Published on Jul 09, 2022 Updated 0 Hours ago

২০৭০ সালের মধ্যে ভারতের নেট–শূন্য লক্ষ্য অর্জনের জন্য হাইড্রোজেন মিশনকে জলবায়ু কর্মসূচির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে সংযুক্ত করতে হবে।

সবুজ হাইড্রোজেন: আকাশকুসুম, না একটি বিকাশমান রূপান্তর?

দাভোসে হাইড্রোজেন অর্থনীতি নিয়ে যাবতীয় উদ্দীপিত প্রতিক্রিয়া এবং এই ভবিষ্যৎ জ্বালানি ব্যবসার নিয়ামক সক্রিয়তার একটি অংশ পেতে ভারতীয় মন্ত্রকগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতার মধ্যে সবুজ হাইড্রোজেনের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকগুলির সরকারি ওয়েবসাইট থেকে কোনও খাঁটি, সামঞ্জস্যপূর্ণ তথ্য পাওয়া কঠিন ।

দায়িত্বে কারা?

বর্তমানে নতুন এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রককে নোডাল পয়েন্ট বলে মনে করা হয় এবং তারাই নেতৃত্ব দিচ্ছে। পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক একটু পিছিয়ে রয়েছে, যদিও ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন বহু বছর ধরে বায়োমিথেন থেকে হাইড্রোজেন উৎপাদন নিয়ে গবেষণা করছে৷ মন্ত্রকটি গ্যাস পাইপলাইনগুলি, যার মাধ্যমে হাইড্রোজেন বা তা থেকে জাত গ্যাস বিতরণ করা হবে, এবং সেই সঙ্গে যে জ্বালানির সঙ্গে হাইড্রোজেন মিশ্রিত করা যেতে পারে সেই প্রাকৃতিক গ্যাসও নিয়ন্ত্রণ করে। আবার যাকে জলবায়ু সক্রিয়তার কারণে একটি অস্তপ্রায় মন্ত্রকের পর্যায়ে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে সেই যুদ্ধক্লান্ত কয়লা মন্ত্রক সঠিক ভাবে  তার পণ্যকে সবুজ করার চেষ্টা করছে। এই উদ্দেশ্যে কার্বন ক্যাপচার এবং ব্যবহার/‌মজুদ সহ কয়লা থেকে নীল হাইড্রোজেন উৎপাদনের বিকল্পগুলি প্রস্তাব করার জন্য মন্ত্রক একটি বিশেষজ্ঞ দল গঠন করেছে। ২০৪৫ সাল পর্যন্ত ভারতের জন্য কয়লা যে একটি উল্লেখযোগ্য জ্বালানি হয়ে থাকবে তা বিবেচনায় রেখে বলা যায় এটি একটি অর্থবহ  প্রয়াস।

সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক, কিছুটা অসামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে, সড়ক পরিবহণের জন্য সবুজ হাইড্রোজেনের ব্যবহার প্রচার করছে। তারা এই কথা মাথায় রাখছে না যে গাড়ি, দুই চাকার যান এবং বাস বিদ্যু্দয়নের চলমান উদ্যোগের উপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তা ছাড়া অদূর ভবিষ্যতে সবুজ হাইড্রোজেনের বাণিজ্যিক ব্যবহার শুধু ভারী সড়কযান, নির্মাণ উপকরণ ও জাহাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। নৌ–পরিবহণের জন্য মূলধারার বৈশ্বিক সবুজ মানগুলি যে কার্যকর থাকতে হবে, সে কথা মাথায় রেখে বলা যায় নৌপরিবহণ মন্ত্রী অবশ্যই এই প্রেক্ষিতে যথাযথ ভাবে উৎসাহব্যঞ্জক বিবৃতি দিয়েছেন। তবে বিশ্বব্যাপী শিপিংয়ের মাত্র ২.৫ শতাংশ ভারতে নিবন্ধিত। ইতিমধ্যে ভারতীয় রেলওয়ে বিচক্ষণতার সঙ্গে ১০০ শতাংশ বিদ্যুদয়নের জন্য তার পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে চলেছে, এবং সংশ্লিষ্ট সৌরশক্তি ঘরে তৈরি করা বা চুক্তির মাধ্যমে পাওয়ার চেষ্টা  চালিয়ে যাচ্ছে।

নৌপরিবহণের জন্য মূলধারার বৈশ্বিক সবুজ মানগুলি যে কার্যকর থাকতে হবে, সে কথা মাথায় রেখে বলা যায় নৌ–পরিবহণ মন্ত্রী অবশ্যই এই প্রেক্ষিতে যথাযথ ভাবে উৎসাহব্যঞ্জক বিবৃতি দিয়েছেন। তবে বিশ্বব্যাপী শিপিংয়ের মাত্র ২.৫ শতাংশ ভারতে নিবন্ধিত।

এদিকে, ২০৩০ সালের মধ্যে ৫ মিলিয়ন টন বা তার বেশি সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হালকা ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২১ সালের ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি গ্লোবাল হাইড্রোজেন রিভিউ  অনুসারে, এই লক্ষ্যে পৌঁছতে পারলে তা   হয়ে দাঁড়াবে ২১ মিলিয়ন টন পূর্বাভাসিত বৈশ্বিক সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদনের অসম্ভব রকম উচ্চ ২৪ শতাংশ। বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলির উপর ভিত্তি করে পূর্বাভাস কিন্তু আরও কম। অনেক রাঁধুনি এবং নায়কের উপস্থিতির ফলে ভারতে হাইড্রোজেন গামলায় বুদবুদ উঠতে দেখা গেলেও তাতে গরম বাতাসের অতিরিক্ত কিছু আছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে।

হাইড্রোজেনের ব্যবসায়িক বিষয়:‌ সবুজ ও নীল

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাজেটে ‘‌হাইড্রোজেন মিশন’‌ ঘোষণা করা হয়েছিল এবং গত বছর প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে তাঁর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে একে সমর্থন করেছিলেন। এই ঘটনা আশ্চর্যজনক যে ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২–এ জারি করা বিদ্যুৎ মন্ত্রকের একটি প্রেস রিলিজ ব্যতীত কোনও সামগ্রিক নীতি না–থাকা সত্ত্বেও দেশীয় বেসরকারি ক্ষেত্র বিনিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে, যার মধ্যে কিছু ভাসাভাসা, আর বাকিগুলো সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদনের সংখ্যা বাড়াতে আগ্রহী। লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, উন্মুক্ত উপলব্ধতার (ওপ্‌ন অ্যাক্সেস)‌ শর্তাবলি পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি সরবরাহকারী এবং সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদকদের মধ্যে একটি মূল সংযোগরেখা হলেও তা  অসংজ্ঞায়িত থেকে গেছে। অতীতে কখনওই একটি সুসংজ্ঞায়িত ‘‌নীতি’‌ আপাতদৃষ্টিতে সম্ভাব্য বিনিয়োগ চালনার ক্ষেত্রে এর চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ ছিল না।

এর প্রাথমিক কারণ হল, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনকারীরা তাদের সবুজ শক্তির জন্য একটি লাভজনক ও সম্ভাব্য বড় বাজার হিসেবে সবুজ হাইড্রোজেনের  উৎপাদকদের সঙ্গে সম্ভাব্য একীকরণকে স্বাগত জানায়। এখনও অবধি তারা সমস্ত বিদ্যুৎ সরবরাহকারীর মতোই যথেষ্ট নগদের অভাবে–ভোগা বণ্টন সংস্থাগুলি থেকে টাকা পাওয়ার অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হয়৷ বিদ্যুৎ সরবরাহকারীদের বকেয়া ২০২২ সালের মে মাসে ১ ট্রিলিয়ন ভারতীয় টাকা অতিক্রম করেছে। শিল্প গ্রাহকদের, যাদের থেকে টাকা পাওয়া নিশ্চিত, তাদের সরাসরি সরবরাহের সম্ভাবনা সবুজ শক্তি উৎপাদনকারীদের উৎসাহিত করার জন্য যথেষ্ট।

সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের শোধনাগারগুলিকে ২০২৩–২৪ সাল থেকে ১০ শতাংশ সবুজ হাইড্রোজেন সংযোজন লক্ষ্যমাত্রা এবং সার উৎপাদকদের ৫ শতাংশ সবুজ হাইড্রোজেন সংযোজন লক্ষ্যমাত্রা স্থির করতে অভ্যন্তরীণ ভাবে নির্দেশ দিয়ে সবুজ হাইড্রোজেনের অভ্যন্তরীণ চাহিদা তৈরি করতে সাহায্য করেছে বলে মনে হচ্ছে (যদিও সর্বজনীন ভাবে উপলব্ধ কোনও তথ্য নেই)। কৃষকদের ক্রয় খরচ কমাতে সরকার গত বছর সার উৎপাদন ভর্তুকিতে ১.৪ ট্রিলিয়ন ভারতীয় টাকা ব্যয় করেছে (যা তার মোট ব্যয়ের ৩.৭ শতাংশ)। সবুজ হাইড্রোজেন সংক্রান্ত নির্দেশের এই প্রারম্ভিক, ‘‌বাধ্যতামূলক’‌ ব্যবহারের সঙ্গে সেই ব্যয় বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। সবুজ হাইড্রোজেনের মূল্য এখন কেজিপ্রতি ৪ মার্কিন ডলার। এর বিপরীতে এর দাম কেজিপ্রতি ১ মার্কিন ডলার করার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে,যাতে এটি প্রাকৃতিক গ্যাসের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে, যার দাম প্রতি এমএমবিটিইউ  ৬ মার্কিন ডলার। ইউক্রেন সংকটের পর গ্যাসের দাম দ্বিগুণ হয়েছে, তবে তা সরবরাহের স্থানচ্যুতির কারণে একটি স্বল্পমেয়াদি বিপর্যয়।

প্রাথমিক কারণ হল, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনকারীরা তাদের সবুজ শক্তির জন্য একটি লাভজনক এবং সম্ভাব্য বড় বাজার হিসেবে সবুজ হাইড্রোজেনের  উৎপাদকদের সঙ্গে সম্ভাব্য একীকরণকে স্বাগত জানায়।

অভ্যন্তরীণ আদেশ, যদি থাকে, সরকারি মালিকানাধীন শোধনাগারগুলির জন্য কম উদ্বেগজনক। পেট্রোলিয়াম জ্বালানিতে সরকার খুব বেশি ভর্তুকি দেয় না। সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় খরচ বৃদ্ধির কারণে জাতীয় তেল সংস্থাগুলির মুনাফা হ্রাস পেতে পারে, এবং তা সরকারের লভ্যাংশকে প্রভাবিত করবে। তবে গবেষণা ও উন্নয়ন এবং ইলেক্ট্রোলাইজার প্রকল্পগুলিকে বড় করার জন্য একটি পরোক্ষ ভর্তুকি হিসেবে বিষয়টি সহনীয়।

একটি সার্থক বিকল্প হল কার্বন ক্যাপচার ব্যবস্থা (সি সি ইউ এস)‌ কাজে লাগিয়ে নীল হাইড্রোজেন উৎপাদন ত্বরান্বিত করা। এটি কয়লা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগের সঙ্গেও মিলে যাবে। উল্লেখযোগ্য ভাবে, আই ই এ অনুমান করে যে বিশ্বব্যাপী ২০৩০ সালের মধ্যে সি সি ইউ এস ৫০ শতাংশ অবদান রাখবে, এবং এমনকি ২০৫০ সালের মধ্যে কম কার্বনবিশিষ্ট হাইড্রোজেনের মোট উৎপাদনে প্রায় ১৫ শতাংশ অবদান রাখবে।

লেনদেন সংক্রান্ত সমস্যাগুলির বাইরে দেখুন এবং ভারতের ২০৭০ নেট–শূন্য লক্ষ্যের সঙ্গে সংযুক্ত করুন

আরও সাধারণ ভাবে, সবুজ হাইড্রোজেন কৌশলটি আমাদের জলবায়ু কর্মসূচির সঙ্গে সংযুক্ত হওয়া উচিত। গ্লাসগোতে ভারত ২০৭০ সালের মধ্যে নেট–শূন্য করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ (২০৬০ সালের মধ্যে চিন)। ভারতকে অন্যায় ভাবে উচ্চ দূষণের অর্থনীতি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মাথাপিছু কার্বন নির্গমনের ভিত্তিতে ভারত বিশ্বব্যাপী গড়ের অর্ধেকেরও কম নির্গমন করে, তাই এর কাছে শক্তি খরচ দ্বিগুণ করার জন্য স্থান (যা অন্যদের খালি করে দেওয়া দরকার) রয়েছে। তা হলেও চলতি বৈশ্বিক গড় থেকে তা কম হবে। গ্লাসগোতে (২০২১) প্রধানমন্ত্রী মোদীর ঘোষিত প্রগতিশীল কার্বন হ্রাস ব্যবস্থাগুলি আমাদের অর্থনীতির সবুজায়নের জন্য ভারতের পর্যায়ক্রমিক ও প্রাসঙ্গিক অঙ্গীকারের যথেষ্ট প্রমাণ।

প্রধানত বেসরকারি ক্ষেত্রের উদ্যোগে নীল ও সবুজ হাইড্রোজেন এই দুটি নিয়েই সহযোগিতামূলক গবেষণা চালানো উচিত। এমনকি উন্নত অর্থনীতির সরকারগুলিও প্রযুক্তির উন্নয়ন ও বাণিজ্যিকীকরণে মোট ব্যয়ের ১০ শতাংশের বেশি বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দেয়নি। আমাদের মূল শক্তি হল ভূ–ভৌতিক এবং ইলেক্ট্রোলাইজার ম্যানুফ্যাকচারিং–সহ বৈচিত্র্যময় শিল্প উৎপাদন ভিত্তি, যা বৈশ্বিক চাহিদা মেটাতে পুনর্বিন্যস্ত করা যেতে পারে। সৌরশক্তির  সম্ভাবনার প্রাচুর্য এবং ইন্দো–প্যাসিফিক অঞ্চলে আমাদের অবস্থান  কিন্তু এশিয়া ও আফ্রিকায় ভবিষ্যতের সবুজ বৃদ্ধির সম্ভাবনায় আমাদের কেন্দ্রিকতারই পরিচায়ক।

গ্লাসগোতে (২০২১) প্রধানমন্ত্রী মোদীর ঘোষিত প্রগতিশীল কার্বন হ্রাস ব্যবস্থাগুলি আমাদের অর্থনীতির সবুজায়নের জন্য ভারতের পর্যায়ক্রমিক ও প্রাসঙ্গিক অঙ্গীকারের যথেষ্ট প্রমাণ।

মানদণ্ড হিসেবে আমরা ধরতে পারি চিলি, মরক্কো, সৌদি আরব ও অস্ট্রেলিয়া কী ভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের মতো প্রধান সবুজ হাইড্রোজেন ব্যবহারকারীদের সঙ্গে জোট বেঁধেছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে কাজ করছে। চিন কয়লা সি সি ইউ এস–এ প্রচুর বিনিয়োগ করেছে যা আমাদের মধ্যমেয়াদি উদ্দেশ্যগুলির সঙ্গে সংযুক্ত। অস্ট্রেলিয়া প্রতি কেজি মার্কিন ডলার ৪.৩ হারে জাপানে জাহাজের মাধ্যমে তরল সবুজ হাইড্রোজেন সরবরাহ করার চুক্তি করেছে। সাম্প্রতিক পণ্যের মূল্যস্ফীতি সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদনের জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, কারণ খরচ বাড়তে বাধ্য। কিন্তু এই ঘটনা জ্বালা্নি হাইড্রোজেন দিয়ে যা প্রতিস্থাপিত করতে চাওয়া হচ্ছে, সেই প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যয় বৃদ্ধিরও প্রতিফলন ঘটায়। দ্বিতীয়ত, পণ্যের বাজার চক্রাকার। দীর্ঘমেয়াদি শক্তি নিরাপত্তার জন্য টাকা দেওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন দক্ষ ব্যবহারকারীদের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি অবস্থান নেওয়াই যুক্তিযুক্ত।

গার্হস্থ্য প্রেক্ষাপট উপেক্ষা করার অর্থ ভবিষ্যতে খরচ বাড়ানো

ভারত একটি মূল্য–সংবেদনশীল বাজার যার শক্তির ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার জন্য আর্থিক ক্ষমতা অগভীর । ২০০০–এর দশকে ভারতে উৎসাহের সঙ্গে গ্যাস উৎপাদন ক্ষমতা তৈরি করা হলেও তা কখনই এর উচ্চতর খরচ বহন করার অনিচ্ছার সঙ্গে খাপ খায়নি। এর ফলে গ্রীষ্মের চাহিদা মেটাতে কয়লা আমদানি বাড়লেও ১০ গিগাওয়াট বেসরকারি গ্যাস উৎপাদন কার্যত থমকে আছে। বণ্টন সংস্থাগুলি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ সরবরাহের তুলনায় এলএনজি–র উচ্চতর সরবরাহ খরচের জন্য টাকা দিতে পারে না, এবং তাদের অবশ্যই একটি আবশ্যিক পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি সরবরাহের খরচ বহন করতে হবে।

একটি সাধারণ প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো যা সমস্ত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রককে যুক্ত করে—যেমন  প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি ক্ষমতাপ্রাপ্ত এনার্জি ট্রানজিশন কাউন্সিল—মন্ত্রক ও রাজ্যগুলিতে উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলিকে সংযুক্ত করতে সাহায্য করবে৷ ভারতকে আগামী দুই দশকে উচ্চতর কার্বন হ্রাসের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে, যাতে ২০৭০ সালের মধ্যে নেট–জিরোতে যাওয়ার পথটি আগে থেকেই সুনির্দিষ্ট ভাবে সংজ্ঞায়িত হয়ে যায়, এবং ২০৪০–৪৫ সাল থেকে কয়লাভিত্তিক শক্তি উৎপাদন দ্রুত হ্রাস পেতে থাকে।

সৌরশক্তির সম্ভাবনার প্রাচুর্য এবং ইন্দো–প্যাসিফিক অঞ্চলে আমাদের অবস্থান  কিন্তু এশিয়া ও আফ্রিকায় ভবিষ্যতের সবুজ বৃদ্ধির সম্ভাবনায় আমাদের কেন্দ্রিকতারই পরিচায়ক।

সুসংবাদটি হল যে কম–কার্বন শক্তি রূপান্তরের জেনেরিক এলাকার চারপাশে প্রচুর পরিমাণে উদ্যোগপতি শক্তির ভিড় দেখা দিয়েছে। সবুজ হাইড্রোজেন হল একটি কেন্দ্রীয় স্তম্ভ:‌ শক্তি রূপান্তরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ভারতের কাছে ২০৫০ সালের মধ্যে নির্গমন লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য উন্নত অর্থনীতিগুলিকে বিক্রির মতো নানা সংস্থান রয়েছে—সবুজ হাইড্রোজেনের জন্য উদ্বৃত্ত সৌর বিদ্যুৎ, দক্ষ প্রকৌশল ক্ষমতা, রফতানির জন্য বন্দরভিত্তিক শিল্প অবস্থান, এবং সিঙ্গল উইন্ডো ফাস্ট ট্র্যাক ছাড়পত্র।

ভারত যখন মূলত সবুজ হাইড্রোজেন সরবরাহে অংশ নিতে পারবে, সেই রূপান্তরকালীন পর্বটি পার হয়ে কী করা হবে তা হাইড্রোজেন মিশনকে ভাবতে হবে। আমাদের অবশ্যই ২০৫০–পরবর্তী সময়ের জন্য প্রস্তুত হতে হবে, যখন আমরা ২০৭০ সালের মধ্যে নেট-শূন্যে পৌঁছনোর পথে সবুজ হাইড্রোজেনের চাহিদার দিক থেকেও এক প্রধান শক্তি হয়ে উঠব। তবে এই প্রয়াস যেন আমাদের দ্বৈত অর্থনীতির অংশগুলিকে—যেমন বড় শহর এবং রফতানিভিত্তিক শিল্প ক্লাস্টারগুলিকে—তাদের সরবরাহ শৃঙ্খলে সবুজ হাইড্রোজেন যুক্ত করার জন্য ত্বরান্বিত পরিকল্পনা তৈরি করা থেকে বিরত না–করে। এই বিভাগগুলি একটি সবুজ বিশ্বের জন্য টাকা দিতে পারে। তাদের উচিত আরও সক্রিয় হওয়া এবং জাতীয় প্রচেষ্টায় যোগ দেওয়া।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.