করেছিল অন্য কোনও দেশে কোনও সরকারের তা করার সম্ভাবনাও কার্যত নেই। পাকিস্তানে অবশ্য সুপ্রিম কোর্টের রায়কে দেখা হয়েছে গণতন্ত্রের জন্য একটি নতুন ভোর হিসেবে। এতে সংবিধান ও আইনের শাসনকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরা হয়েছে এবং সমাহিত করা হয়েছে কুখ্যাত ‘‌প্রয়োজনীয়তার মতবাদ’‌কে, যা পাকিস্তানের বিচারব্যবস্থা মূলত সামরিক বাহিনীর সংবিধান–বহির্ভূত কাজকে বৈধতা ও ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য অতীতে ব্যবহার করেছে।

যদিও সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ফলে সৃষ্ট উচ্ছ্বাস বোধগম্য, তবে এই রায় সংবিধানের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করে ফেলল বা ভবিষ্যতের একনায়ক শাসকের সংবিধান-বহির্ভূত ক্ষমতা দখলের পথ অবরুদ্ধ করে দিল বলে ভাবা কিছুটা বাড়াবাড়ি হয়ে যেতে পারে। যে সামরিক বাহিনী তাকে ক্ষমতায় এনেছিল তার সমর্থনবর্জিত একটি জনপ্রিয়তা–হারানো অসামরিক শাসনের বিরুদ্ধে রায় দেওয়া পাকিস্তানি বিচারপতিদের জন্য এক জিনিস, আর সরাসরি সামরিক দখলদারের বিরুদ্ধে বা এমনকি সেনাবাহিনীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে যাওয়া অন্য জিনিস। বিষয়টির শুনানি হয়েছে যে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে তার অন্তত তিনজন বিচারপতি—প্রধান বিচারপতি উমর আতা বন্দিয়াল, বিচারপতি ইজাজুল আহসান ও বিচারপতি মুনিব আখতার—ন্যায়পরায়ণতা বা নিরপেক্ষতার জন্য পরিচিত নন। প্রকৃতপক্ষে, তাঁদের কিছু রায় অত্যন্ত সন্দেহজনক:‌ নওয়াজ শরিফের অযোগ্যতার মামলা ও বিচারপতি ফয়েজ ইসা মামলা এর দুটি উদাহরণ মাত্র। কিন্তু কেন অসুবিধাজনক তথ্য নিয়ে মেজাজ নষ্ট করি?‌ এটুকু বলাই যথেষ্ট: এক মাঘে (রায়) শীত (গণতন্ত্রের বিপদ) যায় না।

সুপ্রিম কোর্টের রায়কে দেখা হয়েছে গণতন্ত্রের জন্য একটি নতুন ভোর হিসাবে। এতে সংবিধান ও আইনের শাসনকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরা হয়েছে এবং সমাহিত করা হয়েছে কুখ্যাত ‘প্রয়োজনীয়তার মতবাদ’‌কে, যা পাকিস্তানের বিচারব্যবস্থা মূলত সামরিক বাহিনীর সংবিধান–বহির্ভূত কাজকে বৈধতা ও ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য অতীতে ব্যবহার করেছে।

ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিকে পুনরুজ্জীবিত করার পরে অনাস্থা ভোট ৯ এপ্রিল নির্ধারিত হয়েছিল, এবং পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীও ওই দিনই নির্বাচন করা হবে বলে ঠিক করা হয়েছিল। অন্তত, সুপ্রিম কোর্ট এমনটাই নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু ইমরান খান ঠিক নিয়ম মেনে চলতে জানেন না, বিশেষ করে যখন তিনি অপমানজনক পরাজয়ের মুখোমুখি হন। ইমরান খানের জন্য সম্মানজনক কাজ হত পদত্যাগ করা। কিন্তু আবারও বলতে হয়, তিনি সম্মানজনক জিনিসটি করতে ঠিক অভ্যস্ত নন। যদি কিছু করা যেত, তবে তিনি জল ঘোলা করার জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করতেন, এবং সংসদীয় পদ্ধতির চাকায় পেরেক পুঁততেন। ক্ষমতাসীন দল গণপদত্যাগ করতে পারে বলে জল্পনা ছিল। ডেপুটি স্পিকারের কিছু কথাও ছিল লক্ষ্যণীয়, যেমন স্পিকারের বিরুদ্ধে একটি অনাস্থা প্রস্তাব রয়েছে, তাই তিনি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করতে পারবেন না। এ সবই ছিল নানারকম ফন্দি আঁটা। কিন্তু দেয়ালের লেখাও স্পষ্ট ছিল:‌ ইমরানের ইনিংস শেষ হয়ে গেছে এবং তাঁর বায়নাক্কা তাঁর প্যাভিলিয়নে ফেরত যাওয়া শুধু বিলম্বিত করতে পারত, কিন্তু এবার এবং সম্ভবত পরবর্তী ম্যাচেও তিনি আর সুযোগ পাবেন না। মূল কথাটা হল, তাঁকে আপাতত সম্ভাব্য তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তিনি অনেক বেশি মানুষের পা মাড়িয়ে ফেলেছেন, অনেকগুলি সেতু পুড়িয়ে দিয়েছেন, খারাপ ফলাফল করেছেন, এবং খুব খারাপ মনোভাব দেখিয়েছেন।

পাকিস্তানের ধারাবাহিক সমস্যাগুলি

ইমরানের পরিণতি অবশ্য পাকিস্তানের সমস্যার শেষ নয়। তিনি রেখে গেছেন একটি ভাঙা, দেউলিয়া অর্থনীতি যা সম্পূর্ণ ধ্বসে পড়ার দোরগোড়ায় রয়েছে, এক বিভক্ত ও বিষাক্ত রাজনৈতিক সংস্কৃতি, উত্তেজনাপূর্ণ বৈদেশিক সম্পর্ক, একটি শাসন যা তার নীতি অনুযায়ী কাজ করতে ব্যর্থ, এবং একটি প্রশাসন যা সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে। তার উত্তরসূরি শেহবাজ শরিফ দেশকে আবার সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার প্রশ্নে বিশাল সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। তাঁর সমস্যা হল যে তিনি একটি নিখুঁত ঝড়ের মধ্যে অবতরণ করেছেন এবং তাঁর হাতে একদম সময় নেই। পাকিস্তানের সঙ্কটকাল এসে গেছে, কিন্তু শেহবাজের ব্যবস্থাদি নেওয়ার জায়গা খুবই সীমাবদ্ধ। পাকিস্তানে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা সবেমাত্র উন্মোচিত হতে শুরু করেছে, এবং শেহবাজের পক্ষে মাথায় কাঁটার মুকুটটি পরে থাকা খুব সহজ হবে না।

শেহবাজকে নানা রঙের জোট নিয়ে কাজ চালাতে হবে। এই জোটের উপাদানগুলির নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক স্বার্থ রয়েছে। ইমরান খানের হাত থেকে রেহাই পেতে তাঁরা একত্র হয়েছেন। এক-দফা কর্মসূচিটি অর্জিত হয়ে যাওয়ার পর থেকেই তাঁরা একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। তাঁদের কেউই তাঁদের রাজনৈতিক স্বার্থ বিসর্জন দিতে যাচ্ছেন না, আর এই বিষয়টাই শেষ পর্যন্ত জোটকে ভিন্ন ভিন্ন দিকে টানতে থাকবে। পাকিস্তানের সামনে এখন যে কঠিন পরিস্থিতি, যার মধ্যে এমনকি অস্তিত্বের চ্যালেঞ্জও আছে, তা মোকাবিলা করার জন্য শেহবাজের যা এড়ানোর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল তা হল এই ধরনের একটি জোট। তিনি এই নানা রঙের দলগুলোকে শুধু অল্প কয়েক মাসের জন্য একসঙ্গে রাখতে সক্ষম হতে পারেন, যে সময়টার মধ্যে জোটের শরিকেরা কিছু তাৎক্ষণিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গ্রহণে একমত হবে, এবং ইমরানের কিছু দূষিত কাজকে বাতিল করে পূর্বাবস্থা ফিরিয়ে আনতে কিছু রাজনৈতিক এবং আইনি ব্যবস্থাও নেবে। কিন্তু পরের বছরের আগস্টে জাতীয় পরিষদের মেয়াদ শেষ না–হওয়া পর্যন্ত এই জোটের পক্ষে টিকে থাকা অসম্ভব। অন্য কথায়, পাকিস্তানে সেপ্টেম্বর/অক্টোবর বা ডিসেম্বর/জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। যে হেতু ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে দেওয়ার ৬০-৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে, এর অর্থ হল জুনের শেষের দিকে (সেপ্টেম্বর নির্বাচনের জন্য) অথবা ডিসেম্বর/জানুয়ারি নির্বাচনের জন্য  সেপ্টেম্বর/অক্টোবরের মধ্যে একটি তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে।

এই বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ কারণ নভেম্বরের শেষের দিকে নতুন সেনাপ্রধান নিয়োগ করতে হবে। নিশ্চয়ই শেহবাজ একজন তত্ত্বাবধায়ককে দায়িত্ব দেওয়ার আগে পরবর্তী প্রধান বাছাই করে ফেলতে চাইবেন। এটা এখন স্পষ্ট যে যাঁকে ইমরান চেয়েছিলেন সেই প্রাক্তন আইএসআই প্রধান ফয়েজ হামিদ এই পদে আসবেন না। সেপ্টেম্বরে ভোট হলে, যা পিএমএলএন সহজেই জিতবে বলে আশা করছে, শেহবাজের কাছে জেনারেল কমর বাজওয়ার উত্তরসূরি বাছাই করার জন্য সময় থাকবে। ডিসেম্বরে ভোট হলে কাজটা কিছুটা কঠিন হয়ে যাবে, কারণ এর অর্থ হল বাজওয়া অবসর নেওয়ার প্রায় দুই থেকে তিন মাস আগে পরবর্তী প্রধানের নাম ঘোষণা করা, যা বাজওয়াকে সেই সময়টার জন্য খোঁড়া ঘোড়া বানিয়ে দেবে। নিজের হাতে বাছাই করা সেনাপ্রধানদের নিয়ে শরিফ পরিবারের ইতিহাস অবশ্য সুখের ছিল না:‌ নওয়াজ শরিফের প্রতিটি সেনাপ্রধানের সঙ্গে সমস্যা ছিল। তবে শেহবাজ হয়তো ভাবছেন যে তিনি এই প্যাটার্নটি ভেঙে দেবেন।

বিদেশী পাকিস্তানিদের ভোটাধিকার এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের ব্যবহার বাতিল করতে ইমরান জমানার কিছু জঘন্য আইনকে উল্টে দেওয়ার জন্য আইন প্রণয়ন করতে হবে।

কখন ন্যাশনাল অ্যসেম্বলি ভেঙে দিয়ে তত্ত্বাবধায়কের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে তা নির্ধারণের সময়ে সেনাপ্রধান বাছার চেয়েও বেশি করে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলোকে মাথায় রাখতে হবে। রাজনৈতিক স্তরে সরকার ব্যাপক পরিবর্তন করতে এবং ইমরানের অনুগতদের প্রশাসন থেকে ছেঁটে ফেলতে চাইবে। তারা প্রেসিডেন্টকেও প্রতিস্থাপন করতে চাইবে, কারণ তিনি ঘোরতর ইমরানপন্থী। ন্যাশনাল অ্যসেম্বলির স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারকেও যেতে হবে। বিদেশী পাকিস্তানিদের ভোটাধিকার এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের ব্যবহার বাতিল করতে ইমরান জমানার কিছু জঘন্য আইনকে উল্টে দেওয়ার জন্য আইন প্রণয়ন করতে হবে। প্রাদেশিক গভর্নরদের পরিবর্তন করতে হবে। পিএমএলএন–এর নেতৃত্বে একটি জোট সরকারকে পঞ্জাবে বসাতে হবে। যদি খাইবার পাখতুনখোয়ায় পিটিআই সরকার অনড় থাকে, তা হলে পেশোয়ারে সেই সরকারকে প্রতিস্থাপন করতে অনাস্থা প্রস্তাব আনার সম্ভাবনা আছে। দলত্যাগ–বিরোধী মামলার বাড়াবাড়ি এবং অন্যান্য সমস্ত ধরনের রাজনৈতিক-আইনি জটিলতায় ভরা রাজনৈতিক পরিবেশে এই সমস্ত কাজ করতে হবে।  সর্বোপরি, ফেডারেল সরকারকে চারটি প্রদেশকে প্রাদেশিক পরিষদ ভেঙে দিতে রাজি করাতে হবে, যাতে একযোগে নির্বাচন হতে পারে। এবং এই সবই করতে হবে এমন ভাবে যাতে জোটের শরিকদের মধ্যে সম্পর্কের ভারসাম্য স্থির থাকে।

চলতি অর্থনৈতিক সমস্যা

সব চ্যালেঞ্জের মধ্যে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ অর্থনৈতিক। এর কোনও চটজলদি সমাধান উপলব্ধ নেই। যে কোনও সাময়িক সহায়তা—হয় সৌদি আরব, চিন বা সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার, না হলে ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ডের (আইএমএফ)‌ থেকে জরুরি তহবিল—পাকিস্তানকে খুব বেশি দূর নিয়ে যাবে না, শুধু কয়েক মাসের জন্য বিপর্যয় স্থগিত করবে। পরিস্থিতি কেমন?‌ রুপি ভেঙে পড়ছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বিপজ্জনক ভাবে কম এবং সেটুকুও দ্রুত হারে হ্রাস পাচ্ছে, সুদের হার বাড়ানো হয়েছে, যা ব্যবসার উপর ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলবে এবং ঋণ পরিশোধ ব্যয় এমন পর্যায়ে নিয়ে যাবে যেখানে এমনকি প্রতিরক্ষা ব্যয়ের বড় অংশ ঋণের মাধ্যমে পূরণ করতে হবে। মূল্যস্ফীতি আকাশচুম্বি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ ভর্তুকি তুলে নিতে হবে এবং জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম বিরাট ভাবে বাড়াতে হবে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পাকিস্তানি রুপির বিনিময় হার ২০০ রুপিতে এক ডলারের স্তর অতিক্রম করতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে; পেট্রোলের দাম প্রায় ৫০–৬০ পাকিস্তানি রুপি, অর্থাৎ প্রায় ৩০-৪০ শতাংশ, বাড়াতে হবে। কিন্তু নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে ভোটারদের ওপর এ ধরনের দায় চাপানোর সামর্থ্য কোনও রাজনৈতিক দলের নেই। কাজেই আপাতত একটি রাজনৈতিক সরকার যা করবে তা হল অর্থনীতি যাতে ডুবে না–যায় সেজন্য সামান্য কিছু রদবদল। সত্যিকারের কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে তত্ত্বাবধায়ক বা নির্বাচনের পরে ক্ষমতায় আসা নতুন সরকারকে।

রুপি ভেঙে পড়ছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বিপজ্জনক ভাবে কম এবং সেটুকুও দ্রুত হারে হ্রাস পাচ্ছে, সুদের হার বাড়ানো হয়েছে, যা ব্যবসার উপর ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলবে এবং ঋণ পরিশোধ ব্যয় এমন পর্যায়ে নিয়ে যাবে যেখানে এমনকি প্রতিরক্ষা ব্যয়ের বড় অংশ ঋণের মাধ্যমে পূরণ করতে হবে।

একটি তাত্ত্বিক সম্ভাবনা রয়েছে যে শেহবাজ ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেবেন এবং পরের বছরের আগস্ট পর্যন্ত, অর্থাৎ বর্তমান ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির মেয়াদ শেষ না–হওয়া পর্যন্ত, ক্ষমতায় থাকবেন। তবে এর অর্থ দাঁড়াবে জোট চালানো, কঠোর অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বাস্তবায়ন এবং অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করা। সমস্যাগুলির আকার অনুযায়ী অবশ্য এরকম হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। কাঠামোগত সংস্কার কয়েক মাসে হয় না, কয়েক বছর লাগে। তার জন্য দৃঢ় রাজনৈতিক ইচ্ছার প্রয়োজন, আর তা হল এমন কিছু যা রাজনীতিবিদরা যখন নির্বাচনের মুখোমুখি তখন তা তাঁদের থাকে না। সহজ কথায় শেহবাজ কঠিন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত থাকলেও তিনি তা করতে গেলে তাঁর জোটের শরিকরা ভয় পেয়ে যাবেন এবং সম্ভবত তাঁকে পরিত্যাগ করবেন।

অতএব যে সম্ভাবনা বেশি তা হল শেহবাজের সরকার শুধু একটি সংক্ষিপ্ত মেয়াদের জন্য ক্ষমতায় থাকবে এবং শীঘ্রই এক তত্ত্বাবধায়ককে পথ করে দেবে, যারা সেপ্টেম্বর/অক্টোবরের মধ্যে নতুন নির্বাচন আয়োজন করবে, আর নির্বাচন কমিশন অতিরিক্ত সময় কাজ করলে তার আগেই। শেহবাজ আগামী অর্থবছরের বাজেট পেশ করলে অবাক হতে হবে। কাজেই তাঁর পক্ষে ভোট অন অ্যাকাউন্ট উপস্থাপন এবং একজন তত্ত্বাবধায়ককে হস্তান্তর করাই স্বাভাবিক। আদর্শ অবস্থায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একটি নির্বাচিত সরকারের পূর্ণ বাজেট পেশ করার জন্য অপেক্ষা করার কথা। তবে, এটা সম্ভব যে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তত্ত্বাবধায়ক (টেকনোক্র্যাটদের দ্বারা পরিচালিত) তিক্ত অর্থনৈতিক বড়ি পরিবেশন করবে (যা রাজনীতিবিদদের জন্যও সুবিধাজনক)। অবশ্যই, এমন সম্ভাবনাও রয়েছে যে যদি অর্থনীতি দ্রুত পড়তে শুরু করে তবে তত্ত্বাবধায়কের মেয়াদ বাড়তে পারে। এর অনুমোদন আসবে সেই সুপ্রিম কোর্টের থেকে যে ৭ এপ্রিল গণতন্ত্রের পক্ষে একটি রায় দিয়েছে, আর একে সমর্থন করবে সামরিক বাহিনী যারা বেশ কিছুদিন ধরে সব কিছু ঠিকঠাক করার জন্য একটি টেকনোক্র্যাট সরকার দেখতে চেয়েছে, যা পাকিস্তানে ‘‌বাংলাদেশ মডেল’‌ নামে পরিচিত।

আপনি যে ভাবেই দেখুন না কেন, পাকিস্তান আগামী কিছু সময়ের জন্য কিছু সত্যিকারের ভয়াবহ সময়ের মুখোমুখি হতে চলেছে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Author

Sushant Sareen

Sushant Sareen

Sushant Sareen is Senior Fellow at Observer Research Foundation. His published works include: Balochistan: Forgotten War, Forsaken People (Monograph, 2017) Corridor Calculus: China-Pakistan Economic Corridor & China’s comprador   ...

Read More +