-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
গ্রিনল্যান্ডের জন্য নতুন করে ট্রাম্পের দাবি তোলা আর্কটিক নিরাপত্তা এবং চিন ও রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি থেকে শুরু করে বিরল খনিজ পদার্থ পর্যন্ত… অর্থাৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য তার কৌশলগত মূল্যকেই তুলে ধরে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ডেনমার্কের একটি স্ব-শাসিত দ্বীপ গ্রিনল্যান্ড কেনার ব্যাপারে তাঁর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্প বারবার বলেছেন যে, গ্রিনল্যান্ড মার্কিন জাতীয় ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তাই এটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অংশ করে তোলা উচিত। এই ধারণাটি গ্রিনল্যান্ডবাসী, ডেনমার্কের মূল ভূখণ্ডের মানুষ এবং ইউরোপীয়দের তরফে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে, যাঁরা ট্রাম্পের এ হেন মনোভাবকে সম্প্রসারণবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী বলেই মনে করেন। ড্যানিশ প্রাইম মিনিস্টার মেটে ফ্রেডেরিকসেন বলেছেন যে, তাঁর দেশ বিক্রির জন্য উপলব্ধ নয়।
মানচিত্র ১: আর্কটিক অঞ্চলের একটি রাজনৈতিক মানচিত্র
সূত্র: মার্কিন বিদেশ দফতর
এই নিবন্ধটিতে মার্কিন জাতীয় ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা সংরক্ষণ ও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড সংক্রান্ত দর কষাকষির ভূ-অর্থনৈতিক ও কৌশলগত যুক্তি বিশ্লেষণ করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতের জন্য সম্ভাব্য পরিস্থিতির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
কৌশলগত এবং ভূ-অর্থনৈতিক যুক্তি
ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়ের প্রাথমিক দিনগুলিতে ইউরোপীয়রা ধরে নিয়েছিল যে, গ্রিনল্যান্ড কেনার ধারণাটি আর্কটিক দ্বীপের খনিজ সম্পদে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি এবং গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের জন্য চাপ প্রয়োগের কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ সেখানে চিন ও রাশিয়া সামরিক বা অন্য কোনও ভাবে তাদের নৌ-তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে। যাই হোক, ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ড্যানিশ প্রাইম মিনিস্টার মেটে ফ্রেডেরিকসেন ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যে একটি ফোনালাপের পর ড্যানিশরা সঙ্কটের মুখে পড়েছেন। কারণ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দ্বীপটির আমেরিকার অংশ হয়ে ওঠার কৌশলগত প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তাঁর প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
আর্কটিকের প্রতি ট্রাম্পের আগ্রহের কারণগুলি নিরাপত্তা, বৃহৎ শক্তির সমীকরণ এবং ভূ-অর্থনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মূল্যায়ন করা যেতে পারে।
ডেনমার্কের কাছ থেকে গ্রিনল্যান্ড কিনে নেওয়ার মার্কিন প্রচেষ্টা অবশ্য এই প্রথম নয়। মার্কিন ইতিহাসের দিকে নিবিড় নজর রাখলেই ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা ও চাপানউতোরের মাঝে বিদেশি জমি কেনার নজির স্পষ্ট ভাবে ফুটে ওঠে। উদাহরণস্বরূপ, ক্রিমিয়ার যুদ্ধে পরাজয়ের পর রাশিয়া ১৮৬৭ সালে ৮.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে আলাস্কাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিক্রি করে দেয়। সে সময়ে পূর্ববর্তী ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার অভিন্ন সাধারণ বৈরিতার মনোভাব ছিল। কারণ তখন ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরে ব্রিটিশদের একটি প্রভাবশালী নৌশক্তি ছিল, যার বিরুদ্ধে মস্কো ও ওয়াশিংটন লড়াই করতে চেয়েছিল। এটি ছিল আর্কটিক অঞ্চলে ওয়াশিংটনের প্রথম অভিযান। তার পর থেকে বিভিন্ন মার্কিন প্রশাসন ১৮৬৭, ১৯১০, ১৯৪৬, ১৯৫৫, ২০১৯ এবং অবশেষে ২০২৫ সালে গ্রিনল্যান্ড কেনার প্রস্তাব দিয়েছে।
সম্প্রতি আর্কটিকের এই বাধ্যবাধকতা ওয়াশিংটনে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক সমর্থন কুড়িয়েছে, বিশেষ করে ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর অবশ্যই। আর্কটিকের প্রতি ট্রাম্পের আগ্রহের কারণগুলি নিরাপত্তা, বৃহৎ শক্তির সমীকরণ এবং ভূ-অর্থনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মূল্যায়ন করা যেতে পারে।
নিরাপত্তা যুক্তি
রাশিয়া-ইউক্রেন সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করার সঙ্গে সঙ্গে ফিনল্যান্ড ও সুইডেনও যথাক্রমে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনে (ন্যাটো) যোগ দেয়, যার ফলে আর্কটিকের সমস্ত সদস্যই (রাশিয়া বাদে) ন্যাটোর সদস্য হয়ে ওঠে। এ ছাড়াও ২০২১ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে আর্কটিক অঞ্চলে রাশিয়ার বেসামরিক ও সামরিক পারমাণবিক স্থাপনার সংখ্যা ৬২ থেকে বেড়ে ৮১ হয়েছে এবং ২০৩৫ সালের মধ্যে সেই সংখ্যা ১১০ ছাড়িয়ে যেতে পারে। এই ঘাঁটিগুলিতে বুরেভেস্টনিক ক্ষেপণাস্ত্র থেকে শুরু করে পসাইডন টর্পেডো পর্যন্ত… নানাবিধ পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র, ডুবোজাহাজ ও অন্যান্য পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। এই ঘাঁটিগুলি রাশিয়ার পারমাণবিক সামরিক সরঞ্জামের পরীক্ষামূলক ক্ষেত্রও তৈরি করছে। এই ঘটনাপ্রবাহের দরুন মস্কো আর্কটিকের প্রভাবশালী সামরিক শক্তি হয়ে উঠেছে।
মানচিত্র ২: আর্কটিক অঞ্চলে ন্যাটো ও রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি
সূত্র: স্ট্যাটিস্টা রিসার্চ
রাশিয়ার ভূখণ্ড আর্কটিক উপকূলরেখার ৫০ শতাংশেরও বেশি নিয়ে গঠিত এবং আর্কটিক উপকূলে রাশিয়ার ২২টি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, যেখানে ন্যাটোর ২০টি ও নরওয়ের ১১টি (দ্রষ্টব্য মানচিত্র ২) ঘাঁটি রয়েছে। উল্লেখযোগ্য ভাবে, গ্রিনল্যান্ডে পিটুফিক স্পেস বেস রয়েছে, যা পূর্বে থুলে বিমান ঘাঁটি ছিল এবং যা ক্ষেপণাস্ত্রের পূর্ব সতর্কতা এবং প্রতিরক্ষা ও মহাকাশ নজরদারির জন্য মার্কিন সামরিক স্থাপনার চাবিকাঠি ছিল। আর্কটিক অঞ্চলে রাশিয়ার সামরিক ও পারমাণবিক সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে লড়াই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড সংক্রান্ত দর কষাকষির ক্ষেত্রে নিরাপত্তাজনিত একটি প্রধান কারণ হতে পারে।
ভূ-অর্থনৈতিক নিরাপত্তা
গ্রিনল্যান্ড কৌশলগত ভাবে দু’টি সম্ভাব্য জাহাজ চলাচলের পথের পাশে অবস্থিত: উত্তর-পশ্চিম প্যাসেজ এবং ট্রান্সপোলার সি রুট। প্রতিকূল ভূখণ্ড, আবহাওয়া ও বরফের কারণে এই পথগুলি বর্তমানে অতিক্রম করা অসম্ভব। তবে আর্কটিক মহাসাগরে বাণিজ্যিক যানবাহন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই পথগুলি বিশ্বব্যাপী ও আঞ্চলিক বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
মানচিত্র ৩: আর্কটিক বাণিজ্য রুট
সূত্র: দ্য আর্কটিক ইনস্টিটিউট
কৌশলগত ভাবে এই পথগুলি পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ এবং আর্কটিকের জরুরি ব্যবস্থাপনা, প্রতিরোধ ও প্রতিক্রিয়ায় সহায়তা করার জন্য প্রয়োজনীয় বিস্তৃত সামুদ্রিক অবকাঠামো থেকে উপকৃত হওয়ার ক্ষেত্রে আদর্শ অঞ্চলে রয়েছে গ্রিনল্যান্ড। বর্তমানে প্রতি বছর ৫০০টি জাহাজ আর্কটিকে একাধিক সমুদ্রযাত্রা করে, যা ২০১৩ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
জাহাজ চলাচলের পথের তুলনায় ভূ-কৌশলগত অবস্থান ছাড়াও গ্রিনল্যান্ডের প্রাকৃতিক সম্পদও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আগ্রহকে বাড়িয়ে তুলেছে। গ্রিনল্যান্ডের রেয়ার আর্থ বা বিরল খনিজ (আরইএম) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে চিনের উপর নির্ভরতা কমাতে সাহায্য করে, যা বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহ শৃঙ্খলে আধিপত্য বিস্তার করে। গ্রিনল্যান্ডে লিথিয়াম, গ্রাফাইট, ইট্রিয়াম ও কোবাল্টের সুবিশাল মজুদ রয়েছে, যা ব্যাটারি, বায়ু ও সৌর প্রযুক্তি এবং উন্নত সামরিক সরঞ্জাম তৈরির জন্য প্রয়োজনীয়। গ্রিনল্যান্ডে বিশাল অনাবিষ্কৃত অফশোর তেল ও গ্যাসের মজুদ এবং প্রচুর অব্যবহৃত মৎস্য সম্পদ রয়েছে, যা ট্রাম্পিয়ান গণনার সঙ্গেও সম্পর্কিত।
মানচিত্র ৪: গ্রিনল্যান্ডের ভূ-তত্ত্ব ও সম্পদ
সূত্র: দ্য গ্রিনল্যান্ড গোল্ড রাশ
আর্কটিক পথ ও গ্রিনল্যান্ডের বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদে প্রবেশাধিকার মার্কিন বাণিজ্য ও অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ডের ধারণা সংক্রান্ত হিসেব-নিকেশকে আকার দিতে পারে।
বৃহৎ শক্তির হিসেব
এ ছাড়াও চিন - যারা নিজেকে ‘আর্কটিকের কাছাকাছি’ অবস্থিত রাষ্ট্র বলে মনে করে - রাশিয়ান আর্কটিক অঞ্চলে সামরিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করেছে। চিন-রুশ যৌথ উপকূলীয় রক্ষী বাহিনী এবং সামরিক মহড়া ও পোলার সিল্ক রোড কাঠামোর মাধ্যমে রুশ আর্কটিক বরাবর রসদ ও জ্বালানি অবকাঠামোতে বিনিয়োগের ফলে সমস্ত অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতা তত্ত্বাবধানের জন্য যৌথ রাশিয়া-চিন আর্কটিক উপ-শাসন এবং সহযোগিতা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রুশ আর্কটিক অঞ্চলে চিনা বিনিয়োগের পরিমাণ মোট ৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আর্কটিক অঞ্চলে রাশিয়া-চিন অর্থনৈতিক-নিরাপত্তা অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করে তোলে।
যেহেতু ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন রিপাবলিকান দল এখন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ, মার্কিন সেনেট এবং হোয়াইট হাউস নিয়ন্ত্রণ করে, তাই গ্রিনল্যান্ড ক্রয় আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্টের (পিওটিইউএস) জন্য একটি অপ্রতিরোধ্য কাজ।
এ কথা বিশ্বাসযোগ্য যে, গ্রিনল্যান্ড ক্রয় আর্কটিক অঞ্চলে চিন এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের একটি স্তম্ভ তৈরি করার উদ্দেশ্যে গৃহীত হয়েছে। মার্কিন আইন প্রণয়ন এবং কার্যনির্বাহী সংস্থাগুলির বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধকে হ্রাস করে। যেহেতু ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন রিপাবলিকান দল এখন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ, মার্কিন সেনেট এবং হোয়াইট হাউস নিয়ন্ত্রণ করে, তাই গ্রিনল্যান্ড ক্রয় আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্টের (পিওটিইউএস) জন্য একটি অপ্রতিরোধ্য কাজ। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে টেনেসির রিপাবলিকান প্রতিনিধি অ্যান্ডি ওগলস তাঁর বেশ কয়েকজন রিপাবলিকান সহকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে ‘মেক গ্রিনল্যান্ড গ্রেট এগেইন (এমজিজিএ) আইন’ প্রবর্তন করেন, যা মার্কিন কংগ্রেসকে অবিলম্বে গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণের জন্য ডেনমার্কের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আলোচনাকে সমর্থন জোগানোর পথে চালিত করবে। এই আইনের অনুমোদনের পর, পিওটিইউএস আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্রিনল্যান্ড ক্রয় নিয়ে আলোচনা শুরু করতে পারে।
সম্ভাব্যতা ও পরিস্থিতি
বিভিন্ন সম্ভাব্যতার মধ্যে ভবিষ্যতে চারটি পরিস্থিতি অনুমান করা যেতে পারে। যেহেতু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ডকে মার্কিন ভূখণ্ড হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দেননি, তাই তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ডেনমার্কের বাণিজ্যের উপর শুল্ক ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারেন। এটি উল্লেখযোগ্য যে, ডেনমার্ক ইউরোপীয় অর্থনৈতিক সম্প্রদায়ের বা ইউরোপিয়ান ইকোনমিক কমিউনিটির (ইইসি) অংশ এবং ডেনমার্কের উপর সম্ভাব্য মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব অনুরণিত হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রধান ড্যানিশ রফতানির মধ্যে রয়েছে ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও চিকিৎসা প্রযুক্তি। আর একটি সম্ভাবনা - যা অত্যন্ত অসম্ভব কিন্তু যুক্তিসঙ্গত বলে মনে হচ্ছে তা হল, ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ডের উপর আক্রমণ করবেন। ডেনমার্ক একটি ন্যাটো মিত্র এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে যে কোনও সামরিক পদক্ষেপ ট্রান্সআটলান্টিক জোটকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, যা চিন ও রাশিয়ার সুবিধা করে দেবে। তৃতীয় সম্ভাব্য পরিস্থিতি হল এই যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ডের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন এবং ডেনমার্ক আর্কটিকের ন্যাটো বাধ্যবাধকতা পূরণের প্রতিশ্রুতি দিলে ও গ্রিনল্যান্ডের প্রতিরক্ষা অবকাঠামোকে পর্যাপ্ত মানদণ্ডে উন্নীত করলে ট্রাম্প ক্ষান্ত হবেন। এই জল্পনাও রয়েছে যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড ক্রয়ের নেপথ্যে এটিই সুপ্ত লক্ষ্য। শেষ সম্ভাব্য পরিস্থিতি - যা দীর্ঘমেয়াদি এবং যা অর্জনে অনেক বাধা-বিপত্তিও রয়েছে তা হল, গ্রিনল্যান্ড ডেনমার্কের কাছ থেকে স্বাধীনতা ফিরে পাবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করবে। বর্তমানে, ডেনমার্ক গ্রিনল্যান্ডবাসীদের ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ভর্তুকি প্রদান করে, যা গ্রিনল্যান্ড সরকারের বার্ষিক বাজেটের ৫০ শতাংশ। স্বাধীনতা অর্জনের আগে গ্রিনল্যান্ডকে তার অর্থনীতি মেরামত করতে হবে।
তৃতীয় সম্ভাব্য পরিস্থিতি হল এই যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ডের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন এবং ডেনমার্ক আর্কটিকের ন্যাটো বাধ্যবাধকতা পূরণের প্রতিশ্রুতি দিলে ও গ্রিনল্যান্ডের প্রতিরক্ষা অবকাঠামোকে পর্যাপ্ত মানদণ্ডে উন্নীত করলে ট্রাম্প ক্ষান্ত হবেন।
উপসংহার
ওয়াশিংটন গ্রিনল্যান্ড কেনার প্রস্তাব ২০২৫ সালে এই প্রথম বার দেয়নি, অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবের নজির আছে। মার্কিন ট্রান্সআটলান্টিক মিত্ররা এই ধারণাকে উপহাস করলেও ট্রাম্পের প্রস্তাব বিশ্ব বিষয়ক ক্ষেত্রে আর্কটিক অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্বকেই দর্শায়। ট্রাম্পের প্রস্তাব কৌশলগত, অর্থনৈতিক এবং বৃহৎ শক্তির সীমানার মধ্যে নিহিত থাকতে পারে। তবে গ্রিনল্যান্ড ক্রয় করা নিঃসন্দেহে দুরূহ কাজ। ধারণাটির সম্ভাব্যতা নির্ভর করে ড্যানিশ প্রতিরোধ, মার্কিন রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও গ্রিনল্যান্ডের আর্থিক স্বয়ংসম্পূর্ণতার উপর। আর্কটিকের ভবিষ্যৎ আসলে নির্ভর করছে এই ক্রমশ উন্মোচিত সমীকরণের উপরেই।
পৃথ্বী গুপ্ত অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের জুনিয়র ফেলো।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Prithvi Gupta is a Junior Fellow with the Observer Research Foundation’s Strategic Studies Programme. Prithvi works out of ORF’s Mumbai centre, and his research focuses ...
Read More +