-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান আগ্রহ, যা সাম্প্রতিক কালের কোয়াড সম্মেলন এবং আই পি ই এফ-এর সূচনা থেকে স্পষ্ট, তা এ কথাই দর্শায় যে, ইউরোপে বিদ্যমান যুদ্ধ সত্ত্বেও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল এখনও মনোযোগের কেন্দ্রে রয়েছে।
এখনও পর্যন্ত স্বল্প ব্যবধানে সংঘটিত হওয়া চারটি কোয়াড শীর্ষ সম্মেলনের মধ্যে প্রথম ও চতুর্থটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ২০২১ সালের মার্চ মাসে কোভিড অতিমারির ছায়া এবং ক্রমবর্ধমান চিনা আগ্রাসনের মাঝেই ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত সর্বপ্রথম শীর্ষ সম্মেলনটি সংশ্লিষ্ট আন্তঃসহযোগী ব্যবস্থার আনুষ্ঠানিক সূচনা করে। মঞ্চটিতে এই বিষয়টিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় যে, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো চারটি দেশ ‘বৈচিত্র্যময় দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আসবে’ কিন্তু ‘একই সঙ্গে এক মুক্ত ও অবাধ ইন্দো-প্যাসিফিকের ধারণার প্রেক্ষিতে দেশগুলি জোটবদ্ধ থাকবে।’ ‘স্পিরিট অফ দ্য কোয়াড’ যৌথ বিবৃতিতে যে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে তার লক্ষ্য এককেন্দ্রিক ক্ষেত্রগুলিকে গড়ে তোলা। গোষ্ঠীটি্র আসল নামকরণ ‘দ্য কোয়াড্রিল্যাটেরাল সিকিয়োরিটি ডায়লগ’-এর আক্ষরিক অর্থের সীমা ছাড়িয়ে তার উদ্দেশ্যগুলিকে আরও প্রসারিত করতে চাওয়া হয়েছে। নতুন করে জোর দেওয়া হয় সমসাময়িক ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে গিয়ে সর্বজনীন সুফল এবং সহযোগিতামূলক নিরাপত্তার জন্য উন্নয়ন-সংশ্লিষ্ট উদ্যোগের উপর। প্রথম শীর্ষ সম্মেলনে ঘোষিত তিনটি ওয়ার্কিং গ্রুপের (টিকা, গুরুত্বপূর্ণ ও উদীয়মান প্রযুক্তি এবং জলবায়ু) সঙ্গে নতুন ওয়ার্কিং গ্রুপ সংযুক্ত করে এবং আরও কয়েকটি ক্ষেত্রে সহযোগিতার প্রসার ঘটিয়ে দ্বিতীয় শীর্ষ সম্মেলনটিতে ক্রমাগত অগ্রগতির ধারা বজায় রাখা হয়েছে। তৃতীয় শীর্ষ সম্মেলনটিতে এই অঞ্চলের প্রতি চারটি দেশের প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার উপর পুনরায় জোর দেওয়া হয়েছে। বিদ্যমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং তার প্রভাবের প্রেক্ষাপটে ২০২২ সালের ২৪ মে টোকিওতে চতুর্থ শীর্ষ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। অত্যন্ত কম ব্যবধানে পরপর দুটি অর্থনৈতিক ধাক্কার বাস্তবতা, আফগানিস্তানে একটি মানবিক সঙ্কটের পরপরই আর একটি মানবিক সঙ্কট, ঘনিয়ে আসা ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং পূর্ব ইউরোপ ও ইন্দো-প্যাসিফিকে্র পরিস্থিতির তুল্যমূল্য বিচার সংশ্লিষ্ট শীর্ষ সম্মেলনটিকে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক করে তোলে।
নতুন করে জোর দেওয়া হয় সমসাময়িক ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে গিয়ে সর্বজনীন সুফল এবং সহযোগিতামূলক নিরাপত্তার জন্য উন্নয়ন-সংশ্লিষ্ট উদ্যোগের উপর।
কোয়াড শীর্ষ সম্মেলনের এক দিন আগে ভারত ও জাপানের প্রধানমন্ত্রীদের উপস্থিতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ইন্দো-প্যাসিফিক ইকনমিক ফ্রেমওয়ার্ক ফর প্রসপারিটির (আই পি ই এফ) উদ্বোধন করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বর্তমানে ১২টি দেশ মঞ্চটিতে অংশগ্রহণ করছে। শীর্ষ সম্মেলনের আগেই আমেরিকা এই দেশগুলিকে মঞ্চটির সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার ব্যাপারে রাজি করাতে সমর্থ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলি ‘ভবিষ্যৎ আদান-প্রদানের জন্য সম্মিলিত আলোচনা’য় অংশগ্রহণ করবে। আই পি ই এফ-কে শুল্ক হ্রাস বা নির্মূল এবং বাজার ব্যবহারের সুবিধা সংক্রান্ত এক নিছক বাণিজ্য চুক্তির বদলে একটি আধুনিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। এই চুক্তির প্রধান লক্ষ্য হল ‘নিরবচ্ছিন্ন বৃদ্ধি, শান্তি এবং সমৃদ্ধি’ বজায় রাখার জন্য অংশীদার দেশগুলির মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গভীরতর করে তোলা। যৌথ বিবৃতিটিতে বলা হয়েছে যে, অতিমারি থেকে পাওয়া শিক্ষা এবং অঞ্চলকেন্দ্রিক অন্যান্য ঘটনার প্রেক্ষিতে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি অবলম্বন করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়ায়। এটিতে সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থার চারটি স্তম্ভের উপরে আলোকপাত করা হয়েছে। সেগুলি হল বাণিজ্য (অবাধ, ন্যায্য এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক), সরবরাহ শৃঙ্খল (বৈচিত্র্যপূর্ণ, স্বচ্ছ এবং সুরক্ষিত), দূষণহীন জ্বালানি, ডিকার্বনাইজেশন এবং পরিকাঠামো (প্রযুক্তি, অর্থায়ন, সংযোগ ব্যবস্থা); কর এবং দুর্নীতি বিরোধিতা (ন্যায্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং অভিন্ন গুণমানের জন্য)। যদিও যৌথ বিবৃতি থেকে এ কথা স্পষ্ট যে, আই পি ই এফ এখনও এক ভবিষ্যৎ কর্মসূচি, এর কাঠামো এখনও গড়ে ওঠেনি। এবং এটিকে বাস্তবে রূপায়ণযোগ্য এক সর্বাত্মক কাঠামোয় রূপান্তরিত করার জন্য অংশগ্রহণকারী দেশগুলিকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বুনিয়াদি পরিশ্রম করতে হবে। কাঠামো গড়ে তোলার কর্মপরিকল্পনা আগামী মাসগুলিতে স্পষ্ট ভাবে ঘোষণা করা হলে তা প্রক্রিয়াটিকে স্বচ্ছতা প্রদান করবে এবং প্রক্রিয়াটির গতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
অনিবার্য ভাবে, আই পি ই এফ, রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকনমিক পার্টনারশিপ (আর সি ই পি) এবং কম্প্রিহেনসিভ প্রোটোকল ফর ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপের (সি পি-টি পি পি) মধ্যে তুলনা করা হবে এবং একটি নতুন যুগের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে আই পি ই এফ-এর প্রতিশ্রুতি অবশ্যই উপযুক্ত বাস্তবায়নের দিশা খুঁজে পাবে।
আই পি ইএফ-এর যৌথ বিবৃতিতে অন্য ইন্দো-প্যাসিফিক দেশগুলিকেও এই উদ্যোগে যোগদানের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে যারা ‘অঞ্চলটির জন্য লক্ষ্য, স্বার্থ এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষা’-র অংশীদার। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে আগ্রহী যে বর্তমান আই পি ই এফ অংশীদাররা অতিরিক্ত সদস্যদের যোগদানের প্রক্রিয়া এবং মানদণ্ড নিয়ে আলোচনা চালাক। এই দিকটিও সংশোধিত সর্বাঙ্গীন কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। অনিবার্য ভাবে, আই পি ই এফ, রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকনমিক পার্টনারশিপ (আর সি ই পি) এবং কম্প্রিহেনসিভ প্রোটোকল ফর ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপের (সি পি-টি পি পি) মধ্যে তুলনা করা হবে এবং একটি নতুন যুগের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে আই পি ই এফ-এর প্রতিশ্রুতি অবশ্যই উপযুক্ত বাস্তবায়নের দিশা খুঁজে পাবে। যে দেশগুলি ইতিমধ্যেই আর সি ই পি এবং সি পি-টি পি পি -এর অংশ, তাদের মানিয়ে নেওয়া বা রূপান্তরিত হওয়ার আদৌ প্রয়োজন আছে কি না এবং থাকলেও সেই প্রক্রিয়া কী ভাবে সম্পন্ন করা যেতে পারে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত নতুন ইউ এস ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি আই পি ই এফ-এর সূচনা ও নেতৃত্ব দেওয়ার পরিকল্পনার রূপরেখা দিয়েছে। কোয়াড শীর্ষ সম্মেলনের ঠিক পর পর না করে এক দিন আগে এই কৌশল প্রকাশ্যে আনা এ কথা স্পষ্ট করে দেয় যে, উদ্যোগটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন এবং কোয়াডচালিত নয়। একই সঙ্গে আই পি ই এফ আলোচনাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোয়াড দেশগুলির কাছ থেকে দৃঢ় সমর্থনের প্রত্যাশা করবে, এমনটাই স্বাভাবিক।
২০২২ সালের ২৪ মে টোকিওতে কোয়াড শীর্ষ সম্মেলনের পরে জারি করা যৌথ বিবৃতিটি প্রথম তিনটি শীর্ষ সম্মেলনের তুলনায় আরও সর্বাঙ্গীন (২০২২-এর মার্চে তৃতীয় বৈঠকের পরের বিবৃতিটিকে ‘জয়েন্ট রিডআউট’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছিল)। আটটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের রূপরেখা দেওয়ার মাধ্যমে সহযোগিতার জন্য বিস্তৃত কাঠামোয় স্পষ্টতা আনার কাজে এটি সাহায্য করবে। এর মধ্যে রয়েছে শান্তি ও স্থিতিশীলতা; কোভিড এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য নিরাপত্তা; পরিকাঠামো; জলবায়ু; সাইবার নিরাপত্তা; গুরুত্বপূর্ণ এবং উদীয়মান প্রযুক্তি; কোয়াড ফেলোশিপ; স্পেস; ও মেরিটাইম ডোমেন অ্যাওয়ারনেস এবং এইচ এ ডি আর। ইউক্রেন যুদ্ধের কথা উল্লেখ করা হলেও বিবৃতিটিতে সমস্যাটি সমাধানের জন্য সহমত খোঁজার প্রশ্নটি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে উত্তর কোরিয়া ও মায়ানমারের ক্ষেত্রে আরও ভাল পারস্পরিক বোঝাপড়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। উদ্যোগের প্রধান দিকটি হল কোয়াড দেশগুলির অভ্যন্তরীণ বিভাজন সৃষ্টিকারী ক্ষেত্রগুলির মধ্যে আটকে না থেকে কোয়াড কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। বিতর্কিত বিষয়ের সামরিকীকরণ, উপকূলরক্ষী জাহাজ ও নৌসেনার বিপজ্জনক ব্যবহার এবং অন্যান্য দেশের অফ-শোর সম্পদ অনুসন্ধান কার্যক্রমকে ব্যাহত করার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে তাদের অভিন্ন অবস্থানের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশগুলির সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির উপর জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এমন কিছু সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, যে বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ করা প্রয়োজন। বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এবং সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থার বিষয়ে কোয়াডের সহযোগিতা নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, কিন্তু এর পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট ফলাফল অর্জনের জন্য পারস্পরিক ভাবে সম্মত হতে হবে।
উদ্যোগের প্রধান দিকটি হল কোয়াড দেশগুলির অভ্যন্তরীণ বিভাজন সৃষ্টিকারী ক্ষেত্রগুলির মধ্যে আটকে না থেকে কোয়াড কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। বিতর্কিত বিষয়ের সামরিকীকরণ, উপকূলরক্ষী জাহাজ ও নৌসেনার বিপজ্জনক ব্যবহার এবং অন্যান্য দেশের অফ-শোর সম্পদ অনুসন্ধান কার্যক্রমকে ব্যাহত করার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে তাদের অভিন্ন অবস্থানের উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
সামগ্রিক ভাবে, যৌথ বিবৃতিটি ইতিবাচক এবং গঠনমূলক উদ্যোগের মাধ্যমে এই অঞ্চলের জন্য উন্নয়ন-সংশ্লিষ্ট সহযোগিতামূলক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিস্তৃত পরিকল্পনার ধারাবাহিকতাকেই নির্দেশ করে। কোয়াডের প্রথম শীর্ষ সম্মেলনের পর থেকে যে অগ্রগতি লক্ষ করা গিয়েছে, তা যৌথ বিবৃতিতে তুলে ধরা হয়েছে। এর মাধ্যমে জানানো হয়েছে যে, কোয়াড ব্যানারের অধীনে কর্মসূচি বাস্তবায়নের মুখ দেখেছে এবং আগামী মাসগুলিতে আরও বেশি আশা করা যেতে পারে। এটি এই বার্তাও প্রদান করে যে, পূর্ব ইউরোপের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সাবলীলতা শুধু বৃদ্ধিই পেয়েছে এবং আগামী বছরগুলিতে এর পরিবেশের রূপরেখা দিতে কোয়াড একটি মূল ভূমিকা পালন করবে।
একটি সর্বাঙ্গীন কোয়াড যৌথ বিবৃতি এবং আই পি ই এফ-এর সূচনা উল্লেখযোগ্য, যা অঞ্চলটিতে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে। আই পি ই এফ এবং কোয়াড যৌথ বিবৃতিগুলির মধ্যে পরিকাঠামো এবং জলবায়ুর মতো কিছু অভিন্ন সূত্র বর্তমান এবং এই বিষয়গুলিতে কোয়াড এবং আই পি ই এফ-এর মধ্যে সমন্বয় বাঞ্ছনীয়। সহজেই বোঝা যায় যে, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য অর্থনৈতিক কাঠামোর অনুসরণে যথাসময়ে একটি নিরাপত্তা কাঠামো নির্মাণের কাজ দুরূহ হলেও অকল্পনীয় নয়। এই কাজ ইন্দো-প্যাসিফিক মেরিটাইম সিকিউরিটি কো-অপারেশন ফ্রেমওয়ার্ক দিয়েই শুরু হতে পারে। যখন যে ভাবে এই উদ্যোগের সূচনা হবে, তখন কোয়াডের ভূমিকাও হয়ে উঠবে গুরুত্বপূর্ণ।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Vice Admiral Girish Luthra is Distinguished Fellow at Observer Research Foundation, Mumbai. He is Former Commander-in-Chief of Western Naval Command, and Southern Naval Command, Indian ...
Read More +