Published on Jan 12, 2022 Updated 0 Hours ago

বিভিন্ন অর্থনৈতিক ক্ষেত্রগুলিকে উন্নয়নশীল দেশগুলির সবুজ ভবিষ্যতের লক্ষ্যে বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলতে পরিকাঠামোগত পরিবর্তন আনতে হবে।

জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ অর্থায়নের ভূ-অর্থনীতি

এই প্রতিবেদনটি ‘আমাদের সবুজ ভবিষ্যতের রূপরেখা নির্মাণ: শূন্য নিঃসরণে রূপান্তরণের উদ্দেশ্যে উপায় এবং নীতি’ সিরিজের অন্তর্গত।


ভূমিকা

রাষ্ট্রপুঞ্জের ইন্টার-গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আই পি সি সি)-এর হিসেব অনুযায়ী, প্রাক-শিল্পায়ন স্তর থেকে তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের নীচে সীমাবদ্ধ করতে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত শুধুমাত্র শক্তি খাতে বার্ষিক ২.৪ লক্ষ কোটি আমেরিকান ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন।[১] অবশ্য জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ অর্থায়ন রাষ্ট্রপুঞ্জের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ বা ইউ এন এফ সি সি সি-র তত্ত্বাবধানে প্রতিটি বিশ্ব জলবায়ু বৈঠকের আলোচনার কেন্দ্রে থাকে। উন্নত দেশগুলি ২০২০ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলিকে বার্ষিক ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ অর্থায়নের উদ্দেশ্যে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছিল। এই অর্থ বিনিয়োগ করার কথা প্রথমে ২০০৯ সালে কোপেনহেগেন চুক্তিতে ঘোষণা করা হয়েছিল যেটি ২০১০ সালের কানকুন চুক্তিতে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পায় এবং ২০১৫ সালে প্যারিস চুক্তিতে তা পুনরায় সমর্থিত হয়।[২]

জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ অর্থায়নের উৎস হতে পারে একাধিক: দ্বিপাক্ষিক রেয়াতি (সুবিধাজনক হারে) ঋণ, বহুপাক্ষিক রেয়াতি ঋণ, উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগকারী আর্থিক সংস্থা এবং বেসরকারি সংস্থা। জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ অর্থায়নের মূল উপাদানগুলি কী কী, এ নিয়ে ঠিক কতটা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে এবং কোন কোন খাতে সেই অর্থ ব্যবহার করা হয়েছে, তার হিসেব অবশ্যই তর্কসাপেক্ষ। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ও ই সি ডি দাবি করেছে যে, উন্নত দেশগুলি ২০১৯ সালে মোট ৭৯৬০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। যদিও এই অঙ্কটার সঙ্গে ভারত-সহ অনেক উন্নয়নশীল দেশই সহমত নয়। তারা যুক্তি দিয়েছে যে, প্রকৃত পক্ষে অর্থ দানের পরিবর্তে শুধু মাত্র অফলপ্রসূ কর্মসূচি ঘোষণার মাধ্যমে জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ অর্থায়নে উন্নত বিশ্বের ভূমিকাকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানো হচ্ছে। ফলে ‘নতুন এবং অতিরিক্ত’ পুঁজি বিনিয়োগের কথা অন্যায় ভাবে বাড়িয়ে বলা হচ্ছে এবং প্রকৃত বিনিয়োগের পরিমাণ চেপে যাওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় রেয়াতহীন ঋণ দানের ব্যাপারটিতে জোর দেওয়া হয়েছে।[৩] ও আর এফ (অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন)-এর করা একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে, ভারত ২০১৮ সালে জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ অর্থায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ২১০০ কোটি মার্কিন ডলারের ৮৫% অভ্যন্তরীণ ভাবে সংগ্রহ করতে সমর্থ হয়েছে এবং ও ই সি ডি-র করা জলবায়ু সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতির ২৯১০০ কোটি মার্কিন ডলারের ৬০% আবার ও ই সি ডি-র দেশগুলিতেই বিনিয়োগ করা হয়েছে

প্রকৃত পক্ষে অর্থ দানের পরিবর্তে শুধু মাত্র অফলপ্রসূ কর্মসূচি ঘোষণার মাধ্যমে জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ অর্থায়নে উন্নত বিশ্বের ভূমিকাকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানো হচ্ছে। ফলে ‘নতুন এবং অতিরিক্ত’ পুঁজি বিনিয়োগের কথা অন্যায় ভাবে বাড়িয়ে বলা হচ্ছে এবং প্রকৃত বিনিয়োগের পরিমাণ চেপে যাওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় রেয়াতহীন ঋণ দানের ব্যাপারটিতে জোর দেওয়া হয়েছে।

জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ অর্থায়নের দিকটির প্রক্রিয়া চালু করা, তার নানা তথ্যের আদানপ্রদান এবং সমগ্র প্রক্রিয়াটিকে সহজতর করে তোলার জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলিকে বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারী দেশগুলির সঙ্গে সদর্থক কথোপকথন চালাতে হবে। এই নিবন্ধটি বিশ্বব্যাপী জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ অর্থায়নের নীতি এবং নিয়ন্ত্রক পরিকাঠামোগুলির উপরে আলোকপাত করে যা বহুপাক্ষিক, দ্বিপাক্ষিক এবং ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীদের ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলিতে জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ অর্থায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে বাধা দিচ্ছে।

১. মাল্টিল্যাটেরাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কস: ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার অপরিহার্যতা

মাল্টিল্যাটেরাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কগুলি (এমডিবি) জলবায়ু প্রশ্নে অভিযোজন এবং প্রশমনের জন্য প্রয়োজনীয় অনুঘটক হিসেবে টাকা দেওয়ার কাজ করতে পারে। এখন পর্যন্ত চুক্তি রয়েছে যে, উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য বৃহত্তর ক্ষেত্রে জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ অর্থায়ন কার্যকর করার উদ্দেশ্যে এমডিবিগুলিকে অবশ্যই ফের গঠন, বিন্যাস এবং পুঁজিকরণ করতে হবে। কিন্তু এমডিবিগুলি কি আদৌ এমন একটি মিশনের জন্য প্রস্তুত? বিশ্বের বৃহত্তম ৫০০টি সম্পদ ব্যবস্থাপক এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সম্মিলিত ১০০ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলার পুঁজির তুলনায় এমডিবি-র হাতে থাকা ২ লক্ষ কোটি আমেরিকার ডলারের মোট পুঁজি যৎসামান্য।[৪]

এমডিবি-এর ভূমিকা বাড়ানোর জন্য, তাদের এমন ভাবে পুনর্বিন্যাস করতে হবে যাতে তারা রেয়াতি ঋণ দেওয়া ছাড়াও নিজ দায়িত্বে ব্যক্তিগত ঋণ দিতে সক্ষম হয়। ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিগুলির সঙ্গে জড়িত রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ঝুঁকি সম্বন্ধে চিন্তিত অর্থ বিনিয়োগকারী এবং ঋণদাতাদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা প্রদান করা যেতে পারে তখনই, যখন ব্যক্তিগত স্তরে পুঁজি বিনিয়োগের ব্যাপারে তাঁদের নিশ্চয়তা দেওয়া হয় বা ক্রাউডিং ইন পন্থা মেনে নেওয়া হয়।[৫] এখনও পর্যন্ত এমডিবির জোগান দেওয়া মোট ব্যক্তিগত পুঁজির ৪৫% নিশ্চয়তা হিসেবে ধার্য করা হয়েছে।[৬] সুতরাং প্রক্রিয়াটিকে আরও সহজ করে তোলার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে ব্যাঙ্ক অফ ইতালি আর একটি বিকল্প প্রস্তাবনা দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, এমডিবিগুলি নিজেদের প্রতিষ্ঠানিক রেটিং কমিয়ে AA+-এ নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিলে তারা নিজেদের বর্তমান ঋণ দানের ক্ষমতা তিন গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে পারে।

গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল গভর্ন্যান্স বিষয়ে জি২০ ২০১৮ সালের এমিনেন্ট পার্সনস গ্রুপের প্রতিবেদন অনুযায়ী এমডিবি-র কাজকে বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে ব্যক্তিগত পুঁজির বিনিয়োগ, ব্যক্তিগত পুনর্বীমা বাজারের সম্প্রসারণ এবং বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য একটি কাঠামো গড়ে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।[৭] অতএব এমডিবি-র কাছে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার জন্য এবং ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারী ও প্রাপক অর্থনীতির মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ করা ও ঋণদাতা থেকে ঝুঁকি প্রশমনের দায়িত্ব পালনের সুযোগ থাকছে। তারা পুঁজির প্রকৃত উৎস এবং সেই পুঁজির সর্বাধিক উৎকৃষ্ট গন্তব্যস্থলের মাঝে মধ্যস্থতাকারী হিসেবেও কাজ করতে পারে।

আর একটি পরামর্শ হল এমডিবি-র জন্য মূলধনের প্রয়োজনীয়তা এবং কর্পোরেট গভর্নেন্স নির্দেশিকাগুলি পুনর্মূল্যায়ন করা। ধারণাগত ভাবে, ক্রেডিট-রেটিং এজেন্সিগুলি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে একই ভাবে এমডিবিগুলিকেও মূল্যায়ন করে। এটি ঋণ প্রদানের উপর অপ্রয়োজনীয় বিধিনিষেধ আরোপ করে যখন এমডিবিগুলি স্পষ্টতই ‘প্রেফার্ড ক্রেডিটর ট্রিটমেন্ট’, ‘কলেবল ক্যাপিটাল’ এবং ‘কনসেনট্রেশন রিস্ক’-এর মতো বিষয়গুলিতে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা।[৮] ২০১৬ সালে করা এস অ্যান্ড পি-র একটি সমীক্ষা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, এমডিবিগুলি নিজেদের ট্রিপল এ (এ এ এ) রেটিং অক্ষুণ্ণ রেখেই ‘আরও বেশি পরিমাণে সুরক্ষিত ভাবে ঋণ দিতে পারে’। এটি এমন একটি পদক্ষেপ যার ফলে আরও লক্ষ কোটি ডলার ঋণ প্রদানের রাস্তা খুলে যায়। এ বিষয়ে ব্যাঙ্ক অফ ইতালি আর একটি বিকল্প প্রস্তাবনা দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, এমডিবিগুলি নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক রেটিং কমিয়ে AA+-এ নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিলে তারা নিজেদের বর্তমান ঋণ দানের ক্ষমতা তিন গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে পারে।

তবুও, এমডিবিগুলি তাদের ঝুঁকি মূল্যায়নে রক্ষণশীল মনোভাবই অবলম্বন করে। ঝুঁকি বিশ্লেষণে যে প্রেক্ষিতটি এমডিবিগুলি এবং এস অ্যান্ড পি-কে পৃথক করে, সেটি হল ‘কলেবল ক্যাপিটাল’কে দুটি সংস্থা কী ভাবে সামলায়, তার উপরে। কলেবল ক্যাপিটাল হল এমডিবি-র সদস্যদের দ্বারা সঙ্কটের সময়ে শেয়ারহোল্ডার ইক্যুইটির ঊর্ধ্বে গিয়েও অতিরিক্ত বিনিয়োগের প্রতিশ্রুত পুঁজি। ওভারসিজ ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (ওডিআই)-এর একটি প্রতিবেদনে যেমনটা ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, রেটিং এজেন্সিগুলি তাদের এমডিবিগুলির রেটিং মূল্যায়নে কলেবল ক্যাপিটালকে অন্তর্ভুক্ত করে, যদিও এমডিবিগুলি নিজেরা তাদের অভ্যন্তরীণ মডেলে তা করে না। কলেবল ক্যাপিটালকে সক্রিয় করার সামান্যতম সম্ভাবনা নির্দেশ করতে অনিচ্ছুক মুখ্য অংশীদারদের তরফে এমডিবিগুলির উপরে চাপ সৃষ্টি করা হয়। ২০১৫ সালে জি২৪-এর করা সংশ্লিষ্ট এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, কলেবল ক্যাপিটাল প্রদানকারী অংশীদার দেশগুলির সার্বভৌম রেটিং নিম্নমুখী হলে এমডিবিগুলিও নেতিবাচক ভাবে মূল্যায়িত হবে।[৯] তাই এমডিবিগুলি কলেবল ক্যাপিটালের সঙ্গে নিজেদের মূল্যায়নকে জড়িয়ে রাখার ধারণার পরিপন্থী — যদিও এই অবস্থা সদস্য দেশগুলির মধ্যে রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়ে তোলার মাধ্যমে বদলানো যেতে পারে।

২) আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণবিধি: দ্য রিপোর্টিং ইম্পারেটিভ

২০০৮ সালের আর্থিক সংকট ব্যাসেলের মতো ব্যাঙ্কিং তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃপক্ষকে কিছু ম্যাক্রো-প্রুডেন্সিয়াল নীতি এবং আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রক মান নির্ধারণ করতে বাধ্য করেছিল। যদিও এই বিধানগুলি মূলত বেশির ভাগই উন্নত দেশগুলির দ্বারা সৃষ্ট এবং ক্রমাঙ্কিত, বহু উদীয়মান বাজার এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতি ধীরে ধীরে এই ব্যবস্থা মেনে নিয়েছে।

মূলধারার কর্পোরেট ফাইলিংয়ে জলবায়ু সম্পর্কিত আর্থিক ঝুঁকি প্রকাশের উপর গুরুত্ব দেওয়ার জন্য জি ২০-র অনুরোধে এফ এস বি-র নেতৃত্বে টি সি এফ ডি তৈরি করা হয় যা এ ক্ষেত্রে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য কাজ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

উন্নয়নশীল দেশগুলিতে (বা বিশেষ করে ভারতে) জলবায়ু অর্থায়নের উপর ব্যাসেল নিয়মগুলির প্রত্যক্ষ প্রভাবের মাত্রা নির্ধারণ করা কঠিন। এক দিকে, নিয়মগুলি ম্যাক্রো-প্রুডেন্সিয়াল গভর্ন্যান্সের জন্য একটি অভিন্ন বৈশ্বিক কাঠামো প্রদান করে যা ভারত-সহ বহু উন্নয়নশীল দেশ স্বাগত জানিয়েছে। অন্য দিকে, গবেষণায় এটাও দেখা গিয়েছে যে, বিশেষ কিছু নীতির ক্ষেত্রে অনিচ্ছাকৃত দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। এর ফলে জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ অর্থায়নও প্রভাবিত হতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, ২০২০ সালে ফ্রেঞ্চ ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, পরিকাঠামোগত এবং ঝুঁকিগত বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে ভিন্ন হওয়ার দরুন বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির জন্য পরিকল্পিত ব্যাসেল ৩ স্ট্যান্ডার্ড জাতীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্কগুলির ক্ষেত্রে তেমন প্রযোজ্য নয়। বিশেষত অর্থনৈতিক সঙ্কটের সময়ে মূলধনের প্রয়োজনীয়তার মাত্রা এবং মূলধনের গুণমানের চাহিদা যা এন ডি বি-কে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পগুলিতে ঋণ প্রদান করা থেকে বিরত রাখতে পারে। একই রকম ভাবে, অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা মজবুত করতে এবং ম্যাচিওরিটি ভ্যালুর ভুলচুক এড়ানোর উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা লিকুইডিটি কভারেজ রেশিও (এল সি আর)) এবং নেট স্টেবল ফান্ডিং রেশিও (এন এস এফ আর)-র মতো লিকুইডিটি রেশিও এন ডি বি-র স্বার্থে পুনর্বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন, কারণ এন ডি বি-র বিনিয়োগের উৎস সাধারণত নন-হাউজহোল্ড ডিপোজিটের উপর নির্ভরশীল।[১০] এটি দর্শায় যে, দীর্ঘমেয়াদি জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ অর্থায়নের জরুরি প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে জলবায়ু সংক্রান্ত ঝুঁকিগুলির জন্য ব্যাসেল কাঠামো পর্যালোচনা করার প্রয়োজন রয়েছে।

অতি সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জ, জি২০,[ক] আন্তর্জাতিক অর্থের উপর বৈশ্বিক মান-নির্ধারক সংস্থা [খ] এবং পাশাপাশি স্বাধীন উদ্যোগ [গ] জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ অর্থায়নের জন্য প্রতিবেদন তৈরি এবং প্রকাশের বিধান নিয়ে কাজ করছে।

জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ অর্থায়ন সংক্রান্ত জি২০-এর কাজ সাসটেনেবল ফিন্যান্স ওয়ার্কিং গ্রুপ দ্বারা পরিচালিত, যেটি ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত সাসটেনেবল ফিন্যান্স স্টাডি গ্রুপ এবং ২০১৬ সালে গঠিত গ্রিন ফিন্যান্স স্টাডি গ্রুপের ২০২১ সালের একটি পরিবর্ধিত সংস্করণ। ওয়ার্কিং গ্রুপের কর্মসূচি থেকেই জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ অর্থায়নে নিয়মবিধির সরলীকরণের লক্ষ্যমাত্রার বিশালতার কথা ফুটে ওঠে। চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে রয়েছে স্থিতিশীল উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে বিনিয়োগগুলিকে একই সূত্রে বাঁধার জন্য প্রয়োজনীয় পদ্ধতির পরিকল্পনা, ডিসক্লোজার নিয়মবিধিতে বৈষম্যের মোকাবিলা করা, ট্যাক্সোনমি বা শ্রেণিবিন্যাস গড়ে তোলা ও মেথডলজির রেটিং, জীববৈচিত্র্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক বিষয়গুলিকে মূল ধারায় ফিরিয়ে আনা, তথ্যের অভাবের বিষয়টিকে খতিয়ে দেখা এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে লো-কার্বন পাথওয়ের পথনির্দেশ দেওয়া।

আপাতত সিঙ্গাপুরভিত্তিক জি আই সি হোল্ডিংস, আবু ধাবি ইনভেস্টমেন্ট অথরিটি, সফট ব্যাঙ্ক, ব্রুকফিল্ড, কানাডা থেকে সি পি পি আই বি এবং সি পি ডি কিউ, ওরিক্স (জাপান), সেম্বকর্প এবং এপিজি (হল্যান্ড), গোল্ডম্যান শ্যাক্স, জে পি মরগ্যান এবং মরগ্যান স্ট্যানলি-সহ বেশ কয়েকটি বিশ্বব্যাপী প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী সংস্থা ভারতে কাজ করছে বা কাজ করতে আগ্রহী।

২০২১ সালে প্রথম বারের জন্য জি২০ ফ্রেমওয়ার্ক ওয়ার্কিং গ্রুপ [ঘ] জলবায়ু পরিবর্তনের কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত ম্যাক্রো-ইকনমিক ঝুঁকিগুলিকে স্বীকৃতি দেয়।

মূলধারার কর্পোরেট ফাইলিংয়ে জলবায়ু সম্পর্কিত আর্থিক ঝুঁকি প্রকাশের উপর গুরুত্ব দেওয়ার জন্য জি ২০-র অনুরোধে এফ এস বি-র নেতৃত্বে টি সি এফ ডি তৈরি করা হয় যা এ ক্ষেত্রে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য কাজ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত সর্বশেষ স্টেটাস রিপোর্ট অনুসারে, টি সি এফ ডি বিশ্বব্যাপী ১৫০০টিরও বেশি সংস্থার সমর্থন পেয়েছে, যার মধ্যে ১৩৪০টিরও বেশি সংস্থার সম্মিলিত বিনিয়োগকৃত পুঁজির (মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন) পরিমাণ ১২.৬ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলার এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের তরফে যে সম্পদ বিনিয়োগ করা হয়েছে তার মূল্য প্রায় ১৫০ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলার।[১১]

এফ এস বি-র হিসেব দর্শিয়েছে যে, ডিসক্লোজারের ক্ষেত্রে ছোট কোম্পানিগুলির তুলনায় বড় কোম্পানিগুলি এবং ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের তুলনায় শক্তিক্ষেত্র ভাল। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, ২০১৯ সালে টি সি এফ ডি-এর সঙ্গে একত্রে ১০০০ কোটি মার্কিন ডলারের অধিক বাজার মূল্যবিশিষ্ট ৪২ শতাংশ কোম্পানি তাদের তথ্য প্রকাশ করেছে, যেখানে ২৮০ কোটি মার্কিন ডলারের কম বাজার মূলধন-সহ কোম্পানিগুলির গড় ছিল ১৫ শতাংশের কম।[১২] একই ভাবে, ৫৪০০ কোটি মার্কিন ডলার সম্পত্তির অধিকারী ২৮৯টি ব্যাঙ্কের একটি পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে, শুধু মাত্র ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ব্যাঙ্ক টি সি এফ ডি-র নির্দেশিকাগুলি পূরণ করতে সমর্থ হয়েছে। এটি একটি হতাশাজনক পরিসংখ্যান বিশেষ করে যখন ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ শক্তি সংস্থাগুলি সহজেই টি সি এফ ডি-র নির্দেশিকা মেনে চলতে সমর্থ হয়েছে।

আরও একটি ক্ষেত্র হল যেখানে কার্বন নিঃসরণের নির্দিষ্ট মাপকাঠিগুলির ক্ষেত্রে টি সি এফ ডির নিম্ন শতাংশ দেখা গেছে। এটি সম্ভবত সঠিক পরিসংখ্যানের অভাবে ঘটেছে। দ্য নেটওয়ার্ক ফর গ্রিনিং দ্য ফিন্যান্সিয়াল সিস্টেম (এন জি এফ এস) ব্যাঙ্ক, বিমাকারী, সম্পদ ব্যবস্থাপক, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক, ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান এবং পেনশন তহবিলের ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরিসংখ্যানের ব্যাপারে ব্যাপক ভাবে কাজ করেছে। তাদের মূল্যায়ন এই উপসংহারে পৌঁছেছে যে, সবুজ অর্থায়নের মূল ভিত্তি হল উপলব্ধ কার্বন সংক্রান্ত পরিসংখ্যান যা খুব বেশি হলে অসম্পূর্ণ বা বিষয়গত ভাবে আনুমানিক।[১৩]

তথ্য প্রকাশ সংক্রান্ত নির্দেশিকা এবং বিষয়গত রিপোর্টিং-এর বৈষম্য জলবায়ু অর্থায়ন সংক্রান্ত সংবাদের তথ্যকে অসম্পূর্ণ, অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং তুলনার অযোগ্য করে তুলছে। মূলধনের বণ্টন এবং ঝুঁকি গ্রহণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে যে হেতু বিনিয়োগকারী, ঋণদাতা এবং বিমাকারীরা বিশেষ ভাবে পরিসংখ্যানের উপরে নির্ভরশীল, তাই উন্নয়নশীল দেশগুলির নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং বিশ্ব আর্থিক পরিকাঠামোয় নিজেদের দর কষাকষির ক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে অধিক্ষেত্রব্যাপী ডিজক্লোজার এবং রিপোর্টিং ফ্রেমওয়ার্কের প্রমিতকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

স্থিতিশীল তহবিলের বৈশ্বিক সম্পদের ক্ষেত্রে ভারতের অবদান ০.০৫ শতাংশ যার মূল্য ২০২০ ছিল সালে প্রায় ১.২৩ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলার।[১৪] ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে ভারতে বিনিয়োগকৃত মোট ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার বন্ডের মাত্র ০.৭ শতাংশ ছিল গ্রিন বন্ড — যা একই সময়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, চিন এবং আমেরিকা দ্বারা বিনিয়োগকৃত যথাক্রমে ১৯৬০০ কোটি মার্কিন ডলার, ৬৩০০ কোটি মার্কিন ডলার এবং ৩৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের তুলনায় সামান্য। একই ভাবে, ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত ভারতে ৫৪০ কোটি মার্কিন ডলার বকেয়া ব্যাঙ্ক ঋণের মাত্র ০.৫ শতাংশ বরাদ্দ করা হয় সবুজ অর্থায়নের কাজে।[১৫]

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (আর বি আই) মতে, ভারতে সবুজ অর্থায়নের দিকটির ধীর গতিতে এগোনোর মূল কারণ দুটি হল — প্রমিত বৈশ্বিক শ্রেণিবিন্যাস এবং মানসম্মত বৈশ্বিক প্রতিবেদনের অভাব। আর বি আই উল্লেখ করেছে যে, ‘তথ্যের অসামঞ্জস্যতা’ বন্ড ইস্যু করার ক্ষেত্রে উচ্চ ব্যয়ের প্রাথমিক কারণ। ২০২১ সালের মে মাসে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (সেবি) বিজনেস রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড সাসটেনেবিলিটি রিপোর্টিং (বি এস বি আর) জারি করে, যার মধ্যে টি সি এফ ডি নির্দেশিকাও রয়েছে, যা ২০২২ আর্থিক বর্ষের জন্য বাজার মূলধন অনুসারে ভারতের শীর্ষ ১০০০টি কোম্পানির জন্য বাধ্যতামূলক। এটি বি এস ই (বোম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জ) এবং এন এস ই-র (ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ) জন্য ২০১২ সালে প্রথম চালু হওয়ার সময়ে অন্তর্ভুক্ত শীর্ষ ১০০টি কোম্পানির তুলনায় বেশি সংখ্যক কোম্পানিকে আওতায় নিয়ে এল।

বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়ে সংস্থা এবং বিনিয়োগকারীরা ক্রমবর্ধমান ভাবে ই এস জি মানদণ্ড ব্যবহার করছে।

অর্থাৎ রাষ্ট্রপুঞ্জ অথবা জি২০-র তরফে টি সি এফ ডি-র মতো যে কোনও প্রচেষ্টাই ভারতের ক্ষেত্রে শুভ হবে যদি এটি বিশ্বের জন্য একটি সাধারণ শ্রেণিবিন্যাস এবং প্রতিবেদনের মান প্রদান করে। এই ধরনের শ্রেণিবিন্যাসকে অবশ্যই উন্নয়নশীল দেশের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের প্রতিফলনকারী হতে হবে যার মধ্যে অতীত এবং ভবিষ্যতের ডিসক্লোজারগুলি অন্তর্ভুক্ত হবে, এবং অন্তত পক্ষে প্রাথমিক বছরগুলিতে স্বেচ্ছাধীন হতে হবে।

৩) প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী: অবশ্যম্ভাবী রিটার্ন

গত পাঁচ বছরে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রে ভারতের গড় বার্ষিক বিনিয়োগ প্রায় ১১০০ কোটি মার্কিন ডলারের কাছাকাছি। আপাতত সিঙ্গাপুরভিত্তিক জি আই সি হোল্ডিংস, আবু ধাবি ইনভেস্টমেন্ট অথরিটি, সফট ব্যাঙ্ক, ব্রুকফিল্ড, কানাডা থেকে সি পি পি আই বি এবং সি পি ডি কিউ, ওরিক্স (জাপান), সেম্বকর্প এবং এপিজি (হল্যান্ড), গোল্ডম্যান শ্যাক্স, জে পি মরগ্যান এবং মরগ্যান স্ট্যানলি-সহ বেশ কয়েকটি বিশ্বব্যাপী প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী সংস্থা ভারতে কাজ করছে বা কাজ করতে আগ্রহী।[১৬]

জলবায়ু পরিবর্তন বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উইলিস টাওয়ারস ওয়াটসন দ্বারা সংকলিত তথ্য অনুযায়ী, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ২০১৯ সালে অ্যাসেটস আন্ডার ম্যানেজমেন্ট খাতে ১০০ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলার ধারণ করেছে। তাই এই প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কী ভাবে সম্পদ বণ্টন করছেন, সেটি জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলির দায়বদ্ধতার এক গুরুত্বপূর্ণ সূচক।

২০২১ সালের জানুয়ারি মাসের ইনফ্লুয়েন্সম্যাপের (জলবায়ু অর্থায়নের জন্য নিবেদিত এক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক) একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৃহত্তম সম্পদ ব্যবস্থাপনা গোষ্ঠীগুলির ইক্যুইটি হোল্ডিং প্যারিস জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ নয়। উদাহরণ স্বরূপ দেখা গেছে, অনেক কোম্পানিই যে চারটি গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু ক্ষেত্রের জন্য প্রয়োজনীয় সবুজ প্রযুক্তিতে কম বিনিয়োগ করেছে, সেগুলি হল মোটরগাড়ি সংক্রান্ত, তেল এবং গ্যাস উৎপাদন, কয়লা উৎপাদন এবং বিদ্যুৎ শক্তি। ২০২১ সালের আগস্ট মাসে একই সংস্থা দ্বারা ৩৩০০০ কোটি মার্কিন ডলার মোট সম্পদ বিশিষ্ট ৭২৩টি ইক্যুইটি ফান্ডের উপর করা একটি আরও সুনির্দিষ্ট সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ৭১ শতাংশ ই এস জি তহবিল এবং ৫৫ শতাংশ জলবায়ু সংক্রান্ত তহবিল প্যারিস চুক্তির সঙ্গে ঋণাত্মক ভাবে সাযুজ্যপূর্ণ ছিল। এটি দর্শায় যে, বিশেষ বিশেষ আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলি প্যারিস চুক্তির মতাদর্শ মেনে চলে না, অর্থায়ন করা তো দূরের কথা।

এমনকি ক্লাইমেট অ্যাকশন ১০০+ এর জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সংস্থাগুলিও লক্ষ্যপূরণে অসমর্থ হয়েছে। ক্লাইমেট অ্যাকশন ১০০+ সম্মিলিত ৫৫ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলার সম্পদবিশিষ্ট বিশ্বব্যাপী ৬০০টিরও বেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে পুঁজি ব্যবহার করার এমন একটি উদ্যোগ যেটির আওতায় কার্বন নিঃসরণের জন্য বিশেষ ভাবে দায়ী বহুজাতিক সংস্থাগুলিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ১০৭টি সংস্থার উপর চালানো (যাদের মধ্যে কিছু সংস্থা ইতিপূর্বেই এই উদ্যোগের প্রতি দায়বদ্ধ ছিল) রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ৭০ শতাংশ সংস্থাই ২০২০ আর্থিক বিবৃতিতে জলবায়ু-সম্পর্কিত খাতে বিনিয়োগের প্রয়োজনীয় প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে।[১৭]

সবুজায়ন সংক্রান্ত প্রকল্পে মূলধন আকর্ষণ করতে, এফডিআই-এর সরাসরি অনুমোদন, বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির সশক্তিকরণ,পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উদ্যান এবং গ্রিন করিডর নির্মাণ, নিলামের প্রক্রিয়াকে সহজতর করার জন্য ভারত সরকার একাধিক আর্থিক কর্মসূচি চালু করেছে। পাশাপাশি ম্যাক্রো ইকনমিক স্তরে স্থিতিস্থাপকতা, মুদ্রাস্ফীতির ঝুঁকি এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা সংক্রান্ত বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগের দিকেও নজর দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও বড় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ব্রাউন ইনভেস্টমেন্ট থেকে সরিয়ে আনতে অর্থনৈতিক কর্মসূচির বাইরেও সরকারি তরফে অন্যান্য প্রচেষ্টার প্রয়োজন হবে। উদাহরণ স্বরূপ, আরজওয়াল্ড-এর একটি সমীক্ষায় দেখান হয়েছে যে, কয়লা ক্ষেত্রে মূল্য শৃংখলের সঙ্গে জড়িত সংস্থাগুলিতে ৪৪৮৮টি বিনিয়োগকারী সংস্থা আনুমানিক ১.০৩ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এ ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী কয়লা শিল্পে ৬০২০০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে। তার ঠিক পরেই রয়েছে যথাক্রমে জাপান এবং ইংল্যান্ড। কয়লা ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিও বৃহৎ অংশীদারিত্বের অধিকারী। এ ক্ষেত্রে জাপানের ব্যাঙ্কগুলির বিনিয়োগের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। তার পরে যথাক্রমে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইংল্যান্ডের বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির সম্মিলিত বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ১৬৬০০ কোটি মার্কিন ডলার।[১৮]

২০২১ সালে প্রকাশিত ক্লাইমেট পলিসি ইনিশিয়েটিভের আর একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে, ৬০টি বৃহত্তম বাণিজ্যিক ও বিনিয়োগ ব্যাঙ্কের মধ্যে ৩৮টি ব্যাঙ্ক কয়লা চালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলিতে সরাসরি প্রত্যক্ষ আর্থিক বিনিয়োগ থেকে নিজেদের সরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও পৃথিবীর ৩০টি বৃহত্তম কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থাকে ৫২০০ কোটি মার্কিন ডলার দিয়েছে।[১৯] স্পষ্টতই বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির জন্য জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ করা এখনও পর্যন্ত সহজতর। সবুজ প্রকল্পগুলিতে লাভের মুখ না দেখানো গেলে সবুজ অর্থায়নের যে কোনও অপরিণত প্রচেষ্টাই অকার্যকর হবে।

সেই লক্ষ্যে শেয়ারহোল্ডারদের প্রতিশ্রুতির জোরও পরীক্ষা করে দেখা জরুরি। এক্সন এবং শেভরন অংশীদাররা এই বছর বার্ষিক সভায় এক ‘বৈপ্লবিক উদ্যোগ’ নিয়েছেন। সক্রিয় বিনিয়োগকারীরা সংস্থাগুলিকে অংশীদারদের ভোট এবং তাঁদের প্রস্তাবের মাধ্যমে জলবায়ু সংক্রান্ত উদ্বেগে নজর দিতে বাধ্য করেছেন। একই রকমের জলবায়ু ক্ষেত্রে সক্রিয় অংশীদারিত্ব ব্যাঙ্ক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং উৎপাদনকারী সংস্থাগুলির মধ্যেও লক্ষ করা গেছে। কানাডা পেনশন প্ল্যানের বিনিয়োগকৃত পুঁজির জন্য দায়বদ্ধ সি পি পি ইনভেস্টমেন্ট নামক সংস্থা অধিকৃত জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ কৌশল এ ক্ষেত্রে বিবেচিত হতে পারে। এটি ২০১৫ সাল থেকে শেয়ারহোল্ডারদের জলবায়ু সংক্রান্ত ১৩০টি প্রস্তাবে সায় দিয়ে নিজেদেরকে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি থেকে আলাদা করতে সক্ষম হয়েছে।[২০] শুধু মাত্র ২০২১ সালেই সি পি পি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি এবং সুযোগ সংক্রান্ত ১৯টি প্রস্তাব সমর্থন করেছিল। তারা রিস্ক কমিটির (অথবা জলবায়ু সংক্রান্ত ঝুঁকির সংশ্লিষ্ট একটি উপযুক্ত সমতুল্য কমিটি)-এর সভাপতি পুনর্নির্বাচনের বিরুদ্ধে ৪২টি সংস্থায় মত দান করে— তাদের ভোটের ফলে পরিচালকদের বিরুদ্ধে ৫৩টি ভোট পড়ে। এর পাশাপাশি ১৭টি সংস্থায় বৈষয়িক প্রতিশ্রুতিবদ্ধতায় এবং জলবায়ু সংক্রান্ত ডিসক্লোজারের উন্নতিতে প্রভাব পড়ে।[২১]

৪) জলবায়ু অর্থায়নের জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্য: কার্যকর করার আবশ্যকতা

আন্তর্জাতিক শীর্ষনেতাদের দ্বারা প্রচারিত সবুজায়নের উচ্চাকাঙ্ক্ষাগুলি শুধু মাত্র জলবায়ু সংক্রান্ত অর্থনৈতিক কর্মসূচির প্রেক্ষিতে একটি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ঐকমত্য গঠনের মাধ্যমেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এই সংক্রান্ত নীতিগুলিকে হতে হবে ন্যায়সঙ্গত এবং তা একটি বৃহৎ অংশের অংশীদারদের প্রতিনিধিত্ব করবে — বিশেষ করে জলবায়ু নিয়ন্ত্রণের লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণকারী ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য। এ ক্ষেত্রে একটি বিক্ষিপ্ত রাজনৈতিক ঐকমত্য শুধু মাত্র বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মযজ্ঞকে বর্তমান অগ্রগতিতে প্রতিহতই করবে। সবুজ রূপান্তরের প্রক্রিয়াটি একপাক্ষিক ভাবে অর্জন করা যায় না এবং এর বাস্তবায়নের জন্য জলবায়ুর কর্মসূচি খাতে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু অর্থায়নের দিকটিও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

জলবায়ু সংক্রান্ত বৃহত্তর সহযোগিতার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক ও আর্থিক বাজারগুলিকে সুসংহত করা প্রয়োজন। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলির ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য। এর ফলে অর্থায়ন, সশক্তিকরণ এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য অতিরিক্ত সহায়তা প্রয়োজন, যাতে উন্নয়নশীল দেশগুলি তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন লক্ষ্যগুলির সঙ্গে আপস না করেই উত্তর গোলার্ধের বড় শক্তিগুলির (গ্লোবাল নর্থ) সঙ্গে সমকক্ষ হতে সক্ষম হয়। তাই নিম্ন-কার্বন ভবিষ্যতের রূপান্তরটি ন্যায়সঙ্গত এবং ন্যায্য হওয়া দরকার এবং রাজনৈতিক শীর্ষ নেতাদের অবশ্যই একটি আন্তর্জাতিক কার্বন-নিরপেক্ষ পুনরুদ্ধারের কৌশল গড়ে তোলার চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে।

জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ব্যক্তিগত বিনিয়োগের দিকটিতে অবিলম্বে জোর দিতে হবে এবং তা সরকারি সংস্থাগুলির দ্বারা বিনিয়োগকৃত অর্থের পরিপূরণ করবে। পরিবেশবান্ধব উদ্ভাবনে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য জলবায়ু প্রশমন ও অভিযোজন নিয়ন্ত্রক কাঠামো এবং নীতি নির্ধারণের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। এটি অর্থনৈতিক ভাবে সুলভ প্রযুক্তির উৎপাদন ও বিতরণ, কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ঝুঁকি হ্রাসে সাহায্য করবে। ক্রমান্বয়ে এটি সরকারগুলির জন্য শিল্প, কর্মসংস্থান এবং অর্থনৈতিক লাভের সুযোগ করে দেবে।

অর্থায়ন, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য সক্রিয় আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতাকে উৎসাহ জোগাতে এবং সহজতর করে তুলতে একটি বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় মঞ্চ গড়ে তোলা অপরিহার্য। একই সময়ে একটি বিকেন্দ্রীকরণ প্রক্রিয়ার উদ্ভব হওয়া দরকার যা রাজ্য সরকার (সাব-ন্যাশনাল গভর্নমেন্ট) এবং কর্পোরেশনগুলিকে জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লক্ষ্য অর্জনের জন্য দায়বদ্ধতার পাশাপাশি তৃণমূল স্তরে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে সক্ষম করবে। কেন্দ্রীয় ভাবে পুঁজির বণ্টন এবং বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে তার ব্যবহারের দ্বৈত প্রক্রিয়া জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে মৌলিক ভূমিকা পালন করতে পারে।

সর্বোপরি, গ্রাহক, অংশীদার এবং জনসাধারণ এখন জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন এবং তাঁরা জলবায়ু সংক্রান্ত স্থিতিশীল নীতি ও কর্মসূচির পক্ষে সওয়াল তুলছেন। জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মসূচি ব্যক্তিগত স্বার্থ দ্বারা প্রভাবিত একটি ছোট অংশীদারী গোষ্ঠীর উপর আর নির্ভরশীল নয়। বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়ে সংস্থা এবং বিনিয়োগকারীরা ক্রমবর্ধমান ভাবে ই এস জি মানদণ্ড ব্যবহার করছে। এটি শিল্প সংস্থাগুলির জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের নির্দেশিকা হওয়া দরকার যাতে তারা জলবায়ু সংক্রান্ত ডিসক্লোজার দিতে বাধ্য হয় এবং জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশেও তৎপর হয়। এটি সরকারগুলিকে জনগণের উদ্বেগের প্রতি মনোযোগ দিতে বাধ্য করবে এবং বিশ্বব্যাপী জলবায়ু প্রশমন ও অভিযোজনে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করবে।

২৬ তম কনফারেন্স অফ পার্টিজ (কপ২৬) বিশেষ করে জলবায়ু অর্থায়ন প্রসঙ্গে ঐকমত্য গড়ে তোলা এবং কর্মসূচি চালু করার জন্য একটি ভাল সুযোগ। পরিবেশবান্ধব পুনরুদ্ধার ইতিবাচক ভাবে শারীরিক, মানবিক, প্রাকৃতিক এবং সামাজিক… সমস্ত ধরনের পুঁজিকেই প্রভাবিত করবে। বিশ্ব যদি কোভিড-১৯-এর মোকাবিলা করার জন্য এবং প্রয়োজনীয় স্থানে পুঁজি পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আর্থিক পরিকাঠামোর পুনর্বিন্যাসে ১৭ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করতে সক্ষম হয়, তা হলে আন্তর্জাতিক মহলের পক্ষে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রয়োজনীয় পুঁজি সংগ্রহ করতে ভূ-রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়ে তোলাও সম্ভব হবে। জলবায়ু পরিবর্তন পদক্ষেপের সশক্তিকরণে বিনিয়োগ করলে কিছু উন্নয়নের সুবিধে পাওয়া যাবে যা একটি উন্নত অর্থনৈতিক বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। এই বার্তাটি প্রচার করা ও শক্তিশালী করে তোলাই দরকার।

প্রতিবেদনের পিডিএফটি ডাউনলোড করুন এখানে


পাদটীকা

[ক] এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এ ডি বি), আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এ এফ ডি বি), এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক (এ আই আই বি), ইউরোপিয়ান ব্যাঙ্ক ফর রিকনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ই বি আর ডি), ইন্টারন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ফর রিকনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আই বি আর ডি) এবং ইন্টার-আমেরিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (আই বি ডি) এর অন্তর্গত।

[গ] যেমন গ্লোবাল রিপোর্টিং ইনিশিয়েটিভ (জি আর আই), কার্বন ডিসক্লোজার প্রোজেক্ট (সি ডি পি), ক্লাইমেন্ট ডিসক্লোজার স্ট্যান্ডার্ড বোর্ড (সি ডি এস বি), ইন্টারন্যাশনাল ইন্টিগ্রেটেড রিপোর্টিং কাউন্সিল (আই আই আর সি) এবং সাসটেনেবিলিটি অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ডস বোর্ড (এস এ এস বি)।

[ঘ] ওয়ার্কিং গ্রুপটি বিশ্বব্যাপী ম্যাক্রো ইকনমিক নীতি, আন্তর্জাতিক আর্থিক বৈষম্য এবং আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বৃদ্ধির সামগ্রিক পরিচালনা করে। প্রতিষ্ঠার শুরু দিন থেকেই ভারত এই গ্রুপটির সহ-সভাপতিত্ব করেছে।

[১] ডেলমট এট অল, (ইডিএস), গ্লোবাল ওয়ার্মিং অব ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড, আই পি সি সি, ২০১৮, পৃষ্ঠা ২২ ডি।

[২] দি ইনডিপেন্ডেন্ট এক্সপার্ট গ্রুপ অন ক্লাইমেট ফিন্যান্স, ‘ডেলিভারিং অন দ্য ১০০ বিলিয়ন ডলার ক্লাইমেট ফিন্যান্স কমিটমেন্ট অ্যান্ড ট্রান্সফর্মিং ক্লাইমেট ফিন্যান্স’, ইউনাইটেড নেশনস, ২০২০, পৃষ্ঠা ২২।

[৩] ক্লাইমেট চেঞ্জ ফিন্যান্স ইউনিট, ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ ফিন্যান্স, অ্যানালিসিস অফ আ রিসেন্ট ও ই সি ডি রিপোর্ট: সাম ক্রেডিবল ফ্যাক্টস নিডেড’, ডিপার্টমেন্ট অফ ইকনমিক অ্যাফেয়ার্স, মিনিস্ট্রি অব ফিন্যান্স, ভারত সরকার, ২০১৫, পৃষ্ঠা ২।

[৪] দ্য রকফেলার ফাউন্ডেশন, ‘রিইম্যাজিনিং দ্য রোল অব মাল্টিল্যাটেরাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কস’, দ্য রকফেলার ফাউন্ডেশন, ২০২১।

[৫] হামফ্রে, ক্রিস এবং আন্নালিসা প্রিৎজন, ‘গ্যারান্টিজ ফর ডেভেলপমেন্ট: আ রিভিউ অব মাল্টিল্যাটেরাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক অপারেশনস’, ও ডি আই, ২০১৪, পৃষ্ঠা ২৭।

[৬] দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট এক্সপার্ট গ্রুপ অন ক্লাইমেট ফিন্যান্স, ‘ডেলিভারিং অন দ্য হান্ড্রেড বিলিয়ন ডলার ক্লাইমেট ফিন্যান্স কমিটমেন্ট অ্যান্ড ট্রান্সফর্মিং ক্লাইমেট ফিন্যান্স’, ইউনাইটেড নেশনস, ২০২০, পৃষ্ঠা ২২।

[৭] জি ২০ এমিনেন্ট পারসনস গ্রুপ অন গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল গভর্ন্যান্স, ‘মেকিং দ্য গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল সিস্টেম ওয়ার্ক ফর অল’, ওয়াশিংটন ডিসি: হাইনরিখ বল স্টিফটাং, ২০১৮, পৃষ্ঠা ৩৯।

[৮] জি ২০ এমিনেন্ট পারসনস গ্রুপ অন গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল গভর্ন্যান্স, ‘মেকিং দ্য গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল সিস্টেম ওয়ার্ক ফর অল’, ওয়াশিংটন ডিসি: হাইনরিখ বল স্টিফটাং, ২০১৮, পৃষ্ঠা ৩৯।

[৯] হামফ্রে, ক্রিস, ‘আর ক্রেডিট রেটিং এজেন্সিস লিমিটিং দি অপারেশনাল ক্যাপাসিটি অব মাল্টিল্যাটেরাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কস?’ জি ২৪, ইউনিভার্সিটি অব জুরিখ, ইন্টারগভর্নমেন্টাল গ্রুপ অব টোয়েন্টি ফোর, ২০১৫, পৃষ্ঠা ১৭।

[১০] গটসচক, রিকার্ডো, লাভিনিয়া বি. কাস্ত্রো এবং জিয়াজুন ঝু, ২০২০, ‘ফিন্যান্সিয়াল রেগুলেশন অব ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কস — এন ডি বিজ’, এ এফ ডি এডিশনস, ২০২০, পৃষ্ঠা ১৪।

[১১] টি সি এফ ডি, ‘টাস্ক ফোর্স অন ক্লাইমেট-রিলেটেড ফিন্যান্সিয়াল ডিসক্লোজারস’, টি সি এফ ডি, ২০২০, পৃষ্ঠা ৬৮।

[১২] টি সি এফ ডি, ‘টাস্ক ফোর্স অন ক্লাইমেট-রিলেটেড ফিন্যান্সিয়াল ডিসক্লোজারস’, টি সি এফ ডি, ২০২০, পৃষ্ঠা ১৩।

[১৩] নেটওয়ার্ক ফর গ্রোয়িং দ্য ফিন্যান্সিয়াল সিস্টেম, ‘প্রোগ্রেস রিপোর্ট অন ব্রিজিং ডেটা গ্যাপস’, নেটওয়ার্ক ফর গ্রিনিং দ্য ফিন্যান্সিয়াল সিস্টেম টেকনিক্যাল ডকুমেন্ট, এন জি এফ এস, পৃষ্ঠা ১৫।

[১৪] সেবি, ‘বিজনেস রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড সাসটেনেবিলিটি রিপোর্টিং বাই লিস্টেড এনটিটিজ’, সেবি, ২০২১।

[১৫] আর বি আই বুলেটিন, ‘গ্রিন ফিন্যান্স ইন ইন্ডিয়া: প্রোগ্রেস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস’, আর বি আই, ২১ জানুয়ারি, ২০২১।

[১৬] মিনিস্ট্রি অব নিউ অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি, ভারত সরকার, ‘স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এনার্জি’, লোক সভা, ২০২১।

[১৭] ডেভিডসন, বারবারা এবং রব শ্যুওয়ার্ক, ‘দ্য গ্লেয়ারিং অ্যাবসেন্স অব ক্লাইমেট রিস্কস ইন ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং। কার্বন ট্র্যাকার ইনিশিয়েটিভ, ফ্লায়িং ব্লাইন্ড, প্রিন্সিপলস ফর রেসপনসিবল ইনভেস্টমেন্ট (ইউ এন পি আর আই)’, ২০২১, পৃষ্ঠা ২৭।

[১৮] আর্জওয়াল্ড, ‘গ্রাউন্ডব্রেকিং রিসার্চ রিভিলস দ্য ফিন্যান্সিয়ার্স অব দ্য কোল ইন্ডাস্ট্রি, এমবারগোড রিলিজড জি সি ই এল’, ফিন্যান্স রিসার্চ, পৃষ্ঠা ২।

[১৯] ক্লাইমেট পলিসি ইনিশিয়েটিভ, ‘কোল পাওয়ার ফিন্যান্স ইন হাই-ইমপ্যাক্ট কান্ট্রিজ’, এনার্জাইজিং ফিন্যান্স রিসার্চ সিরিজ, ২০২১, পৃষ্ঠা ১১।

[২০] এফ এস বি, টাস্ক ফোর্স অন ক্লাইমেট-রিলেটেড ফিন্যান্সিয়াল ডিসক্লোজারস, স্টেটাস রিপোর্ট, ২০২০, পৃষ্ঠা ৬১।

[২১] সি পি পি এক্সিকিউটিভস, ইন্টারভিউ ওভার আ ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম, অক্টোবর, ২০২১।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Authors

Akshay Mathur

Akshay Mathur

Akshay was the Director of ORF Mumbai and Head of Geoeconomics Studies Programme at ORF.

Read More +
Mannat Jaspal

Mannat Jaspal

Mannat Jaspal is an Associate Fellow with the Geoeconomics Studies Programme at ORF. Mannat is deeply interested in exploring matters on sustainability and development – ...

Read More +