Published on Jun 24, 2025 Updated 0 Hours ago

বিমস্টেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনে আঞ্চলিক নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার করার পাশাপাশি ইউএনওডিসি-সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আন্তর্দেশীয় অপরাধ মোকাবিলায় একটি সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ করা হয়েছে।

সনদ থেকে এ বার কাজেকর্মে: বিমস্টেকের নিরাপত্তা সংক্রান্ত পদক্ষেপ

তাইল্যান্ডের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এক বছরের জন্য বিলম্বিত হলেও অবশেষে ২০২৫ সালের ২-৪ এপ্রিল ব্যাঙ্ককে ষষ্ঠ বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, যা আরও প্রাতিষ্ঠানিক কর্মমুখী আঞ্চলিক গোষ্ঠীতে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে সংগঠনের পথচলায় একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ২০২২ সালে বিমস্টেক সনদ গ্রহণের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত আইনি ভিত্তি তৈরি করা হলেও ২০২৫ সালের শীর্ষ সম্মেলন ব্যাঙ্কক ভিশন ২০৩০ এবং শীর্ষ সম্মেলন সংক্রান্ত ঘোষণা-সহ গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত কাঠামো প্রদানের মাধ্যমে সেই গতির উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে, যা সংস্থার দীর্ঘমেয়াদি দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করে।

শীর্ষ সম্মেলনের সময় আনুষ্ঠানিক ভাবে গৃহীত বিভিন্ন চুক্তি অংশীদারিত্বের মধ্যে অন্যতম হল বিমস্টেক এবং ইউনাইটেড নেশনস অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম-এর (ইউএনওডিসি) মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি সমঝোতাপত্র (মউ), যা বিশেষ সময়োপযোগী ও নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ যখন বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলটি মাদক পাচার মানব পাচার থেকে শুরু করে সাইবার-সক্ষম শোষণ পর্যন্ত ন্তর্দেশীয় সংগঠিত অপরাধ সম্পর্কিত ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জের সঙ্গে যুঝছে, তখন এই মউ বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে কাঠামোগত সহযোগিতার মাধ্যমে অপ্রচলিত নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় বিমস্টেকের ক্রমবর্ধমান প্রতিশ্রুতিকেই দর্শায়।

২০২২ সালে বিমস্টেক সনদ গ্রহণের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত আইনি ভিত্তি তৈরি করা হলেও ২০২৫ সালের শীর্ষ সম্মেলন ব্যাঙ্কক ভিশন ২০৩০ এবং শীর্ষ সম্মেলন সংক্রান্ত ঘোষণা-সহ গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত কাঠামো প্রদানের মাধ্যমে সেই গতির উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে, যা সংস্থার দীর্ঘমেয়াদি দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করে।

এই অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান হুমকি

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সেতুবন্ধনকারী একটি বহুপাক্ষিক গোষ্ঠী হিসেবে বিমস্টেক বিভিন্ন আন্তঃসংযুক্ত নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে এবং সেগুলি হল মাদক পাচার, আধুনিক দাসত্ব, অস্ত্র চোরাচালান অর্থ পাচার। গত দশকে এবং বিশেষ করে গত পাঁচ বছরে, এই হুমকিগুলি জটিলতা নাগালের প্রেক্ষিতে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বিচ্ছিন্ন, জাতীয় স্তরের প্রতিক্রিয়ার সীমাবদ্ধতাকেই দর্শায়।

মাদকদ্রব্য

বিমস্টেক অঞ্চলে মাদক পাচারের পরিধি, পরিশীলন এবং ভৌগোলিক বিস্তার উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা নিরাপত্তা, জনস্বাস্থ্য অর্থনৈতিক উন্নয়নকে মারাত্মক ভাবে প্রভাবিত করছে। গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল গোল্ডেন ক্রিসেন্টের মধ্যে অবস্থিত - বিশ্বের দুটি বৃহত্তম মাদক উৎপাদনকারী অঞ্চল - এই অঞ্চলটি ছিদ্রযুক্ত  সীমানা, দুর্বল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা এবং প্রতিষ্ঠিত পাচার শৃঙ্খলের কারণে স্থানীয় ঝুঁকির সম্মুখীন।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক প্রবণতাগুলির মধ্যে অন্যতম হল কৃত্রিম মাদক উৎপাদনের বৃদ্ধি, বিশেষ করে মিথামফেটামিন এবং ইয়াবা পিল, যা মায়ানমারের সংঘাত-কবলিত শান স্টেট থেকে উদ্ভূত। কোভিড-১৯, ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থান এবং এর ফলে অভ্যন্তরীণ সংঘাত আসলে মাদক সিন্ডিকেটগুলিকে আরও বেশি দায়হীন ভাবে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে। এই মাদকদ্রব্যগুলি ছিদ্রযুক্ত সীমানা অতিক্রম করে তাইল্যান্ড, বাংলাদেশ এবং ভারতের উত্তর-পূর্বে প্রবেশ করে নেপালে এবং সমুদ্রপথে শ্রীলঙ্কায় ছড়িয়ে পড়ে।

কোভিড-১৯, ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থান এবং এর ফলে অভ্যন্তরীণ সংঘাত আসলে মাদক সিন্ডিকেটগুলিকে আরও বেশি দায়হীন ভাবে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে।

২০২৩ সালে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মেথামফেটামিন আটকের পরিমাণ ১৯০ টনের রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে, যেখানে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে, বিশেষ করে বাংলাদেশ ও ভারতে মেথামফেটামিন আটকের পরিমাণ ২০১৩ সালে ৭.২ টন থেকে বেড়ে ২০২২ সালে ২০.৪ টন হয়েছে। ডিরেক্টোরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স বা রাজস্ব গোয়েন্দা অধিদফতরে (ডিআরআই) ২০২৪ সালের তথ্য অনুসারে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ২০২৪ অর্থবর্ষে ১০৭.৩১ কেজি কোকেন, ৪৯ কেজি হেরোইন, ১৩৬ কেজি মেথামফেটামিন এবং ৭,৩৪৯ কেজিরও বেশি গাঁজা আটক রেছে, যার মোট মূল্য অবৈধ বাজারে ১,৬০০ কোটি টাকারও বেশি।

একই সঙ্গে মায়ানমারে ২০২৩ সাল থেকে আফিম চাষে ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে এবং বিশেষ করে শান, কাচিন এবং চিন স্টেটে এই চাষ বেশি পরিমাণে হচ্ছে। এই অঞ্চলের অনেক জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী তাদের কার্যক্রমের অর্থায়নের জন্য মাদক ব্যবসার উপর নির্ভর করে, যা আইন প্রয়োগকারী প্রচেষ্টাকে আরও জটিল করে তোলে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির মধ্যে ব্যাপক দুর্নীতি সমস্যাটিকে আরও বাড়িয়ে তোলে, যা এই অপরাধমূলক প্রতিষ্ঠানগুলির স্থায়িত্ব সম্প্রসারণকে সশক্ত করে।

ধুনিক যুগের দাসত্ব

মানব পাচার আরও জটিল আঞ্চলিক ভাবে শৃঙ্খলযুক্ত উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে। গত পাঁচ বছরে জোরপূর্বক শ্রম, যৌন শোষণ এবং সম্প্রতি সাইবার কেলেঙ্কারি দাসত্ব পাচারের প্রধান রূপ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। প্রায় ৩০০,০০০ মানুষ - যাঁদের মধ্যে অনেকেই ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশ থেকে বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের শিক্ষিত প্রযুক্তিগত দক্ষ যুবক - মায়ানমারের মায়াওয়াদ্দি অঞ্চল জুড়ে জালিয়াতির চক্রে আটকা পড়েছেন বলে জানা গিয়েছেতাইল্যান্ড এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো দেশে জাল চাকরির প্রস্তাবের মাধ্যমে এই ব্যক্তিদের প্রলোভন দেখানো হয়, এবং পরে তাঁদের মায়ানমার, কম্বোডিয়া লাওসে পরিচালিত জালিয়াতি কেন্দ্রগুলিতে পাচার করা হয়। এই সংগঠিত অপরাধ শৃঙ্খলগুলি ব্যাপক দুর্নীতির মধ্যে কাজ করে, প্রায়শই অ-রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র ব্যক্তিদের সঙ্গে সহযোগিতা করে। তাদের কার্যক্রম প্রায়শই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং শক্তিশালী ব্যবসায়িক স্বার্থের সহযোগিতায় সক্ষম হয় কারণ তারা একটি  আইনবিহীন পরিবেশে কাজ করে।

ইতিমধ্যে, প্রচলিত মানব পাচার ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে প্রভাবিত করে চলেছে। ২০২৪ সালের মানব পাচার সংক্রান্ত বৈশ্বিক প্রতিবেদন অনুসারে, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়, পাচার হওয়া ব্যক্তিদের বেশির ভাগই বিশেষ করে ৭৯ শতাংশ মেয়ে এবং মহিলা। তাদের বলপূর্বক শ্রমের জন্য পাচার করা হয়েছিল এবং অন্য দিকে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষকে যৌন শোষণের জন্য পাচার করা হয়েছিল।

মাদক পাচার, সাইবার অপরাধ মানব শোষণের বিষয়টি মোকাবিলার জন্য বিমস্টেক কাঠামোর মধ্যে আরও সমন্বিত সহযোগিতামূলক পদ্ধতির প্রয়োজন, যার মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি, আইন প্রয়োগকারী মান সমন্বয় এবং আন্তঃসীমান্ত সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজন

এই কনভেনশনটি সন্ত্রাসবাদ, সংগঠিত অপরাধ এবং মাদক পাচারের মতো বিষয়গুলিতে আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য একটি বিস্তৃত আইনি ভিত্তি প্রদান করে, যার মধ্যে প্রত্যর্পণ, পারস্পরিক আইনি সহায়তা এবং অঞ্চল জুড়ে প্রতিক্রিয়াগুলিকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তোলার জন্য গোয়েন্দা তথ্য ভাগ করে নেওয়ার বিধান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

বিদ্যমান কাঠামো এবং উদীয়মান চাহিদা

বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীল উন্নয়ন সুনিশ্চিত করার জন্য সন্ত্রাসবাদ ন্তর্দেশীয় সংগঠিত অপরাধ মোকাবিলার গুরুত্ব বিমস্টেক দীর্ঘদিন ধরে স্বীকার করে আসছে। ২০০৯ সালে স্বাক্ষরিত আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, আন্তঃদেশীয় সংগঠিত অপরাধ অবৈধ মাদক পাচার মোকাবিলায় সহযোগিতা সংক্রান্ত বিমস্টেক কনভেনশনটি সদস্য রাষ্ট্রগুলির অনুমোদনে বিলম্বের কারণে কেবল ২০২১ সালে কার্যকর হয়। এই কনভেনশনটি সন্ত্রাসবাদ, সংগঠিত অপরাধ এবং মাদক পাচারের মতো বিষয়গুলিতে আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য একটি বিস্তৃত আইনি ভিত্তি প্রদান করে, যার মধ্যে প্রত্যর্পণ, পারস্পরিক আইনি সহায়তা এবং অঞ্চল জুড়ে প্রতিক্রিয়াগুলিকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তোলার জন্য গোয়েন্দা তথ্য ভাগ করে নেওয়ার বিধান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এর পরিপূরক হিসেবে, ২০০৫ সালে প্রিভেনশন অফ ইললিসিট ট্র্যাফিকিং ইন নারকোটিক ড্রাগস, সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্সেস অ্যান্ড প্রিকারসর কেমিক্যাল বা মাদকদ্রব্য, মনোরোগ সংক্রান্ত পদার্থ এবং পূর্বসূরী রাসায়নিকের অবৈধ পাচার প্রতিরোধ নামক বিমস্টেকের শাখাগোষ্ঠীটি কনভেনশনের একটি প্রযুক্তিগত কার্যকরী শাখা হিসেবে কাজ করে। এটি জাতীয় মাদক প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির মধ্যে পর্যায়ক্রমিক সম্মেলন, তথ্য বিনিময় এবং যৌথ ক্ষমতা-নির্মাণ প্রচেষ্টার মাধ্যমে ব্যবহারিক সহযোগিতা সক্ষম করে। কনভেনশনটি আইনি ভিত্তি স্থাপন করলেও শাখাগোষ্ঠীটি মাদক পাচারের বিরুদ্ধে দৈনন্দিন সমন্বয় আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়ার উপর মনোনিবেশ করেছে।

তবে, কনভেনশনটিতে প্রাথমিক ভাবে মানব পাচারের বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তবে এই ব্যবধানটি পাচার-সম্পর্কিত অপরাধের মাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য ২০১৫ সালের গস্ট মাসে অনুষ্ঠিত বিমস্টেক জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ অন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম-এর (জেডব্লিউজি-সিটিটিসি) সপ্তম বৈঠকে মানব পাচার সংক্রান্ত বিশেষ শাখাগোষ্ঠী তৈরির বিষয়ে সম্মতি জানানো হয়। এর পর থেকে অগ্রগতি ধীরে হয়েছে। সম্প্রতি শাখাগোষ্ঠীর তৃতীয় সভা ২০২৫ সালের ৬-৭ এপ্রিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে মানব পাচার মোকাবিলায় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের উপর আলোকপাত করা হয়। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল সহযোগিতার জন্য একটি নিরাপদ ডিজিটাল মঞ্চ তৈরি করা এবং পাচার হওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার ও প্রত্যাবাসনের জন্য স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) খসড়া তৈরি করা, যা কিনা আন্তঃসীমান্ত সমন্বয় ক্ষতিগ্রস্তদের সুরক্ষা জোরদার করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

বিমস্টেকের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টারা (এনএসএ) ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর বৈঠক করতেন এবং ২০২৪ সালে পুনরায় শুরু করেছিলেনতবুও বিশেষ করে গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি এবং যৌথ প্রয়োগের ক্ষেত্রে কার্যকরী সমন্বয়ের জন্য একটি আনুষ্ঠানিক অনুমোদিত প্রক্রিয়া এখনও মুলতুবি রয়েছে। এই প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার অনুপস্থিতি বাস্তব-সময়ের সহযোগিতা যৌথ পদক্ষেপকে বাধা দিচ্ছে। ফলস্বরূপ, আইনি ও প্রযুক্তিগত কাঠামোতে অগ্রগতি সত্ত্বেও বিমস্টেকের আঞ্চলিক নিরাপত্তা সহযোগিতা প্রযুক্তিগত সহযোগিতার জন্য মূল্যবান হলেও অসম রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি এবং অগ্রগতি বা জবাবদিহিতা পর্যবেক্ষণের জন্য একটি কেন্দ্রীভূত সমন্বয়কারী সংস্থার অভাবের কারণে দ্বিধাবিভক্ত এবং স্বল্প সম্পদের অধিকারী এবং দ্রুত বিকশিত হুমকির প্রতিক্রিয়া জানানোর ক্ষেত্রে ধীর থেকেছে।

মউ-এর তাৎপর্য

বিমস্টেক এবং ইউএনওডিসি-র মধ্যে মউ এই অপরাধগুলি আরও ভাল ভাবে মোকাবিলা করার জন্য একটি বাস্তবমুখী পরিবর্তনের প্রতিনিধিত্ব করে। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তার সমন্বিত কর্মসূচির মাধ্যমে ইউএনওডিসি ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা, আইন প্রয়োগকারী প্রশিক্ষণ এবং বিচারিক সহযোগিতার জন্য সাধনী তৈরি করেছে, যা সরাসরি বিমস্টেকের সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টাকে সমর্থন করতে পারে।

এই অংশীদারিত্ব অপ্রতুল গোয়েন্দা অবকাঠামো এবং যৌথ পরিচালনা কাঠামোর মধ্যেকার একটি মৌলিক আঞ্চলিক ব্যবধানও পূরণ করে। অপরাধমূলক শৃঙ্খলগুলি ক্রমআন্তর্জাতিক হয়ে উঠছে এবং আইনি ফাঁকফোকর, দ্বিধাবিভক্ত বিচারব্যবস্থা নাক্তকরণ এড়াতে ডিজিটাল পরিসরকে কাজে লাগাচ্ছে। সহযোগিতার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ  হলেও বিমস্টেকের শুধুমাত্র অত্যাধুনিক গোয়েন্দা বা প্রয়োগকারী ব্যবস্থা তৈরি এবং পরিচালনা করার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতার অভাব রয়েছে।

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তার সমন্বিত কর্মসূচির মাধ্যমে ইউএনওডিসি ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা, আইন প্রয়োগকারী প্রশিক্ষণ এবং বিচারিক সহযোগিতার জন্য সাধনী তৈরি করেছে, যা সরাসরি বিমস্টেকের সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টাকে সমর্থন করতে পারে।

ইউএনওডিসি-র সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বিমস্টেক আন্তর্জাতিক তথ্যভাণ্ডার, সর্বোত্তম অনুশীলন, প্রশিক্ষণ মডিউল আইনের সমন্বয়, প্রতিষ্ঠানগুলিকে সশক্তকরণ এবং প্রয়োগের কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা পেতে পারে।

শক্তিশালী, সহযোগিতামূলক কাঠামোর মাধ্যমে আন্তর্দেশীয় অপরাধ মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে এই অঞ্চলের ক্ষমতা শান্তি, স্থিতিশীলতা মানব নিরাপত্তা টিকিয়ে রাখার মূল চাবিকাঠি হবে। ২০২৭ সালে বিমস্টেকের ৩০তম বার্ষিকী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও সমৃদ্ধ স্থিতিস্থাপক বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য শীর্ষ সম্মেলনের ফলাফল প্রদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।

 


শ্রীপর্ণা ব্যানার্জি অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের অ্যাসোসিয়েট ফেলো।

অনসূয়া বসু রায় চৌধুরী অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নেবারহুড ইনিশিয়েটিভ-এর সিনিয়র ফেলো।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Authors

Sreeparna Banerjee

Sreeparna Banerjee

Sreeparna Banerjee is an Associate Fellow in the Strategic Studies Programme. Her work focuses on the geopolitical and strategic affairs concerning two Southeast Asian countries, namely ...

Read More +
Anasua Basu Ray Chaudhury

Anasua Basu Ray Chaudhury

Anasua Basu Ray Chaudhury is Senior Fellow with ORF’s Neighbourhood Initiative. She is the Editor, ORF Bangla. She specialises in regional and sub-regional cooperation in ...

Read More +