এই নিবন্ধটি ইন্টারন্যাশনাল উইমেন’স ডে সিরিজের অংশ।
ইন্দো-প্যাসিফিকের গতিশীল ভূ-রাজনৈতিক পরিসরে উইমেন, পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি (ডব্লিউপিএস) অ্যাজেন্ডা শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য লিঙ্গ-অন্তর্ভুক্ত পন্থা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে একটি প্রধান শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। যেহেতু এই অঞ্চলটি বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তা হুমকির সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুঝছে, তাই সংঘাত প্রতিরোধ, সমাধান ও দ্বন্দ্ব-পরবর্তী পুনর্গঠনে নারীদের ভূমিকা বোঝা স্থিতিস্থাপক ও স্থিতিশীল সমাজ গঠনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই নিবন্ধটিতে ইন্দো-প্যাসিফিকের ডব্লিউপিএস অ্যাজেন্ডার প্রয়োজনীয়তা অন্বেষণ করার পাশাপাশি এই অঞ্চলের দেশগুলির জন্য অ্যাজেন্ডার অর্থ কী, এই দেশগুলি যে চ্যালেঞ্জগুলির সম্মুখীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য অ্যাজেন্ডার সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
যেহেতু এই অঞ্চলটি বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তা হুমকির সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুঝছে, তাই সংঘাত প্রতিরোধ, সমাধান ও দ্বন্দ্ব-পরবর্তী পুনর্গঠনে নারীদের ভূমিকা বোঝা স্থিতিস্থাপক ও স্থিতিশীল সমাজ গঠনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের রেজোলিউশন (ইউএনএসসিআর) ১৩২৫-এর অধীনে একটি নীতি কাঠামো হিসেবে ২০০০ সালের ৩১ অক্টোবর ডব্লিউপিএস অ্যজেন্ডাটি গৃহীত হয়েছিল। রেজোলিউশনটি স্থিতিশীল আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জনে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার উপর জোর দেয় এবং সেগুলিকে স্বীকৃতি দেয়। এটি সকল দেশের সমান অংশগ্রহণকে সমন্বিত করার জন্য শান্তি ও নিরাপত্তার উদেশ্যে রাষ্ট্রপুঞ্জের উদ্যোগে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির জন্য আহ্বান জানায় এবং প্রতিরোধ, আলোচনা, শান্তি বিনির্মাণ, মানবিক প্রতিক্রিয়ার মতো সংঘাত ব্যবস্থাপনা এবং সংঘাত-পরবর্তী পুনর্গঠনের পর্যায়ে নারীদের অংশগ্রহণকে স্বীকৃতি দেয়। এটি সশস্ত্র সংঘাতের সময় লিঙ্গভিত্তিক হিংসা (জিবিভি), ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে সুরক্ষার উপর জোর দেয়। এর মূল উদ্দেশ্য হল, ‘নারী ও পুরুষ উভয়ের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে নিরাপত্তাহীনতা ও হিংসা রোধ করা এবং কাঠামোগত লিঙ্গ বৈষম্য ও স্থিতিশীল শান্তির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানো বৈষম্যমূলক লিঙ্গ নিয়মাবলির মোকাবিলা করা।’
বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন, আঞ্চলিক অনিশ্চয়তা, কোভিড-১৯ অতিমারি দ্বারা উদ্ভূত জাতীয় প্রতিবন্ধকতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, আন্তর্দেশীয় অপরাধ ও অবৈধ মাছ ধরার কারণে সৃষ্ট আন্তর্জাতিক উদ্বেগ-সহ বিভিন্ন স্তরে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলি দ্বারা অনুভূত নিরাপত্তাহীনতাগুলি লিঙ্গ বৈষম্যের কারণে বৃদ্ধি পেয়েছে ও পরিস্থিতি জটিলতর হয়েছে। সর্বোপরি, অঞ্চলটি নারীর রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্বের কিছু নিম্ন মাত্রার সাক্ষী থেকেছে, যেখানে লিঙ্গভিত্তিক হিংসার উচ্চ হার পরিলক্ষিত হয়েছে। বলাই বাহুল্য, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধি সুনিশ্চিত করার জন্য ডব্লিউপিএস অ্যাজেন্ডাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অত্যাবশ্যক।
ডব্লিউপিএস ইনডেক্স ১৩টি সূচকের উপর নির্ভর করে ১৭৭টি দেশ এবং অর্থনীতিতে নারীদের অন্তর্ভুক্তি, ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তা পরিমাপ করে। এই সূচক অনুযায়ী ২০২৩ সালে যেখানে জাপান ২৩, দক্ষিণ কোরিয়া ৩০ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইউএস) ৩৭ নম্বরে রয়েছে, সেখানে অন্য দিকে ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া এবং ফিলিপিন্সের মতো আসিয়ান দেশগুলি যথাক্রমে ৮২, ১১০ এবং ১২১ নম্বরে রেকর্ড করেছে এবং ভারত রয়েছে ১২৮ নম্বরে! এই পার্থক্যটি স্পষ্টতই এতটা প্রকট যে এই অঞ্চলে ডব্লিউপিএস অনুসরণ করার গুরুত্ব আরও বেশি করে পরিলক্ষিত হয়। সুশীল সমাজের সঙ্গে সাম্প্রতিক জোটগুলি অ্যাজেন্ডার দিকনির্দেশনায় প্রগতিশীল প্রচেষ্টার সঙ্গে একটি ক্রমবর্ধমান অনুপ্রেরণা প্রদান করেছে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে রাষ্ট্রপুঞ্জের নারী আঞ্চলিক কার্যালয় ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান-এর (এনএপি) জন্য দক্ষতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টার মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করেছে এবং এই দেশগুলিতে সংঘাত নিরসন ও শান্তি বিনির্মাণে অবদান রেখেছে। ২০১৭ সালে মার্কিন সরকার নারীদের অধিকারের অগ্রগতি ও তাঁদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করতে নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করে এবং নারীদের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ভাবে ক্ষমতায়ন করার বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ অংশীদার দেশগুলির সঙ্গে তার মিথস্ক্রিয়ায় সক্রিয় ভাবে ডব্লিউপিএস-এর বাস্তবায়ন বৃদ্ধির চেষ্টা চালাচ্ছে। একই সঙ্গে, আসিয়ান সদস্য দেশগুলি এই অঞ্চলের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার উপর ভিত্তি করে নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা (আরপিএ ডব্লিউপিএস) সংক্রান্ত একটি আঞ্চলিক পরিকল্পনার উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। এই উদ্যোগটি পূর্ববর্তী ঘোষণা এবং বিবৃতিতে বর্ণিত প্রতিশ্রুতি দ্বারা উত্সাহিত স্থিতিশীল শান্তি ও নিরাপত্তার প্রচারের জন্য সামগ্রিক ভাবে আসিয়ানকে সমন্বিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের রাষ্ট্রপুঞ্জের নারী আঞ্চলিক কার্যালয় ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান-এর (এনএপি) জন্য দক্ষতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টার মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করেছে এবং এই দেশগুলিতে সংঘাত নিরসন ও শান্তি বিনির্মাণে অবদান রেখেছে।
সর্বোপরি, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের মতো দেশগুলি অস্থিতিশীল দেশগুলিতে লিঙ্গ সমতার উদ্দেশ্যে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া তার বিদেশমন্ত্রী কাং কিয়ং-ওয়া-র অধীনে রেজোলিউশন ১৩২৫-এর উপর একটি জাতীয় কর্ম পরিকল্পনা (এনএপি) গ্রহণ করে ২০১৭ সালে দেওয়া তার প্রতিশ্রুতিকে আরও শক্তিশালী করেছে। দেশটির তৃতীয় এনএপি লিঙ্গ সংক্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে সংঘাত প্রতিরোধ, শান্তি এবং সমন্বিতকরণের প্রচেষ্টা চালিয়েছে, যার লক্ষ্য হল নারীর অংশগ্রহণকে জোরদার করা। মানব নিরাপত্তা পদ্ধতি দ্বারা পরিচালিত জাপান লিঙ্গ সমতাকে মানব নিরাপত্তার প্রচারের জন্য অপরিহার্য বলে মনে করে। এই কৌশলগুলি ডব্লিউপিএস অ্যাজেন্ডার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ লিঙ্গ সমতার অগ্রগতি এবং শান্তি ও নিরাপত্তার প্রচারের জন্য একটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতিকেই দর্শায়।
অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান ২০২১-২০৩১-এ অস্থিতিশীল এবং সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে তার আন্তর্জাতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য চারটি প্রাথমিক ফলাফলের রূপরেখা প্রদান করেছে। এই ফলাফলগুলির মধ্যে রয়েছে সংঘাত প্রতিরোধ ও শান্তি প্রক্রিয়ায় নারী ও মেয়েদের অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণ, যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক হিংসার বিরুদ্ধে লড়াই করা, স্থিতিস্থাপকতার নির্মাণ, সঙ্কট প্রতিক্রিয়া এবং নারী ও মেয়েদের প্রয়োজন ও অধিকার পূরণের জন্য নিরাপত্তা, আইন ও ন্যায়বিচারের প্রচেষ্টা। প্যাসিফিক আইল্যান্ড কান্ট্রিজ (পিআইসি) সম্পর্কিত ২০১২-২০১৫ সালের আঞ্চলিক কর্ম পরিকল্পনা ফোরামের সদস্যদের এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলগুলির সংঘর্ষ-অধ্যুষিত এলাকায় সংঘাত প্রতিরোধ ও শান্তি বিনির্মাণে নারীদের ভূমিকা বৃদ্ধি, নিরাপত্তা নীতি প্রণয়নে লিঙ্গ বিবেচনাকে সমন্বিত করা এবং নারী ও মেয়েদের মানবাধিকার সুনিশ্চিত করার জন্য একটি কাঠামোর প্রস্তাব করেছে।
তাই এই অঞ্চলে ডব্লিউপিএস কৌশল লিঙ্গ বৈষম্য মোকাবিলা এবং শান্তি ও নিরাপত্তায় নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত একটি সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রদর্শন করে। এই জাতীয় কৌশলগুলির শক্তিগুলি বিশেষ ভাবে আঞ্চলিক সম্পৃক্ততায় পরিলক্ষিত হতে পারে, যা আসিয়ান নারী, শান্তি এবং নিরাপত্তা কর্ম পরিকল্পনার মতো উদ্যোগগুলিতে দৃশ্যমান এবং যা সহযোগিতা ও জ্ঞান ভাগ করে নেওয়ার সুবিধা প্রদান করে। অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় কর্মপরিকল্পনা দেশনির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মাধ্যমে অ্যাজেন্ডার প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতিকেই দর্শায়। সর্বোপরি শান্তি ও নিরাপত্তায় নারীদের অবদানের অপরিহার্যতাকে স্বীকৃতি দিয়ে এই অঞ্চলের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সফল হয়েছে।
এই জাতীয় কৌশলগুলির শক্তিগুলি বিশেষ ভাবে আঞ্চলিক সম্পৃক্ততায় পরিলক্ষিত হতে পারে, যা আসিয়ান নারী, শান্তি এবং নিরাপত্তা কর্ম পরিকল্পনার মতো উদ্যোগগুলিতে দৃশ্যমান এবং যা সহযোগিতা ও জ্ঞান ভাগ করে নেওয়ার সুবিধা প্রদান করে।
তা সত্ত্বেও ডব্লিউপিএস অ্যাজেন্ডার একটি মূল্যায়ন ডব্লিউপিএস-এর মধ্যেও ব্যাপক বৈষম্যকেও প্রদর্শন করে। সামগ্রিক ভাবে, গবেষকরা অ্যাজেন্ডার বাস্তবায়নে দু’টি প্রধান বাধাকে উল্লেখ করেছেন - অবিরাম তহবিলের অভাব; এবং পৃথক সূচকগুলিতে লিঙ্গবিচ্ছিন্ন তথ্যের অভাব। সিদ্ধান্ত গ্রহণ, আলোচনা এবং কথোপকথনে স্থানীয় নারী ও প্রান্তিক নারীদের অনুপস্থিতি স্পষ্ট। বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট ও স্থানীয় ঐতিহ্যকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং সম্মান করা ডব্লিউপিএস-এর জন্য বিদ্যমান উদ্যোগগুলির প্রাসঙ্গিকতা ও কার্যকারিতাকে উন্নত করতে পারে। একটি আন্তঃক্ষেত্রীয় দৃষ্টিভঙ্গি এ ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ হলেও ডব্লিউপিএস কৌশলে তা অনুপস্থিত। এর পাশাপাশি একটি সর্বাত্মক পদ্ধতির অভাব রয়েছে, যা লিঙ্গ বৈষম্যের কাঠামোগত ও পদ্ধতিগত কারণগুলিকে মোকাবিলা করতে পারে। এর সঙ্গে, অ্যাজেন্ডাটি এই অঞ্চলে একটি কূটনৈতিক শক্তি হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতিকে শক্তিশালী করে। ডব্লিউপিএস অ্যাজেন্ডায় লিঙ্গ সমতাকে উন্নীত করা এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নারীর মানবাধিকার রক্ষার অসামান্য সম্ভাবনা থাকলেও উপরোল্লিখিত অপ্রতুলতা মহৎ লক্ষ্য অর্জনের অ্যাজেন্ডার সম্ভাবনাকে বাধা দেয়। উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটলেও ডব্লিউপিএস অ্যাজেন্ডার সম্ভাবনাকে সম্পূর্ণ রূপে বাস্তবায়িত করার জন্য বর্ধিত রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা, সম্পদ বরাদ্দ এবং প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে।
তা সত্ত্বেও, ইন্দো-প্যাসিফিক দেশগুলিতে ডব্লিউপিএস অ্যাজেন্ডা অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্থিতিশীল উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কাঠামো হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। ক্রমাগত গবেষণা ও পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন, নীতির প্রচার এবং নারীদের কণ্ঠস্বর ও সম্পৃক্ততাকে বৃদ্ধি করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার মাধ্যমে ইন্দো-প্যাসিফিক দেশগুলি তাদের নিজ নিজ দেশে অ্যাজেন্ডার উপাদানগুলিকে উন্নত করতে পারে।
প্রত্নশ্রী বসু অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের অ্যাসোসিয়েট ফেলো।
রিয়া শর্মা অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের রিসার্চ ইন্টার্ন।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.